একটি মৃত্যু স্মরন করে দেয় আর একটি মৃত্যুকে---।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২১ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৮:৫৫:৫৪ রাত
সৃষ্টির প্রথম থেকে মৃত্যু একটি অবারিত ও চিরন্তন সত্য।প্রতিদিন আমাদের সামনে চলে আসছে এরকম খবর দূর বা কাছ থেকে।আত্মীয় পরিজন হলে আমরা কিছুটা ভেংগে পড়ছি আবার দূর আত্মীয় বা প্রতিবেশী হলে স্মরন করছি।কিন্তু এই স্মরনে আমাদের সেদিকে ধাবিত হতে হবে বলে মন সায় দিচ্ছে না আমরা কিছুক্ষন পর ভুলে যাচ্ছি।হাঁ - আমরা ভুলে যাচ্ছি এই দুনিয়ার মায়ায়।কোন জিনিসের জন্ম হলে মৃত্যুও অবশ্বম্ভাবী এবং এটি সৃষ্টির একটি উদ্দেশ্য ও বটে যেন মানুষকে আল্লাহ পরীক্ষা করতে পারেন।আল্লাহ পাক সূরা মুলকের ২ আয়াতে বলছেন,'আমি মওত ও হায়াত সৃষ্টি করেছি যেন আমি পরীক্ষা করতে পারি কে তার কাজে উত্তম।'কারো সামনে মওতের খবর এসে যাওয়ার অর্থ হলো তা থেকে শিক্ষা নেয়া।আমাদের সমাজ ব্যাবস্হায় বা অন্য কোন সমাজেও কারো মৃত্যু হলে আমরা ভিন্নতর কিছু দেখতে পাই।কারো মৃত্যু হলে আমাদের মধ্যে দু/তিন দিন বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়।কেউ খবরাখবর করতে থাকেন,কেউ খোঁজ খবর নেন,কেউ বা একত্রে মিলিত হন। এগুলো ভাল কাজ মৃতের পরিবারের প্রতি।কিন্তু একজন মানুষের নিজের জন্য করনীয় কি? ইসলামে সূন্নাহ হলো - কোন ব্যাক্তির মৃত্যু হলে তিন দিন শোক থাকবে কিন্তু কোন মাতম থাকবে না তবে চোখের পানি ফেলতে পারবে।রাসূল সা: এর ছেলের মৃত্যু হলেও তাঁর মধ্যে এ দৃশ্য সাহাবাগন দেখতে পেয়েছিলেন।মৃত্যুর পর এটিকে স্মরন করা হলো বেঁচে থাকা ব্যাক্তি বা ব্যাক্তিবর্গের জন্য অবশ্যকরনীয় কাজ।প্রতিটি মানুষকে এ পথে পাড়ি জমাতে হবে।সে মানুষ তাকে মু'মিন হিসেবে কতটুকু গড়ে তুলছে?ইসলাম সম্পর্কে তার ধারনা কি? ইসলামের প্রতিদিনের বিষয়গুলো সে কতটুকু অনুসরন করে চলছে? তার পরিবারকে ইসলামের আলোকে চালিত করছে কিনা? এ সমস্ত বিষয়ে সে নিজেকে চিন্তাভাবনায় এগিয়ে নিচ্ছে কিনা তার মওতকে আলিংগন করার জন্য।মওতের প্রতি বিশ্বাস ও এক্কিন যার থাকবে সে কোন অপরাধ করতে পারেনা।তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে আমরা অপরাধ করি কেন? শয়তান অংগীকার নিয়েছে আল্লাহ থেকে যে,তাকে কেয়ামত পর্যন্ত হায়াত দিতে হবে এবং আল্লাহ তাকে অনুমতি দিলেন এবং এও অংগীকার করেছে যে সে মানুষকে তার চারদিক থেকে আঘাত করবে।সেজন্য আমরা কখনো ভাল কাজ করি আবার কখনো খারাপ কাজ করি অর্থাৎ আল্লাহর আদেশ ভুলে যাই।তবে যারা ভুলে যাওয়ার পর আবার তওবা করে ফিরে আসে তারাই আল্লাহর অতি প্রিয়।
পৃথিবীতে মুসলিম ছাড়াও জাতি গোষ্ঠীর সবাই জানে তাদের মৃত্যু হবে কিন্তু মৃত্যুর পর কি হবে তাদের জানা নেই।একজন জ্গানীর পরীক্ষা হলো মৃত্যুর পর পরকালের কি সম্বল সে দুনিয়াতে তৈরি করেছে তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা।ধরুন একজন প্রবাসীর কথা যিনি অনেক কষ্ট করে নিজের সহায় সম্বল বিক্রয় করে প্রবাসে আসলো।অনেকগুলো বছর থাকলো আরামে আয়াশে কিন্তু কোন সন্চয় করলোনা।হঠাৎ একদিন এক্ক্সিট লেগে গেল আর খালি হাতে দেশে চলে গেল।দুনিয়ার ক্ষেত্রে কেউ কেউ তাকে বেউকুপ বললেও তার খুব একটা ক্ষতি হবে না,হয়ত বা তাকে অর্থ কষ্টে কোন ভাবে চলতে হবে।আর একজন মানুষ যে বিদেশে আসার আগেই তার পরিকল্পনা ছিল এবং এসে সেভাবে তার অর্জিত টাকা কড়ি কাজে লাগিয়ে দেশে সুন্দর বসবাসের অবস্হান করে নিয়েছে।যদি হঠাৎ তাকে এক্ক্সিটে পাঠানো হয় তাহলে সে ভালভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।ঠিক এ রকমেরই একটি জীবন মানুষের যারা পৃথিবীতে আখেরাতের জীবনের জন্য সন্চয় করবে যাতে মওতের পরে সে সুবিধা পেতে পারে।এই রকম মানুষদেরই জ্গানী মানুষ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।মওতের সাথে মানুষের সব আমল(কাজ) শেষ হয়ে যায়।রাসূল সা: বলেন,'আদম সন্তান যখন মারা যায় তখন তার কাজ কর্ম শেষ হয়ে যায়।' মৃত্যুর মধ্যে মানুষের জন্য শোক রয়েছে।কিন্তু এও আমাদের স্মরন রাখতে হবে যখনি আমাদের এ রকম কোন বিপদ এসে যায় তখন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করাই হলো আমাদের জন্য করনীয় যা আমরা ভুলে যাই।সূরা বাক্কারার ১৫৬ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যখনি তোমাদের বিপদ আসবে তোমরা বলবে,'আমরা আল্লাহরই জন্য এবং আমাদের আল্লাহরই কাছে ফিরে যেতে হবে।' কিন্তু আমরা বেশীর ভাগ মানুষ এর সাথে সম্পৃক্ত নই।আমরা প্রথমে চিৎকার করে কান্না করি যা হলো বড় গুনাহ,আমরা কোন একটা সভা তৈরি করি ও মৃত ব্যাক্তির ব্যাপারে আলোচনা করি,মৃতের লাশ নিয়ে বিভিন্ন যায়গায় ঘুরাফেরা করি--- ইত্যাদি যা শরিয়তে নেই।কিন্তু মৃতের জন্য প্রথম কাজটি কি? কাজটি হলো যত দ্রুত তাকে কবরে পাঠিয়ে দেয়া।সেজন্য কোন মানুষের কাছে যখন বিপদ আসে আল্লাহকে প্রথমে স্মরন করতে হবে।আল্লাহ পাক আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তার এক আমানত হিসেবে এবং এই আমানতের একটি নির্ধারিত সময়ও নির্ধারন করেছেন এবং সেই নির্ধারিত সময় আসলে আর কারো পক্ষেই এখানে থাকা সম্ভব নয়।আপনি আর আমি ইচ্ছে করলেও মানুষটিকে ধরে রাখতে পারবো না কারন একজন মানুষের মৃত্যুর তিন ঘন্টা পরেই মৃত দেহটির পঁচন ধরে।সেজন্য মানুষকে আল্লাহর এই ওয়াদার কাছে মাথা নত করতে হবে।এই সময়টি কখন হবে তার কোন ঠিক নেই।ছোট বা বড়র কোন ভেদাভেদ নেই।নববিবাহিত কিনা তা দেখা হয়না,বাবা মা'র সন্তান ছোট কি বড় তা ভাবা হয় না,বাবা কর্মঠ কিন্তু মৃত্যু হয়ে গেলে পরিবার চলবে কিভাবে তা ভাবা হয় না।এমনি একটি জিনিস মৃত্যু যা আমাদের অতি কাছাকাছি।আল্লাহ পাক আমানত রেখেছেন তিনি তার আমানত ফিরিয়ে নিবেন এটি তার ইচ্ছা ও কতৃত্ব।এখানে কারো প্রতিবাদ করার কোন উপায় নেই।এই শিক্ষাই আমরা পেয়ে থাকি উপরের আয়াত থেকে,''আমরা আল্লাহরই জন্য এবং আমাদের আল্লাহরই কাছে ফিরে যেতে হবে।' পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে তা সব আল্লাহর এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।রাসূল সা: এজন্য বলেছেন যেন ধৈর্যধারন করে ও নেকির আশা করে।আল্লাহ পাক এর পরিবর্তে উত্তম প্রতিদান দিবেন।কোন মানুষ যদি দীনের কাজে ও নেক কাজের মধ্যে মৃত্যু বরন করে তার জন্য সুসংবাদ রয়েছে।এই মর্মে নবী সা: এর অনেক হাদিস রয়েছে।যারা দীনের কাজে মৃত্যুবরন করে তাদের ব্যাপারে ছহি মুসলিমে ফযিলতের কথা বর্ননা করেছেন,'যে ব্যাক্তি এমন রাস্তা হেঁটে আসলো ইলম শিখার জন্য,আল্লাহ পাক তার জান্নাতের রাস্তাকে সহজ করে দিবেন।এমন কোন যায়গা যেখানে সমবেত হয়ে একে অন্যকে আল্লাহর দীন শিক্ষা দেয় সেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রশান্তি নাজিল হয় এবং ফেরেস্তা তাদের ঘিরে নেয় ও রহমত বর্ষন করে।
নবী সা: বলেছেন,'তোমরা বেশী বেশী স্মরন কর পৃথিবীর স্বাধ-নষ্টকারি বিষয়কে।' সমস্ত স্বাধ নষ্টকারি বিষয় হলো আল মওত।আমাদের কত আপন ও প্রিয় স্ত্রী বা স্বামী ,সন্তান ,বাবা-মা,আত্মীয়স্বজন,বন্ধুবান্ধব।পৃথিবীতে যত নেয়ামত রয়েছে,আপনার সুন্দর বাড়ি ,গাড়ী ,ভোগ্য বস্তু সবকিছুই অসাড় হয়ে পড়ে। যখন মৃত্যু এসে যায় তখন এ সবের আর কোন মুল্য থাকে না।আমাদের কারো যখন মর্মান্তিক অসুখ হয় তখন সামনে সুন্দর যা কিছুই থাক না কেন কিছুই শান্তি দিতে পারে না।এই মৃত্যুকে স্মরন করার অর্থ হলো-নিজের আখেরাতমুখি কর্মতৎপরতা বাড়ানো।মুসলিমদের বেশীর ভাগ মানুষ এখন সঠিক ঈমান রাখেনা,নামাজ কায়েম করে না,যাকাত আদায় করে না,রোজা রাখেনা এমনকি অনেকে হজ্জ ও করে না।যার ঈমান থাকবে সে কি ফযরে শুয়ে থাকতে পারে? ৯০% ফাছেক মুসলিম জামাতে ফযরের নামাজ পড়ে না।এর প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয় ফযরের নামাজে।মসজিদের চারদিকে ৫/৬ হাজার মানুষের বাস সেখানে সকালে ফযরের নামাজে আসে খুব বেশি হলে ৫০০ মানুষ।বাকী মানুষগুলো কি মুসলিম? রাসূল সা: বলেছেন,কাফের ও মুসলিমের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ।একজন মানুষ মওতকে বিশ্বাস করলে সে ইসলামের কোন একটি বিষয়কে উপেক্ষা করতে পারবেনা।সে গীবত-চোগলখুরি,সুদ-ঘুষ,এতিমকে ঠকানো,পরের সম্পদ বক্ষন,জুলুম,ব্যাভিচার,কাউকে অসম্মান,পরের অকল্যান------ ইত্যাদি কোন কাজই করতে পারে না।বর্তমান মুসলমানদের অবস্হা কি? কোনভাবে ইসলামকে পালন করা।শরিয়ত সম্পর্কে জানা নেই অথচ ইবাদত করছে,ফিল্ম দেখা,ফেসবুকে বসে থাকা,অবাদ মেলামেশা করা,অবৈধ উপায়ে আয়ের দিকে ধাবিত হওয়া,হালাল হারাম বেচে না চলা -- ইত্যাদি তাদের অনেকের সাথি।নিজেদের আমল আখলাকের পরিবর্তনের জন্য সতর্ক নয় অথচ অন্যের ব্যাপারে সদা তৎপর।কোন বদ অভ্যাসে থাকা অবস্হায় যদি মৃত্যু আসে তাহলে কি উপায় হবে? যার যে অবস্হায় মৃত্যু হবে কেয়ামতের দিন সে সেই অবস্হায়ই উঠবে।রাসূল সা: যে বছর হজ্জ করেছিলেন,সে বছর উনার কাছেই একজন সাহাবী উটের উপর থেকে পড়ে মৃত্যু বরন করেছিল।রাসূল সা: বললেন তাকে সেভাবেই কবরস্হ কর কারন কেয়ামতের দিন সে তালবিয়া পড়তে পড়তে উঠবে। আল্লাহ কাউকে অন্যের কাজের ব্যাপারে জিজ্গেস করবেন না।নিজের কৃত আমলের জবাব তাকে দিতে হবে।মানুষের কাজ হলো আল্লাহর শরিয়তকে মেনে জেনে ওশুনে নিজের দৈনন্দিন জীবনে দীনের কাজগুলো করা।সমস্ত হারাম ও নাযায়েয কাজ আল্লাহর হকের ক্ষেত্রে ও মানুষের হকের ক্ষেত্রে সব কাজগুলো শরিয়তের বিধি বিধান মত করতে হবে।ছহি বোখারিতে একটি হাদিস রয়েছে,হযরত আবুবকর রা: ও বেলাল রা: মাত্র হিযরত করে মদিনায় আসলেন ও সে সময়ে মদিনার আবহাওয়া ভাল ছিলনা।নবী সা: তখন দোয়া করলেন মদিনার জন্য,'আল্লাহ মদিনাকে ভালবাসার অন্তর আমাদের দিয়ে দাও, এখানকার দুষিত আবহাওয়াকে যোহপা নামক স্হানে সরিয়ে দাও ও মদিনাকে তুমি ব্যাধিমুক্ত করে দাও।' অসুস্হাতায় আবু বকর রা: কতেক কবিতা পাঠ করতেন ও পেরেশান অবস্হায় মনকে সান্তনা দিতেন।আজকালকার মানুষ যখন মানুষিক অশান্তিতে থাকে তখন গুনাহের কাজে লিপ্ত হয়।যারা বিড়ি সিগারেট বা মদ পান করে তারা বলে টেনশনে ঘুম আসে না বলে এগুলো করি।আবার অনেকে নিজের স্ত্রী রেখে হোটেলে ডান্স ও ডিজি পার্টিতে যায়।
'আল্লাহ পাক নবী সা:কে বলেছেন,হে নবী আপনি মৃত্যুবরন করবেন এবং তারাও মৃত্যুবরন করবে।এই পৃথিবীতে কেউ বেঁচে থাকবে না তাহলে এই পৃথিবীকে নিয়ে মানুষের এত ব্যাস্ততা কেন? আল্লাহ পাক সূরা আল ইমরানের ১৮৫ আয়াতে বলেন,' প্রত্যেক স্বত্তাকে মৃত্যুর আস্বাদন করতে হবে আর নিশ্চই কেয়ামতের দিন তোমাদের প্রাপ্য পুরপুরি আদায় করা হবে।যাকে আগুন থেকে বহু দূরে রাখা হবে ও স্বর্গোদ্যানে প্রবিষ্ট করা হবে,নি:সন্দেহে সে সফলকাম।আর এই দুনিয়া ধোকার সম্বল ছাড়া কিছুই নয়।' আলকুরআনে মৃত্যু সম্পর্কে অসংখ্য আয়াত রয়েছে যেমন-(২:৪৮,১১৩,১২৩,২৮১ ৩:৯,৩০,১৮৫ ৪:৮৭,১৪১ ১০:২৮,২৯,৩০,৯৩ ১৪:৪৪,৪৭,৪৮,৫১ ১৬:১১১ ১৭:১৩,১৪ ১৯:৩৭,৩৮,৩৯,৪০ ১৯:৮৫,৮৬,৮৭ ,৯৪,৯৫ ২০:১০২-১০৯,১১১,১১২ ২১:৪৭,১০৪ ২২:১,২,১৭,৫৫,৫৬,৬৯ ২৩:১৬ ২৪:২৪,২৫ ২৫:২২-৩০ ২৭:৮৭-৯০ ৩০:১২-১৬,৫৬ ৩১:৩৩ ৩২:৫,২৯ ৩৬:৫১-৫৪ ৩৯:৩১,৬০,৬১,৬৭-৭৫ ৪০:১৫-১৮ ৪২:৪৭ ৪৪:৪০-৪২,৪৫:২৬ ৫০:২০-২৩,৩০-৩৫,৪১-৪৪ ৫৭:১২,১৩ ৬৮:৪২,৪৩ ৬৯:১৩-১৮ ৭০:৮-১০ ৭৫:৭-১৫ ৭৮:১৭-২০,৩৮-৪০ ৭৯:৩৪-৪১,৪২-৪৬ ৮০:৩৩-৪২ ৮২:১৭-১৯ ৮৯:২১-৩০ ৯৯:১-৮ ১০০:৯-১১ ১০১:১-১১ ইত্যাদি আয়াত সমূহ।মৃত্যুর উপর এতগুলো আয়াতের সমারোহ ও আমরা যারা প্রতিনিয়ত এই আলকুরআন পড়ছি বা অধ্যয়ন করছি,তাদের কখনো মনে হয় কি আমরা এ পৃথিবীতে থাকবো না? আমাদের জীবনের সাথে কি আমরা প্রহসন করছিনা? তাহলে কেন আমরা অন্যকে ঠকাচ্ছি? কাউকে হত্যা করছি,কারো জমি দখল করছি,কারো গীবত করছি,কারো সম্পর্কে ছোগলখুরি করছি,মালিকের খেয়ানত করছি,জেনা ব্যাভিচারে লিপ্ত হচ্ছি,শির্ক ও বিদাআত করছি,কারো উপর অত্যাচার করছি,কাউকে গালি দিচ্ছি ও অপমান করছি,স্বামী স্ত্রীর ও স্ত্রী স্বামীর অসংখ্য খেয়ানত করছে,বাবা মা'র অবাধ্য হচ্ছে সন্তান,সন্তান প্রতিপালনে ও তাদের হক আদায়ে বাবা মা'র অজ্গতা ইত্যাদি--- ইত্যাদি।
আসলে আমাদের বিশ্বাসে রয়েছে চরম দুর্বলতা।আমাদের বিশ্বাস বাহ্যিক যা আমরা মুখে স্বীকার করি কিন্তু তা হলকুমের নিছে প্রবেশ করে না।যদি আমাদের ভীতিময় অন্তর থাকতো তাহলে প্রতি মূহুর্তে আমাদের চেতনায় জাগ্রত হতো একটি মৃত্যুর বিভিষিকাময় আভাষ যা অন্তরে পৌঁছে যাবে।সূরা কা'ফের ১৯ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন এভাবে,'আর মৃত্যুকালীন মূর্ছা সত্যি সত্যি আসবে,এইটিই তো তাই যা থেকে তোমরা অব্যাহতি চাও।'যখন মালাকুল মওত এসে যায় তখন সুসজ্জিত প্রাসাদ,সুন্দরি স্ত্রী,ফুটফুটে ছেলে মেয়ে কোন কিছুর কি মনে পড়ে? না, তখন মৃত ব্যাক্তি নিজেকে নিয়েই ব্যাস্ত।যে সত্রী সন্তানের জন্য কঠোর পরিশ্রম,সুদ -ঘুষ খাওয়া,অন্যকে ঠকিয়ে নিজের পকেট ভারি করা,অন্যের ঘুম হারাম করা,হারাম হালাল বেচে না চলা ইত্যাদি কর্মের ফিরিস্তি তাকে ভীত করে তুলবে আর সময় চাইবে বেচে থাকার কিন্তু তখন আর সময় পাওয়া যাবে না।মৃত্যুর এই সময়ে তার চার পাশের সবকিছুই তিক্ত হয়ে যায়।আর প্রতিটি সৃষ্টিকে মৃত্যুর দরজা দিয়ে ঢুকতে হবে। মৃত্যু এমন একটি পানপাত্র যা প্রত্যেক ব্যাক্তিকে পান করতে হবে।এ থেকে কেউ রেহাই পাবে না আর ফিরে যেতে হবে আল্লাহর কাছে।কবর হলো আখেরাতের প্রথম দরজা এবং এই দরজার স্মরনাপন্য হতে হবে সব শ্রেনীর মানুষকে।একমাত্র মু'মিন ছাড়া এই মৃত্যুর কথা কেউ স্মরন করে না।যদিও শ্রেনী বিশেষে সবাই বলে আমরা সবাই মরে যাব কিন্তু তার জন্য কি করনীয় তা তারা করে না।আল্লাহ পাক শুধু মৃত্যুর কথা বলেই ছেড়ে দেন নি।তিনি বলেছেন তোমাদের দুনিয়ার জীবনে যা করেছ তার পুরোপুরি পাওনা পরিশোধ করে দিবেন।মৃত্যুর পর পাওনা কি? যারা দুনিয়ার জীবনে আল্লাহকে মেনে চলেছে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত রুপি চির শান্তি আর যারা মনে চলে নি তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম রুপি চির অশান্তি। যাদের আগুন থেকে বাঁচিয়ে জান্নাতে প্রবিষ্ট করা হবে সেটাই হলো তাদের বিজয়।এই বিজয় অর্জন করার জন্য দুনিয়ার পরতে পরতে হালালকে হালাল ও হারামকে হারাম বলে জানতে হবে।
প্রতিটি মানুষই দুনিয়ায় মেহনত করে।একজন ভাল মানুষ তাকে প্রতি মুহূর্তে মেহনত করতে হয়।ঈমান আনার পর ৫ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করতে হয়,রাত জাগরিত থেকে নফল নামাজ আদায় করতে হয়,দিনে রোজা রাখতে হয়,যাকাতের পুরোপুরি হিসাব করে পরিশোধ করতে হয়,হজ ফরয হলে তা তড়িঘড়ি করে আদায় করতে হয়,তাকে সার্বক্ষিনিক দা-ঈর কাজ করতে হয়,আত্মীয় - প্রতিবেশী,ফকির মিসকিনদের বিপদ আপদে দৌড়ে যেতে হয়।এই কাজ গুলো করতে গেলে তাকে প্রানান্ত পরিশ্রম করতে হয়।একজন দা-ঈর কাজ করতে গেলে তাকে জীবন ও দিয়ে দিতে হতে পারে।এই কঠিন মেহনত করতে করতে তার কাছে যখন মালাকুল মওত এসে যায় তখন ফেরেস্তারা তাকে বন্ধুত্বের ডানা দিয়ে তুলে নিয়ে যায় ও তার কবর হয়ে যায় শান্তির যায়গা।আর যদি সে ব্যাক্তির মেহনত হয়ে থাকে দুনিয়ার জন্য ও লিপ্ত থাকে আল্লাহর বিরোধী কাজ ও ফাহেসা কাজে তখন আজাবের ফেরেস্তা নেমে আসে আর তার কবর হয়ে যায় অশান্তির।সুতরাং কবর থেকে বারযখ জীবন ও তার পর পুনরুথ্থান ও হিসাব নিকাশের পর একজন মানুষের ভাগ্য নির্নীত হয় জান্নাত বা জাহান্নামে।এই দুনিয়ার জীবনই হলো আখেরাতের কর্মক্ষেত্র।একজন মু'মিনের প্রতিটি সময়ই তার জন্য মুল্যবান।মহাকালের সাথে দুনিয়ার এই সামান্য সময় অতি ক্ষুদ্র।দু'জন মানুষ অতি গরম ও আদ্রতায় কাজ করছে।একজন তার রবের আদেশ পালনে নামাজ আদায় করলো আর একজন করলো না।এ দু'জন মানুষ কি সমান? একজনের চক্ষু আছে আর একজনের নাই।এ দু'জন মানুষ কি সমান? কখনো সমান নয়।বহু মানুষ রয়েছে ৬০বা৮০ বছর পেরিয়ে গেছে মরে যেতে হবে স্মরনে আসছে না।আবার অনেকে বছরের পর বছর মক্কার আশে পাশে থাকছে হজ্জটা করছে না।আবার অনেকে বলে হজ করলেতো আর হজ ধরে রাখতে পারবো না একটু দেরি করেই করি।এ রকম গাফেল মানুষ রয়েছে যাদের মৃত্যুর কোন ভাবনা নেই।
মওত এমন একটি বিষয় যে বিষয়ের অকাট্য ফায়সালা রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে।আল্লাহ পাকের স্বত্তা ছাড়া প্রত্যেক বস্তু ধংসশীল এবং বিচার ফায়সালার মালিক একমাত্র আল্লাহ।এই মওতের সময় নির্ধারিত হয়ে আছে যা সৃষ্টির কেউ জানে না।তবে প্রতিটি মানুষই জানে যে একদিন তাকে এ পানপাত্র থেকে পান করতে হবে।তাহলে কেন এ থেকে গাফেল হয়ে যায়? কারন হলো এই দুনিয়ার প্রাচুর্য ও সৌন্দর্য যা নগদ পাওয়া যায়।আখেরাতের ব্যাপারটি শুধু বিশ্বাসের।একজন মু'মিন মনে প্রানে বিশ্বাস করে তাকে আল্লাহর সাথে মোলাকাত করতে হবে।এই ভয় ও জবাবদীহি তাকে ভাল কাজ করতে সাহায্য করে।যারা অন্যায় ও অবিচারের সাথে জড়িত তাদের পরকালের কোন ভয় নেই আর নগদ কিছু তারা দেখতে পায় না সে কারনে তার মুল্যাবান সময়গুলোকে অবহেলা করতে থাকে।আর মুসলমানদের মধ্যে এই মানুষগুলো সবচেয়ে বেশী যারা তাদের সময় জ্গান ও কমিটমেন্ট রাখে না। কমিউনিটিতে কোন সভা বা সামাজিক দাওয়াত হলে দেখা যায় এর প্রভাব।স্বল্প সংখ্যক মানুষ আসে সময় মত আর অন্যরা জাগরিত হয় রাত আর ঐ সমস্ত মানুষের ৯৯ ভাগ মানুষ ফযরের নামাজে অংশ গ্রহন করে না।ভাল মানুষদের উচিত এ সব দাওয়াত বর্জন করা আর সেখানে গেলে এই অসংলগ্ন কাজের ব্যাপারে কথাগুলো পৌঁছে দিতে হবে।আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কাজ হয় না সেভাবে আল্লাহ কোন খারাপ বা কুফুরি কাজের আদেশ করেন না।আমাদের দেশের মানুষের আক্কিদায় এ ব্যাপারে ভ্রান্তি রয়েছে। তারা বলে আল্লাহর হুকুমে কোন গাছের পাতাও নড়ে না।এ সমস্ত কথা আক্কিদা বিরোধী কথা।সুতরাং আমাদের সঠিক আক্কিদা থাকতে হবে যে আল্লাহ ভাল কাজের আদেশ করেন আর খারাপ কাজের আদেশ করে না।কিন্তু আমরা যখন আমাদের বিবেকের দ্বারা তাড়িত হই তখন আল্লাহ আমাদের সেদিকে যাওয়ার ক্ষমতা দেন।এই দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ আমাদের স্বাধীন করে দিয়েছেন ও আখেরাতে আমাদের বিচারের ব্যাবস্হা রেখেছেন। সেজন্য আমরা ভাল করলেও তিনি ইচ্ছা করবেন আবার খারাপ করলেও তিনি ইচ্ছা করবেন। কোন ব্যাক্তির মওত হতে পারে না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া এবং আল্লাহ লিখে রেখেছেন ও সময় নির্ধারন করেছেন।এই জন্য মানুষের জন্য তার সময়ের হিসাবটি অতি জরুরি।কারন কোন সময় মালাকুল মওত এসে যায় তার কোন নিশ্চয়তা নেই।মানুষের যেমন সময় নির্ধারিত হয়েছে তেমনি প্রত্যেক জাতিরও আল্লাহ সময় নির্ধারন করেছেন।পৃথিবীতে আদ, সামুদ,তুব্বার অধিবাসি,পারস্য,রোমান,মোগল সম্প্রদায় এরকম বহু জাতি এসেছিল তাদেরও নির্দিষ্ট একটি সময় ছিল এবং তারাও পৃথিবী থেকে বিলীন হয়ে গিয়েছে।সোভিয়েত ইউনিয়নে কমিউনিষ্টরা ৭০ বছরের মধ্যে ধংস হয়েছে।কোন জালেমও সমাজে চিরদিন জালেম থাকবে না তার একটি নির্দিষ্ট সময় আসবে ধংসের।কখন কার মওত হবে,কোন জাতি কবে ধংস হবে তার জ্গান একমাত্র আল্লাহর কাছে।গায়েবের চাবি একমাত্র আল্লাহর হাতে,কোন ব্যাক্তি জানে না কোথায় বা কোন সময়ে তার মওত হবে।মওত যখন কারো কাছে ঘনিয়ে আসে তখন বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন অবস্হার সৃষ্টি হয়।একে দু'ভাগে ভাগ করা যায়।ঈমানদার ও সৎকর্মশীল যারা আশা করা যায় তাদের ভাল মৃত্যু হবে।আর যারা কাফের,মুশরিক,মোনাপেক ,পাছেক,কবরপূজারি,কাবিরাগুনাহকারি,ফরয ওয়াজিব তরককারি তাদের গজবের দৃশ্য তারা অবলোকন করবে।এ সম্পর্কে নবী সা: এর ছহি হাদিসে অনেক কথা রয়েছে।বোখারি মুসলিমের একটি হাদিসে মা আয়শা রা: বর্ননা করেন, নবী সা: বলেন,যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎকে ভালবাসে, আল্লাহ ও তার সাথে সাক্ষাতের কামনা করেন আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎকে অপছন্দ করে আল্লাহ ও তার সাথে সাক্ষাৎকে ঘৃনা করেন।' আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা নেককার বান্দাহ হবে তাদের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলে নেককার ফেরেস্তাদের আগমন হবে এবং তারা তাদের অভয় দান করবে যে তোমাদের কোন ভয় নেই বরং তোমাদের জন্য সুসংবাদ।এই সুসংবাদ যখন তারা শুনতে পায় তখন তাদের মৃত্যুর আগ্রহ বেড়ে যায়।এই সময় আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আগ্রহ বেড়ে যায় একজন মু'মিন বান্দাহর।পক্ষান্তরে একজন পাপি যে তওবা করেনি এবং তার কাছে মওতের ফেরেস্তা নেমে আসে তখন তাকে আজাবের সুসংবাদ দেয়া হয় ও বলে হে খবিস আত্মা বেরিয়ে আস।এই রকম শাসানিমুলক কথা যখন শুনবে তখন পালাতে শুরু করবে।এই মূহুর্ত সম্পর্কে নবী সা: বলছেন,বান্দাহর তওবা অতক্ষন পর্যন্ত কবুল হবে যতক্ষন সে মালাকুল মওতকে না দেখে থাকবে।যখনি মালাকুল মওতকে দেখে নিবে তার তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।আল্লাহও চান না এই সময় খবিস বান্দাহর তওবা কবুল করেন।সে কারনে আমরা দেখতে পাই,ফেরাউনের যখন শেষ সময় ঘনিয়ে আসলো আর সে ঈমান আনার চেষ্টা করলো তখন জিবরিল আমিন আল্লাহর আদেশে তার মুখে কাদা মাটি পুরে দিয়েছিল।একজন মানুষ জীবনের ৬০/৭০ বছর সময় পেল কিন্তু তওবা করার তার সময় হলো না কি করে সম্ভব এই নাফরমানের শেষ সময়ে ঈমান নিয়ে মরবে।প্রত্যকে মুমুর্ষু ব্যাক্তিই দুনিয়ায় ফিরে যাওয়ার আর্জি করবে কিন্তু ফিরিয়ে দেয়া হবে না। ঈমানের প্রথম শর্তই হলো গায়েবকে বিশ্বাস করা।অনেক মানুষ আছে মওতের আকাংখ্যা করে এ যায়েয নয়।এই রোগটি পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের বেশী। সামান্য কিছু এদিক সেদিক হলেই বলে আমার মরন আসে না কেন? রাসূল সা: একদিন তাঁর চাচা আব্বাছ রা;কে অসুস্থতার সময় দেখতে গেলেন।তখন আব্বাছ রা: মৃত্যু কামনা করছিলেন।রাসূল সা: বললেন,হে চাচা আপনি মৃত্যু কামনা করবেন না।আপনি যদি হায়াত পেয়ে যান তাহলে আপনি ভাল কাজ করবেন আর তা আপনার জন্য কল্যান বয়ে আনবে। সেজন্য যখন কেউ অসুস্হ হয় বেশী বেশী আল্লাহ কে স্মরন করা ও আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করাই সমীচিন।রাসূল সা: বলেছেন,তোমাদের কেউ যেন মওতের আকাংখ্যা না করে যে , আল্লাহ যদি মরে যেতাম।' এ আকাংখ্যাটি মানুষের জাগে রোগব্যাধির ক্ষেত্রে,বাব মা'র সাথে মনোমালিন্য হলে,স্বামি স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ হলে বা দায় দেনা থাকলে।আবার কেউ কেউ আছে বুড়ো কেউ বিছানাগত থাকলে বলে আল্লাহ তাকে নিয়ে যায় না কেন।এগুলো নি:সন্দেহে মুর্খ লোকদের কাজ।তবে আল্লাহর কাছে এই দোয়া করা যাবে,"আল্লাহ তুমি আমাকে জীবিত রাখ যতদিন আমার বেঁচে থাকা কল্যানকর হয়,আর আমাকে মৃত্যু দান কর যখন আমার জন্য মরে যাওয়াই ভাল হবে।' কাফের,মুশরিক ,মোনাপেক ও কবিরা গুনাহ কারিদের ব্যাপারে আল্লাহ সূরা সেজদায় বলেন,হে নবী! আপনি মানুষকে জানিয়ে দিন তোমাদের মরনের ফেরেস্তা মৃত্যু দিয়ে থাকেন।' ফেরেস্তাদের আল্লাহ যেভাবে আদেশ করেন সেভাবেই তারা কাজ করে থাকেন।সূরা আনয়ামের ৯৩ আয়াতে আর একটি মৃত্যুর দৃশ্যের কথা বর্ননা করেছেন,'আর তুমি যদি দেখতে পেতে যখন অন্যায়কারিরা মৃত্যু যন্ত্রনায় থাকবে আর ফেরেস্তারা তাদের হাত বাড়াবে," বের কর তোমাদের আত্মা" আর তোমাদের দেয়া হবে লান্চনা দায়ক শাস্তি যেহেতু তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে বলে চলছিলে সীমা ছাড়িয়ে আর তোমরা তার আয়াত সমূহে অহংকার পোষন করতে।" আজকে মুসলিম সমাজে এমন মানুষ রয়েছে যারা আল্লাহর আয়াত সমুহকে নিজেদের মত ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করে নিজেদের ফায়দা হাসিল করছে।বিদাআতিরা বলে নবী সা: নুরের তৈরি আর আল্লাহ বলেন, হে নবী বলুন "আমি তোমাদের মতই মানুষ তবে পার্থক্য হলো আমার নিকট ওহি আসে।" আরো বলে নবী সা: জীবিত।এই সমস্ত আক্কিদা বিরোধীদের জন্য রেয়েছে আযাব।
কবর আযাব সম্পর্কে বারা ইবনে আযেব রা: একটি হাদিস বর্ননা করেন।রাসূল সা: বলেন,'মু'মিন বান্দাহ যখন আখেরাত মুখি হয় ও পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়,আকাশ থেকে অসংখ্য ফেরেস্তা নেমে আসে অত্যন্ত ফর্সা ও সাদা চেহারা নিয়ে মনে হয় যে সূর্যের মত।আর তারা সাথে করে জান্নাত থেকে রেশমের কাফন ও আতর সুগন্ধি নিয়ে আসে।তার পর মালাকুল মওত আসে ও তার মাথার কাছে বসে যায় ও বলে হে পবিত্র আত্মা আল্লাহর মাগফেরাতের দিকে বেরিয়ে আস।আর আত্মা সহজে বেরিয়ে আসে ও মালাকুল মওত সাথে সাথে অন্য ফেরেস্তাদের হাতে দিয়ে দেন ও তারা জান্নাতের কাপনে নিয়ে নেয় ও তা হলে সুগন্ধি বের হতে থাকে।রহমতের ফেরেস্তারা দ্রুত এই আত্মা নিয়ে আল্লাহর কাছে ছুটে যায়।প্রথম আকাশে যখন নিয়ে যায় তখন ফেরেস্তারা বলে এত সুগন্ধি কেন? তোমরা কি জান না অমুকের ছেলে আমুক তার ইন্তেকাল হয়েছে।স্বাগতম জানিয়ে আকাশের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং ইল্লিনে নেয়া হয়। আর কাফের বান্দাহ যখন পৃথিবি থেকে বিদায় নেয় অসংখ্য ফেরেস্তা আসে ও তাদের চেহারা বিকট আর তারা হাতে করে চট নিয়ে আসে।মালাকুল মওত তার মাথার কাছে এসে বসে ও বলে হে খবিস আত্মা আল্লাহর গজব ও অসন্তুষ্টির দিকে বেরিয়ে আস।আর আত্মা এদিক ওদিক ছুটা ছুটি করতে থাকে।মালাকুল মওত বের করে আযাবের ফেরেস্তাদের দিয়ে দেয়।তারা আকাশের দিকে নিয়ে যায় ও গন্ধ ছড়াতে থাকে।আকাশের ফেরেস্তা বলে এর জন্য দরজা খোলা হবে না।ফেরেস্তারা আকাশের দরজায় বিরক্ত হয়ে আছাড় দিয়ে ফেলে দেয় ও আত্মা সিজ্জিনে চলে যায়।এর সপক্ষে আল কুরআনে বলা হয়েছে তাদের জন্য দরজা খোলা হবে না ও তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।সূচের ছিদ্র দিয়ে যেমন উটের প্রবেশ কঠিন তেমনি পাপিদের জান্নাতে প্রবেশ করা কঠিন।জাহান্নামে যাওয়ার মুল কারন হলো নামাজ কায়েম না করা আর অধিকাংশ মুসলমান এখন বেনামাজি।নবী সা: বলেছেন,রোজ কেয়ামতে বেনামাজি উঠবে কারুন ,ফেরাউন,হামানের সাথে।'
আমরা যারা মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়েছি তাদের জন্য এই দীন কায়েম করা সহজ।যার যতটুকু হালাল নেয়ামত রয়েছে তা দিয়ে জীবনকে আখেরাতের দিকে নিয়ে যাওয়া কর্তব্য।প্রতিটি সময়ে হালাল হারাম বেচে চলা।দুনিয়ার ব্যাপারে একজন পথিকের অবস্হান নেয়া।যততুকু হালাল রোজগার দরকার ও হালালভাবে অর্জিত যা আছে তা দিয়ে নিজেকে চালানো।বেশি বেশি পাওয়ার জন্য দুনিয়ার দিকে ঢুবে থাকা একটি অপরাধের কাজ।সততার জীবন অবলম্বন করে যদি আল্লাহ তাওফিক দেন তাহলে মানবজাতি উপকৃত হতে পারে এবং সেটা দোষনীয় নয়।তবে অধিকাংশ অভিজাত ও ধনবান ব্যাক্তিগনের জন্য আখেরাত যে কঠিন এর প্রমান রয়েছে আলকুরআন ও হাদিসে।কারন একজন গরীব যদি সঠিক ঈমান নিয়ে নামাজ ও রোজা কায়েম করে তাহলে তার জন্য জান্নাত পাওয়া সহজ।টাকা কড়ি না থাকায় হজ ও যাকাতের কোন হিসেব নিকেশ তাদের কষতে হবে না বরং পুরো বিষয়টিতে তারা ১০০% কল্যান দ্বারা লাভবান হবে।আর একজন ধনীলোক তার জীবনের সময়গুলো ব্যায় হয় বিভিন্ন ধান্দাবাজিতে।তার আয় ব্যায়ের মধ্যে থাকে অসামন্জতা।তাকে হিসেব দিতে হবে অনেক।সেজন্য একজন গরীব ধনী ব্যাক্তির ৫০০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে।আল্লাহ আমাদের তথা মুসলিম জাতিকে সঠিক জ্গান আহরন করার তাওফিক দান করুন।আমাদের আখেরাতের কথা স্মরন করার তাওফিক দিন।শির্ক , বিদাআত ও সমস্ত অকল্যান থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন।মুসলিমদের প্রত্যেক কে প্রকৃত সূন্নাহর অনুসরনে আমল করার তাওফিক দিন।ইসলামের প্রচার প্রসার করার জন্য যে ধরনের যোগ্যতা দরকার তা বাড়িয়ে দিন ও সৎ আমল করার তাওফিক দিন।
বিষয়: বিবিধ
৩৩১০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন