আল্লাহর সৃষ্টির সবকিছুই পানি থেকে সৃষ্ট।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৪ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:২০:৩৬ রাত

পানি থেকে সব সৃষ্টি ও পানি ছাড়া কোন প্রানী বাঁচতে পারেনা।জীবন্ত সব কিছুই পানির উপর নির্ভরশীল।খাবার ছাড়া মানুষ অনেকদিন বেঁচে থাকতে পারে কিন্তু পানি ছাড়া প্রানী বেশি দিন বাঁচতে পারে না।কয়েক বছর আগে সাভারে যে মহাবিপর্যয় ঘটেছিল সেখানেও আমরা দেখেছি সেই হতভাগা মানুষগুলো পানি পানি করে চিৎকার করেছিল ও ১১০০ এর অধিক জীবন প্রদীপ নিভে গিয়েছিল।সূরা আল আম্বিয়ার ৩০ আ্য়াতে আল্লাহ বলেন,' যারা অবিশ্বাস পোষন করে তারা কি দেখে না যে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী একাকার ছিল,তারপর আমরা এ দু'টিকে বিছ্ছিন্ন করে দিলাম আর পানি থেকে আমরা সৃষ্টি করলাম প্রানবন্ত সবকিছু,তারা কি তবুও বিশ্বাস করবেনা? পৃথিবীর চার ভাগের তিনভাগই পানি দ্বারা পরিবেষ্টিত।মেডিকেল সাইন্স বলে সাধারন একজন মানুষের দেহে ৭০% পানি আছে।পৃথিবী নামক এই উপগ্রহটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে সাগর ও মহাসাগরের পানি যাকে বলা হয় প্রানী জীবনের চাবিকাঠি।পানি যেমন মানব জীবনের বাঁচার জন্য অতি প্রয়োজনীয় তেমনি পানি থেকে উৎপন্য হয় বিদ্যুৎ,শস্য উৎপাদন হয় পানির দ্বারা ও অন্যান্য জীবজন্তু ও তৃনলতা ও গুল্ম জন্মায় পানিরই সাহায্যে।আমরা অতি প্রাচীন সভ্যতা তথা আমাদের মক্কা নগরী উথ্যানের ইতিহাস থেকে জানতে পারি পানির কারনেই লোকালয় গড়ে উঠেছিল।হযরত ইব্রাহীম আ: যখন মা হাজেরা ও শিশু ইসমাইল আ: কে রেখে চলে গেলেন তখন ই সমাঈল আ: এর পায়ের খোঁচায় ঝমঝম কূপের আবির্ভাব হলো।আরব বনিকরা দেখতে পেল এর উপরে পাখি উড়ছে।সাধারনত যেখানে পানি থাকে সেখানেই পাখির আনাগুনা থাকে।তারা সে পথ ধরে এসে দেখলো মা হাজেরা ঝমঝমের রক্ষনাবেক্ষন করছে।তারা প্রস্তাব দিল সেখানে বসতি গড়ার।আর সে থেকে মক্কা নগরি এখন লোকে লোকারন্য।কোথাও পানি না থাকলে আমরা দেখতে পাই সেখানে ফসল যেমন উৎপাদিত হয় না তেমনি মানুষের বাসও অনুপযোগী হয়ে পড়ে।আমাদের দেশে শুষ্ক মৌষুমে আমরা এর আলামত দেখতে পাই।বিশেষ করে উত্তর বঙে মানুষ পানির জন্য হাহাকার করতে থাকে।বৃষ্টি না থাকলে ফসল পুড়ে শেষ হয়ে যায়।বিশেষ করেএকবিংশ শতাব্দিতে খাবার পানির যে প্রকট তা পৃথিবীর মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।এই পানি যে আল্লাহর একটি বিশেষ নেয়ামত তা আমরা খুব কমই চিন্তা ভাবনা করি।ফারাক্কার কারনে আমাদের দেশের অধিকাংশ নদীগুলো মরে যাচ্ছে।সেজন্য শুষ্ক মৌষুমে আমরা পানির জন্য হাহাকার করতে থাকি।আবার বর্ষা মৌষমে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারনে বৃষ্টির পানি ও ফারাক্কার ছেড়ে দেয়া পানি আমাদের যখন প্লাবিত করে তখন আমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি।পরিমিত পানি না থাকলে যেমন জীবন ধ্বংসের দিকে যায় আবার অতিরিক্ত পানিও জীবনকে বন্যা কবলিত করে ধ্বংস করে দেয়।আমরা যদি খাবারের দিকে তাকাই সেখানেও দেখি একটা বিরাট পার্সেন্ট পানি ধারন করে আছে।মাংস থেকে একটা উদাহরন যদি নেই দেখবো ৫০% - ৭৫% পানি থাকে এই খাবারে।আবার সবুজ শাকশব্জিতে ৯৫% পানি থাকে।একটা নবজাত শিশুর শরিরে(৭৪%) বেশি পানি থাকে বয়স্কদের তুলনায়।বাতাসের পর পানি হলো জীবনের বাঁচার দ্বিতীয় উপকরন।এটা আল্লাহর একটি বিশেষ নিদর্শন যে কোন মানব খাদ্য ছাড়া অনেকদিন বাঁচতে পারে কিন্তু পানি ছাড়া এক বা দুই দিন ও বাঁচা অসম্ভব।সূরা মুলকের ৩০ আয়াতে আল্লাহ আবার বলেন,' তোমরা কি ভেবে দেখেছ? যদি তোমাদের পানি সাত সকালে ভূগর্ভে চলে যায় তাহলে কে তোমাদের জন্য নিয়ে আসবে প্রবহমান পানি? আমাদের শরিরে যে দুটি মহামুল্যবান কিডনি রয়েছে যার মাধ্যমে আমাদের সমস্ত বর্জ পদার্থ পানির মাধ্যমে পরিষোধিত হয়।যারাই এই কিডনি সন্ক্রান্ত রোগে ভোগেন তাদের অন্যতম কারন যথেষ্ট পানি পান না করা।কিডনি ডেমেজ হওয়ার কারন হলো পানি পান না করা।আমরা যে খাদ্য গ্রহন করি পানি তা হজমে সাহায্য করে।আমাদের শিরা উপশিরা গুলোতে রক্তের সাথে পানি চলাচলে সহায়তা করে।আমাদের শরিরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় পানির মাধ্যমে।আমাদের জয়েন্টে পানি তৈল বা গ্রিজ এর মত কাজ করে।যারা জয়েন্টের ব্যাথায় ভুগেন তাদের অবশ্যই যথেষ্ট পরিমান পানি পান করা উচিত।এই জন্য ডাক্তারগন অধিক পানি পান করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।আমাদের অনেকেই পানির পরিবর্তে বিভিন্ন রকমের জুস,চা , কফি ও সফট ড্রিনকস পান করেন।এগুলো পানির বিকল্প হতে পারে না।আল্লাহ তায়ালা পানির মধ্যে এমন উপকার রেখেছেন যা সমস্ত প্রানীগগৎকে বাঁচার উপযোগী করে রেখেছে এই পৃথিবীতে।তবে আমাদের খাঁটি পানি পান করা উচিত।অনুন্নত দেশগুলোতে পানির কারনে হাজার হাজার শিশু মৃত্যু ঘটছে।পানিবাহিত রোগগুলো প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের সচেতনতা ও ব্যবসায়ি মহলকে দায়িত্বশিল হতে হবে।গ্রাম অন্চলে বদ্ধ পুকুরের পানি ও নালা থেকেও কৃষক মজুরদের পানি পান করতে দেখা যায়।স্হানীয় সরকারি মহলকে এ ব্যাপারে মানুষকে শিক্ষিত করা ও পানির কল থেকে যেন পানি পান করে সে পরামর্শ দিতে হবে।আর পানির অপচয় যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।অনেকে পানি যথেচ্ছ ভাবে খরচ করে,আবার অনেকে টেপ ছেড়ে রাখে এতে করে পানির সংকট বয়ে আনবে।পানি যেহেতু আমাদের জীবনের সাথে জড়িত তার প্রতি আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া ও পানির অপচয় রোধে চেষ্টা করা অবশ্য কর্তব্য।

বিষয়: বিবিধ

১২৩৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

347083
২৪ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১০:৩৭
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File