সুন্নত ও বিদাআত।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৮ মার্চ, ২০১৫, ১১:১১:৪১ সকাল
ইসলাম নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা হয় না এমন কোন মুহূর্ত নেই। পৃথিবীর সব যায়গায় বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে এর কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যায়।সুরা আল ইমরানের ১৯ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,'আল্লাহর পক্ষ থেকে দ্বীন হলো ইসলাম।'আমরা অনেক আলোচনা ও সেমিনার দেখতে পাই কিন্তু সুন্নত ও বিদাআত সম্পর্কে আলোচনা হয় খুব কম।নবী রসুলগন মানুষের মধ্যে সংস্কার করার জন্যই এসেছেন।সুরা হুদের ৮৮ আয়তে শোয়াইব আ: বলেন,'আমি শুধু চাই সংস্কার করতে যতটা আমি সাধ্যমত পারি।আমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই এবং আল্লাহর কাছেই আমাকে ফিরে যেতে হবে।' দ্বীনের মধ্যে যুগে যুগে অদ্বীন যখন ঢুকে যায় তখন দরকার হয় সংস্কারের। এই সংস্কারের কাজ করার দায়িত্ব বিশেষ করে কোরআন হাদিসের পন্ডিতদের কাজ তথা সমস্ত মু'মিনদের।যারা এই সংস্কারের কাজ করবে তাদের মর্যাদা আল্লাহর কাছে অপরিসীম।দ্বীন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সমাজ থেকে উবে যায় নি কিন্তু দ্বীনের ভীতর সব সময় অদ্বীন ঢুকতে থাকে মানুষদের দ্বারা,যারা প্রকৃত দ্বীন থেকে দূরে সরে যায়।সংস্কারকরা দ্বীনের মধ্য থেকে অদ্বীনকে বের করে দেন আর আসল দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য যা ইতিমধ্যে বের হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে এসে পুরো করে দেন।আল্লাহ পাক যখন থেকে সমাজে রসুল সা: এর মাধ্যমে দ্বীনকে কায়েম করে দিয়েছেন তা কেয়ামত পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত থাকবে কিন্তু পরিবর্তন হবে মানুষের।কেউ দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে আবার কেউ দ্বীনে প্রবেশ করবে।এই পরিবর্তন করার কাজটি হলো সংস্কারকদের কিন্তু আসল দ্বীন তার যায়গায় ঠিক থাকবে।
সুন্নত ও বিদাআতের আলোচনা খুব বেশি দরকার আজকের প্রেক্ষাপটে।একজন সুন্নতি মানুষের ইবাদতে যদি বিদাআত ঢুকে যায় তাহলে সে সেটিকে সুন্নত হিসেবেই পাল করবে।এই বিদাআত ও আক্কিদা ঠিক না করা পর্যন্ত সে যতই বড় বড় ইবাদত করুক না কেন তা হবে নিস্ফল।সুন্নাহ শব্দটি একটি আরবি শব্দ।এটি হলো ত্বরিকা বা রাস্তা,মতবাদ ও বিধান।এটি ভাল পথ হতে পারে আবার হতে পারে খারাপ। মুসলিম শরীফের হাদিসে রসুল সা: বলেন,'যে ব্যাক্তি কোন সুন্দর সুন্নতকে নিয়ে আসলো সে এই কাজের সওয়াব পাবে এবং তার থেকে যারা শিখে আমল করলো সে পরিমান সওয়াব তার কাঁধে জমা হবে।কেউ যদি খারাপ সুন্নত বের করে তার জন্য সে গুনাহগার হবে এবং তার থেকে যারা শিখলো তাদের গুনাহ ও তার কাঁধে জমা হবে কেয়ামত পর্যন্ত।সুন্নতের ব্যাপারে মুহাদ্দেছিনদের সংগা হলো-যা রসুল সা: থেকে পাওয়া গেছে তাঁর কথা ,কাজ ও সমর্থন রয়েছে সবগুলো-ই সুন্নত।অর্থাৎ রসুল সা: এর কাছ থেকে যা পাওয়া গিয়েছে সবই সুন্নত। এই সুন্নতের বিপরীত হলো বিদাআত।শাব্দিক ভাবে বিদাআতের অর্থ হলো-কোন পূর্ব উদাহরন ছাড়া নতুন কিছু আবিস্কার করা হলো বিদাআত।আল্লাহ পাক নিজের সম্পর্কে বিদাআতের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।তিনি বলেছেন,'বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আর্দ।' আল্লাহ পাক আসমান ও জমিন সৃষ্টি করলেন কিন্তু তার আগে এগুলো ছিল না।যিনি প্রথম সৃষ্টি করলেন এজন্য আল্লাহ 'বাদি' যা বিদাআতের মুল ধাতু।এমনকি রসুল সা: এর ব্যাপারে আল্লাহ পাক বলেছেন আপনি বলুন,'আমি নতুন করে রসুল আসি নাই ,আমার আগেও রসুল এসেছে।' এগুলো জানা এ জন্য দরকার যে ,মানুষের মধ্যে অনেকে বলতে পারে আল্লাহ তো নিজের জন্য বিদাআ শব্দ-টি ব্যাবহার করেছেন।তাহলে আমরা বিদাআত করলে অসুবিধা কি? ইসলামি শরিয়তে বিদাআতকে কিভাবে দেখা হয়েছে? ইসলামি পরিভাষায় বিদাআত হলো ঐ সমস্ত আমল ও আক্কিদা যা রসুল সা: এর পর নতুন আবিস্কার করা হয়েছে।যে আমলগুলো রসুল সা: করেন নি , করতেও বলেন নি বা সমর্থনও করেননি আর কোন সাহাবিও করেননি।রসুল সা: বলেছেন,'তোমরা আমার সুন্নতকে যেমন আঁকড়ে ধরবে এবং আমার খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নতও আঁকড়ে ধরবে।এই খোলাফায়ে রাশেদিন বলতে সমস্ত সাহাবাদের বুঝানো হয়েছে।আর একটি দিক হলো - সাহাবাগন রসুল সা:কে দ্বীনের ক্ষেত্রে অক্ষরে অক্ষরে অনুসরন করেছেন।যেভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আলকুরআন নাজিল হয়েছে,রসুল সা;সেভাবে সাহাবিদের শিক্ষা দিয়েছেন এবং সাহাবারাও তাদের কথায় কাজে সেটুকুই করেছেন যা রসুল শিখিয়েছেন।রসুল সা: এই বিদাআতের ব্যাপারে বলেছেন,আমি তোমাদের নতুন নতুন আবিস্কারের ব্যাপারে সাবধান করছি কারন দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু যোগ করা হলো বিদাআত আর প্রত্যেকটি বিদাআত হলো গোম্রাহী এবং প্রত্যেকটি গোম্রাহি নিয়ে যাবে জাহান্নামে।অনেক বিদাআতি তারাঈ নামাজের জামাতকে বিদাআত বলে অন্য বিদাআতকে যায়েয করে নিয়েছে।আমরা এখন তারাঈ যেভাবে জামাতে পড়ি তা রসুল সা: এর সময় ছিল না।রসুল সা: পর পর তিন দিন মসজিদে এই নামাজ পড়েছিলেন।প্রথম দিন যখন তিনি নামাজ পড়লেন তখন কিছু সাহাবি জানতে পেরে জামাতে সামিল হলো।পরের দিন অন্য যারা জানলো তারাও সামিল হলো।এর পরের দিন আরো সাহাবি যোগ দিল।এতে বড় জামাত হয়ে গেল।চতুর্থ দিনে রসুল সা: আর ঘর থেকে বেরুলেন না।সাহাবাগনের জামাত এসে হাজির কিন্তু রসুল বের হলেন না এমনকি সেহরির সময় হয়ে গেল।ফযরে এসে রসুল সা: বললেন আমি ইচ্ছা করে আসিনি যদি এই জামাত প্রতিদিন কায়েম হয়ে যায় তাহলে আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য ফরয করে দিবেন আর তোমাদের জন্য তা কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়াবে।
রসুল সা: এর সময়ে সাহাবারা ঘরে বা মসজিদে এই নামাজ পড়তেন কিন্তু কোন জামাত ছিল না।কিন্তু তিনি জামাতের ব্যাপারে নিষেধ ও করেন নি।এর মধ্যে ইংগিত রয়েছে তোমরা ইচ্ছে করলে জামাতে পড়তেও পার। বিদাআতিদের বিদাআত শুরু হয়েছে ওমর রা; এর সময় থেকে।ওমর রা; যখন ইসলামি রাষ্ট্রের খলিফা হলেন তখন তিনি রাতে জনসাধারনের অবস্হা দেখার জন্য ঘুরে বেড়াতেন।একদিন তিনি দেখলেন মসজিদে কিছু সংখ্যক লোক নামাজ পড়ছে।কেউ একা,কেউ কেয়কজন মিলে।এটি দেখে তিনি তাদের বললেন তোমরা যখন মসজিদে এসেই গেছ তখন একা একা নামাজ না পড়ে একজন ঈমামের নেতৃত্বে নামাজ পড়।তিনি ক্কাব রা; কে ঈমাম বানিয়ে দিলেন এবং তখন থেকে তারাঈ নামাজ এভাবেই আজ পর্যন্ত চলে আসছে।এখন প্রশ্ন আসতে পারে তারাঈ নামজের জামাত বিদাআত কিনা? এই নামাজ বিদাআত নয় ,কারন রসুল সা" এর সময় জামাতে তিনি তিন দিন পড়েছিলেন।এটি কোন নতুন আবিস্কার নয়।যদি ওমর রা; নতুন করে জামাত করতে দিতেন তাহলে এটি বিদাআত হতো।শরিয়তে কোন ইবাদতের কোন সূত্র থাকলে সেটি পরবর্তী সময়ে বড় হতে পারে এবং এটি বিদাআত নয়।যে বিদাআতকে রসুল সা: নিন্দা করেছেন তাকে ভাল বিদাআত বা খারাপ বিদাআতে বিভক্ত করা চলবে না।মুসলিম শরিফের হাদিছে রসুল সা: এ ব্যাপারে বলেন,'যে ব্যাক্তি এমন আমল করে যার মধ্যে আমাদের দ্বীনের কোন হুকুম ছিলনা তা পরিত্যাক্ত।'রসুল সা; সরল পথের একটি উদাহরন দিয়েছেন।হাদিছে এসেছে তিনি লম্বা একটি সরলরেখা টানলেন।তার দুদিকে আরো কিছু বাঁকা লাইন বের করলেন।এই বাঁকা রাস্তাগুলোকে বলেছেন শয়তাদের রাস্তা।আমরা জানি এক বিন্দু থেকে আর এক বিন্দু পর্যন্ত সরলরেখা হলো একটি।ইসলামের অনেক বিদাআতি আছে যারা বলে কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য যে কোন রাস্তা ধরলেই যাওয়া যায়।একটি যায়গায় যাওয়ার জন্য অনেকগুলো রাস্তা থাকলেও সরল রাস্তা থাকে একটি।সে রাস্তাটি ধরেই যেতে হবে।তারা আরো বলে জান্নাতে যাওয়ার জন্য যে কোন একটি ত্বরিকা বা পথ ধরলেই হবে।রসুল সা: হলেন আমাদের আদর্শ।তিনি কি বলেছিলেন যে কোন রাস্তায় জান্নাতে যেতে হবে? বরং তিনি একটি সরলরেখা এঁকে সোজা রাস্তাটি দেখিয়েছেন নিজের হাত দিয়ে এবং বলেছেন এটিই হচ্ছে আমার সরল পথ তোমরা এ পথেই চলবে।কোন যায়গায় যাওয়ার একাধিক রাস্তা থাকতে পারে কিন্তু সরল পথ হবে একটিই।সবচেয়ে সত্য কথা হলো আল্লাহর কথা এবং উত্তম পথ হলো রসুল সা: এর পথ।আর একটি হাদিসে একজন সাহাবি বর্ননা করেন,'একদিন রাসুল সা: আমাদের নিয়ে নামাজ পড়ে আমাদের দিকে ফিরে বসলেন।তিনি আমাদের কিছুক্ষন নছিহত করলেন।তিনি এমন গুরুত্বপূর্ন নছিহত করলেন যে আমাদের অন্তরে কথাগুলো ঢুকে গেল।আমাদের চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকলো। তখন একজন সাহাবি বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ! মনে হয় আপনি আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিবেন।আপনি আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ন কিছু নছিহত করুন।রসুল সা: বললেন,আমি তোমাদের নছিহত করবো আল্লাহকে ভয় করার জন্য।আর নেতৃত্বের আনুগত্য করতে।তোমাদের কেউ যদি দীর্ঘদিন বেঁচে থাক অচিরেই দেখতে পাবে অনেক অসংলগ্ন কাজ শুরু হয়ে গেছে।যখন কোন ইখতেলাফ শুরু হয়ে যাবে তখন আমার সুন্নতকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরবে ও আমার খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নতকেও আঁকড়ে ধরবে।হাত যদি ছুটে যায় দাঁত দিয়ে কামড়িয়ে ধরবে।' তিরমিযি শরিফে রাসুল সা: বলেন,'ছয় ধরনের লোককে আমি অভিসম্পাত দিলাম এবং তাদের আল্লাহ ও অভিসম্পাত দিয়েছেন।আর নবী অভিসম্পাত দিলে আল্লাহ তা ফিরিয়ে দেন না। এরা হলো-যারা আল্লাহর কিতাবে কোন কিছু বাড়িয়ে দেয়,তাক্কদিরকে যারা মিথ্যা প্রতিপন্য করেছে,উম্মতের মধ্যে যারা(জালিম সরকার) অস্ত্র দ্বারা মানুষকে দমন করে,যে সমস্ত শাসক সম্মানিত লোকদের অসম্মান করে আর অসম্মানিত লোকদের সম্মান করে,আর এক দল হলো আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা হালাল করে,পরিবারের মধ্যে যাকে আল্লাহ সম্মানিত করেছেন তার উপর যে আঘাত করে ও যে আমার সুন্নতকে বর্জ করে।' ওমর রা: যখন হাজারে আসওয়াদকে চুমু দিলেন তিনি তখন তাকে লক্ষ্য করে বললেন,আমি জানি হাজারে আসওয়াদ তুমি একটি পাথর।আমার কোন ক্ষতি বা কল্যান করার ক্ষমতা তোমার নেই।আমি কেন তোমাকে চুমু দেই? আমি যদি না দেখতাম রসুল সা: তোমাকে চুমু দিয়েছে কোনদিন আমি তোমাকে চুমু দিতাম না।' ইবনে মাসউদ রা: বলেছেন,'সুন্নতের অল্প আমল আল্লাহর কাছে অনেক মুল্যবান মিশ্রিত অনেক বিদাআতি আমল করার চেয়ে।আবু বকর সিদ্দিক রা: যখন খালিফাতুল মুসলিমিন হলেন তখন তিনি বললেন,'আমি তোমাদের মতই---এবং শেষে বললেন আমি রসুল সা:কে অনুসরন করবো নতুন কোন কিছু আবিস্কার করবোনা।সাহাবি হোযাইফা রা: তাবেঈদের বলেন,'এমন ইবাদত যা রসুল সা: ও সাহাবিরা করেন নি,খবরদার তোমরা কেউ এই ইবাদত করবে না।ইসলামের প্রথম যুগের মানুষ(সাহাবিগন) দ্বীনের ব্যাপারে খুবই কঠোর ছিলেন যে রসুল সা;কে পদে পদে অনুসরন করতেন।কিন্তু আজ কি দেখা যায়? হাজারো ইসলামের দল গঠন করে দ্বীনের ভীতর নিজেদের মস্তিষ্কপ্রসূত আইন কানুন তৈরি করে দ্বীন হিসেবে পালন করছে যার সাথে রসুল সা: বা সাহাবিদের ইবাদতের খুব কম সম্পর্কই আছে।
বিদাআত এভাবে কেন সৃষ্টি হলো? ফিতনার(বিপর্যয়) ভয়ে বড় বড় আলেম সমাজে চুপ থেকেছে।মুসলমানদের সাপ্তাহিক জুমআর দিনে খুতবা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়।খুব কম ঈমাম সত্য কথাগুলো বলতে পারেন।যখনি কেউ সত্য কথাগুলো উপস্হাপন করেন পরক্ষনে তাকে শাসানো হয় এবং কারো কারো চাকুরি ও চলে যায়।কারন অধিকাংশ মসজিদের মুতাওয়ালিগন হলো বিদাআতি।এ জন্য অনেক আলেম জানলেও জীবনের তাগিদে চুপ থাকতে বাধ্য হন। তানাহলে সমাজে মিলাদ,সুন্নতে খাতনার অনুষ্ঠান,জন্ম ও মৃতয়ু বার্ষিকি,তাজিয়া মিছিল,মৃত ব্যাক্তির চল্লিশা,সবে বরাতে রাত জাগা,ঈদে মিলাদুন্নবি,বিভিন্ন দিবস পালন -- ইত্যাদি হয় কি করে? এগুলোতে নেতৃত্ব দেন এক শ্রেনীর ভাড়াটে দুষ্ট আলেম।কিন্তু হক্কানি আলেমরা যদি চুপ থাকেন তাহলে এগুলো-ই সুন্নত হিসেবে মানুষ পালন করতে থাকবে আর মুল সুন্নত সরে গিয়ে বিদাআত প্রতিষ্ঠিত হবে।বেশীর ভাগ শাসক ও বাদশাহরা এই বিদাআতের খাদেম হয়ে থাকে এবং তাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে বিদাআতি আলেমের সৃষ্টি হয়।সুন্নত সম্পর্কে যখন মানুষ অজ্ঞ হবে তখন বিদাআত সম্প্রসারিত হবে।এটি দু'ভাবে হতে পারে।হাদিস রয়েছে ছহি , জয়ীফ , মিথ্যা ও বানোয়াট।ইসলামের ষড়যন্ত্রকারিরা মিথ্যা হাদিস প্রচার করেছে।সেগুলো পর্যবেক্ষন না করে যে কোন হাদিস পেয়ে আমল করার কারনে বিদাআত সম্প্রসারিত হচ্ছে।ইবনে মাসুদ রা; বলেন,'যে ব্যাক্তি কোন বিদাআত কারিকে সম্মান করে সে দ্বীনের মুলে কুঠারাঘাত করে।আমাদের সমাজে কি এটিই কারন নয়? আমাদের চারদিকে ইসলামের নামে অনেক নতুন নতুন কাজ করে চলছে অথচ সে ব্যপারে আমরা মানুষকে জাগিয়ে না তুলে তাদের সম্মান করে চলছি।বুঝে না বুঝে তাদের সে কাজগুলোতে অংশগ্রহন করছি।কেয়মাতের দিন রসুল সা: যখন হাউজে কাউছারে তার উম্মতদের পানি পান করাবেন তখন অনেক উম্মত সেখানে যাবে এবং তাদের কপালে চিহৃ দেখে তিনি উম্মতদের চিনবেন।কিছু সংখ্যক উম্মতকে তাড়িয়ে দেয়া হবে।তিনি ফেরস্তাদের বলবেন তাদের আসতে দাও।তখন ফেরেস্তারা বলবে আপনি তাদের রেখে আসার পর দ্বীনের ভীতর তারা নতুন আবিস্কার করেছে।তিনি তখন তাদের বলবেন এখান থেকে বিতাড়িত হও।এত বড় দুর্ভাগ্য হবে উম্মতের যারা নামাজ পড়েছে ,যাকাত দিয়েছে ,রোজা রেখেছে,হজ্জ করেছে,পিতামাতা ও আত্মীয় প্রতিবেশীর খেদমত করেছে,নফল ইবাদত করেছে,মসজিদ মাদ্রাসা করেছে কিন্তু জাহান্নামের আযাব তাদের গ্রাস করবে।বিদাআত থেকে মুক্তি পাওয়া খুব কঠিন নয়।শুধু কোরআন ও ছহি হাদিস অনুশীলনের মাধ্যমে সরল পথ পাওয়া সম্ভব।ইসলামের পাঁচটি মুল বিষয়ের(ঈমান,নামাজ,যাকাত,রোজা ও হজ্জ) উপর হাদিছগুলো অনুসরন করে ইবাদত করলে সঠিক ইবাদতে পৌঁছানো যাবে।বাজারের বইগুলো মানুষের তৈরি।সেখানে ভুল ক্রুটি থাকা সম্ভব।কিন্তু আলকোরআন ও বোখারি /মুসলিম শরীফের হাদিস গুলো অনুসরন করলে আশা করি ছহি ইবাদতে আমরা পৌঁছতে পারবো। এটিই রসুলের সুন্নত,সাহাবদের সুন্নত ও মুহাদ্দেছিনদের অনুসরনীয় পথ যাকে বলা হয় সরল ও সঠিক পথ।আমরা যত বেশী ছহি হাদিসের অনুশীলন করতে শিখবো তত তাড়াতাড়ি বিদাআত দূর হবে।সম্মানিত পাঠক বৃন্দ! আমাদের কাজ একে অন্যকে সংশোধন করা।ভুল হলে শুদ্ধ করে দেয়া।আজ যেমন আমরা একে অন্যকে দেখতে পাচ্ছি রোজ কেয়ামতের মাঠে আমাদের আবার দেখা হবে।তখন কেউ কাউকে সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবো না।সংস্কারের কাজটি হলো এই দুনিয়ায়।আল্লাহ পাক সুরা আল মুলকের ২ আয়াতে বলেন,আমি মওত ও হায়াত সৃষ্টি করেছি পরীক্ষা করার জন্য কার আমল কত উত্তম।' সেজন্য আমাদের ছহি আমলগুলোই করতে হবে।অনেক আমল করার দরকার নেই।যা রসুল সা: আমাদের দয়েছেন তা-ই করবো আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকবো।
বিষয়: বিবিধ
১৬১৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহর রাসূল যথার্থই বলেছেন।
অতি মূল্যবান পোস্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানবেন।
আপনার লিখার মধ্যে প্যারাগ্রাফ থাকলে কিংবা কিছু সাব হেডিং থাকলে পাঠকের পড়ার জন্য ও মনে রাখার জন্য আরো বেশী সুবিধা হত।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন