আমি একজন নাগরিক হিসেবে কেমন প্রধান মন্ত্রী চাই?
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৭:৪৩:৫৩ সন্ধ্যা
কোন দেশের নাগরিক তখনি কেউ হতে পারেন যখন সে দেশের সরকারের বৈধ স্বীকৃতি থাকে ও সরকার কতৃক দেয়া তার সামজিক পরিচয়পত্র থাকে।নাগরিক হিসেবে তিনি আল্লাহর দেয়া প্রাকৃতিক সবকিছু যেমন ভোগ করেন তেমনি সরকারের দেয়া সব সুযুগ সুবিধাও ভোগ করেন।নাগরিকরা তাদের পক্ষ থেকে দেশ চালনা করার জন্য নেতা নির্বাচন করেন।সেহেতু নেতারা হলো নাগরিক কতৃক নিয়োগ কৃত কর্মচারি বা এককথায় বলা যায় কামলা।আমরা যখন ব্যাক্তিগতভাবে কাউকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমাদের কাজে নিয়োগ করি তখন তার সাথে একটি চুক্তি হয়।সেভাবে একজন নেতাও ৫ বছর দেশের কাজে তার কর্তব্য পালন করার জন্য নিয়োজিত হয়।এখানে মালিক ও কর্মচারির মধ্যে থাকে সম্মান ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক। মালিক ও নেতাকে কিছু নিয়মকানুন পালন করতে হয় যা আমাদের সংবিধানে বেধে দেয়া আছে যদিও তারা তা পড়েন না বা অনুসরন করেন না।তবে প্রত্যকে নিয়োগ কৃত নেতাকে তা পরিপূর্নভাবে জানা ও পড়া উচিত।একজন অবিবাহিত পুরুষ বা মহিলার জন্য বিবাহের নিয়মকানুন জানা তেমন ফরয নয় তবে জানলে ভাল কিন্তু যখনি কেউ বিয়ে করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে তখনি তার জন্য বিবাহের নিয়মকানুন জানা ফরয।সেভাবে একজন নাগরিকের সংবিধান সম্পর্কে জানা তেমন ফরয নয় তবে তিনি যদি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা করেন তাকে অবশ্যই সেখানে যেনে বুঝে যেতে হবে যাতে তিনি তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন।আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার সংবিধানকে জানার চেষ্টা করি কারন আমার এমপি বা মন্ত্রী বা আমলারা সঠিক পথে আছেন কিনা? সঠিক পথে দেশ পরিচালনা করছেন কিনা?আমি মালিক হিসেবে তারা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করছেন কিনা? আমি একজন মালিক হিসেবে আমার কর্মচারির ভুল ধরতেই পারি এবং এটা আমার অধিকার।কিন্তু আমার কোন কর্মচারি যদি উল্টো আমাকে খর্ব করতে আসে বা আমাকে কারাগারে নেয়ার ভয় দেখায় তখনি তৈরি হয় বিপর্যয়।আমরা গ্লোবালি এই বিপর্যয়ের মধ্যে আমাদের দিনাতিপাত করছি।আমি একজন নাগরিক হিসেবে চাইতেই পারি আমার দেশ কেমন করে চলবে? আমার অর্থনীতি কেমন করে চলবে? আমার সামাজিক নীতি কেমন করে চলবে? আমি পরামর্শ দিব,ভুল হলে আমি কটাক্ষ করবো,আমার দেশে কাজ ঠিকভাবে না চললে আমি তাদের সরিয়ে দেয়ারও অধিকার রাখি।আমাকে যদি অনৈতিক কারনে চোখ রাংগানো হয় আমি ভদ্রভাবে তার জবাব দিব।প্রয়োজন হলে আমি আইনের আশ্রয় নিব।কিন্তু যদি আমার কর্মচারি আইনের কলাকাঠি নাড়ে,যদি আইনের শাসন না থাকে তখন আমি মালিক হিসেবে যাব কোথায়? এ রকম একটি সমাজে আমি আমার মালিকানা ভোগ করছি।ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ,‘দ্য চিকেন্স আর কামিং হোম টু রুস্ট’- মুরগির ছানাগুলো ডিম পাড়তে/বিশ্রাম নিতে একে একে ঘরে ফিরছে।মানুষের মুখের কথাও মুরগির ছানার মতো উড়ে যায়, কিন্তু সময় হলে সে কথাও বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে। দুর্ভাগ্য, এই সহজ জ্ঞান ও বুদ্ধির কথা বাংলাদেশের কোনো কোনো রাজনীতিক বুঝতে কিংবা মনে রাখতে পারেন না।আমরা যারা জনগন(দেশের মালিক) দেশের জন্য কথা বলি তাদের উচিত নয় অন্ধভাবে কারো পক্ষ অবলম্বন করা।যখনি যে প্রধানমন্ত্রী থাকেন ,মন্ত্রী থাকেন বা এমপি থাকেন তাদের ভাল কাজে উৎসাহ দেয়া আমাদের কর্তব্য আর খারাপ কাজগুলোকে সংশোধন করার জন্য জানিয়ে দেয়া আর যদি অত্যাচারির অবস্হান নেয় তাহলে দেশবাসি একত্রিত হয়ে কোন অনাচার না করে সাংবিধানিক উপায়ে তাদের সরিয়ে নতুন সরকার গঠন করার জন্য কাজ করা।কিন্তু আমরা বিভক্তির কারনে এ কাজও করতে পারছিনা।তবে আমাদের ব্যাক্তিগত অধিকার রয়েছে আমাদের অভিমত পেশ করার এবং জানানোর।অতীতে যারা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তারাও একে অন্যের নিন্দাবাদ করেছেন।হতে পারে কেউ বেশি বা কম।
আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ভাষা নিয়ে আমি একজন নাগরিক হিসেবে খুব বিপর্যস্ততার মধ্যে আছি।শুধু আমি নই,যখনি যেখানে যাই মানুষ বলতে থাকে প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন কথা মানায় না।তিনি তো প্রধানমন্ত্রী! বাংলাদেশের মানুষ নিন্দাবাদ করছে ১৯৯১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দশ বছর পর মুক্ত নির্বাচন হয়েছিল।বহু দেশ থেকে শত শত পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক সে নির্বাচন দেখতে এসেছিল।তার আগে দুই প্রধান দলের নেত্রীকে তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ঘোষণার জন্য বিটিভিতে ৪৫ মিনিট বক্তব্য রাখার সুযোগ দেয়া হয়। বিএনপির এবং সামরিক স্বৈরতন্ত্রবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মোটামুটি তার নির্বাচনী বক্তব্যই রেখেছিলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা পুরো ৪৫ মিনিট ধরেই জিয়াউর রহমান এবং তার পত্নী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুৎসিত ও কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ করেন। নির্বাচনে জয়ী হলে তার সরকার কী করবে সেসব কথা কিছুই বলেননি তিনি।সেই সন্ধ্যা পর্যন্ত বিবিসির মার্ক টালি, আতাউস সামাদ এবং সিরাজুর রহমান সহ ঢাকায় সমবেত বিশাল সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক বাহিনী মোটামুটি একমত ছিলেন যে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হবে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হবেন প্রধানমন্ত্রী।কিন্তু তার সেই বক্তৃতার আছর পড়েছিল জনমনে।আমরা যখন কারো বক্তৃতা শুনি তখন আশা করি ভাল কিছু কথা।সেভাবে জনগন যখন কোন রাজনৈতিক নেতার কথা শুনেন তারা আশা করেন দেশের উন্নয়নের কথা ,তাদের আশা আকাংখ্যার কথা শুনার।যখন তারা তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ও অযোগ্য নেতৃত্ব দেখে তখনি পরিবর্তনের ডাক দেয়।যেভাবে ডাক দিয়েছিল মানুষ আর হেরে গিয়েছিল বিএনপি।
আওয়ামিলীগের আরেকটা ব্যাপার তখন লক্ষ্যনীয় ছিল- বহু বিদেশী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক লক্ষ করেছিলেন। মিরপুর নির্বাচনী কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. কামাল হোসেন অপেক্ষাকৃত অজানা বিএনপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। ড. কামাল হোসেন মার্জিত গণতন্ত্রের রীতি অনুসারে তার বিজয়ী প্রতিদ্বন্দ্বীকে অভিনন্দন জানান।এ ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিবিরে যেন একটা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তার অনুসারীরা ড. কামাল হোসেনকে অপমানিত করেন, লাথি-কিল-ঘুষিতে তার গাড়ির প্রচুর ক্ষতি করেন। এই ঘটনা অবশ্যই নিকৃষ্ট মনের প্রতিহিংসাপরায়ণতার পরিচয় দেয়। আর প্রথমোল্লিখিত ঘটনার ব্যাপারে অনেকেই বলাবলি করছিলেন যে এ ভাষণ অমার্জিত। যাই হোক, আওয়ামী লীগের সেই অপ্রত্যাশিত পরাজয়ে দলনেত্রীর মানসিকতা যে একটা বড় ভূমিকা নিয়েছিল সে সম্বন্ধে কারো কোনো সন্দেহ ছিল না। শুভানুধ্যায়ীরা এ আশাও করেছিলেন, এরপর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের রাজনৈতিক স্বার্থেই ভাষায় ও আচরণে বিশেষ সংযমী আচরণ করবেন।দুর্ভাগ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ যাবৎ কথায় ও কাজে বরং উল্টোটারই প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক বিরোধীদের সম্বন্ধে তার ঘৃণা, প্রতিহিংসা ও অসৌজন্যমূলক বক্তব্য ক্রমেই তীব্রতর হয়েছে। বিশেষ করে একাত্তরের স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার নিয়ে। ২০০৯ সালে সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে যেসব গালিগালাজ করেছেন।একই ভাষণে তিনি বাংলাদেশের সংসদ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনের মর্যাদাকে কলঙ্কলেপিত করলেন। আর সংসদের বাইরে তো তার গালাগালের ভাষা প্রয়োগের সীমা-পরিসীমা থাকে না। সেসব ভাষা শুনলে স্বভাবতই মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন জাগে যে তিনি এমন করছেন কেন? আমাদের ট্যাক্ক্সের টাকায় যে সংসদ চলে সেখানে এ সব অশ্লিলতা আমরা কোন সরকারের কাছেই আশা করিতে পারি না।
আরো একটা কথা। আমরা যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করি, রাসূলুল্লাহ সা:-এর উক্তি ও তার আচরণের দৃষ্টান্ত আমরা পবিত্র মনে করি। এ গল্প নিশ্চয়ই সবার জানা আছে। একজন লোক পুত্রকে তাঁর কাছে নিয়ে এসেছিল। ছেলেটি সব সময় মিষ্টান্ন খেতে চায়, অথচ যখন তখন মিষ্টান্ন কিনে দেয়ার সঙ্গতি দরিদ্র লোকটির ছিল না। রাসূলুল্লাহ সা: কয়েক দিন পরে ছেলেটিকে নিয়ে আসতে বললেন। সে তারিখেও তিনি তাদের ফিরিয়ে দিয়ে নতুন একটা তারিখ দিলেন। এবারের তারিখে মহানবী সা: ছেলেটিকে বুঝিয়ে বললেন এবং ছেলেটি মিষ্টান্ন খাওয়ার জেদ ছেড়ে দিলো। কয়েক দিন পরে লোকটি আবার এসে মহানবী সা:কে জিজ্ঞেস করেছিল, কেন তিনি সরাসরি উপদেশ না দিয়ে ছেলেটিকে একাধিকবার তাঁর কাছে নিয়ে আসতে বলেছিলেন। ইসলামের মহানবী সা: তাকে বুঝিয়ে বলেছিলেন যে, নিজেও তিনি মিষ্টান্ন খেতে ভালোবাসতেন। তিনি জানতেন নিজেকে সংযত না করে পরামর্শ দিলে ছেলেটি সে পরামর্শ মেনে নিত না। সে জন্য পরামর্শ দেয়ার আগে তিনি নিজের মিষ্টান্ন খাওয়ার ইচ্ছা সংযত করেছিলেন এবং তাতে কিছু সময় লেগেছিল।প্রধানমন্ত্রী দেশের তরুণসমাজকে উপদেশ দিয়েছিলেন, সোনার বাংলা যদি গড়তে চাও আগে তোমরা সোনার মানুষ হও। বাংলাদেশের তরুণেরা সোনার মানুষ হতে শুরু করেছে কি? আমার মনে হয় না। প্রথমেই প্রশ্ন উঠবে উপযুক্ত উপদেশটি দেয়ার কতটুকু যৌক্তিকতা প্রধানমন্ত্রী লালন করেন? তিনি কি দেশের মানুষের প্রতি ন্যায়বিচার করার প্রতিষ্ঠান গুলো তৈরি করতে পেরেছেন?কোথাও কি সুশাসন আছে? সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য যে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন সে ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা কি তিনি বা তার সরকার করেন? তিনি কি দেশের সেবাকে ব্যক্তিগত ঘৃণা, প্রতিশোধ বাসনা ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে বিবেচনা করেন? সোনার বাংলা গড়তে হলে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী বা উপদেষ্টাদেরও সোনার মানুষ হতে হবে।সেটা যদি না হয় তাহলে তরুণসমাজকে সে উপদেশ দেয়ার যোগ্যতা তিনি অর্জন করেননি বলতে হবে এবং ধরে নিতে হবে যে তার এই উপদেশে কাজ হবে না।ছাত্রলীগের কাজকর্ম কি তিনি দেখেন না তারা প্রতিনিউয়ত কি করছে? বরং মন্ত্রিদের কেউ কেউ তাদের অনৈতিক কাজের প্রশংসা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ যে উপদেশ দিয়েছেন বেগম জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক জিয়াকে। তিনি তারেককে জিহ্বা সামলানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সমস্যা হচ্ছে, তরুণেরা ভাষা এবং আচার-আচরণ শিখে অগ্রজদের কাছ থেকে।প্রধানমন্ত্রী আর তারেক তো এক বয়স ও মাপের নয়।তিনি বয়োজেষ্ঠ ও তারেক তরুন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি একটা দৃষ্টান্তও তুলে ধরতে পারতেন যে তিনি রাজনৈতিক বিরোধীদের ব্যাপারে নিজের জিহ্বাকে সংযত করতে পারছেন, তাহলে আমরাও তারেকের কথাগুলোর প্রতিবাদ করতে পারতাম।অন্য দিকে তারেক প্রধানমন্ত্রীর মুখে ছোটবেলা থেকেই নিজের পিতামাতা ও পরিবার সম্বন্ধে এত বেশি ন্যক্কারজনক গালিগালাজ শুনেছেন যে অবশেষে নিজ পরিবারের সুনাম রক্ষার জন্য পাল্টা আক্রমণ করা কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তিনি মনে করতে পারেন।এ প্রসঙ্গে তিনি অনেক উদ্ধৃতি ও সাক্ষ্যপ্রমান স্হাপন করেছেন যা আওয়ামি ঘরানোর অনেক লেখকদের বইতে ছাপা হয়েছে।তারেক নতুন প্রজন্ম হিসেবে ইতিহাসের সে সব লেখা বিশ্বাস করলেও অসুবিধা কোথায়? কারন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসতো দু'দলের বুদ্ধিজীবিরাই বিকৃত করছে।এখন কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক আমাদের অনেকের বুঝে উঠা মুশকিল।তবে তারেক রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্গা থাকার প্রয়োজন রয়েছে।দেশকে নেতৃত্ব দিতে হলে অতীতকে যারা ঘাটবে তাদের ব্যাক্তিত্ব ক্ষুন্ন হবে।অতীত থেকে ভালটি গ্রহন করতে হবে আর মন্দটিকে বর্জন করতে হবে আর চিন্তা করতে হবে ভবিষ্যৎ কল্যানের।পশ্চিমারা বলে ‘যারা কাচের ঘরে বাস করেন তাদের ঢিল ছুড়তে নেই’, ‘টিট ফর ট্যাট’, ‘যেমন আচরণ আশা করো সে রকম আচরণ করতে শেখো’ ইত্যাদি। বাংলায় বলে ‘ঢিলটি ছুড়লে পাটকেলটি খেতে হয়’ বা 'কুকুরের কাজ কুকুরে করেছে কামড় দিয়েছে পায়,তাই বলে কি কুকুর'রে কামড়ানো মানুষের সোভা পায়? বর্তমান সরকার নিছক মনগড়া অভিযোগে সরকারের বিরোধী নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা রুজু করেছে, সরকারের দলীয়কৃত বিচার বিভাগ সেসব মামলা আমলে নিয়েছে এবং দলীয়কৃত পুলিশি নির্যাতনের মতো আইনি নির্যাতন দিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতা পণ্ড করার চেষ্টা করছে।
বিগত কয়েক বছরে লন্ডনে নির্বাসিত থেকে তারেক চিকিৎসার সাথে সাথে প্রচুর পড়াশোনা ও গবেষণা করেছেন। তার কিছু কিছু পরিচয় তার বক্তব্যগুলোতে স্পষ্ট লক্ষ করা যায়।এ সুযুগটি আওয়ামিলীগই করে দিয়েছে।যদি তার উপর অত্যাচার না হতো এবং সে দেশে থাকতো তাহলে আজকের এ ঘটানটি ঘটতো না। আওয়ামী লীগের অতীত ও বর্তমান নেতাদের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ করার সময় তিনি সব সময় কোনো প্রামাণ্য দলিল কিংবা সম্মানিত ও বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিত্বদের গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছেন। মনগড়া কোনো অভিযোগ করছেন না।
এ অবস্থায় তারেককে ‘উন্মাদ’ আর ‘অশিক্ষিত জানোয়ার’ বলে গালি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করেছেন।আসলে তার মন্ত্রিসভায় এবং উপদেষ্টাদের অনেকেই যারা প্রধানমন্ত্রীর সন্তুষ্টি ও আনুকূল্য লাভের আশায় পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতা করে মুখ ও কলম দিয়ে যেন অনর্গল বর্জ্য পদার্থ বের করছেন।
তারেকের বাবা-মাকে গালিগালাজ করা হলে, বিশেষ করে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গালিগালাজ করা হলে তিনি যে মনে ব্যথা পাবেন, সেটা স্বাভাবিক! মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে একটি সেক্টরের অধিপতি ছিলেন তিনি, তার জেড-ফোর্সের সুনাম তখন বাংলাদেশে তো বটেই, দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল। সরকারের মন্ত্রীরা তাকে রাজাকার বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান সেনাপতি এয়ার মার্শাল এ কে খন্দকারকে রাজাকার বলছেন, বংগ বীর কাদের সিদ্দিকিকেও রাজাকার বলেছেন। মোট কথা ১১ জন সেক্টার কমান্ডারের মধ্যে ছয়জনকে এযাবৎ রাজাকার বলেছেন সরকারের লোকেরা। কোথাও কেউ সরকারের সমালোচনা করলেই সে রাজাকার হয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে শেখ মুজিবুর রহমান তখন ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানে। স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে তিনি সরাসরি অস্বীকার করেছিলেন। তারেক রহমানের মনে যদি প্রশ্ন ওঠে, তার পিতাকে যখন রাজাকার বলা হচ্ছে তখন শেখ মুজিবকে কেন রাজাকার বলা যাবে না, তাহলে তাকে দোষ দেবেন কোন বিবেকসম্পন্ন মানুষ?
বাংলাদেশের মানুষ এক ডাকে চলে আসবে যদি নৈতিক মানের প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে থাকে।আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের ডাক শুনেছি,তিনি মানুষকে একত্রিত করতে পেরেছেন।এখন তিনি যদি বলেন বাংলাদেশের মানুষ তারেককে জবাব দিবে তাহলে প্রধানমন্ত্রীর তো মানুষগুলোকে বাগে নিয়ে আসার নেতৃত্ব থাকতে হবে। আমরা যে বাংলাদেশকে চিনি সে বাংলাদেশের মানুষ এ সরকারের সাথে কত% আছে? আওয়ামী লীগের ক্যাডার ও পুলিশ সহ অন্যান্য ফোর্স, দলীয়কৃত বিচার বিভাগ এবং সরকারের অনুগত দুর্নীতি দমন কমিশন ও অন্যান্য কর্মকমিশনের কিছু লোকবল ছাড়া দেশের সাধারন মানুষের সমর্থন অনেকটাই কমে গেছে।সে জন্য তারা নির্বাচন দিয়ে জনসাধারণের সমর্থন যাচাই করার সাহস রাখে না।পেছনের দরজা দিয়ে তারা গদি দখল করে রাখতে চায়।প্রধানমন্ত্রী যদি এরকম টেকনিক অবলম্বন করতে চান তাহলে ভবিষ্যত বলে দিবে বাংলাদেশের আগামী কান্ডারি কে হবে? তবে একজন সু- নাগরিক হিসেবে আমি চাই কারো পক্ষেই কাদা ছুঁড়াছুড়ি ও চুলাচুলি না হউক।আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক।আমরা আমাদের আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই আর সেজন্য দরকার আমাদের যোগ্য নেতৃত্ব ও যোগ্য প্রধানমন্ত্রী যারা এগিয়ে নিয়ে যাবে এ সোনার বাংলাকে হিমালয়ের উঁচু চূড়ায়।
বিষয়: বিবিধ
১১০৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন