মুহাম্মাদ সা: আমার তথা বিশ্ব মুসলিমের প্রধান প্রিয় ব্যক্তিত্ব।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৭ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৩:১০:২০ দুপুর
মুসলিম নামটি ধারন করা খুবই সহজ একটি কাজ যেমনটি অন্য ধর্মের ক্ষেত্রেও।কেউ বংশ পরম্পরায় পেয়ে গেছেন।কেউ তার নিজের ধর্ম বিতাড়িত করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছেন।পিতৃধর্মে অবস্হান করা যেমন সহজ,অন্য ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হওয়া কিন্তু খুব একটা সহজ কাজ নয়।ধর্ম পালন একটি বিশ্বাসের ব্যাপার আর তার সাথে সন্তুষ্টি।কোন কাজ করে যদি সন্তুষ্টি না আসে তাহলে বুঝতে হবে সেখানে কোন গন্ডগোল আছে।ইসলামে অন্যান্য ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়েছে বা হচ্ছে এমন অনেক কিন্তু ইসলাম থেকে খারিজ হয়েছে তা শুনা যায় কম।ধর্ম পালন করতে হলে তার একটি ভিত্তি যেমন থাকবে তেমনি থাকবে হবে এর ভবিষ্যত ফলাফল।ধর্ম পালন একটি ঐশ্বরিক ব্যাপার যা প্রতিটি মানুষের ফিৎরাত।সূরা আলইমরানের ১৯ আয়াতে বলা হয়েছে,' নিশ্চই আল্লাহর কাছে ধর্ম হলো ইসলাম'।একজন মুসলিম তার ধর্ম পেয়েছে আল্লাহর কাছ থেকে।সে তার আনুগত্য করেছে।'আলকুরআন' নামক এই ধর্ম গ্রন্হ তাকে দেয়া হয়েছে তার জীবন পরিচালনা করার জন্য।আবার একজন শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষক দেয়া হয়েছে যাকে তারা প্রতিটি কাজে অনুসরন করে চলে।তারা জানে এই পৃথিবীতে তাদের করনীয় কি বা বর্জনীয় কি।কোন মানুষ যদি তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে না জানে তাহলে সে কাজ করবে কেন? আর অন্ধভাবে কাজ করে সে কি ফলই বা পাবে? কোন কৃষক যদি একটি জমিতে চাষ করার আগেই জানে সে তার ফসল তুলতে পারবেনা তাহলে সে কৃষক কখনো সে জমিতে চাষবাস করবেনা।কিন্তু একজন মুসলিম জানে তার পার্থিব একটি নির্দিষ্ট সময় আছে ও তার পর সে মরে যাবে।তাকে কবরস্হ করা হবে ও সেখানে বারযখ(কবরে আখেরাতের জীবনের একটি অংশ) জীবন কাটাতে হবে।তার ক্কেয়ামতের হিসাব নিকেশ হবে এবং বিচারের পর তাকে চির জান্নাত(সুখের আবাস) বা চির জাহান্নাম(দু:খ ও কষ্টের জীবন) দেয়া হবে।তাহলে একজন মুসলিম, মুসলিম হয় বুঝে শুনে।আল্লাহ পাক সূরা আলাক্কের ১ আয়াতে বলেন,‘পড়ো তোমার সেই প্রভুর নামে, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন’। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ও আলোকিত এই বাণী শুধু মুহাম্মদ সা:-কে বা মুসলিমদের উদ্দেশ করে বলা হয়নি, বলা হয়েছে পৃথিবীর সব মানুষকে লক্ষ্য করে। কিন্তু এই চিরসুন্দর ও সত্যবাণীটি শিক্ষাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মনোগ্রাম থেকে কৌশলে সরিয়ে ফেলা হলো কেন এবং কারা সরিয়ে ফেললো?।এই কথাটি সমাজ বিবর্তনে কোন নেগেটিভ রোল রাখছে কি? অথচ আল্লাহ ঘোষণা করেছেন ‘তোমরা আমার কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে?(সূরা আর্ রাহমান)। আর যদি অস্বীকারই করবে তাহলে আমার পৃথিবী ছেড়ে অন্যত্র চলে যাও। যে দিকেই যাও সে দিকেই আল্লাহর জমিন বিস্তৃত।’ এই অকাট্য সত্য বক্তব্যগুলো যার মাধ্যমে মানুষদের শুনানো হয়েছে, তিনিই হলেন জগতের শ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মাদ সা:। এই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষটি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের কাছে আজ তেমন একটা গুরুত্বের দাবি রাখে না।সুদূর অতীত থেকে দেখে আসছি ইসলামের কথা বা ধর্মীয় কথাগুলো পাঠ্য পুস্তক থেকে উবে যাচ্ছে।যে মানুষের নৈতিক মান বৃদ্ধির জন্য ধর্ম ও ধর্মীয় শিক্ষা,সে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ইহলৌকিক শিক্ষার প্রচার ও প্রসার কারনে সামজে আজ অবক্ষয় নেমে এসেছে।শিক্ষাব্যবস্থার পরিবেশ ও বাস্তবতা সেই সত্যটিই আজ প্রমাণ করে চলেছে।চোর যদি জানে চুরি করলে তার হাত কাটা যাবে তাহলে নিশ্চই চোরের সংখ্যা বাড়বে না।তবে আইন থাকলেই হবে না সেখানে আইনের শাসন থাকতে হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান কারিকুলাম অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় বাংলা দ্বিতীয় পত্রে প্রবন্ধ রচনার জন্য ২০ নম্বরের একটি প্রশ্ন রাখা হয়। যে প্রশ্নে মাঝে মধ্যেই বলা হয়, তোমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব বিষয়ে একটি নিবন্ধ রচনা করো। এই প্রশ্নের উত্তর করতে গিয়ে বেশির ভাগ মুসলিম শিক্ষার্থী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কিংবা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অথবা নিজেদের বাবা-মা কিংবা অন্য কোনো কবি-সাহিত্যিক অথবা আরো অন্য কোনো গুণী ব্যক্তিত্বকে নিয়ে নিবন্ধ রচনা করে থাকেন। এটাকে দোষের কিছু বলা যায় না বা এটা করা সাম্প্রদায়িকতাও নয়। তবে হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর চরিত্রকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবলোকন করাও কোনো সাম্প্রদায়িকতা নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলা বিষয়ের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী যতটা গুরুত্বসহকারে অন্যসব ব্যক্তিত্বকে স্টাডি করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করে থাকেন, সেসব ব্যক্তিত্বের তুলনায় হজরত মুহাম্মদ সা:-কে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে যেখানে ৯০% মুসলমান বাস করে এবং তাদের ধর্ম ইসলাম,সেখানে সে ধর্মের অবতার সম্পর্কে এই নিচু মনোভাব জাতির মননশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কি? একটি ছাত্রকে জিজ্গেস করেছিলাম তোমার প্রিয় ব্যাক্তিত্ব কে? সে উত্তর দিল হুমায়ুন আহমেদ এবং সে এও জানালো তার পরীক্ষার খাতায় এটিই লিখে।আমি জিজ্গেস করলাম,তুমি মুহাম্মদ সা: এর নাম শুনেছ? সে উত্তর দিল শুনেছি।তাহলে তুমি তাঁকে প্রিয় ব্যাক্তিত্য হিসেবে মেনে নিলেনা কেন? সে উত্তর দিল আমি তাঁর সম্পর্কে আমার তেমন পড়াশুনা নেই আর আমি পরীক্ষার খাতায় লিখলে আমাকে নাম্বারই দিবে না কারন শিক্ষরা এ নামটি সম্পর্কে তাদের ফোকাসই করে না।এ যখন মুসলিম জাতির অবস্হা হয় তাহলে এরা কোন মুসলিম জাতি? যারা তাদের ধর্ম সম্পর্কে উদাসীন অথচ এ ধর্মের ভীতর বসবাস করছে।ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন যায়গায় প্রতিনিয়ত মনিষীদের সম্পর্কে প্রায়ই সেমিনার লক্ষ্য করা যায়।আশির দশকে আমি জাতীয় যাদুঘরে মিনি অডিটরিয়ামে নিয়মিত 'স্মরনীয় বরনীয়' নামে যে অনুষ্ঠানটি হতো এবং তখনকার ডিজি এনামুল হক তিনি অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন।তখনো দেখেছি দেশের প্রয়াত কবি, সাহিত্যিক,শিল্পীদের নিয়ে বাৎসরিক এই প্রোগ্রাম হতো।কিন্তু মানবজাতির এই শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তিত্বকে স্হান দেয়া হতো না অথচ সেখানে ৯৫% শ্রোতা ছিল মুসলমান।আমি একদিন বিরতীতে প্রয়াত এম আর আখতার মুকুলকে প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু তিনি পাশ কাটিয়ে গেলেন।আমাদের বুদ্ধিজীবিরা কেন এই ব্যাক্তিত্বকে এড়িয়ে যান? এর প্রধান কারন হলো আমাদের সমাজে ইসলাম ও ইসলামের কাজগুলোকে যে ভাবে তুলে ধরা দরকার তা হয়ে উঠে নি।ইসলাম বলতে মানুষ বুঝে জংগি ও সহিংসতা।আর একটি কারন হলো ইসলামকে দৈনিক কর্মকান্ডে নিয়ে আসলে প্রগতিশীল হওয়া যাবে না।যারা ইসলামিস্ট হতে চায় না তারা ভাল করেই জানে ইসালমের আইন যদি তাদের কাছে আসে বা ইসলামের অনুশাসন তারা মেনে চালে তাহলে তাদের সব রকম অনৈতিকতা ও ভন্ডামি তারা করতে পারবে না।সুতরাং হে ইসলাম ধর্ম! তুমি মসজিদে থাক,তোমার ঘরে তুমি নামাজ পড়,তুমি সমাজে বের হবে না,সমাজ ও রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিবে না।একমাত্র ইসলামই সমাজকে সুশৃংখল সমাজে রুপান্তরিত করতে সক্ষম।কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য হলো ইসলামের সেই চরিত্র গুলো আমরা আজো তৈরি করতে পারি নি।ইসলামের নামে সমাজে যা চলছে তার ৯৫ ভাগই হলো শির্ক ও বিদাআত রুপি ইসলাম।মানুষ জেনে ও বুঝে ইসলাম পালন করছে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ের খাতা মূল্যায়ন করতে গিয়ে এই সত্যটি অনায়াসে ধরা পড়ে যায় বিচক্ষণতার সাথে। দেখা যায়, খুব সামান্যসংখ্যক ছাত্রছাত্রী হজরত মুহাম্মাদ সা:-কে ঘিরে নিবন্ধ রচনা করেছেন। কেন হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর মতো বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ একজন ব্যক্তিত্ব স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীদের কাছে প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠতে পারেননি, কেনই বা প্রিয় ব্যক্তিত্ব বলতে মুহাম্মাদ সা: ব্যতীত অন্য কারো নাম শিক্ষার্থীদের মনের কোনায় ভেসে ওঠে, তার পেছনেও হয়তো একটি কারণ অনুসন্ধান করা যেতে পারে। কারণটি হলো, আমরা যদি কয়েক দশক আগে থেকে দেখি, তাহলে দেখব, এ দেশের স্কুল-কলেজ-মাদরাসায় বাংলা বিষয়ের শিক্ষকেরা ছিলেন অপেক্ষাকৃত সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী ব্যক্তি; যাদেরকে একসময় বাংলা বিষয়ে পণ্ডিতও বলা হতো। প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সময় দেখা যায়, প্রিয় ব্যক্তিত্ব না বলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক হয়তো বলেন, তোমার প্রিয় কবি বা সাহিত্যিক বিষয়ে নিবন্ধ রচনা করো। তোমার প্রিয় কবি বা সাহিত্যিক যদি বলা হয় তাহলে মুহাম্মদ সা: এমনিতেই বাদ পড়ে যান, কারণ মুহাম্মদ সা: কোনো কবি বা সাহিত্যিক নন। এতে ক্লাসে মুহাম্মাদ সা:-কে পড়ানো হলেও পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার আশায় শিক্ষার্থীরা কবি-সাহিত্যিকদেরকেই অত্যধিক গুরুত্বসহকারে পড়ে থাকেন। অথচ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবারই আইকন হওয়া উচিত ছিল হজরত মুহাম্মাদ সা:। হজরত মুহাম্মাদ সা:-কে একমাত্র আদর্শ ব্যক্তিত্ব ধরে নিলে আদর্শ খোঁজার জন্য আর অন্য কোথাও দৌড়াতে হয় না বলেই পৃথিবীর বহু প্রখ্যাত প্রথিতযশা ব্যক্তি তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।মুহাম্মাদ সা: যে অনুকরণীয় আইকন, সে সম্পর্কে আল্লাহ পাক সূরা আহজাবের ২১ আয়াতে ঘোষণা করেছেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের জীবনে উৎকৃষ্টতম আদর্শ রয়েছে।’ আল্লাহ পাক একই সূরার ৪৫-৪৬ আয়াতে আরো বলেন ‘হে নবী! আমরা আপনাকে সাক্ষ্য ও সুসংবাদদাতা, ভীতিপ্রদর্শনকারী এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর দিকে আহ্বানকারী রূপে এবং একটি উজ্জ্বল আলোকশিখা হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ এই মহামানবের চারিত্রিক সার্টিফিকেট প্রদান করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা কালাম এর ৪ আয়াতে, ‘আর নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর চরিত্রের এমন কোনো দিক নেই যে বৈশিষ্ট্যগুলোকে খাটো করে দেখা যেতে পারে। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে, সেনাপতি হিসেবে, বিচারক হিসেবে, একজন আদর্শ স্বামী হিসেবে, আমানতদার হিসেবে, পথপ্রদর্শক হিসেবে, মানবাধিকারের প্রবর্তক হিসেবে, দয়াদ্র প্রতিবেশী হিসেবে, অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ হিসেবে হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর আদর্শ শ্রেষ্ঠ আদর্শ। অর্থনৈতিক বৈষম্যহীন সমাজ কাঠামোতে রাসূলের আদর্শ ছিল অনন্য। শ্রমিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। দাসপ্রথাকে নিরুৎসাহিত করেছেন। আধুনিক সমাজে নারীর মর্যাদার কথা বলতে গিয়ে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কথা বলা হয়। আমরা ভুলে যাই, পনেরো শ’ বছর আগেই হজরত মুহাম্মাদ সা: নারীদেরকে যথাযথ মর্যাদা দিতে গিয়ে মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। আজো নারীর সম্মানের বিষয়ে মুহাম্মাদ সা:-এর চরিত্রের আদর্শে বিশ্বাসী মানুষদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা। মুহাম্মদ সা:-এর আদর্শে বিশ্বাসী ছেলেমেয়েদের পিতামাতাকে বৃদ্ধ বয়সে অসহায়ত্ব নিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয় না। যে চরিত্রের অনুকূলে এলে এতিমকে তার সম্পদ হারানোর ভয়ে শঙ্কিত থাকতে হয় না। এমন এক ব্যক্তিত্বকে আমরা প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্কুল-কলেজে পড়াতে পারি না। পারি না বলেই হয়তো সমাজের নৈতিক অধঃপতন একটু বেশিই চোখে পড়ে।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আজকের যেকোনো স্কুল-কলেজে পড়া ছেলে-মেয়েকে যদি প্রশ্ন করা হয়, তোমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব কে? উত্তর দিতে গিয়ে সে হয়তো বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম বলবে কিংবা বাংলাদেশের কোনো কণ্ঠশিল্পীর নাম বলবে। অথবা বলবে, হুমায়ূন আহমেদের হিমু চরিত্র তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। হতাশার কথা হচ্ছে, যাকে আইকন ভাবার কথা, তাকে বাদ দিয়ে আমরা আইকন হিসেবে বেছে নিয়েছি যাদের চরিত্র বলতে কিছু নেই তাদেরকে। মুসলিম জাতির দুর্ভাগ্য এখানেই। একটি মুসলিম-অধ্যুষিত দেশের শিক্ষা কমিশন হজরত মুহাম্মাদ সা:-কে মূল্যায়ন করতে উদাসীন হলেও একজন মার্কিন জোতির্বিজ্ঞানী তার মূল্যায়ন যথার্থই করেছেন।এই মার্কিন জোতির্বিজ্ঞানী মাইকেল এইচ হার্ট তার ‘দি হান্ড্রেড এ র্যা্ঙ্কিং অব দি মোস্ট ইনফুয়েনশিয়াল পারসন ইন হিস্টোরি’ গ্রন্থে হজরত মুহাম্মাদ সা:-কে এ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে তার ওই গ্রন্থে সর্বপ্রথমে মুহাম্মাদ সা:-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী সংযোজন করেছেন। তিনি লিখেছেন, মুহাম্মাদ সা: তাঁর ২৩ বছরের আন্দোলনে আরবের একটি অসভ্য ও বর্বর জাতিকে একটি সভ্য ও সুশৃঙ্খল জাতিতে পরিণত করেছিলেন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে চিরাচরিত গোত্রীয় পার্থক্য তুলে দিয়ে তিনি ঘোষণা করেছেন, অনারবের ওপর আরবের এবং আরবের ওপর অনারবের; কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গের এবং শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণাঙ্গের কোনো পার্থক্য নেই। তিনি সুদকে নিষিদ্ধ করে জাকাত-ভিত্তিক অর্থনীতির মাধ্যমে এমন একটি অর্থব্যবস্থা প্রবর্তন করেছেন, যেখানে রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক তাদের আর্থিক নিরাপত্তা লাভ করেছে। মুহাম্মাদ সা: ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বিখ্যাত ঐতিহাসিক খ্রিষ্টান লেখক উইলিয়াম মুর লিখেন, ‘মুহাম্মাদ সা: যে যুগে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন, তাঁকে শুধু সেই যুগেরই একজন মনীষী বলা হবে না, বরং তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মনীষী।’ শ্রেষ্ঠ মানুষের মডেল মুহাম্মাদ সা: এবং শ্রেষ্ঠ মুসলিমেরও মডেল হজরত মুহাম্মাদ সা:। এই অকৃত্রিম মানুষটিই যত দিন না হয়ে উঠবে পৃথিবীর সব মানুষের জীবন পরিচালনার আদর্শ আইকন, প্রিয় ব্যক্তিত্ব; তত দিন পৃথিবীতে শান্তির বাতাস আশা করা এবং আমাদের নৈতিক উন্নয়ন মজবুত করা কঠিন হবে বলেই অনেকে বিশ্বাস করেন।মুসলিম সম্প্রদায়কে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলছি, যারা মুসলিম হয়েছেন তাদের দৈনন্দিন জীবনে আলকুরআনকে কতটুকি বুঝেছেন বা অনুসরন করছেন? আপানার অনুসরনীয় চরিত্রকে কতটুকু আপনার পথচলায় সন্নিবেশিত করতে পেরেছেন? তার নিরিখেই আপনি একজন মুসলমান।শুধু নামটি ব্যাবহার করলে আপনি পৃথিবীতে ভাল থাকবেন বা বেঁচে যাবেন তা ঠিক কিন্তু আপনি কি ভেবে দেখেছেন আপনার সামনে একটি অনন্ত জীবন আছে যেখানে আপনার এই পৃথিবী আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না।হাঁ - আপনি ঈমানদার হয়ে থাকেন ও সৎ কাজ করে থাকেন নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর করুনা ও মুক্তির আশা করতে পারেন।
বিষয়: বিবিধ
২৫৩৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন