আমাদের জীবনের পরিবর্তন আনা আবশ্যক।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১০ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:২১:৫৫ রাত

মানুষের জীবন সদা পরিবর্তনশীল।বিশেষ করে ঈমানদারদের জীবনে এ পরিবর্তন বেশী সূচিত হয়।একজন কাফের বা মুশরিক সারা জীবন কাফের বা মুশরিক থাকে না।আল্লাহ পাকের হেদায়েত নসীব হলে তার জীবন পরিবর্তীত হয়ে হয় সে একজন ঈমানদার।আবার একজন ফাসেক মুসলিম ঈমান নবায়নের মাধ্যমে হয়ে যান পূর্ন ঈমানদার।মুসলমানদের জন্য ঈমানের পরিবর্তন না এলে তাদের ইসলামি জীবন যাপন করা খুবই কঠিন।তাহলে মুসলমানদের পরিবর্তন কতটুকু দরকার?আল্লাহ পাক আমাদের দুনিয়ার জীবনে সুখ দু:খ দু'টির মধ্যেই পরীক্ষা করে থাকেন।সূরা আর রাদের ১১ আয়াতে বলেন,'আল্লাহ অবশ্যই কোন জাতির পরিবর্তন করেন না যতক্ষন না তারা নিজেরাই তার পরিবর্তন করে।' আমরা আমাদের অতীত ইতিহাস দেখলেও এর প্রমান পাই। মুসলমানরা যখনই ঈমানের দিক থেকে দৃঢ় ছিল,তাদের চেষ্টা সাধনা ছিল,তারা ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ ছিল তখনি আল্লাহ তাদের পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন।আবার এর বিপরীত অবস্হা ও ছিল।স্পেনে মুসলমানরা আটশত বছর রাজত্ব করার পর সেখানে একজন মুসলিম পাওয়া যায়নি যে মসজিদে আযান দিবে।আমাদের অতীত থেকেও দেখতে পাই যে,সাম্রাজ্যবাদি শক্তি যদিও মুসলমানদের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল কিন্তু মুসলমানরা আবার শক্তি পুনরুদ্ধার করে তাদের তাড়াতে সমর্থ হয়েছিল যদিই সেখানে ইসলামের সে রকম ভাল লিডারশিপ ছিলনা। মুসলমানরা তাদের ঐতিহ্য স্হায়ী ধরে না রাখতে পারার কারন হলো আল্লাহর বিধানের প্রতি পূর্নমাত্রায় মাথা নত না করা।ইংরেজ শাসনের পর মুসলমানদের বড় একটি পরিবর্তনের কথা থাকলেও তারা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে সমর্থ হয় নি।আজকে আমাদের মুসলিম দেশগুলোর করুন অবস্হা যদি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাই,ইসলামের যে পরিবর্তন গুলো হওয়ার দরকার ছিল তা হয়নি বলেই মুসলমানরা বিপর্যস্ত।ইসলামের পথ থেকে মুসলমানরা দূরে গিয়েছে বলেই আল্লাহর কোন সাহায্য আসছে না।আমরা রাষ্ট্রীয় জীবন রেখে যদি ব্যাক্তিগত জীবনের দিকে আলোকপাত করি তাহলে দেখতে পাবো,অধিকাংশ মুসলিম এখন আল্লাহর পথ ছেড়ে দিয়ে ইহুদি ও খ্রীষ্টনের পথ ধরেছে।মুসলমানদের পরিবর্তনের কিছু সময় ক্ষন রয়েছে।মুসলমানরা পুরো রোজার একটি মাস সময় পায় যাতে জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে ,হজ করার মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে পারে,সপ্তাহে বা মাসে নফল রোজা/নামাজের মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে পারে,নামাজ কায়েমের মাধ্যমে জীবনের পরিবর্তন আনতে পারে,প্রতিনিয়ত ভাল কাজের মাধ্যমে জীবনের পরিবর্তন আনতে পারে।ঈমানদার তার সৎ আমলের মাধ্যমে তার পরিবর্তন সাধিত করে।যে কুরআন পড়তো না সে কুরআন অধ্যয়ন করবে,যে নামাজ কায়েম করতো না সে নামাজ কায়েম করবে,যে রোজা রাখতো না সে রোজা রাখবে।যে যাকাত দিত না সে যাকাত দিবে।যে সামর্থ হওয়া সত্তেও হজ করে নি সে হজ করবে। অর্থাৎ ভাল কাজগুলোর মাধ্যমে ঈমানদের ঈমানের সাধ পাবে।এই পরিবর্তন গুলো হলো ভালোর দিকে পরিবর্তন।এই পরিবর্তনের দিকে যখন মুসলমান যেতে থাকে তখন আল্লাহ তাদের বিশাল পরিবর্তন করে দেন,আর সে পরিবর্তনটা হলো শাসন ক্ষমতা দিয়ে দেন।আর খারাপ দিকে যখন মুসলমান পরিবর্তীত হয় তখন তাদের ক্ষমতা নিয়ে শক্রুদের দিয়ে দেন।মুসলমানদের মধ্যে ইসলাম প্রতিভাত হলে সম্মান বৃদ্ধি করেন আর যদি অনৈসলামিক কাজ বৃদ্ধি হতে থাকে তখন তা কেড়ে নেন ও অসম্মানিত করেন।এটিই আল্লাহর একটি সিসটেম।কিন্তু তিনি বলেছেন তাঁর হাতে কল্যান রয়েছে।আমাদের জীবনে যদি অকল্যান ও পরাজয় আসে তাহলে সেটিকে সবরের সাথে মোকাবিলা করে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগুতে হবে।আমরা যদি অসুস্হ হয়ে যাই তাহলে আমাদের আয়ুব আ: এর প্রতি স্মরন করতে হবে যেভাবে তিনি ভীষন অসুস্হ অবস্হায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছিলেন।আল্লাহ পাক যদি আমাদের সোলাইমান আ; এর মত বাদশাহ করে দেন তাহলে মাথা নুয়ে যদি সেজদা করি আর বলি হে আল্লাহ! তুমি আমাদের এত বড় কিছু দিলে সেজন্য আমরা তোমার শুকরিয়া আদায় করি।তাহলে আল্লাহ খুশি হয়ে আরো বেশী দিতে পারেন।ভাল বা খারাপ অবস্হায় যদি বান্দাহ তাঁর শুকরিয়া আদায় করে তাহলে কল্যানের পর কল্যানই আসতে থাকে।এভাবে ব্যাক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে যখন আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় হয় তখন সেখানে কোন অকল্যান থাকতে পারে না।যদি আল্লাহপাকের দিকে মানুষ ফিরে না আসে তাহলে অপেক্ষা করতে হয় একটি বড় আযাবের।এই অবস্হায় আমাদের করনীয় বেশি বেশি কুরআন ও সূন্নাহকে আঁকড়ে ধরে জীবনকে সুন্দর করা।

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File