"শুধু মনে পড়ে"

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১০ মার্চ, ২০১৩, ০৫:২৭:৪৪ বিকাল

মাস গড়িয়ে বছর আর বছর গড়িয়ে যুগ।প্রায় দু'যুগের প্রান্তে দাঁড়িয়ে ভুলতে পারছিনে অজস্র স্মৃতি। মনের মনিকোঠায় উঁকি দেয় হারানো জনের প্রতিছ্ছবি।শৈশব , কৈশর ও যৌবনের এ স্মৃতিগুলো অন্তরকে ক্ষতবিক্ষত করে।যারা চলে গেছে তারা তো চলে গেছে দিগন্তের শেষ সীমায়।যারা বেঁচে আছে তাদের কাছে স্মৃতির পাহাড় সব সময় আনাগোনা করে।কত ঘটনা বহুল সময় পেরিয়ে এসেছি।ইছ্ছে করলেও ভুলে থাকা যায় না।কর্মব্যাস্ততার যুগে অনেকে ভুলে যেতে পারে কিন্তু কিছু হৃদয় আছে যারা অনুভব করে সমাজ ও সামাজিক জীবনকে।মানুষের হৃদয় আল্লাহর এক চমৎকার সৃষ্টি।কিছু হৃদয় অনুভবে মুহ্যমান আবার কিছু হৃদয় কঠিন পাথরের মত।এ হৃদয় মুহূর্তে ঘূরে আসে পৃথিবির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে।এক অদৃষ্ট নিয়তি আমাদের সাথি,একে মেনে নেয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।

দিন যায় রাত আসে ,ঋতু যায় আর এক ঋতু আসে।হজ্জ আসে আবার ওমরাহ আসে।মানুষ ফিরে যায় কিন্তু আর ফিরে আসে না।আমরা সবাই এ প্রকৃতির সাথে ঘুর্নায়মান।সবই আছে আগের মত।অনেকের সাথে দেখা হয় আবার অনেকের জীবন পুরিয়ে যায়।এই অদেখা একজন মানুষের কথা হৃদয় পটে ভেসে উঠে, তাঁর নাম মা্উলানা নূর উদ্দিন ( প্রাক্তন ঈমাম বায়তুল মোকাররম মসজিদ) ইদানি্ং পত্রিকার পাতা উল্টোলেই বায়তুল মোকারমের অবস্হা দেখে সে মানুষটির কথা বেশি মনে হয়।১৯৯২/৯৩ সালের দিকে কত নামাজ পড়েছি মসজিদে। শরিয়তের কত বিষয় আলোচনে করেছি।যখনই যেতাম আপন করে নিতেন।মাএ ৫৫ বছর বয়সে এ ধরনী থেকে নিয়ে নিলেন অন্তর্যামি।আমরা এসেছি চলে যেতে ,মাএ ক'টি দিন থাকবার আবাস এখানে।সবকিছু জানি তারপরও মায়া মমতা আমাদের কিছু সময়ের জন্য ভারাক্রান্ত করে তোলে।কবির ভাষায় ,যেতে নাহি দিব হায় , তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।" মনে পড়ে এক জীবন সন্ধিক্ষনে প্রথম আমার সাথে দেখা।দু'জনের সাথে কোন পারিবারিক বন্ধন এমনকি দূর সম্পর্কীয় আত্মিয়তাও ছিল না। এ পৃথিবির মালিক মিলিয়ে দিলেন।সূরা আত তাওবায় আল্লাহ বলেছেন , হে ঈমানদারগন! তোমরা সত্যবাদি লোকদের সাথে চল।' আমি চেষ্টা করেছিলাম জীবনে চলার পথে ভাল বন্ধুদের সাথে চলার।আমি তখন এম এ জামান এন্ড কো: (সিএ ফার্ম) এ এ্যাপ্রেন্টিসশিপের শেষ প্রান্তে।আমার এক নিকট আত্মিয় হঠাৎ সৌদি থেকে টেলিফোন করে বললেন , আপনি অনুগ্রহ করে ঈমাম সাহেবের সাথে দেখা করুন।সময়টা ছিল ১৯৯২ সালের শেষ লগ্নে।প্রথম দেখাতেই আমার জীবনে এক চমক নিয়ে এলো।ছোট বেলা থেকে ধর্মীয় অনুশাষনে বেড়ে উঠায় ধর্মের প্রতি ছিল অনুরাগ।এই অনুরাগের কারন ও ছিল , আমার নানা মামারা ছিলেন বড় আলেম।আমার বাবাও আলীগড়ের আন্ডারে গ্রাজুয়েট ছিলেন আর শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।বাব মা দু'জনই অত্যন্ত সরল জীবন যাপন করতেন।

যাই হোক প্রথম দর্শনে আমি উনাকে আপন করে নিয়েছিলাম।নবিজির জীবন দর্শন ছাত্রজীবনেই পড়েছিলাম।অস্ংখ্য চরিত্রের একাটা চরিএ হলো, কোন আগুন্তক আসলে তাকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানানো ও বিদায় বেলা আগুন্তক যতক্ষন করমর্দন থেকে হাত ছেড়ে না দিতেন তনি হাত সরাতেন না।আর ছিল মিষ্টি কথা।নবীজির অনুকরনে এক ব্যাক্তিত্ব।জুহরের নামাজ পড়ে উনার কক্ষে ঢুকতেই দেখলাম দু'জন মেহমানের সাথে কথা বলছেন।আমি দরজায় দাঁড়ালাম।সালাম দিতেই উনি দাঁড়িয়ে গেলেন এব্ং জিজ্গেস করলেন অত্যন্ত মার্জিত ভাষায়,আপনি? আমার আত্মীয়ের পরিচয় দিতেই গলায় জড়িয়ে নিলেন।মেহমান দু'জন চলে গেলেন। আমরা আধা ঘন্টা আন্তরিক আলাপ করলাম।আমার দাম্পত্য জীবনের শুরুটা বাস্তবায়নের কাজটি তিনিই করেছিলেন।মনের অগোচরে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নিজেই।কোরআন হাদিসের একাটা চমৎকার বিবরনী দিলেন দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে, তাও অতি অল্প সময়ে।সেদিন মনে হলো আমার জীবনের এক নব দীগন্ত উম্মোচিত হয়েছিল।তার পর ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হলাম।একেবারে বলা যায় পারিবারিক বন্ধন।এর পর যখনই যেতাম ইসলামি আক্কিদা ,দাম্পত্য জীবন,পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এ সব ব্যাপারে দিক নির্দেশনা পেলাম।পরবর্তি সময়ে এ সমস্ত বিষয়গুলো আমাকে কোরআন হাদিস অনুশীলনে অগ্রগামি করেছে।অল্প দিনের মাথায় চলে এলাম এ্যাকাউন্টান্ট ভিসায় একটি মাল্টিনেশনাল কোম্পানিতে। আমার বিবাহিত জীবন

শুরু হয়েছিল বিদেশে এসে যার সাথে জড়িত ঈমাম সাহেব।মক্কা হারামের দ্বিতীয় তলায় প্রথম কনে দেখা। উদ্দেশ্য ছিল বিয়ের প্রাথমিক কাজটি একটি পবিএ যায়গায় করা যা স্মৃতি হয়ে থাকবে।অবশ্য আজ এতকাল পরও যখন ওমরাহতে যাই আতীত স্মৃতি রোমন্থন করা ছাড়া উপায় থাকে না।আমার গৃহিনী প্রথমে বলতো এতদূর ঘুরে যাওয়ার দরকার আছে।যখন বিষয়টা জানলো নিজেই সে যায়গাতে বসেন কিচুক্ষন।

প্রায় প্রতি বছরই উনি আসতেন হজ্জ্ব বা ওমরাহতে।জেদ্দাহ এক বা দু'দিনের জন্য আমরা উনাকে পেতাম। উনার আন্তরিকতা উপলব্ধি করার মত।সাবাই জানতো উনি আমাদের পরিবারের একজন।বাজারের মুরগির রোষ্ট করা হতো কখনো খাওয়ানো যেতো না।আমরা খাওয়ার ব্যাপারে খুব কমই বাচ বিচার করি।আজ মনে হয় উত্তম তাক্কওয়া উনাকে এ সব থেকে দূরে রেখেছে।আনেক মধূর কথপোকথন হতো যা হৃদয়কে আজো আন্দোলিত করে।অনেক সময় যখন দেশী বা বিদেশী আর্টিকেল পড়ি তখন উনাকে বেশ মনে পড়ে আর হৃদয় কাঁদতে থাকে।উনার কাছে আমার আধ্যাত্বিক অনেক ঋন আছে যা শোধ করার নয়।পৃথিবিতে তো তারাই বেঁচে থাকে যারা সমাজকে কিছু দিয়ে যায়।ধন সম্পদ দানে যতটুকু মনে না রাখা যায় তার ছেয়ে বেশি মনে থাকে জ্ঞান দানে।আর ওহির জ্ঞান তো দুনিয়া ও আখরাতের কল্যান।যেদিন অন্তর্যামি উনাকে নিয়ে গেলেন তখন আমি অফিস থেকে লান্চ করতে বাসার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছি।২ কিলোমিটার না যেতেই আমার স্ত্রী কান্না কন্ঠে আমাকে কল করে বললেন তুমি খবর দেখেছ কি? আমি জিজ্ঞেস করতেই বললেন নূরুদ্দিন আ্ংকেল আর নে্ই।প্রচন্ড একটা ধাক্কা খেলাম আবার।বাবা মা মারা যাওয়ার পর অনেক সান্তনা দিয়েছিলেন।গাড়িটা রাস্তার পাশে নিয়ে কিছুক্ষন দোয়া দূরুদ পড়লাম।ভেসে উঠলো ১৬ বছরের অনেক স্মৃতি। বিকেলে টেলিভিশনে খবর দেখলাম।কিছুই দেখলাম না।পরে শুনলাম একবার হেডলাইন এ খবর পঠিত হয়েছে।পরের দিন নয়া দিগন্ত ছাড়া কোন পত্রিকায় খবর এলো না।আমার মনে হলো একটা জাতি হিসেবে আমরা স্ংকীর্নতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি।একজন জাতিয় মসজিদের ঈমামের জীবন অবসান হয়েছে অথচ নামমাএ খবর এসেছে।অথছ রাজনৈতিক ছএছায়ায় কোন কর্মি অপকর্ম করে নিহত হলে তা হয়ে যায় খবরের মধ্য মনি।আবার ধর্ষনের সেন্চুরি হলে তো কোন খবরই বাকি থাকে না।খবর কতটা প্রচার হলো বা হলো না সেটা বড় কথা নয়,প্রকৃত কথা হলো যে জাতি গুনিলোকদের কদর করতে জানেনা সে জাতি এগুবে কি করে।কবি আলমাহমুদ যখন ইসলামের পক্ষে লেখালেখি শুরু করলেন একটা সময় তাকে পত্রিকায় খুঁজে পাওয়া যায় নি।অথচ আমরা লেবাচে ইসলাম ধারন করে আছি।সারা জীবন আল্লাহর নাফরমানি করে জীবন কেটেছে আর কবরে শা্য়িত করার সময় রাসূল সা: এর মিল্লাতে।এ এক নির্ঘাত প্রহসন জীবনের সাথে।যে জিনিসগুলো পরকালিন জীবনের জন্য প্রয়োজন তা তিনি লালন করতেন।পরিবার ও ছেলেমেদের পুরপুরি ইসলামি জীবনে আবদ্ধ করে গেছেন।সত্যের সাক্ষি হয়ে রইলেন পরিবার , সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে।মৃত্যুর কিছুক্ষন আগেও বলে গেলেন আমাকে অতি দ্রুত কবরে পৌঁছে দিবে এব্ং সেটাই করা হয়েছিল।উনার দ্বিতীয় ছেলে সাকের ( যে দুবাই এ কোরান প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিল) জানাজার নামাজ পড়িয়েছিল।

আজ ২১ বছরের পরিচিতর পরও ভুলতে পারছিনে।মনে পড়ে গেল উনার বাসায় দস্তরখানে বসে খেয়েছিলাম।অথছ সুন্দর ডাইনি্ং সেট বাননোর ক্ষমতা ছিল।নবীজির সূন্নাতগুলো পালন করতেন।আমরাও শিখেছিলাম।কথা বলতেন মেপে মেপে আর অত্যন্ত মিষ্টি কথা। হাদিস বলেছে রুক্ষ স্বভাবের মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আল্লাহ উনাকে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে দিন।জীবনের ধীর্ঘ একটা সময় পার করে এসেছি।যতই বয়স বাড়ছে মনে হছ্ছে জীবন থেকে একটা করে নক্ষএ ছুটে যাছ্ছে।এই ক্ষুদ্র জীবনে অনেক দেখেছি। ঝড় বয়ে গেছে অনেক। হারানোর বেদনা নেই।কোরান বলেছে বিপর্যয় আসলে ঈমানদার ধৈর্যধারন করবে।অসুন্দর মানুষগুলোকে বুঝাতে চেষ্টা করেছি। না পারলে সাময়িক প্রত্যাক্ষান করেছি যাতে নিজের ঈমানকে লালন করতে পারি।ধৈর্যধারন করা এক মহা পরিক্ষা।আল্লাহকে পেতে হলে প্রবল পরিশ্রম করেই তার সান্নিদ্ধে যেতে হবে।আর বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিবে ভ্রান্ত মানুষগুলো।স্মরন করবে আমাদের পাপের কারনে এই বিপর্যয়, আর লুটে পড়বে আল্লাহর সামনে।

প্রৌড়ত্ব মানুষের জীবনের এক চরম অধ্যায়।এখানে এসে জীবনের স্মৃতিগুলো আরো প্রখর হয়ে উঠে।একজন মু'মিনের কাছে তার কৃতকর্মগুলো মর্মপীড়ার কারন হয়ে দাঁড়ায়।আর তখনি সে লুটিয়ে পড়ে ইস্তেগফারে।আল্লাহ খুশি হয়ে যান আর মাপ করে দেন বান্দার পাহাড়সম গুনাহ।বান্দাহ যত গুনাহই করুক তাকে নিরাশ হলে চলবে না।ভয় ও আশায় আল্লাহকে ডাকতে হবে।বিশেষ করে রাত যখন দীর্ঘ হতে থাকে তখন আল্লাহ আসীন হন প্রথম আকাশে।ডাকতে থাকেন বান্দাদের কার কি প্রয়োজন , চাও আমার কাছে আমি দিব।গভীর রাতে প্রকৃতির এক অপরুপ দৃশ্য চোখে পড়ে।জানালা খুলে তাকিয়ে দেখুন, বিশাল আকাশ তারকায় সজ্জিত আর পূর্নিমার আকাশতো করে দেয় পৃথিবিকে লাবন্যময়।আল্লাহর সাথে মহব্বতের এই তো সময়।আল্লাহ হাত বিছিয়ে রাখেন বান্দাহকে উজাড় করে দেয়ার জন্য।কে আছে নিবে যে ভান্ডারে নেই কোন অভাব।আমরা দুর্বল ঈমানদার।একটু চাইতেই হয়রান হয়ে যাই।নবী দাউদ (আ) ১৮ বছর রোগ ভোগ করেছিলেন,এক মুহুর্ত জিকির থেকে বন্চিত রাখেন নি নিজেকে।বান্দাহর কাজ দোয়া করা।দোয়ার মাধ্যমে গুনাহ মাপ হয়,কোন আজাব থাকলে রেহাই মেলে আর দুনিয়ায় কিছু না পেলেও আখেরাতে আল্লাহ পুর্ন করে দিবেন।আর আমরা ইছ্ছায় হোক বা অনিছ্ছায় হোক আল্লাহর দিকেই এগিয়ে যাছ্ছি।এ জীবন ক্ষনস্হায়ী জীবন।বহু নবী রাসূল ও বহু জাতি গত হয়ে গেছে আমরাও অপেক্ষমান।কি নিয়ে এগিয়ে যাছ্ছি? আমরা কি আমাদের কোরান ও সূন্নাহর আলোকে গড়তে পরেছি? যদি হয় হাঁ তাহলে আল্লাহর সান্নিধ্যের আশা করি আর যদি হয় না তাহলে অপেক্ষা করছে লেলিহান আগুন যা জ্বালাবে দীর্ঘকাল। ঈসা ইবনে মারিয়াম বলেছেন,এ পৃথিবী একটা বৃদ্ধা মহিলা যাকে সজ্জিত করে রাখা হয়েছে আর মানুষ ছুটছে তার দিকে।আনন্ত জীবনের তুলনায় এ জীবন মাএ কয়েকমিনিটের অবস্হান।আমরা জিজ্ঞাসিত হব আমাদের পরিবার ও সন্তানদের কোরান ও ইসালামি আইন দিয়ে গড়েছি কি? হালাল হারাম বেচে চলেছি কি? যদি করে থাকি তাহোলে রবের করুনার আশা রাখি। আর যদি না করি তা হলে এক জবাবদিহিতা অপেক্ষমান।

আমাদের ভূমিকা রয়েছে পরিবার ও সমাজকে দেয়ার।মূল্যবোধের অবক্ষয় এসেছে ইসলামি পরিবার গঠন না করার কারনে।পৌরবিজ্ঞান বলেছে , পরিবার হলো রাষ্ট্রের একক।আমাদের চারদিকে অশ্লিলতা ও প্ংকিলতা সর্বগ্রাসি হয়ে আছে। আমরা মুষলমানরা যে যেখানে আছি এই প্ংকিলতার

মধ্যে ভালই আছি।নামাজ পড়ছি , রোজা রাখছি, যাকাত দিছ্ছি , হজ্জ্ব করছি।সমাজ দেখলে কি তাই মনে হয়? তাহলে আমারা প্রতারিত করছি নিজেদের।নামাজ পড়লে তো অন্যায় দূর হওয়ার কথা, সেটা তো হছ্ছে না।কোন ভূখন্ডের কোন দোষ নেই।আমরা মানুষরাই অনাচার সৃষ্টি করছি।আমাকে দেখতে অনেক সুন্দর ,ইসলামি লেবাস , লম্বা দাঁড়ি,কথায় মুক্তো ঝরে,দায়িত্বে অবহেলা,অস্ংখ্য খেয়ানত অথচ আমি একজন কপট। আমাদের কাজ ভাল কাজের আদেশ দেয়া ও মন্দ কাজ থেকে মানুষকে দূরে রাখার চেষ্টা করা।আমাদের লোভ একটা সুন্দর প্রাসাদের,একটা ভাল গাড়ি,একটি ভাল ব্যবসা,একটা ভাল ডিগ্রি।ক্ষতি নেই তাতে সেটা হতে হবে সৎ উপায়ে।আমাদের তো আরো কিছু লোভ থাকতে হবে।রাসূল সা: কে অনুসরন করার লোভ,হালাল হারাম মেনে চলার লোভ,পিতা মাতার পরিচর্যার লোভ, আত্মিয় প্রতিবেশিকে মহব্বতের লোভ,এতিম ফকির মিসকিনকে সাহায্য করার লোভ,গীবত ও নিন্দা না করার লোভ। এভাবে নূরুদ্দিন সাহেব কথাগুলো বলতেন আর সমাজের প্রতিছ্ছবি তুলে ধরতেন।আমার এই স্মৃতিচারনের শেষ লগ্নে এসে উনার সাথে আমার শেষ সময়টুকু আরো স্মৃতিময়।আমি উনাকে জেদ্দাহ ইন্টারনেশনাল বিমান বন্দরে ছাড়তে গেলাম।ফ্লাইট কিছুটা বিলম্বে আসছিল।দু'জন লাউন্জে বসলাম।ইতিমধ্যে লাগেজ দেয়া হয়েছে।বললেন দোয়া করবেন,আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আসা হবে।আমাকে বললেন আপনার কি জানা আছে মুজরিম আর মুসাফিরের মধ্যে আল্লাহর কোন দূরত্ব নেই।আমি বললাম আল্লাহর কাছে হাত তুলে আমাদের সবার জন্য দোয়া করেন।উনি দোয়া করলেন আর বললেন , হে আল্লাহ ! দুনিয়ায় যেমন আমাদের বন্ধন তৈরি করেছ আখেরাতে এ বন্ধন ছিন্ন করো না।সত্যিই এ বন্ধন ছিন্ন হবার নয়।আর তাই তো হৃদয় খুঁজে বেড়ায় সেই মুখটিকে পূর্নিমার নিস্তব্ধতায়।

বিষয়: বিবিধ

১৫০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File