ভীতিকর কবর ও বারযাখ জীবনের কথা ভাবছেন কি?
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৪ মার্চ, ২০১৩, ০৫:৪০:৫৫ বিকাল
সময় চলে যাছ্ছে নদীর খর শ্রোতের মত।জীবন থেকে একটি করে নক্ষত্র ছুটে যাছ্ছে প্রতিদিন।আমাদের ভাবনার জালবুনি শুধু প্রাসাদ গড়ার, যে প্রাসাদে কখনো থাকা হবে কিনা ঠিক নেই।প্রতি মুহুর্তে দেখি আপন জন চলে যায় , প্রতিবেশী চলে যায়, দূরবর্তিরা চলে যায়।চলতে চলতে থেমে যায়,গোধূলিলগ্নে থেমে যায়,থেমে যাওয়ার ক্ষন নেই , বয়স নেই।কেউ চলে গেলে হাহুতোশ করে আবার পথ চলা শুরু করি।কবরকে ঘিরে আমাদের কোন ভাবনা নেই।আলিশান বাড়ি,মখমলের বিছানা , মুখরোচক খাবার,পাহারাদার,অসংখ্য পাইক ফিয়াদা,বন্ধুদের আড্ডা,গাড়িবহরে পথচলা যেন আমাদের ভুলিয়ে রেখেছে।এ নিশ্চিত বিষয়কে অবহেলা করি কেন আমরা? যেখানেই যাছ্ছি আমাদের পিছু করে আছে মালাকুল মওত।জীবনের এ দীর্ঘ সময় কোন পথে ব্যায় করে দিলাম।বুঝলাম পড়ন্ত বিকেলে যখন মালাকুল মওত শিয়রে হাজির তার দলবল নিয়ে।আর্তনাদ করি ফিরিয়ে দাও কিছু সময়ের জন্য ভাল কাজ করে আসব।না আর সময় নেই।নিষ্কৃতির দু'টো বিষয় এখন মনে পড়ছে। এ মনে পড়ায়তো কোন লাভ নেই।আমার সামনে এখন সব কিছুই পরিষ্কার।কাউকেতো বলতে পারছিনা।সবাই আমার চারদিক ঘিরে আছে।যে রবকে অবহেলা করেছিলাম সেই রব এখন আমার গ্রিবার নিকটে।কে আছ তোমরা ফিরিয়ে নাও না আমার আত্মা।না কারো ক্ষমতা নেই চোখের পানি ফেলা ছাড়া।তাহলে কিভাবে তোমরা এক একজন শক্তিধর?অতিতের সোনালী দিন গুলোর কথা ভেবে দগ্ধ হই।মুসলিম শুধু নাম ধারন করেই বেঁচে ছিলাম।আমার বন্ধুত্ব ছিল পৃথিবিজুড়ে।কেউ এখন আমার বিপদে নেই।কত পড়েছি ভলিউম আকারে আপন লেখকের পুস্তিকা রাতের পর রাত,উইলিয়াম শে্ক্সপিয়ার ,জন মিল্টন,চার্লেস ডিকেন্স,হোমার , লিওটলেষ্টয় , ওমর খৈয়্যাম,রুমি,কবি ইকবাল এ সব কালজয়ি লেখকের কাব্য। অশ্লিল সিনেমা,অশ্লিল কাজ, ঘুষ ও সূদের কারবার, দ্বীনহীন পরিবার পালন আরো অসংখ্য খেয়ানত , আর অবহেলা করছিলাম কুরআন ও সূন্নাহকে।ওসবতো আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসছে না।আমার পরিবার এখন আমা হতে দূরে।আমার অতি আদরের ছেলে মেয়ে বলে লাশ ঘরে রেখো না, হিমঘরে নিয়ে রাখ।অথচ একটু আগেও গলা জড়িয়ে আদর করেছিল বাবা কেন দেরি করে আসলে।আমার ঘরনীর মৃদু বর্ৎসনা নেই। আমাকে সাজিয়ে খাটে করে বহন করে নিয়ে যাছ্ছে আমি চিৎকার করছি ভয়ংকর আগুন দেখে যা আমার পাশের কেউ শুনতে পায় না।সেতসেতে মাটিতে অন্ধকারে আমাকে ফেলে তোমরা চলে গেলে।মাটির ছাপ সই কেমন করে।দু'জন ফেরেস্তা এসে আমাকে উঠিয়ে বসিয়ে জিজ্গেস করে।কে তোমার রব? কি তোমার দ্বীন? কে তোমার রাসূল? আমি বলি হা হা। কিছুই তো জানি না।আমার রব বলে বিছিয়ে দাও আগুনের বিছানা।এই তো আমার পাওনা।এভাবে চলতে থাকবে আমার বারযখ জীবন।তার পর পুন:জাগ্রত হওয়ার দিন যখন সিংগা ফুকবে রবের দিকে দৌড়াতে থাকবো।বিচারের দিন ফায়সালা হবে অনন্ত প্রশান্তি অথবা অনন্ত জ্বালা যন্ত্রনার।
হে মানব! এখনো তোমরা যারা বেঁচে আছ , মাথা নত কর তোমার রবের কাছে।তোমার ধর্মকে চিনার চেষ্টা কর।এ কোন ধর্ম তোমরা পালন কর?যদি তুমি মুসলিম হও কুরআন সূন্নাহের কাছে যাও। নিজের প্রবৃত্তিকে অনুসরন করো না।আমার কাছে সব খবর এসেছে আমি পাঠেতে পারছিনা।কুরআনের পাতায় পাতায় পেয়ে যাবে যা ঘটবে কবরে।ধার্মিক হওয়া কঠিন কাজ নয়।ধার্মিকতা নয় যে তুমি পূর্ব ও পশ্চিমে মুখ ফিরাবে।প্রকৃত ধার্মিকতা হলো এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা,আখেরাতের দিনের প্রতি,ফেরেস্তাদের প্রতি,কিতাবটির প্রতি,নবী রাসূলদের প্রতি, আল্লহর মহব্বত বশত: আত্মীয়স্বজন ,এতিম ,মিসকিন,পথচারি,ফকির,দাসদের মুক্তিপন বাবদ দান, নামাজ কায়েম, যাকাত দান,রোজা রাখা , হজ্জ করা,ভাল কাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে বিরত রাখার আহ্বান করা।এগুলো কঠিন তার জন্য যে তার রবকে ভয় করে না।অবিশ্বাস থেকে ফিরে আস।দেখ না , আমি ফেলে এসেছি সব তুমিও আসবে খালি হাতে।পৃথিবীকে ভালবাস শুধু তোমার রবের জন্য তাহলেই আমার মত যন্ত্রনা পাবে না।কি গভীর যন্ত্রনা আমি বুঝাতে পারবোনা।আমি বন্চনা করেছি সারাটি জীবন , বন্চিত হয়েছি নিজে।আমিতো ছিলাম এক আদমসন্তান।আমার রাসূলতো টাকার পাহাড় গড়ে তোলেনি।পেটে পাথর বাঁধতে কুন্ঠিত হন নি খাবারের যন্ত্রনায়।নিজে না খেয়ে বিলিয়ে দিয়েছে সব পরের তরে।মাসের পর মাস চুলো জ্বলে নি ঘরে।তাহলে তোমরা কেন ভাবছ প্রাচুর্যের কথা? এখান থেকে শিক্ষা নাও। ক'টি দিন কোনভাবে সৎ জীবন যাপন করে চলে আস।সবই মিলবে যা তুমি কল্পনা করনি।তোমার রবকে ভুলে যাবেনা।তিনি অতি দয়ালু।তিনি ফিরে আসেন বার বার যদি তুমি ফিরে আস ফিরার মত।
তোমার অনেক কাজ আছে যা আমি করতে পারিনি।আমি বলছি তুমি লাভবান হবে।শুন আমার কাথাগুলো মন দিয়ে।তোমার লোকালয় শির্ক ও বিদা'আতে ভরে গেছে।মুসলিম এখন বিভক্ত।তোমার কাজ তাদের পৌঁছে দেয়া শুধু।কবরপূজারি ও পিরতন্ত্র ছেয়ে গেছে আনাছে কানাছে।তোমার ধর্মকে বিকৃত করে পালন করছে অন্য ধর্ম যা পালন হতো যাহেলিয়াতে ক্কাবার চত্তরে।কোন পার্থক্য নেই এদের তাদের সাথে।ইবাদাতের নামে চলছে বিদা'আত শাবান মাসে,শবেবরাতের ইবাদাত,মহররমে তাজিয়া মিছিল,কবর মাজারে আলোকবাতি,শিখাচিরন্তন ,স্মৃতিসৌধ ,সহিদ মিনার যিয়ারত, মৃতের বাড়িতে ৪০শা,মিলাদ,সম্মিলিত দূরুদ,পিরের বায়াত,হিলা বিবাহ,বিভিন্ন দিবস পালন, বিবাহে অনৈসলামিক রিতি, ইসলামের নামে অনৈতিক বিচার আরো অনেক,এগুলোর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।এগুলো মানুষ তৈরি করেছে।হ্ক্কানি আলেমদের সাথে চল।ভন্ড দের পরিত্যাগ কর।অপরাধ ও অশ্লিলতা দেখে যদি তোমার প্রান না কাঁদে তুমি আমার মতই মৃত।মৃতের মত হাজার বছর বেঁচে থেকো না , যদি পার বীরের মত এক প্রহর বেঁচে থাক।তুমি কি দেখছনা কত নীরিহ প্রান ঝরে পড়ছে? কি অপরাধ তাদের? একি শান্তির লড়াই? এ কোন রাজনীতি? রাজনীতি যদি শান্তি বহন করবে তাহলে মানুষ প্রান দিবে কেন? মা বোন ইজ্জত হারাবে কেন? শিশু তার বাবার প্রহর গুনবে কেন? জীবন যুদ্ধ তো তাকে বলে যা হিংস্র হায়েনার কাছ থেকে চিনিয়ে আনে দুর্বলের গ্রাস।সমাজকে করে পাশবিকতা থেকে মুক্ত।হে চক্ষুষ্মান মানুষ! অজুহাত আর কতদিন। আমার কথা শোন।যেদিন দৃষ্টি হারাবে সেদিন পালাবার যায়গা কোথায়?কতগুলো মুখ হবে উজ্জল আর কতগুলো মুখ হবে বিবর্ন।বিদায় বেলা ভাবনার তীর তোমাকে ক্ষত বিক্ষত করবে কোন লাভ হবে না।এখনো সময় আছে ফিরে আস।তোমার রব অতি মেহেরবান।
ভাল কাজগুলো করতে বাধা কোথায়? একটু ভেবে দেখ তোমার সৃষ্টি সম্পর্কে।ক'টি বছর আগেও তুমি ছিলে মেরুদন্ড হীন।সবেগে নির্গত পিতামাতার এক ফোটা পানি থেকে সৃষ্টি করলেন যিনি কেন তাকে অবজ্গা? যিনি বুদ্ধিদিপ্ত করলেন,সুঠাম করলেন একটা জীবন দিলেন আর একটু যৌবন আর সম্পদের আহরনে হয়ে গেলে অহংকারি? ভুলে যাবে না শেষবারের মত আমি বলছি, তিনি তৈরি করে রেখেছেন হরেক রকমের শাস্তি।আহার করাবেন যাক্কুম বৃক্ষ থেকে।পান করাবেন উত্তপ্ত পানি আর তুমি পান করবে তৃষ্নার্ত উটের মত। এই হবে তোমার আপ্যায়ন। তিনি তো শুধূ চান তার আদেশ নিষেধ গুলো মেনে চল।সহজ পথে চল।নবী রাসূলদের পথ,সত্যবাদিদের পথ,শহিদদের পথ আর সৎকর্মশীলদের পথ।তাহলে তোমার কোন ভয় নেই।আমার মত জ্বালাভোগ করতে হবে না তোমাকে।চিরন্তন জান্নাতরুপি শান্তি যার নিছ দিয়ে নহর প্রবাহিত হবে আর পাবে আয়তলোচনা হুরগন যা সামনা সামনি বসে থাকবে আর আপ্যায়িত হবে চির কিশোরদের দ্বারা যা তুমি চাও।
বিষয়: বিবিধ
১৬৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন