ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবা আর মিথ্যাকে পদদলিত করা হলো জ্গানীর কাজ।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৪:৪৭:৪১ বিকাল
মানুষ মরনশীল এমনকি সমস্ত প্রানীই মরনশীল।মানুষ আশার সন্চার করে বেঁচে থাকে।সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে মানুষের সৃষ্ষ্টি রহস্য চিন্তা করার মত।তার সৃষ্টির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এক বিশেষ চিন্তার খোরাক জন্মায়।নয় মাস মায়ের পেটে অবস্হান ও বেঁচে থাকা।এ সময়টা কে তার পরিচর্যা করেন? মা'তো প্রকৃতির নিয়মে নিয়মে নিজে নিজের পরিচর্যা করেন।এখন বৈজ্গানিক একটা উন্নয়ন হয়েছে ও মানুষ জানতে পেরেছে কিভাবে গর্ভের সন্তানকে পরিচর্যা করতে হবে আর তা নির্ভর করে মায়ের সচেতনতার উপর কিন্তু হাজার হাজার বছর আগেতো এভাবে মানুষ জানতো না।সেজন্য আল্লাহকে চিনতে হলে মানুষের নিজেকে আগে চিনা দরকার।যে মানুষ নিজের এই অস্তিত্বকে আবিষ্কার করতে পারবে সে অনায়াসে তার রবকে চিনে যাবে।কারন একজন শক্তিশালী 'রব' ছাড়া কারো পক্ষে এ সৃষ্টি সম্ভব নয়। আল্লাহ কাউকে গর্ভাবস্হায় মৃত বের করে আনেন,কাউকে বিকলাংগ আবার কাউকে নিখুঁত আকারে বের করে আনেন।কাউকে সন্তান দেন কাউকে দেন না।কাউকে জোড়ায় দেন আবার কাউকে বন্ধাহ করে রাখেন।এটাই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির রহস্য।যারা জ্গানী তারা এগুলো নিয়ে ভাবনা চিন্তা করে।জ্গানীর কাজ হলো আল্লাহ পৃথিবীতে যে জীব বৈচিত্র সৃষ্টি করেছেন তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা।সূরা আল ইমরানের ১৯০-১৯৪ আয়াতে এই জ্গানীদের কথা বলেছেন এভাবে,'নি:সন্দেহে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে বিশেষ নিদর্শন রয়েছে জ্গানবানদের জন্য।যারা আল্লাহকে স্মরন করে দাঁড়ানো ও বসা ও শায়িত অবস্হায় আর গভীর চিন্তা করে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টির বিষয়ে। "আমাদের প্রভু! এসব তুমি বৃথা সৃষ্টি করনি,তোমারই সব মহিমা।কাজেই আমাদের রক্ষা কর আগুনের শাস্তি থেকে। আমাদের প্রভু!নি:সন্দেহে আমরা শুনেছি একজন ঘোষনাকারিকে ঈমানের প্রতি আহ্বান করতে এই বলে,তোমাদের প্রভুর প্রতি ঈমান আন,কাজেই আমরা ঈমান এনেছি।আমাদের প্রভু! অতএব আমাদের অপরাধ ক্ষমা কর আর আমাদের দোষক্রুটি আমাদের থেকে মুছে দাও আর আমাদের প্রানত্যাগ করতে দাও সৎ মানুষদের সাথে। আমাদের প্রভু! আমাদের প্রদান কর যা তুমি আমাদের সাথে ওয়াদা করেছ তোমার রসূলদের মাধ্যমে আর আমাদের লান্চিত করোনা কেয়ামতের দিনে।নি:সন্দেহে তুমি ওয়াদার খেলাপ কর না।"
আমাদের প্রভু আমাদের আর্জি কবুল করে নিলেন।যারাই পুরুষ বা নারী হউক সৎ আমল করবে,আল্লাহর বিধানের অনুবর্তী হবে তাদের কোন ভয় নেই।এরাই প্রকৃতপক্ষে জ্গানীদের অন্তর্ভুক্ত।আমাদের আশাবাদি মানুষ হতে হবে।এই দুনিয়ার জীবন আশা নিরাশার একটি সংসার।যা কিছু হয় আল্লাহর ইচ্ছায়ই হয়।সেজন্য জ্গানীদের তাদের 'রবের' ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।সমাজ সংসারে আমরা এখন কি দেখতে পাই? কারা জ্গানী ও গুনী? কিছু পার্থিব বই পুস্তক পড়ে বা কোন সেকুলার দেশ থেকে একটি ডিগ্রি নিয়ে এসে ও কিছু গবেষনামুলক কাজ করলেই জ্গানী বা বুদ্ধিজীবি হয়ে যায়।এদের মধ্যে আবার দু'টি ভাগ আছে।এক ভাগ প্রতিনিধিত্ব করে এই পৃথিবীর।এদের সব কাজ কর্ম এই পৃথিবীকে ঘিরে।এদের অনেকেই মানবতার মুক্তির জন্য কাজ করে তাদের প্রবৃত্তিকে অনুসরন করে।এরা সৃষ্টিকর্তার আদেশের অনুবর্তী নয়।তবে আল্লাহ পাক এদের ভাল কাজের জন্য দুনিয়ায় তাদের পুরস্কৃত করেন।তাদের ভাল কাজের জন্য বন্চিত করেন না।সে কারনেই আমরা দেখতে পাই যে,অনেক বিধর্মী বা ধর্মীয় অথচ আল্লাহর বিরোধিতা করে কিন্তু তাদের ধনসম্পদ ও সু-সন্তান দিয়ে রেখেছেন।এর অর্থ এই নয় যে তারা আল্লাহর প্রিয়ভাজন। আর একভাগ তারা দুনিয়া ও আখেরাতে বিশ্বাসী।এদের দুনিয়ার কাজ আখেরাত মুখি।সে কারনে তারা দু'যায়গায়ই কল্যান প্রাপ্ত হবে।এই কথাগুলো-ই আল্লাহ পাক সূরা বাক্কারার ২০০-২০২ আয়াতে বলেন এভাবে,'মানুষের মাঝে এমনও লোক আছে যে বলে-আমাদের প্রভু! এই দুনিয়াতে আমাদের দাও' অতএব আখেরাতে তাদের কোন ভাগ থাকবে না।আর তাদের মধ্যে এমনও আছে যে বলে-আমাদের প্রভু! এই দুনিয়াতে আমাদের ভাল জিনিস অর্পন করো এবং আখেরাতেও ভাল জিনিস,আর আমাদের রক্ষা করো আগুনের শাস্তি থেকে।"
আমাদের বিজয় এক রক্তস্নাত বিজয়।এই বিজয়ের উদ্দেশ্য ছিল আপামর জনগনের মুখে হাসি ফুটানো।৪৩ বছরে সেটা কি কেউ করতে পেরেছে? যারা আজ বয়সের ভারে ন্যূব্জ ক্লান্ত ও শ্রান্ত তাদের একটি অংশ বিজয়ের পর বক্ক্স পোটলা হাতে পাশের দেশ থেকে এলেন ও জ্গানী বুদ্ধিজীবি বনে গেলেন বা যারা বাম ঘরানোর সেদিন তারা শেখ মুজিবুর রহমানের ঘুম হারাম করলেন তারা বিজয়ের মালার অংশীদার হলেন আর যারা মাঠে ময়দানে নয় মাস যুদ্ধ করলেন তারা হলেন আপন ঘরে পর।এদের মুখে স্বাধীনতার স্তুতিগান শুনে আমাদের মরে যেতে ইচ্ছে করে।কি এক আজব দেশ! তবুও জ্গানীদের কাজ হলো তাদের সংস্কার করা,তাদের মিথ্যা স্তুতিকে পদদলিত করে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।আজো সমাজে অনেক রয়েছেন তারা নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন।তাদের সৎ ও জ্গান গর্ভ ভাবনাকে,চিন্তা চেতনাকে শানিত ও দীপ্তিময় করে তুলছেন।তাদের ভাবনার জালবুনে বিস্তৃত করছেন টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত।তারা কারো দয়া দাক্ষিন্যের তোয়াক্কা করেন না।তারা আপন মহিমায় মহিমান্নিত। কিন্তু আমাদের নেতা নেতৃরা যদি তাদের অন্ধত্বকে আলোকে রুপায়িত করতে পারতেন তাহলে দেশ এগিয়ে যেত বিদ্যুতের মত।জাতিকে চমকে দেয়ার মত নেতৃত্বের বদলে চমকে দিচ্ছে তাদের অনেকের অসততা ও অসামাজিক কাজকর্ম।যারা সমাজ বিপ্লব করেছিল সমাজতন্ত্রের জন্য তারা আজ বুর্জুয়াদের পদতলে।আবার কখনো হারামের গিলাপের পাশে।যদি সত্যকে বরন নিত তাহলে ফিরে এসে আবার লেজ মোড়াতোনা।রাজনীতির কলাকৌশল জ্গানীর কলাকৌশল নয়।আর নয় আল্লাহর সাথে কোন প্রহসন।সূরা বাক্কারার ৮ আয়াতে আল্লাহ এদের কথাই বলছেন এভাবে,'মানুষের মাঝে কেউ কেউ বলে থাকে-আমরা আল্লাহর প্রতি ও আখেরাতের প্রতি ঈমান এনেছি' অথচ তারা মু'মিনদের মধ্যে নয়।"
দেশে যদি জ্গানী ও গুনীর সংখ্যা বৃদ্ধি না হয়,প্রকৃত মানুষ তৈরির পথ তৈরি না হয় তাহলে নেতা নেতৃ গড়ে উঠবে কেমন করে? আজকের রাজনীতিবিদদের কথা শুনলেই বুঝা যায় তাদের জ্গানের বহর কতটুকু।তাদের অনেকের ব্যাক্তিত্ব গড়ে উঠেছে অনৈতিকতায়।এক সময় পেশাগত রাজনীতিবিদ তৈরি হতো এবং তারা উত্তরাধিকার তৈরি করতেন।এখন রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে ধান্দাবাজ আর এই ধান্দাবাজি চলছে উপর থেকে নিচে।ভিন্ন দলের মতাবলম্বীদের নেতা নেতৃকে অনেকে তুই তোকারি করে কথা বলছে।একে আপরের অতীত নিয়ে ঘাটছে ও নোংরা কথা বলছে।এগুলো হলো তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত।আর ফল দাঁড়াচ্ছে আমরা সামনে যাওয়ার বদলে পিছনে যাচ্ছি। সমাজে শৃংখলাবোধ নেই এবং চেতনাবোধ হারিয়ে যাচ্ছে।ধর্মের নামে তৈরি হয়েছে অনেক দল এবং কুসংস্কার ছড়িয়ে দিয়েছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।এদের অনেককে বড় দলগুলো ব্যাবহার করছে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে।এরা সমাজে ইসলামের নামে অনেক অপকর্ম ঘটিয়ে ইসলামের নামে কালিমা লেপন করছে।
সমাজের সমস্ত অপকর্মকে মোকাবিলা করার দায়িত্ব রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের।তাদের কাছে থাকবে আদর্শ ও নীতি নৈতিকতা।তাদের কাছে থাকতে হবে জ্গান ভান্ডার। তারা হবে দেশের রক্ষক ও কান্ডারি।তাদের তীখ্ন জ্গানের আলোকরশ্মি ছড়িয়ে পড়বে শহরে ও লোকালয়ে। না, তারা তা না হয়ে বৈরি হয়ে উঠেছে আর এক ধরনের মিডিয়া তাদের লুপে নিয়ে অযাচিত কথা বলাচ্ছে আবার অনেকে উপস্হাপককে অনুরোধও করছেন যাতে ষ্টুডিওতে দাওয়াত করেন। এরাই জাতিকে অন্ধকারের অতল গহ্বরে নিয়ে যাচ্ছে।আমরা ক্রমেই একে অন্যের শক্রুতে পরিনতি হচ্ছি।আমরা তাহলে কেন বিদেশি শক্রুদের তাড়ালাম? আমাদের এখন বুঝতে নিশ্চই অসুবিধা নেই,আমাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি ছিলনা কিন্তু আমরা জয়ী হয়েছি।আমাদের জয় এসেছে নিছক এদেশের কৃষক মেহনতি মানুষের রক্তের বিনিময়ে যারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল হালের বলদ ছেড়ে,নববধুর আঁছল ছেড়ে,ফুটফুটে সন্তানের স্নেহমাখা মুখ ছেড়ে ও বৃদ্ধ পিতা-মাতার মায়ামমতা ছেড়ে।এরাই ভেবেছিল ভবিষ্যতের ভাবনা ,এরাই জ্গানী,এরাই মিথ্যাকে পদদলিত করে চিনিয়ে এনেছে সোনার বাংলা।আমাদের সহস্র সালাম তাদের প্রতি যাদের কথা স্মরন করবে মানুষ যুগ যুগান্তর ধরে।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন