মায়েদের বন্ধুত্ব সামাজিক বন্ধনকে শুধু মজবুত করে না,সন্তানদেরও যোগ্য করে গড়ে তুলে।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৯ মার্চ, ২০১৫, ০১:৪২:১৮ দুপুর

মানব শিশু জন্মের পর মায়ের উপর নির্ভর করেই পরিপূর্ন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে।এ জন্য প্রতিটি সন্তানের কাছে সবচেয়ে মুল্যবান সম্পদ তার "মা"। মা যেমন সন্তানের সাথে নিবিড় থাকেন তেমন থাকতে পারেন না পিতা।স্বভাবত পিতাকে ঘরের বাইরের কাজ সামাল দিতে হয়।অতিপ্রাচীন কাল থেকে এটিই দেখতে আমরা অভ্যস্ত।কিন্তু আধুনিক সভ্যতায় সামাজিক এ অবস্হানটির কিছু পরিবর্তন বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।যতই বৈজ্গানিক সভ্যতা আমাদের হাতছানি দিচ্ছে আমাদের জীবন ততই ব্যাস্ত হয়ে পড়ছে এবং মেশিনের মতই ঘূর্নীত হচ্ছে আমাদের জীবন।এখনকার মা'কে বাচ্চাদের স্কুলে আনা নেয়া, বাজার করা,স্কুল কলেজে খোঁজ খবর নেয়া,স্কুল কলেজ থেকে ওরা সময় মত আসলো কিনা,অনেক বাবা বিদেশে অবস্হান করায় প্রপার্টিগুলো মাঝে মাঝে দেখাশুনা করা,আত্মীয়দের দেখাশুনা ও মেহমানদারি ,গৃহ পরিচারিকারা টেবিলে সময় মত খাবার দিল কিনা, এরকম আরো অনেক কাজ মা'দের করতে হয়। মা'দের এগুলো নিত্যদিনের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।স্বভাবতই মা যখন এতগুলো কাজ করেন সন্তানের কাছে মায়ের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার কথা।বিশেষ করে কন্যা সন্তানের কাছে মায়ের গুরুত্ব অনেক বেশি।মা-ই তাদের প্রথম বন্ধু।মায়ের কাছ থেকে ওরা জীবন ও বেড়ে উঠা সম্পর্কে ধারনা পায়।তাছাড়া মেয়েদের ব্যাক্তিগত অনেক ব্যাপার আছে মা-ই প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।কৈশোর পেরোনোর সময় প্রাকৃতিক নানান প্রতিকুলতায় অপ্রস্তুত কন্যা সন্তানকে মা সহজে পরিচালনা করেন।আর যৌবনের উম্মাদনা যখন তাড়িত করে তখন মা-ই হয়ে থাকেন মনরোগের প্রতিষেধক একজন বিচক্ষন ডাক্তার।মেয়েরা কখন স্কুলে গেল , কখন ফিরবে , একটু দেরি হলেই খোঁজ নেয়া ইত্যাদি।এই বন্ধুই হলো প্রকৃত বন্ধু যা সব সন্তান বুঝতে পারে না।বিপদে আপদে, সুখে দু:খে, রোগ কাতরতায় মা-ই জাগরিত থাকেন।জীবনেতো এমন বন্ধুর ই বেশি প্রয়োজন।জীবনে চলার পথে অনেক বন্ধুই ঠুনকো অজুহাতে দূরে সরে যায় কিন্তু মা কি তাই করতে পারেন? মা ছায়া হয়ে সন্তানকে বুকে জড়িয়ে নেন,সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন,বাবার সাথে বসে সমস্যার সমাধান করেন।কঠিন অসুখের সময় মা যখন কপালে হাত রাখেন মনে হয় সব অবসাধ , অসুখ দুর হয়ে গেছে।প্রিয়জনের সাথে হতাশায় যখন মন ভে্ংগে যায় তখন মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে মায়ের আঁচলের নিছে।বাবা যখন বকুনি দেয় তখনো মা- ই আড়াল করে রাখে। এই যে এতগুলো কাজ মা করলেন তাকে অবহেলা কেন? সন্তান যখন অভিমানে আত্মগোপন করে মা কি খাওয়ার সময় একা খেতে পারেন?সন্তান যখন মা বলে দৌড়ে আসে তখন মায়ের মন ভরে যায়। তবে যদি সন্তান হয় ছেলে ও দূরন্ত কেমন করে মা তাকে আগলে রাখবেন? বাবা মা দোষি হলেও কি দোষ দেয়া যায়? যদি কোন খুঁনসুটি বেঁধে যায় -ই তাহলে বসে তো সমাধান করা যায়।দেখুনতো কতগুলো বৃদ্ধা আশ্রম গড়ে উঠেছে দেশে। যে বাবা মা এত কষ্ট করে লালন পালন করলেন আর সন্তান তাদের এভাবে ঘর থেকে বের করে দিতে পারে?

গত দু'দশক থেকে আমাদের সমাজে আর একটি বড় পরিবর্তন বেশ লক্ষ্যনীয়।অধিকাংশ মায়েরা এখন শিশুদের সাথে আরো নিবিড়তর জীবনবোধ তৈরি করেছেন।শুধু শিশুদেরই স্কুলের জন্য তৈরি করছেন না,নিজেও তৈরি থাকেন।সাথে করে স্কুলে নিয়ে যান আবার সাথে করে নিয়েও আসেন।স্কুল শুরু থেকে শেষ ঘন্টা বাজা পর্যন্ত মা'রা যাদের অন্য কোন কাজ নেই তারা ক্যাম্পাসে বসে থাকেন।অনেকে সাথে করে চা নাস্তা নিয়ে আসেন।যখন সকালে ঢং ঢং করে ঘণ্টা পড়ে তখন স্কুলের মূল ফটক বন্ধ হয়ে যায়। সন্তানদের নিয়ে আসা অভিভাবকদের ভিড় কমতে শুরু করে। কেউ দ্রুত পায়ে বাড়ির দিকে ছুটে চলেন। কেউ ছোটেন অফিসে। কিছু মায়েদের মধ্যে তেমন তাড়া দেখা যায় না। তাঁদের অনেকের বাড়ি দূরে। রাস্তায় যানজটের কারণে যাতায়াতে সময় চলে যায়। তাই স্কুলের পাশে কোথাও বসে থাকাটাই ভালো মনে করেন। কেউবা নাড়ির টানে সন্তানের কাছাকাছিই থেকে যেতে স্বস্তি বোধ করেন। এসব মায়েরা ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে পড়েন আশপাশে। চলে তাঁদের গল্প, নানা কথা। মায়ে মায়ে এই এক বন্ধুত্ব যা সামাজিক বন্ধনকে মজবুত করতে সহায়তা করে।হরতাল-অবরোধের কারণে রাজধানীর বেশির ভাগ স্কুলে এখন শুক্র ও শনিবার ক্লাস চলছে। মায়েরা ছোট ছোট দলে গল্প গুজবে নিজেদের এই সময়টা পার করে নিচ্ছেন। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন বন্ধুদের আলাদা আলাদা দল থাকে। তাঁদের গল্প, কথা থেকে মায়েদের এই জগতের কিছুটা খোঁজ মেলে এভাবে।এ সময়টুকুতে সন্তানের লেখাপড়া, নিজেদের সুখ-দুঃখ পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নেন তাঁরা।বছরের সব সময়ই তাদের এই বন্ধনটি দেখে অনেক পথচারি অফিসে বা বাসায় এসে খোশগল্প করেন।অভিভাবকদের মধ্যে বন্ধুত্বে বাবাদের চেয়ে সন্তানের মায়েদের দলটিই বেশি সক্রিয়। ছেলে বা মেয়ের পড়াশোনার খোঁজখবর, সিলেবাস সবই তাঁরা অন্য ভাবিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে ব্যস্ত থাকেন।পাশের ভাবির মেয়েটি ভাল স্কুলে পড়ে আমারটি কেন নয়।সেজন্য ভাবীর সাথে সখ্যতা আরো জমে যায়।এখানে কোন মা নিজের নামে পরিচিত নন। কেউ মারিয়া মাহদিয়ার আম্মু,কেউ আদৃতার আম্মু, কেউ দৃষ্টির আম্মু, কেউ রামিসার আম্মু, কেউ আবার নাফিসার আম্মু। একে অপরকে ‘ভাবি’ সম্বোধন করলেও ‘আদৃতার আম্মু’ বা ‘দৃষ্টির আম্মু’ বলেই পরিচিত তাঁরা। মুঠোফোনে নামটাও সংরক্ষণ করা থাকে ওই নামেই। এখানে তাঁরা শুধুই মা। তাঁদের আর কোনো পরিচয় নেই। নেই নিজের নামও।

স্কুলের সামনেই ফটোকপির দোকান। সেখানে মায়েদের লম্বা লাইন। সবার হাতে সিলেবাস ও প্রশ্ন যেন মা'রা সবাই ছাত্র ছাত্রী আর সেগুলো সবই গত বছরের। সেগুলো সংগ্রহ করে সন্তানের পড়াশোনা এগিয়ে রাখতে চান মায়েরা। লাইনে সবার সামনে দাঁড়ানো দৃষ্টির মাকে প্রশ্ন ও সিলেবাস দিচ্ছিলেন অন্যরা। তিনিও হাসিমুখে সব নিচ্ছিলেন। ‘ভাবি, আমার জন্য একটা করবেন’, ‘আমার জন্য একটা’,‘আমি তিথির আম্মু, আমার জন্যও কিন্তু করবেন’। দৃষ্টির মা এবার একটু হিমশিম খেয়ে যান। পাশে দাঁড়ানো বাবাদের দলটি কিছুটা বিব্রত। একটু সাবধানে তাঁরা দৃষ্টির মাকে বলেন, ‘ভাবি, আমরাও আছি। আমাদের জন্যও করবেন।’ দৃষ্টির মা একপর্যায়ে বলেন, ‘সবাই হাত তোলেন। কে কে নেবেন?’ বলতে গিয়ে তিনি নিজেও হেসে ফেলেন। মা, বাবারাও হাসতে হাসতেই হাত তোলেন। অনেকে বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা নয়, আমরাই এখন ছাত্র-ছাত্রী।’ফটোকপি করা সিলেবাস নিয়ে কতেক মাকে খুব চিন্তিত দেখা যায়।এত বড় সিলেবাস নার্সারিতে পড়া মেয়েকে কীভাবে শেখাবেন তিনি।প্রশ্ন করতেই পাশে দাঁড়ানো এক ভাবি একসময় বাচ্চাদের স্কুলে পড়াতেন। সন্তানের প্রয়োজনে চাকরি ছেড়েছেন। তিনি পরামর্শ দিয়ে আশ্বস্ত করলেন। রঙিন কাগজ দিয়ে বর্ণ ও বানান লিখে ঘরের দেয়ালে টাঙিয়ে রাখার পরামর্শ দিলেন। এতে খেলতে খেলতে, দেখতে দেখতেই শিখবে শিশুটি। বাড়তি কোনো চাপ পড়বে না ওর ওপর। শুনে আশ্বস্ত হলেন চিন্তিত ওই মা। ইদানিং অনেক মা'তো ঘরকে বর্নমালা দিয়ে রংগিন করে ফেলেছেন। শিশু একটু কেঁদে উঠলেই দেয়ালের কাছে নিয়ে বলেন এটি 'অ' 'আ' বা 'এ' 'বি' 'সি'।মোটকথা তিন বছর হওয়ার আগেই সব মুখস্ত।আবার তিন বছর পার হলেই কিন্ডারগার্টেনের খোঁজ খবর নেয়া শুরু।অর্থাৎ শিশুটি জন্মের আগেই মহা এক পরিকল্পনা তাকে কিভাবে মানুষের মত মানুষ করা যায়।এত কষ্ট করার পর সে শিশুটি কি বেড়ে উঠছে তার স্বাভাবিক জীবন নয়ে? ফটোকপির দোকানি মহাব্যস্ত। এত এত ফটোকপি দ্রুত করে চলেছেন তিনি।আবার ওই দোকানেই চলছে কাপড় বিক্রি। মায়েরা সেই কাপড়ও দেখছেন। দোকানটিতে ঢুকলেই বোঝা যায় এসব মায়েরাই দোকানের নিয়মিত ক্রেতা।পাশেই আরেকটি ছোট দোকান। দোকানটি চালান এক মা ও মেয়ে। সেখানে স্কুলের বাচ্চাদের ব্যবহৃত ক্লিপ, ব্যান্ড ও খেলনা বিক্রি হচ্ছে। হাতের কাছে পেয়ে চটজলদি প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিচ্ছেন মায়েরা।

আবার কতেক মা'কে দেখা যায় কোন একটি ফ্ল্যাট বাড়ির সামনের জায়গায় গোল হয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে আছেন।তাদের কেউ কেউ আবার অন্তঃসত্ত্বা।ছেলে হবে বা মেয়ে হবে তা নিয়ে গল্প করছেন তাঁরা? আবার অনেকে জোর দিয়ে বলছেন,দেখবেন ভাবি! এবার আপনার ছেলেই হবে। শুনে সে ভাবি বলেন,আপনার মুখে ফুল ছন্দন পড়ুক, আবার কাউকে মেয়ের খবর দিলে ঐ ভাবী একটু হতাশ বোধ করেন।একজন ভাবি সদ্য মা হয়েছেন। সম্ভবত তিনি দ্বিতীয় সন্তানের মা হলেন। দ্বিতীয় সন্তানটিও মেয়ে। পাশে দাঁড়ানো এক ভাবি বলেন, ‘আমি আপনাকে দেখে আগেই বুঝেছি সন্তানটি মেয়ে হবে।’ অন্তঃসত্ত্বা মাকে দেখেই তিনি সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে, তা বুঝতে পারেন বলে দাবি করেন। পাশে দাঁড়ানো আরেক ভাবি বলেন, ‘কী যে বলেন! কত শুনলাম। আমার মেয়ে হওয়ার আগে মুরব্বিরা সবাই বলেছিলেন ছেলে হবে। হলো তো সেই মেয়ে।’ হাসতে হাসতে বললেও কথার মধ্যে একধরনের আক্ষেপ। অর্থাৎ মেয়ে সন্তান হওয়ায় মায়েদের সেই চিরন্তন আক্ষেপ এখনো রয়েছে।অথচ রসুল সা: মেয়েদের ব্যাপারে জান্নাতের খবর দিয়েছেন যার দু'টি বা তিনটি মেয়ে থাকবে।

স্বাস্থ্যসচেতন মায়েরা আবার এভাবে বসে সময় নষ্ট করতে চান না। তাঁরা পুরোটা সময় হাঁটেন , জোরে জোরে হাঁটেন গল্প করতে থাকেন। প্রাতভ্রমনটা সেরে ফেলেন এই ফাঁকে।অনেকে এই ফাঁকে সেরে ফেলেন বাজার। স্কুলের সামনে বসে সন্তানের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই শাক বেছে ফেলেন। বাসায় গিয়ে রান্না করতে হবে তাঁকেই। কাজেই সময় নষ্ট করে লাভ কী?

যাঁরা খুব বেশি আড্ডাবাজ নন, তাঁরা এককোনে বসে বই পড়েন। কেউ বা পড়েন পত্রিকা বা অন্য কোন বই।অপেক্ষায় থাকা এই অভিভাবকদের মধ্যে অবশ্য দাদি-নানিরাও আছেন। পা ছড়িয়ে বসে তাঁরা আলাপ করেন তবে কাউকে দেখে মনে হয় অসুস্হ তবুও সময়টা তো পেরিয়ে যায়।সখ্য যাঁদের বেশি, তাঁরা আবার দলবেঁধে ঘুরে আসেন। আজ অমুক ভাবির বিবাহবার্ষিকী। অথবা সন্তানের জন্মদিন। কাছাকাছি কোনো ফাস্ট ফুডের দোকানে গিয়ে এ উপলক্ষে একসঙ্গে নাশতা করে আসেন। অনেকে নিজের সেলাই করা বা সংগ্রহ করা জামাকাপড় বিক্রি করেন অন্য ভাবিদের কাছে।এরই মধ্যে কিভাবে ৩/৪ ঘন্টা সময় পেরিয়ে আবার ঢং ঢং ঘন্টা ও স্কুল ছুটি। মায়েরা ছুটে যান মূল ফটকের সামনে। দ্রুত সন্তানকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। চলে যাওয়ার সময় একে অন্যকে হাসিমুখে বলেন, ‘আসি ভাবি, কাল আবার দেখা হবে।’ সপ্তাহ শেষে বেড়িয়ে যাবেন।শিশুরাও বলে ,বাই মারিয়া,বাই দৃষ্টি।

সূরা লোকামান আয়াত ১৪ ও সূরা ইসরা'র ২৩/২৪ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন কিভাবে মা বাবার সাথে আচরন করতে হবে।এমনকি সন্তান "উহ" শব্দটি ও করবে না।আর একটি হাদিসে পিতা মাতার হক সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে রাসূল সা: মা সম্পর্কে তিন বার ও পরে বাবার কথা একবার বলেছেন।আর মা'দের এই মর্যাদা ধরে রাখতে হবে তাদের সুন্দর আচরনের মাধ্যমে।সম্রাট নেপলিওন বলেছিলেন আমাকে একজন মা দাও আমি শিক্ষিত জাতি জন্ম দিব।সন্তানদের সাথে উঠতে বসতে আচরন শিখাতে হবে।সন্তান যখন গর্ভে থাকে আমাদের মাদের খুব কমই শালিনতা থাকে।মা থেকেই প্রথম আচরন পেয়ে থাকে সন্তান। মা যা যা করবে তার প্রভাব শিশুর উপর পড়বে।এ সময় মাকে বেশি ধার্মিকতা করা জরুরি।শিশু যখন ভূমিষ্ট হবে তাকে তার পরিবেশ দিতে হবে।সময় মত খাওয়া, ঘুমানো,পরিষ্কার পরিছ্ছন্ন রাখা।রাসূল সা: বলেছেন সন্তান যখন সাত বছরে পা দিবে তাকে নামাজের তাগিদ দাও আর দশ বছর হলে মৃদু শাষ্তি দাও।এমন যেন না হয় বাবা মা নামাজ পড়েন না আথচ সন্তানকে বলেন মসজিদে যাও।এতে কোন ফল হবে না। সন্তান অনুকরন প্রিয়।বাবা মা যা করবে ওরাও তাই করে থাকে।তবে ব্যাতিক্রম তো আছেই সেটা আল্লাহর পক্ষ থেকে।আর অধিকা্ংশ বাবা মা মনিটর করেন না সন্তানদের।কোথায় গেল , এতক্ষন বাইরে কি করলো ইত্যাদি।পরিবারে মনিটরিং থাকলে ওরা সময় অপচয় করতে পারবে না।

সন্তান কোন অন্যায় করলে যুক্তি দিয়ে বুঝাতে হবে।ধরুন আপনার সখের কিছু ভে্ংগে ফেললো।সুন্দর বুঝি্য়ে বলুন কারনগুলো। একটা রেডিও ভে্ংগে ফেললো। তিরস্কার না করে বলুন, বাবা দেখত আবার জিনিসটি রিমেইক করা যায় কিনা? এতে সে একটা নুতন জিনিস আবিষ্কার করার পরিবেশ পাবে।শিশুদের প্রথম শিক্ষক হলো বাবা মা।বিশেষ করে মা।এ জন্য ৩/৪ বছর হলে মেধা তৈরি হয় ও রকম খেলনা দিন।বর্নমালাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিন আর বলুন এবার ঠিক ভাবে সাজাও।৫/৬ বছরের শিশুর মেধা খুব প্রখর। যা দেখে তাই মনে রাখতে পারে।শিশু বিশেষজ্ঞ এর মতে একটা আট বছরের শিশুর ১০০০ নারর্ভ স্ংযোগ থাকে এব্ং ১০ বছরে ৫০০ এ নেমে যায়।ইসলাম এ জন্য ঐ ধরনের শিশুদের আলাদা বেড দেয়ার কথা বলেছে। সমাজে বাস্তবে এমন কথাও এসেছে যে , ঘুম থেকে উঠে শিশু আপনজনদের কাছে বাবা মা'র গোপনীয় কথা বলে দিয়েছে।ইন্টারনেট , ফেইসবুক, মোবাইল কন্ট্রল করা জরুরি।মিলিয়ন টিন এজার এখন ক্ষতিগ্রস্ত হছ্ছে এর মাধ্যমে।

শিশুর মনবিকাশ বৃদ্ধি করার জন্য ওদের সাথে খেলা করা,মাঠে নিয়ে যাওয়া,দেশ বিদেশ সম্পর্কে মৌখিক সাধারন বিষয় গুলো আলোচনা করা, ভাল ও মন্দের বিভেদ শিখানো,তাদের আকর্ষনীয় বিষয় গুলো যা ভাল সেগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেয়া।আপনি যেহেতু মুসলিম,কোরআন হাদিস দিয়ে গড়ে তুলুন।বিকাল বা নাস্তার সময় নিউজ পেপারটি নিন ও হেড লাইন গুলো হাইলাইট করুন। এতে ওদের জ্ঞান আহরনের আগ্রহ জমবে।রাসূল সা: বলছেন , প্রতিটি শিশু জন্ম নেয় প্রকৃতি নিয়ে বাবা মা তাদের ইহুদি বা খৃষ্টানে পরিনত করে।কোন ডা্ক্তার যখন রুগী দেখে সাথে সাথে ঔষধ দেয় না। কিছু সময় পরিক্ষা নীরিক্ষা করেন।রোগ নির্নয় করে ঔষধ দেন।বাব মা কেও ডাক্তারের ভূমিকা নিতে হবে। অনেক মা সামলাতে না পেরে সন্তানের সামনে কেঁদে ফেলেন। এতে ওরা বেশি শাহস পাবে। আদর ও শাসন দু'টো ই কার্যকর করতে হবে ওদের সুস্হ বিকাশের জন্য।

বিষয়: বিবিধ

১২৭০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

308022
০৯ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০২:০৮
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : একে অপরকে ‘ভাবি’ সম্বোধন করলেও ‘আদৃতার আম্মু’ বা ‘দৃষ্টির আম্মু’ বলেই পরিচিত তাঁরা। মুঠোফোনে নামটাও সংরক্ষণ করা থাকে ওই নামেই। এখানে তাঁরা শুধুই মা। তাঁদের আর কোনো পরিচয় নেই। নেই নিজের নামও।
চমতকার লিখেছেন। মাশাআল্রাহ। লেখাটি দুই পর্বে দিলে হয়তো ভাল হত।
প্রবাসে থেকে একেবারে দেশের স্কুলের সামনের অবস্থার সুন্দর বর্নণা।
আপনার সাথে সহমত।
308060
০৯ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
308108
০৯ মার্চ ২০১৫ রাত ১১:১৩
প্রবাসী যাযাবর লিখেছেন : ভালো লাগলো;
309440
১৭ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:১৯
মহিউডীন লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাদের সু-মন্তব্যের জন্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File