ব্যাক্তির জীবনে দ্বীন ও জীবন বিধান প্রতিষ্ঠিত হতে হবে সর্বাগ্রে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৫:২২:৪২ বিকাল
সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি আসমান ও যমিন এবং তার ভিতর যা কিছু রয়েছে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে আর অধিষ্ঠিত হয়েছেন আরশে।যিনি মানুষকে তার প্রতিনিধি ও সৃষ্টির সেরা করে বানিয়েছেন।তিনি দুনিয়ার মানুষের সার্বিক কল্যান এবং আখেরাতে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি দিয়ে চির সুখের জান্নাত দানের লক্ষে যুগে যুগে মানুষের পক্ষ থেকে নবী ও রসূল মনোনীত করে তাদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ও কল্যানকর আইন বিধান সম্বলিত জীবন ব্যাবস্হা পাঠিয়েছেন যা সূরা মা'য়েদার ৩ আয়াতে " ইসলাম" নামে আখ্যায়িত করেছেন।ইসলামই হলো একমাত্র শান্তির ধর্ম যা মানুষকে পূর্নাঙ দিক নির্দেশনা দিয়েছে।আর এ কারনে মুসলিম মাত্রই পরিপূর্ন আনুগত্যের শির নত করে দেয় ইসলামের কাছে।সুরা আয্ যারিয়াতের ৫৬ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, আমি জ্বীন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য।' মানুষকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যুগে যগে নবী রসুল পাঠিয়েছেন এবং তার সাথে আসমানি কিতাব ও পাঠিয়েছেন।সর্বশেষ রসুল মোহাম্মদ ইবনু আব্দুল্লাহ যিনি মুসলিম তথা সমস্ত মানুষের রসুল।১৪০০ বছর পূর্বে মুসলমানের এই দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং রোজ কেয়ামত পর্যন্ত যা যা দরকার তার সবকিছুই তিনি শেষ রসুলের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছেন যার জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে নতুন কোন কিছু উদ্ভাবনের দরকার নেই। বিদায় হজ্ব সংগঠিত হয়েছিল,শুক্রবার ৯ই জিলহজ্জ ১০ হিজরি সনে আরাফার ময়দানে দুপুরের পর লক্ষাধিক সাহাবার সমাবেশে এই ঐতিহাসিক ভাষন দেন।সমস্ত প্রশংসার পর তিনি বলেন,হে মানুষ! তোমরা আমার কথা শুন,এর পর আমি তোমাদের সাথে এই স্হানে একত্রিত হতে পারবো কিনা জানি না।হে মানুষ!আল্লাহ বলেন,হে মানবজাতি! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারি থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের সমাজ ও গোত্রে ভাগ করে দিয়েছি যেন তোমরা পরস্পরের পরিচয় জানতে পার।অতএব শুনে রাখ,মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই,আরবের উপর কোন অনারবের,অনারবের উপর কোন আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, তেমনি সাদার উপর কালোর এবং কালোর উপর সাদার কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই।তোমাদের মধ্যে সেই ব্যাক্তি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারি যে আল্লাহকে ভালবাসে।
হে মানুষ! শুনে রাখ,অন্ধকার যুগের সকল বিষয় ও প্রথা আজ থেকে বিলুপ্ত হলো।জাহেলি যুগের রক্তের দাবিও রহিত করা হলো।হে মানুষ! শুনে রাখ,অপরাধির দায়িত্ব কেবল অপরাধির উপরই বর্তায়।পিতা তার পুত্রের জন্য,পুত্র তার পিতার আপরাধের জন্য দায়ি নয়। হে মানুষ! তোমাদের রক্ত,তোমাদের সম্মান , তোমাদের সম্পদ পরস্পরের জন্য চিরস্হায়ি ভাবে হারাম অর্থাৎ পবিত্র ও নিরাপদ করা হলো যেমন আজকের এই দিন,আজকের এই মাস,আজকের এই শহর সকলের জন্য পবিত্র ও নিরাপদ।হে মানুষ! তোমরা ঈর্ষা ও হিংসা বিদ্ধেষ থেকে দূরে থাকবে।ঈর্ষা ও হিংসা মানুষের সকল গুনকে ধ্বংস করে।হে মানুষ! নারিদের সম্পর্কে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি।তাদের সাথে নিষ্ঠুর আছরন করবে না।তাদের উপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে তেমনি তোমাদের উপর তাদের ও অধিকার রয়েছে।সুতরাং তাদের কল্যানের দিকে সব সময় খেয়াল রেখ।হে মানুষ! অধিনস্তদের সম্পর্কে সতর্ক হও।তোমরা নিজেরা যা খাবে তাদেরও তা খাওয়াবে।তোমরা নিজেরা যা পরবে তাদেরও তা পরতে দিবে।শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তাদের মজুরি পরিশোধ করবে।হে মানুষ! বিশ্বাসী সেই ব্যাক্তি যার হাত ও মুখ থেকে অন্যের সম্মান ও প্রান নিরাপদ।সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্যের জন্যও তা পাছন্দ করে।হে মানুষ! বিশ্বাসিরা পরস্পরের ভাই।সাবধান! তোমরা একজন আর একজনকে হত্মা করার মত কুফরি কাজে লিপ্ত হবে না।হে মানুষ! শুনে রাখ,আজ হতে বংশগত শ্রেষ্ঠত্ব ও কৌলিন্য প্রথা বিলুপ্ত করা হলো।কুলিন বা শ্রেষ্ঠ সেই, যে বিশ্বাসী ও মানুষের উপকার করে।হে মানুষ! মানুষের দাবি দাওয়া ও রিন অবশ্যই ফেরত দিতে হবে।বিশ্বস্ততার সাথে প্রত্যেকের আমানত রক্ষা করতে হবে।কারো সম্পদ সে যদি স্বেচ্ছায় না দেয় তবে তা কারো জন্য হালাল নয়।তোমরা কেউ দুর্বলের উপর অবিচার করো না।হে মানুষ! জ্গান অর্জন প্রত্যেক নরনারির জন্য ফরয কারন জ্গান প্রত্যেককে সঠিক পথ দেখায়।হে মানুষ!তোমরা তোমাদের প্রভুর ইবাদত করবে,নামাজ কায়েম করবে,যাকাত আদায় করবে ,রোজা রাখবে ও হজ করবে আর সংঘবদ্ধভাবে নেতাকে অনুসরন করবে তাহলে তোমরা জান্নাতে দাখিল হতে পারবে।হে মানুষ! শুনে রাখ একজন কুশ্রি কদাকার ব্যাক্তিও যদি তোমাদের নেতা মননীত হয় যতদিন পর্যন্ত সে আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের পরিচালিত করবে ততদিন পর্যন্ত তার আনুগত্য করা তোমাদের অবশ্য কর্তব্য।হে মানুষ! শুনে রাখ,আমার পর আর কোন নবী আসবে না।হে মানুষ! আমি তোমাদের কাছে দু'টি আলোক বর্তিকা রেখে যাচ্ছি,যতদিন তোমরা এই দু'টো জিনিস অনুসরন করবে ততদিন তোমরা সত্য পথে থাকবে।একটি হলো আল্লাহর কিতাব দ্বীতিয়টি হলো আমার জীবন দৃষ্টান্ত।হে মানুষ! তোমরা কখনো ধর্ম নিয়ে বাড়া বাড়ি করো না কেননা অতীতে বহু জাতি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারনে ধ্বংস হয়ে গেছে।হে মানুষ! প্রত্যেকেকে শেষ বিচারের দিনে সকল কাজের হিসেব দিতে হবে।অতএব সাবধান হও।হে মানুষ! তোমরা যারা এখানে হাজির আছ আমার এ বানিকে সবার কাছে পৌঁছে দিও।এর পর তিনি জনতার উদ্দেশ্যে জিজ্গেস করলেন,হে মানুষ! আমি কি তোমাদের কাছে আল্লাহর বানি পৌঁছে দিয়েছি? সকলে সমস্বরে জবাব দিল 'হাঁ'।এর পর নবী সা: বললেন,হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষি থাক আমি আমার সকল দায়িত্ব পালন করেছি।
সুরা হাশরের ৭ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন ,'রসুল তোমাদের যা দেন তা গ্রহন কর আর যা কিছু নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।' এই আয়াতে স্পষ্ট হয়েছে যে দ্বীনের ক্ষেত্রে কোন বাড়া বাড়ি চলবে না।আলকুরআন ও রসুল সা: এর হাদিসে যা আছে তা-ই দ্বীনের একামাত্র সম্বল এবং তা মেনে ইবাদত করতে হবে।ইসলামের মৌলিক জ্গান আহরন করার জন্য কোন বিশেষজ্গ হতে হবে না।সেযুগে একজন যাযাবর যার অক্ষরজ্গান ছিল না তিনিও দ্বীন বুঝেছিলেন।রসুল সা: এর ২৩ বছরের নবুওতি জীবন আমাদের জন্য অনুসরনীয় প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের কাছে এক্কিন(মৃত্যু) আসা পর্যন্ত।ইসলামের ইতিহাস পাঠ করলে যে কেউ বুঝতে পারে আসল দ্বীন বা জীবন বিধান কি? কিভাবে প্রাত্যহিক জীবনে আমাদের দ্বীন পালন করতে হবে।ইসলামের ৫টি মৌলিক বিষয়(ঈমান,নামাজ ,যাকাত(সামর্থ বানদের জন্য),রমজানের রোজা ও বায়তুল্লাহের হ্জ্ব(সামর্থবানের জন্য) রেয়েছে যা মানা প্রত্যেক মু'মিন মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য।এর পর ব্যাক্তি জীবনে দ্বীনের প্রতিষ্ঠা ও পরিবারে তার প্রসার।পরিবারটি হলো রাষ্ট্রের একটি একক।ইসলাম সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য এই প্রাথমিক স্তরটি অতি গুরুত্বপূর্ন।রসুল সা: এর মৃত্যুর পরে চারজন খলিফা(হযরত আবু বকর (রা),ওমর (রা),ওসমান (রা) ও আলি (রা) ৩০ বছর ইসলামি শরিয়ত দিয়ে সমাজ কায়েম রেখেছিলেন।চার জন খলিফার পর ইসলামি বিশেষজ্গদের মতে, হোছাইন রা: এর ৬ মাসকে খলিফাদের শাসনের সাথে তুলনা করেছেন।তাহলে ৩০ বছর ছয় মাস ছিল খেলাফতের শাসন।এর পর শাসন ক্ষমতা রাজতন্ত্রের দিকে চলে যায়। সে সময়ে রসুলের সাহাবিগন বিভিন্ন শহরে অবস্হান করেছিলেন।১১০ হিজরীতে শেষ সাহাবির মৃত্যু হয়ে যায়। এর পর তাবেঈ ও তাবা-তাবেঈ গন দ্বীনের কাজ করেছেন উমায়্যা ও আব্বাছিয় শাসনামলে যদিও সেখানে ইসলামের পূর্নতা ছিলনা।ওমর ইবনু আব্দুল আজিজ যাকে অনেকে দ্বিতীয় ওমর নামে আখ্যায়িত করেন,তিনি অনুসরন করেছিলেন হযরত ওমরা রা: এর শাসন কালের নিয়মাবলীকে।সেজন্য দেখা যায় তিনি অতি অল্প সময়ে উমায়্যা রাজত্বের অনেক ক্ষতকে সারিয়ে তুলেছিলেন।এর কারন ছিল ইসলামি আইনের যথাযথ অনুসরন ও বাস্তবায়ন আর তা ছিল তার ব্যাক্তি ও পারিবারিক জীবনে সর্বপ্রথমে।ইসলামের এই যুগগুলো ছিল আমাদের জন্য আদর্শ ও অনুসরনীয় যা রসুল সা: তার হাদিসে আমাদের বলেছেন অনুসরন করার জন্য। রসুল সা: বলেছেন,'আজকের যুগে আমার জীবদ্দশায় আমি যে আদর্শের উপর টিকে আছি এর উপর যারা কেয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে এবং আমার সাহাবাদের আদর্শের উপর যারা কায়েম থাকবে তারা দ্বীনের উপর থাকবে।' কিন্তু আমরা ইতিহাস থেকে দেখলাম চারজন প্রধান ঈমামের অন্তর্ধানের প্রায় তিনশ বছর পর তাদের উপর কিতাব লিখা শুরু হলো এবং তাদের ফিখ্হহের আলোকে উম্মত বিভক্ত হতে চললো যাকে মাযহাব বলা হয়।তাদের জীবদ্দশায় তারা রসুল সা: এর ছহি হাদিসকে অনুসরন করেছেন।তারা তাদের কথার কোন মুল্য দেন নি।আজ এক কথা বললে আগামিকাল পরিবর্তন করেছেন যখন তারা ছহি হাদিস পেয়ে গেছেন।তাদের প্রত্যেকের অভিমত ছিল রসুল সা: এর পথ হলো আমাদের পথ।তাহলে তারা ছিল আমাদের দ্বীনি ভাই ও অনুসরনীয় চরিত্র।সূরা আত্ তাওবার ১০০ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,'মুহাজিরদের ও আনসারদের মধ্যের অগ্রবর্তীরা -প্রাথমিকরা আর যারা তাদের অনুসরন করেছিল কল্যান কর্মের সাথে-আল্লাহ তাদের উপর সন্তুষ্ট আর তারা ও সন্তুষ্ট আল্লাহর উপর।' তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত সৎকর্মশীলরাই হলো আল্লাহর নৈকট্যের অধিকারি।সাহাবা থেকে শুরু করে ছিয়া ছিত্তাহ(ছয়টি প্রসিদ্ধ কিতাব) কিতাবের এই অসংখ্য বিশাল জ্গানের অধিকারি মুহাদ্দিছ ও উলামাগন সে সময়ের শাসকদের সময়ে দ্বীনের সংস্কারের কাজ কি করেছিলেন কোন দল তৈরি করে? না কোন সরকারকে উৎখাত করে দ্বীন কায়েম করতে চেয়েছিলেন।তারা ছিলেন আহলে আল সুন্নাহের উলামা।তারা চর্চা করতেন আলকুরআন ও রসুল সা: এর সুন্নাহের আলোকে।তাদের কিতাবগুলোতে থাকতো আলকুরআন ও ছহি সুন্নাহের কথা।এই কুরআন ও সুন্নাহের একটি দল ছিল যারা দ্বীনের খেদমতের মাধ্যমে মানুষকে শরিয়তের বিধিবিধান দিয়ে সংস্কার করতেন। এরাই ছিলেন আহলে আল সুন্নাহের দল। এই দলটিই ইসলামের চিলচিলা যা উম্মত অনুসরন করবে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত।
পৃথিবীর কোন দেশেই এখন ইসলাম কায়েম নেই এবং রয়েছে ইসলামি ফাসেক সরকার এবং তারা পাছেক মুসলিম।গত কয়েক শত বছর ধরে পৃথিবীতে জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে দল তৈরি হয়েছে।এই জাতীয়তাবাদ তৈরি হয়েছিল রসুল সা; এর পৃথিবীতে আগমনের সময়েই।ইহুদিরা প্রভাতের সূর্যের মতই জানতো যে শেষ নবী আসবেন।কিন্তু তাদের ধারনা ছিল তাদের ইসরাঈল গোত্রেই শেষ নবী আসবে।যখন তারা শুনলো তিনি মক্কায় আগমন করলেন তখন তারা কুফরি ও হাছাদ শুরু করে দিল।এটিই ছিল প্রথম জাতীয়তাবদের উদ্ভব।এ জন্য যে কোন জাতীয়তাবাদকে ইসলাম হারাম করে দিয়েছে।ইসলামের জাতীয়তাবাদ হলো ইসলাম।এখন ইসলামের রয়েছে বিভিন্ন দল গোষ্ঠি।সনাতন ইসলাম কে বিভক্ত করে 'আধুনিক ইসলাম' নামে বিভক্তি এসেছে যারা মনে করছে পশ্চিমাদের তুলনায় মুসলমানরা পিছিয়ে আছে এবং সেই সব জাতীয়তাবাদের দলগুলো যারা পশ্চিমা গনতন্ত্রে বিশ্বাসী তাদের সাথে ইসলামের দলগুলোর কেউ কেউ রাজনৈতিক ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে।পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে তার মত প্রকাশের এবং তা করতেই পারে।আমার চিন্তা চেতনার সাথে অন্যদের মিল নাও থাকতে পারে।তবে আমাদের সবারই সু-যুক্তি উপস্হাপন করা জরুরি।গনতন্ত্রের ভিত্তিই হলো মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও একে অন্যের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন।আমরা ইসলামের প্রাথমিক যুগেও দেখেছি খলিফা নিয়োগের সময় উম্মতের মতামতের প্রাধান্য ছিল।ইসলাম গনতন্ত্রে বিশ্বাসী। কেউ যদি পশ্চিমা গনতন্ত্রের কথা বলে দল গঠন করে রাজনীতি করে তাতে কারো কোন কিছু বলার নেই কারন যে কোন মানুষ সে অধিকার রাখে। মানব রচিত মতবাদ যেখানে থাকবে সেখানে ভুলক্রুটি থাকতেই পারে।কিন্তু ইসলামের শাসন ক্ষমতার কথা যদি বলা হয় তাহলে সে পথটি তো রসুল সা: ও সাহাবাদের পথে হতে হবে।আজকে পৃথিবীতে যারা ইসলামের কথা বলছে ও ইসলামি শাসনতন্ত্র কায়েম করার কথা বলছে,তাদের কর্মের সাথে সনাতন ইসলামের যৌক্তিক সম্পর্ক দেখতে পাচ্ছি না।তাহলে কি তারা বলতে চায় আমরা কুরআনের কিছু অংশ মানবো আর কিছু মানবো না? এক হাজার বছর ধরে ইসলামে কোন দল ছিল না।এখন ইসলাম কায়েমের জন্য দলের উদ্ভব হলো কেন? আলকুরানে সুরা আনআমের ১৫৯ আয়াত ও আর রুমের ৩২ আয়াতে এই বিভক্তির পরিনামের কথা বলা হয়েছে।আর যদি কেউ মনে করে উম্মতে মিথ্যার ছড়াছড়ি সেজন্য আমরা মানুষকে ডাকছি রসুল সা: এর ঐ একটি দলের দিকে।তাহলে তো তাদের জাতীয়তাবাদের সাথে এলাই করার দরকার নেই।মানব রচিত গনতন্ত্রে বিরোধীদল থাকবে আর তাদের উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতায় আরোহন করা, সে যেভাবেই হোক।সেখানে নৈতিকতা নেই এবং নৈতিক মান সম্পন্ন নেতার সংখ্যা খুবই নগন্য।সেজন্য ইসলামের কথা যারা বলবে তাদের আলাদা ফ্লাটফর্মে থেকে ইসলামের কাজ করতে হবে যেভাবে হাজার বছর ধরে বড় বড় ঈমামগন কাজ করে গেছেন।তাহলে কি আমরা বলবো ঈমাম বোখারি বা মুসলিম (র) তারা ভুল পথে ছিলেন?(নাউজুবিল্লাহ)।তারা তাদের সারা জীবন কুরআন ও ছহি সুন্নাহের আমল করেছেন ,মানুষদের শিখিয়েছেন,হাদিস সংগ্রহ করার জন্য জনপদে ঘুরেছেন।ঈমাম বোখারির মত একজন প্রখ্যাত ঈমাম কি 'জামাতে ইসলাম খোরাসান' বলে একটি দল তৈরি করতে পারতেন না।কাউকে কটাক্ষ করার জন্য আমি বলছি না।প্রত্যেকে প্রত্যেকের আমলের হিসেব দিবে।কারো কবরে কেউ প্রবেশ করবে না।তবে দ্বীন শিখার ক্ষেত্রে ও অন্যদের দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের সঠিক উপাদানটি পৌঁছাতে হবে এবং আমাদের বুঝার চেষ্টা করতে হবে।এর কারন হলো আল্লাহর কাছে আমাদের জীবনের কর্মের হিসেব আমাদেরই দিতে হবে।কোন বুজর্গ বা নেতা কারো হিসেব দিবেন না, তিনি সেদিন নিজেকে নিয়েই ব্যাস্ত থাকবেন।
একটি বিষয় পরিষ্কার আর তা হলো-দ্বীনের আমলের জন্য সনাতন ইসলামকে অনুসরন করতে হবে এবং তা জানার চেষ্টা করতে হবে।দ্বীনকে বুঝার জন্য রসুল সা: এর ছহি হাদিসের স্মরনাপন্য হতে হবে তাহলেই উম্মত পথ পেয়ে যাবে।প্রয়াত জামাতে ইসলামের প্রাক্তন আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব-তার অনেক বক্তৃতায় যে জিনিসটি প্রাধান্য দিয়েছিলেন এবং বার বার বলেছিলেন সেটি হলো 'ইসলাম প্রতিষ্ঠা' করার জন্য শতভাগ কুরআন ও সুন্নাহের কর্মী তৈরি হতে হবে।তানাহলে আল্লাহ কখনো ক্ষমতা দিবেন না। তিনি রেফারেন্স ও দিয়েছেন সুরা নুরের ৫৫ আয়াত দিয়ে যে,তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কর্ম করেছে আল্লাহ তাদের ওয়াদা করেছেন তাদের পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন।' তিনি তার কাজ করে গেছেন।একজন কেন্দ্রীয় নেতার পক্ষে জানা সম্ভব নয় দেশে লাখ লাখ কর্মি কি করছে।কিন্তু তিনি যে মেসেজটি পাঠিয়েছেন সেটি ধারন করার মত কতজন কর্মীবাহিনী তৈরি হয়েছে।জামাতে ইসলামি বাংলাদেশ ইসলামের একটি বড় দল।আহলে আল সুন্নাহের অনুসরনের দল বলে থাকলেও সেখানে ইসলামের মৌলিক কাঠামোর অনেক সংস্কার করতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।ইসলামকে যে ভালবাসবে তাদের কাজ হলো- ইসলামের কোন ক্রুটি ধরা পড়লে তা জানিয়ে দিতে হবে।অনেক কর্মী ভাইদের সাথে আমার কথা হয়,ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে তর্ক বিতর্কও হয় যাতে ইসলামের সঠিক পথটি আমরা জেনে নিতে পারি।এর অর্থ এই নয় যে আমরা একে অন্যকে ঘৃনার চোখে দেখি।আমাদের কাজ হলো একে অন্যকে সংস্কার করা।নবী রসুল এ কাজটিই করে গেছেন।তবে আমাদের সংকীর্নতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে ও ইসলামের কাজ করতে হবে।আমরা যে যা-ই করিনা কেন আখেরে আমাদের হিসেব আমাদেরই কষতে হবে যা আগেও বলেছি।আমার কিছু মতামত আমি পেশ করছি দলটির উন্নয়ন পরিকল্পনায়।একটি গনতান্ত্রিক জোটের দল হিসেবে এটি একটি পরামর্শ মাত্র।আর যেহেতু ইসলামের কথাই তারা বলেন তাহলে কিভাবে অদূর ভবিষ্যতে ইসলামের উন্নয়ন করা হবে তার পরিকল্পনা দল থেকে নিতে হবে।আমি একজন সাধারন মানুষ হিসেবে নিম্নের বিষয়গুলো তুলে ধরলাম:
১-ইসলাম প্রতিষ্ঠা যদি লক্ষ্য হয় তাহলে জোট বহির্ভূত আলাদা ফ্লাটফর্ম তৈরি করন:--
ইসলামের মৌলিক বিধান হলো আলকুরআন ও ছহি সুন্নাহ যা দলের মধ্যে প্রাধান্য দিতে হবে।এ কাজটি হাজার হাজার বছর পর্যন্ত ছিল উলামাদের দ্বীনি জীবনে।তারা অনুসরন করেছিলেন একমাত্র রসুল সা:কে।আক্কিদার দিক থেকে পুরোপুরি আহলে আল সুন্নাহের অনুসরন করতে হবে।দলের উপরি কাঠামো থেকে নিচু কাঠামো পর্যন্ত সমস্ত নেতা কর্মীর চরিত্র হতে হবে কুরআন ও সুন্নাহের চরিত্রে অনুকরনীয়।মানুষকে গড়ে তোলার জন্য সামাজিক কার্যক্রম হাতে নিতে হবে যাতে কুরআন ও সুন্নাহের প্রসার ঘটে।ইসলামের মৌলিক জ্গানের সাথে সাথে পার্থিব জ্গানে স্বশিক্ষিত হওয়ার জন্য কর্মীদের উজ্জিবিত করতে হবে।বর্তমান প্রেক্ষিতে যে কর্মী তৈরি হচ্ছে তা কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে পুরপুরি তৈরি নয়।যদি কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে প্রকৃত মানুষ তৈরি হয়ে যায় তাহলে দ্বীন কায়েম সম্ভব।যতক্ষন দ্বীন কায়েম না হবে মানব রচিত মতবাদের যে সংবিধান আছে তারই অনুগত থেকে অহিংস চেষ্টা চালাতে হবে।ইসলামের স্বার্থ হলো ইসলাম কায়েম।শাসন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোন গনতান্ত্রিক সরকারকে টানিয়ে নামানোর যে সহিংস আন্দোলন যেখানে রয়েছে জান মালের ক্ষতি তা ইসলামে কাম্য নয়।আজকের সময়ে সহিংসতার জন্য জামাতকে যে দায়বদ্ধ করা হচ্ছে তার কিছু অংশ তাদের মাথা পেতে নিতে হবে কারন তারা জোটের অংশীদার।জোটে আরো দল থাকলেও তাদের ব্লেম দিচ্ছে না কারন কিছু সংখ্যক সহিংসকারী ইতিমধ্যে ধরা পড়েছে জামাতের অংগসংগঠন থেকে এবং অনেকেই মনে করেন জামাত এই সষহিংসতার জন্য দায়ী।সেকারনে জামাতকে সরে যেতে হবে যাতে তারা ব্লেমগেমে না পড়ে।
২-জোটে থাকার কুফল:--
সেকুলার ও জাতীয়তাবাদের সাথে ইসলাম একটি সাংঘর্ষিক বিষয়।ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে চলবে কুরআনের শাসন, আর সেকুলার ও জাতীয়তাবাদে মানব রচিত সংবিধান ও পশ্চিমা গনতন্ত্রের অনুসরনকারি।জামাতকে তারা ব্যাবহার করবে ভোটব্যাংকের জন্য।ইসলামের বিজয় হওয়ার জন্য তেমন কোন কিছুই তারা করবে না।জোট গঠন করে জামাত যে সুবিধা পাবে তা হলো আর্থিকভাবে সামর্থবান হবে।কেউ মন্ত্রি এমপি হলে দলের লোকদের বিভিন্ন সেক্টরে চাকুরি দিতে পারবে ও তার সাথে কর্মীরা পাবে ব্যাবসায়িক সুবিধা।ইতি পূর্বে জোটের দলগুলো এই সুবিধাই গ্রহন করেছে।সুতরাং ইসলামের যে মৌলিক কল্যান তা এভাবে সম্ভব নয়।এটি ইসলামের পথও নয়।
৩-স্ট্রেটেজিক পরিকল্পনা-আমার মতে গত ৩৪ বছরে জামাতের কেন্দ্র থেকে এর সঠিক পরিকল্পনা নেয়া হয় নি।স্ট্রেটেজিক পরিকল্পনা হলো- অতীতের ভুলের আলোকে নিজেদের আমুল পরিবর্তন করা।রাজনীতি হলো মানুষের কল্যানের জন্য।মানুষের কাছে যেতে হলে নিজের দুর্বলতাগুলোর জন্য দরকার হলে ক্ষমা চাইতে হবে।রাজনৈতিক এই কৌশলে জামাত এগুতে পারেনি।নির্বাচন আসলে যারা ভোট দেয় তাদের কোন বিকল্প নেই বলে অনেকে ভোট দেয়।কারন ইসলাম প্রিয় অনেক মানুষ আছে যারা ইসলামের ভালবাসার কারনে ক্রুটি থাকলেও তাদের পক্ষে সহমত প্রকাশ করে।দলের রোকন , আমীরে জামায়াত, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা; কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এ সমস্ত সদস্যরা যারা হলো দলের প্রান।মাঠ পর্যায়ে বিশাল একটি অংশ এখনো রয়েছে যারা ইসলামের প্রতিনিধিত্বকারি হিসেবে তৈরি হয় নি।এর অনেক উদাহরন রয়েছে।আমি সরজমিনে একটি উদাহরন দিচ্ছি এ থেকে প্রমানিত হবে তাদের দুনিয়ামুখিতা সম্পর্কে।আমার শ্বশুর জনাব তোজাম্মেল হক-যিনি সৌদি বিনলাদিন গ্রুফে ফাইনান্স ডিভিশনে একজন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন।তিনি ভেড়ামারার অধিবাসি।ভেড়ামারা শহরে তার দেড় বিঘা জমির উপর দ্বিতল বাড়ি ও সামনে একটি বড় মাঠ।উনারা জামাতের সক্রিয় কর্মী বিধায় এবং বাড়িটি খালি বলে সেখানে একটি স্কুল করতে দেয় সাময়িক ভাবে যার নাম " আল হেরা স্কুল"।এখন স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত এবং বাড়ির মালিক কোন টাকা নেন না।যিনি স্কুলের প্রিন্সিপাল তিনি ও একটি চক্র এর আয় ভোগ করছেন।সমাজে এ রকম দ্বীনদার মানুষ দেখতে পাওয়া যায় যারা হালাল হারামের সীমারেখা মেনে চলেন না।আবার তারাই মানুষকে নসিহত করতে যান। দু'বছর হলো ওয়ারনিং দিচ্ছেন স্কুল ছেড়ে দেয়ার জন্য কিন্তু তারা বাড়ির মালিককে ছাপে ফেললেন যে তাদের তাহলে স্কুলের জন্য যায়গা কিনে দিতে হবে এবং তিনি সেটিও করলেন আপদ সরানোর জন্য।এখনো তারা বাড়ি ছাড়ছেন না।এটি আমাদের পারিবারিক একটি জানা ঘটনা।জাতীয় পর্যায়ে এ রকম হাজার হাজার কর্মী গড়ে উঠেছে জোট সরকারের সময় যা আমাদের নখদর্পনে আছে।যাদের কুরআন ও সুন্নাহের কোন আমল নেই।তাহলে এই কর্মীদের দ্বারা কিভাবে সম্ভব দ্বীন কায়েম? অন্য দলের লোকরা অন্যায় করে কারন তাদের ইসলাম সম্পর্কে কোন ধারনা নেই আর ইসলামের লোকগুলো যেনে শুনে সেই অন্যায়গুলো করে।এই দুই শ্রেনীর লোকের কার্যক্রম কি অপরাধের দিক থেকে সমান?
৪-জংগিবাদের সংশ্রব ত্যাগ করা:
ইসলামের উপর আন্তর্জাতিক মিডিয়ার একটি নেতিবাচক ধারনা রয়েছে।মুসলিম নাম শুনলেই তারা মনে করে মুসলমানরা জংগি।আমরা ইতিহাস দেখলে দেখতে পাই যতগুলো ঘটনা ঘটেছে আন্তর্জাতিক অংগনে এর সিংহভাগ করেছে অমুসলিমরা।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই জংগিবাদি অনেক দল রেয়েছে যাদের অভিভাবক হলো আন্তর্জাতিক চক্র।এরা গনতান্ত্রিক সরকারগুলোর দুর্বলতার সুযুগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে থাকে।আমরা জামাতের ব্যাপরে এ কথাগুলো শুনে থাকি সরকারগুলোর মুখে।কিন্তু সরকারকে এও করতে দেখিনা যে তারা ধরে উদাহরন মুলক কোন শাস্তি দিয়েছে।জামাত যদি তাদের মনে করে তাদের ভিতর কোন জংগীবাদ নেই তাহলে তাদের এ বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে।কারন আমরা দেখতে পাই শিবিরের কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে ধরা পড়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তারা অস্ত্রবাজি করছে।যদি তারা তাদের দ্বীনি সংগঠন মনে করে থাকে তাহলে তাদের হাতে অস্ত্র থাকবে কেন? অন্য দলগুলোর কর্মীরা যা করে তারা সে কাজটিই করছে।তাহলে অন্যরা ইসলাম শিখবে কি করে? দলের কল্যানের জন্য তাদের এ সমস্ত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে যা অনুর্বর করে ফেলেছে দলকে।জমিতে যেমন লোনা জমে গেলে ফসল হয় না তেমনি জামাতে অসম্ভব লোনা জমছে যার দেখাশুনা কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
৫-নেতা তৈরি করন:-
দলের পরিচালনা বিধিকে আরো ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিতে হবে।যেহেতু এটি একটি ইসলামের রাজনৈতিক দল সেহেতু দেশে নেতৃত্ব দেয়ার মত মানুষ তৈরি করতে হবে।দলের ভিতর গনতন্ত্রের চর্চার জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে প্রতিটি সমাজকাঠামো থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত।তৃনমুল থেকে এখন যে নেতা তৈরি হচ্ছে সব দলগুলোতে তারা কেন্দ্রের নেতাদের দ্বারা শাসিত ও সুবিধাভোগী শ্রেনী যাদের লক্ষ্য হলো ধনসম্পদ অর্জন।উপজেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সর্বস্তরে এখন ভাগাভাগি করে খাচ্ছে।যে যেখানে যেটুকু সুবিধা পাচ্ছে সেটুকু অর্জন করছে।এ অবস্হায় নেতা তৈরি হবে না।এর জন্য সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা প্রয়োজন।গনতন্ত্রে অন্ধ ভালবাসা থাকলে সমাজ অন্ধকার হতে বাধ্য।
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য:
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর গঠনতন্ত্র অনুসারে, কোরানে বর্নিত আল্লাহর আইন অনুসারে সমগ্র রাষ্ট্রে পরিপূর্ণ ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েম করা। ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করে সমগ্র রাষ্ট্রে সম্পূর্ণরূপে কায়েম করিবার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করা এবং আল্লাহর নির্দেশিত অবশ্য পালনীয় কর্তব্যসমূহ যেমন নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত ইত্যাদি পালনে নাগরিকদের সচেতন করা। এসবের মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সর্বপ্রকার আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক হুমকি এবং বিশৃংখলা হইতে রক্ষা করিবার চেষ্টা করা। দায়িত্বশীল নাগরিক এবং চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে শোষনহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করে জনসাধারণের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করা এবং বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা।তবে ২০১২ সালের অক্টোবরে গঠনতন্ত্রে আনীত সংশোধন অনুযায়ী দলটি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা উল্ল্যেখ করে।
উপরে বর্নীত দু'টি বিষয় বুঝতে আমার অসুবিধা হলো-১: ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করে সমগ্র রাষ্ট্রে সম্পূর্ণরূপে কায়েম করিবার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করা।জামাতে ইসলামতো ইসলামের একটি বিভক্ত দল।তাহলে তারা কিভাবে ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করবে? ২ : ২০১২ সালের অক্টোবরে গঠনতন্ত্রে আনীত সংশোধন অনুযায়ী দলটি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা উল্ল্যেখ করে।পূর্বে গঠনতন্ত্রে যেখানে ছিল ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম,তাহলে এখন তাদের লক্ষ্য পরিবর্তিত হয়ে পশ্চিমা গনতন্ত্র কায়েম করা লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
যাই হোক,আমাদের সবার উচিত হবে নিজের ও পরিবারের জীবনে দ্বীন কায়েম করা সর্বাগ্রে।এর পর মানুষের মাঝে দ্বীনের কথাগুলো পৌঁছে দেয়া।যেখানে ইসলামি হুকুমাত কায়েম নেই সেখানে সৎ মানুষদের উচিত একে অন্যের সাহচর্যে এসে যার যার যায়গা থেকে কল্যানের কাজগুলো করা।এর জন্য অনুসরন করতে হবে রসুল সা:কে আদর্শ হিসেবে।সাহাবায়েকরামদের ও ঈমাম ও মুহাদ্দেছিনদের পথ যেভাবে তারা দ্বীনের খেদমত করেছেন।এ পথ আমাদের কাছে পরিস্কার হওয়ার পরেও পৃথিবীতে ইসলামের দলগুলো নিজেদের যারা যার যায়গায় নিজেদের ঠিক বলছে।আমাদের উচিত সবার সাথে সুন্দর আচরনের মাধ্যমে এবং যার যার ক্ষমতানুসারে দ্বীনের কাজকে তুলে ধরা।এই কাজ করতে হলে একটি সংঘবদ্ধ দলের প্রয়োজন।এই দলটিকেই বলা হয়েছে আহলে সুন্নাহ আল জামাতের দল।এই দলটির কার্যক্রম হবে সাহাবাদের অনুকরনে।এই মানুষগুলির চরিত্র হবে সাহাবাদের চরিত্রের অনুসরনে।যারা এই নামটি নিয়ে এখন মাঠে এসেছে তাদের পর্যালোচনা করলে সনাতন ইসলামের খুব কম আদর্শ পাওয়া যায় বরং সেখানে রয়েছে দলের পুরহিতের তৈরি করা আদর্শ ও কিতাবাদি যা পড়ে তারা নেতা হচ্ছে।কুরআন ও সুন্নাহের যায়গা যখনি দখল করলো পুরহিতদের কিতাবলী তখনি ঢুকে গেল শির্ক ও বিদাআত যা এখন ইসলামি ইবাদতের অংশ হয়ে উঠেছে। যখন শির্ক ও বিদাআতের প্রচলন শুরু হয় তখন ছহি সুন্নাহের বিলোপ সাধন হয়।সেজন্য ব্যাক্তি জীবনকে গড়ে তুলতে হবে কুরআন ও সুন্নাহের অনুসরনে আর তাহলেই সমাজ থেকে দূর হবে সর্বপ্রকার পংকিলতা।
বিষয়: বিবিধ
২১৩৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্লীজ কিছু মনে নিবেন না ভাইয়া বেয়াদবী হলে মাফ করবেন ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন