ইসলামে চিরকুমার থাকতে নেই।বিয়েই সমাজ সুরক্ষার মহৌষধ।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৯ মার্চ, ২০১৩, ০৬:০৯:১৬ সন্ধ্যা
আল্লাহতায়ালা মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন এব্ং তিনি জানেন কিভাবে তাদের শৃ্ংখলাবদ্ধ করতে হয়।সমাজ যেন কলুষিত না হয় এব্ং তার সুরক্ষার জন্য বিয়ের ব্যাবস্হা করেছেন।ইসলামে বিয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।যারা চিরকুমার থাকতে চায় বা বৈরাজ্গবাদ চায় তারা ধর্মিয় জীবন থেকে দূরে সরে যায় এব্ং আল্লাহ রাসূল সা: এর আনুগত্বের বিপরীত কাজ করে।যাদের বিয়ের যোগ্যতা হয়েছে তাদের বিয়ে করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে, আবার যাদের এখনো যোগ্যতা হয় নি তাদের রোজাব্রত পালন করে সৎ থাকার পরামর্শ দিয়েছে ইসলাম।প্রজনন ও কামুদ্দিপনা একটা আল্লাহর অশেষ নেয়ামত।যদি সমাজে বিয়ের ব্যাবস্হা না থাকতো সমাজ পংকিলে ডুবে যেত। মানুষ হি্ংস্র থেকে হি্ংস্রতর হয়ে যেত।সমাজে চেইন অব কমান্ড বলে কিছুই থাকতো না।আর উত্তরাধিকার না থাকলে ব্ংশ নি:শেষ হয়ে যেত।ধরুন আপনি যদি আপনার সন্তানকে নেক সন্তান তৈরি করে যান তাহলে আপনার মৃত্যুর পর ও আপনি নেকি পেতে থাকবেন।আপনার সন্তান যদি তার সন্তানদের নেককার বানিয়ে যায় তাহলে সে যেমন নেকি পাবে আপনিও পেতে থাকবেন।তাহোলে বিয়ে শুধু একটা জীবনের জন্য নয়, আপনার পরকালের জিবনকেও কামিয়াবি করে।
আমাদের পার্শ্ববর্তি ভারতের কয়েকজন স্বনামধন্য চিরকুমার কেন বিয়ে না করেই জীবনটা কাটিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছেন, তা নিয়ে রয়টার্সের ব্লগে লিখেছেন ডেভিড লালমালস্বামা।সেই লেখায় উঠে এসেছে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও পরমাণুবিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারিবাজপেয়ী, হালের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, টাটার শিল্পপতি রতন টাটা, অভিনেতা সালমান খান ও রাহুল বোসের বিয়ে না করার কারণ।পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি থেকে মুক্ত হতে সম্প্রতি বিয়ে না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিখ্যাত গান্ধী পরিবারের সদস্য রাহুল গান্ধী। ঐতিহ্যবাহী কংগ্রেস দলের ৪২ বছর বয়সী সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধী গত সপ্তাহে কংগ্রেসদলীয় আইনপ্রণেতাদের সভায় বলেন, ‘বিয়ে করলে সন্তান হবে। আমি লক্ষ্যচ্যুত হয়ে যাব। আর চাইব আমার সন্তান যেন আমার আসনে অধিষ্ঠিত হয়।’ রাজনীতি নিয়েই জীবনটা কাটিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা এই চিরকুমারের।অচেনা নারীর সঙ্গে সম্পর্কটা কেমন হবে—এমন ভয় থেকে বিয়ে করার সাহস করেননি ৭৫ বছর বয়সী শিল্পপতি রতন টাটা। সিএনএন ইন্টারন্যাশনালের টক এশিয়া অনুষ্ঠানে তিনি বিয়ে না করার গল্প করতে গিয়ে বলেন, চারবার তিনি বিয়ের ‘খুব কাছাকাছি’ গিয়েছিলেন। তবে এক ধরনের ভীতি থেকে তিনি পরে পিছু হটেন এবং বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নেন।
বাণিজ্যিক ও বিকল্পধারার চলচ্চিত্রের সফল অভিনেতা রাহুল বোস নিজেকে ‘অসুন্দর’ আর ‘গরিব’ মনে করেন। ৪৫ বছর বয়সী এই অভিনেতার ভাষ্য, ‘আমি “ভীষণ কদাকার”। পাওয়ার জন্য আমাকে আরও ধনী হতে হবে।’বলিউডের ৪৭ বছর বয়সী জনপ্রিয় নায়ক সালমান খানের দাবি, তিনি বিয়ে করা থেকে মুক্তি পেতে অনবরত কাজ করে চলছেন। তবে বিয়েতে অনাগ্রহী হলেও বাচ্চাকাচ্চা তাঁর পছন্দের বলে জানালেন।
কেন বিয়ে করলেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী (৮৮) বলেছিলেন, ‘বিয়ের জন্য সময় পাইনি।’ভারতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের জনক ও অন্যতম জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামও চিরকুমারপরমাণুবিজ্ঞানী হিসেবে যত সফল, বিয়ে করলে নাকি তাঁর অর্ধেক সাফল্যও অর্জিত হতো না—এমনটাই এক বন্ধুকে মজা করে বলেছিলেন তিনি।
১৯০৫ সালে বৃটিশদের বিরুদ্ধে বঙ ভঙ কে পরাভূত করার
জন্য এক শ্রেনীর হিন্দু যুবকদের অনুপ্রানিত করা হয়েছিল চিরকুমার থাকার জন্য।যারা এ কাজটি করেছিল তারা কি ভেবে দেখে না কিভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।ইসলামে যুদ্ধের ময়দানে একটু খেজুর ও পানি পান করে যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল।নতুন বাসরের রাত্রি যাপন করে অর্ধগোসল না হতেই জিহাদের ডাকে সাড়া দিয়ে শহিদ হয়েছিল যুবক।যিনি মানবতার কল্যানে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত চমক সৃষ্টি করে গেলন , যে মহামানবের পদচারণায় পৃথিবী ধন্য হয়েছে, যার ছিল আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভালোবাসা, অন্তরের পবিত্রতা, আত্মার মহত্ত্ব, ধৈর্য, ক্ষমা, সততা, নম্রতা, বদান্যতা, মিতাচার, আমানতদারী, সুরুচিপূর্ণ মনোভাব,ন্যায়পরায়ণতা, উদারতা ও কঠোর কর্তব্যনিষ্ঠা ছিল যার চরিত্রের ভূষণ। যিনি ছিলেন একাধারে এতিম হিসেবে সবার স্নেহের পাত্র, স্বামী হিসেবে প্রেমময়, পিতা হিসেবে স্নেহের আধার, সঙ্গী হিসেবে বিশ্বস্ত, যিনি ছিলেন সফল ব্যবসায়ী, দূরদর্শী সংস্কারক, ন্যায়বিচারক, তিনি ছিলেন বিবাহিত।তিরমিযি শরিফে রাসূল সা: বলেন, সর্বাপেক্ষা উত্তম মুসলিম সে ,যে নিজের পরিবারের কাছে উত্তম।এব্ং সে ব্যাক্তি ভাগ্যবান যার স্ত্রী সতি নারী।
সূরা নিসা ১৯ আয়াতে আল্লাহ বলেন, ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য বৈধ নয় যে তোমরা স্ত্রীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার সূত্রে গ্রহন করবে।আর তাদের উপর জুলুম করবে না।তোমরা তাদের যা দিয়েছ তা ফিরিয়ে নিবে না যদি না তারা জাজ্বল্যমান অশ্লীল আচরনে লিপ্ত হয়।তাদের প্রতি সদয় ব্যাবহার কর।অবশ্য যদি তোমারা তাদের ঘৃনা কর তবে হতে পারে তোমরা এমন একটা কিছু অপছন্দ করলে অথছ আল্লাহ তার মধ্যে প্রচুর কল্যান নিহিত রেখেছেন।' সূরা বাক্কারা ২২৮ আয়াতে আল্লাহ বলেন, সত্রীদের তেমন অধিকার আছে যেমন আছে তোমাদের উপর ন্যায়স্ংগতভাবে।অবশ্য পুরুষদের অবস্হান তাদের কিছূটা উপরে।' স্ত্রীদের উপর পুরুষদের অবস্হান কেন কিছুটা উপরে তার কারন হিসেবে সূরা নিসার ৩৪ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,তারা তাদের সম্পদ থেকে তাদের জন্য খরচ করে।কাজেই সতি নারীরা আনুগত্য, গোপনীয়তার রক্ষয়িত্রী যেমন আল্লাহ রক্ষা করেছেন।আর যে নারীদের ক্ষেত্রে তাদের অবাধ্যতা আশ্ংকা কর,তাদের উপদেশ দাও,শয্যায় তাদের একা ফেলে রাখ,আর তাদের মৃদু প্রহার কর।তার পর তারা যদি অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে অন্য পথ খুঁজো না।'
দাম্পত্ব জীবনে একে অ্ন্যের প্রতি দায় দায়িত্বের ব্যাপার রয়েছে।যে যত বেশি দায়িত্ববান স্ংসার জীবনে সে ততবেশি সফল।একে অন্যের প্রতি দয়া ও সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।আয়ের সাথে স্ংগতি রেখে চলতে হবে।পরস্পর মাশোয়ারা করে কাজ করতে হবে।ব্যাক্তিগতভাবে সৎ চরিত্রবান হতে হবে।পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস , সততা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্টিত করতে হবে।একটা সুন্দর সমাজ নির্ভর করে একটা সুন্দর ও মার্জিত পরিবারের উপর।যারা প্রকৃতির সাথে বৈরিতা করে তাদের জীবনে নেমে আশে অশান্তি।চিরকুমার রা চিরকিমার থাকে না।তারা কোন না কোন ভাবে অশ্লিলতায় জড়িয়ে পড়ে।পৃথিবিতে মহামনিষিগন দাম্পত্য জীবনের মাধ্যমেই সমাজ স্ংস্কার করেছেন। যারা সমাজের স্ংস্কারের কথা বলে এ জীবনকে দূরে ঠেলে দিয়েছেন তারা সত্যিই ভীত আর একজন কোমল হ্রিদয়ের নারীর কাছে যারা হেরে যায় তারা সমাজকে কি দিবে।এটা নিতান্তই নিজের সাথে নিজেকে প্রহসনের তুল্য। সেক্স প্রকৃতির দান, একে উপেক্ষা করতে পারে একমাএ যে প্রকৃতগতভাবে অক্ষম।আপনি নেক সন্তান রেখে গেলে দুনিয়া ও আখেরাত দু'যায়গায় কল্যান বয়ে আনবেন এব্ং কেয়ামত পর্যন্ত নেক পেতে থাকবেন।মুসলমানদের মধ্যে এক শ্রেনির কিছু লোক এ পথ বেছে নিয়েছে যার পরিনতি জাহান্নাম রুপি লেলিহান আগুন কারন তারা আল্লাহ ও রাসূল সা: এর বিরুদ্ধাচারন করছে।সঠিক দ্বীন বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজকে সুরক্ষা করুন। আল্লাহ আমাদের সৎ আমল করার তাওফিক দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
২০৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন