লুংগি পরা নেতা,ক্ষমতার আগুন ও গুলশানে বালির ট্রাক।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৮ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৫:৩১:২৩ বিকাল

কত রংগ দেখাইলারে -- এই বংগে? আমার অন্তহীন ভাবনা আমাকে দিন দিন জ্বরাগ্রস্ত করছে।আমি ভেবে কুলকিনার পাচ্ছি না।আমি রাজনীতি শিখেছি পাঠে নয় মাঠ দেখে,যন্ত্রনাক্লিষ্ট মানুষকে দেখে,গরমভাতে ছাঁই দিতে দেখে,ধর্মগ্রন্হ পোড়াতে দেখে,যানবাহন পোড়াতে দেখে,অকাতরে মানুষ নীরিহ মানুষকে হত্মা করতে দেখে,ধন সম্পদ লুট করতে দেখে,মা বোন ও শিশুর ইজ্জত লুটতে দেখে।আমি এখন বুঝতে পারি না রাজননীতি কি ও কেন? কার জন্য রাজনীতি ও গনতন্ত্র? মানুষ বেঁচে না থাকলে ,সম্পদ পুড়ে ছাঁই হয়ে গেলে কাকে নিয়ে আমরা রাজনীতি করবো? এ কোন রাজনীতির সংস্কৃতি তৈরি হলো দেশে? পরস্পর ভালবাসা নেই,ভদ্রতা নেই,নম্রতা নেই তাহলে কি আমরা আদিম যুগে ফিরে যাব? ২০১৪তে যে ঘটনা ঘটানো হলো ঠিক একইভাবে সংঘঠিত হলো ২০১৫তে।ক্ষমতাশীন আর ক্ষমতার বাইরে থাকা কি এক কথা? ক্ষমতায় থাকে জুলুমবাজ আর ক্ষমতার বাইরে থাকে মজলুম।মজলুমের সাথে সরসরি সম্পর্ক তৈরি হয় সৃষ্টিকর্তার।আমি জানিনা সারা দেশে মানুষের মনে কি প্রতিক্রিয়া হয়? আমি যখন অন্যায় দেখি তখন আমার অন্তর কাঁপে,তা সে হোক আমার নিতান্ত শক্রু।শক্রুর বাড়ির সামনেও কাঁটা বিচাতে নেই।যাদের হাতে ক্ষমতা থাকে তাদেরতো উদার হওয়ার কথা।সারা বাংলাদেশের মানুষ খাঁটি গনতন্ত্রের কথা বলছে,মানুষের শোষন নির্যাতনের কথা বলছে এতে কি দোষ হয়েছে? এক সময়ের বিরোধী দল অন্যায় করেছে বলেইতো তাদের আবার বিরোধী দলে আসতে হয়েছে।তারা যদি তাদের ভুল বুঝে ভাল হয়ে যায় তাহলেতো দোষের কিছু নেই।তারা তো মানুষের কল্যানের কথা বলছে।আর যে অধিকারের কথা বলছে তাতো সামান্য রাজনৈতিক অধিকার সভা সমাবেশ করা।সেই অধিকার থেকে কেন তাদের বন্চিত করা হলো? তাদের বন্চিত করে সারা দেশের নীরিহ মানুষকে আগুনের থাবার মধ্যে ফেলে দেয়া হলো।শত শত গাড়ি,দোকান পাঠ ও বাড়ি ঘর যে পুড়ে ছাঁই হলো এর পরিনতি কাকে ভোগ করতে হবে?৫ই জানুয়ারী তারিখে বিএনপিকে যদি ঢাকায় সমাবেশ করতে দেয়া হতো তাহলে কি হতো? মানুষ ঢাকায় আসতো,তাদের নির্দিষ্ট যায়গায় তারা সভা করতো ও তাদের বক্তব্য পেশ করতো।আইন শৃংখলা বাহিনী তাদের কর্তব্য কাজে বহাল থেকে পাহারা দিত।তার পর তারা চলে যেত এবং দেশের মানুষ ক্ষমতাশীন ও বিরোধীদলকে নিয়ে ভাবতো।একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নাজেহাল করার জন্য তাঁর কার্যালয়ের সামনে বালু-ইট এবং মাটি ভর্তি ১৩টি ট্রাক সাজিয়ে রাখা হলো ব্যারিকেড সৃষ্টির জন্য! তিনি তো তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং আর একজন ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।দু'জনই নারী।সামন্যতম মহানুভবতা যদি থাকতো তাহলে কি একাজ করা সম্ভব ছিল? সভ্য মানুষ কথা বলে মানুষের কথার উত্তর দেয়।মন্দ কথার উত্তর দেয় ভাল কথা বলে।তা কি আমরা আমাদের রাষ্ট্র প্রধান বা মন্ত্রীদের মুখে শুনতে পাই।বরং মুখপাত্রগুলোকে দেখি অশ্লিলতা ছড়াতে।মানুষ নামক একটি সভ্য প্রানী কিভাবে অশ্লিল হয় বুঝে উঠতে পারছিনা? এদের কারো কারো নামের প্রথমে আবার ডক্টর দেখা যায়।অশিক্ষিত লোকদের বলতে শুনেছি 'এ কোন ডক্টর'যে ভদ্র কথা বলতে জানে না।তাহলে সার্টিফিকেট টি কি পড়াশুনা না করে ডলার দিয়ে ক্রয় করা হয়েছিলো? মানুষের কর্মের ফলে এ সমস্ত প্রশ্নের উদ্ভব হয়।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কেন বুঝতে পারছেন না এত বড় একটি অবস্হান থেকে তাঁর চামচারা তাকে অধপতনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।তার বুদ্ধিমান উপদেষ্টারা আইনশৃংখলা বাহিনীর কিছু অতি উৎসাহিদের বুদ্ধি দিয়ে বেগম জিয়ার কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থানরত অল্প কয়েকজন মহিলা নেতৃবৃন্দ, ব্যক্তিগত কর্মচারী এবং মিডিয়ার লোকজনের ওপর মরিচের স্প্রে করিয়েছেন তা গনতান্ত্রিক কিনা? আর ভবিষ্যতে যদি এ কাজটি তাদের উপর নিক্ষেপ করা হয় তখন তাদের কেমন লাগবে? এই বোধটুকু জানা থাকলে কোন সভ্য দেশে মানুষ আর একজন মানুষের প্রতি এরকম অন্যায় কাজ করতে পারে না। গণতন্ত্র রক্ষার নামে দেশের একজন প্রধানতম রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হলো তা নিশ্চয়ই তাঁকে ইতিহাসে মজলুম হিসেবে অমর করে রাখবে। অন্যদিকে সময়ই বলে দেবে-কারা প্রকৃত জুলুমকারী এবং নির্ধারিত হয়ে যাবে ইতিহাসে তাদের স্থান।তবে এখান থেকে বিএনপির ও শিক্ষা নিতে হবে যদি তারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসে তারা অতীতকে ভুলে গিয়ে জনকল্যানের পথ বেচে নিবেন ও জনগনের সাথে থাকবেন।যদি তারা একই সংস্কৃতি চালু রাখেন তাহলে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন দেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।কাউকে না কাউকে সু-সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হতে হবে যাতে ইতিহাসে নাম থাকে।

একটি মন্দ কাজ মানুষকে আর একটি মন্দ কাজের দিকে ধাবিত করে। ১৯৭৩ সালের নিবার্চনে খোন্দকার মুশতাককে জেতানোর জন্য ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতিকে কলুষিত করার যে ঘৃন্য কর্মটি করা হয়েছিলো তা কিন্তু ফুলে ফেঁপে ২০১৪ সালে এসে বটবৃক্ষে রূপান্তরিত হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর ঘটনাটি যদি নির্দিষ্ট সময় বহাল তবিয়তে থাকতে পারে তাহলে ধরে নিতে হবে যে- বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে অদ্ভুত এক নিয়ম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়ে গেলো। আগামী দিন গুলোতে যে-ই ক্ষমতায় আসবে সে চাইবে রাষ্ট্রের প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করে নিজেদের খায়েশ পূর্ন করতে যা কিনা দীর্ঘমেয়াদে দেশকে নিয়ে যাবে চরম ধ্বংশের দিকে।ক্ষমতাসীনরা ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর ঘটনার পক্ষে বলতে গিয়ে বার বার সংবিধানের দোহাই দিয়ে থাকে এবং বলে থাকে- ঐ সময়ে যত হত্যা, সন্ত্রাস এবং লুটতরাজ হয়েছে তার সকল দায়িত্ব বিএনপি জামাত জোটের। কেন ঘটনা ঘটেছে ও কারা এর জন্য দায়ী? ২০১৫ সালের ৫ ই জানুয়ারীকে কেন্দ্র করে সে একই ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন সরকার কি দায়ী নয়? তাদের কি চিন্তা করা দরকার ছিল না এমন একটি কাজ করতে গেলে দেশে আগুন জ্বলবে।তারা সবই জানেন তবে এটিকে যারা রাজনৈতিক ফায়দা(লাভ) মনে করেন তারা নিশ্চই বোকার স্বর্গে বাস করেন।আজকের ক্ষমতাশীনরা যদি কোন এক সময়ে ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন আমারতো মনে হয় যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা এ প্রতিশোধ নিবে।তবে আমি একজন দেশের নাগরিক হিসেবে তা চাই না।ক্ষমা হলো মহৎ গুন।কাউকে এ গুনটি নিয়ে দেশের কল্যানে এগিয়ে আসতে হবে।অন্যায়ভাবে যে মামলাগুলো দেয়া হচ্ছে সরকার ইচ্ছে করলে যে কোন মুহূর্তে সেগুলো বান্চাল করে বেরিয়ে আসতে পারে।সব মামলা উঠিয়ে নিয়ে বিরোধীদলের সাথে বশে আন্তরিকভাবে সমঝোতা ও সংবিধানের সংশোধনের দরকার হলেও তা করে জাতিকে অনাচার থেকে মুক্ত করতে হবে।সেইদিন তারা বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ীর সামনে মোতায়েনকৃত ১৩টি বালু-ইট ও মাটি ভর্তি ট্রাক রেখে একটি ঘৃন্য সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। এ কাজটি ভবিষ্যতে অন্যদের উপর ঘটলে তারা অনুভব করতে পারবে স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে মরিচের স্প্রে করলে কেমন লাগে?

আমাদের দেশের রাজনীতির উদারতা, সভ্যতা, ভব্যতা, বিনয় ও ভদ্রতা দিনকে দিন নিছের দিকে নামতে নামতে এমন হয়েছে যে, রাজনীতিবীদদের নিকট থেকে মানুষজন এখন আর ওসব আশা করে না। রাজনীতি বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একজন মানুষের ব্যাপক পরিবর্তন বা বিবর্তন। গতকাল যে ছিলো রাস্তার ফকির আজ সে রাজনীতির যাদুর কাঠির কল্যাণে পরিনত হয়েছে মস্তবড় এক আমিরে। গলি মহল্লা বা অজো পাড়াগাঁয়ের সাধারণ মানুষটি রাজনীতির যাদুর কাঠির ছোঁয়ায় হঠাৎ করেই হয়ে যাচ্ছে মহা কামুক এক লুটেরা-দূর্বৃত্ত। তার চলনে বলনে, পোশাক-পরিচ্ছদে এবং আহারে-বিহারে ফুটে ওঠে মানুষরূপী হায়েনার প্রতিচ্ছবি। যে মানুষের গ্রাস কেড়ে নেবার জন্য হায়েনার মতো দূর্বৃত্তায়ন শুরু করে এবং লম্ফ ঝম্ফ দিয়ে শস্য শ্যামল ভূমিকে মরুময় করে তোলার প্রতিযোগীতায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য ওঠে পড়ে লাগে। কুকর্মের কারণে তার মুখমন্ডল থেকে মানবীয় দীপ্তি বিলীন হয়ে যায়-দেখে মনে হয়-সে যেনো মানুষ নয়-হয়তো একটি বন্য জন্তু জানোয়ার !

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বাড়ীর সামনে বালুভর্তি ট্রাকের সমাবেশ ঘটিয়ে দেশবাসীকে কিসের ইঙ্গিত দেয়া হলো? এমন জঘন্য নজীর কোন কালে কোন দেশে ঘটেছে কি না তা কারোরই জানা নেই। পৃথিবীর নিকৃষ্ট এবং জঘন্য শাসকেরাও সম্মানীত লোককে অসম্মান করতেন না।গোলাম মাওলা রনি তার লেখায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের কিছু কথার চমৎকার উদ্ধৃতি দিয়েছেন। হিটলারের কয়েকজন জেনারেল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শিল্পী পাবলো পিকাশোর স্টুডিওতে গিয়ে দেখলো- শিল্পী গভীর মনোযোগ দিয়ে কি যেনো আঁকছেন। তারা অনেক্ষন ধরে অপেক্ষা করার পর যখন দেখলেন শিল্পী তাদের দিকে তাকাচ্ছেন না তখন পিকাশোর স্টুডিও কর্মকর্তার মাধ্যমে তাঁকে সালাম পাঠিয়ে কথা বলার অনুমতি চাইলেন। জার্মানরা তখন সবেমাত্র ফ্রান্স দখল করেছে। ফ্রান্সের সেনা প্রধানসহ অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।নাগরিকরা হয় শহর ছেড়ে নিভৃত পল্লীতে চলে গেছেন নতুবা দেশ ত্যাগ করেছেন । ঐ অবস্থায় জার্মান বাহিনীর জেরারেল তো দুরের কথা- একজন সাধারণ আর্দালীর হুকুম অমান্য করার দুঃসাহস কেউ দেখাতো না। পাবলো পিকাশো ফ্রান্স ত্যাগ করলেন না । বরং বিভিন্ন রনাঙ্গন ঘুরে যুদ্ধের ভয়াবহতা নিজ চোখে দেখলেন এবং সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে ছবি আঁকতে লাগলেন একের পর এক।পাবলো পিকাশোর নামডাক তখন সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিলো। জার্মান জেনারেলরা তাই তাঁকে দেখার জন্য তার স্টুডিওতে গিয়ে হাজির হলেন। পিকাশো তখন আঁকছিলেন তার বিখ্যাত ছবি 'গুয়ার্নিকা'। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, নির্মমতা এবং নৃশংসতা নিয়ে ছবিটি অংকিত হচ্ছিল। ছবিটি দেখে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে জার্মান জেনারেলরা বলে উঠেন- ”সত্যিই কি এটা আপনি এঁকেছেন ?” পিকাশো মুচকী হেসে জবাব দেন- না এটা আমি আঁকিনি-তোমরা এঁকেছো। শিল্পীর জবাব শুনে জেনারেলদের মুখ কালো হয়ে গেলো। তারা মাথা নীচু করে পিকাশোর স্টুডিও থেকে ফিরে এলন।

এ প্রসংগটিকে যদি আমরা স্মরণ করি আর ২০১৫ সালের ৫ই জানুয়ারীতে এসে বেগম জিয়ার বাড়ীর সামনের বালির ট্রাকের কথা মনে করি তখন আমাদের এই সমাজকে কিংবা রাষ্ট্রটিকে গণতন্ত্রের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করতে পারি কি? ২০১৪ সালের বিশৃংখলা ও অরাজকতার সময়ও বেগম জিয়ার বাড়ীর সামনে বালু ভর্তি ট্রাক রাখা হয়েছিলো। সারা দুনিয়া সেই ঘটনার নিন্দা জানালেও ক্ষমতাসীনরা সেটিকে মনে করেছিলো তাদের মহা বিজয়ের মহা মাইল ফলক হিসেবে। আর তাই ২০১৫ সালে এসেও তারা পুরোনো বিজয় স্তম্ভটিকে সামনে এনে নতুন এক ইতিহাস গড়ার মানসে ট্রাকের সংখ্যা ১৩ তে উন্নীত করেছে। এখন আমাদের দেখার পালা কোথাকার জল কোথায় গড়ায়? তবে এর শেষ পরিনতি কি আল্লাহ ভাল জানেন তবে দেশের মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে হয়ত এর জন্য কিছু মুল্য দিতে হতে পারে জাতিকে।

ক্ষমতা কারো জন্য চিরস্হায়ী নয়।ভাল কাজ ও দেশের মানুষের জন্য যারা সৎভাবে কাজ করবে তারাই আখেরে টিকে থাকবে।আমরা ইতিহাস স্মরন করিনা।১৯৫২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ইতিহাসের যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা গুলো ঘটেছে তার জন্য দায়ী কু-রাজনীতিবিদরা ও তার সাথে কু-বুদ্ধিজীবিরা।

১৯৭৩ সালে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করিয়ে যাকে এমপি বানিয়ে আনা হলো সেই খোন্দকার মোশতাক দ্বারা আওয়ামীলীগের কতবড় ক্ষতি হয়েছিলো তা বোঝার জন্য আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে খুব বেশী গভীরে যাওয়ার দরকার নেই। একটু চোখ বুজলেই বুঝতে পারবেন- রক্তের দাগ এখনো শুকোয়নি।যারা তার পিতাকে ঘুমাতে দেয় নি তারাই এখন তার চারদিকে।কি দরকার ছিল ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতিয়ে আনা এবং বাকীদেরকে নামকা ওয়াস্তে চালাকীর মাধ্যমে বিজয়ী করা।এতে কি তিনি লাভবান হয়েছেন নির্বাচন না দিয়ে? তিনি কি জনগনকে বন্চিত করে এখন প্রধানমন্ত্রীর আসন গ্রহন করে শান্তি পাচ্ছেন? এ দায় তিনি এড়াবেন কি করে? ইতিহাস তো সাক্ষী হয়ে রইলো। আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহ তার রজ্জু ছেড়ে দিয়ে রাখেন।যখন মানুষ চরম মিথ্যাচার ও অহংকার করতে থাকে এবং নিজের ভুল স্বীকার করে না তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত হয়।মাত্র অল্প আগেই আমরা দেখেছি আরব উপদ্বীপে দীর্ঘকাল শাসন করার পর তাদের কি অবস্হা হয়েছিল? এগুলো আমাদের জন্য শিক্ষা নয় কি? তবে মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরন হচ্ছে,মানুষের দৈনন্দিন জীবনের এই অপঘাত সহ্য করার বাইরে চলে যাচ্ছে।দরিদ্র মানুষের চোখের পানিতে যখন বুক ভিজে যায় তখন আমাদের হৃদয় আর্তনাদ করতে থাকে।

খালেদা জিয়ার বাড়ীর সামনে বালির ট্রাকের অবরোধ কেবল মাত্র তাকেই অবরুদ্ধ করেনি-অবরুদ্ধ করেছে পুরো দেশ-জাতি এবং রাষ্ট্রকে। বিএনপিকে যদি ঢাকাতে সমাবেশ করতে দেয়া হতো সে ক্ষেত্রে দেশবাসী হয়তো সরকার সম্পর্কে কিছু সমালোচনা শুনতে পেতো, ঘটনার দিন ঢাকায় মারাত্মক যানজট দেখা যেতো এর বেশী কিছু হতো না। কিন্তু বালির ট্রাকের কল্যাণে দেশবাসীকে ভোগ করতে হলো অনির্দিষ্ট কালের অবরোধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি এবং নিত্যকার অশেষ ভোগান্তি। এ দায় কে নিবে ?লুংগিওয়ালারা গাবতলী থেকে যে সমস্ত বালি বোঝাই করা ট্রাককে তাদের গন্তব্যে না যেতে দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির ফটকে নিয়ে হাজির করলেন তারাই একদিন বিরোধিতায় মেতে উঠবে।আর অতি উৎসাহি যে সব আইনশৃংখলা বাহিনীর ভাইরা মরিচ স্প্রে ছুড়েছেন তারা কি মনে করছেন ভাল কাজটি করেছেন? আপনারা জনগনের টাক্ক্সের টাকায় চলেন আর জনগনকে ভোগাবেন তা ভাবেন কি করে? আমরা জানি আপনাদের দোষ নেই,মুল দোষটি রাষ্ট্র যন্ত্রের।সেই যন্ত্রটিকে সঠিক পথে নিয়ে না আসা পর্যন্ত লুংগি পরা নেতা,ক্ষমতার আগুন ও গুলশানে বালির ট্রাক আসতে থাকবে অনন্তকাল ধরে।

বিষয়: বিবিধ

১২৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File