নিজের মস্তিষ্ক থেকে জঙ্গি ভাবনা দূর করে একজন খাঁটি মুসলিম হোন।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০১:২০:৪৬ দুপুর

বাংলাদেশে যে কোন ইস্যুতে এখন সবাই একটি কথা বলতে পছন্দ করেন আর তা হলো বাংলাদেশ জঙ্গিতে ভরে গেছে।একটি কথা যখন আপনি বেশি বলতে থাকবেন বা আপনি আপনার চিন্তা চেতানয় ধারন করবেন তখন ঘুমের ঘোরেও সে কথাটি প্রতিফলিত হবে।জঙ্গি চেতনা কি আজকের কথা? গত দু'দশক থেকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এরা বাস করে বিভিন্ন নামে।এদের ব্যাবহার করে আসছে কতেক রাজনীতিবিদগন তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য।যারা ইতিপূর্বে এ সমস্ত কর্মকান্ডে ধরা পড়েছে এবং এখনো ধরা পড়ছে তারা আমাদের চার পাশেই বাস করছে।সমাজের মানুষ যখন পারিপার্শিক অবস্হার দিক থেকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত থাকবে ও নিষ্পেষিত হতে থাকবে, একটি শ্রেনী তখন সমাজের উপরের শ্রেনীর ঘুম হারাম করে দিবে।সমাজের একজন নিষ্পেষিত মানুষ যখন দেখে আর একজন রাজনীতির নামে,সমাজপতির নামে অবৈধভাবে ফুলে ফেঁপে উঠে তখন সে তার সুবিধা আদায় করতে চায় বৈধ বা অবৈধ ভাবে।সমাজে যখন সুবিচার থাকে না,আইনের শাসন থাকে না,জীবনের মৌলিক প্রয়োজন আহরনে বাধাগ্রস্ত হয় তখন এই নিষ্পেষিত শ্রেনী মাথাছাড়া দিয়ে উঠে।এর উপর রয়েছে আন্তর্জাতিক একটি চক্র যারা এই নিষ্পেষিত শ্রেনীর একটি অংশকে সহজে ব্যাবহার করে অর্থকড়ির মাধ্যমে।এরা তখন আইনকে নিজের হাতে তুলে নেয়।গত চুয়াল্লিশ বছর ধরে একের পর এক রাজনৈতিক কারনে একের পর এক হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেই চলছে।এই ঘটনাগুলোর মুল কারন না খুঁজে প্রতিহংসার জ্বালা মিটাতে দেখা গিয়েছে সব শাসক শ্রেনীকে।এই প্রতিহিংসা জন্ম দিচ্ছে এক একটি নতুন ইস্যু।যখন কোন একটি ঘটনা ঘটে আমরা কিছুদিন মাতামাতি করি।সবাই ফায়দা লুটতে চাই।রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মাঠ গরম করেন।সংবাদ ও মিডিয়া মাধ্যমগুলো তাদের ব্যাবসা সফল করার জন্য ছোট একটি ইস্যুকেও বড় করে দেখায়।বাংলাদেশ একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ।মুসলমান জঙ্গিবাদি জীবন বেচে নিবে কেন? একজন মুসলমান একজন মানুষকে হত্যা করা দূরে থাকুক সেতো সামান্য কটু কথাও অন্যকে বলতে পারে না।তাহলে কথায় কথায় এই শব্দটি যারা উচ্চারন করেন তাদের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে বলে আমি মনে করি।বরং সরকার সহ দেশের সব মানুষ মিলে আইনের শাসনের মাধ্যমে এই চক্রকে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তিবিধানের মাধ্যমে এই অশুভ শক্তির সমাধান হতে পারে।মানুষের মধ্যে হিংসামনোবৃত্তি ও অপরের ক্ষতিসাধন থেকে একটি অশুভ শক্তির উত্থান ঘটে।এক বা দু'টি ছোট ঘটনা থেকে পাঠক বুঝে নিতে পারেন শয়তান মানুষকে কিভাবে একটি বড় গঠনার দিকে নিয়ে যায়।কয়েক বছর পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত এক ব্যাক্তি তার আত্মীয় ব্যাবসায়ীর সাথে একটি চুক্তির মাধ্যমে ব্যাবসায়ি পার্টনার হলো।দু'জনই বিদেশে ছিলেন।একজন দেশে চলে গেলেন।যিনি এখনো বিদেশে আছেন তিনি দশ লাখ টাকা ব্যাবসায়ে খাটিয়েছেন।টাকা দেয়ার পর কয়েক মাস যোগাযোগ ছিল।বছর খানেক পর হিসাব নিকাশ করতে গিয়ে পার্টনার বললো আমার ব্যাবসায়ে ক্ষতি হয়েছে আর এই টাকা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।দ্বিতীয় পক্ষ এ কথা শুনে আর নিজেকে সংবরন করতে পারে নি।হাতের কাছে ছিল একটি আসবাব ও তা দিয়ে মাথায় আঘাতের সাথে সাথে শেষ হলো আর একজনের জীবন।আর একটি ঘটনা আমার এক বন্ধু তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে একটি বড় অন্কের টাকা ধার নিয়ে শেয়ার বিজনেসে লাগিয়েছিল।কয়েক মাস পর যার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তাকে বললো শেয়ার বিজনেসে ধসের কারনে সব গচ্ছা গিয়েছে।অবশ্য আত্মীয়টি শিক্ষিত ও সামাজিক বিধায় কোন ঘটনায় জড়ান নি।না হলে হয়ত হতাহত হতো।এ রকম হাজার ঘটনা সমাজে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে আছে যা থেকে তৈরি হচ্ছে বিবাদ ও হত্মাজনিত ঘটনা। আমাদের দেশে কোন ঘটনারই বিচারিক কাজটি সঠিকভাবে হয় না।একটি ঘটনা ঘটে গেলে আমরা জেগে উঠি, কিছুদিন পর নতুন ঘটনা ঘটলে পুরনোটি প্রাসঙ্গিকতা হারায়। এভাবেই চলে আসছে বাংলাদেশ গত কয়েক দশক ধরে।হত্যা,অরাজকতা,ব্যাভিচারের সংস্কৃতি আমাদের নিত্যদিনের সংগী।আমরা আমাদের কাজে কর্মে এগুলোকে অস্বীকার করে চলছি।এই অস্বীকারের সংস্কৃতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছি এবং আমাদের যেতে হবে সেটাও আমরা সবাই জানি ও বুঝি।বড় ঘটনাগুলোর মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড,জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ড,অগনিত সেনা সদস্যদের বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড,বিভিন্ন সময়ে গ্রেনেড বোমায় হত্যাকান্ড এবং প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় যে হত্যাকান্ড হচ্ছে তার কোন সুবিচার হচ্ছে না।যেহেতু অপরাধি একটি অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে তখন সে আর একটি অপরাধ করতে কসুর করছে না।এতে অপরাধের মাত্রা বেড়েই চলছে। জঙ্গিবাদের অবস্হানটি বিশ্বব্যাপী।গ্লোবাল ইস্যুগুলোর দিকে যদি গভীর দৃষ্টি দেই তাহলে দেখতে পাবো,যারা জঙ্গিবাদের কথা বেশি বলে তারাই হলো জঙ্গিবাদের হোথা।পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশসমূহ যারা এ কথাগুলোর বেশি উচ্চারন করেন, তারা পৃথিবী ব্যাপী তাদের পেশি শক্তিকে টিকিয়ে রাখার জন্য এদের লালন পালন করেন।গণতন্ত্রের পীঠস্থান ব্রিটেনেও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে, আমেরিকায় কেবল জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেনি বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একক ভাবে দেশে দেশে জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে।ইদানিং ঘটে যাওয়া শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব তাজিয়া মিছিলে বোমা বিস্ফোরণ এবং তাকে ঘিরে যে সকল আলোচনা গত কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি তাতে অনেকেই একথা বলার চেষ্টা করছেন যে, বাংলাদেশে এর আগে কখনও শিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়নি, তাই এই ঘটনা কেবল অভিনবই নয় বরং এটি সম্প্রসারনের আর একটি দিক।মধ্যপ্রাচ্যের তৈল সমৃদ্ধ রাষ্ট্রগুলোকে একের পর ধ্বংস করার পিছনে যে পশ্চিমা দেশগুলোর হাত রয়েছে তা এখন প্রকাশ হচ্ছে,যেমন জন ব্লেয়ার এখন ক্ষমা চাচ্ছেন ইরাকের ব্যাপারে যে, গোয়েন্দা সংস্হা ভুল রিপোর্ট দিয়েছে।ইরাকের মত একটি দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে,লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করে এখন সামান্য ক্ষমা চেয়ে নিলেই ক্ষমা পেয়ে যাবে? স্বাধীনতার সূচনা লগ্ন থেকেই বাংলাদেশ এক ভয়ংকর শাসন শোষন ও সামাজিক বিশৃংখলার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে।বিশেষ করে সত্তরের দশক বা তারপর যে সকল দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে তাদের বেশিরভাগই এখনও পর্যন্ত নিজস্ব কোনও জাতীয় চরিত্র দাঁড় করাতে পারেনি। তাছাড়া বাংলাদেশের মতো দীর্ঘকাল ধরে ঔপনিবেশ (অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়) শাসনে থাকা দেশের ক্ষেত্রে রাতারাতি কোনও জাতীয় চরিত্র দাঁড় করিয়ে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোকে গ্রহণ করবে, এমন ভাবার কোন কারন নেই। আরও বড় বিষয় হলো, দারিদ্র্য ও জনসংখ্যার ছাপ এবং সেই তুলনায় সম্পদের অপ্রতুলতা, বাংলাদেশের পক্ষে মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়ানোটা খুব সহজ কোনও সমীকরণ নয়।আর একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো পাকিস্তানের কথা শুনলেই অনকের গায়ে জ্বালা ধরে।আমাদের মনে কষ্ট আছে সেটি চরম সত্য।কিন্তু আমরা এখন স্বাধীন দেশের অধিবাসি।আমরা এখন গ্লোবাল ভিলেজে বাস করি।আমাদের সমস্ত হিংসা বিদ্দেষ ভুলে গিয়ে জাতিকে বাঁচাতে হবে।আমাদের এখনো জনগনের বিশাল একটি অংশ নিরক্ষর।প্রান্তিক বেশিরভাগ মানুষ অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করছে।সেগুলোর প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে আপেক্ষাকৃত কম ওজনের কথাগুলোর পিছনে আমাদের সময় ব্যায় করতে আমরা বেশি পছন্দ করি। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের যতোই অমিল খোঁজার চেষ্টা করুন না কেন, একথা-তো সত্যি যে, ৪৭-এ দেশভাগের আগে পাকিস্তান আন্দোলনের অগ্রভাগে যাদের উপস্থিতি ছিল তারা কিন্তু বাঙালিই ছিল। পরবর্তীতে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বার্থের টানাপড়েন না ঘটলে বাংলাদেশ আদৌ স্বাধীনতার পথে হাঁটতো কি না, কিংবা ভাষা-সংক্রান্ত জটিলতা বা বাংলাদেশকে নতুন ঔপনিবেশ বানানোর চেষ্টা না করলে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রয়োজনও ঘটতো কিনা তা নিয়ে ভবিষ্যতে হয়তো নতুন আলোচনা হতে পারে কিন্তু এই মুহূর্তে বলার কথা এটাই যে, পাকিস্তানের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক-কাঠামোগত বিন্যাসের সঙ্গে বাংলাদেশের এই সব ক্ষেত্রগুলোর পার্থক্য খুব সামান্যই। যতোই বাঙালি মুসলমানকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক দাবি করার চেষ্টা করা হোক না কেন, পাকিস্তান যেমন ধর্মের কাছে এসে সবকিছু বিলিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায় তেমনই বাংলাদেশেও এই পাকিস্তানপন্থীদের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়।তবে বাংলাদেশে এখনো উগ্রবাদি শ্রেনীটি সেভাবে মাথাছাড়া দিয়ে উঠতে পারে নি। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ, এমন কোনো রাষ্ট্র কি এই মুহূর্তে আছে যেখানে আজকে বাংলাদেশ যে ধরনের সমস্যার মুখোমুখি সে ধরনের সমস্যা নেই? আরেকটু বাড়িয়ে বলতে গেলে, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান যে অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, একমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের তেলসর্বস্ব রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামো ছাড়া আর সব মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র কি ওই পথে ধাবমান নয়? আমাদের মত দেশের পক্ষে যে কাজটি করা উচিত তা হলো-যেহেতু আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সেহেতু আমাদের ধর্মের মুলমন্ত্রগুলো মেনে চলে খাঁটি মুসলিম হতে হবে।ইসলামে জঙ্গিবাদের কোন আশ্রয় নেই।যারা এই জুজুর ভয়টি আমাদের দেখান,তারা তাদের দেশ থেকে এটিকে মুক্ত করতে পারেন নি কারন এটির সৃষ্টিকর্তা তারাই।

বিষয়: বিবিধ

১২৭২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

347375
২৭ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০২:০১
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : সব কয়টা পড়ি তবে মন্তব্য করতে পারি না। আপনার চিন্তাগুলো আমাদেরকে শানিত করে। শিখায় অনেক কিছু।
আজকের বিষয়টি খুবই চমতকার হয়েছে। আপনার সাথে একমত।
যারা এই জুজুর ভয়টি আমাদের দেখান,তারা তাদের দেশ থেকে এটিকে মুক্ত করতে পারেন নি কারন এটির সৃষ্টিকর্তা তারাই।
একেবারে বাস্তব সত্য।
347377
২৭ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০২:২০
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : জঙ্গিবাদ উত্তানের কারন হলঃ
#### অনেক মুসলিম আছে যারা "ইসলাম" শব্দের অর্থ জানে না। যার ফলে তারা বিপদ গামী হয়।
#### কোন মানুষ যখন দোষ না করেও রাজনৈতিক বা ধর্মীয় করানে "জঙ্গি" তকমা বহন করে করতে হয়। তারাও এক সময় অতিষ্ট হয়ে "বিপদ" গামী হয়।
#### সত্য ঘটনা প্রচারের পরিবর্তে নিজ মতাদার্শ প্রচারের সুবিধাত্বে যখন মিড়িয়াতে সব ঘটনাকে নিয়ে "জঙ্গী হামলা" তত্ব প্রচার করে তখন মানুষ এর দ্বারা প্রভাবিত হয়।
#### শ্বীকার করেন বা নাই করেন এটা সত্য যে, উপরে উপরে যথই জঙ্গি বিরোধী মনোভাব দেখাকনা কেন অধিকাংশ ইসলাম বিদ্ধেষিরাই মুসলিম জঙ্গিবাদের প্রধান সমর্থক। কারন এতে তারা সহজেই ইসলামের বিরোদ্ধ যুত্তি দেখাতে পারবেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File