বিজয়ের ৪৩ বছর পরও- তোমরা তরুনরা জাগবে না?
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৩ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৬:৪৫:৩৭ সন্ধ্যা
হে স্বাধীনতা! আমায় বলে দাও কোন দীগন্তে আমার বাসস্হান? আমি চিৎকার করে কাঁদতে চাই বার বার,আমার জাগ্রত বিবেক আমাকে নিবৃত করে।আমি শ্বাস নিতে পারিনা সাচ্ছন্দে, মুক্ত হাওয়ায়,বাতাসে ভেসে আসে মানুষের বিবেক পোড়া গন্ধ! যে দেশে স্বাধীনতার জন্য জীবন দেয় নিরীহ শান্তিকামী মানুষ,সে দেশেই আবার মানুষকে পুড়িয়ে মারে,নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষা নদীর তীরে ১১ খুন (৭+২ মাঝি+২ জেলে) সহ বহু নৃশংস খুন, বহু ডাকাতি, ঝিনাইদহে কালিগঞ্জে বিউটি (২৫) নামের এক যুবতীকে ধর্ষণের ভিডিও ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার পর তার আত্মহত্যা সহ অসংখ্য ধর্ষণ, রাহাজানি, ছিনতাই, বছরের শেষ মাসে সাড়ে ছয়শ ফিট পাইপের নিচে পড়ে যাওয়ার দুর্ঘটনায় শিশু জিয়াদের মৃত্যু এবং বছরের শেষ সপ্তাহে কমলাপুরে রেল ভ্যানের সংঘর্ষে ছয়জনের মৃত্যুসহ বহু শত দুর্ঘটনা (যেসব হয়তো এড়ানো যেত আগেই সরকারি পৃভেনটিভ ব্যবস্থা নিলে), মাওয়াঘাটে সবার চোখের সামনে লঞ্চ ডুবিতে শতাধিক যাত্রী নিহত এবং সুন্দরবনে ট্যাংকার ডুবিতে শতশত জলজ প্রাণীর মৃত্যু, বিদ্যুৎবিহীন একদিন সারা দেশ, আবাসন খাতে চলমান সঙ্কট, বিভিন্ন শিল্পে স্থবির অবস্থা, বিদেশে চাকরি সংকুচিত এবং স্বদেশে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির মত তরুন ও যুবতীদের করুন আর্তনাদ।তোমাদের কেন চোখে পড়ে না,পুত্রের কাঁধে পিতার লাশ এতো স্বাভাবিক কিন্তু যদি হয় অনাকাংখিত, পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ ও করুন আর্তনাদ।সন্তান তার মুমূর্ষূ মাতা বা পিতাকে বাঁচাতে যখন হাসপাতালে ছুটে তখন জ্যামের মাঝে রাস্তায় আটকে থাকে দু বা তিন ঘন্টা অবশেষে ভ্যানে বা ট্যাক্ক্সিতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ।কি করুন দৃশ্য! চারদিকে চলছে অগনিত মানুষ ও যানবাহন সেদিকে খেয়াল নেই কারো যে অশ্রু সংবরন করে চলছে।৪৩ বছর পরেও ফেলানির লাশ ঝুলে থাকে তারের কাঁটায়,রেহানার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকে বাসের ভিতর।পুলিশের কাছে আশ্রয় চেয়ে, জেসমিন হয় ধর্ষিতা তারপর খুন,সাগর-রুনি নির্মমভাবে খুন হয় নিজের বাসায়, সন্তানের সামনে! ফুটফুটে তৃষাকে পুকুরে ফেলে নির্মমভাবে মারে -ওরা কারা? তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীর,জগলুল ভাই পিষ্ট হয় ঘাতক বাসের চাকায়! এত মানুষ বাহনটিতে তারপরও চালক পালিয়ে যায় ও নির্বিকার চেয়ে থাকে যাত্রী।অনেক টাকার বিনিময়ে আইন কিনে নেয় দাগী অপরাধী,অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে উৎসুক জনতা।বিচারের বানী আজ নিভৃতে কাঁদে ! বিচারক আজ জিম্মি !হে স্বাধীনতা! কত বীর সেনারা জীবন বাজী ধরেছিল, স্বাধীনতা পাবার আশায়,অস্ত্র ছিলনা, গোলাবারুদ ছিলনা, ছিলোনা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈন্য,তবুও দমে যায়নি তারা, যারা করেছিল মুক্তিযুদ্ধ,।তবে, ৪৩ বছর পেরিয়ে ও আজ আমরা কেনো, বিবেকের কাছে অবরুদ্ধ ?
গৃহকর্মীর কাজ করে, জীবন চালাতো অসহায় আদুরী,
তাকে নির্যাতন করে কেন ডাস্টবিনে ফেলে দেয় ওরা ?
আজো কেন হয়না তার সুবিচার , আজো কাঁদে আদুরীর অসহায় মা ! যৌতুকের অভাবে কত গৃহবধূ ছেড়ে দেয় স্বামীর ঘর,এসিডে আজো ঝলসে যাচ্ছে কত সবিতার শরীর,
চাঁদার টাকা না দিলে ঝরে যাচ্ছে কত নিরীহ প্রাণ,
তবে বিজয়ের ৪৩ বছর পর কি তারা পাবেনা এর ফলাফল!
শিক্ষাকেন্দ্রে বাণিজ্য চলে,মেধার বিচার পাচ্ছেনা পিএসসিতে প্রথম হওয়া মেধাবী ছাত্রটি যে রিট করেছে বিচারালয়ে।
হাসপাতালে ক্ষমতার নামে অপব্যবহার চলে নির্দিধায়
গরীব রোগী পায়না কোনো সু চিকিৎসা টাকার অভাবে! কোথায় আমার তরুন বন্ধুরা কেন তোমরা জেগে উঠছো না? তোমরা যারা মাঠে জড় হও সেকি তোমাদের নিজের চেষ্টা না তোমাদের হাতে আসে কালো টাকা ও বিয়ারের ঝংকার। যদি তোমাদের প্রতিবাদ সত্য হয় তবে তোমরা সত্যের পথে চল।
হে স্বাধীন দেশের তরুন তোমরা কি দেখনা! চোখ খোল দেখ সারাদেশে কি হচ্ছে অবলীলায়। তোমাদের কৃষক আজ কত ফসল ফলায়।এরা কারা যাদের সার ও কীটনাশক
এ দুটি প্রডাক্টে ভেজাল দেয়? এটি কোন নতুন সংবাদ নয়। নতুন যেটা সেটা হচ্ছে, কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে রাজনৈতিক সমর্থনে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল সার ও কীটনাশক। এই রাজনৈতিক সমর্থনটি আসছে ক্ষমতাসীন অনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে আর তারা ফুলে ফেঁফে উঠছে কালো টাকায়।রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিভিন্ন এলাকায় দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল সার ও কীটনাশক। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত বিশেষ সুবিধা দেওয়ায় এবং রাজনৈতিক দলের নেতাদের মদদে অধিকাংশ সার ও কীটনাশক বিক্রয় কেন্দ্র নামমাত্র কাগজপত্র দেখিয়ে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসব বিক্রয় কেন্দ্র থেকে সার ও কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করছেন স্থানীয় কৃষক। প্রতিনিয়ত ভেজাল সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। হ্রাস পাচ্ছে জমির উর্বরতা।এ চিত্র দেশের সব যায়গায়। কেন হচ্ছে? কারন, কৃষি অফিসের তদারকির অভাবে রাজনৈতিক নেতাদের সহয়তায় অবৈধ সার বিক্রয়কারীরা অজ্ঞাত স্থান থেকে সার ক্রয় করে বাজারজাত করার ফলে সার ও কীটনাশকে ভেজালের মাত্রা বেশি দেখা যায়। কৃষি অফিসের সঙ্গে বিশেষ সমঝোতায় বানেশ্বর এলাকার দুজন ও পুঠিয়া সদর এলাকার দুজন সার ও বালাই নাশক ডিলার বিভিন্ন দেশের মোড়ক ব্যবহার করে ভেজাল রাসয়ানিক, জৈব, দস্তা, জিংক তৈরি করে বাজারজাত করছে।
হে স্বাধীন তরুন দেখ! স্বাধীন দেশের ডাক্তার কেমন? ২০১৪-তে একটি পত্রিকার রিপোর্টে অভিযোগ করা হয় ঘুষ ও গিফটের বিনিময়ে প্রেসকৃপশন লিখছেন ডাক্তাররা। বাংলাদেশ মেডিকাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব প্রফেসর ডা. এম ইকবাল আর্সলান জানান, বর্তমানে দেশে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় ৬৫,০০০। এদের কাছে ঘুষ এবং গিফট পৌছে দেয় বিভিন্ন ওষুধ কম্পানি নিয়োজিত প্রায় ৭০,০০০ মেডিকাল প্রমোশন কর্মী। পিজি হসপিটালের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর রশিদ-ই-মাহবুব জানান, পড়াশোনায় অনগ্রসর প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং বস্তি ও গার্মেন্টস এলাকায় ছোট কম্পানির ওষুধ বেশি বিক্রি হয়। কারণ, ওষুধ সম্পর্কে ভোক্তার ন্যূনতম ধারণা না থাকার সুযোগ নিয়ে হাতুড়ে চিকিৎসক ও ওষুধের দোকানদাররা নিম্ন মানের ওষুধ বিক্রয় করে দেয়। এর ফলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।
আরেকটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রামে ওষুধের বাজার তদারকি ও মান নির্ণয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আশানুরূপ সুফল মিলছে না। বাজারে ভেজাল, মেয়াদোর্ত্তীর্ণ ও দফায় দফায় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি জনমনে চরম সংশয় ও ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। বাজারজাত ওষুধ নিয়ে আইনের জেল-জরিমানার বিধান থাকলেও তা কার্যকর না হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামে অবস্থিত সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন ধরনের ৪১টি ওষুধ পরীক্ষায় মানহীন হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে।
হে স্বাধীন দেশের তরুন দেখ! তোমার হীতকারী পুলিশ ও বিচারকদের কান্ড।রাজধানীর রামপুরা বনশ্রীর মূল সড়কের পাশে বনশ্রী কেন্দ্রী জামে মসজিদ মোড়। সোমবার ১০ নভেম্বর সকালে ওই মোড়ে শাদা রংয়ের একটি প্রাইভেট কার দিয়ে সোনালি রংয়ের অপর একটি প্রাইভেট কারের গতিরোধ করা হয়। শাদা প্রাইভেট কার থেকে হ্যান্ডকাফ এবং ওয়াকিটকি নিয়ে নেমে আসে চার-পাচ যুবক। তারা পুলিশের লোক,এই পরিচয় দিয়ে সোনালি রংয়ের গাড়ি চালকের হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়। চালকের কাছে থাকা চাবিটি ছিনিয়ে নিতেই তিনি চিৎকার করে ওঠেন। তখনই পরপর দুটি গুলি হয়। গুলিবিদ্ধ চালক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সোনালি রংয়ের গাড়িটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় শাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ের লোকজন।
নিহত চালক, ফারুক খান (৩২) ও তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের ফকিরপুর থানার আটটাকি গ্রামে। খুনের ঘটনাস্থলের পাশেই রামপুরা পুলিশ ফাড়ি। ঘটনাস্থল থেকে সেখানে হেটে যেতে লাগে মাত্র দুই মিনিট। রামপুরা থানার ওসি মাহবুব আলম তরফদার বলেন, এসব হাতকড়া খোলাবাজারে কিনতে পাওয়া যায়।যদি তা-ই হয় তাহলে তাহলে এগুলো বন্ধ হচ্ছে না কেন? একই দিনে দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাও আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শাদা প্রাইভেট কারে চার-পাচ যুবকের একটি দল সুমন নামে এক ব্যক্তির অটোরিকশা থামিয়ে তার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।আরেকটি পত্রিকার রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে, থানা পুলিশ বা আদালত নয়, এলাকার চুরি ডাকাতিসহ নানা ঘটনার বিচারের দায়িত্বে নিজ হাতে তুলে নিয়েছেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই টোকেন চৌধুরী। ওই উপজেলার সব ঘটনার বিচার এখন টোকেন চৌধুরীই করছেন আর নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে এ ধরনের কথিত বিচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এলাকার এক নিরীহ যুবক। চুরি না করেও টোকেন চৌধুরীর আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হয় সম্পদ আলী (২০) নামের ওই যুবককে। এই ক্ষোভে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন ওই যুবক।
হে স্বাধীন দেশের তরুন দেখ! লঞ্চ, কার, বাস ও ট্যাংকার
আগস্টের প্রথম সপ্তাহ কাওড়াকান্দি থেকে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে লৌহজংয়ে মাওয়ায় যাওয়ার পথে বেলা এগারটার দিকে এমভি পিনাক-৬ নামে একটি লঞ্চ মাওয়া প্রান্তের পদ্মার তীব্র স্রোতের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
দুর্ঘটনাটি ঘটে তীরের খুব কাছেই। মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। তীর থেকে জনৈক ব্যক্তি মোবাইলে ফোন ক্যামেরায় এই মর্মান্তিক দৃশ্যের ছবি তোলে যা পরবর্তীতে বিভিন্ন টিভি সংবাদে দেখান হয়। এতে স্থানীয়রা সিবোট ও ট্রলারে ১১০ যাত্রীকে বাচাতে পারলেও শতাধিক যাত্রী লঞ্চের সঙ্গে ডুবে যায়। ডিজিটাল সরকারের সব সরকারি উদ্ধার প্রচেষ্টা বিফল হয়। লঞ্চটির হদিস করতে পারেনি তারা। ‘শান্তিতে, সংগ্রামে, সমুদ্রে দুর্জয়’ বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিপদে, উদ্ধারে, নদীতে দেখা যায়নি। পরবর্তী সময়ে অভিযোগ ওঠে পিনাক-৬ এর ফিটনেস সার্টিফিকেট ছিল না।ডিসেম্বরে সুন্দবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার ‘ওটি সাদার্ন স্টার-৭’ ডুবির ফলে ৩৫৭, ৬৬৪ লিটার ফার্নেস অয়েল নদীতে মিশে যায়। এই ট্যাংকার উদ্ধার সম্ভব হলেও মাস্টার মোখলেস (৫০) নিখোজ থাকেন। বিস্তীর্ণ এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়ার পর মাছ, গুই সাপ, কুমির ও ডলফিনদের ব্যাপক মৃত্যু ঘটে। সুন্দরবনের গাছের গোড়ায় তেলের আবরণের ফলে বনজসম্পদ হয় বিপন্ন। জাতিসংঘ কর্তৃক ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ রূপে ঘোষিত সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার জন্য জাতিসংঘ একটি টিম পাঠায়। অভিযোগ ওঠে ওটি সাদার্ন স্টার-৭-এর ফিটনেস সার্টিফিকেট ছিল না। আরো বড় অভিযোগ ওঠে যে এই ধরনের বিপর্যয় যে ঘটতে পারে এবং সে বিষয়ে অগ্রিম প্রস্তুতি ও করণীয় বিষয়য় সমূহে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আগেই তাদের একটি রিপোর্টে বাংলাদেশ সরকাকে সতর্ক করে দিয়েছিল। কিন্তু সরকার এই সতর্কবাণী উপেক্ষা করেছিল।
এই বছরে জানা যায় ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া ঢাকায় এসে চলছে অসংখ্য পাইভেট কার, বাস ও কোচ। এসব যানবাহনের ড্রাইভারদের অনেকেরই যথাযথ লাইসেন্স নেই। অবৈধ গাড়ি ও ড্রাইভার ধরতে পুলিশ ঢাকার চার স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রথম দিনে ১২৬টি মামলায় ১৬২,৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করে এবং একজনকে ১৫ দিনের কারাদন্ড দেয়। বিআরটিএ জানায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি ধরার অভিযানে সারা দেশে ২,৫০৭টি মামলা, ১২১টি গাড়ি জব্দ ও ড্রাইভারকে দন্ডিত করা হয়েছে।এর পরিণতিতে রাজধানী থেকে উধাও হয়ে যায় প্রায় সব পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। পরিবহন সংকটে হয় প্রচণ্ড জনদুর্ভোগ।
হে স্বাধীন দেশের তরুন দেখ! বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট
এই বছরে জানা যায় মিডল ইস্টগামী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিক্রি হচ্ছে।নিজেদের কেনা ক্রু দিয়ে চালানো হচ্ছে এ ধরনের ফ্লাইট। এয়ারক্রাফট ভর্তি হয়ে আসছে সোনা, ওষুধ এবং বিদেশী মুদ্রার চালান। চোরাই পণ্যের চালান নির্বিঘ্নে পার করতে এয়ারপোর্টে কর্মরত সব সংস্থার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কিনে ফেলা হচ্ছে। এরপর মুনাফা হচ্ছে শত কোটি টাকা। ভাগ যাচ্ছে বিমানের সংশ্লিষ্ট শাখায় অসাধু কর্মকর্তাদের কাছে। টাকার লোভে বিমান ও এয়ারপোর্টের প্রায় সব শাখার অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বাইরে অসাধু ব্যবসায়ী একবিন্দুতে মিলে একটি চক্র গড়ে তুলেছে। এরা কয়েক বছর ধরে নির্বিঘ্নে চোরাই পণ্যের ব্যবসা করে যাচ্ছে।বিমানের এমডি ক্যাপ্টেন মোসাদ্দেক আহম্মেদ জানান, বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে ব্যবহার করে চোরাকারবারিরা বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান করছে এটা ঠিক। বিমানের কয়েকটি ফ্লাইট থেকে চোরাই পণ্য উদ্ধার হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় কতিপয় ক্রুর বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন আছে।অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চোরাচালানিদের কাছে সবচেয়ে দামি রুট হচ্ছে দুবাই, জেদ্দা, রিয়াদ দাম্মাম ও কুয়েত। মিডল ইস্টের এসব রুমে বিমান নিজস্ব এয়ারক্রাফট পরিচালনা করে আসছে। বিমানের শিডিউলিং অপারেশন ও ট্রেনিং শাখার কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের কাছে ফ্লাইট বিক্রির সঙ্গে জড়িত। প্রতি ফ্লাইটের জন্য এরা নিচ্ছে ১০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা। এরপর সংশ্লিষ্ট ফ্লাইটে চক্রটির আগাম কেনা ককপিট ও কেবিন ক্রুদের ডিউটি দিচ্ছে। এদের মধ্যে কেবিন ক্রুরা মূলত চোরাই পণ্যের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কেবিন ক্রুদের অধিকাংশই বিমানে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত। চোরাই সিন্ডিকেটের কাছে ক্রু বিক্রির জন্য, মূলত সংশ্লিষ্ট বিভাগ ক্রু শিডিউলিং অটোমেশন করছে না। কাজটি তারা এখনো ম্যানুয়ালি সারছেন। অথচ এ কাজের জন্য ২০ কোটি টাকায় অত্যাধুনিক মেশিন কেনা হয়েছে।
হে স্বাধীন দেশের তরুন দেখ! মালটি পারপাস কম্পানি ও ব্যাংকগুলোর দিকে।ঢাকায় গাজীপুরে ইসলামি মালটি পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড গ্রাহকদের কাছ থেকে ১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একইভাবে এক কোটি টাকা নিয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তারা পালিয়ে যায়।প্রায় একই সময়ে, নভেম্বরে, আশুলিয়ায় মালটি পারপাস ব্যবসার নামে প্রতারণা করে যমুনা সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি। এই সংস্থার কর্মকর্তারা প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা এলাকাবাসীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়।এপ্রিলে প্রকাশিত, ‘সমবায় সমিতি ব্যবস্থাপনা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একটি রিসার্চ রিপোর্টে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলে, ১০ মার্চ ২০১৩ থেকে ২৫ মার্চ ২০১৪ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় সমবায় খাতে প্রায় ৯ লক্ষ গ্রাহকের ৯,০৭০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে ২১টি বহুমুখী সঞ্চয় ও ঋণদান প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি গ্রাহকের ১,১১৪ কোটি টাকা নিজেদের একাউন্টে সরিয়ে ফেলেছে ডেসটিনি মালটি পারপাস কম্পানি।ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য বেড়েছে ২০১৪-এ। রাজনৈতিক বিবেচনায় (অর্থমন্ত্রীর ভাষায়) নতুন লাইসেন্স দেওয়া হলেও অনভিজ্ঞ কিন্তু অর্থলোভী উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টায় কোনো সামাজিক, নৈতিক এমনকি অর্থনৈতিক বিবেচনা লক্ষ্য করা যায়নি।সরকারি ব্যাংকে ইন্টার্নাল অডিট সিসটেমের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। সরকারি মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের বিশাল পতন ঘটেছে। এই ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানান, ব্যাংকটি তার ৩৩৫ গ্রাহকের কাছে ৪,২৩৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে যাদের মধ্যে ১৪ জন গ্রাহককে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো জানান, ১৩৩ গ্রাহককে ২,২৩৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে যথাযথ ডুকুমেন্টশন ছাড়া। ফলে তাদের কাছ থেকে এই ঋণ আদায় করা প্রায় অসম্ভব। এদের মধ্যে আছেন রাজনৈতিক দলগুলোর অনুগ্রহভাজন।এই বছরই ইউএনডিপির একটি রিপোর্ট জানিয়েছে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হওয়া দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান দ্বিতীয় ছিল। প্রথম স্থানে ছিল আইভরি কোস্ট। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে ২০১২ সাল পর্যন্ত সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের আমানত ১,৯০৮ কোটি টাকা ছিল। ২০১৩ সালে সে অর্থ ৩,১৬২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। পাশের দেশ মালয়শিয়ায় সেকেন্ড হোম স্কিমে বহু বাংলাদেশি বিনিয়োগ করে সে দেশের নাগরিকত্ব লাভ করেছেন। মালয়শিয়া মাত্র ২০০২ সালে এই সেকেন্ডে হোম সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং প্রকাশ্যে এদেশের পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন প্রচার করে আসছে। এরই মধ্যে বহু লক্ষ ডলার পাচার হয়ে গিয়েছে। আগে ওই কর্মসূচিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশের নাম ছিল না। বর্তমানে এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চায়না ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তিন হাজারের বেশি বাংলাদেশি মালয়শিয়ায় দ্বিতীয় আবাস গড়েছেন। এতে তারা বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা যা বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে। এই তালিকায় আছেন পলিটিশিয়ান, ব্যবসায়ী ও আমলা।২০১৪-তে ব্যাংকিং অনিয়ম ও লুটপাটে অনুপ্রেরণা পেয়েছে ব্যাংক ডাকাতরা। তারা ডকুমেন্টশন, লোন রিশিডিউলিং ও লোন ডিফল্টের ঝামেলা পোহাতে চান নি। তারা সরাসরি ব্যাংক ডাকাতি করেছেন। ফলে ২০১৪-তে জানা গেেেছ সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের ব্যাংকের বিভিন্ন শাখাতে ফিজিকাল সিকিউরিটি খুবই দুর্বল। অভিনব সব স্টাইলে এসব ডাকাতি ঘটে কিশোরগঞ্জ (সুড়ঙ্গ কেটে সোনালী ব্যাংক), জয়পুরহাট (জনতা ব্যাংক), ঝিনাইদহ (গ্রামীণ ব্যাংক), শ্রীমঙ্গল (সোনালী ব্যাংক), পটুয়াখালী গলাচিপায় (পূবালী ব্যাংক) ভোলা ও ময়মনসিংহ (ব্র্যাক ব্যাংক) ও রাজশাহীতে (সুড়ঙ্গ কেটে সোনালী ব্যাংক)।
হে স্বাধীন দেশের তরুন দেখ! বাংলাদেশ ব্যাংক নোট
তবে বছর জুড়ে ব্যাংক ডাকাতরা তৎপর থাকলেও তাদের কেউ কেউ হয়তো আশানুরূপ ফল পাননি। হয়তো লুট ভাগাভাগি করার সময়ে তারা টের পেয়েছেন অনেক ব্যাংক নোটই জাল। এসব ডাকাতদের নিরুৎসাহিত করতে (এবং সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বছর জুড়ে দৈনিক পত্রিকায় বড় বড় বিজ্ঞাপন দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কোনটা আসল নোট এবং কোনটা জাল নোট। অর্থমন্ত্রী মি. মুহিত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মি. আতিউর রহমানের সদ্য হাস্যময় চেহারা দুটির বিপরীতে নিউজপৃন্টে এসব বিজ্ঞাপনে ছাপানো নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের চেহারাটিকে বেশ মলিন মনে হয়েছে। আরো দেখ! জাল মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ও জিপিএ-৫ বিভিন্ন পত্রিকার হিসাব মতে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত ১৫১ জন সরকারি কর্মকর্তা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রূপে প্রমাণিত হন। এরপর সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর ছয় মাস ব্যাপী অনুসন্ধানের পর পেশকৃত একটি রিপোর্টে অভিযোগ করা হয় সরকারের পাঁচ উচ্চতর অফিসারের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট জাল এবং তাদের সেসব সার্টিফিকেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়। এই পাচজন অফিসার ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (ওএসডি) সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী, একই মন্ত্রণালয় থেকে ওএসডি হওয়া যুগ্ম-সচিব আবুল কাসেম তালুকদার, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সচিব একেএম আমির হোসেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব নিয়ামউদ্দিন মিঞা এবং প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান। দুদক সূত্রে বলা হয় এই পাঁচ সচিব যুদ্ধে অংশগ্রহণের পক্ষে কোনো দালিলিক প্রমাণ দেখাতে পারেননি। রিপোর্টে আরো বলা হয় একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাদের বয়স ছিল কম।
জালিয়াত মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট বিষয়ে তথ্য প্রকাশিত হবার পরপরই সেপ্টেম্বরেই অভিযোগ ওঠে আগস্টে প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল ও সার্টিফিকেট সমূহের উপকারিতা নিয়ে। ঢাকা ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলের আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানান, ভর্তি হওয়ার জন্য তাদের ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০,৫৬৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৩,৮৭৪ জন পাস করেছে। অর্থাৎ, পাসের হার মাত্র ৯.৫%। পাসের হার ছিল ২১.৫ শতাংশ তবে তাদের ‘গ’ ইউনিটে পাসের হার ছিল ২০.৫%।এর ফলে অভিভাবকদের মনে গভীর সন্দেহ হয় আসলেই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে কোন ধরনের সার্টিফিকেট পাচ্ছে তাদের সন্তানরা?ভেজাল! ভেজাল! আর ভেজাল!
হে স্বাধীন দেশের তরুন দেখ! তোমার অনৈতিক মন্ত্রী ও অকার্যকর বিরোধী দল।মহাজোট সরকারের তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে তাদের লিগাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপৃম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সংবিধান লংঘনের দায়ে এ তিন মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হয়। যদি তা না করা হয় তাহলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং ভুমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও কম্পানির পরিচালক হওয়ায় তাদের এই নোটিশ পাঠানো হয়। সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় লাভজনক কম্পানির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো বিধান নেই। কিন্তু যাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে, তারা বিভিন্ন লাভজনক কোম্পানির পরিচালক পদে রয়েছেন, যা সংবিধানের ১৪৭ অনুচ্ছেদের সরাসরি লঙ্ঘন।
এর আগে ৫ জানুয়ারি ২০১৪-র প্রহসন নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেয় বিজয়ী আওয়ামী লীগ। সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী রূপে আসন নেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হু. মু. এরশাদের স্ত্রী মিসেস রওশন এরশাদ। কিন্তু এরশাদ হন মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং তার দল থেকে মন্ত্রী হন তিনজন (আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক ও মশিউর রহমান রাঙ্গা)। প্রেমিক এরশাদ বহু প্রেমের নৌকায় পা রাখতে কুশলী হলেও তার পার্টিকে যুগপৎ বিরোধী ভুমিকায় এবং সরকারি নৌকায় রাখতে বছর জুড়ে তিনি হিমসিম খেয়েছেন। জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ে প্রচণ্ড মতানৈক্য প্রকাশ পেয়েছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যারা বিশ্বাস করেন, তারা অভিযোগ করেছেন ইনডিয়া পোষিত শেখ হাসিনা শুধু যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস করেছে তা নয়,তিনি বিরোধী দলের কনসেপ্টও ধ্বংস করেছেন।
হে স্বাধীন দেশের তরুন দেখ! তোমার নির্বাচন ও সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার আগে ২০১৩ জুড়ে চলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশোধিত সংবিধানের অধীনে (যে সংশধনের কোনো ম্যানডেট ছিল না) যেন বিএনপি ও বিরোধী দলগুলো পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেয় সেই লক্ষ্যে আসতে থাকে তাদের প্রতি ইনডিয়ার চাপ এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও ইওরোপিয়ান ইউনিয়নের অনুরোধ। এমন কি বিএনপির মধ্যে একটি অংশও চাইছিলেন নির্বাচনে যেতে। কিন্তু খালেদা জিয়া অনুমান করেন নির্বাচনে কারচুপি করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে যাবে এবং দুই. নির্বাচনে বিরোধী দল রূপে ‘নির্বাচিত’ করা হবে জাতীয় পার্টিকে। পরবর্তীকালে খালেদা জিয়ার দুটি অনুমানই সত্যি প্রমাণিত হয়।৫ জানুয়ারি ২০১৪-র নির্বাচনে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান ১৫৩ জন। নির্বাচনের দিন ৫৯ জেলার বাকি ১৪৭ আসনে যে প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তাদের বেশির ভাগই ভোট দিতে যাননি। দেশের ১৯টি কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। যেমন, লালমনিরহাট-৩ আসনে ২৭টি কেন্দ্রের কোনোটিতেই ভোট পড়েনি। ১৬টি কেন্দ্রে ভোট পড়ে ১ থেকে ৬৩! উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় ভোটার ছিল সবচেয়ে কম। অর্ধেক কেন্দ্রে ভোট গ্রহণই হয়নি। রাজশাহী, পাবনা, চাপাইনবাবগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, ফেনী ও ঢাকার কয়েকটি আসনে ভোটার উপস্থিত কম ছিল।এর মধ্যে প্রাপ্ত হিসেবে দেখা যায়, মিনিটে ১৮ ভোট পড়েছে ঢাকা-১৮ আসনের কয়েকটি কেন্দ্রে। আবার নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও তাড়াইল এবং সিরাজগঞ্জ-৫, রাজশাহী-৬, লক্ষ্মীপুর-৪ প্রভৃতি আসনের কয়েকটি জায়গায় ব্যাপক জাল ভোট দেওয়ার পরও ভোটার উপস্থিতি খুব বেশি দেখানো যায়নি। এ জন্য ভোট গ্রহণ শুরুর পর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ১৯ প্রার্থী। পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনা তার পীরগঞ্জের আসন ছেড়ে দিলে সেখান থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন শারমিন চৌধুরী শিরীন। এর ফলে মোট ১৫৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া প্রার্থীরা নির্বাচিত হন।প্রশ্ন ওঠে বাকি ১৪৬টি আসনে কতো শতাংশ ভোট পড়েছিল?ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং এলায়েন্স (ফেমা)-এর প্রধান মুনিরা খান বলেন, নির্বাচনে সব মিলিয়ে ১০ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছে। আমি নিজে রাজধানীর বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়েছি। তাতে খুব কম ভোটারের উপস্থিতি দেখেছি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের পর্যবেক্ষকেরা যেসব খবর দিয়েছেন তাতেও ১০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে।বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের এডভোকেট এ কে আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভোটকেন্দ্রগুলোয় ভোটার ছিলেন খুবই স্বল্পসংখ্যক। বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল শতকরা শূন্য ভাগ থেকে ১০ ভাগ পর্যন্ত। কিছু কিছু কেন্দ্র ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থী ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ওই সব আসনে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ ভাগের বেশি ভোট পড়েনি। নির্বাচনকালে ১৫ জন নিহত ও দুই হাজার মানুষ আহত হয়েছে। ভোট স্থগিত হয়েছে ১৪৯টি কেন্দ্রে। রাজধানীর বেশ কিছু কেন্দ্র ভোটারবিহীন থাকলেও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর প্রতিনিধিরা এলে হঠাৎ করে ৪০-৫০ জন দলীয় কর্মী লাইন ধরে ভোটার লাইনে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ১০ ভাগ ভোটার উপস্থিতির নির্বাচনকে প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন বলা যায় না। এ জন্য তারা অবিলম্বে এ নির্বাচন বাতিল করে সব দলের অংশগ্রহণে নতুন তফসিল দেয়ার দাবি জানান। আগেই নির্বাচিত ১৫৩ আসনের ফলাফলও বাতিলের দাবি জানান তারা।
২০১৪ তর্ক চলতে থাকে বিশেষত বিএনপির মধ্যে, নির্বাচন বর্জন করাটা ভুল হয়েছিল কি না? সেই তর্কের শেষ হয় ১ নভেম্বরে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ. টি. ইমাম গোমর ফাক করে দেন। ওইদিন টিএসসিতে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এইচ. টি. ইমাম সগর্বে বলেন, ‘নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ পুলিশ ও প্রশাসনের যে ভুমিকা, নির্বাচনের সময় আমি তো প্রত্যেকটি উপজেলায় কথা বলেছি, সব জায়গায় আমাদের যারা রিক্রুটেড, তাদের সঙ্গে কথা বলে, তাদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট করিয়ে আমরা নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে দাড়িয়েছে, বুক পেতে দিয়েছে।’আর খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত যে ১০০% সঠিক ছিল সেটা হয় প্রমাণিত ।
হে স্বাধীন দেশের তরুন! যদি এ ফিরিস্তিগুলোকে তোমরা নিয়তিই ভাব তাহলে মনে রেখ, তোমরা আর স্বাধীনতার স্বাধ পাবে না আর যদি নব উদ্দমে জেগে উঠ তাহলেই তোমরাই হতে পার অসীম সাহসী যোদ্ধা।তোমরা যদি সঠিক ব্যবস্থাপনা, উপযুক্ত শিক্ষা আর যথার্থ প্রশিক্ষণ নিতে পার ও জনশক্তিতে রূপান্তর ঘটাতে পার তাহলে বিপুল এই জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়ে উঠতে পারে।এই জনগোষ্ঠীর ৩ ভাগই তোমরা তরুণ। তাদের মাধ্যমেই বাস্তবে রূপ নিতে পারে সব স্বপ্ন ও সম্ভাবনা।সুতরাং তোমরা জেগে উঠ! জেগে উঠ! জেগে উঠ!
বিষয়: বিবিধ
১২৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন