দু'টি সন্তান যথেষ্ট হলে পৃথিবীতে অনেক মহামানবের জন্ম হতো না।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৫ নভেম্বর, ২০১৪, ০৫:১৩:৩১ বিকাল
পৃথিবীতে বর্নাঢ্য জীবন গুলোর অনেকেই ছিলেন এবং আছেন বাবা মা'র তৃতীয় ,চতুর্থ বা পন্চম সন্তান।তাদের জীবনের অধ্যায়গুলোতে আমরা অনেকে জীবনবোধের সন্ধান পেয়েছি।অনুপ্রানিত হয়েছি শিখার,লিখার এবং জীবনকে আলোকিত করার।আলোকিত জীবনের জন্য আলোকের সন্ধান করতে হয়।অনেকে তাদের আলোকিত জীবনের কথা লিখে আমাদের অশান্ত জীবনকে শান্তনা দিয়েছেন।পৃথিবী এক বিচিত্র জগৎ।এই জগতে প্রতিনিয়ত সন্ধান মিলে বিচিত্র প্রানীর।আর সব প্রানীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রানী হলো মানুষ।পশুর বিচিত্রতা লক্ষ্য করার মত নয় কারন তাদের মানুষের চেয়ে হীন করে সৃষ্টি করা হয়েছে।তাদের কোন জ্গানের আলোক দেয়া হয় নি।বিবেক বুদ্ধি দেয়া হয় নি।মানুষই তাদের চালিত করে।আজকের পৃথিবীতে এই পশুকে হারিয়ে ফেলছে এক ধরনের বিচিত্র মানুষ।তারা লোকালয়ে বসবাস করছে অথচ পশুর মতই আচরন।একে অন্যকে হত্যা করে যা কোন হিংস্রা প্রানীও করে না,তারা অবাধে মেলামেশা করে,লোকসমুক্ষে ঘুষ ও সুদ খায়,পরের সম্পদ দখল করে,রাষ্ট্রের সম্পদকে নিজের সম্পদ মনে করে রাতারাতি হয় কোটিপতি,ব্যাবসার নামে ঠিকাদার এক মালের যায়গায় আর মাল দিয়ে ঠিকাদারি করে আয় করে মাল, মালিকের অসংখ্য খেয়ানত করে,আল্লাহর ও বান্দার হকগুলো সঠিক ভাবে আদায় করে না।এরা জলজ্যান্ত পশুর পাল যাদের আমরা দেখি নামাজ পড়ে,যাকাত দেয়,রোজা রাখে ,হজ্জ করে আবার ইসলামের দাওয়াতের কাজও করে।
১৫,জুলাই ১৯৬৫ তে আমার জন্ম হয়েছিল চাঁদপুর ,হাজিগন্জের পাঁচই গ্রামে পাটোয়ারি বাড়িতে।আজ থেকে ৪৯ বছর আগের আগের কথা।আমার ৪ বোনের পর আমি তার পর আর এক বোন।সব মিলে ছয়।সেকালে জন্ম নিয়ন্ত্রনের কথা জানলেও অনেকে এগুলোকে আমল করতো না। অনেক সন্তান থাকলেও তারা ছিল বিচক্ষন।দুটো সন্তানের জন্মের একটা ব্যাবধান ছিল।অনেকের প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রন দেখে আমার মনে হয়েছিল তারা ছিল আজকের চেয়েও বিচক্ষন। আজকের শিক্ষিত অনেককে দেখা যায় বছরের এপিঠ আর ওপিঠে সন্তান।তাহলে কি বলতে পারিনা আগের জনমে তারাই ছিল বিচক্ষন।বেশী সন্তান বিমুখ না হয়ে সন্তানদের সঠিক মানুষ করা ও সম্পদ অর্জন করার বাসনা তৈরি করতে হবে।আজকের চীন দেখলে কি বুঝা যায় না বেশী জনসম্পদ দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।মানুষকে যদি সম্পদে পরিনত করা যায় তাহলে সে দেশ সম্পদশালী হয়। আমার জন্ম হওয়ার পর, শিক্ষক বাবাকে তার এক সহচর ঠাট্টা করেছিল।তিনি বলেছিলেন দুই মেয়ের পর যদি বন্ধ হয়ে যেত তাহলে এই ছেলের মুখ আমরা দেখতাম কি করে।আমরা তো সে যুগে জন্মেছি কিন্তু অভাব তেমন দেখি নি।মানুষের অভাব থাকলেও ছিল সহমর্মিতা,অল্পে তুষ্ট আর অন্যায় বিমুখ জীবন। আজকে বিজ্গানের জয় জয়কার সময়ে উৎপাদন হচ্ছে তখনকার চেয়ে বিপুল কিন্তু অভাব আমাদের ছাড়ে নি।সেযুগে সমাজে মানুষের মধ্যে যে হৃদ্যতা ছিল তা এখন নেই। একে অণ্যের প্রতি যে প্রবল সম্মান বোধ ছিল তা এখন নেই।সে যুগে ব্যাভিচার ছিল না কিন্ত তা এখন হাতের মুঠোয়।মোটকথা অন্যায় অপরাধে সমাজ ভরপুর আর আমরা বলছি উন্নতির শিখরে উঠছি আমরা।আমাদের জীবন অতি ছোট যদিও অনেকে এই সময়কে বাড়াবার চেষ্টা করে।এটা সেটা করে আসল জীবন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় অন্য দিকে।বুনো পাখির শিস শুনতে শুনতে মনে হয় মানুষের জীবন কেন এত ছোট হয়।মানুষের স্বভাব হলো কচ্ছপের মত তিন'শ বছর বাঁচা যদিও রাসূল সা: এর হাদিস বলেছে মানুষ একশ বছরের মধ্যে নি:শেষ হবে।যত দুঃখ, বেদনা, অন্তহীন দহন, তৃষ্ণা থাক না কেন মানুষ চায় জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে সে যে করেই হোক।মানুষ দুনিয়াকে এতটাই ভালোবাসে যে,অনেকদিন বাঁচতে চায়।
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছয় ভাইবোনের সংসারে আমাদের জীবন ছিল চমৎকার। জীবনে বাঁচতে চাই অনেক তবে আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখেন ভাল কাজের মধ্যে। বয়স যতই নি:শেষ হচ্ছে মনে হয় একটি তারকা খচিত হচ্ছে জীবন থেকে। এই তারকা খচিত জীবন মানে ধীরে ধীরে কবরের দিকে হেঁটে যাওয়া। মৃত্যুর চেয়ে অমোঘ সত্য পৃথিবীতে আর কিছু নেই। মৃত্যুর স্বাদ একদিন নিতেই হবে। সূরা আলইমরানের ১৮৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'সব প্রানীই মৃত্যুবরন করবে।ক্কেয়ামতের দিন যার যার পাওনা পরিশোধ করা হবে।যাদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে নেয়া হবে তারাই হলো সফলকাম আর দুনিয়ার জীবন ধোকার সম্বল ছাড়া কিছুই নয়।' আমাদের সবারই আশাবাদি হওয়া উচিত।আল্লাহর কাছে ভয় ও আশায় চাইতে হবে।নিজেকে কলন্কিত করার মধ্যে কোন জীবন নেই।কলন্কিত দানশীল হওয়ার চেয়ে নি:শ্ব গরীব হওয়া ভাল।হৃদয়কে পবিত্র রেখে স্বপ্নের ডানা মেলে বাঁচতে শিখতে হবে।অতীতের দিনগুলোর ভাল মন্দের হিসেব করে কখনো বেদনার্ত আবার কখনো সুখের বাসর গড়তে ইচ্ছে করে।ভুলগুলোকে শোধরিয়ে নেয়ার মধ্যেই মানুষের মহানুভবতা প্রকাশ পায়।নিজের ও মানুষের কল্যানের জয়গান গেয়ে যাওয়ার মধ্যেই মহত্ব নীহিত।সমাজ সংসারে যদি কল্যানকামি মানুষের সংখ্যা বেড়ে যেত তাহলে পৃথিবীতে অনাচার থাকতো না।সমাজে যতবেশি কল্যানকামি লেখকের জন্ম হবে সমাজ হবে পন্কিলতা মুক্ত।মানুষ কি করে ঘুমের ঘোরে থাকে ভেবে অবাক লাগে।দৃষ্টিনন্দন সময়গুলোকে হীন স্বার্থে ব্যাবহার,সামান্য কিছু সম্পদ,উপটৌকনের জন্য হন্য হয়ে জীবনকে শেষ করা আদৌ এক মূর্খতা।আমার অনেক বন্ধু বলেন তুমি একাই কি সমাজে বিপ্লব আনতে পারবে? আমি বলি আমি এক ক্ষুদ্র মানব।আমার নিরলস চেষ্টা হয়ত একটি শিশির বিন্দুর মত কাজ করবে কিন্তু লাখ লাখ শিশির বিন্দু যদি সমাজে তৈরি হয় সেদিনই আমি স্বার্থক।দেশ ও সমাজের জন্য আমার ভালবাসার কলম শানিত হবে ও লিখা অব্যাহত থাকবে জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।লাখ- পাপের স্তুপে সৃষ্টিকর্তাকে বলতে পারবো হে আমার রব! আমি চেষ্টা করেছি মাত্র আমার সময়ের রুপ দিতে।তুমি কবুল কর।
আমরা বাংলাভাষীরা নিজেদের আত্মমর্যাদার কথা ভেবেছি কি?আমরা নিজেদের কখনো কি প্রশ্ন করেছি? আমরা কোথায় ছিলাম? কোথায় এলাম? আবার আমরা কোথায় যাব? আমরা স্বাধীন দেশের মাথা উঁচু করা এক মুসলিম জাতি।বিধাতা আমাদের কোন কিছু কমিয়ে দেন নি।আমরা কমাতে কমাতে আমাদের নি:শেষ করে ফেলেছি।এক সময়ের সূতোয় বাঁধা জাতি আজ বিচ্ছিন্ন।সামান্য লোভ লালসায় তুমি খুন করছো তোমার সহদোরকে।তোমার লালসার শিকার কন্যা সম,বোন সম কিশোরি যুবতি।তোমার লালসাকে তুমি হত্মা কর।তোমার চোখকে অন্ধ করে দাও।তোমার এই কলন্কিত অন্তরকে আঘাতের পর আঘাত কর।যদি তা করতে পার তাহলে তোমার বিচার তুমি করতে পারলে।একটি রক্তস্নাত স্বাধীনতার চেয়ে আর তোমার কি পাওয়ার আছে? আমার মা বোনদের দেখেছি ছোটবেলায় চাঁদের আলোকে কাজলা দিদির কথা বলে ঘুম পাড়াত।রাতে ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দে এক আবহ তৈরি হতো।মায়ের কাছে ছড়ার গান গুলো শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তান।আষাড়ের ঘোর বৃষ্টি ধারা দিনকে যখন রাতের অন্ধকারে নিয়ে আসতো তখন মা'র হাতের খিচুরি-গোস্ত খেয়ে মনকে উদ্বেলিত করতাম। সেই সোনার বাংলা আজ লুটেরাদের খ্প্পরে।পিতা মাতার ধার্মিকতা আমাদের এই লুটেরাদের খপ্পরে ফেলেনি।শক্তি যুগিয়েছে মুক্ত চিন্তা করতে।গনতান্ত্রিক সমাজে চিন্তার স্বাধীনতা থাকতে হবে,বিতর্ক থাকতে হবে কিন্তু তা হবে মার্জিত।কোন সংঘর্ষে গিয়ে নয়,শিখাতে হবে শিখতে হবে।।কেউ ভুলের উর্ধে নয়।সমাজ সংস্কারের ব্রত নিয়ে এগুতে হবে। এ কাজ আমাদের সবার।মহামানবদের মহাকল্যান আমাদের পাথেয়।তারা বিদায় নিয়েছে,আমরাও বিদায় নিব।বেঁচে থাকবে আমাদের কাব্য সাহিত্য মানুষের মননে সংস্কৃতিতে।যা অর্জন করেছি ভাল এগুলো ই ভাল কাজ।শত্রুর সঙ্গে প্রতিহিংসা নয়, উদার উষ্ণ আলিঙ্গনের নীতি, ঐক্যের নীতি আমাদের চলমান
জীবনে আদর্শায়িত হোক।সন্তানকে যোগ্য করার মধ্যেই বাবা মা বেঁচে থাকেন।অধম দুটি সন্তানের জনক হওয়ার চেয়ে উন্নততর জীবন বর্ধনে ছটি সন্তানের পিতা মাতা হওয়ার মধ্যে শান্তি নীহিত আছে যদি সে সন্তানটি হয় আদর্শবান মানব হিতৈষী।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৭ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
চেতনার অভাব না থাকলে তো এমন হওয়ার কথা না? রাজাকার আলবদর ওরাও তো আছে!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন