ধর্ম যেমন ছিল তেমনই আছে, পাল্টেছে মানুষের চরিত্র।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:১৩:০২ দুপুর
সকাল হলেই মনকে কোন মতে প্রবোধ দেয়া যায় না।নাস্তা সেরেই প্রথম কাজটি নিজ দেশ সহ সারা বিশ্বের খোঁজ খবর নেয়া কারন আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা। বিদেশের পত্র পত্রিকাগুলো দেখার আগে নিজ দেশের খবর নেয়া ঈমানের অংগ বলে মনে করি।দেশের খবর নিতে গেলেই আজকাল যে
বিষয়টি আগে দৃষ্টি গোছর হয় তা হলো-হত্যা,ধর্ষন ও গনধর্ষন।আর ধর্ষনের মধ্যেও রয়েছে স্পর্ষকাতর ঘটনা,তা হলো শিশু ধর্ষন।কালিহাতিতে ছেলের সামনে মা'কে ধর্ষনেও জাতি বিস্মিত হয় নি কারন সারা বিশ্ব আজ ধর্ষিত।আমরা সমস্ত অপরাধ দেখে চলছি কিন্তু আমরা নির্বাক জাতি।একটি ঘটনা আমাকে বিশেষ করে আজো নাড়া দেয়,ইসলামের কাজ করে এমন একজন লোক কিভাবে শিশু ধর্ষন করে?কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এক শিশুকে ধর্ষণ করেছে ইমাম। সাতকানিয়ায় মুয়াজ্জিন ধর্ষণ করেছে আট বছর বয়সী এক শিশুকে। সিলেটের মৌলভীবাজরে এক প্রিন্সিপাল নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। আগে আমরা ভাবতাম মসজিদ-মাদ্রাসার মৌলভীদের বিজ্ঞানবোধ না থাকলেও নীতিবোধ থাকে। এখন দেখছি ওদের কারো কারো সেটিও নেই। বাবা মা'রা নির্দ্বিধায় নিজেদের সন্তানকে সঁপে দেন ওদের হাতে। ওদের কেউ কেউ অসহায় নিরীহ শিশুদের ধর্ষণ করতে দু'বার ভাবে না। শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করে নিশ্চিন্তে নির্ভাবনায়। অনুমান করতে পারি কতটা বর্বর হলে, কতটা কুৎসিত হলে, কতটা নৃৃশংস হলে শিশু ধর্ষণে উদ্যোগী হয় পুরুষরা! অথচ ওরা নাকি দিনরাত আল্লাহর নাম জপে, আল্লাহর কালাম পড়ে, আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত।
কী যুগ এসেছে? আল্লাহর কালাম পড়া আল্লাহর নাম জপা পরহেজগার মুসলমানদের হাতে এখন ধারালো চাপাতি, তাদের হাতে এখন পিস্তল, রাইফেল, তাদের হাতে অস্ত্র, মারণাস্ত্র। কিছুদিন আগে খবরে পড়লাম, আইএস নাকি এক বছরের মধ্যে পাকিস্তানের কাছ থেকে পারমাণবিক বোমা কিনছে। যেভাবে সিরিয়া আর ইরাকের প্রাচীন ঐতিহ্য আর ইতিহাস ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, সেভাবেই পৃৃথিবীটাকে পারমাণবিক বোমা মেরে উড়িয়ে দেবে ওরা। মানুষ খুন করতে করতে, যা পাচ্ছে হাতের কাছে সব ধ্বংস করতে করতে, ধ্বংসের নেশায় পেয়েছে এদের। এরা যতদিন বাঁচে ততদিন ধ্বংস করবে, আর ধর্ষণ করবে। বোকা হারাম তো অগুনতি শিশুকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণ এরা ধর্মের নামেই করছে। ধর্ম কি ধর্ষণের কথা বলে? উত্তরে বেশির ভাগ মানুষ বলবে, না। তবে ধর্ষণের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক না থাকলেও, ধর্ষণের সঙ্গে নারীবিদ্বেষের সম্পর্ক আছে, এ ব্যাপারে কোনও দ্বিধা নেই।বাংলাদেশে ধরা পড়েছে একটি কোম্পানির আইটি প্রধান আমিনুল ইসলাম বেগ। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, লোকটি প্রকৌশলীর আড়ালে একজন দুর্ধর্ষ জঙ্গি নেতা। জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছে। কোম্পানির চাকরি তার ওপরের লেবাস। প্রকৃতপক্ষে তিনি বাংলাদেশের জঙ্গি জেএমবি ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর বাংলাদেশের সমন্বয়কারী। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণদের দিয়ে 'জিহাদ' করানোর উদ্দেশ্যে তিনি কাজ করছিলেন। বেশ কয়েকজনকে ইরাক ও সিরিয়ায় পাঠিয়েছেন। আরও যারা যেতে ইচ্ছুক তাদের পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পাশাপাশি বাংলাদেশেও 'ইসলামী খেলাফত' প্রতিষ্ঠায় 'জিহাদ' করার জন্য আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণদের উদ্বুদ্ধ করছেন। অবাক লাগে, ধর্মান্ধতা আর কুসংস্কার দূর করার জন্য বিজ্ঞানশিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলি, অথচ সবচেয়ে বেশি যারা ধর্মান্ধ-জিহাদি হিসেবে আত্ম প্রকাশ করছে, তারা বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত লোক। বিজ্ঞানশিক্ষা এরা কোনও ভালো কাজে খাটায় না। যদি আদৌ খাটায়, তবে ধ্বংস করার জন্য, নির্মাণ করার জন্য নয়। আইএস-এর গণহত্যা কেউ রোধ করতে পারছে না। সিরিয়ার পালমিরা অঞ্চলটি দখল করার পর হাজার হাজার জনকে ওরা হত্যা করেছে, যাদের বেশির ভাগই নারী আর শিশু। ওরা আল্লাহর দোহাই দিয়ে নারী আর শিশুকে ধর্ষণ করছে, হত্যা করছে।ধর্মের নামে এই জঙ্গি সংগঠন গুলো কারা তৈরি করছে তার সামান্য বলছি এই জন্য যে,অনেকে জানে না এই কলকাঠি নাড়ার হোথা কারা? কারা এদের পিছনে রয়েছে? এদের সবাই সভ্য জাতি হিসেবে জানে।আমাদের মুসলমানরা গর্ব করে সেখানে বসবাস করে সাপের আস্তিনের নিছে।অথচ এরা মুসলমান নিধন করে চলছে যুগ যুগ ধরে।এই অন্ধ মুসলমানদের ধিক্কার জানাই।
মধ্যপ্রাচ্যসংলগ্ন মধ্য এশিয়ার প্রান্তিক দেশ আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাশিয়ার দখলদারিত্বের অবসানের জন্য যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র মুজাহেদিন, তালেবান ও আলকায়েদা সৃষ্টি করে এ বাহিনীগুলোকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সম্ভার দিয়ে সমৃদ্ধ করে। এ বাহিনীগুলোর সম্মিলিত আক্রমণের মুখে সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেলে সেখানে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হয়। পরে এ বাহিনীগুলোর কাছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য খোলাসা হলে তারা তাঁবেদার সরকার ও তার সমর্থনপুষ্ট বিদেশী বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। একদা শান্ত ও স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাত আফগানিস্তানে সোভিয়েত ও মার্কিন আগ্রাসনের আগে নাগরিকদের মধ্যে যে সুখ শান্তি ছিল আজ তা সম্পূর্ণ বিপন্ন। যে মুজাহেদিন, তালেবান ও আলকায়েদা একদা যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অতি কাছের ও একান্ত বিশ্বস্ত ছিল আজ কেন তারা তাদের প্রতি বৈরী, এর উত্তর বিশ্ববাসী এ দু’টি শক্তিধর রাষ্ট্রের নেতাদের কাছ থেকেই প্রত্যাশা করে।মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামি রাষ্ট্রগুলো তেল ও গ্যাস সম্পদে সমৃদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও গ্যাস সম্পদের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। এ তেল ও গ্যাস সম্পদ কুক্ষিগত করার জন্য তারা মরিয়া হয়ে ওঠে এবং এরই অংশ হিসেবে তাদের সৃজিত সীমারেখা দিয়ে তৈরি রাষ্ট্রে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের তারা ক্ষমতায় বসায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটিশ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ইসরাইল রাষ্ট্রের সৃষ্টি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ইহুদিরা মিত্রশক্তির অন্তর্ভুক্ত যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রকে বিপুল অর্থসহায়তা দেয়। ইহুদি রাষ্ট্রটি সৃষ্টিকালীন পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইহুদিদের ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে জড়ো করে রাষ্ট্রটির পত্তন করা হয়। পরে এ রাষ্ট্রটি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় উত্তর দিকে সমুদ্র ব্যতীত অপর তিন দিকের স্থলসীমানা বৃদ্ধি করে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল রাষ্ট্রটির সৃষ্টি ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করে। ফিলিস্তিনিরা বর্তমানে আশপাশের দেশগুলোতে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ভূখণ্ড হিসেবে চিহ্নিত গাজা ও পশ্চিম তীরে নিদারুণ দুঃখ কষ্টের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পূর্ববর্তী কুয়েত ইরাকের অংশ ছিল। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে এটি সৃষ্টি করে। পরে ’৯০ দশকের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনে ইরাক কুয়েত আক্রমণ করে সম্পূর্ণরূপে দেশটি দখল করে নেয়। দখলের পর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র কুয়েতের পক্ষাবলম্বন করে ইরাকের ওপর চড়াও হয়ে ইরাককে সেখান থেকে বিতাড়িত করে। এ যুদ্ধে ইরাক ও কুয়েত এ দুটি রাষ্ট্রের বিপুল সম্পদহানি ঘটে। আর মধ্যখান থেকে ফায়দা লুটে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন এবং লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। তারা উভয়ে নিজ নিজ দেশের প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেন এবং তেলসম্পদকে জাতীয়করণ করে এ সম্পদ থেকে আহরিত অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যয় করেন। এ দুটি রাষ্ট্র রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠলে তা যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মর্মবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ দু’টি দেশ যেকোনো মূল্যে সাদ্দাম হোসেন ও গাদ্দাফিকে ক্ষমতা হতে বিতাড়নের ফন্দি আঁটতে থাকে এবং একপর্যায়ে অপপ্রচার চালায় যে, ইরাকের কাছে যে জীবাণু ও রাসায়নিক অস্ত্র রয়েছে তা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের পার্শ্ববর্তী দেশ নয়, সমগ্র ইউরোপের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও অলীক অভিযোগের ভিত্তিতে ইরাকের বিরুদ্ধে এ দু’টি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর অভিযানে সাদ্দাম হোসেনের পতন ঘটানো হয়। এরপর প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও দেশটির বিনষ্ট শৃঙ্খলা এখনো ফিরে আসেনি। আর জীবাণু অস্ত্র ও রাসায়নিক অস্ত্রের বিষয় দু’টি যে স্বীয় অসৎ ও হীন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নেহায়েত অপপ্রচার ও অপবাদ ছিল তা বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষের কাছে স্পষ্ট হতে দেরি হয়নি এবং কিছুদিন আগে জন ব্লেয়ারের কথাতে আরো বেশি সত্য উদ্ঘাটিত হয়।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌক্তিক কারণ ছাড়া লিবিয়ার জনপ্রিয় শাসক গাদ্দাফিকে নির্মমভাবে হত্যা বর্বরতার নজির হিসেবে দেখা হয়। গাদ্দাফির শাসনামলে লিবিয়ার প্রতিটি নাগরিকের ঘরে যে সুখ ও শান্তি ছিল গাদ্দাফির বিদায়-পরবর্তী জাতিগত কোন্দল ও হানাহানিতে লিপ্ত দেশটি থেকে তা উধাও হয়ে গেছে। আজ মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ রাষ্ট্রই বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রহীনতার কারণে বিস্ফোরণোন্মুখ। মিসর থেকে গণ-আন্দোলনের মুখে হোসনি মোবারকের বিদায়ের পর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে মোহাম্মদ মুরসির দল ইসলামি ব্রাদারহুড বিজয়ী হলে তিনি দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান পদে আসীন হন; কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তার ক্ষমতায় আরোহণ দীর্ঘায়িত হয়নি। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি ষড়যন্ত্রে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপর প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম আফ্রিকাসহ পৃথিবীর কোন দেশে গণতন্ত্র ,নাকি স্বৈরতন্ত্র ,নাকি রাজতন্ত্র থাকবে এটি নির্ধারণের দায়িত্ব নিয়েছে আজ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা। আর তাই এদের স্বার্থের কাছে এ সব দেশের জন-আকাংখ্যা মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা দীর্ঘ দিন ধরে সিরিয়ার শাসক বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সে দেশের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করে তুলেছে। এ বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর বাইরে আইএস নামক আরেকটি অত্যাধুনিক অস্ত্রসংবলিত শক্তিধর বাহিনী গড়ে উঠেছে যেটি সম্মিলিতভাবে সিরিয়া, ইরাক ও তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। এই রহস্যজনক বাহিনী সৃষ্টির সাথে এ দু’টি রাষ্ট্রের যোগসুত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়, যদিও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা প্রকাশ্যে বলে আসছে যে, তারা আইএসকে উৎখাতে তৎপর; কিন্তু এক বছর ধরে এ কথা বলে তারা আইএসের বিরুদ্ধে যতটুকু সফলতা পাওয়ার কথা বলছে, রাশিয়া এ বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার পর দেখা গেল এক সপ্তাহে অর্জিত সফলতা তার চেয়ে বেশি। বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র বলছে, আইএস সৃষ্টির পেছনের উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র তাদের মিত্র ও ইসরাইলের স্বার্থ সংরক্ষণ। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বহুজাতিক বাহিনী কর্তৃক ইরাক আক্রমণকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন টনি ব্লেয়ার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জুনিয়র বুশ। তারা উভয়ে যে ভুল ও মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করে ইরাকে অভিযান পরিচালনা করে সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাত ও তার মৃত্যুর ব্যবস্থা করেছিলেন, এ সত্যটি এখন তাদের দেশের বিভিন্ন নেতার বক্তব্য ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য থেকে জানা যায়। মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম আফ্রিকা থেকে সাদ্দাম ও গাদ্দাফির বিদায়ের পর যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সমগ্র অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এ অস্থিতিশীলতার শেষ কোথায়? এর উত্তর যে দু’টি রাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের কারণে এ অস্থিতিশীলতা সৃষ্ট তাদেরও হয়তো জানা নেই। সামগ্রিক অস্থিতিশীলতার কারণে এ অঞ্চলের লাখ লাখ অধিবাসী এখন নিজ দেশে ভিটেমাটিহারা। অথচ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের এসব শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে সমস্যাটির সমাধান করার ব্যাপারে খুব একটা তৎপর তা মনে হয় না। যুক্তরাজ্যের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র ইরাকের দখল থেকে কুয়েতকে মুক্ত করার পর যুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট বুশ কুয়েত সফরে গেলে তাকে যে বীরোচিত সংবর্ধনা দেয়া হয় তা ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের ভাগ্যেও জোটে না। এ সময় তাকে যে উপঢৌকন ও উপহারসামগ্রী দেয়া হয়েছিল তা পরিবহনের জন্য তিনটি বৃহৎ আকৃতির বিমানের প্রয়োজন পড়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র তার ভাষ্য অনুযায়ী জনস্বার্থপরিপন্থী কাজ করার জন্য পানামার রাষ্ট্রপ্রধান নরিয়েগাকে নিজ দেশে নিয়ে এসে তার বিচারের ব্যবস্থা করেছিল।কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এ চারটি রাষ্ট্রের অধিবাসীরা যুক্তরাজ্যের নাগরিক ব্রিটিশদের উত্তরসূরি। যুক্তরাজ্যের যেকোনো পদক্ষেপ ন্যায় বা অন্যায় যাই হোক এ ব্যাপারে তারা সব সময় এ চার রাষ্ট্রসহ অন্য ইউরোপীয় মিত্রদের পাশে পেয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে ব্রিটিশ ও তাদের উত্তরসূরিদের অন্যায় অপ্রতিরোধ্যভাবে চলতে থাকার কারণে তারা তাদের সামর্থ্যের হানি ঘটলেও অতীতের শক্তিমত্তার বড়াই করে মোড়লগিরি অব্যাহত রাখতে চায়; কিন্তু বিশ্বব্যবস্থাসহ অর্থনীতি ও রাজনীতির যে পরিবর্তন ঘটেছে এবং শক্তি ও ক্ষমতার ব্যবধান যে সঙ্কুচিত হয়ে তাদের প্রতিকূলে অবস্থান নিতে চলেছে, এটুকু উপলব্ধি করার বোধশক্তি সম্ভবত তারা হারিয়ে ফেলেছে।
যাই হোক,আমি শুরু করেছিলাম হত্যা,ধর্ষন ও গনধর্ষন নিয়ে যা আমাদের ব্যাথিত করে তুলছে।বাংলাদেশ তো প্রতিদিন মানুষ খুন হচ্ছে। তার উপর ব্লগারদের যারা খুন করেছে, তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। শাস্তি দেওয়া দূরের কথা।এদিকে আবার আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্তত এতদিনে একটা ভালো কাজ করেছে সরকার। অবশ্য নিষিদ্ধ করে কী ছাই হবে যদি না খুনিদের গ্রেফতার করা না হয়। একটি নিষিদ্ধ দলের লোক মানুষ জবাই করে চলে যাবে, দিনে দুপুরে গর্দানে কোপ মেরে চলে যাবে, পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে, ওপরের নির্দেশ না এলে খুনিকে ধরবে না। এরকম যদি নিয়ম হয়, তবে আনসারুল্লাহর নিষিদ্ধ হওয়া না হওয়ায় নিশ্চয়ই কিছু যায় আসে না।আবার শুনলাম গরু ধর্ষণ হয়েছে। নারী ধর্ষণ, কিশোরী ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণের পাশাপাশি গরু ধর্ষণ চলছে। নীতি আদর্শ সমস্তই লোপ পেয়েছে! অথচ আমরা এরকমই শিখেছি ছোটবেলা থেকে, যত বেশি ধর্ম বাড়বে, তত বেশি অনাচার কমবে। আমি হিসেব মেলাতে পারি না। ধর্মের আড়ালে এক ধরনের মন্দ লোকরাই বেশি ধর্ম পালন করে? নাকি মন্দ কাজ করার জন্য ওপরে একটা ধার্মিকের লেবাস লাগানো হয়, যেন কারও সন্দেহভাজন হতে না হয়? লেবাস দেখলেই আজকাল ধর্ষক আর খুনি বলে অনেকের সন্দেহ হয়।আমার নানা,মামারা ও ফুফারা ছিলেন বেশ ধার্মিক।আর বাবা মা তো ছিলেনই ধর্মের অনুকূলে। ধর্মের অর্থ তাঁরা বুঝতেন কারও অনিষ্ট না করা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, বরং অন্যের দুঃখ-কষ্টে পাশে দাঁড়ানো, অন্যের অভাব দূর করা। ছোটবেলায় ওঁদের মতো অনেক ধার্মিকের দেখা আমি পেয়েছি। কিন্তু এ বেলায় এসব কী দেখছি দেশে? আগে ধর্ম মানে মানুষ বুঝতো সহিষ্ণুতা, উদারতা, মানবতা। আর এখন হিংস্রতা, রমজান মাসে বিশাল খানাপিনা, ঈদে বড়াই করে গরু জবাই-এর ধুম। ভাগ্যিস আমার বাবা মা ,নানা মামারা কেউ আজ বেঁচে নেই। বেঁচে থাকলে ধর্মের এই রূপ দেখে ওঁরা নিশ্চয়ই খুব কষ্ট পেতেন। আসলে ধর্ম যেমন ছিল, তেমনই আছে। মানুষ পাল্টেছে। বর্বর লোকরা ধর্মকে বর্ম হিসেবে রেখে যত বীভৎস হতে পারে হচ্ছে।ধর্মকে আবার মানবিক করার সময় এসেছে। মাদ্রাসাগুলোতে কারা পড়াচ্ছে,কি পড়াচ্ছে,স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান মনস্ক করার নামে মগজধোলাই হচ্ছে কি না লক্ষ্য রাখতে হবে। ইমামদের, মাদ্রাসার শিক্ষকদের ইসলামের সঠিক প্রশিক্ষন দেয়া ও তাদের নিয়োগ দানেও খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মের কাজ করতে এসে অধর্ম করলে আইনের শাসনের মাধ্যমে তাদের যথাযথ বিচার করতে হবে।পুরুষরা অহরহই ধর্ষণ করছে। ইমাম জাতও পুরুষের জাত। কিন্তু ইমামের গুরুত্বটা অনেক। ইমামকে দেখে শেখে পুরুষরা। ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে পুরুষরা নামাজ পড়ে। ইমামের কথা এবং কাজকে তারা মান্য করে, ইমামের উপদেশ পরামর্শ মতো জীবনযাপন করে। সুতরাং ইমাম যদি ধর্ষক হয়, তবে সমাজের পুরুষরা তার কাছ থেকে ধর্ষক হওয়ার প্রেরণা পাবে। সুতরাং ইমামদের চরিত্র নষ্ট হলে চলবে না। ইমামদের গতিবিধি নজর রাখার ব্যবস্থা না হলে সমূহ বিপদ বেড়েই চলবে।দেশে দিন দিন দুঃসংবাদের পাহাড় গড়ে উঠছে। কী ভালোই না হতো যদি দেশটি থেকে ধর্ষণের খবর না আসতো।ক'মাস আগে একটা গারো মেয়েকে গণধর্ষণ করা হলো মাইক্রোবাসের ভেতর। ভারত থেকে ভালো অনেক কিছু তো শেখার আছে। শিখলো তো শিখলো গণধর্ষণটাই শিখলো? যে লোকগুলো মেয়েটাকে ধর্ষণ করেছে, ওদের জিজ্ঞেস করুন, ওরা ধর্মে বিশ্বাস করে কি না, আমি নিশ্চিত সবাই বলবে 'আমরা বিশ্বাস করি। তারা কি আল্লাহকে মানে? তারা বলবে মানি। তোমরা কি নাস্তিক? জিজ্ঞেস করুন। ওরা ফুঁসে উঠবে। এত বড় অসম্মান! আমাদের নাস্তিক বললো? ওরা তীব্র প্রতিবাদ করবে, বলবে যে ওরা আস্তিক।আমরা ইসলামের সকল কাজে উদারতা দেখতে পাই,মানবিকতা দেখতে পাই কিন্তু তার সঠিক চর্চাটি করতে জানি না।জনসমষ্টির শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে ইসলাম শুধু ধর্ম নয়, ইসলাম একধরনের বলিষ্ঠ মূল্যবোধ, জীবনস্পর্শকারী একপ্রকার নৈতিকতা। অনেকের কাছে ইসলামি ঐতিহ্য, আদর্শ ও প্রতিষ্ঠান দৈনন্দিন জীবনের অংশ। অনেকের কাছে একমাত্র সামাজিক সত্তা ও সচেতনতার মূর্ত রূপও।তাহলে হত্যা ও ধর্ষন বাড়ছে কেন? এটি বাড়ছে আমাদের মস্তিষ্কের পঁচন,আমাদের ভয় ,আমাদের দ্বিধা দ্বন্দ,আমাদের লোভ লালসা,আমাদের সংকোচ,আমাদের বুদ্ধি বিচার বিবেচনা বোধ লোপের কারনে।আমরা আমাদের চরিত্রের অধ:পতন ঘটিয়ে চলছি।কোন ধর্মের দোষ নেই।ধর্মকে ব্যাবহার করছে এক ধরনের নিকৃষ্ট মানুষ যারা একে আশ্রয় করে জীবনের সফলতা চায়।এরা রয়েছে সমাজের নিচু থেকে উপর তলা পর্যন্ত। এদের চিহৃিত করা এখন আমাদের সবার কাজ।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন