কুরআনের আলোকে আমাদের আত্মশুদ্ধি,নিয়ন্ত্রন ও তার তাৎপর্য।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৫ জানুয়ারি, ২০১৫, ১১:৫৫:১২ রাত

আত্মশুদ্ধি(Self control) কথাটি সম্পর্কে আমরা সবাই বক্তৃতা বিবৃতিতে শুনে থাকি আবার অনেকে কথায় কথায় বলে থাকি।দেখা যায় যিনি কথাটি বলছেন তার কাজে কর্মে তা প্রতিফলিত হচ্ছে না।সূরা আস্ সফ এর ২-৩ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'ওহে যারা ঈমান এনেছ! কেন তোমরা তা বল যা তোমরা কর না? আল্লাহর কাছে অত্যন্ত ঘৃনিত তোমরা এমন সব বল যা তোমরা কর না।' মুসলমানদের মধ্যে এই একটি শ্রেনী রয়েছে যাদের জীবনের উপর কোন নিয়ন্ত্রন নেই।তারা কথায় ও কাজে এক নয়।বেশ কয়েক বছর আগে আমি আমার মুসলিম কমিউনিটিতে ভাইদের সাথে উঠা বসা করতাম, এখন সময়ের সংকীর্নতা ও নিজের পরিকল্পিত কাজে সময় ব্যায়ের কারনে অনেকের সাথে যোগাযোগ হয়ে উঠছেনা।আমি বিচার করে দেখেছি তাদের অনেকে জীবনের ২০/৩০ বছর বা তার চেয়ে বেশী সময় ইসলামিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে অথচ নিজেদের জীবনের পরিশুদ্ধি বা ১০/২০টি কোরআনের সূরাও ছহি শুদ্ধ নেই।এমনকি শরিয়তের জরুরি বিধিবিধান গুলোও জানা নেই বা জানার চেষ্টা করে না।কিন্তু বছরের পর বছর এখানে সেখানে বসছে ইসলামি জীবন বিধান প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।মানুষের যে কোন কাজের উদ্দেশ্য থাকতে হবে।আমি কেন একটি যায়গায় যাচ্ছি? সেখানে যাওয়ার আমার উদ্দেশ্য কি? সে সময়টি ব্যায় করে আমি সফল হলাম কিনা? আমার ব্যাক্তি জীবনে তাক্কওয়ার দিনে দিনে উন্নতি হচ্ছে কিনা? একদিকে কুরআন ও হাদিস শুনছি অন্যদিকে ক্ষেয়ানত করছি।আমার রোজগারের কোন খবর রাখছিনা।একটি মালের কন্ট্রাক্ট করে আর একটি মাল প্লেস করে আমি অনেক টাকার মালিক হয়ে গেলাম আর সপ্তাহে কোথাও একদিন বসলাম বা কিছু লোককে খাওয়ালাম এ যদি ইসলাম হয় তাহলে বলতে হবে সে শিখাটার মধ্যে রয়েছে ভুল।খারাপ কাজগুলো সংশোধন করার জন্যই ইসলামের চর্চা হয়ে থাকে।একজন মুসলমান যে ইসলাম জানলো কিন্তু তার ইবাদতের ক্ষেত্রগুলোকে পরিশুদ্ধ করলো না তাহলে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক হবে কি করে? আর সেই মুসলিমটি তার অন্য মুসলিম ভাইকেই বা কিভাবে পরিশুদ্ধ করবে? তারা খুব কমই কমিটমেন্ট রক্ষা করে।ইসলামিক ফাউন্ডেশন গুলোতে দেখতাম এক মাস আগে প্রোগ্রাম সেট করা আছে।প্রতিশ্রুত দিনে বক্তা ও সন্চালক এসে বসে আছেন অথচ শ্রোতা নেই।মুসলিমদের এই সময়জ্গান না থাকার কারনে তারা হেরে যাচ্ছে।আবার এ লোকগুলো জীবনের তাড়নায় সকাল ছ'টায় বা প্রয়োজন হলে রাত চারটায়ও তাদের কর্মক্ষেত্রে যেতে পারে।আবার ইসলামের কাজ সামনে এলে অনেকে বলে সময় নেই কিন্তু অফিসে যখন বাড়তি সময় কাজ করতে হয় সে ক্ষেত্রে দীর্ঘ রাত পর্যন্তও কাজ করতে পারে।এর কারন একটাই এরা নগদে বিশ্বাসী।একজন আত্মপ্রত্যয়ী ও দীনের দায়ী মুসলিম তার কাজে কর্মে থাকবে অত্যন্ত সচেতন।তাকে অনুসরন করবে অনেকে তার চরিত্র মাধূর্য দেখে।তার জন্য প্রথম শর্ত হলো তার মুল অস্ত্র আলকুরআনকে আত্মস্হ করা, জানা ও সেনুযায়ী আমল করা।আলকুরআনের ভিতরে আয়াতগুলো সম্পর্কে প্রচ্ছন্ন ধারনা রাখা।কোন যোদ্ধার কাছে যদি তার আত্মিক শক্তি ও শানিত তরবারি না থাকে সে যোদ্ধা হেরে যেতে বাধ্য।আজকে হাজার মুসলমানদের যদি সাক্ষাতকার নেয়া হয় আমি নিশ্চিত ৯৯ ভাগ ব্যার্থ হবে যাদের আলকুরআনের জ্গান নেই।আমি বলছি না আমি তাতে দক্ষ কিন্তু আমি যখন বুঝতে শিখেছি, আমার সাধ্যের বাইরে চেষ্টা করছি তা বুঝার ও তা প্রচার করার।আমাদের প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব যদি তিনবেলা ভাত জুটে যায় আলকুরআনকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা।আল্লাহ বলেন,এরা কুরআন নিয়ে পর্যালোচনা করেনা কেন,এদের অন্তরে কি তালা লেগে আছে? আলকুরআন পড়লে সওয়াব হবে কিন্তু এজন্যই কি তা নাজিল হয়েছে? কুরআন এসেছে জীবনের পরিশুদ্ধতার জন্য,সমাজকে পন্কিল থেকে রক্ষা করার জন্য।এ কাজ গুলো করবে মানুষ।সেজন্য সেই মানুষগুলোকে তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে পরিশুদ্ধ হতে হবে।

এটি একটি সাধারন ধারনা যে সব ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে তাদের নিজেদের থাকবে আত্মশুদ্ধি ও নিয়ন্ত্রন।আমরা সবাই এ পৃথিবীতে মুক্ত জীবন যাপন করে থাকি এবং আমাদের দায় দায়িত্ব রয়েছে আমাদের পরিবার ও সমাজের প্রতি।আমাদের প্রত্যাশা একে অন্যকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে দেখবো ও একে অন্যের স্বার্থের প্রতি খেয়াল করবো।এ কাজগুলোর জন্য অবশ্যই আমরা আমাদের প্রবৃত্তিকে অনুসরন করবনা যাতে অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।আমাদের আত্মশুদ্ধি ও নিয়মানুবর্তিতা দরকার যা আমাদের পবিত্র করে গড়ে তুলবে।আমরা যদি আমাদের আত্মাটিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারি তাহলে আমাদের চারদিকে যা দেখছি তা আমাদের কখনো গ্রাস করবে না।সেগুলো কি? সেগুলো হলো,আমাদের বেঁচে থাকার ভয় ,আমাদের দ্বিধা দ্বন্দ,আমাদের লোভ লালসা,আমাদের সংকোচ,আমাদের কু-বুদ্ধি ও বিবেচনা,অন্যের অনৈতিক সম্পদ অর্জনকে অনুসরন,অন্যের ভোগ ও বিহার আরো---অনেক।আমাদের আত্মাটিকে যদি পুষ্ট করে তোলা যায় তাহলে সে আপনিই এগুলোকে ঘৃনা করবে।আমার এই বিশাল দেহটি এই চোট আত্মাটির কাছে তখনি পরাজিত হবে যখন আমি তাকে এই দুনিয়ার লোভলালসা থেকে দূরে সরিয়ে আনতে পারবো।আল্লাহ পাক আলকুরআনে অসংখ্য আয়াতের অবতারনা করেছেন যা প্রতিনিয়ত চর্চা করলে আমার ও আপনার দৃষ্টিগোচর হবে।সূরা আন নাযিয়াতের ৪০-৪১ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'যে তার প্রভুর সামনে দাঁড়াতে ভয় করে এবং আত্মাকে কামনা বাসনা থেকে নিবৃত্ত রাখে-সেক্ষেত্রে অবশ্যই জান্নাত-সেটিই তো বাসস্হান।' এ পৃথিবীতে মানুষকে আল্লাহ পাক তার প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছেন যেন তারা তাঁরা আদেশ নিষেধ মেনে চলে।তাদের কাউকে আল্লাহ রাজত্ব দান করেছেন তাদের পরীক্ষা করার জন্য।তারা এখানে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবে।মানুষের কল্যানের জন্য কাজ করবে।সম্পদের সুষম বন্টনের মাধ্যমে সমাজের অস্হিরতা দূর করবে।সমাজ থেকে অনৈতিক সব কাজ বন্ধ করার জন্য কাজ করবে।কিন্তু তা না করে তারা নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে মানুষ হত্মা,সম্পদ ও জান মালের ক্ষতি করে পৃথিবীকে বিপর্যস্ত করে।আল্লাহ পাক সেজন্য দাউদ আ;কে পৃথিবীতে ক্ষমতা দিয়ে সূরা ছাদ এর ২৬ আয়াতে বলেন,'হে দাউদ! আমরা তোমাকে পৃথিবীতে খলিফা বানিয়েছি,সেজন্য তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর,আর খেয়াল খুশির অনুসরন করোনা,পাছে তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট করে ফেলে।নি:সন্দেহে যারা আল্লাহর পথ থেকে বিপথে যায় তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি কেননা তারা ভুলে গিয়েছিল হিসাব নিকেশের দিনের কথা।'

যারা ঈমানদার তারা নবী রাসূলদের পথ অনুসরন করে।নবী রসূলদের জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তাঁরা আল্লাহ পাকের তৌহিদকে পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করেছেন সার্বক্ষনিক।তারা পরিবার পালন করেছেন,আল্লাহর ইবাদত করেছেন দিনে রাতে,সমাজের দুস্হ পীড়িতদের জন্য কাজ করেছেন।তারা ক্ষুদার্ত থেকেছেন কিন্তু কোন অসদুপায় অবলম্বন করেননি।আল্লাহর প্রতি ছিল তাদের দৃড় বিশ্বাস।তারা ন্যায় বিচার করতে কুন্ঠিত হন নি।বনী ইসরাইলে অসংখ্য নবী রাসূল হত্মা হয়েছে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে।সেজন্য যারা দুনিয়াতে সাক্ষ্যদাতা হবে তাদের দেখতে হবে আমাদের কাজের যায়গাটি সঠিক কিনা? বা আমরা যে কাজ করছি তা শরিয়তের বিধি বিধানের মধ্যে থেকে করছি কিনা? সূরা আন নিসার ১৩৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'ওহে যারা ঈমান এনেছ!তোমরা ন্যায় বিচারের দৃড় প্রতিষ্ঠাতা হও যদিও তা তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে যায় অথবা পিতা-মাতার অথবা আত্মীয় স্বজনের,সে ধনী হউক বা গরীব-কেননা আল্লাহ তাদের উভয়ের বেশী নিকটবর্তী।কাজেই কামনার অনুবর্তী হয়ো না যাতে তোমরা পথভ্রষ্ঠ হও।' এ কাজগুলো আমরা করতে পারবো যখন আমাদের আত্মশুদ্ধির ব্যাপারটি আমাদের মধ্যে দৃড়ভাবে গেঁথে যায়।আমরা শয়তানের প্ররোচনার কারনে অনেক সময় বিভ্রান্ত হতে পারি কিন্তু আমরা যদি আল্লাহকে ভয় করি ও প্রতিটি কাজের প্রতি খেয়াল করি তাহলে কখনো কোন অন্যায় কাজ সম্ভব হবে না।স্বজনপ্রীতির ব্যাপারটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়।আমরা নামাজিরা এই বিষয়টির বেশী ক্ষেয়ানত করে থাকি।আমার পরিবার ,আমার দল,আমার কাছের মানুষ এগুলো-ই মানুষকে ক্ষতি করে থাকে।যদি আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর ভয় থাকে তাহলে এগুলো সামনে আসবে না।হযরত ওমর রা: তার ছেলে ইবনে ওমরের খেলাফতে আসার রাস্তা বন্ধ করেছিলেন যদিও তিনি ছিলেন অনেকের চেয়ে জ্গানী।সেজন্য আমাদেরকে সচেষ্ট থাকতে হবে যেন কোন লোভলালসা না আসে।আমরা যারা দায়িত্ববান তাদের মনে রাখতে হবে সবার স্বার্থ যেন ঠিক থাকে এবং সেটি বিচার করতে হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে।কিন্তু যদি চতুর হয়ে যাই সেখানেই আমাদের ব্যার্থতা।আমরা অনেকে বিচারের ক্ষেত্রে হেক্কমতটাকে অনৈতিকভাবে ব্যাবহার করে থাকি এবং নিজেদের আত্মাকে সেক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত করি।অনেক ক্ষেত্রে সমপর্যায়ের অনেক গুনান্নিত প্রার্থী আমরা দেখতে পাই।সেখানে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যাক্তিটিকে গ্রহন না করে আমরা নিম্নতম ব্যাক্তিটিকে নিতে আগ্রহী হয়ে যাই স্বজনপ্রীতির কারনে বা উপরস্হদের কারনে।এখানে নিজের দুর্বলতার কারন হলো আমি আমার রিজিকের ভার আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের উপর ছড়ে দিয়েছি।আল্লাহর উপর যে তাওয়াক্কুল থাকার কথা সেটা এভাবেই লোপ পায় অথচ আমরা নামজ-রোজা করছি।আত্মশুদ্ধি ও নিয়ন্ত্রন ও আল্লাহর ভয় থাকলে এগুলো কখনো স্হান পাবেনা।

নিশ্চই ইসলাম আমাদের বলে যে,আত্মশুদ্ধি ও নিয়ন্ত্রন মু'মিনের প্রাথমিক একটি বিষয়।এটি তাদের জন্য যারা তাদের জীবনের ভ্রমন শুরু করে।আমাদের আত্মাটিকে পরিবর্তন করা উচিত নিম্নমানের আকাংখা থেকে ভাল আকাংখ্যাগুলোর দিকে।তবেই আত্মাটি আমাদের বেড়ে তুলতে সাহায্য করবে।এ কাজটি সম্ভব হবে তখন,যখন আমরা প্রতিনিয়ত এর পরিচর্যা করবো সততার সাথে।আমাদের চলার পথে আমরা দেখতেই পাই অনেকে ভাল কাজ করতে পাছন্দ করেন,রোজা ও রাতে নামাজে দাঁড়াতে পছন্দ করেন,পরের কল্যানে কাজ করতে পাছন্দ করেন এমনকি নিজের কাজকে সন্কুচিত করে হলেও তা করেন।আবার অনেককে দেখি যারা এ ভাল কাজগুলো করেন তারা এদের বিরুদ্ধে লেগে থাকে,সমালোচনা করে,রাগান্নিত হয়।কেউ দীনের দিকে ডাকলে বা নামাজে ডাকলে তাকে তিরস্কার করে বিভিন্ন নামে।এ বাধাগুলো উত্তীর্ন হয়ে যারা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি করে তারাই আল্লাহর খাঁটি বান্দাহ।সূরা আশ্ শামছের ১-১০ আয়াতে মানুষেকে কিভাবে তৈরি করেছেন,মানুষের আচরনগত দিকের কথা বর্ননা করেছেন এবং আত্মশুদ্ধির কথার বর্ননা করা হয়েছে।যারা তাদের আত্মাটির পরিশুদ্ধি করতে পারবে তারাই বিজয় লাভ করবে।আর যারা একে দুষিত করবে তারাই ধংস হবে।শেষ বিচারের দিন মানুষ দু'ভাগে বিভক্ত হবে।যারা সেখানে হাস্যজ্জল থাকবে তারাই তাদের আত্মার উন্নতিকারি।আর যারা বিমর্ষ ও দুর্ভাগ্যের অধিকারি হবে তারা হলো এই আত্মার ক্ষতিগ্রস্তকারি।আমরা যদি আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের কামনা করি তাহলে আমাদের পবিত্র হতে হবে কারন তিনি সবচেয়ে পবিত্রতর এবং তিনি পবিত্রতাকে ভালবাসেন।আমরা যখন বড় কারো সাথে সাক্ষাত করতে যাই তখন নিজেদের পরিচ্ছন্ন করি,ভাল পোষাক পরি,ভাল ফারফিউম লাগাই।কিন্তু যিনি রাজাধিরাজ,তার সাথে আমরা যদি সাক্ষাতের কামনা করি তাহলে কি রকম পবিত্র হতে হবে তা আমাদের ভেবে দেখা উচিত নয় কি? সূরা হজ্জের ২ আয়াতে মানবজাতিকে রাসূল সা: এর মাধ্যমে কিভাবে পরিশুদ্ধ করেছেন তার বর্ননা দিয়েছেন এভাবে,'তিনিই সেইজন যিনি নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল দাঁড় করেছেন,তিনি তাদের পাঠ করেছেন তাঁর নির্দেশাবলী,তিনি তাদের পবিত্র করেছেন আর শিক্ষা দিয়েছেন ধর্মগ্রন্হ ও জ্গান বিজ্গান যদিও এর আগে তারা ছিল স্পষ্ট ভ্রান্তিতে।' ঠিক একইভাবে সূরা আল বাক্কারার ১৫১ ও আল-ইমরানের ১৬৪ আয়াতে আল্লাহ পাক বিশ্বাবাসিদের প্রতি তার অনুগ্রহের কথাগুলো বর্ননা করেছেন।আলকুরআনই হলো আত্মাকে পবিত্র করার একমাত্র মাধ্যম যাকে অধ্যয়ন করতে হবে ও তার নিয়মাবলীকে জীবনের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।সাহবায়েকরাম কুরআনের একটি আয়াত পড়তেন ও তা জীবনের মধ্যে নিয়ে আসতেন তারপর আর একটি আয়াত পড়তেন।যারা বলবে আমরা সমাজ সংস্কার করবো তাদের যদি অন্যজনকে সংস্কার করতে হবে তাহলেতো বলতে হয় প্রচলিত প্রবাদটির কথা যে,'কুইনিন জ্বর সারাবে বটে তবে কুইনিন সারাবে কে?'

আমরা ভাল কাজ করবো বটে তবে আল্লাহর কাছে আমাদের সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে যেমন করেছিলেন আমাদের ধর্মীয় পিতা ইব্রাহিম আ; ও তার সন্তান ইসমাইল আ; যখন ক্কাবা নির্মান করেছিলেন।সূরা বাক্কারার ১২৭-১২৮ আল্লাহর কাছে আর্জি পেশ করেছিলেন এভাবে,'আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে তুমি গ্রহন কর।নিশ্চই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্গাতা।আমাদের প্রভু! আমাদের তুমি মুসলিম করে রাখ,আর আমাদের সন্তান সন্তদিদের থেকে তোমার প্রতি মুসলিম উম্মত আর আমাদের ইবাদতের নিয়মাবলী দেখিয়ে দাও আর আমাদের তওবা কবুল কর কারন তুমি নিজেই তওবা কবুলকারি ও অফুরন্ত ফলদাতা।

আমরা আমাদের কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদীহি করবো সেজন্য আমাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং খুঁজে বের করতে হবে আত্মশুদ্ধি ও নিয়ন্ত্রনের উপায়গুলো কি? তার জন্য উপায় হলো আলকুরআন ও ছহি সূন্নাহের অনুশীলন ও অনুসরন।যদি তা প্রতিনিয়ত করতে পারি তাহলেই আমরা পরিশুদ্ধ জীবনের দিকে ধাবিত হব।শুধু শুধু নিজের সাথে নিজেকে প্রহসন করে বৈতরনী পার হওয়া যাবে না।নিজের দৈনন্দিন কাজগুলোকে সুনিয়ন্ত্রন করতে পারলেই আত্মা নিয়ন্ত্রিত হবে আর আত্মার নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য ও জান্নাতে পৌঁছা সম্ভব হতে পারে।

বিষয়: বিবিধ

২৪১৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299405
০৬ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৪২
299428
০৬ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৭:০০
শেখ মিঠুন লিখেছেন : আর্টিকেলটা বড় সুন্দর। সুন্দর চিন্তার ফসল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
299467
০৬ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৫২
হতভাগা লিখেছেন : সূরা রা'দ এর ২৮ নং আয়াতে আছে :
''আল্লাহর জিকিরেই মনে প্রশান্তি আসে ।''


পর পর দুবার বলা হয়েছে এটা ।

আর রাসূল (সাঃ) বলেছেন
''তোমরা যতদিন আল্লাহর কালাম (আল-ক্বুরআন) ও আমার হাদিস আঁকড়ে ধরে রাখবে ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না ''।


মাশা আল্লাহ !চমতকার একটি লিখা পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
299949
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০৩
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আপনার লিখাগুলো অনেক লম্বা, পড়তে কষ্ট হয় তবু সময় করে বেশ মনোযোগের সাথে পড়ার চেষ্টা করি। আজকের লিখাটা পড়তে পড়তে মনে হল আমি কিংবা আমরা প্রতিনিয়ত নিজের সাথে নিজেই প্রহসন করে যাচ্ছি, যদিও কেও তা ধরতে পারছেনা, তবু বিবেক কিন্তু দংশন করেই যাচ্ছে। আপনার সাথের একশভাগ সহমত, আমি নিজে যদি আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে না পারি, অন্যকে পরিশুদ্ধ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তাতে আমার একাগ্রতা আসবেনা, তাছাড়া আমি যা বলি তা যদি নিজেই না করে, যাকে বলছি সে কেন করবে!!
আপনার লিখায় পাঠক সংখ্যা খুব, কেননা বেশি ভাল এবং বস্তুনিষ্ঠ কথা বলেন, যাতে রস কষ কম থাকে, যারা আবেগ ছেড়ে দিয়ে আবেগীয় লিখা দেয় দেকবেন তাদের লিখায় পাঠকের অভাব নেই। এই ব্লগে ব্লগার পাঠক সংখ্যা ইর্ষণীয় কিন্তু আপনার মত মান সম্পন্ন ব্লগারের যঠেষ্ঠ অভাব। এই খানে প্রতিযোগিতা চলে কার আগে কে কত কমেন্ট করতে পারে, ভিতরে কি লিখেছে একবারো পড়ে দেখেনা, আজব এক পাগলামী। যে কজনা আপনার লিখাগুলো পড়বে, তার মাঝে একদিন ইনশা আল্লাহ পরিবর্তন আসবে, সত্যি কথা বললে আপনার লিখায় আমি অনেক বেশি প্রভাবিত, সময়ের অভাবে ব্লগে তেমন বসতে পারিনা, তবু আপনার লিখা পড়তে বেশ লাগে।
ভাল থাকুন, লিখতেই থাকুন।



মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File