ব্যাক্তির জীবনে দ্বীন ও জীবন বিধান প্রতিষ্ঠিত হতে হবে সর্বাগ্রে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৮ জুন, ২০১৫, ০৩:০৩:০৯ দুপুর
সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি আসমান ও যমিন এবং তার ভিতর যা কিছু রয়েছে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে আর অধিষ্ঠিত হয়েছেন আরশে।যিনি মানুষকে তার প্রতিনিধি ও সৃষ্টির সেরা করে বানিয়েছেন।তিনি দুনিয়ার মানুষের সার্বিক কল্যান এবং আখেরাতে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি দিয়ে চির সুখের জান্নাত দানের লক্ষে যুগে যুগে মানুষের পক্ষ থেকে নবী ও রসূল মনোনীত করে তাদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ও কল্যানকর আইন বিধান সম্বলিত জীবন ব্যাবস্হা পাঠিয়েছেন যা সূরা মা'য়েদার ৩ আয়াতে " ইসলাম" নামে আখ্যায়িত করেছেন।ইসলামই হলো একমাত্র শান্তির ধর্ম যা মানুষকে পূর্নাঙ দিক নির্দেশনা দিয়েছে।আর এ কারনে মুসলিম মাত্রই পরিপূর্ন আনুগত্যের শির নত করে দেয় ইসলামের কাছে।সুরা আয্ যারিয়াতের ৫৬ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, আমি জ্বীন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য।' মানুষকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যুগে যগে নবী রসুল পাঠিয়েছেন এবং তার সাথে আসমানি কিতাব ও পাঠিয়েছেন।সর্বশেষ রসুল মোহাম্মদ ইবনু আব্দুল্লাহ যিনি মুসলিম তথা সমস্ত মানুষের রসুল।১৪০০ বছর পূর্বে মুসলমানের এই দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং রোজ কেয়ামত পর্যন্ত যা যা দরকার তার সবকিছুই তিনি শেষ রসুলের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছেন যার জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে নতুন কোন কিছু উদ্ভাবনের দরকার নেই। বিদায় হজ্জ সংগঠিত হয়েছিল,শুক্রবার ৯ই জিলহজ্জ ১০ হিজরি সনে আরাফার ময়দানে দুপুরের পর লক্ষাধিক সাহাবার সমাবেশে এই ঐতিহাসিক ভাষন দেন।সমস্ত প্রশংসার পর তিনি বলেন,হে মানুষ! তোমরা আমার কথা শুন,এর পর আমি তোমাদের সাথে এই স্হানে একত্রিত হতে পারবো কিনা জানি না।হে মানুষ!আল্লাহ বলেন,হে মানবজাতি! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারি থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের সমাজ ও গোত্রে ভাগ করে দিয়েছি যেন তোমরা পরস্পরের পরিচয় জানতে পার।অতএব শুনে রাখ,মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই,আরবের উপর কোন অনারবের,অনারবের উপর কোন আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, তেমনি সাদার উপর কালোর এবং কালোর উপর সাদার কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই।তোমাদের মধ্যে সেই ব্যাক্তি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারি যে আল্লাহকে ভালবাসে।হে মানুষ! শুনে রাখ,অন্ধকার যুগের সকল বিষয় ও প্রথা আজ থেকে বিলুপ্ত হলো।জাহেলি যুগের রক্তের দাবিও রহিত করা হলো।হে মানুষ! শুনে রাখ,অপরাধির দায়িত্ব কেবল অপরাধির উপরই বর্তায়।পিতা তার পুত্রের জন্য,পুত্র তার পিতার আপরাধের জন্য দায়ি নয়। হে মানুষ! তোমাদের রক্ত,তোমাদের সম্মান , তোমাদের সম্পদ পরস্পরের জন্য চিরস্হায়ি ভাবে হারাম অর্থাৎ পবিত্র ও নিরাপদ করা হলো যেমন আজকের এই দিন,আজকের এই মাস,আজকের এই শহর সকলের জন্য পবিত্র ও নিরাপদ।হে মানুষ! তোমরা ঈর্ষা ও হিংসা বিদ্ধেষ থেকে দূরে থাকবে।ঈর্ষা ও হিংসা মানুষের সকল গুনকে ধ্বংস করে।হে মানুষ! নারিদের সম্পর্কে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি।তাদের সাথে নিষ্ঠুর আছরন করবে না।তাদের উপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে তেমনি তোমাদের উপর তাদের ও অধিকার রয়েছে।সুতরাং তাদের কল্যানের দিকে সব সময় খেয়াল রেখ।হে মানুষ! অধিনস্তদের সম্পর্কে সতর্ক হও।তোমরা নিজেরা যা খাবে তাদেরও তা খাওয়াবে।তোমরা নিজেরা যা পরবে তাদেরও তা পরতে দিবে।শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তাদের মজুরি পরিশোধ করবে।হে মানুষ! বিশ্বাসী সেই ব্যাক্তি যার হাত ও মুখ থেকে অন্যের সম্মান ও প্রান নিরাপদ।সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্যের জন্যও তা পাছন্দ করে।হে মানুষ! বিশ্বাসিরা পরস্পরের ভাই।সাবধান! তোমরা একজন আর একজনকে হত্মা করার মত কুফরি কাজে লিপ্ত হবে না।হে মানুষ! শুনে রাখ,আজ হতে বংশগত শ্রেষ্ঠত্ব ও কৌলিন্য প্রথা বিলুপ্ত করা হলো।কুলিন বা শ্রেষ্ঠ সেই, যে বিশ্বাসী ও মানুষের উপকার করে।হে মানুষ! মানুষের দাবি দাওয়া ও রিন অবশ্যই ফেরত দিতে হবে।বিশ্বস্ততার সাথে প্রত্যেকের আমানত রক্ষা করতে হবে।কারো সম্পদ সে যদি স্বেচ্ছায় না দেয় তবে তা কারো জন্য হালাল নয়।তোমরা কেউ দুর্বলের উপর অবিচার করো না।হে মানুষ! জ্ঞান অর্জন প্রত্যেক নরনারির জন্য ফরয কারন জ্ঞান প্রত্যেককে সঠিক পথ দেখায়।হে মানুষ!তোমরা তোমাদের প্রভুর ইবাদত করবে,নামাজ কায়েম করবে,যাকাত আদায় করবে ,রোজা রাখবে ও হজ করবে আর সংঘবদ্ধভাবে নেতাকে অনুসরন করবে তাহলে তোমরা জান্নাতে দাখিল হতে পারবে।হে মানুষ! শুনে রাখ একজন কুশ্রী কদাকার ব্যাক্তিও যদি তোমাদের নেতা মননীত হয় যতদিন পর্যন্ত সে আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের পরিচালিত করবে ততদিন পর্যন্ত তার আনুগত্য করা তোমাদের অবশ্য কর্তব্য।হে মানুষ! শুনে রাখ,আমার পর আর কোন নবী আসবে না।হে মানুষ! আমি তোমাদের কাছে দু'টি আলোক বর্তিকা রেখে যাচ্ছি,যতদিন তোমরা এই দু'টো জিনিস অনুসরন করবে ততদিন তোমরা সত্য পথে থাকবে।একটি হলো আল্লাহর কিতাব দ্বীতিয়টি হলো আমার জীবন দৃষ্টান্ত।হে মানুষ! তোমরা কখনো ধর্ম নিয়ে বাড়া বাড়ি করো না কেননা অতীতে বহু জাতি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারনে ধ্বংস হয়ে গেছে।হে মানুষ! প্রত্যেকেকে শেষ বিচারের দিনে সকল কাজের হিসেব দিতে হবে।অতএব সাবধান হও।হে মানুষ! তোমরা যারা এখানে হাজির আছ আমার এ বানিকে সবার কাছে পৌঁছে দিও।এর পর তিনি জনতার উদ্দেশ্যে জিজ্গেস করলেন,হে মানুষ! আমি কি তোমাদের কাছে আল্লাহর বানি পৌঁছে দিয়েছি? সকলে সমস্বরে জবাব দিল 'হাঁ'।এর পর নবী সা: বললেন,হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষি থাক আমি আমার সকল দায়িত্ব পালন করেছি।সুরা হাশরের ৭ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন ,'রসুল তোমাদের যা দেন তা গ্রহন কর আর যা কিছু নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।' এই আয়াতে স্পষ্ট হয়েছে যে দ্বীনের ক্ষেত্রে কোন বাড়া বাড়ি চলবে না।আলকুরআন ও রসুল সা: এর হাদিসে যা আছে তা-ই দ্বীনের একামাত্র সম্বল এবং তা মেনে ইবাদত করতে হবে।ইসলামের মৌলিক জ্ঞান আহরন করার জন্য কোন বিশেষজ্ঞ হতে হবে না।সেযুগে একজন যাযাবর যার অক্ষরজ্ঞন ছিল না তিনিও দ্বীন বুঝেছিলেন।রসুল সা: এর ২৩ বছরের নবুওতি জীবন আমাদের জন্য অনুসরনীয় প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের কাছে এক্কিন(মৃত্যু) আসা পর্যন্ত।ইসলামের ইতিহাস পাঠ করলে যে কেউ বুঝতে পারে আসল দ্বীন বা জীবন বিধান কি? কিভাবে প্রাত্যহিক জীবনে আমাদের দ্বীন পালন করতে হবে।ইসলামের ৫টি মৌলিক বিষয়(ঈমান,নামাজ ,যাকাত(সামর্থ বানদের জন্য),রমজানের রোজা ও বায়তুল্লাহের হজ্জ(সামর্থবানের জন্য) রয়েছে যা মানা প্রত্যেক মু'মিন মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য।এর পর ব্যাক্তি ও পারিবারিক জীবনে দ্বীনের প্রতিষ্ঠা ও প্রসার।এর পর সংঘবদ্ধভাবে রসুল সা: যে দ্বীনের উপর থাকতে বলেছেন তা সমাজ ও রাষ্ট্রে রুপ দেয়ার চেষ্টা সাধনা করা। পরিবারটি হলো রাষ্ট্রের একটি একক।ইসলাম সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য এই প্রাথমিক স্তরটি অতি গুরুত্বপূর্ন।রসুল সা: এর মৃত্যুর পরে চারজন খলিফা(হযরত আবু বকর (রা),ওমর (রা),ওসমান (রা) ও আলি (রা) ৩০ বছর ইসলামি শরিয়ত দিয়ে সমাজ কায়েম রেখেছিলেন।চার জন খলিফার পর ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, হোছাইন রা: এর ৬ মাসকে খলিফাদের শাসনের সাথে তুলনা করেছেন।তাহলে ৩০ বছর ছয় মাস ছিল খেলাফতের শাসন।এর পর শাসন ক্ষমতা রাজতন্ত্রের দিকে চলে যায়। সে সময়ে রসুলের সাহাবিগন বিভিন্ন শহরে অবস্হান করেছিলেন।১১০ হিজরীতে শেষ সাহাবির মৃত্যু হয়ে যায়। এর পর তাবেঈ ও তাবা-তাবেঈ গন দ্বীনের কাজ করেছেন উমায়্যা ও আব্বাছিয় শাসনামলে যদিও সেখানে ইসলামের পূর্নতা ছিলনা।ওমর ইবনু আব্দুল আজিজ যাকে অনেকে পন্চম খলিফা হিসেবে আখ্যায়িত করেন,তিনি অনুসরন করেছিলেন হযরত ওমরা রা: এর শাসন কালের নিয়মাবলীকে।সেজন্য দেখা যায় তিনি অতি অল্প সময়ে উমায়্যা রাজত্বের অনেক ক্ষতকে সারিয়ে তুলেছিলেন।এর কারন ছিল তার ব্যাক্তি ও পারবারিক জীবনে দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও ইসলামি আইনের যথাযথ অনুসরন ও বাস্তবায়ন ।ইসলামের এই যুগগুলো ছিল আমাদের জন্য আদর্শ ও অনুসরনীয় যা রসুল সা: তার হাদিসে আমাদের বলেছেন অনুসরন করার জন্য। রসুল সা: বলেছেন,'আজকের যুগে আমার জীবদ্দশায় আমি যে আদর্শের উপর টিকে আছি এর উপর যারা কেয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে এবং আমার সাহাবাদের আদর্শের উপর যারা কায়েম থাকবে তারা দ্বীনের উপর থাকবে।' কিন্তু আমরা ইতিহাস থেকে দেখলাম চারজন প্রধান ঈমামের অন্তর্ধানের তিন শতাব্দিকাল পর তাদের উপর কিতাব লিখা শুরু হলো এবং তাদের ফিখ্হহের আলোকে উম্মত বিভক্ত হতে চললো যাকে মাযহাব বলা হয়।তাদের জীবদ্দশায় তারা রসুল সা: এর ছহি হাদিসকে অনুসরন করেছেন।তারা তাদের কথার কোন মুল্য দেন নি এবং বলেছেন রসুল সা: এর ছহি হাদিস এসে গেলে আমাদের কথা পরিত্যাজ্য।আজ এক কথা বললে আগামিকাল পরিবর্তন করেছেন যখন তারা ছহি হাদিস পেয়ে গেছেন।তাদের প্রত্যেকের অভিমত ছিল রসুল সা: এর পথ হলো আমাদের পথ।তাহলে তারা ছিল আমাদের দ্বীনি ভাই ও অনুসরনীয় চরিত্র।এভাবে কেয়ামত পর্যন্ত যারা রসূল সা:কে অনুসরন করবে তারাই দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত। সূরা আত্ তাওবার ১০০ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,'মুহাজিরদের ও আনসারদের মধ্যের অগ্রবর্তীরা -প্রাথমিকরা আর যারা তাদের অনুসরন করেছিল কল্যান কর্মের সাথে-আল্লাহ তাদের উপর সন্তুষ্ট আর তারা ও সন্তুষ্ট আল্লাহর উপর।' তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত সৎকর্মশীলরাই হলো আল্লাহর নৈকট্যের অধিকারি।সাহাবা থেকে শুরু করে ছিয়া ছিত্তাহ(ছয়টি প্রসিদ্ধ কিতাব) কিতাবের এই অসংখ্য বিশাল জ্ঞানের অধিকারি মুহাদ্দিছ ও উলামাগন সে সময়ের শাসকদের সময়ে দ্বীনের সংস্কারের কাজ কি করেছিলেন কোন দল তৈরি করে? না কোন সরকারকে উৎখাত করে দ্বীন কায়েম করতে চেয়েছিলেন।তারা ছিলেন আহলে আল সুন্নাহের উলামা।তারা দ্বীন চর্চা করতেন আলকুরআন ও রসুল সা: এর সুন্নাহের আলোকে ও মানুষকে ছহি দ্বীনের আলোকে সংস্কার করতেন।তাদের কিতাবগুলোতে থাকতো আলকুরআন ও ছহি সুন্নাহের কথা।এই কুরআন ও সুন্নাহের একটি দল ছিল যারা দ্বীনের খেদমতের মাধ্যমে মানুষকে শরিয়তের বিধিবিধান দিয়ে সংস্কার করতেন। এই দলটিই ইসলামের চিলচিলা যা উম্মত অনুসরন করবে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত।পৃথিবীর কোন দেশেই এখন ইসলাম কায়েম নেই এবং রয়েছে মুসলিম ফাসেক সরকার(যারা ভাল মন্দ মিলিয়ে কাজ করে) যারা মানবরচিত সংবিধানের মাধ্যমে রাষ্ট্র চালায়।গত কয়েক শত বছর ধরে পৃথিবীতে জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে দল তৈরি হয়েছে।এই জাতীয়তাবাদ তৈরি হয়েছিল রসুল সা; এর পৃথিবীতে আগমনের সময়েই।ইহুদিরা প্রভাতের সূর্যের মতই জানতো যে শেষ নবী আসবেন।কিন্তু তাদের ধারনা ছিল তাদের ইসরাঈল গোত্রেই শেষ নবী আসবেন।যখন তারা শুনলো তিনি মক্কায় আগমন করলেন তখন তারা কুফরি ও বিবাদ শুরু করে দিল।এটিই ছিল প্রথম জাতীয়তাবদের উদ্ভব।এ জন্য যে কোন জাতীয়তাবাদকে ইসলাম হারাম করে দিয়েছে।ইসলামের জাতীয়তাবাদ হলো ইসলাম।এখন ইসলামের রয়েছে বিভিন্ন দল গোষ্ঠি।সনাতন ইসলাম কে বিভক্ত করে 'আধুনিক ইসলাম' নামে বিভক্তি এসেছে যারা মনে করছে পশ্চিমাদের তুলনায় মুসলমানরা পিছিয়ে আছে এবং সেই সব জাতীয়তাবাদের দলগুলো যারা পশ্চিমা গনতন্ত্রে বিশ্বাসী তাদের সাথে ইসলামের দলগুলোর কেউ কেউ রাজনৈতিক ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে।পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে তার মত প্রকাশের এবং তা করতেই পারে।আমার চিন্তা চেতনার সাথে অন্যদের মিল নাও থাকতে পারে।তবে মুসলমান হিসেবে আমাদের সবারই সু-যুক্তি উপস্হাপন করতে হবে ও একমত পোষন করতে হবে।গনতন্ত্রের ভিত্তিই হলো মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও একে অন্যের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন।আমরা ইসলামের প্রাথমিক যুগেও দেখেছি খলিফা নিয়োগের সময় উম্মতের মতামতের প্রাধান্য ছিল।ইসলাম গনতন্ত্রে বিশ্বাসী। কেউ যদি পশ্চিমা গনতন্ত্রের কথা বলে দল গঠন করে রাজনীতি করে তাতে কারো কোন কিছু বলার নেই কারন যে কোন মানুষ সে অধিকার রাখে। মানব রচিত মতবাদ যেখানে থাকবে সেখানে ভুলক্রুটি থাকতেই পারে।কিন্তু ইসলামের শাসন ক্ষমতার কথা যদি বলা হয় তাহলে সে পথটি তো রসুল সা: ও সাহাবাদের পথে হতে হবে।আজকে পৃথিবীতে যারা ইসলামের কথা বলছে ও ইসলামি শাসনতন্ত্র কায়েম করার কথা বলছে,তাদের জীবন ও কর্মের সাথে সনাতন ইসলামের যৌক্তিক সম্পর্ক খুব কম দেখা যায়।অথচ কুরআনের আইনে রাষ্ট্র কায়েম করতে হলে সেই মানুষগুলোকে হতে হবে সৎ, নিষঠাবান ও কুরআনের চরিত্রের মত।যারাই এখন ইসলামের কথা বলে ও কাজ করে তাদের বিশাল অংশ দুনিয়ামুখী যাদের চরিত্র দেখে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয় না। তাহলে কি তারা বলতে চায় আমরা কুরআনের কিছু অংশ মানবো আর কিছু মানবো না? এক হাজার বছর ধরে ইসলামে কোন দল সৃষ্টি বা বিভক্তি ছিল না।এখন ইসলাম কায়েমের জন্য দলের উদ্ভব হলো কেন? অবশ্য আবুদাউদের ছহি হাদিসে রসূল সা: বলেছেন,'ইহুদি বিভক্ত হবে ৭১ ভাগে,খ্রীস্টান বিভক্ত হবে ৭২ ভাগে ও আমার উম্মত বিভক্ত হবে ৭৩ ভাবে।সবাই জাহান্নামে প্রবেশ করবে একমাত্র আমার উম্মতের একদল ছাড়া।'এই একদল হলো রসুল সা: এর অনুসরনীয় দল।মুসলমানদের রয়েছে এক আল্লাহ,এক কোরআন ও এক নবী।তাহলে মুসলিমরা বিভক্ত কেন এবং কেন চিন্তাধারায় এতো বিভিন্নতা? মুসলমানদের একটি ঐক্যবদ্ধ উম্মত হিসেবে থাকা উচিত নয় কি?আজকের মুসলমান নিজেদের মধ্যে অসংখ্য ভাগে বিভক্ত।সবচেয়ে দু:খ জনক হলো-এই বিভক্তি ইসলামের দ্বারা আদৌ স্বীকৃত নয়।ইসলাম বিশ্বাস করে তার অনুসারীদের মধ্যে ঐক্য এবং একতা লালন করতে।সূরা আলইমরানের ১০৩ আয়াতে বলা হয়েছে,'সবাই মিলে দৃড়তার সাথে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধর।'এই রজ্জুটি আল কুরআন যা সকল মুসলমানের একত্রে আঁকড়ে ধরে রাখা উচিত।সূরা নিসার ৫৯ আয়াতে বলা হয়েছে,'আনুগত্য কর আল্লাহর ও আনুগত্য করে রসূলের।'সকল মুসলমানের কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদিস অনুসরন করা কর্তব্য এবং নিজেদের মধ্যে তারা বিভক্ত হবে না।ফেরকাবাজি ও বিভক্ত ইসলাম সম্পর্কে সূরা আনআমের ১৫৯ আয়াতে বলা হয়েছে,'যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করে দিয়েছে এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে তাদের সাথে তোমার এতটুকু সম্পর্ক নেই।তাদের এ সব ব্যাপার আল্লাহর কাছে ন্যাস্ত।অবশেষে তাদের তিনি বলে দিবেন যা তারা করেছিল।' সূরা আর্ রুমের ৩২ আয়াতেও এমন হুশিয়ারি করা হয়েছে।মুসলিমদের মধ্যে সুন্নি ,শিয়া,হানাফি,মালিকি,শাফেয়ি,হাম্বলি আবার দেওবন্দি , বেরুলেভি,তাবলিগী ও বিভিন্ন জামাতী এসব বিভক্তি কোথা থেকে এলো? আমাদের রসূল ছিলেন একজন মুসলিম।তাঁর পূর্বে আগত সমস্ত নবী রসূল ছিলেন মুসলিম।যেমন সূরা নিসার ৫২ আয়াতে বলা হয়েছে,'ঈসা আ; ছিলেন একজন মুসলিম।'একই সূরার ৬৭ আয়াতে বলা হয়েছে,'ইব্রাহিম না ইহুদি ছিল,না খ্রীষ্টান।সে ছিল একজন মুসলমান।তিনি বলেন,কুরআন বলেছে নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দাও।' সেজন্য মুসলিমদের উচিত কেউ তাদের পরিচয় জানতে চাইলে বলা যে,আমি একজন মুসলিম।মহানবী সা: নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিয়েছেন যা কোরআন সাক্ষ্য দিচ্ছে এভাবে,'তার চেয়ে কে বেশী উত্তম? যে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করে এবং বলে আমি মুসলিম।' আলকুরআনকে ছেড়ে দিয়ে যারা মানুষকে মুরুব্বি মেনে নিয়েছে তারাই ইসলামকে বিভক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করেছে ও গোম্রাহ করেছে বিবেকহীন মানুষদের। আর যদি কেউ মনে করে উম্মতে মিথ্যার ছড়াছড়ি সেজন্য আমরা মানুষকে ডাকছি রসুল সা: এর ঐ একটি দলের দিকে।তাহলে তো তাদের জাতীয়তাবাদের দলগুলোর সাথে এলাই করার দরকার নেই।রসুল সা: মক্কায় মুশরিকদের সাথে দ্বীন কায়েমের জন্য ক্ষমতা ভাগাভাগি করেন নি।মানব রচিত গনতান্ত্রিক ব্যাবস্হায় বিরোধীদল থাকবে আর তাদের উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতায় আরোহন করা, সে যেভাবেই হোক।সেখানে নৈতিকতা নেই এবং নৈতিক মান সম্পন্ন নেতার সংখ্যা খুবই নগন্য।সেজন্য ইসলামের কথা যারা বলবে তাদের আলাদা ফ্লাটফর্মে থেকে ইসলামের কাজ করতে হবে যেভাবে হাজার বছর ধরে বড় বড় ঈমামগন কাজ করে গেছেন।তাহলে কি আমরা বলবো ঈমাম বোখারি বা মুসলিম (র) তারা ভুল পথে ছিলেন?(নাউজুবিল্লাহ)।তারা তাদের সারা জীবন কুরআন ও ছহি সুন্নাহের আমল করেছেন ,মানুষদের শিখিয়েছেন,হাদিস সংগ্রহ করার জন্য জনপদে ঘুরেছেন।চারজন বিখ্যাত ঈমাম বা ঈমাম বোখারির ও মুসলিমের মত প্রখ্যাত ঈমামগন কি তাদের সময়ে ইসলামের কোন একটি দল তৈরি করতে পারতেন না যেখানে সরকার ইসলামি সরকার ছিল না।তারা আল্লাহকে বেশী ভয় করতেন।ক্ষমতা নিতে চাইতেন না।ঈমাম আবু হানিফা (র) কে কারাগারে থাকতে হয়েছিল কারন তিনি প্রধান বিচারপতির আসন নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন।কাউকে কটাক্ষ করার জন্য আমি বলছি না।প্রত্যেকে প্রত্যেকের আমলের হিসেব দিবে।কারো কবরে কেউ প্রবেশ করবে না।তবে দ্বীন শিখার ক্ষেত্রে ও অন্যদের দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের সঠিক উপাদানটি পৌঁছাতে হবে এবং আমাদের বুঝার চেষ্টা করতে হবে।এর কারন হলো আল্লাহর কাছে আমাদের জীবনের কর্মের হিসেব আমাদেরই দিতে হবে।কোন বুজর্গ বা নেতা কারো হিসেব দিবেন না, সেদিন প্রত্যেকে তাদের নিজেদের নিয়েই ব্যাস্ত থাকবেন।একটি বিষয় পরিষ্কার আর তা হলো-দ্বীনের আমলের জন্য সনাতন ইসলামকে অনুসরন করতে হবে এবং সেই জামাতের অনুসরন করতে হবে।দ্বীনকে বুঝার জন্য রসুল সা: এর ছহি হাদিসের স্মরনাপন্য হতে হবে তাহলেই উম্মত পথ পেয়ে যাবে।প্রয়াত জামাতে ইসলামের প্রাক্তন আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব-তার অনেক বক্তৃতায় যে জিনিসটি প্রাধান্য দিয়েছিলেন এবং বার বার বলেছিলেন সেটি হলো 'ইসলাম প্রতিষ্ঠা' করার জন্য শতভাগ কুরআন ও সুন্নাহের কর্মী তৈরি হতে হবে।তানাহলে আল্লাহ কখনো ক্ষমতা দিবেন না। তিনি রেফারেন্স ও দিয়েছেন সুরা নুরের ৫৫ আয়াত দিয়ে যে,তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কর্ম করেছে আল্লাহ তাদের ওয়াদা করেছেন তাদের পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন।' তিনি তার কাজ করে গেছেন।তাকে নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে কথা আছে।যেহেতু তিনি তার জীবনের অধ্যায় পেরিয়ে গেছেন তখন আমাদের ভাল কাজ গুলোর কথাই বলতে হবে।কোন মানুষের মৃত্যুর পর তার ভাল দিকগুলো আলোচনা করাই কল্যান।একজন কেন্দ্রীয় নেতার পক্ষে জানা সম্ভব নয় দেশে লাখ লাখ কর্মি কি করছে।কিন্তু তিনি যে মেসেজটি পাঠিয়েছেন সেটি ধারন করার মত কতজন কর্মীবাহিনী সেই দলে তৈরি হয়েছে তা দলকে ভেবে দেখতে হবে।জামাতে ইসলামি বাংলাদেশ ইসলামের একটি বড় দল।ইসলামের সঠিক পদ্ধটি(রসূল সা: এর দেখানো পথ) অবলম্বন করা হলে সম্ভব ছিল দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা। আহলে আল সুন্নাহের অনুসরনের দল বলে থাকলেও সেখানে ইসলামের মৌলিক কাঠামোর অনেক সংস্কার করে কুরআন ও সূন্নাহের পথ ধরতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।এটি ইসলামের বিভক্ত দলগুলোর একটি এবং তথাকথিত গনতান্ত্রিক দলগুলোর অংশীদার যাদের মুল লক্ষ্য হলো ক্ষমতায় অংশগ্রহন করে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করা।রসূল সা: ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে এভাবে পথটি বেচে নেন নি বা সাহাবা আজমাইনগনও রসূল সা: এর পথ ছাড়া অন্য কোন পথ অবলম্বন করেননি।বাংলাদেশের শাসন চলছে মানব রচিত সংবিধানে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে ইসলামের সংবিধান আলকুরআন ও সুন্নাহকে প্রাধান্য দিয়ে মানব রচিত সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।আর মোট জনসংখ্যার ৩-৫% ভোট যদি জামাতের থেকে থাকে তাদের পক্ষে এত সহজে ইসলাম বিজিত করা সম্ভব হবে কিনা ভেবে দেখতে হবে।আর সেটিও সম্ভব হতো যদি এই ৩-৫% যদি হতো ঈমানের দিক থেকে উচ্চ মাপের।ইসলামের ইতিহাসে কোন বড় দল দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় নি।ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ছোট দল দিয়ে যাদের আল্লাহ সাহায্য করেছিলেন।সুতরাং রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করার আগে নিজেদের ঈমানদার কর্মী তৈরি করতে হবে।ইসলামের সেই মানুষগুলো যদি তৈরি না হয় এবং ইসলামের পথটিও যদি সঠিক না হয় তাহলে ইসলাম বিজয়ের রাস্তাটি কুষমাস্তীর্ন নয়।এই পথটি ও সঠিক নেতৃত্ব তৈরি না হওয়ার কারনে দলটি আজ বিপর্যস্ত এবং বহু কর্মীর জীবনাবশান,সমাজের শান্তি ও শৃংখলা বিঘ্নিত হওয়ার মত অবস্হা হয়ে চলছে যা ইসলাম অনুমোদন করে না।আমাদের দেশে ৯০% মুসলিম।একজন মুসলিম দ্বীন কায়েমের জন্য মুসলিমকে হত্বা করবে এ কেমন কথা? তার চেয়ে ইসলামি দলগুলো যদি ইসলামকে ভালবাসে ও একটি ইসলামি উম্মাহতে বিশ্বাস করে তাহলে তাদের মধ্যে ঐক্য হচ্ছে না কেন? রসুল সা: এর আদর্শ বাস্তবায়ন করার জন্য মক্কার ১৩ বছরের ইতিহাসের প্রতি ইসলামি দলগুলো যদি দৃষ্টি নিবদ্ধ না করেন ও সেভাবে মানুষ তৈরি করনে মনোনিবেশ না করেন ইসলামি সরকার প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়।এখন যারাই ইসলামি শাসন কায়েম করতে চান সেখানে খুব অল্পই আছেন যাদের ব্যাক্তি জীবন পরিশুদ্ধ।সংগঠনের যে মুল প্রান, সদস্য নির্বাচন করা হয় যাদের হওয়া উচিত সীসাঢালা প্রাচীরের মত। সে সমস্ত সদস্যদের অধিকাংশই সঠিক ইসলামের কোন ধারনা রাখে না এবং ব্যাক্তি জীবনে হালাল হারামের সীমারেখার মধ্যে নেই।তাদের দেখে ও কথা শুনে সাধারন মানুষ দ্বীনদার হবে বা দ্বীনে দীক্ষিত হবে তা হতে পারছে না।কারন মানুষ দেখে যারা দ্বীনের কথা বলতে চায় তাদের নিজের জীবনে সততার ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে এবং যে পথটির জন্য ডাকা হয় তার সাথে রসূল সা: এর পথের ও কর্মের পার্থক্য রয়েছে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য নবী সা: এর চরিত্র ছিল আল কুরআনের চরিত্র।তেমনি সাহাবারা যখন রাস্তায় হাঁটতেন তখন মনে হতো কোরআনের চরিত্র হাঁটছে।জামাতে ইসলামি বাংলাদেশের এই সংগঠনে এই চরিত্রগুলো ব্যাপক দেখা যাচ্ছে না।বরং তাদের বায়তুল মালের এক সময় যে রক্ষক ছিলেন তিনি ভক্ষক হয়ে গিয়েছিলেন এবং তিনি ছিলেন একজন কেন্দ্রীয় নেতা।সংসদ নির্বাচন কালীন সময়ে ভোট ব্যাংক জালিয়াতির ও অভিযোগ রয়েছে তার এলাকায়।ইসলামের অনেক কাজই সেখানে হচ্ছে তবে তার চেয়ে বেশী প্রাধান্য পাচ্ছে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি।আর যে সাংগঠনিক বৈঠকগুলো হয় সেখানে কোরআন হাদিসের তদৃছ দিবে এমন কোন প্রশিক্ষক থাকেন না।একজন সাধারন কর্মী কুরআন ও হাদিছের দরছ দেন অথচ তার ছহিশুদ্ধ কুরআন নেই।কর্মীদের কুরআন হাদিছের যে প্রশিক্ষন দরকার তা না থাকার কারনে সেখানে তৈরি হয় বিদাআত।আর এই বৈঠকগুলোতে অংশগ্রহনকারি কর্মীগন কুরআন হাদিছের মৌলিক জ্গান না থাকার কারনে গিবত,চোগলখুরি ও রাজনৈতিক আলাপই করে থাকে অনেকাংশে।ইসলাম একটি বিজিত ধর্ম এবং এর কাজ হবে সদরে।সৌদি আরবে রাজতান্ত্রিক শাসন হলেও ইসলামের মুল বিষয় গুলো এখানে বিদ্যমান।এখানকার সুন্নাহের উলামাগন মসজিদে তাদের ইসলামের দাওয়াত দেন যেভাবে রসূল সা: মসজিদ থেকেই ইসলামি শাসকের দায়িত্ব পালন করতেন। কিন্তু ইসলামি দলগুলোকে দেখা যায় তারা গোপনে বৈঠকগুলো করে ও ইসলামের কাজ করে।তাদের দলীয় লোকজন ছাড়া অন্যদের সহজে তাদের সাথে বসতে দেয় না।এ থেকে বুঝা যায় এ সব সংগঠন তাদের দলীয় কাজের সাথে ইসলামকে ব্যাবহার করে তাদের কার্যক্রম চালায়।আমি বলতে চেয়েছি ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যে পথ নির্দেশ রয়েছে তার ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে ইসলামের এ সব দলগুলোতে।তাদের রয়েছে দলের একটি পরিচালনাবিধি।এই পরিচালনা বিধি তাদের দলের বিধিবিধান সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করতে হলে আলকুরআন ও সুন্নাহের বিধান দিয়ে একশত ভাগ সাজাতে হবে ও জাতীয়তাবাদের দলগুলো থেকে তাদের আলদা করতে হবে। ক্রুটিগুলো খুঁজে বের করে ষ্ট্রেটেজিক পরিকল্পনা নিলেই সমাধানের পথ পাওয়া যাবে।দলে যেসব দুনিয়া মুখী বুর্জুয়া নেতা রয়েছে তাদের চিহৃিত করে হয় সংস্কার করতে হবে না হয় বহিষ্কার করে ক্লীন ইমেজের ইসলামের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে যাদের দুনিয়ার অনৈতিক লোভ নেই।এই দুনিয়ামুখী বুর্জুয়া মুসলিম নেতাদের দিয়ে এত সহজে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবার নয়।সেজন্যই ইসলামি দলগুলোকে আলকুরআন ও সুন্নাহের আলোকে মানুষগড়ায় মনোনিবেশ করতে হবে।যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বীনের মানুষ গড়ে উঠবে তখন জাতীয়তাবাদের শক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবদমিত হবে যেভাবে মক্কার বিজয় হয়েছিল।মানুষ হত্যা করে,জ্বালাও পোড়াও করে,ধনসম্পদ নষ্ট করে,জনজীবন বিপন্ন করে ইসলাম কখনো প্রতিষ্ঠিত হয় নি এবং এটি নবী সা: এর সুন্নত ছিল না। ইসলামকে যে ভালবাসবে তাদের কাজ হলো- ইসলামের কোন ক্রুটি ধরা পড়লে তা জানিয়ে দিতে হবে।অনেক ইসলামের কর্মী ভাই রাষ্ট্রীয় জীবনে ইক্কামতে দ্বীনের জন্য প্রান দিতে প্রস্তুত কিন্তু তার জীবনে ও তার পরিবারে ইক্কামতে দ্বীন কায়েমের কোন চেষ্টা নেই।নিজের জীবনে ইক্কামতে দ্বীন কায়েম না করে রাষ্ট্রীয় জীবনে ইক্কামতে দ্বীন কায়েম করার জন্য নিজেকে বিলীন করা আদৌ ইসলামের একজন কর্মীর কাজ হতে পারে না।এই অপব্যাখ্যাটি যারা করে থাকেন তাদের বলছি,একজন মুসলিম ঈমান আনলো,পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করলো,যাকাত আদায় করলো,রমজানের রোজা রাখলো, বায়তুল্লাহর হজ্জ করলো ও সাথে সাথে আল্লাহর আদেশ নিষেধ গুলো মানুষকে তার সামর্থ মত পৌঁছালি-এগুলো কি ইক্কামতে দ্বীনের কাজ নয়? ইসলামের কর্মীবাহিনীকে এই মৌলিক কাজগুলো দিয়ে শতভাগ তৈরি না করা পর্যন্ত ইসলাম কায়েম সম্ভব নয়।তাহলে আজকে যে নবীন সম্প্রদায়(সব দলের) লাঠিয়ালের মত রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংগনে চর দখল করার মত অবস্হা তৈরি করছে সেটির জন্য দায়বদ্ধতা দলগুলোর নয় কি? এই চরিত্রের কর্মীবাহিনী যদি দলে থাকে তাদের দিয়ে কিভাবে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হবে?আমাদের কাজ হলো একে অন্যকে সংস্কার করা।দ্বীনের ক্ষেত্রে যে যেটুকু ছহি কাজ করে কটাক্ষ না করে তাদের ইসলামের সহযুগী মনে করতে হবে। নবী রসুলগন এ কাজটিই করে গেছেন।তবে আমাদের সংকীর্নতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে ও ইসলামের কাজ করতে হবে।আমরা যে যা-ই করিনা কেন আখেরে আমাদের হিসেব আমাদেরই কষতে হবে যা আগেও বলেছি।আমার কিছু মতামত আমি পেশ করছি জামাতে ইসলামি বাংলাদেশ নামক দলটির উন্নয়ন পরিকল্পনায়।যেহেতু দলটি একটি গনতান্ত্রিক জোটের দল,একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এটি আমার একটি ব্যাক্তিগত পরামর্শ মাত্র।আর যেহেতু ইসলামের কথাই তারা বলেন তাহলে কিভাবে অদূর ভবিষ্যতে ইসলামের উন্নয়ন করা হবে তার পরিকল্পনা দল থেকে নিতে পারলে নিশ্চই উন্নতি হবে।সুপারিশ গুলো নিম্নরুপ:১-ইসলাম প্রতিষ্ঠা যদি লক্ষ্য হয় তাহলে জোট বহির্ভূত আলাদা ফ্লাটফর্ম তৈরি করন:--ইসলামের মৌলিক বিধান হলো আলকুরআন ও ছহি সুন্নাহ যা দলের মধ্যে প্রাধান্য দিতে হবে।এ কাজটি হাজার হাজার বছর পর্যন্ত ছিল উলামাদের দ্বীনি জীবনে।তারা অনুসরন করেছিলেন একমাত্র রসুল সা:কে।আক্কিদার দিক থেকে পুরোপুরি আহলে আল সুন্নাহের অনুসরন করতে হবে।দলের উপরি কাঠামো থেকে নিচু কাঠামো পর্যন্ত সমস্ত নেতা কর্মীর চরিত্র হতে হবে কুরআন ও সুন্নাহের চরিত্রে অনুকরনীয়।মানুষকে গড়ে তোলার জন্য সামাজিক কার্যক্রম হাতে নিতে হবে যাতে কুরআন ও সুন্নাহের প্রসার ঘটে।ইসলামের মৌলিক জ্ঞানের সাথে সাথে পার্থিব জ্ঞানে স্বশিক্ষিত হওয়ার জন্য কর্মীদের উজ্জিবিত করতে হবে।বর্তমান প্রেক্ষিতে যে কর্মী তৈরি হচ্ছে তা কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে পুরপুরি তৈরি নয়।যদি কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে প্রকৃত মানুষ তৈরি হয়ে যায় তাহলে দ্বীন কায়েম সম্ভব।বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও ইসলামি সরকার যেহেতু নেই সহনশীলতার সাথে রসুল সা: এর পথ অবলম্বনে ইসলামি দলগুলোকে মানুষের কল্যানে কাজ করে যেতে হবে ও মানুষ তৈরির কারখানা তৈরি করতে হবে।সমস্ত ইসলাম মনা মানুষগুলোকে এক মুসলিম উম্মায় কাজ করতে হবে।জাতীয়তাবাদের শক্তির সাথে স্বার্থান্নেশী চরিত্র অবলম্বন করলে ইসলাম কখনো কায়েম হবে না।আজ যা হচ্ছে, ইসলামের দলগুলো নিজেদের স্বার্থে জাতীয়তাবাদের শক্তির সাথে বিভক্ত হয়ে ইসলামের যেমন ক্ষতি করছে তেমনি রক্ত ঝরছে ইসলামের কর্মীদের।ইসলামের স্বার্থ হলো ইসলাম কায়েম।শাসন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোন গনতান্ত্রিক সরকারকে টানিয়ে নামানোর যে সহিংস আন্দোলন যেখানে রয়েছে জান মালের ক্ষতি তা ইসলামে কাম্য নয়।আজকের সময়ে সহিংসতার জন্য জামাতকে যে দায়বদ্ধ করা হচ্ছে তার কিছু অংশ তাদের মাথা পেতে নিতে হবে কারন তারা জোটের অংশীদার।জোটে আরো দল থাকলেও তাদের ব্লেম দিচ্ছে না কারন কিছু সংখ্যক সহিংসকারী ইতিমধ্যে ধরা পড়েছে জামাতের অংগসংগঠন থেকে এবং অনেকেই মনে করেন জামাত এই সষহিংসতার জন্য দায়ী।সেকারনে জামাতকে সরে যেতে হবে যাতে তারা ব্লেমগেমে না পড়ে।২-জোটে থাকার কুফল:--সেকুলার ও জাতীয়তাবাদের সাথে ইসলাম একটি সাংঘর্ষিক বিষয়।ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে চলবে কুরআনের শাসন, আর সেকুলার ও জাতীয়তাবাদে মানব রচিত সংবিধান ও পশ্চিমা গনতন্ত্রের অনুসরনকারি।জামাতকে তারা ব্যাবহার করবে ভোটব্যাংকের জন্য।ইসলামের বিজয় হওয়ার জন্য তেমন কোন কিছুই তারা করবে না।জোট গঠন করে জামাত যে সুবিধা পাবে তা হলো আর্থিকভাবে সামর্থবান হবে।কেউ মন্ত্রি এমপি হলে দলের লোকদের বিভিন্ন সেক্টরে চাকুরি দিতে পারবে ও তার সাথে কর্মীরা পাবে ব্যাবসায়িক সুবিধা।ইতি পূর্বে জোটের দলগুলো এই সুবিধাই গ্রহন করেছে।রাজনীতি এখন লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। রাজনীতির নামে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে টেন্ডার, চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের বৈধ ও অবৈধ ব্যবসা। নেতারা মালিক হচ্ছেন ব্যাংক-বীমা, বেতার-টিভি, বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের। এমনকি ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থেকেও অনেকে সরাসরি নিজের নামে-বেনামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। শুধু দেশে নয়, বিদেশে অবস্থান করা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাও এখন দেশে এসে নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িয়েছেন।জামাতে ইসলামের জোটে থাকলে এদিক থেকে কর্মি ও নেতারা লাভবান হবে ঠিক ইসলামের নেতৃত্ব তৈরি হবে না যার প্রমান রয়েছে সমাজে।সুতরাং ইসলামের যে মৌলিক কল্যান তা এভাবে সম্ভব নয়।এটি ইসলামের পথও নয়।
৩-স্ট্রেটেজিক পরিকল্পনা-আমার মতে গত ৩৪ বছরে জামাতের কেন্দ্র থেকে এর সঠিক পরিকল্পনা নেয়া হয় নি।স্ট্রেটেজিক পরিকল্পনা হলো- অতীতের ভুলের আলোকে নিজেদের আমুল পরিবর্তন করা।রাজনীতি হলো মানুষের কল্যানের জন্য।মানুষের কাছে যেতে হলে নিজের দুর্বলতাগুলোর জন্য দরকার হলে ক্ষমা চাইতে হবে।যুদ্ধাপরাধের কথা যুগ যুগ ধরে চলতে পারে না।স্বাধীনতার পর জন্ম নেয়া ও আজকের যে ৩০% যুবক তারা কেন যুদ্ধাপরাধের ভার বহন করবে।যাদের যুদ্ধাপরাধি হিসেবে চিহৃিত করা হয়েছে ইতিমধ্যে তাদের কারো বিচার হয়েছে ও বিচারাধীন আছে আর যুদ্ধাপরাধী তো শুধু জামাতেই নয়,অন্যান্য দলেও আছে।আমি মনে করি যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি মিটমাট হয়ে গেলে জামাতের আগামি দিনগুলো সেদিক থেকে সুপ্রসন্ন।সে কারনেই তাদের দলকে পুরোপুরি সংস্কার করতে হবে যাতে ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। রাজনৈতিক এই কৌশলে জামাত এগুতে পারেনি।নির্বাচন আসলে যারা ভোট দেয় তাদের কোন বিকল্প নেই বলে অনেকে ভোট দেয়।কারন ইসলাম প্রিয় অনেক মানুষ আছে যারা ইসলামের ভালবাসার কারনে ক্রুটি থাকলেও তাদের পক্ষে সহমত প্রকাশ করে।দলের রোকন , আমীরে জামায়াত, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা; কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এ সমস্ত সদস্যরা যারা হলো দলের প্রান।মাঠ পর্যায়ে বিশাল একটি অংশ এখনো রয়েছে যারা ইসলামের প্রতিনিধিত্বকারি হিসেবে তৈরি হয় নি।এর অনেক উদাহরন রয়েছে।আমি সরজমিনে একটি উদাহরন দিচ্ছি এ থেকে প্রমানিত হবে তাদের দুনিয়ামুখিতা সম্পর্কে।আমার শ্বশুর জনাব তোজাম্মেল হক-যিনি সৌদি বিনলাদিন গ্রুফে ফাইনান্স ডিভিশনে একজন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন।তিনি ভেড়ামারার অধিবাসি।ভেড়ামারা শহরে তার দেড় বিঘা জমির উপর দ্বিতল বাড়ি ও সামনে একটি বড় মাঠ।উনারা জামাতের সক্রিয় কর্মী বিধায় এবং বাড়িটি খালি বলে সেখানে একটি স্কুল করতে দেয় সাময়িক ভাবে যার নাম " আল হেরা স্কুল"।এখন স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত এবং বাড়ির মালিক কোন সুবিধা নেন না স্কুল থেকে।যিনি স্কুলের প্রিন্সিপাল তিনি ও একটি চক্র এর আয় ভোগ করছেন।সমাজে এ রকম দ্বীনদার মানুষ দেখতে পাওয়া যায় যারা হালাল হারামের সীমারেখা মেনে চলেন না।আবার তারাই মানুষকে নসিহত করতে যান। দু'বছর হলো ওয়ারনিং দিচ্ছেন স্কুল ছেড়ে দেয়ার জন্য কিন্তু তারা বাড়ির মালিককে ছাপে ফেললেন যে তাদের তাহলে স্কুলের জন্য যায়গা কিনে দিতে হবে এবং তিনি সেটিও করলেন আপদ সরানোর জন্য।এখনো তারা বাড়ি ছাড়ছেন না।একটি ইসলামের দলে যদি এ রকম নেতা কর্মী থাকে তাহলে সে দলটি ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে কিভাবে কল্পনা করা যায়? এটি আমাদের পারিবারিক একটি জানা ঘটনা।জাতীয় পর্যায়ে এ রকম হাজার হাজার কর্মী গড়ে উঠেছে এবং কোটি পতি হয়েছে জোট সরকারের সময় যা আমাদের নখদর্পনে আছে।যাদের কুরআন ও সুন্নাহের কোন আমল নেই এবং শুধু দলে ভীঁড়ে তারা কোটিপতি হয়েছেন।এমন অনেক লোকাল কর্মী রয়েছে যারা জাতীয়তাবাদের ক্ষমতাসীন শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে টাকা কামিয়ে কোটিপতি হয়েছেন। তাহলে এই কর্মীদের দ্বারা কিভাবে সম্ভব দ্বীন কায়েম? অন্য দলের লোকরা অন্যায় করে কারন তাদের ইসলাম সম্পর্কে কোন ধারনা নেই আর ইসলামের লোকগুলো যেনে শুনে যদি সেই অন্যায়গুলো করে তাহলে দ্বীনের কর্মী তৈরি হবে কেমন করে।এই দুই শ্রেনীর লোকের কার্যক্রম কি অপরাধের দিক থেকে সমান?৪-জংগিবাদের সংশ্রব ত্যাগ করা:ইসলামের উপর আন্তর্জাতিক মিডিয়ার একটি নেতিবাচক ধারনা রয়েছে।মুসলিম নাম শুনলেই তারা মনে করে মুসলমানরা জংগি।আমরা ইতিহাস দেখলে দেখতে পাই যতগুলো ঘটনা ঘটেছে আন্তর্জাতিক অংগনে এর সিংহভাগ করেছে অমুসলিমরা।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই জংগিবাদি অনেক দল রয়েছে যাদের অভিভাবক হলো আন্তর্জাতিক চক্র।এরা গনতান্ত্রিক সরকারগুলোর দুর্বলতার সুযুগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে থাকে।আমরা জামাতের ব্যাপারে এ কথাগুলো শুনে থাকি সরকারগুলোর মুখে।কিন্তু সরকারকে এও করতে দেখিনা যে তারা ধরে উদাহরন মুলক কোন শাস্তি দিয়েছে।জামাত যদি তাদের মনে করে তাদের ভিতর কোন জংগীবাদ নেই তাহলে তাদের এ বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে।কারন আমরা দেখতে পাই শিবিরের কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে ধরা পড়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তারা অস্ত্রবাজি করছে।যদি তারা তাদের দ্বীনি সংগঠন মনে করে থাকে তাহলে তাদের হাতে অস্ত্র থাকবে কেন? অন্য দলগুলোর কর্মীরা যা করে তারা সে কাজটিই করছে।তাহলে অন্যরা ইসলাম শিখবে কি করে? দলের কল্যানের জন্য তাদের এ সমস্ত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে যা অনুর্বর করে ফেলেছে দলকে।জমিতে যেমন লোনা জমে গেলে ফসল হয় না তেমনি জামাতে অসম্ভব লোনা জমছে যার দেখাশুনা কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
৫-ইসলামের যোগ্য নেতা তৈরি করন:-দলের পরিচালনা বিধিকে কুরআন ও সূন্নাহ দিয়ে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিতে হবে।যেহেতু এটি একটি ইসলামের রাজনৈতিক দল সেহেতু দেশে নেতৃত্ব দেয়ার মত মানুষ তৈরি করতে হবে।দলের ভিতর গনতন্ত্রের চর্চার জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে প্রতিটি সমাজকাঠামো থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত।তৃনমুল থেকে এখন যে নেতা তৈরি হচ্ছে সব দলগুলোতে তারা কেন্দ্রের নেতাদের দ্বারা শাসিত ও সুবিধাভোগী শ্রেনী যাদের লক্ষ্য হলো ধনসম্পদ অর্জন।উপজেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সর্বস্তরে এখন ভাগাভাগি করে খাচ্ছে।যে যেখানে যেটুকু সুবিধা পাচ্ছে সেটুকু অর্জন করছে।এ অবস্হায় নেতা তৈরি হবে না।এর জন্য সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা প্রয়োজন।গনতন্ত্রে অন্ধ ভালবাসা থাকলে সমাজ অন্ধকার হতে বাধ্য।উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য:জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর গঠনতন্ত্র অনুসারে, কোরানে বর্নিত আল্লাহর আইন অনুসারে সমগ্র রাষ্ট্রে পরিপূর্ণ ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েম করা। ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করে সমগ্র রাষ্ট্রে সম্পূর্ণরূপে কায়েম করিবার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করা এবং আল্লাহর নির্দেশিত অবশ্য পালনীয় কর্তব্যসমূহ যেমন নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত ইত্যাদি পালনে নাগরিকদের সচেতন করা। এসবের মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সর্বপ্রকার আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক হুমকি এবং বিশৃংখলা হইতে রক্ষা করিবার চেষ্টা করা। দায়িত্বশীল নাগরিক এবং চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে শোষনহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করে জনসাধারণের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করা এবং বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা।তবে ২০১২ সালের অক্টোবরে গঠনতন্ত্রে আনীত সংশোধন অনুযায়ী দলটি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা উল্ল্যেখ করে।উপরে বর্নীত দু'টি বিষয় বুঝতে আমার অসুবিধা হলো-১: ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করে সমগ্র রাষ্ট্রে সম্পূর্ণরূপে কায়েম করিবার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করা।জামাতে ইসলামতো ইসলামের একটি বিভক্ত দল।তাহলে তারা কিভাবে ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করবে? ২ : ২০১২ সালের অক্টোবরে গঠনতন্ত্রে আনীত সংশোধন অনুযায়ী দলটি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা উল্ল্যেখ করে।পূর্বে গঠনতন্ত্রে যেখানে ছিল ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম,তাহলে এখন তাদের লক্ষ্য পরিবর্তিত হয়ে পশ্চিমা গনতন্ত্র কায়েম করা লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।ইসলাম যেদিন থেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই কর্মসূচিই চলবে কেয়ামত পর্যন্ত।দলের নিয়ম নীতি পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু ইসলামের নীতির কোন পরিবর্তন করার কারো অধিকার নেই।ইসলামি শরিয়ার কোন কোন ক্ষেত্রে ইজমা দরকার হলে সেটি হবে সারা বিশ্বের ইসলামি দেশগুলোর সুন্নার উলামাদের দিয়ে।অবশ্যই কোন বিভক্ত দলের উলামাদের ভিত্তিতে নয়।যাই হোক,আমাদের সবার উচিত হবে নিজের ও পরিবারের জীবনে প্রথমে ইক্কামতে দ্বীনের ভীত কায়েম করা ।এর পর মানুষের মাঝে দ্বীনের কথাগুলো পৌঁছে দেয়া।যেখানে ইসলামি হুকুমাত কায়েম নেই সেখানে সৎ মানুষদের উচিত একে অন্যের সাহচর্যে এসে যার যার যায়গা থেকে কল্যানের কাজগুলো করা ও নবী সা: এর সুন্নাহ অনুযায়ী ইসলামি আন্দোলন গড়ে তোলা।এই আন্দোলনের অর্থ এই নয় যে দেশে মুসলিম সরকারকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করা ও দেশে মানুষের জান মালের ক্ষতি করা।রাসুল সা: মক্কার জীবনে লান্চনা গন্জনা সহ্য করেছিলেন কিন্তু ইসালমের মানুষ তৈরি করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে ইসলাম বিজিত হয়েছে।আমাদের ইসলামের ভাইদের সেই পথটিই অনুসরন করতে হবে কারন শত শত বছর ধরে ইসলামের ভীতর যে পংকিলতা তৈরি হয়েছে সেই মুলটিকে গ্রহন করেই এগিয়ে আসতে হবে।সেযুগে সাহাবাদের ইসলামের জন্য যে অন্তর তৈরি হয়েছিল সে অন্তর এখন অবর্তমান।আজকের ইসলামি নেতৃত্বে সেই অন্তররগুলো পরিবর্তীত হয়ে বুর্জোয়ার অন্তর তৈরি হয়েছে।সুতরাং অন্তরকে পবিত্র করে সমস্ত লোভলালসা থেকে দূরে সরে এসে সাধারন মানুষের কাতারে এসে মানুষের কল্যানে এগিয়ে আসতে হবে ও ইসলামের যোগ্য কর্মী তৈরি করতে হবে।।এর জন্য অনুসরন করতে হবে রসুল সা:কে আদর্শ হিসেবে।সাহাবায়েকরামদের ও ঈমাম ও মুহাদ্দেছিনদের পথ যেভাবে তারা দ্বীনের কাজ করেছেন যুগ যুগ ধরে।এ পথ আমাদের কাছে পরিস্কার হওয়ার পরেও পৃথিবীতে ইসলামের দলগুলো নিজেদের যারা যার যায়গায় নিজেদের ঠিক বলছে।আমাদের উচিত সবার সাথে সুন্দর আচরনের মাধ্যমে এবং যার যার ক্ষমতানুসারে দ্বীনের কাজকে তুলে ধরা।এই কাজ করতে হলে একটি সংঘবদ্ধ দলের প্রয়োজন।এই দলটিকেই বলা হয়েছে আহলে সুন্নাহ আল জামাতের দল।এই দলটির কার্যক্রম হবে সাহাবাদের অনুকরনে।এই মানুষগুলির চরিত্র হবে সাহাবাদের চরিত্রের অনুসরনে।যারা এই নামটি নিয়ে এখন মাঠে এসেছে তাদের পর্যালোচনা করলে সনাতন ইসলামের খুব কম আদর্শ পাওয়া যায়।কুরআন ও সুন্নাহের যায়গা যখনি দখল করলো পুরহিতদের কিতাবলী তখনি ঢুকে গেল শির্ক ও বিদাআত যা এখন ইসলামি ইবাদতের অংশ হয়ে উঠেছে। যখন শির্ক ও বিদাআতের প্রচলন শুরু হয় তখন ছহি সুন্নাহের বিলোপ সাধন হয়।সেজন্য ব্যাক্তি জীবনকে গড়ে তুলতে হবে সর্বাগ্রে কুরআন ও সুন্নাহের অনুসরনে আর তাহলেই সমাজ থেকে দূর হবে সর্বপ্রকার
বিষয়: বিবিধ
২১৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন