হিজরতে বর্তমান মুসলমান।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১১ অক্টোবর, ২০১৫, ০৪:৩১:৪১ বিকাল

'হিজরত' শব্দটি আমাদের অনেকের জানা থাকলেও এর তাৎপর্য ও বিশেষত্ব আমাদের অনেকের জানা নেই।প্রতি বছরের মত আর একটি বছর আমাদের থেকে বিদায় নিচ্ছে।গত একটি বছর আমাদের জীবন থেকে চলে গেল এবং আমরা মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি।আমাদের পার্থিব হিসেব নিকেশে আমরা তৎপর কিন্তু পরকালীন হিসেব নিকেশের কথা নিশ্চই অনেকে ভুলে বসে আছি।আমাদের কাছে নতুন বছর আসে তিন'ভাবে।একটি ইংরেজি সন যা যিশুখ্রীষ্ঠের নামে নামকরন করা হয়েছে,একটি হলো বাংলা সন ও আর একটি হলো মুসলমানদের হিজরি সন বা ইসলামিক ক্যালেন্ডার।হিজরি সন অনুযায়ী নতুন মাসটির নাম হলো মহররম।ইসলামে এই সনের গুরুত্ব অনেক বেশি।পাশ্চাত্যের মত আমাদের দেশেও নববর্ষ আসলে যেমন বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা দিয়ে পসরা সাজানো হয় বিশেষ করে আমাদের মিডিয়াগুলো ব্যাবসায়িক কারনে পাশ্চাত্যেকেও হারিয়ে দেয়।এক সময় মানুষ বাংলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য অপেক্ষা করে থাকতো।এখন আর তা নয় সারা বছরই অনুষ্ঠান চলে।ইংরেজি সাল শুরু হয় ডিসেম্বর শেষ হয়ে জানুয়ারীতে।যেমন দেখা যায় ৩১শে ডিসেম্বর রাতে সারা পৃথিবী ব্যাপী হৈহুল্লোড়।অমুসলিমদের সাথে মুসলিমরাও পাল্লা দিয়ে সে সব অনুষ্ঠান পালন করে।কিন্তু ইসলামিক ক্যালেন্ডারে নতুন দিন যখন আসে কোন সেলিব্রেশন থাকে না আর ইসলামে কোন নির্দেশনাও নেই।তবে এই বিষয়টি জানা একটি ইবাদত।মুহররম আসলে মাসটি সম্পর্কে জানা একটি সূন্নত।ইংরেজি একটি সাল আমাদের কাজ কর্মের জন্য জানা থাকলে ভাল।আমরা আমাদের ব্যাবহারিক কাজ করতে পারি।কিন্তু এটি জানার মধ্যে কোন সওয়াবের ব্যাপার নেই।কিন্তু আমরা যদি জানি আজ মুহরমের এক তারিখ বা চাঁদ দেখে দোয়া করি তাহলে আমাদের জন্য কল্যান রয়েছে।ইসলামে সূন্নাহ হলো যখন নতুন চাঁদ উদিত হয় তখন আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া করি-'হে আল্লাহ! এই নতুন চাঁদটিকে যা আজ উদয় হলো সেটিকে আমাদের জন্য মংগলজনক কর, ঈমানের সাথে ব্যায়ের সুযুগ করে দাও এবং ইসলাম ও শান্তির সাথে যেন ব্যায় করতে পারি সে সুযুগ করে দাও।' চন্দ্র ও সূর্য হলো আল্লাহর একটি নিদর্শন।এগুলো কোন আমাদের রব নয়।বরং আমাদের রব হলো একমাত্র আল্লাহ।প্রতিটি মুসলিমের এ মাসটি সম্পর্কে জানা না থাকলেও একত্রিতভাবে মুসলিম কমিউনিটির দায়িত্বসম্পন্ন ব্যাক্তিবর্গের জানা থাকতে হবে।কারন আরবী মাসের সাথে হজ,রমজান,যাকাতের প্রোগ্রাম জড়িত।ব্যাক্তি হিসেবে আরবি মাস ও দিন ক্ষন জানা সূন্নাহ।যখন আরবি সন আসে তখন মাসের সাথে আমরা 'হিজরি'কথাটা বলে থাকি।এই হিজরি কথাটির সাথে আমাদের বড় ধরনের একটি ঘটনাকে স্মরন করে দেয়া হয়।এই স্মরনের মাধ্যমে আমরা নিজেদের জীবনকে পুনর্মুল্যায়ন করতে পারি ও আমাদের ঈমানকে নবায়ন করতে পারি।আমরা দেখতে পাই ইংরেজি তারিখ যেটি যিশুখ্রীষ্ট বা ঈসা আ; এর সময় থেকে গননা শুরু হয়।কিন্তু ইসলামি হিজরি সন হযরত ওমর রা: এর সময় থেকে গননা শুরু হয়।সরকারি প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রদেশগুলোতে যে নির্দেশনা দেয়া হতো ইসলামি রাষ্ট্রের কেন্দ্র থেকে সেগুলোতে অনেক সময় তারিখ দেয়া হতো কিন্তু বছরের নাম উল্লেখ থাকতো না।যেমন মহররম মাসে একটি সরকারি আদেশ জারি হলো আবার পরের বছর আর একটি আদেশ জারি হলো।কিন্তু বছর উল্লেখ না থাকায় কোনটি আগে বা কোনটি পরে হয়েছে তা নিয়ে হতবুদ্ধি হয়ে যেতো।কখনো কখনো সরকরি কাজে বাধার সৃষ্টি হতো।তখন সবাই অনুরোধ করলো যদি বছরের নাম লেখা থাকে তাহলে সুবিধা হবে কোনটি আগে বা কোনটি পরে সংগঠিত হয়েছে।হযরত ওমর রা: তখন সাহাবাদের সাথে পরামর্শ করে বললেন হাঁ এটি আমাদের জন্য প্রয়োজন তবে কোন ঘটনা থেকে আমরা হিজরি সন গননা করবো।সেটি নিয়ে আলোচনা হলো।কেউ বললেন আল্লাহর নবীর জন্মবছর থেকে আমরা শুরু করি,কেউ বললো আল্লাহর নবি যে বছর নবুওত পেয়েছেন সে বছর থেকে আর একটি মত হলো আল্লাহর নবী মক্কা থেকে মদিনা যে বছর হিযরত করেছেন ঐ বছর থেকে হিজরি সন গননা করবো।হযরত ওমর রা: গ্রহন করলেন হিযরতের ঘটনা।কারন এই হিযরতের মাধ্যমে মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় আসার মাধ্যমে ইসলামের প্রচার ঘটেছে,ইসলামের প্রথম রাষ্ট্র কায়েম হয়েছে এবং দলে দলে মানুষ ইসলাম কবুল করেছে।সেজন্য সূরা নাসরের ১ ও ২ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,'যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসছে আর লোকদের দলে দলে আল্লাহর ধর্মে প্রবেশ করতে দেখতে পাচ্ছ।' সেই সুযুগ হয়েছে হিযরতের মাধ্যমে।আল্লাহর রসূল সা: বলেছেন,কেউ যদি সে সময় নিজের জন্মভূমি মক্কা থেকে মদিনায় চলে আসে ও হিযরত করার কারনে আগের সকল গুনাহকে আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।' সাহাবাগন দলে দলে হিযরত করেছেন কিন্তু আল্লাহর রসূল সা: অপেক্ষা করছেন আল্লাহর নির্দেশের।কারন মক্কায় তিনি অমানবিক যন্ত্রনা ও নির্যাতন ভোগ করেছেন। শুধু তিনিই নন,অসহায় দাসদাসি ও অন্যান্য সাহাবাগন যারাই ঈমান এনেছে তাদের উপর অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে অত্যাচার করা হয়েছে।আল্লাহর রসূল সা:কে সে সময় স্ত্রী খাদিজা রা: যিনি ছিলেন ধনাড্য মহিলা ,তিনি তার জীবন ও ধনসম্পদ উজাড় করে দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তিনিও তাঁকে ছেড়ে পরপারে চলে গেলেন।চাচা আবুতালিব যিনি মুশরিক ছিলেন,তিনিও মারা গেলেন কিন্তু জীবদ্দশায় তিনিও রসূল সা: কে সবদিক থেকে সাহায্য করেছিলেন।তখন তিনি নিজের জন্য একটি নিরাপদ যায়াগার আকাংখ্যা করলেন এবং তার জন্য তায়েফ গেলেন।সেখানেও তাঁকে পাথর নিক্ষেপ করে রক্তাক্ত করা হলো।মানুষ তাঁকে চিনতে পারলো না কিন্তু তিনি তাদের জন্য দোয়া করলেন।ফেরস্তা তাঁকে অপসন দিয়েছিল বদদোয়া করার জন্য যাতে তাদের পিষ্ট করে দিতে পারেন।কিন্তু দয়ার নবী ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।তিনি বলেছেন,হে আল্লাহ! তুমি এ জাতিকে হেদায়েত দান কর।' ইতিহাসের বইতে এটি স্বর্নাক্ষরে আজো লিখিত আছে।সেখান থেকে নিরাশ হয়ে ফিরে আসলেন।মদিনার কিছু লোক হজ করতে আসলো।প্রথম বছর কয়েকজনের সাথে দেখা হলো এবং দ্বীন গ্রহন করলো।পরের বছর কিছু মানুষ আসলো এবং তারা শপথ করলো আপনি আমাদের দেশে আসেন আমরা আপনাকে পরিপূর্ন সহযুগিতা করবো।এভাবে হিযরতের পথ খুললো।আল্লাহর রসূল সা: ধীরে ধীরে গোপনে সাহাবাদের পাঠাতে থাকলেন।আবুবকর রা:কে নির্দেশ দিলেন না ও তিনি নিজেও গেলেন না।একরাতে কাফেররা রসূল সা: এর ঘরের চতুর্দিকে ঘেরাও করে ফেলেছে তাঁকে হত্যা করার জন্য।তারা সিদ্ধান্ত নিল সকল গোত্রের যুবকরা একত্রে হত্যা করবে যাতে নির্দিষ্ট কোন গোত্র যেন বিচারের মুখোমুখি হতে না হয়।আল্লাহর রসূল সা: এর মধ্য দিয়ে সূরা ইয়াসিনের কয়েকটি আয়াত পড়ে ও বালি নিক্ষেপের মাধ্যমে বের হয়ে গেলেন যাতে তারা কেউ দেখতে পেলো না।আল্লাহ কুরআনে বলেছেন,আপনি যখন এই বালি নিক্ষেপ করেছেন,আপনি নিক্ষেপ করেননি সেটি আল্লাহই নিক্ষেপ করেছেন।'আল্লাহর রসূল সা: বিচানায় আলী রা;কে রেখে গেলেন যেন কুরাইশদের আমানতগুলো দিয়ে দিতে পারে।কি আশ্চয্য ব্যাপার! যারা রসূল সা:কে হত্যা করতে এলো,তাদের সম্পদই তারা আমানত রাখতো রসূল সা: এর কাছে।তিনি ছিলেন বিশ্বস্ততার মূর্ত প্রতীক।শক্রুর সাথেও তিনি আমানত রক্ষা করেছেন।এটি আমাদের উম্মতের জন্য একটি মহান শিক্ষা বটে।আল্লাহর রসূল সা: রওয়ানা হলেন।হযরত আবু বকর রা:কে আগে থেকে বলে রেখেছেন।হযরত আবুবকর রা: খুবই আনন্দিত ছিলেন যে রসূল সা: এর সহচর হবেন বলে।তিনি দু'টি উট ঠিক করে রেখেছেন।গাইড ঠিক করে রেখেছেন।তার মেয়ে আসমা রা:কে ঠিক করে রেখেছেন যাতে গোপন যায়গায় পানীয় ও খাবার পৌঁছে দিতে পারেন।যখন জানাজানি হয়ে হয়ে গেল রসূল সা: বের হয়ে গেছেন তখন মক্কার কাফেররা খুঁজতে বেরিয়ে গেল।তারা পুরস্কার ঘোষনা করলো জীবিত বা মৃত ধরে আনলে একশটি উট দেয়া হবে।জাবালে সওরের একটি গুহায় আল্লাহর রসূল সা: তিনদিন অবস্হান করলেন ও সাথে ছিলেন আবুবকর রা:।এই ঘটনা আল্লাহ পাক কুরআনে উল্লেখ করে বলেছেন,তোমরা সাহায্য না করলেও আল্লাহ সাহায্য করবেন দ্বীনের জন্য।' আবুবকর রা: ভীত হয়ে গেলেন এবং বললেন কাফেররা তো আমাদের ধরে ফেলবে কিন্তু রসূল সা: বললেন আল্লাহ আমাদের সাথেই রয়েছেন।' আল্লাহ পাক গুহার মুখে মাকড়শা পাঠিয়ে জাল বুনে দেয়ার ব্যাবস্হা করলেন।কবুতর ডিম পাড়লো যাতে তারা মনে করে এখানে যদি কেউ প্রবেশ করে তাহলে এগুলো থাকে কি করে।যেদিন তিনি মক্কা ত্যাগ করছেন সেদিন তার হৃদয়ে এক মর্মপীড়ার কারন হলো।আল্লাহর রসূল সা; এক পাহাড়ের উপর উঠলেন ও মক্কার দিকে তাকিয়ে বললেন,হে মক্কা!আল্লাহর যত জমিন আছে তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ ও প্রিয় যায়গা।আমার জাতি যদি আমাকে তাড়িয়ে না দিত কখনো আমি তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।' সমস্ত স্মৃতিকে বিসর্জন দিয়ে চলে যাচ্ছেন একমাত্র আল্লাহর নির্দেশ পালন ও দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।সম্মানিত পাঠক! আজকের মুসলমানদের হিযরত লক্ষ্য করুন যারা বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে।এই হিযরতের লক্ষ্য হলো সম্পুর্ন বিপরীত।আমাদের হিযরত ও আল্লাহর রসূল সা: ও সাহাবাদের হিযরত উল্টোমুখি।সাহাবাদের অনেকে ধনাড্য ব্যাক্তি ছিলেন।তারা তাদের সমস্ত সম্পদ বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর দ্বীনকে উঁচু করার জন্য হিযরত করেন।তারা ফকির হওয়ার জন্য হিযরত করেছেন।আর আমরা ফকিররা ধনী হওয়ার জন্য হিযরত করছি।আমাদের লক্ষ্য ও তাদের লক্ষ্য সম্পূর্ন বিপরীত।তারা নিশ্চিত জানতো আমরা আমাদের সম্পদ ছেড়ে চলে যাচ্ছি তা আর ফিরে পাব না।আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানে গিয়ে ঘরবাড়ি ও খাবার কিছুই থাকবে না।সব কিছু জেনেই তারা আল্লাহর রাহে হিযরত করেছে।আর আমরাও সবকিছু জেনেই মুসলমানের দেশ ছেড়ে লুতের সম্প্রদায়ের দেশে যাই যেখানে রয়েছে ব্যাভিচার,যেখানে নেই ইসলামি আচার অনুষ্ঠান,যেখানে নেই ইবাদতের সুব্যাবস্হা।সাহাবায়েকরামের এই হিযরত ও ঘটনাগুলো স্মরন করার জন্যই ইসলামের সনটাকে রাখা হয়েছে হিযরি সন।রসূল সা; যাচ্ছেন,সেখানেও আল্লাহ মোজেজা দেখালেন।সোরাকা নামক এক ব্যাক্তি দেখে ছুটলেন পিছনে পিছনে।আল্লাহর রসূল সা: বলছেন, সোরাকা তুমি এসোনা তোমার বিপদ হবে কিন্তু সোরাকা ১০০টি উটের লোভে শুনলো না।যখন সামনে এগুলো তার উট বালির ভেতর ডুবে যাচ্ছে।সে বুঝলো ও রসূল সা:কে অনুরোধ করলো যেন বিপদ মুক্ত হয়।বিপদ যখন মুক্ত হলো আবারো একই পদক্ষেপ নিল।অবশেষে পিছন ফিরে চলে গেল।অন্য যারা আসতে চাইলো তাদের বললো না সেদিকে নেই আমি মাত্র ঘুরে এলাম।এভাবে তিনি আর একটি ঘরে গেলেন যে ঘরের পুরুষ লোকটি তার সমস্ত ছাগল নিয়ে মাঠে চরাতে গেল।সে ঘরের পুরুষ লোকটির স্ত্রীকে বললেন তোমার ঘরে কি কোন খাবার আছে? সে বললো না।তিনি বললেন কোন ছাগল নেই।মহিলাটি বললো একটি ছাগল আছে সে হাটতে পারে না এবং বেশ দুর্বল এজন্য অন্যান্য ছাগলকে চরাতে নিয়ে গেছে এবং এটিকে ঘরে রেখে গেছে।রসূল সা: বললেন এটিকে নিয়ে আস।আল্লাহর রসূল সা: ছাগলটির স্তনে হাত দিলেন,অমনি দুধ আসতে থাকলো।প্রথমে দোহন করে সবাই পান করলো।আবার করে মহিলার জন্য রেখে আসলেন।আল্লাহর রসূল সা: রওয়ানা হলেন।মহিলাটি অবাক হলো।সন্ধা বেলা যখন মহিলাটির স্বামি আসলো তখন তাকে দুধ দেয়া হলো।স্ত্রীকে বললো তুমি দুধ পেলে কোথায়।কোন ছাগল তো রেখে যাওয়া হয় নি।মহিলাটি তার স্বামিকে ঘটনা বর্ননা করলো।তখন মহিলার স্বামি বললো ,ইনিই সেই রসূল যাকে মানুষ ধাওয়া করছে,আল্লাহ তার হাতে এ রকম বরকত দিয়েছেন।মদিনার লোক কয়েক সপ্তাহ ধরে কুবাতে রসূল সা: এর জন্য অপেক্ষা করছে।প্রথমে একজন ইহুদি দেখতে পেল।সে চিৎকার করে সকলকে বললো হে লোকেরা তোমরা যার অপেক্ষা করছো তিনি এসে পড়েছেন।আল্লাহর রসূল সা: ও আবুবকর রা: সাদা কাপড় পরিহিত ছিলেন।নারী পুরুষ নির্বিশেষে সাহাবাকেরাম খুবই আনন্দিত হলেন।ইতিহাস বলে মদিনার মানুষ এত বেশি আনন্দিত আর কখনো হয় নি।তারা বললো,আমাদের উপর যেন পূর্নিমার চাঁদ উদিত হয়েছে।মসজিদে কুবাতে আল্লাহর রসূল সা: তিনদিন ছিলেন।কুবায় মসজিদ প্রতিষ্ঠা করলেন।মসজিদে নববীতে গেলেন।সবাই চায় আমার ঘরে রসূল সা: এর আগমন হোক।আল্লাহর রসূল সা; বললেন যে উটে আমরা আছি সে উট যেখানে গিয়ে থামবে সেখানটি হবে গন্তব্যস্হল।আবু আয়ুব আনসারি যিনি তাঁর নানার দিক থেকে আত্মীয় হন তার বাড়ির সামনে উঠ থামলো।এই হিযরতের মাধ্যমে তিনি নতুন একটি মুসলিম সমাজের গোড়াপত্তন করলেন।সেজন্য যখনি আমাদের কাছে একটি বছর ফিরে আসে আমরা মুসলমানরা স্মরন করি হিযরি সনের অতীত ইতিহাসকে।এটি আমাদের ঈমান ও আক্কিদার প্রান সন্চার করে।রসূল সা: ও সাহবাকেরাম যে দ্বীনের জন্য পার্থিব সবকিছু ছেড়ে হিযরত করেছেন,আমরা কতটুকু দ্বীনের কুরবানি করছি সেটিই ভাবার বিষয়।আমাদের জীবনের সময়গুলো সমাজ ও মানুষের কল্যানে কতটুকু ব্যায় করছি তার পরিমাপ করার জন্য বছর শেষে আমাদের একটি পর্যালোচনা দরকার। অতীত একটি বছর যদি আমাদের কর্মে থাকে কল্যান আর কল্যান তাহলে আমরা কামিয়াব হলাম।আর যদি না করা হয় তার জন্য অনুশোচনা ও আগামি বছর হায়াত পেলে সামনের দিনগুলো পুনর্বিবেচনা করার মাধ্যমে আমরা আমাদের তৈরি করতে পারি।আল্লাহর রসূল সা: ও সাহাবকেরাম যতটুকু দ্বীনের খেদমত করেছেন তা উম্মতের কারো পক্ষেই করা সম্ভব নয়।তবে তাদের অনুসরন করে আমাদের সময়গুলোকে কাজে লাগানোর অংগীকার আমরা করতে পারি।সুন্দর সমাজ বিনির্মানের জন্য সবার সহযুগিতা প্রয়োজন।যার যতটুকু হাতিয়ার আছে তা দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।সূরা বাক্কারার ২৮৬ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,'আল্লাহ কোন সত্তার উপর তার ক্ষমতার অতিরিক্ত চাপিয়ে দেন না।' আর এই আয়াতের শেষের আয়াতে আমরাও বলি,' আমাদের উপর তেমন ভার তুলে দিও না যার সামর্থ আমাদের নেই।' সুতরাং মুসলিম উম্মাহ আজ ঈমানের দিক থেকে যে ভয়াভহ পরিস্হিতির মোকাবিলা করছে তা তাদের কর্মের ফিরিস্তি পর্যালোচনা করে শিক্ষা নিলেই অনুধাবন করতে পারবে।

বিষয়: বিবিধ

১৩৫২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

345339
১১ অক্টোবর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
শেখের পোলা লিখেছেন : সুন্দর ও শিক্ষামূলক বিশ্লেষণ৷ ধন্যবাদ৷
345345
১১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৮:০০
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File