বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে কিছু ঐতিহাসিক তথ্য ও পর্যালোচনা।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৯ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৫:১৩:২৯ বিকাল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি রাজনৈতিক এবং একটি নিবন্ধিত সংগঠন।তবে এ সংগঠনটি অন্যান্য সেকুলার ,বাম বা জাতীয়তাবাদের মত নয়।তারা তাদের মেনিফেষ্টোতে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জুড়ে দিয়েছে ইসলামি হুকুমাত কায়েম করবে।একজন মুসলিম হিসেবে আমিও ইসলামকে আমার জীবনের চেয়ে ভালবাসি এবং আমাদের কর্তব্য ইসলামের জন্য কাজ করা।ইসলামের জন্য যারা কথা বলে ও কাজ করে তারা ইসলামের স্বপক্ষের শক্তি।কিন্তু এও আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের সব কাজগুলো হতে হবে ইসলামের অনুকরনে।ইসলাম কখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না আল্লাহর আইন ও নবী সা: এর পথ অনুসরন করা ছাড়া।একমাত্র নবী সা: এর পথেই এগিয়ে যেতে হবে ইসলামি জীবন কায়েমের জন্য।আমরা যদি ইসলামের ইতিহাস লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো নবী সা: এর আগমন ঘটেছিল পবিত্র মক্কা নগরীতে যে সময়কে বলা হতো অন্ধকারের যুগ।এ যুগকে অন্ধকার এ জন্যই বলা হতো যে তারা আল্লাহর বিধানকে মেনে চলতো না।তারা তাদের ধর্মকে ছেড়ে দিয়ে বাপ দাদার কৃত ধর্মের তথা পৌত্তলিকতার কাছে মাথা নত করে দিয়েছিল আর এদের পূজা করাই ছিল তাদের ধর্ম।সেই সময়ে আল্লাহ তাদের সংস্কারের জন্য পাঠালেন শেষ রসূল সা: কে।তিনি ১৩টি বছর কঠোর পরিশ্রম ও নির্যাতন সহ্য করেছিলেন মানুষ তৈরি করার জন্য।এই ১৩ বছরে তিনি কিছু মানুষ তৈরি করেছিলেন যারা ছিল ইস্ফাত কঠিন ও দৃড় চরিত্রের অধিকারি।তারা ছিলেন আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাসী,সৎ ও ন্যায়পরায়ন ও রাসূল সা: এর একান্ত শুভাকাংখী ও অনুসারি এবং দুনিয়ার প্রতি লোভলালসাহীন এক একজন দৃড়চেতা বৃদ্ধ ও তরুন।এই মানুষগুলো-ই ছিল ইসলামের শক্তি।রাসূল সা: দীন কায়েম করতে গিয়ে কাফের মুশরিকের শিকার হয়েছিলেন।তারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল যাতে ইসলাম নামক জিনিসটি মাথাছাড়া দিয়ে উঠতে না পারে কিন্তু তিনি নিজে কখনো সহিংসতা করেন নি বা যুদ্ধে জড়াননি।তাদের সমস্ত অত্যাচার মেনে নিয়েছিলেন ও সবর করেছিলেন এবং মানুষ তৈরির কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন সাথীদের নিয়ে। দিন কায়েমের জন্য যতগুলো যুদ্ধ হয়েছিল তিনি তা প্রতিরোধ করেছিলেন।ইসলামের সোনালী যুগগুলোতেও আমরা দেখতে পাই সাহাবা ,তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈ গন ইসলামি শাসকদের অধীনে সহনশীলতার সাথে ইসলামের কাজ করে গিয়েছেন।আলকুরআন ও সূন্নাহের মাধ্যমে মানুষকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।তারা ইসলামের জন্য ও মানুষের কল্যানের জন্য সার্বক্ষনিক কাজ করেছেন কিন্তু শাসন ক্ষমতার কাছেও যান নি।কেউ কোন দায়িত্ব পেলে সে দায়িত্ব পালন করেছেন শতভাগ সততার মাধ্যমে।টাকা কড়ি থাকলেও তারা দীনহীন বেশে জীবন যাপন করেছেন।নিজের খাবার অন্যের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন।সেজন্য আমরা দেখতে পাই সে সমাজগুলো ছিল বৈশিষ্ট পূর্ন।তবে তাদের উপরও জুলুম নির্যাতন হয়েছে।ঈমাম আবু হানিফা (র) কে উমাইয়া যুগের শেষ দিকে এবং আব্বাসীয় সময়ের প্রথম দিকে প্রধান বিচারপতির আসন গ্রহন করতে বলা হয়েছিল কিন্তু তিনি তা প্রত্যাক্ষান করেছিলেন।সেজন্য তাকে কারাগারে পুরে দেয়া হয়েছে,নির্যাতন করা হয়েছে এবং তাঁর জীবনাবসানও হয়েছিল কারাগারে।একজন মু'মিনের জন্য এ জীবনটি একটি কারাগারই বটে যদি আমরা হালাল জীবন যাপন করতে চাই।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! স্বাধীনতার সময় আমি যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অশীদার হতে পারিনি কারন বয়সে ছিলাম ছোট, তবে আমাদের অনেককেই পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে।আমাদের 'ন' মাস এই সময়টি স্বস্তিতে ছিলাম না।কখনো নিজ বাড়িতে,কখনো আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে পালিয়ে বেড়িয়েছিলাম।নিজ বাড়িতে যখন থেকেছি তখন প্রতিটি রাত কাটতো নির্ঘুম।পুরুষদের ভয়ের কোন কারন ছিলনা কিন্তু যে ঘরে ছিল স্কুল, কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তাদের মা'রা সার্বক্ষনিক আগলে রাখতেন।আমার বাবা ঘন বাগানের ভিতর ছোট্ট একটি ঘর করেছিলেন রাত যাপনের জন্য যা কেউ জানতো না।মুল ভিটে থেকে আমরা সন্ধা হলে বোনদের নিয়ে সেখানে চলে যেতাম।অন্ধকার আর ঘন বাগান বুঝতেই পারছেন কি কঠিন জীবন।সেই স্বাধীনতা আমাদের কাছে এলো।আজকের প্রজন্ম যদি এগুলো চিন্তা না করে ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস না জানে তাহলে এই স্বাধীনতার মুল্য কোথায়? বাংলাদেশ জামাতে ইসলাম সম্পর্কে কেউ ঢালাওভাবে রাজনৈতিক ফায়দার জন্য কোন কথা বললে সেটা হবে আত্মঘাতি।সে সময় আমি স্কুল পড়ুয়া হলেও সব মনে আছে।আশে পাশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন হলে বা তাদের বাড়ি পুড়িয়ে দিলে আমরা ছুটে গিয়েছি তাদের সহায়তার জন্য নয় তাদের মাল সামান লুট করার জন্য।এভাবেই দেখেছি অসংখ্য ঘটনা।আমি জানি না এরা কারা? তবে এদের অনেকেই মারা গেছে আবার অনেকে এখন বিভিন্ন দলভুক্ত।রাজনীতির আবডালে এরা নিজেদের গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে।আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস গত ৪৩ বছরে বিকৃত হয়েছে শাসকদের দ্বারা।যে যার মত করে সাজিয়েছেন।কিন্তু সবগুলো পড়লে বিচক্ষন লোকেরা একটা উপসংহার টানতে পারেন তবে তাদের নীরপেক্ষ থাকতে হবে।অনেকে মনে করতে পারেন আপনি জামাত সম্পর্কে লিখছেন কেন? এর কারন হলো-আমি একজন ইসলামের পক্ষের লোক।ইসলামের জন্য যারা কাজ করে তাদের যদি কোন ভুল হয় শুদ্ধ করে দেয়া একজন মু'মিনের দায়িত্ব।প্রতিটি মানুষের একটি অভীন্ন মত থাকতে পারে।হয়ত আমি যেভাবে চিন্তা করি সেটা অন্যের জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে কিন্তু আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।এই মতামত থেকে যদি আহরনের কিছু থাকে কেউ গ্রহন করবে আর না হয় ছুঁড়ে ফেলবে কিন্তু এতে সংঘর্ষ বা প্রতিহিংসার কোন কারন নেই।এটিই গনতন্ত্রের মুল কথা।গনতন্ত্রে অন্যের মতের স্বাধীনতা প্রকাশ ও তার কাজের স্বাধীনতা দিতে হবে যা আজ আমাদের দেশে নেই।বাংলাদেশের মত একটি মুসলিম দেশে ইসলাম তথা কুরআন হাদিসের অনুশীলন যেভাবে হওয়ার দরকার ছিল তা হয়ে উঠে নি শাসকদের ইসলামের প্রাথিষ্ঠানিক রুপ না দেয়ার কারনে।দ্বিতীয়ত-আমাদের দেশে ইসলামের লোকগুলো বিভক্ত বিভিন্ন দলে ও উপদলে।ইসলামের কাজগুলো করা হয় কুরান ও সূন্নাহের আদলে নয় বরং নিজেদের তৈরি করা কিছু খানকা ও দলগত আইন কানুন বানিয়ে।ইসলামের মুলশ্রোতকে ব্যাবহার করে তাদের নিজস্ব চিন্তা ও মতবাদকে জড়িয়ে ইসলামের কাজ চলছে।যার পরিনতিতে ইসলামের ভরাডুবিই হচ্ছে দিনের পর দিন।স্বাধীনতার ইতিহাসের বিভিন্ন লেখকের লিখা বা উইকিপিডিয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে তথ্য দেয়া হয়েছে যা আজকের প্রজন্ম পড়ছে ও বিশ্বাস করছে।তাছাড়া তারা যাবে কোথায়? আমাকে ৫০ বা ১০০ বছর আগে যদি যেতে হয় তাহলে আমাকে ইতিহাসই খোঁজ করতে হবে এবং এটাই স্বাভাবিক।প্রশ্ন হলো যারা ইতিহাস লিখতে গিয়ে জাতিকে বা অনাগত ভবিষ্যতকে জ্বরাগ্রস্ত করছেন তাদের ইতিহাস ক্ষমা করবে না।এ দেশে দলের বাইরেও অনেকে কাজ করে যাচ্ছেন যারা ভাবনা চিন্তা করেন,সঠিক তথ্য খোঁজার চেষ্টা করেন।যারা সত্য কথা বলেন ও সত্য বাস্তবে দেখেছেন তাদের জন্যই আজকের আমার প্রয়াস।আপনি সংযোজন করতে পারেন আপনার মতামত।আমি যা খুঁজে পেয়েছি তা আপনাদের সামনে উপস্হাপন করলাম।আমরা আমাদের সংশোধন করতে পারি,ভুল হলে একে অন্যের কাছে ক্ষমা চাইতে পারি,দেশের অকল্যান করে থাকলে জাতির কাছে ক্ষমাও চাইতে পারি যাতে আমরা একটি সভ্য মানুষ ও সভ্য জাতিতে আমাদের রুপান্তর করতে পারি।আমরা একে অন্যকে প্রতিহিংসার আগুনে ঝলসিয়ে দিতে বা হত্মা করতে, এমনকি আমাদের কথা দিয়েও কাউকে কষ্ট দিতে পারিনা।আমরা মতের আদান প্রদান করতে পারি ও সত্যকে তুলে ধরতে পারি ও আমাদের তা থেকে সংশোধন করতে পারি।তবে যদি অজ্গতার অন্ধকারে নিজেকে সপে দেই তাহলে একগুঁয়েমিই কাজ করবে,এতে কোন সফলতা আসবে না।আমি আবারো বলছি আমি যা লিখছি তা ইতিহাসের অংশ যা বিবৃত হয়েছে বিভিন্ন লেখকের লিখাতে।আপনি যদি ইতিহাস জানেন লিখুন না বা জানিয়ে দিন স্বাধীনতায় আপনার ভূমিকা কি ছিল? কি করতেন আপনি? কোথায় থেকেছেন ও কি করেছেন? কি দেখেছেন? আমি একজন এ প্রজন্মের মানুষ। আমার বয়স ৫০শে পড়েছে।আমাকে আমার এলাকার,আশেপাশের সবাই জানে,আমি কোন চরিত্রের মানুষ ছিলাম? আমি যখন এলাকায় যাই আমার বাবার ৭৯ বছরের জীবনের সাথে সম্পৃক্ত মানুষেরা তার কথা বলে সে কি রকম মানুষ ছিল।এভাবে ১৯৭১ সালে যারা বিতর্কিত হয়েছে তাদের সবাই যে ঢালাওভাবে খারাপ ছিল তা নয়।তাদের ১৯৭১ সালের আগেরও ইতিহাস ছিল তাদের এলাকায় তারা ভাল কি মন্দ, আর যুদ্ধের সময় কিছু লোকতো ছিলই ফায়দা লুটার জন্য যারা আজো রয়েছে সমাজে।আমি আমার সম্পর্কে ছাপাই গাইতে পারি কারন আমি নিজেকে জানি ও চিনি কিন্তু অন্যের জন্য বা একটি দলের কোটি কোটি মানুষের জন্য ছা্পাই গাইতে পারিনা ও সার্টিফিকেট দিতে পারিনা। গত ৪৩ বছরে অনেক রাজনীতি হয়েছে।ধংস হয়েছে দেশের অনেক সম্পদ,মৃত্যুবরন করেছে অনেক নীরিহ ছাত্র ও সাধারন মানুষ।দক্ষিন কোরিয়া বা মালেশিয়া আমাদের মতই ছিল,আজ তাদের মাথাপিছু আয় ২৫০০০ ডলার আর আমাদের ১২০০ ডলার।আমরা একমাত্র রাজনৈতিক অস্হিতিশীলতা ও প্রতিহংসার কারনে পিছনে পড়ে আছি। বর্তমান প্রজন্ম চায় অতীতের সমস্ত গ্লানি মুছে নতুন জীবন লাভ করতে।স্বাধীনতার পক্ষ বিপক্ষ বলে মারছে এ প্রজন্ম একে অন্যকে।কোন নেতার গায়ে আগুন জ্বলে না।কোন নেতার ঘরবাড়ি পুড়ে না।কোন নেতা অনাহারে থাকে না।তারা রাজনীতি করে দেশে ও তাদের পরিবার থাকে বিদেশে আর দেশের টাকা পাছার করে।আমরা দেখছি প্রতিদিন যারা মরছে নীরিহ কর্মী ও নীরিহ মানুষ যারা দেশকে উর্বর করছে।তাদের উপর আর নির্যাতন চলতে দেয়া যায় না।জামাতে অনেক ভাল মানুষ ছিলেন আজো আছে।তারা ভাল মানুষ হিসেবেই থাকবেন।কিন্তু কিছু সংখ্যক খারাপ মানুষ বেশীর ভাগ মানুষকে কলন্কিত করছে সে দায়টিতো দলটিকে নিতে হবে এবং তাদের সংস্কার করতে হবে।একজন সদস্য হলো একটি দলের পিলার।আমি কর্মীর কথা বাদই দিলাম যাদের শরিয়তের বিধি বিধান জানা নেই।আমার নিজের জানা আছে অনেক সদস্য সম্পর্কে যারা হারাম হালালের সীমারেখা রক্ষা করে চলেনা।তাহলে এই পিলার রুপি মানুষগুলো যখন নেতৃত্বে আসবে তারা তো খারাপ কাজই করবে।আর এ পিলারগুলোর অনেকে এসেছে আওয়ামিলীগ ও বিএনপি থেকে যাদের পরিচর্যা ও পরীক্ষা নীরিক্ষা না করেই সদস্য বানানো হয়েছে।ইসলামের নেতৃত্ব দিতে হলে এদের প্রশিক্ষন ও সংস্কার করতে হবে যাতে দল ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, যার পূর্বনাম ছিলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী রাজনৈতিক দল যারা গনতন্ত্রের আওতায় ইসলাম কায়েম করতে চায়। ১লা আগস্ট ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন সম্পর্কিত একটি রুলের রায়ে এই সংগঠনের নিবন্ধন অবৈধ এবং একে নির্বাচনে অংশগ্রহনের অযোগ্য ঘোষনা করে।আভিযোগ রয়েছে-জামায়াত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার এবং পাকিস্তান বিভক্তির বিরোধীতা করেছিল।এটি ছিল তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা।এটি যে কেউ করতে পারে এবং করাটা স্বাভাবিক।কিন্তু প্রশ্ন হলো পশ্চিম পাকিস্তান যখন আমাদের অধিকার অন্যায়ভাবে খর্ব করলো এবং একটি যুদ্ধের ঘোষনা আসলো তখন আমার দেশ মাতৃকার প্রতি ভালবাসাটা জাগলো না কেন? এটি ছিল ঈমানের একটি অংগ।এ কথাটিই গন মানুষ বলছে এবং স্বাধীনতার পর যে স্বাধীন দেশে তারা অবস্হান করা শুরু করলো তখনো জাতীর কাছে তারা স্পষ্টভাবে তাদের ভুলের ব্যাখ্যাটি দেয় নি যদিও শেখ মুজিবুর রহমান মাপ করে দিয়েছিলেন।আমি মনে করি শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বার্থে বিচক্ষনতার পরিচয় দিয়েছেন এবং জিয়াউর রহমানও একদলীয় শাসন ব্যাবস্হাকে বিলুপ্ত করে বহুদলীয় শাসন ব্যাবস্হা কায়েম করে ভালই করেছেন।অভিযোগ রয়েছে- দলটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী, বুদ্ধিজীবী এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের হত্যায় সহযোগিতা করেছিল। দলটির অনেক নেতা-কর্মী সেসময় গঠিত আধা-সামরিক বাহিনীতে যোগদান করেছিল, যারা গণহত্যা, বিশেষ করে হিন্দুদের ধর্ষণ এবং জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে স্থানান্তরের মত যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত। জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আধাসামরিক বাহিনীশান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিল।তবে এই অভিযোগগুলো জামাত সব সময়ই মিথ্যা ও অবৈধ বলে আখ্যা দিচ্ছে।কারন তারা মনে করে যে,তারাই একমাত্র ইসলামের দল ছিল না,তারা ছিল ছোট একটি দল।মুসলিমলীগ ছিল একটি বড় দল।যে অভিযোগগুলোর কথা বলা হয় তা অন্যরা করে তাদের উপর ছাপিয়ে দিয়েছে।কিন্তু এ কথাগুলো ঢেকে যায় যুদ্ধের বিরোধীতার কারনে।মানুষ মনে করেছে যারা যুদ্ধের বিরোধীতা করেছে তারাই হত্বাকান্ডের সাথে জড়িত ছিল আর এ চিন্তা আসা অত্যন্ত স্বাভাবিক।আমার আশে পাশে যদি শক্রু থাকে ও যদি আমার পরিবারের কেউ মারা যায়,আমি ধরে নিতেই পারি আমার শক্রু ঘটনাটি ঘটিয়েছে যদিও অন্য কেউ করে থাকে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর, নতুন সরকার জামায়াতকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং দলের নেতারা পাকিস্তানে নির্বাসনে চলে যান বলে যে কথাগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাও তারা স্বীকার করেন না।তাদের মতে একমাত্র প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আজম সাহেব ছাড়া কেউ বাইরে ছিলেন না ১৬ই ডেসেম্বরের ৭১ এর পর। প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আজম সাহেব ২২-১১-৭১ সালে পাকিস্তানে যান কিন্তু তিনি ফিরতে পারেন নি।তিনি ১৯৭২ সালে হজ্জে যান এবং ১৯৭৩ সালে ইউকে তে যান এবং ১৯৭৮ সালে দেশে ফিরেন। ১৯৭৫ সালে প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব হত্যাকান্ডের পর এবং কয়েকটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর ১৯৭৭ সালে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে জামায়াতের উপর থেকে নিষেদ্ধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। দলটির নেতাকর্মীরা ফিরে আসার অনুমতি পান। জামায়াতের উদ্দেশ্য হলো শরীয়া ভিত্তিক একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যা পাকিস্তান ও সৌদি আরবের দেশসমূহে লক্ষ্য করা যায়। জামায়াতের বিরুদ্ধে হিন্দু ও বৌদ্ধ এবং আহমদীয়া মুসলমানদের উপর ধারাবাহিক আক্রমনের অভিযোগ করা হয়ে থাকে কিন্তু এ ব্যাপারে তথ্য সূত্র অপ্রতুল।১৯৮০-এর দশকে জামায়াত গণতন্ত্রের পুনুরুদ্ধারের জন্য বহুদলীয় জোটে যোগদান করে। এসময় দলটি আওয়ামী লীগ ও সমসাময়িক বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে পরবর্তীতে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য আন্দোলন করে। পরবর্তীতে ২০০১ সালে নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে বিএনপির সাথে মিলিত হয়ে আরো অন্য দুটি দলসহ চারদলীয় ঐক্যজোট গঠন করে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। নির্বাচনে চারদলীয় ঐক্যজোট জয় লাভ করলে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীন জামায়াতের দুজন সদস্য মন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০০৮ সাল থেকে দলটির জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে এবং নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি ৩০০টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫টি আসন লাভ করে। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে; ২০১২ সালের মধ্যে দুজন বিএনপি নেতা ও জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান সদস্যসহ ৮ জন নেতার বিরোদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৩ সালের জুলাই পর্যন্ত জামায়াতের সাবেক সদস্যসহ মোট চার জনকে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় মৃত্যুদন্ড ঘোষণা ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সাবেক প্রয়াত আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবকে ৯০ বছর কারাদন্ড প্রদান করা হয় যিনি গত নভেম্বর ২০১৪ তে পরপারে চলে যান। রায়গুলোর প্রতিবাদে জামায়াত দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংস প্রতিবাদ করে যাতে অনেক লোক নিহত হয় ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়।আমরা সংক্ষিপ্ত হলেও একনজরে জামাতের অতীত কিছু ইতিহাস দেখে নিতে পারি।
ব্রিটিশ ভারত (১৯৪১-১৯৪৭):
সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরের ইসলামীয়া পার্কে সামাজিক-রাজনৈতিক ইসলামী আন্দোলনের অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। জামায়াত ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। জামায়াত ১৯৪৬ সালের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় দল মুসলিম লীগকে সমর্থন করেনি।স্বাধীনতা ও ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর মওদুদী সাহেব ভারত থেকে পাকিস্তান চলে যান। বর্তমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মূলত পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক জাতীয় পার্টির অংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছিল।
পাকিস্তান সময়কাল (১৯৪৮-১৯৭১):
পাকিস্তান সৃাষ্টির পর জামায়াতে ইসলামী মূলত ভারত ও পাকিস্তান দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের শাখা থেকে সৃষ্টি হয়। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খান প্রণিত মুসলিম পরিবার আইন অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর কর্মকান্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মওদুদী সাহেব সহ ৬০ জন জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের ১৩ জন জামায়াত নেতা ছিলেন। প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব তাদের একজন। ঐ বছর অক্টোবরেই আবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।
জামায়াতে ইসলামী, জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক আইন ঘোষণার সময় পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে এবং ১৯৬৫ সালে সর্বদলীয় গণতান্ত্রিক জোট গঠিত হয়।
পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ প্রদত্ত ছয় দফা এবং মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঘোষিত ১১ দফার তারা তীব্র বিরোধিতা করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী পশ্চিম পাকিস্তানে ৪ টি আসন লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ডাঃ আব্দুল মালিক কে গভর্নর করে ১৭ই সেপ্টেম্বার একটি প্রাদেশিক সরকার গঠন করা হয়। সে সরকারের মন্ত্রী সভায় পরবর্তীকালে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্বাস আলী খান ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা:অভিযোগ রয়েছে-১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তীব্র বিরোধিতা করে। জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে রাজাকার, আলবদর, আলশামস্ প্রভৃতি বাহিনী গড়ে তোলেন বলে যে অভিযোগ করা হয় তারা তা আজ পর্যন্ত প্রত্যাক্ষান করছে।এ আধা বাহিনীগুলো পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে কাজ করে বলে সে সময়কার প্রত্যক্ষ মানুষদের অভিমত।পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে এই দলের সদস্যরা হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, সংখ্যালঘু নির্যাতন, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে জোরপূর্বক ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা, ১৪ই ডিসেম্বর বুধিজীবী হত্যকান্ডে জড়িত থাকা সহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যা প্রমানিত হয়েছে তা তারা প্রত্যাক্ষান করেছে তবে এসব অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকর্মীকে মৃত্যুদন্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে ।২৫ মার্চ রাতে সংঘটিত অপারেশন সার্চলাইট এর ছয় দিন পর প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে একটি ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি ভারতের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, " ভারত সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করে কার্যত পূর্ব পাকিস্তানীদের দেশপ্রেমকে চ্যালেঞ্জ করেছে।...আমি বিশ্বাস করি যে, এই অনুপ্রবেশকারীরা পূর্ব পাকিস্তানী মুসলমানদের নিকট হতে কোন প্রকার সাহায্য পাবে না। ৩০ জুন লাহোরে সাংবাদিকদের কাছে প্রয়াত গোলাম আযম সাহেব বলেন, "তাঁর দল পূর্ব পাকিস্তানে দুস্কৃতকারীদের (মুক্তিযোদ্ধা) তৎপরতা দমন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এবং এ কারণেই দুস্কৃতকারীদের হাতে বহু জামায়াত কর্মী নিহত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার উদ্দেশ্য ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। এর সদস্য ছিলেন পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরা এবং প্রয়াত গোলাম আযম সাহেব এই কমিটির সদস্য ছিলেন বলে যা বলা হয় তা জামাত অস্বীকার করে।
১৯৭১ সালের ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম এ প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের পশ্চিম পাকিস্তান সফরকালের একটি সাক্ষাৎকারের পূর্ণ বিবরণ দুই কিস্তিতে ছাপা হয়। এই সাক্ষাতকারে তিনি মুক্তিবাহিনীর সাথে তার দলের সদ্স্যদের সংঘর্ষের বিভিন্ন বিবরণ ও পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থতির ওপর মন্তব্য করেন। তিনি বলেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জামায়াতকে মনে করতো পহেলা নম্বরের দুশমন। তারা তালিকা তৈরি করেছে এবং জামায়াতের লোকদের বেছে বেছে হত্যা করছে, তাদের বাড়িঘর লুট করছে জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। এতদসত্বেও জামায়াত কর্মীরা রেজাকারে ভর্তি হয়ে দেশের প্রতিরক্ষায় বাধ্য। কেননা তারা জানে 'বাংলা দেশে' ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কোন স্থান হতে পারে না। জামায়াত কর্মীরা শহীদ হতে পারে কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কতৃক ইতোমধ্যেই এই সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ফাঁসি ও অন্যান্য দন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ অধ্যায়:
১৯৭১ সালের পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে জামায়াত ও এর আওতায় পড়ে। ১৯৭৬ সালের আগস্টে জিয়াউর রহমান সরকার সকল ধরণের রাজনৈতিক দলের রাজনীতি উন্মুক্ত করে রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ঘোষণা করেন। এ সময় ইসলামিক ডেমোক্র্যা টিক পার্টি নামক একটি দলের সাথে জামায়াতে ইসলামী যুক্ত ছিল। পরে অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব বাংলাদেশে ফিরে এলে ১৯৭৯ সালের মে মাসে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ গঠিত হয়। এর ভারপ্রাপ্ত আমীর পদ লাভ করেন আব্বাস আলি খান। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এটি ৩০০ আসনের মধ্যে ১৮ টি আসন লাভ করে।পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে গঠিত চার দলীয় ঐক্যজোটের অন্যতম শরিক হিসেবে সরকার গঠনে ভূমিকা পালন করে। এরপর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে এটি ৩০০ আসনের মধ্যে ২ টি আসন লাভ করে।
সংগঠনের মৌলিক বিশ্বাস:
এই সংগঠনের সকল কার্যাবলীর প্রেরণা হল আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে, তাকে একমাত্র উপাস্য, কল্যাণকারী, আশ্রয়দাতা, সাহায্যকারী, রক্ষাকর্তা মেনে নেয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কোরআনের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রে ইসলামের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। তবে ২০১২ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন আনে। নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে দলটি গঠনতন্ত্র থেকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রসুল প্রদর্শিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা উল্ল্যেখ করে।এই পরিবর্তনের কারন লক্ষ্য করার মত।যারা ইসলাম কায়েম করতে চায় তারা আল্লাহ প্রদত্ত ও রসুল প্রদর্শিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিলেন কেন এ প্রশ্ন করছেন অনেকে?
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য:
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর গঠনতন্ত্র অনুসারে, কোরানে বর্নিত আল্লাহর আইন অনুসারে সমগ্র রাষ্ট্রে পরিপূর্ণ ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েম করা। ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করে সমগ্র রাষ্ট্রে সম্পূর্ণরূপে কায়েম করিবার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করা এবং আল্লাহর নির্দেশিত অবশ্য পালনীয় কর্তব্যসমূহ যেমন নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত ইত্যাদি পালনে নাগরিকদের সচেতন করা। এসবের মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সর্বপ্রকার আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক হুমকি এবং বিশৃংখলা হইতে রক্ষা করিবার চেষ্টা করা। দায়িত্বশীল নাগরিক এবং চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে শোষনহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করে জনসাধারণের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করা এবং বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা।তবে ২০১২ সালের অক্টোবরে গঠনতন্ত্রে আনীত সংশোধন অনুযায়ী এই দলটি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা উল্ল্যেখ করে।
সাংগঠনিক কাঠামো:
জামায়াতে ইসলামী বাঙলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সংগঠন নিম্নলিখিত পদের সমন্বয়ে গঠিত
১-কেন্দ্রীয় রুকন (সদস্য) সম্মেলন,
২- আমীরে জামায়াত,
৩-কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা;
৪-কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ এবং
৫-কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ।
নিবন্ধন বাতিল:
কয়েকটি ইসলামী সংগঠনের ২৫ জন সদস্য জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের হাই কোর্ট একটি রুল জারি করে। জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলে আদালতের বেঞ্চ। পরবর্তিতে ১লা আগস্ট ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রুলের রায় ঘোষনা করে এতে সংগঠনের নিবন্ধন অবৈধ এবং সংগঠনটিকে নির্বাচনে অংশগ্রহনের অযোগ্য ঘোষনা করা হয়।
আমি একজন এ প্রজন্মের মানুষ হিসেবে বলতে চাই,পানি এতদূর গড়ালো কেন? যদি তারা যুদ্ধাপরাধী হবে তাহলে এই ৪৩ বছর তাদের নিয়ে কারা রাজনীতি করলো? আর জামাত যদি ইসলামেরই কাজ করবে তাহলে আওয়ামিলীগ বা বিএনপির সাথে আঁতাত করবে কেন? রাসূল সা: কি কাফের মুশরিকদের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি করার এরুপ আঁতাত করেছেন?বাংলাদেশে মুসলিম শাসক তবে আমরা একে বলতে পারি পাছেক মুসলিম শাসক যারা ভাল মন্দ মিলিয়ে কাজ করে।আমি জামাতকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে দেখতে চাই কারন গনতান্ত্রিকতাকে বিশ্বাস করে মানবরচিত সংবিধানের অধীনে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে চায়, তবে তারা অন্যান্য দলগুলো থেকে আলাদা যারা আল্লাহর মৌলিক আইনগুলো মেনে চলে।তারা ইসলামের কাজগুলো করে তবে তাদের সংগঠনের পরিচালনাবিধি অনুসারে।তাদের নতুন প্রজন্ম যদি মনে করে আমরা দীন কায়েম করবো তাহলে তাদের রাসূল সা:কে অনুসরন করতে হবে এবং বড় দলগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।মানুষকে দীন শিখানোর পরিকল্পনা নিয়ে ছড়িয়ে যেতে হবে গ্রামে গন্জে।কারন আমি গ্রামে দেখেছি আওয়ামিলীগ ও বিএনপির কর্মীরা যেমনভাবে সমাজ কল্যান মুলক কাজে অংশগ্রহন করে তাদের কর্মিরা সেভাবে করে না।আমার এলাকার যিনি আমির তাকে ঢেকে আনতে হয় মাহফিল করার জন্য অথচ তার কাজ ছিল মানুষের দোরে যাওয়া ও ইসালমের কাজগুলোকে সংগঠিত করে মানুষকে দীনদার বানানো। সংগঠনটি যদি ভবিষ্যত কল্যান চায় তাহলে তাদের দলীয় নাম পরিবর্তন করলেও করতে পারে।বিতর্কিত নেতাদের দল থেকে সরিয়ে নতুন প্রজন্মের মধ্য থেকে সৎ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে যা সময়ের দাবি।সমস্ত সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।অতীতের ভুলের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইলে তাদের মহত্ত্ই বাড়বে এবং মানুষ তাদের লুপে নিবে।আমরা ভুল করলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।সেহেতু জামাত নিশ্চই স্বাধীনতায় বিরোধিতা করে ভুল করেছিল সেজন্য দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জলই হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।আমি ইসলামের একজন প্রতিনিধি হিসেবে যখন দেখি তারা আওয়ামিলীগ বা বিএনপির সাথে আঁতাত করে রাষ্ট্র ক্ষমতার কিছু উচ্ছিষ্ট লাভের জন্য তখন আমার রক্ত ক্ষরন হয়।হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি ও এত সহিংসতা করে না যা করে আওয়ামিলীগ ও বিএনপি জোট।আর যখন জামাত তাদের সাথে থাকে তখন মানুষ জামাতকেই সহিংসতার জন্য দোষে যদিও অন্যরা করে।ইসলামের উপর এ কালিমা লেপন থেকে বিরত হয়ে জামাতকে ইসলামের পথ ধরতে হবে।তাহলেই তারা বড় একটি দলে পরিনত হবে এবং একটি সময় এ দেশে ইসলাম কায়েম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।বাংলাদেশে ইসলাম কায়েমের জন্য যে জনশক্তি ও প্রজ্গার দরকার তা অন্য কোন দলে নেই সেজন্য এ প্রজন্মকে আহ্বান জানাই তোমরা ইসলামের সরল পথে চলে আস।পাছেকদের ছেড়ে দাও ,তোমাদের নিজস্ব পথে তোমাদেরই বিজয় হবে কারন ইসলামেরই বিজয় হয়েছে যখন ইসলামের নেতৃত্ব ছিল সুগঠিত কুরআন ও সূন্নাহের পথে।
বিষয়: বিবিধ
৪৬৬৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ আপনাকে
মস্তিস্কের স্বাভাবিক বুদ্ধি কাজ না করলেই এমন অবান্তর বিষয়ের অবতারণা করতে হয়।
যতগুলো অভিযোগ করেছেন - সবগুলো মেনে নিয়েও যদি দেখি বাংলাদেশের বারোটা বাজাচ্ছে জামাতের চেয়ে আওয়ামীলীগের লোক বেশী - আমি ভোট দেব জামাতকে। বাংলাদেশের জনগণ তাই প্রমাণ।
ইনুর মত টোকাইদের নেতাদের ডুগডুগি বাজানো বাংলাদেশে কখনো কেউ পাত্তা দেয়নি।
কে রাজাকার ছিল তার চেয়ে বড় জিনিষ আমার কাছে দেশের বারোটা কারা বাজাচ্ছে।
আমরা দেখতে পাচ্ছি সোনার ছেলেরা কে কি করছেন।
নিজামী গোলাম আযমের কোনো ছেলে ব্যাংক ডাকাত ছিল?
নিজামী মুজাহিদ তাদের মন্ত্রনালয়ে দুর্নীতি করেছিল?
যারা নিজেদের সন্তানদের সততার সাথে গড়ে তুলতে পারে, নিজেদের দায়িত্বশীল পদকে দুর্ণীতিমুক্ত রাখতে পারে তারা যেকোনো লোকের মুখের শত গর্জনের চেয়েও ভালো।
মুখে বলবেন মুক্তি আনবেন আর দুর্ভিক্ষের সময় ব্যাংক ডাকাত ছেলেদের মাথায় সোনার মুকুট পরিয়ে বিয়ে করাবেন - এমন নেতৃত্বের প্রতি শুধুই ঘৃণা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন