দূরবীন দিয়ে দেখা চোখ অসুস্হ

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৫ মার্চ, ২০১৩, ০২:৪৬:৫৫ দুপুর

সম্ভবত ২০১১ সালের দিকে একটি আর্টিকেল পড়েছিলাম।ছোট একটি শিশু যার বয়স ৭ কি ৮ বছর। ঘটনাটি ঘটেছিল একটি উন্নত দেশে।একজন শিশুবিশেষঞ্জ অসুস্থ চোখটি ওপারেট না করে ভাল চোখটি ওপারেট করেছিল।শিশুটি ওপারেশনের পর নির্দিষ্ট ক'দিনে সেরে উঠার কথা। দেখা গেল এবার সে কিছুই দেখতে পাছ্ছে না।এবার সন্দেহ ঘনিভূত হলো।পিতামাতা অভিযোগ করলো।ডাক্তার এবার নির্দেশ দিল ফাইল সার্স করার জন্য। ফাইল পর্যালোচনা করে দেখতে পেল যে চোখটি ভাল তা ওপারেশন করা হয়েছে।ডাক্তারকে আবার বাকি চোখটিও ওপারেশন করতে হলো।আর পেনালটি ও তার সাথে করজোড়ে মাপ চাইতে হলো।সাধারনত উন্নত দেশে এ ঘটনাগুলো কমই হয়।আর একজন ডাক্তারতো ভূল ট্রিটমেন্ট করার পর নিজেই আত্মহত্মা করেছিল।

আজ আমার বন্ধু রহিম ( সিএ) যে এখন ফ্লোরা টেলিকম এর এক্জিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট। তার সাথে কথা হয়ে জানতে পারলাম, ক'দিন আগে একজন চক্ষুবিশেষঞ্জকে তার চোখ দেখিয়েছিল।পরিক্ষা নিরিক্ষা করার পর তার চোখ ওপারেশনের জন্য মত প্রকাশ করলো।যখন ওপারেশন থিয়েটারে গেল তখন তার ভাল চোখটা ওপারেশন করার পদক্ষেপ নেয়া হল।আমার বন্ধু প্রতিবাদ করলো ও তার ফাইল এ্যানালাইসিস করতে বললো।ফাইল দেখে তাদের টনক নড়লো যে তারা ভূল ট্রিটমেন্টের দিকে যাছ্ছিল।বন্ধু বেঁচে গেল এক ধকল থেকে। এখন প্রশ্ন হোলো একটা ওপারেশন কখন হয়? প্রথমে রোগী ডাক্তার ভিজিট করে।পরিক্ষা করা হয়।রিপোর্ট করা হয়।রোগির সাথে আলোচনা করা হয় ডিটেইল।এটা কি নরমাল না জটিল ওপারেশন এভাবে আরো তথ্য।তার পর রোগীর মতামত নেয়ার পর ফাইনাল ওপারেশন।আমাদের দেশে আজকাল অনেক সাইনবোর্ড সমৃদ্ধ অনেক ক্লিনিক জমে উঠেছে যেখানে উন্নতমানের কোন ব্যাবস্হা নেই।কিছু নরমাল নার্স ও ইকুইপমেন্ট দিয়ে ঝকঝকে রিসেপসন করে রাখা হয়েছে। একজন স্পেশালিষ্ট বিভিন্ন হাসপাতালে ও ক্লিনিক এ রোগী দেখেন।যখন কিছু রোগী জমা হয় তখন ডাক্তারকে ডাকা হয়।এ সব স্পেশালিষ্ট ডাক্তার গন আবার নির্ভর করেন জুনিয়র ডাক্তারদের উপর।প্রাথমিক কাজগুলো তারাই করে থাকে। স্পেশালিষ্ট ডাক্তার এসে রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত দেন।আবার কোথাও জুনিয়র ডাক্তারই ওপারেশন করে।আমার একজন আত্মিয়া তার সন্তান প্রসবের পর আবার তাকে রিওপারেট করতে হয়েছিল।মানুষের জীবন নিয়ে এ যে বানিজ্য এটা নিছক অর্থ লিপ্সুরা্ই করতে পারে।এ কাজ গুলোর জন্য ক্ষতিগ্রষ্ত হছ্ছেন ভাল বিশেষঞ্জ ডাক্তার গন যাদের মান সম্মানের উপর আঘাত আসছে।

আমাদের রোগীদের ও সচেতন হতে হবে।কোন ডাক্তার ওপারেশনের কথা বললে আর এক বা দু'জন ডাক্তারকে দেখিয়ে কনফার্ম হয়ে নেয়া ভাল।আমাদের দেশের অধিকা্ংশ মা বোনরা অশিক্ষিত বিধায় তাদের এ সমাস্যায় পড়তে হয়।আমরা সবাই আমাদের আশে পাশে যারা আছে তাদের এ সাধারন বিষয়গুলো জানিয়ে দিতে পারি।ইদানি্ং প্রসূতি মা বোনদের সি্ংহভাগ ডেলিভারি এখন নরমাল হছ্ছে না,এর কারন হলো হাসপাতালগুলোর ব্যবসা।২০-৩০ বছর আগে আমরা আমাদের মা বোনদের একজনকেও সিজার করতে দেখিনি।তাহলে আপনি কি বলবেন এটা বিঞ্জানের চরম উন্নতি।অবশ্যই নয়।জরুরি কোন ব্যাপার থাকলে সেটা আলাদা কথা।

আমাদের নৈতিক মান দিন দিন আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপিত হছ্ছে।আমরা ভাবছি না,আমি আমার ভাই এর রক্ত ভক্ষন করছি।মানবতা অবহেলিত কারন হলো আমাদের ব্যাক্তি স্বার্থ।আমার চামড়া কাটলে যেমন ব্যাথা পাই , তেমনি ব্যাথা যদি অন্যের জন্য না লাগে তাহলে বুঝতে হবে আমারা অধপতিত হছ্ছি।জাতি হিসেবে আর কত আমরা একে অন্যকে ঠকাবো।আমরা কেন মনে করছি না আমরা নিজেরাই ঠকে যাছ্ছি।মাএ ৬০-৭০ বছরের জিবন।তার জন্য কি বিশাল কিছুর প্রয়োজন আছে? আর আপনি তো ৫-৭ ফুটের মত একজন মানুষ।একটা গাছ বা পাহাড়কেও তো হিলতে পারবেন না।আসুন না আমারা সবাই গেয়ে উঠি " সকালের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।"

বিষয়: বিবিধ

১৪১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File