আল্লাহ পাক বান্দাহর ডাকে সাড়া দেন।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১২ অক্টোবর, ২০১৫, ০৬:১৬:১৬ সন্ধ্যা

মু'মিন বান্দাহ বা বিশ্বাসী বান্দাহ যখন গভীর বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহকে ডাকে আল্লাহ পাক তার ডাকে সাড়া দেন।এমনকি কোন কাফেরও যখন নিরুপায় হয়ে আল্লাহকে ডাকে আল্লাহ রহমান ও রাহিমের রহমে ঢেউ উঠে।তিনি তার ডাকেও সাড়া দেন।সম্মানিত পাঠক! ফেরাউন আল্লাহ পাকের প্রভূত্বকে চ্যালেন্জ করেছিল।আল্লাহর পরিবর্তে নিজেকে রব হিসেবে দাবি করেছিল।সে মানুষকে বলতো,'আমিই তোমাদের রব।'মিশর তখন থেকে কৃষি প্রধান অন্চল ছিল।কৃষকরা নীলনদের পানি দ্বারা চাষবাস করতো।দীর্ঘকাল বৃষ্টি বন্ধ এবং নদী শুকিয়ে গিয়েছিল।গবাদি পশুগুলো হাহাকার করছে।মাঠ ঘাট ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে।ফেরাউনের লোকজন এসে ফেরাউনকে বললো তুমি তো আমাদের প্রভু।আমাদের জন্য বৃষ্টির ব্যাবস্হা করুন।ফেরাউন বললো যাও আমি দেখছি।দ্বিতীয় বার তারা আবার আসলো এবং বললো আমাদের জন্য পানির ব্যাবস্হা করুন নতুবা আমরা এলাকা ছেড়ে চলে যাব ও অন্য কোন রবকে পূজা করবো।ফেরাউন তখন দরজা বন্ধ করে তার চেহারাকে মাটির সাথে লাগিয়ে বললো,হে আসমান ও জমিনের স্রষ্টা!আমি জানি তুমি রব।আমি মিথ্যা দাবি করেছি যে আমি রব।তুমি দয়া করে আমাকে বাঁচাও,বৃষ্টি দাও।আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেছেন।ফেরাউন একজন বিদ্রোহী হলেও যখন বিনয়ের সাথে আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পন করলো আল্লাহ তার কথা শুনলেন।এর পর প্রচুর বৃষ্টি হলো।নদীতে পানি প্রবাহিত হতে লাগলো।মরা মাঠগুলো আবার সজীব হয়ে উঠলো।সবুজ শ্যামল তৃনলতা বের হতে লাগলো।লোকজন খুবই খুশি হলো ও ফেরাউনকে সম্ভাষন জানালো।এক পর্যায়ে বিশাল মানুষের ময়দানে একজন বৃ্দ্ধ লোক তার কাছে এসে বললো,আমার একটা বিচার করে দিতে হবে।ফেরাউন বললো ,অনুষ্ঠান শেষ হোক তার পর বিচার ফায়সালা করে দেয়া হবে।বৃদ্ধ লোকটি ছিল নাছোড়বান্দা ও বললো আমাকে এখনি ফায়সালা দিতে হবে।ফেরাউন বললো কি চাও? বৃদ্ধ লোকটি বললো,আমার কয়েকজন চাকর আছে এবং ওদের মধ্য থেকে একজনকে আমি ক্ষমতা দিয়েছি।কিন্তু আমি ক্ষমতা দেয়ার পর সে আমার প্রিয় চাকরগুলোর সাথে খারাপ ব্যাবহার করা শুরু করলো।আমি যাকে অপছন্দ করি তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক করলো এবং আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলো।এই চাকরের কি বিচার হওয়া দরকার আপনাকে রায় দিতে হবে।ফেরাউন বললো এই ধরনের বিদ্রোহী চাকরকে পানিতে চুবিয়ে মারা দরকার।লোকটি বললো এটি আপনাকে লিখে দিতে হবে এবং ফেরাউন তা-ই করলো।এই বৃদ্ধ লোকটি ছিল ফেরেস্তা।যেদিন ফেরাউন লোহিত সাগরে ডুবে গেল ও হাবুডুবু খাচ্ছে তখন সেই ফেরেস্তা ফেরাউনকে বললো এটি আপনার দেয়া রায়।আপনি বলেছেন কোন চাকরকে ক্ষমতা দেয়ার পর মুনিবের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করবে তাকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করা উচিত।আল্লাহ আপনাকে মানুষের উপর ক্ষমতা দিয়েছিল কিন্তু আপনি আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন বলে আপনার রায়ই আপনার জন্য কার্যকরি হলো।এই ঘটনা দ্বারা বুঝা যায় একজন অমুসলিম ও যখন বিপদে পড়ে বিনয়ের সাথে আল্লাহর কাছে চায় আল্লাহ পাক তার দোয়াকে কবুল করেন।আর মুসলমান যখন বিপদে পড়ে ইয়া রাহমান,ইয়া রাহিম বলে কান্নাকাটি করবে কেন আল্লাহর রহমত নাজিল হবে না,নিশ্চই হবে।সিরাতে মোস্তফা গ্রন্হে উল্লেখ রয়েছে একজন সাহাবি পথ দিয়ে যাচ্ছেন।অপরিচিত একজন লোক বললেন আমাকে সাহায্য করুন,আমি আপনার সাথে সাথি হব।লোকটি ছিল একজন ডাকাত।আল্লাহর রসূলের সাহাবি তাকে সাহায্য করার নিয়তে সাথে নিয়ে নিল।লোকটি একপর্যায়ে চুরি বের করলো ঐ সাহবাকে হত্যা করার চেষ্টা করলো।তখন সাহাবা ডাকাতকে বললো আমাকে দু'টি রাকাত নামাজ পড়ার সুযুগ দাও।তিনি আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করলেন ইয়া রাহমান ,ইয়া রাহিম বলে।নামাজের সালাম ফেরানোর সাথে সাথে একজন ফেরেস্তা আল্লাহ পকা প্রেরন করলেন।ফেরেস্তা এসে ঐ ডাকাতকে আক্রমন করলো ও হত্যা করে ফেললো।সাহাবি তাকে বললো আপনি কে আমার এই বিপদের মুখে আপনি এসেছেন।ফেরেস্তা বললো আপনি রাহমান ও রাহিম বলে যাকে ডেকেছেন সেই আল্লাহ আমাকে প্রেরন করেছেন আপনাকে উদ্ধার করার জন্য।পাঠক বৃন্দ! আল্লাহর যে কোন বান্দাহ যখন বিপদগ্রস্ত হয়ে খালেস অন্তরে যখন আল্লাহকে ডাকে আল্লাহ পাক বান্দাহর ডাকে নিশ্চুপ থাকতে পারেন না।আমরা যে কোন বিপদে মানুষের স্মরনাপন্য না হয়ে আল্লাহ পাকের স্মরনাপন্য হলেই আল্লাহ খুশি হবেন ও আমাদের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবেন।এটি আল্লাহ পাকের ওয়াদা।তিনি কখনো তাঁর ওয়াদা ভংগ করেন না।কিন্তু আল্লাহর কাছে চাইতে হবে চাওয়ার মত।চাওয়ার যে শর্ত আছে তা আমাদের পূরন করতে হবে।শর্ত পূরন না করে কোন দরখাস্ত করলে তা কি কখনো কবুল হয়? অনুরুপভাবে দোয়া করার জন্য কিছু শর্ত আছে সেগুলোকে আমাদের পূরন করতে হবে।আসুন শর্তগুলো জেনে নেই:

১-মুসলিম শরিফের বর্ননায়(হাদিস নং ১০১৫) এসেছে একজন মানুষ ধর্মীয় সফরে গিয়ে আল্লাহকে ডাকে ইয়া রব,ইয়া রব করে কিন্তু আল্লাহ পাক তার ডাকে কর্নপাত করেন না।কারন তার পোষাকটি হারাম পয়সার,তার খাবারটি হারাম পয়সার।এ অবস্হায় কেন আল্লাহ পাক তার ডাকে সাড়া দিবেন।সূরা আল মু'মিনুনের ৫১ আয়াতে বলেন,'তোমরা হালাল খাও।' এজন্য প্রতিটি মু'মিনের কাজ হলো হালাল রোজগার করতে হবে ও হালাল খেতে হবে।দোয়া কবুলের এটি প্রধান শর্ত।পাঠকবৃন্দ এখন দেখুন! আমাদের মধ্যে কতজন পাবেন যে তাদের হালাল অর্জন আছে।আমরা ঘুষ - সুদ খাচ্ছি,খাবারে ভেজাল মিশিয়ে ব্যাবসা করছি,জিনা ব্যাভিচার করছি,গীবত ও চোগলখুরি করছি,অন্যের সম্পদ হরন করছি,মানুষ হত্যা করছি।অসংখ্য খারাপ কাজ আমাদের জীবনের সাথে জড়িত আর আমরা ইসলামের ইবাদত গুলো করছি।এ অবস্হায় আমাদের দোয়া কবুল হয় কিনা আমাদের ভেবে দেখা উচিত।

২-মানুষকে ভাল কাজে আদেশ ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে।অন্যায় দেখেও যারা চোখ বুজে সহ্য করে থাকে তাদের দোয়া আল্লাহ পাক মন্জুর করেন না।তার প্রমান রয়েছে সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৪০০৪ এ।হযরত আয়েশা রা: বর্ননা করেন,একবার আল্লাহর রসূল সা: ঘরে প্রবেশ করলেন।তাঁর চেহারা খুবই বিবর্ন মনে হলো যেন কোন বিপদ এসেছে।তিনি তাড়াতাড়ি ওজু করে মসজিদে গেলেন।হযরত আয়েশা রা: বললেন আমি কান লাগিয়ে শুনলাম তিনি মসজিদে গিয়ে কি বলেন।তিনি মিম্বরে গিয়ে বললেন,হে মানুষেরা তোমরা ভাল কাজের আদেশ কর ও নিষেধ কর খারাপ কাজ থেকে।যদি তোমরা তা না কর তাহলে তোমরা আল্লাহর কাছে চাইবে কিন্তু আল্লাহ পাক তোমাদের চাওয়াকে পূরন করবেন না।আল্লাহ কে ডাকবে আল্লাহ পাক সাড়া দিবেন না।'আমরা যদি আমাদের দোয়া মন্জুর করতে চাই তাহলে আমাদের সমাজ থেকে পন্কিলতা দূর করার জন্য ভাল কাজের আদেশ ও খারাপ কাজের নিষেধ করার জন্য যার যতটুকু ক্ষমতা আছে তা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

৩-দোয়া মন্জুর হবে এমন মনোভাব নিয়ে দোয়া করতে হবে।বান্দাহ যখন তার কাজে নিজেকে দৃঢ় মনোবলে তৈরি করবে নিশ্চই আল্লাহ ক্ষমা করবেন।একজন ভাল ছাত্র, যে সারা বছর পরিশ্রম করে পড়াশুনা করেছে,নিশ্চই তার এমন মনোবল তৈরি হয়েছে যে সবার চেয়ে ভাল করবে।ঠিক একজন ঈামানদার বান্দাহও নিজে জানে সে প্রতিনিয়ত আল্লাহর হক নষ্ট করে না।মানুষের কল্যানে নিবেদিত থাকে।এমন মনোবল যখন তৈরি হয় তখন নিশ্চই আল্লাহর কাছে দোয়া মন্জুরের আশা করতে পারে।দোয়া করে এমন কথা বলা নিষেধ যে-আল্লাহর কাছে এত দোয়া করলাম কিন্তু কবুল হলো না বা আল্লাহ আমার কথা শুনেন না।এই কথাগুলোকে হাদিসের ভাষায় বলা হয়, যারা দোয়া করে তাড়াহুড়ো করে তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না।দোয়ার কিছু পদ্ধতি আছে সে পদ্ধতিতে দোয়া করলে আল্লাহ পাক দোয়া মন্জুর করেন।সেটি হলো স্হান ও সময়।স্হাংুলোর মধ্যে ক্কাবা তওয়াফের সময়,আরাফাতের ময়দানে,মিনায়,মুযদালিফায়,হজরে আসওয়াদের কাছে, ক্কাবা শরিফের দরজায় মুলতাজিমে,হাতিমে ক্কাবার ভেতর দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করেন। কিছু সময় আছে যে সময়ে দোয়া কবুল হয়।আমাদের কাছে প্রতিদিন সে সময়গুলো আসে।গভীর রাতে বান্দাহ যখন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে উঠে,আল্লাহপাক তখন প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং বান্দাহকে বলেন,কোন বিপদগ্রস্ত আছ যে বিপদদূরিকরনে সাহায্য চাইবে আমি সাহায্য করবো,কোন অভাবি আছে যার অভাব আমি দূর করবো,কোন অসুস্হ লোক আছ রোগ মুক্তি চাও আমি রোগমুক্ত করবো।এভাবে আল্লাহ পাক বান্দাহকে ডাকতে থাকেন।আযান ও ইক্কামতের মাঝখানে,ফরয নামাজের পর,জুমআর দিন নির্দিষ্ট একটি সময় আছে কিন্তু এই সময়টির ব্যাপারে বিভিন্ন মতামত রয়েছে তবে ঈমাম যখন খুতবা দিতে মিম্বরে উঠে ও খুতবা শেষ করা পর্যন্ত সময়,একই দিন আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত এই সময়টি দোয়া কবুলের সময়।দোয়া কবুল হওয়ার জন্য ওজু থাকা মোস্তাহাব।হাত তুলে দোয়া করা মোস্তাহাব।দোয়া করতে প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে প্রথমে।রসূল সা: এর উপর দুরুদ পাঠ করতে হবে।নিজের জন্য দোয়া,বাবা মা'র জন্য দোয়া,পরিবারের জন্য দোয়া,আত্মীয় স্বজন,বন্ধুবান্ধব,শিক্ষক ছাত্র,শুভাকাংখী,সকল মুসলিম নরনারীর জন্য দোয়া করতে হবে।সূরা ইব্রাহীমের ৩৫ -৪১ আয়াতে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন।তিনটি বিষয়ে উসিলা দিয়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।আল্লাহ পাকের পবিত্র নাম নিয়ে দোয়া করা।সূরা আ'রাফের ১৮০ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'আল্লাহর হচ্ছে সবচেয়ে ভাল নামাবলী।কাজেই তাকে ডাক সেই সবের দ্বারা।' দ্বীনদার মানুষের কাছে দোয়া চাওয়া যায় যারা জীবিত আছেন।যারা আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করেন।রসূল সা: এর সূন্নত মত জীবন যাপন করেন।যেমন হযরত ওমর রা: এর সময় বৃষ্টি হচ্ছিল না।সালাতুল ইস্তেষ্কার নামাজ তিনি আদায় করেছিলেন।আল্লাহর রসূল সা: এর চাচা আব্বাছ তখন জীবিত ছিলেন।ওমর রা: বললেন হে আব্বাছ আপনি রসূল সা: এর চাচা আপনি দোয়া করুন।ভাল নিজের কোন আমল দিয়ে দোয়া করলে আল্লাহ দোয়া মন্জুর করেন।বোখারি শরিফে প্রশিদ্ধ একটি হাদিস রয়েছে।তিনজন ব্যাক্তি রাস্তায় যাচ্ছিলেন।হঠাৎ ঝড় শুরু হলো।তারা তখন পাহাড়ের একটি গুহায় আশ্রয় গ্রহন করে।পাহাড়ের উপর থেকে একটি বড় পাথর এসে গুহার মুখটি বন্ধ হয়ে যায়।তাদের শ্বাঁস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলো।তখন তারা তিনজন পরামর্শ করলো আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে ভাল আমল দিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করবো।একজন দোয়া করলো-হে আল্লাহ আমার চাচাতো বোন ছিল।তার সাথে আমার প্রেম ভালবাসা ছিল।একদিন একাকি আমি তাকে পেয়েছিলাম।তার সাথে ফাহেসা কাজটি করতে চেয়েছিলাম।আমার চাচাত বোন বললো কোন মানুষ নেই কিন্তু আল্লাহকে ভয় কর।হে আল্লাহ তার এই কথা শুনে তোমাকে ভয় করে আমি অন্যায় করি নাই।হে আল্লাহ আমার এই কাজটি পছন্দ হলে আমাকে বিপদ থেকে উদ্ধার কর।এই দোয়া করার সাথে সাথে পাথরটি একটু সরে যায়।আর একজন ব্যাক্তি দোয়া করলো হে আল্লাহ প্রতিদিন আমার মা'কে খাইয়ে আমি আমার সন্তানদের খাওয়াতাম।সারাদিন কাজ করে দুধ নিয়ে আসতাম প্রথমে মা'য়ের হাতে তুলে দিতাম তারপর সন্তানদের খাওয়াতাম।একদিন রাতে ফিরতে দেরি হয়ে গেল।এসে দেখলাম মা ঘুমিয়ে গেল।আমি সন্তানদের দিলাম না এবং মাকে ও ঘুম থেকে জাগাই নি।মা যখন নিজ থেকে জাগলেন তখন আমি তাকে দুধ দেই ও পরে আমার পরিবারের অন্যদের খাওয়ালাম।হে আল্লাহ মায়ের প্রতি যে মর্যাদা আমি দেখালাম এটা তোমার পছন্দ হলে আজকের বিপদ থেকে আমাকে উদ্ধার কর।এই দোয়ার ফলে পাথরটি আর একটু সরে গেল।তৃতীয় ব্যাক্তি বললো আমার একজন চাকর ছিল,পয়সা না নিয়ে চলে গেল।আমি চিন্তা করলাম গরীব লোকটির এই পারিশ্রমিক দিয়ে আমি তার জন্য বিনিয়োগ করি।আমি ছাগল ক্রয় করলাম তার পয়সা দিয়ে।কিছুদিনের মধ্যে ছাগলের একটি পাল হয়ে গেল।লোকটি ফিরে এসে আমাকে বললো আমার পারিশ্রমিক যদি দেন।আমি তাকে বললাম সবগুলো ছাগল তুমি নিয়ে যাও।লোকটি ভাবলো আমি তাকে উপহাস করছি।কিন্তু আমি তাকে বললাম তোমার পয়সা দিয়ে আমি ছাগল ক্রয় করেছি ও সেটি থেকে এ ছাগলের পাল।তুমি সব নিয়ে যাও।হে আল্লাহ তুমি যদি একজন গরীবকে সহযুগিতা করার কারনে খুশি হও তুমি আমাকে বিপদ থেকে উদ্ধার কর।পাথরটি এর পর পুরপুরি সরে যায়।এ হাদিস থেকে বুঝা যায় নিজের জীবনের ভাল আমল দিয়ে আল্লাহর কাছে আমি চাইতে পারি। আমরা সব সময় চেষ্টা করবো যেন শর্ত গুলো পূরন করে স্হান কাল পাত্র ভেদে দোয়া করি ।একটু চেষ্টা করলে ব্যাক্তিগত পরিশুদ্ধতা নিয়ে আসতে পারি।আমরা যদি মনে করি কোন হারামের কাছেও যাব না, তাহলে দেখবেন আমার আর আপনার এই মনোবলের কারনে আল্লাহ পাক শক্তি দিয়ে দিবেন।আর আল্লাহর পথে থাকা ও ভাল কাজের মধ্যে থাকার মাধ্যমেই এটি সম্ভব।খারাপ সংঘ থেকে দূরে না থাকলে ব্যাক্তি জীবনের পরিশুদ্ধতা কখনো আসবে না।সৎ ও ভাল মানুষের সাথে চলাফেরার মাধ্যমে জীবনের একটি পরিবর্তন সূচিত হয়।বান্দাহ যখন ভাল কাজ করতে করতে এগিয়ে যায় তখন একটি সময় আল্লাহর সাথে তার সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে।তার দ্বারা আর কোন খারাপ কাজ হয়ে উঠে না।এ রকম অন্তর তৈরি হলে আল্লাহ তার ডাকে সাড়া না দিয়ে পারেন না।ভাল মানুষ হওয়া একটি অনন্তর প্রচেষ্টার নাম।একদিনে কারো পক্ষে ভাল একজন মানুষ হয়ে যাবে তা কল্পনা করা যায় না।ধৈর্য , পরিশ্রম ও কুরআন হাদিসের অনুশীলনের মাধ্যমে একজন মানুষ তার চিরত্রকে উন্নত করতে পারে।আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে ভালবাসার মাধ্যমে নিজের অন্তরকে পরিচ্ছন্ন করে আল্লাহর কাছে চাইতে যাওয়াই হলো বান্দাহর কাজ আর আল্লাহ পাক এ অন্তরকেই কবুল করে নেন।

বিষয়: বিবিধ

২৮১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File