জ্ঞান ও বিবেক বোধসম্পন্ন আলোকিত মানুষ বিভ্রান্ত হয় না।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৮ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:৫৩:৫১ বিকাল
ইংরেজ কবি রবার্ট ব্রাউনিং এর সুন্দর একটি কথা আছে,' Well, each one strives & who succedes,look at the end of work contrast the petty done,undone vaste.' অর্থাৎ প্রত্যেকে চেষ্টা করে এবং যে উন্নতি করে,কাজের শেষের দিকে তাকাও,সামান্য কিছু কাজ হয় আর ব্যাপক কাজ ব্যার্থ হয়।' বিবেকবোধে জাগ্রত পৃথিবীর সমস্ত মনিষীদের একত্রিত করা হলে ৬০০ কোটি মানুষের মধ্যে সামান্য কিছু মানুষই অালো ছড়িয়েছে।যারা ছিলেন মানবিক গুনে গুনান্নিত।যাদের জীবনে কোন লোভ লালসা কাজ করেনি।পৃথিবী থেকে তারা সুন্দর রুপ রস সংগ্রহ করে মানব জীবনকে করেছেন মহিমান্নিত।আর বেশির ভাগ মানুষ লোভ লালসার বশবর্তী হয়ে হত্যা ও লুন্ঠনের জীবনকে বেচে নিয়েছে।জীবনানন্দ দাস তার একটি কবিতায় বলেছেন,'সেই মহিনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্ত্তিকের প্রান্তরের পরে,প্রস্তর যুগের সব ঘোড়া যেন আজিও ঘাষের লোভে চরে,পৃথিবীর কিমাকার ডায়নামোর পরে।' আমরা পৃথিবীর মানুষগুলো প্রস্তর যুগের ঘোড়া চরিয়ে বেড়াচ্ছি ঘাষের লোভে।'
আজকের একটি বিশেষ শ্রেনী যারা সেই ধর্মান্ধ এবং অন্ধকারের প্রতিনিধি অপশক্তি, যারা অজ্ঞতা, হিংস্রতা ও ঘৃণাকে বানিয়েছে অনন্ত জ্ঞান ও করুণার আধার স্রষ্টার প্রতিনিধিস্বরূপ।তাদের প্রতিটি রক্তবিন্দুতে আঁধারের কনিকা প্রবাহিত হচ্ছে।আজকের আলোকে-ও যদি আমরা ব্যাবধানটি লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো,অপেক্ষাকৃত উন্নত সমাজের সাথে অনুন্নত সমাজের ব্যাবধান হলো- জ্ঞান ও অজ্ঞানতার। উন্নত সমাজে কোনো মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সাধারণত যুক্তি-বুদ্ধিকে প্রয়োগ করা হয় এবং তার বিপরীত মত প্রতিষ্ঠার জন্যও একই ভাবে যুক্তি-বুদ্ধিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা তো স্রষ্টার আরাধনাস্বরূপ। মধ্য যুগের অন্ধকারাচ্ছন্ন ইউরোপে ইসলাম ধর্ম রেনেসাঁ বা নবজাগরণের পথিকৃৎ হয়েছিল জ্ঞানের বাতিঘর হয়ে। বহুমুখী জ্ঞানের অধিকারী ইসলামি আইনের পণ্ডিত ইবনে রুশদ (আভে রোঁশ) যুক্তিনিষ্ঠ মুক্তচিন্তার মশাল হয়ে ইউরোপের বিদগ্ধ সমাজে আলোড়ন তুলেছিলেন। আধুনিক সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনকরূপে অভিহিত ইবনে খালদুন বিভিন্ন দেশ ঘুরে বৈচিত্র্যময় জাতি ও সংস্কৃতিকে বিশ্লেষণ করেছিলেন এবং রাষ্ট্রের উত্থান-পতনের কারণ নির্ণয় করেছিলেন। গণিতবিশারদ আল-খোয়ারি জমি আল-জাবর ও আল-মোকাবিলা পুস্তকে বীজগণিতের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন। এ ধরনের উন্নত চেতনাসম্পন্ন চিন্তাবিদেরা বিরুদ্ধ মতবাদকে ভয় করতেন না বরং তাঁকে জানতে সচেষ্ট হতেন, বিশ্লেষণ এবং খণ্ডন করতেন বুদ্ধিবৃত্তি চর্চার সংস্কৃতিকে লালন করে।আল কুরআনে সূরা আন নাহলের ১২৫ আয়াতে বলা হয়েছে,' তোমার প্রভুর রাস্তায় আহ্বান কর জ্ঞান ও সদুপদেশের দ্বারা এবং তাদের সাথে পর্যালোচনা করো যা শ্রেষ্ঠ।' বিখ্যাত এই উপদেশটি একটি মুসলিম দেশে মুসলমানদের কতজন জানে ও অনুশীলন করে।আমাদের বুঝতে কোন অসুবিধে নেই যে,ইসলাম আমাদের যে পথের কথা বলেছে সেই পথে অধিকাংশ মুসলিম নেই। বাংলাদেশে জনসংখ্যা বছর বছর বাড়তে থাকলেও তাদের লক্ষ্য মানুষ বা জ্ঞানী হওয়া নয়। আমাদের বিদ্যা ব্যবস্থা মানুষ তৈরি না করে তৈরি করছে মানুষের চেহারায় এক ধরনের প্রাণী।
আল কুরআনের ছত্রে ছত্রে মানুষ কী এবং কেন তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। আমাদের দেশে আরবি নামধারী কিছু কিছু তথাকথিত মানুষরূপী মানুষ আছে। তারা সমাজের উচ্চ স্তরে বাস করেন এবং সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ধরনের মানুষেরাই এখন দেশ রাষ্ট্র আইনকে নিজেদের বগলে নিয়ে গেছেন। বিদেশী শাসন মানে ইংরেজ শাসন আমলে ইংরেজরা একশ্রেণীর তথাকথিত শিক্ষিত মানুষ তৈরি করেছে যারা স্বাধীনতার চেয়ে পরাধীনতাকে পছন্দ করেন। কারণ এই মনোভাব তাদেরকে সমাজে সম্মানিত করেছে। ইংরেজদের সেই শিক্ষার প্রভাব এখনো শক্তিশালীভাবে বিরাজমান ও ক্রিয়াশীল। শেখ মুজিবুর রহমান আন্তরিকভাবেই বিশ্বাস করেছিলেন ভৌগোলিক স্বাধীনতা এলেই সব কিছুর সমাধান হয়ে যাবে। তার এ ভাবনা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তিনি সোনার মানুষের কল্পনা করেছিলেন। সেই সোনার মানুষ এই বাংলাদেশে নেই এবং আসল সত্যিকারের মানুষ তৈরি হতে কত সময় লাগবে জানি না।তবে আমাদের অতীত আমাদের বলে,আমরা ছিলাম একটি পরাধীন জাতি।দীর্ঘদিন পরাধীনতার শৃংখলে আবদ্ধ থেকে স্বাধীনতা আমাদের কাছে এলেও তাকে অনুধাবন করতে শিখি নি।অথচ গত চুয়াল্লিশ বছর আমাদের কাছে মহান স্বাধীনতা এলেও আমরা নিজেদের দাসত্ব বৃত্তির বাইরে নিয়ে আসতে পারিনি।আমাদের স্বভাব ও আচার আচরনে ক্ষীপ্রতা,ধৈর্যশীল , শান্ত থাকা এবং অন্তর্দৃষ্টি অর্জন একটি মানুষের মূলমন্ত্র, যা মানুষের অশুভ প্রবৃত্তি দমনে সাহায্য করে,তা আমরা অর্জন করতে পারিনি আমাদের লোভ লালসার কারনে।সূরা ফোরকানের ৬৩ আয়াতে বলা হয়েছে,' ‘পরম করুণাময়ের সত্যিকারের বান্দারা পৃথিবীতে হাঁটে বিনয়সহকারে। অজ্ঞ লোকেরা যখন তাদের আহ্বান করে, তারা বলে “শান্তি”।দীর্ঘকাল লক্ষ্য করে আসছি, আমাদের দেশের মূল ধারার অধিকাংশ বুদ্ধিজীবীই ধর্মের বিষয়টি এড়িয়ে চলেন।তারা মুসলিম নামটি ধারন করলেও ইসলামের মুল জিনিসগুলো এবং নবী রসূলদের উপর কোন আলোকপাত করেন না।এত শত সেমিনার ও আলোচনা হয় কিন্তু সেখানে ইসলামের বারতাকে ছড়িয়ে দেয়া হয় না।অথচ ইসলামের আইন কানুন সমাজকে আলোকিত করে আসছে।ইসলামের নামে অশুভ একটি শক্তি পৃথিবী ব্যাপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে বটে,তবে তারা যে ইসলাম থেকে যোযন যোযন দূরে তা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্প্রদায় আলোকপাত করেন না। ধর্মের মানবিক ব্যাখ্যা প্রদান থেকে তাঁরা বিরত থাকেন। এর ফলে এই শূন্যস্থানটিতে আসন গেড়ে বসে ধর্মের সংকীর্ণ ও অপব্যাখ্যাকারী। বিজ্ঞানমনস্কতা এবং মুক্তচিন্তার সঙ্গে ধর্মের যে সংঘাত নেই, এই ব্যাপারটি মূলধারার আলোচনায় তেমন উঠে আসে না। অন্যদিকে পাশ্চাত্যে বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে সব ধর্মের নির্যাস আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়টি, যা আত্মোপলব্ধির মাধ্যমে অতীন্দ্রিয় জগতের সন্ধান দেয় এবং সমাজে ভারসাম্যতা আনে, তা আরও সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা এবং বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ ফলাফল জ্ঞানের জগতে নতুন মাত্রা প্রাচীন যুগে প্রদান করেছিল।সে সমস্ত যুগান্তকারী আবিষ্কার এবং নতুন পথ দর্শন করেছেন, তাই প্রাযুক্তিক উন্নয়নের ফলে আরও অগ্রসর হয়ে বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতাকে এক সূত্রে গেঁথেছে। আত্মিক উন্নয়নের চাবিকাঠি প্রার্থনা, সুচিন্তা, কৃতজ্ঞতাবোধ, দয়া, দান, ক্ষমাশীলতা প্রভৃতির অনুশীলন যে শরীরের প্রতিটি জীবকোষে, বংশধারায় (ডিএনএ) এবং পারিপার্শ্বিকতায় অসামান্য এবং হিতকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম, তা উল্লেখিত এবং অনুল্লেখিত বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়।মানব ইতিহাসের অতিপ্রাচীন আধ্যাত্মিক জ্ঞান আরও স্বচ্ছ হয়ে ওঠে ও ব্যাপ্তি লাভ করে বিজ্ঞানের শাণিত স্পর্শে। নব্বইয়ের দশক থেকে এই বর্তমান সময় পর্যন্ত মানবদেহের কার্যক্রম, মন, চেতনা সম্পর্কে যে বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে একটি সত্যই ক্রমান্বয়ে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে যে জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সমগ্র মানবজাতি ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের উৎস এক অনন্ত মহাশক্তি থেকে। ভূগর্ভের অতল অন্ধকারে হীরা যেমন লুকিয়ে থাকে, তেমনি সব মানব হৃদয়েও লুকায়িত থাকে স্রষ্টার আলো। এই আলোকে তিলে তিলে খনন করে বের করতে হয় আত্মোপলব্ধি ও আত্মপরিশুদ্ধির হাতিয়ার দিয়ে। যাঁরা সেই সাধনা অব্যাহত রাখেন, তাঁরা হন সমাজের পথপ্রদর্শক। তাঁদের অঙ্কিত পদচিহ্ন অনুসরণ করে নবীনেরা খুঁজে পায় আলোকিত পথের সন্ধান।দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন,মানুষ চার প্রকারের।সোনার মানুষ,রুপোর মানুষ,ব্রোন্জের মানুষ ও লোহার মানুষ।একজন প্রকৃত মানুষ বর্ধিত হয় সর্বগুনে গুনান্নিত হয়ে।শৈশব,কৈশোর,যৌবন ও বার্ধক্যের সময় গুলোতে যে মানুষ যতবেশী পৃথিবীকে দেখে অবাক ও বিস্মিত হয় সে পৃথিবী থেকে সৌন্দর্য নিতে পারে।জীবনকে সৌন্দর্য মন্ডিত করার অর্থ এই নয় যে,নিজেকে প্রাচুর্যে ভরে দিয়ে আয়েশি জীবন যাপন করা।বরং নিজের সব কিছু উজাড় করে দিয়ে সৃষ্টিকে ভালবাসা।রবীন্দ্র নাথ বলেছিলেন,মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে,মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।'একমাত্র জ্ঞানীরা ছাড়া অন্যরা মৃত্যুকে কল্পনা করে না। তারা জানে পৃথিবীতে তারা বেঁচে থাকবে না সেজন্য তাদের প্রতিটি সময়কে তারা কাজে লাগান মানব কল্যানে।একটি কবিতার অংশে একজন কবি বলেছিলেন,'আমি একটি টেবিলে বসে একটি কবিতা লিখছি।হঠাৎ আমার মনে হলো,এ টেবিলটি একটি গাছ ছিল কোন বাগানে বা অরন্যে।তার একটি জীবন ছিল।সে গাছটি ছিল সবুজ ও চিকন চিকন পাতায় ভরা।বাতাস আসলে স্নিগ্ধ হাওয়ায় পাতারা ঝির ঝির করতে থাকতো।সে ছিল সবুজ জীবনময় বৃক্ষ।আজ সে গাছ আমার সামনে একটি মৃত টেবিল হয়ে পড়ে আছে।আমরাও একদিন এই টেবিলের মতই মরে পড়ে থাকবো।আমাদের জীবনের সময়গুলো পার হয়ে যায় অথচ আমরা জানতে পারি না।
'জ্ঞান ও বিবেকের আলোক ছেড়ে দিয়ে অন্ধগলিতে সমাজের অনেক মানুষ যে অবস্হান করে তার সুন্দর গল্প আমরা দেখতে পাই নরেন্দ্র নাথ মিত্রের 'রস' গল্পে।এর মাধ্যমে বাংগালী সমাজের একটি ট্রেজিক ঘটনা উঠে এসেছে।গল্পটি হলো-মোতালেব নামে একজন গাছি,গাছ কাটা ও তা থেকে রস সংগ্রহ করা তার একটি প্রতিভা।প্রতিদিন অনেক রস নিয়ে এসে জাল দিয়ে মিষ্টি তৈরি করে ও বাজারে বিক্রয় করে।কিন্তু গুড় তৈরি করার তার কোন দক্ষতা নেই।সেই দক্ষতা আছে তার স্ত্রী মাজু খাতুনের।দু'জনের দক্ষতায় তৈরি হয় মিষ্টি এবং অনেক খ্যাতি অর্জন করে।কিছুদিনের মধ্যে যখন মিষ্টির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লো এবং অর্থ আসতে থাকলো তখন মোতালেব হঠাৎ তাকিয়ে দেখলো মাজু খাতুনের চেহারা সুন্দর নয়।মাজু খাতুন মোতালেবকে ভালবাসতে গিয়ে গুড় বানাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করার কারনে তার রুপ লাবন্য মলিন হয়ে যায়।শেষ পর্যন্ত মোতালেবের চোখ মাজু খাতুনকে ছেড়ে অন্য একজনের দিকে যায়। তার নাম ফুলবানু ও একজন সুন্দরী যাকে গোপনে বিয়ে করার পরিকল্পনা করে।কিন্তু ফুলবানুর বাবা অনেক টাকা পয়সা দাবি করে।তখন সে পাগলের মত আরো রস আনতে লাগলো।আর মাজু খাতুন নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে স্বামির ভালবাসায় গুড় তৈরি করে।যখন তার টাকা যোগাড় হয়ে গেল,মোতালেব তখন ফুলবানুকে বিয়ে করলো ও মাজু খাতুনকে তালাক দিয়ে দিল।এদিকে মাজু খাতুনের আবার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলো।নাদির শেখ নামে একজন ভাল মানুষ মাজু খাতুনকে বিয়ে করে।ফুলবানু মোতালেবের ঘরে আসলো কিন্তু সে তো আর গুড় বানাতে জানে না।অচিরেই মোতালেবের গুড়ের সুনাম কমে গিয়ে সে সর্বস্বান্ত হয়ে গেল।মোতালেব টের পেলো তার আসল মানুষ ছিল মাজু খাতুন।মাজু খাতুনের যেহেতু বিয়ে হয়েছে সেহেতু তার সাথে দেখা হওয়া তার জন্য পাপ।তার ভীতরে অনুতাপ ও অনুশোচনা আসতে থাকলো যে আমি আমার আসল মানুষকে ছেড়ে দিয়ে নকল মানুষকে নিয়ে এলাম।ইতিমধ্যে দু'একবার নাদির শেখের সাথে তার দেখা হয়েছে।নাদির শেখ সৎ প্রকৃতির মানুষ।দেখা হলে মোতালেবকে তার বাড়িতে আমন্ত্রন জানালো।এ কাথায় অনুপ্রানিত হয়ে একদিন দুই হাঁড়ি রস নিয়ে নদী পার হয়ে নাদির শেখের বাড়িতে উপস্হিত হলো।মাজু খাতুন মোতালেবকে দেখে নাদির শেখের উপর তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।মোতালেব নাদির শেখকে বললো,উনাকে একটু বলুন আমি অন্য কোন কারনে এখানে আসি নাই।আমার আর গুড়ের কোন চাহিদা নাই।আমার সুনাম সব শেষ হয়ে গেছে।আমি দুই হাঁড়ি রস নিয়ে এসেছি, উনি যদি এই রস জাল দিয়ে গুড় বানিয়ে দেন তাহলে হাঁটে নিয়ে বিক্রয় করে আমার পূর্বের সুনাম নিয়ে আসতে পারতাম।' এই গল্পটি থেকে বুঝা গেল মোতালেব পরোক্ষভাবে তার অনুতাপ জানাতে এসেছে।মানুষের বিবেক ও বুদ্ধি যখন দুনিয়ার মোহে পড়ে যায় তখন নিজের সবচেয়ে আপন জিনিসটিও দূরে সরে চলা যায়।কিন্তু যদি জ্ঞানের আলোক থাকে তাহলে একজন মানুষ কখনো বিভ্রান্ত হতে পারে না।
বিষয়: বিবিধ
১৪০৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুবহানাল্লাহ! খুব সুন্দর করে বলেছেন,"আজকের আলোকে-ও যদি আমরা ব্যাবধানটি লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো,অপেক্ষাকৃত উন্নত সমাজের সাথে অনুন্নত সমাজের ব্যাবধান হলো- জ্ঞান ও অজ্ঞানতার। উন্নত সমাজে কোনো মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সাধারণত যুক্তি-বুদ্ধিকে প্রয়োগ করা হয় এবং তার বিপরীত মত প্রতিষ্ঠার জন্যও একই ভাবে যুক্তি-বুদ্ধিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা তো স্রষ্টার আরাধনাস্বরূপ।"
নরেন্দ্র নাথ মিত্রের 'রস'গল্প নিয়ে হিন্দি ফিলম হয়েছিল। মোতালেব ভুমিকায় অমিতাভ বচ্চন অভিনয় করেছিল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন