পড়ন্ত বেলার আক্ষেপ-----।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:৩৭:৪১ দুপুর
হে দুরন্ত মানুষ(পুরুষ/স্ত্রী) একটু অবকাশ নাও! ভাবো তোমার জন্মের বৃত্তান্তের কথা।একটু সবেগে নর্গত পানি থেকে তোমার সৃষ্টি।তোমার কোন অস্তিত্ত ছিল না কিছুদিন আগেও।তুমি বেড়ে উঠেছে মাতৃক্রোড়ে অনেক বছর।পেরিয়ে আসলে শৈশব,কৈশোর আর পা দিলে যৌবনে।কি আশ্চর্য! যৌবনে পা দিয়ে আর তুমি মাটিতে পা ফেলছ না।তুমি ভুলে গেলে, তোমার শৈশবে যখন পড়ে থাকতে কাদায়।ক্ষুধার জ্বালায় চিৎকার করেছ ক্ষনে ক্ষনে।তোমার ক্ষুধার জ্বালা মিটিয়েছে তোমার প্রানপ্রিয় মা।শীতের রাতে তুমি পায়খানা পেশাব করেছ,মা তোমাকে আগলে রেখে নিজেই নিদ্রাযাপন করেছে সে পরিত্যাক্ত বিছানায়।এখন তুমি তোমার পৌরুষত্ব জাহির করছো তোমার বৃদ্ধ মাতা্-পিতার সামনে? তোমার কামাইয়ের উচ্ছিষ্টের জন্য শুনাও কটু কথা।তোমার স্ত্রী লান্চিত করে তাদের আর তুমি নিদ্রায় আচ্ছন্ন। তোমার স্ত্রী বলে ওগো! আমাকে একা থাকতে দাও।তোমার পিতা-মাতাকে পাঠিয়ে দাও তাদের যায়গায়।তুমি পুরুষ,তা-ই করলে।জীবন সায়াহ্নে পা চলছে না,লাঠি হাতে পরের দুয়ারে দু'মুঠি খাদ্যের সন্ধানে ছুটে চলছে ---অবিরাম।
হে পাপিষ্ঠ দাঁড়াও ও শুনো! শুনে নাও পড়ন্ত বেলার আক্ষেপ।তোমাকে আমাদের আর দরকার নেই,কখনো এসোনা আমাদের আংগিনায়।আমরা আমাদের কর্তব্য করেছি মাত্র। তুমি আজ মনে করছো নিজেকে বহু গুনে গুনান্নিত।তুমি তোমাকে মনে করছো সুঠাম দেহদারি পুরুষ।তোমার আর্থিক সামর্থ তোমাকে পৌরুষত্ব দিয়েছে।মনে রেখো এ তোমার গুন ও আদর্শ নয়।কারন তুমি মিথ্যার জালে আবদ্ধ।তুমি এক আদম সন্তান বটে,তবে তুমি কীট পতংগের চেয়েও হীন। তোমাদের কেউ কেউ মায়ের জাতিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করে।তোমরা তাদের আগুনে ঝলসে দাও,পুড়ে মার,মারধর কর ও অভুক্ত রাখ। তোমরা যেভাবে চাও সেভাবে তাদের চলতে হবে।তোমরা অন্যায় করলেও? তোমার মত তাদেরও তো অধিকার রয়েছে।তারা ও তো চায় তোমরা তাদের সমীহ কর ভালবাস তাদের মনের মত করে।তুমি পুরুষ বলে তাকে সব কিছু ঠিক রাখতে হবে? তোমার কি দায়িত্ব নেই তার প্রতি? তুমি যেভাবে চষে বেড়াও তার আংগিনায় তারওতো ইচ্ছে জাগে তোমার জমিতে চষে বেড়াতে।সে অধিকার তুমি তাকে কতটুকু দাও? না , দাও না।তুমি যেমন তাকে অন্যায়ভাবে ঘর থেকে বের করে দাও তারও অধিকার রয়েছে তেমন করার।তোমাদের কিসের অহংকার? একটি চাকুরি,একটি ব্যাবসায়,একটি প্রাসাদ ও কিছু টাকা কড়ি।তোমার অহংকার দিয়ে,তোমার ধনদৌলত দিয়ে তার মনের আংগিনায় ঢুকে যাওয়া সম্ভব নয়।তোমার টাকা কড়ির এক কানাকড়িও মুল্য নেই যদি তুমি একবার হৃদয় ক্ষরন কর।তুমি যতবার যাও তোমাকে সে করুনা করবে।তোমাকে ধীক্কার দিবে- ধীক্কারে।
হে পাপিষ্ঠ দাঁড়াও ও শুনো! শুনে নাও পড়ন্ত বেলার আক্ষেপ।তোমার লোভলালসা বন্ধ কর।তুমি যৌতুকের বলি কর ওকে,না তুমি বলি হবে আগুনের ও শিকল বেষ্টিত হবে।কথায় কথায় তুমি চোখ রাংগানো বন্ধ কর,বেত্রাঘাত বন্ধ কর,পাশবিক অত্যাচার বন্ধ কর আর ভালবাস চরম ভালবাসায়।হয়েছে কি তোমার? সে দেখতে কুৎসিৎ,সে অসুন্দর,সে সুন্দর কথা বলতে জানে না,সে অসুস্হ তাই তোমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না।যেদিন তুমি ঘর করা শুরু করলে তুমি তো এমন করনি? তাহলে আজ কেন? কারন তোমার পুরুষত্ব চাংগা হয়েছে।তুমি এখন ধনে মানে উন্নত।তোমার চারপাশে এখন ক্রীতদাসীরা,নর্তকীরা তোমাকে ভুলিয়ে রাখে।এটিই তার অপারগতা।তোমার চরম আভিজাত্য হলো তোমার নৈতিক আদর্শ,তোমার ধৈর্য,তোমার সৎ সাহস যা দিয়ে তার হৃদয় স্পর্শ করতে পার।যদি তুমি তা করতে পার,তোমার কাছে লান্চিত হবে না তোমার স্নেহময়ী মা,ভালাবাসার স্ত্রী ও সন্তান।আমার আক্ষেপ যদি লাখো মানুষের অন্তরকে আন্দোলিত করে আমি এতটুকুতেই তুষ্ট যদিও আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই,আমার চলার সামর্থ নেই, আমি চলতে থাকবো অবিরাম-আমার রবের মোলাকাতের প্রত্যাশায়--।
বিষয়: বিবিধ
১১৭৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন