সন্ত্রাস কি এবং শুধু মুসলমানরাই কি পৃথিবীতে সন্ত্রাস করে?

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৭:৫৮:২৮ সন্ধ্যা

ইংল্যান্ডের বিখ্যাত বিচারক লর্ড টার্নিং বলেছেন,অভিনেতাদের মত অন্যদের খুশি করার জন্য বিচারকরা কথা বলে না।বিচারকরা উকিলদের মত বিচার জিতার জন্য কথা বলে না।ঐতিহাসিকদের মত অতীতকে জানার জন্য বিচারকরা কথা বলে না।বিচারকরা কথা বলে রায় দেয়ার জন্য।বিচারকদের কাজ হলো মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলা।কোন অন্যায় হলে অন্যায়ের পক্ষে কথা বলা ও সঠিক রায় দেয়া তাদের কাজ।যদি বিচারকরা সমাজের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা না বলে তাহলে মানুষের পক্ষে কথা বলার আর কে আছে?আমাদের কাছে এখন প্রমানিত সত্য এখন সন্ত্রাসীদের ভায়োলেন্সের জবাব দিতে গিয়ে প্রত্যেক দেশের সরকার আরো বেশী ভায়োলেন্সের জন্ম দেয় ও এভাবে ভায়োলেন্স বাড়তে থাকে।পরিনামে এ সমস্যার সমাধান পাওয়া অনেক অসম্ভব ব্যাপার।দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মাধ্যম এখন সোচ্চার সন্ত্রাস এখন মুসলমানরাই করে।আসুন দেখে নেয়া যাক আমাদের পাশের দেশ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এর প্রভাব কতটুকু ও কারা আসলে এর পূর্বসূরি।তথ্য উপাত্তের খবর অনেকের কাছে না থাকা ও না জানার কারনে কোন কোন ধর্ম বা মহলের উপর এর ছাপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

১৯৮৪ সালে দিল্লি ও তার আশে পাশে বেশ কিছু বোমা বিস্পোরন হয়েছিল এবং এটা করেছিল খালিস্তানিরা।সে সময় খালিস্তানিদের বিদ্রোহ বেশ জোরেই চলছিল।সে সময় খালিস্তানিরা ছিল সন্ত্রাসী।এই সন্ত্রাসীদের জন্য একটি আইন বানানো হয়েছিল এবং তার নাম দেয়া হয়েছিল টাডা।এই আইন ছিল একটি নিষ্ঠুর আইন।এই আইনের অনেক অপব্যাবহারও হয়েছিল।এই আইনে অনেক নীরিহ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ও তাদের উপর অবিচার করা হয়েছিল।একবার জাস্টিস অজিত সিং পান্জাব হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত জাজ যিনি ছিলেন বয়স্ক মানুষ।তিনি একটি জনসভায় পান্জাব সহ সারা ইন্ডিয়ায় যে অত্যাচার চলছিল সেটা নিয়ে কথা বলছিলেন।সেই জনসমাবেশে তিনি বললেন একদিন আমরা এই আইন থেকে মুক্তি পাব।এই টাডা আইনে দেশের সংহতি নিয়ে একটি বিষয় ছিল যে,দেশের সংহতি নষ্ট হয় এমন কথা কেউ বলতে পারবেনা।বিশেষ কোন যায়গার অবস্হা নিয়ে কেউ কোন মন্তব্য করতে পারবেনা।কেউ বলতে পারতোনা কাশ্মিরের স্বাধীনতা পাওয়া উচিত কি উচিত নয়।যদি কেউ এ ধরনের কথা বলতো সেটা একটা অপরাধ।তাই জাস্টিস অজিত সিং শুধু বলেছিলেন একদিন আমরা এই আইন থেকে মুক্তি পাব।তার মানে হলো অত্যাচার ও অবিচার থেকে মুক্তি।এর পরে তাকে গ্রেফতার করা হলো,তার হাতে পরানো হলো হাতকড়া,হাইকোর্টের বিচারপতির হাতে একটি হাতকড়া ও এই অবস্হায় রাস্তায় হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো হাইকোর্টে।হাইকোর্টের জাজেরা তাকে জামিন দিতে পারলো না।সুপ্রিম কোর্টে গেলেন সেখানেও জামিন পেলেন না।তিনি জেলে ছিলেন এক বছরেরও বেশী।এই টাডা আইনটি এমনই ছিল ৭৫০০০ এরও বেশি মানুষ জেলখানায় ছিল এবং এদের কাউকে জামিন দেয়া হয় নি।আর এই আইনে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য পুলিশ এই নীরিহ মানুষদের উপর চালাত বিভিন্ন রকম ভয়ংকর টর্চার।এভাবেই স্বীকারোক্তি নেয়া হতো।১৯৯৫ সালে ইন্ডিয়ার সরকার টাডা নামের এই কুখ্যাত আ্ইন বাতিল ঘোষনা করলো।তখন দেখা গেল হাজার হাজার মানুষের উপর অত্যাচার করা হয়েছিল এবং ৭২০০০ হাজার কয়েদিকে মুক্ত করে দেয়া হলো।ট্রায়াল ও কোন কেস হলো না শুধু শুধু বছরের পর বছর জেলখানার ভিতরে অত্যাচার শহ্য করেছিল।এই কুখ্যাট টাডা আইনে বিচারকরা দোষী সাব্যস্ত করতে পেরেছিল মাত্র ১.৮%।কিন্তু তার পরও এই আইন এক সময় কার্যকর ছিল।এই আইনের বলে পুলিশ তাদের স্বেচ্ছাচারিতা করতো।কারো কিছু বলার ক্ষমতা ছিল না।রাজনীতিবিদরা তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই আইনকে ব্যাবহার করতো।যে কোন সময় যে কোন লোককে তারা গ্রেফতার করে আটকে রাখতে পারতো এবং কোন জামিন পেত না।১৯৯৫ সালে এই আইন বাতিল করার জন্য সারা ইন্ডিয়ায় ঝড় বয়ে গিয়েছিল।মানুষ প্রতিবাদ করেছিল এই নিস্ঠুর আইনের বিরুদ্ধে।এ ধরনের আইন দিয়ে সন্ত্রাস বন্ধ করা যাবে না বরং সন্ত্রাস আরো বাড়বে।তার পর ঘটলো ২০০১ সালের ৯ই সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে দুর্ঘটনা ঘটলো ওয়ার্লড ট্রেড সেন্টারে।বুশ ঘোষনা দিয়েছিল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং বলেছিল যারা আমাদের সাথে নেই তারা আমাদের শক্রু।আর দেখা গেল বুশকে সাপোর্ট করে পোর্টা নামে আর একটি আইন করা হলো যার পরিনতি হয়েছিল টাডার মতই।এটা ছিল একটি বহুমুখি আইন এবং মানুষের উপর অনেক অত্যাচার হয়েছিল।যাদের উপর অত্যাচার হয়েছিল তারা অনেকে জানতো না তাদের অপরাধ কি।এই রকম আইন মানুষের মধ্যে শুধু আতংকই বাড়ায়।এই কথাটি প্রাসংগিক, মানুষ এখন পোর্টা নিয়ে কথা বলে ও এর মত আইন চায়।২০০৬ সালে বোম্বে ট্রেনে যে বোমা বিস্পোরন হয়েছিল,এর পরই জনমত প্রকাশ পেল কঠিন কোন আইন ছাড়া সন্ত্রাস বন্ধ করা যাবে না।কঠিন আইন দিয়ে কখনো সন্ত্রাস বন্ধ করা যায় না।ইন্ডিয়ার পার্লামেন্টে এই পোর্টা আইন নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল এবং পার্লামেন্টে আক্রমন করা হয়েছিল।২০০১ সালের ১৩ই ডিসেম্বরের পর এই আইনটি পাস করা হয়েছিল।আশ্চর্যের বিষয় হলো আইন পাস করার পরে ও সন্ত্রাস বন্ধ হলো না।কলকাতার ইউএস ইনফরমেশন সেন্টারে বোমা বিস্ফোরন হলো,বিভিন্ন মন্দিরে ,মোম্বাইয়ের ঘাটকুফায়,বুলন্দে বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল।দেশে কার্যকরি আইন থাকা স্বত্বেও এই বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল এবং ২০০২ সালে তখনকার এটর্নিজেনারেল একথা বলেছিলেন।শুধু তাই নয় সে বছর জুম্মু ও কাশ্মিরে ৪০৩৮টি সন্ত্রাসি ঘটনা ঘটেছিল যদিও সেখানে নিরাপত্তার অভাব ছিল না।কাশ্মিরে গত ১৭ বছরে মারা গিয়েছে ৮০০০০ এর ও বেশী মানুষ।পান্জাবে খালিস্তানিদের বিদ্রোহের সময় হাজার হাজার হারিয়ে গেছে কেউ জানে না তাদের কি হয়েছিল।প্রান্তিক এলাকার যুবকদের রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কিন্তু পরিবারের লোকজন কেউ জানতে পারে নি তারা কোথায় বা তাদের অপরাধ কি।আমরা দেখছি পৃথিবীর সব দেশেই ভায়োলেন্স একটি অবিরাম প্রক্রিয়া এবং তা ঘটানো হয়ে থাকে রাজনৈতিক ছত্র ছায়া থেকে।কাশ্মির ,মনিপুর ,ছত্রিশ গড়,তেলেংগানা সহ অনেক যায়গায় সন্ত্রাসী হয়েছে।ইন্ডিয়ার সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন,দেশের জন্য একটি কাউন্টার টেরোরিস্ট অর্ডনান্স প্রয়োজন কিন্তু কে হবে এই কাউন্টার টেরোরিস্ট অর্ডনান্স? সরকার গুলো থেকে এ রকম কথা ছোড়া হয় বিচার বিভাগের উপর।পান্জাবে ইলেক্শনের সময় সেখানকার ডেমোক্রেটিক রাইটস অর্গানাইজেশন একটি রিপোর্ট ছাপালো এবং বলা হলো,পান্জাবে ভোট নেয়া হচ্ছে বন্দুকের মুখে।ইন্ডিয়ার গনতন্ত্রের ব্যাপারে যে কথা আমাদের সবাই বলেন সেখানেও নাজুক অবস্হা রয়েছে।ইন্ডিয়ায় মাউবাদি ও নক্ক্সালপন্থিরা সন্ত্রাসের সাথে জড়িত।ছত্রিশ গড়ে সরকার আদিবাসিদের দিয়ে একটি প্রতিরোধ বাহিনী গড়েছিল কিন্তু তাদের রক্ষা করা গেল না।মুল কথা হলো কোন সন্ত্রাসীর প্রকাশ্যে বিচার কোন সরকার করতে পারে নি।

১৯৯৩ সালে বোম্বেতে যে বোমা বিস্ফোরন হয়েছিল তার দোষীদের বিচার করতে পারে নি।কিন্তু বছরের পর বছর জেলে মানুষ আছে তারা জানে না কবে মামলা হবে,কবে তাদের শুনানি হবে বা কবে তাদের বিচার হবে।ভায়োলেন্সের জবাব দিতে গিয়ে ভায়োলেন্স করতে হচ্ছে।গোয়েন্দাগীরির নামে যা হচ্ছে তা হলো অবিচার বাড়িয়ে দেয়া।একটা সিকিউরিটি সোসাইটিতে পুলিশ যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।আইনশৃংখলা বাহিনী তাদের ইচ্ছে মত ক্রস ফায়ার,পুলিশ ষ্টশনে আটকিয়ে টর্চার করা,অভিযোগ ছাড়া ধরে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি অনেক কাজ করে ইনভেস্টিগেশনের কথা বলে।কোন মানুষকে যদি পুলিশ ষ্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে এর পক্ষে আইনটি কি? সেখানে তার ষ্টেটমেন্ট নেয়া হবে যদি সাক্ষী হয়ে থাকে।আর না হলে চলে যাবে।যদি সাক্ষী না হয় তাহলে হবে সন্দেহভাজন কোন রেকর্ডে নাম লিখা থাকবে বা তার নাম এফআইআর এ থাকবে।কিন্তু কোন লোককে ধরে নিয়ে বলা যাবে না যে সন্দেহভাজন যাকে জেলে পুরে দেয়া ও টর্চার করা কোথাও রেকর্ড নেই এবং হঠাৎ জুড়ে দেয়া হলো একটি ঘটনা এটা কোন ধরনের আইন।পুলিশ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা না রাখার কারনে যে কোন লোক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।আর কোন ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত না হওয়ার কারনে ফাইলের জট লেগে থাকে।আইনের নামে শাসকদল মানুষের স্বাধীনতা হরন করছে ও মানুষকে দাসে পরিনত করছে।সিকিউরিটির দোহাই দিয়ে যে আইনই করা হোক না কেন সন্ত্রাস বন্ধ করা যাবে না।সমাজে ন্যায় বিচার ,উদার সমাজ ও মানুষের বাকস্বাধীনতাকে স্বতস্ফুর্ত না করা হলে সন্ত্রাস নির্মুল করা সম্ভব হবে না।ভায়োলেনন্স বন্ধ করার জন্য অস্ত্র কোন সমাধান নয়।আমাদের বুঝতে হবে এ সব সন্ত্রাসের কারন কি? সামাজিক বৈষম্য ,অন্যায় ও অবিচার যে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সে সমাজকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য সৎ ও সাহসি পার্লামেন্ট ও বিচার ব্যাবস্হার অতি প্রয়োজন।সমাজের বড় লোক ও ক্ষমতাবানরা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে তাদের কোন বিচার হয় না।কিন্তু গরীবদের নিয়ে অনেক প্রজেক্ট করা হয় আর সে সমস্ত টাকা পয়সা এলিটরা খেয়ে ফেলে।উপকুলে বানবাসিদের জন্য বিদেশি সাহায্য আসে কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না।সরকার বিভিন্ন যায়গায় বস্তি ভেংগে দিচ্ছে যেখানে তাদের পুনর্বাসন করার কথা ছিল।বাসস্হান ,শিক্ষা ও স্বাস্হ মানুষের মৌলিক অধিকার।প্রতিটি সরকারের দায়িত্ব এগুলো পূরন করা।কিন্তু কোন সরকারই এসব দিকে মন দিচ্ছে না।এই পরিস্হিতিতে যদি কাউকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় ,যদি আদালতে ন্যায় বিচার কেউ না পায় তাহলে মানুষের আত্মহত্বা ছাড়া উপায় নেই।আমরা রিপোর্টে দেখেছি অন্ধ্র প্রদেশে হাজার হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছে।তারা বার বার আদালতে আপিল করেছে কিন্তু সরকার উদাসীন।অরুনধীতি রায় একবার বলেছিলেন এ ধরনের পরিস্হিতিতে যখন মানুষ ন্যায় বিচার পায় না ,কোন সাহায্য পায় না সে সময় তারা যা করে সেটা হলো তারা এসব অত্যাচারকে অস্বীকার করতে চায়।গুজরাটে যে সব মা বোনদের ধর্ষনের পরে তাদের পুড়ে মারা হয়েছিল সে সমস্ত এতিম ছেলে মেয়েদের দায়িত্ব সরকার নেয় নি,তাদের লেখাপড়া বা চিকিৎসার ব্যায় ভার বহন করে নি।এ সমস্ত শিশু কিশোর যারা তাদের বাবা মাকে হারিয়েছিল তারা কি ন্যায় বিচার পেয়েছিল? সরকার যদি ভিকটিমদের সাহায্য না করে তাহলে তারাই অস্ত্র হাতে নিয়ে নিজেদের সাহায্য করবে এটাই মুল কথা।এজন্য অরুনধীতি রায় যেটা বলেছিলেন যখন ভিকটিমরা আর ভিকটিম হতে চায় না তাদের বলা হয় সন্ত্রাসী।আর এভাবেই আমরা সমাজের বিভিন্ন অন্যায় ও অবিচারের শীকার হচ্ছি প্রতিদিন। সরকারকে এসব ব্যাপারে ব্যাবস্হা নেয়া উচিত তবে নিষ্ঠুর কোন আইন দিয়ে নয়,কাউন্টার টেরোরিস্ট অর্ডিনেন্স জারি করে নয়,কোন একটা বিশেষ জাতির উপর অত্যাচার চালিয়ে নয়,অবিচার করে নয় বরং প্রত্যেক মানুসকে তার অধিকার দিতে হবে।মানুষের খাদ্যের অধিকার ,বাসস্হানের অধিকার , শিক্ষার অধিকার,সুসাস্হের অধিকার ও ভাল একটি জীবিকার অধিকার।যদি এইসব অধিকার নিশ্চিত করা হয় তাহলে সমাজে একটি পরিবর্তন আসবে।

আমাদের সন্ত্রাস সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জানা দরকার।এর বহু মুখি সংগা রয়েছে অনেক সংগাই পরস্পর বিরোধী।এটা একটি বায়বীয় জিনিস যা ক্ষেত্রভেদে বদলাতে পারে ভৌগলিক অবস্হানের কারনে।এর ঐতিহাসিক কারন রয়েছে।অক্ক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ি সন্ত্রাস হলো কোন হিংসাত্মক কাজের মাধ্যমে কোন রাজনৈতিক লক্ষ অর্জন করা বা কোন সরকারকে কোন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা।সন্ত্রাস শব্দটি প্রথমবারের মত ব্যাবহার করা হয়েছিল১৭৯০ এর দশকে ফরাসি বিপ্লবের সময়ে।আর এই ১৭৯০ এর দশকে একজন বৃটিশ কুটনীতিক এডমন্ড বার্ক তিনি এই শব্দটি দিয়ে বুঝিয়েছিলেন সে সময়ের ফ্রান্সের সরকারকে।১৭৯৩ থেকে ১৭৯৪ সাল পর্যন্ত বলা হয়ে থাকে সন্ত্রাসের শাসন কাল।এই সময়ের মধ্যে হাজার হাজার মানুষকে হত্মা করা হয়েছিল।ইতিহাস বলে তখনকার সে সরকার ৫ লক্ষেরও বেশী মানুষকে গ্রেফতার করেছিল।তার মধ্যে ৪০০০০ মানুষকে হত্মা করা হয়েছিল।২ লক্ষ মানুষকে নির্বাসন দেয়া হয়েছিল।আর ২ লক্ষের বেশী মানুষ জেলখানায় অনাহার ও অত্যাচারে মারা গিয়েছিল।তাহলে বুঝা গেল এই সন্ত্রাস শব্দটি ব্যাবহার হয়েছিল বিপ্লবিদের বুঝানোর জন্য।আজকে আমাদের আন্তর্জাতিক মিডিয়া বিশেষ করে পশ্চিমা মিডিয়া একটি ষ্টেটমেন্ট দিচ্ছে সব মুসলমানই সন্ত্রাসী না তবে সব সন্ত্রাসীই মুসলমান।

পৃথিবীর ইতিহাসে যে রেকর্ডগুলো আছে তা থেকে আমাদের জেনে নেয়া দরকার আসলে সন্ত্রাসী কারা?উনবিংশ শতাব্দিতে আমরা এমন কোন সন্ত্রাসী হামলা খুঁজে পাইনা যা মুসলমানরা করেছে।উনবিংশ শতাব্দিতে যে হামলাগুলো হয়েছে তার কিছু তুলে ধরছি যা থেকে প্রমানিত হবে আসলে কারা সন্ত্রাসের সাথে জড়িত।আমরা দেখতে পাই ১৯৮১ সালে রাশিয়ার দ্বীতিয় আলেক্ক্সান্ডারকে হত্যা করা হয়েছিল সেন্ট পিটার্স বার্গের রাস্তায়।তিনি একটি বুলেট প্রুফ গাড়িতে করে ঘুরছিলেন তখন এক বোমা বিস্ফোরনে ২১ জন নীরিহ পথচারি মারা গেল।তিনি বুলেট প্রুফ গাড়ি থেকে বের হলেন আর একটি বোমা ফাটলো তিনি মারা গেলেন।তাকে কোন মুসলমান মারে নি, তাকে হত্মা করেছিল ইগনেছি বুলবুস থেকে আসা একজন অমুসলিম নৈরাজ্যবাদি।১৮৮৬ সালে শিকাগো শহরে হে-মার্কেট স্কোয়ারে শ্রমিকদের মিছিলের মধ্যে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল ও ১২ জন নীরিহ মানুষ মারা গিয়েছিল।এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী তারা মুসলমান ছিলনা।যদি আমরা বিংশ শতাব্দির হামলাগুলো দেখার চেষ্টা করি ও ইতিহাস আমাদের বলে ১৯০১ সালের ৬ই সেপ্টেম্বরে সে সময়ে এমেরিকার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম মেকিনলিকে লিয়ন নামে একজন অমুসলিম নৈরাজ্য বাদি হত্মা করেছিল।১৯১০ সালের ১লা অক্টোবর একটা বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল লস এন্জেলসের টাইম নিউজ পেপার বিল্ডিংয়ে এবং সেখানে ২১ জন নীরিহ মানুষ মারা গিয়েছিল।এই বোমা বিস্ফোরনের জন্য যারা দায়ী তারা দু'জন ছিল খৃষ্টান ও তাদের নাম ছিল জেমস ও যোজেফ।তারা দু'জনেই ইউনিয়ন লিডার ও অমুসলিম।১৯১৪ সালের ২৮শে জুন সারায়েবোতে আষ্ট্রিয়ার আর্কডিউক ফ্রান্স এবং তার স্ত্রী সোফিয়া একসাথে নিহত হয়েছিলেন। এখান থেকেই শুরু হয় প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ।এই হত্মাকান্ডের জন্য যে লোকগুলো দায়ী ছিল তাদের দলের নাম ছিল ইয়াং বসনিয়া ও তাদের বশীর ভাগই ছিল সার্ভীয় অমুসলিম।১৯২৫ সালের ১৬ই এপ্রিল একটি বোমা বিস্ফোরন হয়েছিল।ঘটনাটি ঘটেছিল বুলগেরিয়ার রাজধানি সোফায়ার সেন্ট মেরিলিয়া চার্চে।সেখানে ১৫০ জনেরও বেশী নীরিহ মানুষ মারা গিয়েছিল ও আহত হয়েছিল ৫০০ জনের বেশী।এটা ছিল বুলগেরিয়ার নিজের মাটিতে ও একটি বড় সন্ত্রাসী হামলা।আর হামলা করেছিল বুলগেরিয়ার কমিউনিষ্ট পার্টি তারাও অমুসলিম ছিল।১৯৩৪ সালের ৯ই আক্টোবর যুগশ্লোভিয়ার রাজা প্রথম আলেক্ক্সান্ডার তাকে একজন বন্দুকধারি হত্মা করে সেও একজন অমুসলিম ছিল।প্রথম যে আমেরিকান বিমানটি হাইজাক করা হয় সেটা কোন মুসলমান করেনি,সেটিও করেছিল একজন অমুসলিম এবং বিমানটি হাইজাক করে কিউবায় নিয়ে যায় ও সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়।১৯৬৮ সালের ২৮শে আগষ্ট গুয়েতামালার রাষ্ট্রদূতকে হত্যা করেছিল একজন অমুসলিম।১৯৬৯ সালে জাপানের রাষ্ট্রদূতকে ছুরি মেরে হত্মা করেছিল এক জাপানি অমুসলিম। ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতকে একই বছরে অপহরন করে একজন অমুসলিম।ওকলাহামা বোম্বিং এর মত বিখ্যাত হামলা হয়েছিল ১৯৯৫ সালের ১৯শে এপ্রিল।সেখানে বোমাভর্তি একটি ট্রাক ওকলাহামার ফেডারেল বিল্ডিংএ আঘাত করে ও মারা যায় ১৬৬ জন নীরিহ মানুষ ও আহত হয় কয়েকশ।খবরের কাগজে লিখা হয়েছিল এটা মধ্যপ্রাচ্যের ষড়যন্ত্র।কয়েকদিন পর জানা গেল ঘটনাটি ঘটিয়েছিল ডানপন্থিদলের কয়েকজন সমর্থক ও তারা ছিল খৃষ্টান।

দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত এই আট বছরের মধ্যে ২৫৯টি সন্ত্রাসী আক্রমন চালিয়েছিল শুধুমাত্র ইহুদি সন্ত্রাসীরা।কিং ডেভিড হোটেলের যে বিস্ফোরনটি ঘটেছিল ১৯৪৬ সালের ২২শে জুলাই।বিস্ফোরনটি ঘটিয়েছিল ইরগুন নামক একটি দল ও সেখানে ৯১জন নীরিহ মানুষ মারা গিয়েছিল।এই ইরগুন গ্রুফ আরবদের মত পোষাক পরেছিল যেন মনে করে আরবরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।এটা করা হয়েছিল বৃটিশ মেন্ডেটের বিরুদ্ধে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আক্রমন।এই ঘটনার জন্য দায়ী ছিলেন মিনা কেন বেগান যাকে বৃটিশ সরকার এক নম্বর সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করেছিল।পরবর্তিতে কয়েক বছর পরে তিনি হলেন ইজরাইলের প্রধান মন্ত্রী এবং তার কিছুদিন পরেই তিনি শান্তিতে নোবেল প্রাইজ পেলেন।যে মানুষটি খুন করেছে হাজার হাজার নীরিহ মানুষকে সে-ই প্রধানমন্ত্রী হয়েছিল আবার সে-ই নোবেল প্রাইজ পেল শান্তিতে।ইরগুন ,হেগানার মত এ দলগুলো ও তাদের নেতারা যেমন-আইজাক রবিন,মিনা কেন বেগান,এরিয়েল শ্যারন এরা সবাই ইজরাইলের প্রধানমন্ত্রী বা উচ্চ পদস্হ কর্মকর্তা হয়েছিলেন।এরা সবাই যুদ্ধ করেছিল একটি ইহুদি রাষ্ট্রের জন্য।আমরা যদি পৃথিবীর ম্যাপ দেখি তাহলে দেখতে পাব ১৯৪৫ সালের আগে ইজরাইল নামে কোন দেশ ছিল না।এই দলগুলোকে সন্ত্রাসী বলে ডাকতো বৃটিসরা।পরে তারা শক্তি দিয়ে ইজরাইল দখল করে ও পেলেস্টাইনিদের তাড়িয়ে দেয়।এখন এই ইজরাইলিরা পেলেষ্টাইনিদের বলছে তারা তাদের দেশ ফেরত চায়।হিটলার ৬০ লক্ষ ইহুদি মেরেছিল।তিনি ইহুদিদের বের করে দিয়েছিল ও পেলেস্টাইনিরা তাদের জ্গাতি ভাইদের আমন্ত্রন জানিয়েছিল। ঘটনাটি ছিল এরকম আপনি আপনার বাড়িতে স্ব-ইচ্ছায় একজন অচেনা লোককে যায়গা দিলেন।পরে সেই অচেনা লোকটি আপনাকে আপনার ঘর থেকে তাড়িয়ে দিল আর আপনি দরজার সামনে বলতে থাকলেন যে আমার ঘরটি ফেরত চাই,লোকে আপনাকে বলবে আপনি সন্ত্রাসী।ঠিক এ ঘটনাটিই ঘটেছে পেলেস্টাইনিদের ব্যাপারে।পেলেস্টাইনিদের সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে কারন তারা তাদের দেশ ফেরত চায়।আর এখন পৃথিবীর মানুষ বিশেষ করে উন্নত দেশগুলো অন্যায় ভাবে তা মেনে নিচ্ছে।ইতিহাস আমাদের বলে জার্মানিতে ১৯৬৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত রাডার ম্যান হক গেং অনেক নীরিহ মানুষকে হত্যা করেছিল।ইটালিতে রেগ ব্রিগেডের কথা তারাও অনেক নীরিহ মানুষকে হত্যা করেছে।১৯৭৮ সালে তারা অপহরন করে ইটালির প্রধানমন্ত্রী এলডোমোরাকে ও ৫৫ দিন পর তাকে হত্যা করে।ইংল্যান্ডে ১০০ বছরেরও বেশী সময় ধরে আইরিশ রিফাবলিকান আর্মি বিভিন্ন আক্রমন চালিয়ে যাচ্ছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এবং এরা সবাই ক্যাথলিক কিন্তু তাদের ক্যাথলিক সন্ত্রাসী বলা হয় না,তাদের বলা হয় আই আর এ। তারা ১৯৭২ সালে তিনটি বোমা বিস্ফোরন করে ,প্রথমটিতে ৭ জন ,দ্বিতীয়টিতে ১১ জন ও তৃতীয়টিতে মারা যায় ৯জন।১৯৭৪ সালে দুটো বিস্ফোরন ঘটিয়েছে গিলবোর্ড বারে,সেখানে ৫জন নীরিহ মানুষকে হত্যা করেছে আহত হয়েছে ৪৪জন।বার্মিংহাম বারে ২১জন নীরিহ মানুষ মারা যায় আর ১৮২ জন আহত হয়।১৯৯৬ সালে তারা লন্ডনে একটি বোমা ফাটায় সেখানে ২জন মারা যায় ও আহত হয় ১০০ জনের বেশী।১৯৯৬ সালে আইআরএ বোমা ফাটায় মান্চেষ্টার শফিং সেন্টারে সেখানে আহত হয় ২০৬ জন।১৯৯৮ সালে ব্যাম্ব্রিজ বোমা বিস্ফোরন ৫০০ ফাউন্ড ওজনের একটি বোমা ছিল গাড়িতে সেখানে ৩৫জন নিরীহ মানুষ আহত হয়েছিল।একই বছরে ওমেগ বোমা বিস্ফোরনে ৫০০ ফাউন্ড ওজনের একটি বোমা ছিল গাড়িতে আর ২৯জন নীরিহ মানুষ মারা গিয়েছিল আহত হয়েছিল ৩৩০ জন।এই রেকর্ডগুলো লিখেছে অমুসলিমরা।২০০১ সালে আইআরএ বোমা ফাটালো বিবিসিতে কিন্তু আইআরএ কে ক্যাথলিক সন্ত্রাসি বলে ডাকা হয় না।আজকের দুনিয়ায় ইংল্যান্ডের সরকার বেশী ভয় পাচ্ছে মুলমান সন্ত্রাসীদের।এ পর্যন্ত বৃটিস সরকারের ইতিহাসে কতগুলো বিস্ফোরনের ব্যাপারে তারা নিশ্চিত যে মুসলমানরা এগুলো করেছে।

আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি যে স্ফেন ও ফ্রান্সে সন্ত্রাসী সংগঠন অসংখ্য আক্রমন চালিয়েছে।আর আফ্রিকায় অনেক অনেক সন্ত্রাসী সংগঠন আছে তার মধ্যে একটি প্রধান দল ও কুখ্যাত দলগুলোর একটি 'দি লর্ড সালভেসন আর্মি'।এটি একটি খৃষ্টান সন্ত্রাসি দল যারা বাচ্চাদের সন্ত্রাসী আক্রমনের জন্য প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে।শৃলন্কায় এলটিটিই(তামিল টাইগার্স) তারা পৃথিবীর সবচেয়ে কুখ্যাত ও হিংস্র সন্ত্রাসী সংগঠন গুলোর মধ্যে একটি।তাদের সদস্যরা আত্মঘাতি বোমার ব্যাপারে দক্ষ।তারা বাচ্চাদের দিয়েও এই আত্মঘাতি হামলা চালায়।সাধারনত আমরা পেলেস্টাইনে বা ইরাকে আত্মঘাতি হামলার কথা শুনি।ইতিহাস আমাদের বলে এই আত্মঘাতি হামলার শুরুটা করেছিল তামিল টাইগাররা আর তারা হলো হিন্দু কিন্তু ইন্ডিয়ান রিপোর্টাররা তাদের সন্ত্রাসী বলে না, বলে তামিল টাইগার।ইন্ডিয়ায় প্রায়ই দেখা যায় বেশীর ভাগ সন্ত্রাসী আক্রমনের ক্ষেত্রে বলা হয় কাশ্মিরি বিদ্রোহীদের কথা।যখনই কোন সন্ত্রাসী আক্রমন তখনি বলে মুসলমান সন্ত্রাসীদের কথা।ইন্ডিয়াতে সব ধর্মের মধ্যেই সন্ত্রাসী সংগঠন আছে।আমরা শিখ সন্ত্রাসীদের কথা জানি।ইন্ডিয়ান সরকার ১৯৮৪ সালের ৫ই জুন শিখদের স্বর্নমন্দির দখল করে ও ১০০ জন মানুষ মারা যায়।প্রতিশোধ হিসেবে কয়েকমাস পরে ১৯৮৪ সালের ৩১শে আক্টোবর সে সময় ইন্ডিয়ার প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধি, তাকে হত্মা করে তারই একজন গার্ড সে ছিল শিখ।সাউথ এশিয়ান টেরোরিজম যে ওয়েভসাইট টি- তা বানিয়েছে অমুসলিমরা। সেখানে সন্ত্রাসী আক্রমনের যে লিষ্ট টি আছে সেখানে মুসলমানদের সন্ত্রাসী যোগ্যতা কম কিন্তু মিডিয়া এই কথাগুলো বলে না।উত্তর পূর্ব ইন্ডিয়ান প্রদেশ গুলোতে যেমন ত্রিপুরায় এটিটিএফ(অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স),এনএলএফটি(ন্যাশনাল লিবারেশ ফ্রন্ট ওফ ত্রিপুরা) তারা খৃষ্টান।তারা অনেক হিন্দুকে মেরেছে।২০০৪ সালর ২রা অক্টোবর ৪৪ জন হিন্দু মারা যায় এদের আক্রমনে।আসামে আছে উল্ফা।উল্ফা একাই বিগত সময়ের মধ্যে ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে তারা ৭৪৯টি আক্রমন চালিয়েছে।তবে খবরের কাগজে শুধু কাশ্মিরিদের আক্রমন সম্পর্কে জানা যায়।আসামে সবচেয়ে বেশী সন্ত্রাসী সংগঠন আছে। উল্ফাদের ট্রেনিং দেয়া হয় শুধু মুসলমানদের মারার জন্য এবং তারা হিন্দু।খবরের কাগজে এদের ব্যাপারে তেমন নিউজ ছাপা হয় না। ইন্ডিয়াতে সন্ত্রাসী সংগঠনের আর একটি হলো নক্ক্সাল পন্থিরা।মাওবাদিরা যারা, তারা হলো কমিউনিষ্ট।ইন্ডিয়াতে কমিউনিষ্টদের যতগুলো আক্রমন হয়েছে বেশীর ভাগই করেছে মাওবাদিরা।শুধুমাত্র নেপালে তারা বিগত সময়ে ৯৯টি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।ইন্ডিয়ার ৬০০টি জেলার মধ্যে সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ি ৮৭৫টি রকেট মাওবাদিদের কাছে পৌঁছার কথা ছিল পুলিশ সেগুলো আটক করে ও বাজেয়াপ্ত করে এবং সেই সাথে ৩০টি রকেট লান্সারও ছিল।ইন্ডিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একটি চালান যা সরকার ধরেছে।সে সময়ের অন্ধ্র প্রদেশের ডিজিপি হতবাক হয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন এই রকেট লান্সার দিয়ে তারা যে কোন পুলিশ ষ্টেশনে হামলা করতে পারে।কোন টেংক কে ধংস করতে পারে ৬০০ মিটার দূর থেকে।তার পরও মানুষ ভয় পায় যাদের দাঁড়ি আছে,যারা মাথায় টুপি পরে ও যারা পেন্ট পরে গোড়ালির উপরে।এরা কি রকেট লান্সারের চেয়েও বিপজ্জনক? কেন মুসলমানদের এভাবে টার্গেট করা হচ্ছে? কারন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রন করে রাজনীতিবিদরা।যদি আমরা ভাল করে অনুধাবন করতে শিখি ও নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে সন্ত্রাস শুধুমাত্র মুসলমানদের সম্পদ নয় বরং এই সন্ত্রাসের ব্যাপারে মুসলমানদের তেমন কোন কৃতিত্ব নেই।এগুলো করানো হচ্ছে অমুসলিম বড় কুলাংগারদের দ্বারা যারা মুসলিমদের মধ্যে কিছু কুলাংগার তৈরি করেছে এবং এরা মুসলমানের প্রতিনিধিত্ব করে না।ইসলামে সন্ত্রাসের কোন অনুমোদন নেই।সুতরাং যারা এ কাজগুলোতে জড়িত থাকে তাদের আইনের কাছে সপর্দ করে দিন।তবে গড়পড়তা মিডিয়ার এসব প্রচার কোন মুসলিম কখনো মেনে নেয় না।

বেশীর ভাগ ধর্মগ্রন্থেই নীরিহ মানুষদের হত্মা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।আর এ ব্যাপারে সমস্ত ধর্মকে নেতৃত্ব দেয় ইসলাম।আলকুরআনের সূরা মা'ইদার ৩২ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'যে কেউ হত্মা করে একজন মানুষকে আরেকজন ব্যাতিত সে যেন সব লোকজনকে হত্মা করলো।আর যে কেউ তাকে বাঁচিয়ে রাখলো সে বাঁচালো সমস্ত লোকজনকে।' ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম আর প্রতিটি মুসলমান তার ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সমর্পন করে।ইসলাম সব ধরনের সন্ত্রাসী কাজকে নিন্দা করে।হোক সেটা ৯ ইলেভেন,হোক সেটা টুইন টাওয়ার এটাক,অথবা ৭ই জুলাইয়ে ইংল্যান্ডে ৫০জনের অধিক লোকের মৃত্যু,নিউইয়র্ক টাওয়ারে ৩০০০ এর অধিক মারা যাওয়া,বা ৯৩সালের সিরিয়াল বোমা ব্লাস্ট বোম্বেতে ২৫০জনের ও অধিক মারা যাওয়া এগুলো সবই নিন্দনীয় ও নিষিদ্ধ।অনেক মুসলমান যখন কথা বলে বা লিখে তখন ভীত হয়ে যায় কারন তারা ঐশি বানীর চেয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তা দিতে চায়।সত্যকে তুলে ধরে যদি মরে যেতে হয় তাহলে অসুবিধে কোথায়?আফাগানিস্তান , ইরাকে,গুজরাটে ,পেলেস্টাইনে ,লেবাননে যে হাজার হাজার নীরিহ মানুষ মারা গেল তাদের ব্যাপারে মুসলমিরা কথা বলছে না।সব ধরনের সন্ত্রাসের নিন্দা করা উচিত তা মুসলিমরা করুক বা অমুসলিমরা করুক।

সন্ত্রাস কোন ধর্মেরই একচেটিয়া সম্পদ নয়।অনেক সন্ত্রাসী তারা দাবি করে তারা কোন ধর্মের অনুসারি।খৃষ্টান সন্ত্রাসী,ক্যাথলিক সন্ত্রাসী,ইহুদি সন্ত্রাসী , হিন্দু সন্ত্রাসী মুসলমান সন্ত্রাসী,বৌদ্ধ সন্ত্রাসী,শিখ সন্ত্রাসী আছে।সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ধর্মের অনুসারি তবে বেশীর ভাগ ধর্মই নীরিহ মানুষকে হত্মার ব্যাপারে নিন্দা করে।আমরা যদি জরীপ করে বের করার চেষ্টা করি কোন লোকগুলো বেশী মানুষ হত্মা করেছে ও তারা কোন ধর্মের অনুসারি।এক নাম্বার যে লোকটি পৃথিবীর বেশী নীরিহ মানুষকে হত্মা করেছে তার নাম হলো এডলফ হিটলার।সে ৬০লক্ষ মানুষকে হত্মা করেছে।আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মারা গিয়েছে ৬কোটি মানুষ।এই হিটলার ছিল খৃষ্টান।জোসেফ ষ্টালিন(আন্কেল জো) ২কোটি মানুষকে হত্মা করেছিল।ষ্টালিনের নির্দেশে ১কোটি ৪৫লক্ষ মানুষ না খেয়ে মারা গেছে।চিনে মাউসেতুং হত্মা করেছে দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ।সে ছিল অমুসলিম।মুসলিনি ইটালিতে হত্মা করেছে ৪লক্ষ মানুষকে।যে লোকটির নামে ফরাসি বিপ্লবের নামকরন করা হয়েছে তার নাম হলো মেক্ক্সিমিলিম রোবসপিয়ারে সে দুই লক্ষেরও বেশি মানুষকে অনাহারে ও অত্মাচারে মেরেছে।অশোক কালিমগা যুদ্ধে মেরেছিল ১লক্ষেরও বেশী মানুষ আর সে ছিল হিন্দু।আমাদের ধর্মেও কিছু কুলান্গার আছে ইতিহাস সাদ্দাম হোসেনের কথা বলে, কয়েক লক্ষ মানুষকে সে হত্মা করেছিল।ইন্দোনেশিয়ায় মোহাম্মদ সুহার্তো ৫লক্ষ মানুষ হত্মা করেছে।তবে অন্যদের তুলনায় কম তবে তারাও ইতিহাসে নিন্দনীয় কারন তারা মুসলমান হলেও নীরিহ মানুষকে হত্মা করেছে আর তারা ধার্মিক নয়।ইতিহাসে মুসলমানদের এই হত্মাকান্ড কম হলেও আমরা দেখি মিডিয়া মুসলমানদেরই বেশী হাইলাইট করে।তাদের বলা হয় মৌলবাদি,চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী।আমাদের মুসলমানদের মধ্যে অনেকে আছে এই কথাগুলো মেনে নিতে চায় না কারন তারা এর অর্থ বুঝতে অপারগ।যখন কোন বিধর্মী মুসলমানদের এ কথা গুলো বলে তাদের উত্তর দেয়া উচিত যে, আমরা মুসলমানরা চরম সৎ,চরম ন্যায়বান,চরম দয়ালু ,চরম শান্তিকামি ও চরম ক্ষমাশীল।অনেক মুসলমানরা মাঝে মধ্যে এই গুন গুলো লালন করেন।তাদের জানা উচিত আমাদের আলকুরান বলেছে সর্বঅবস্হায় আমাদের সৎ থাকতে হবে ও সত্যের জন্য লড়তে হবে।যখন সুবিধা মনে করেন তখন ন্যায় পরায়ন হয় আবার যখন অসুবিধায় থাকে ভন্ড লম্পট ও হয়ে যায়।এ ধরনের চরিত্রের নাম ইসলামি চরিত্র নয়।একজন মুসলিমকে সর্ব অবস্হায় এ গুন গুলো নিয়ে বাঁচতে হবে।সূরা আল বাক্কারার ২০৮ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন,'সর্বাত্তক ভাবে ইসলামে প্রবেশ কর।' সন্ত্রাসের সহজ সংজ্গা হলো যে লোক অন্যকে সন্ত্রস্ত করে।উদাহরন স্বরুপ-একজন অপরাধি একজন পুলিশকে দেখে সন্ত্রস্ত বোধ করে তাহলে এই অপরাধীর জন্য পুলিশ হলো সন্ত্রাসী।এভাবে প্রত্যেক মুসলমানকে সণ্ত্রাসী হওয়া উচিত।একজন অপরাধি যখন কোন মুসলমানকে দেখবে সে সন্ত্রস্ত হবে।এ কথাই বলা হয়েছে সূরা আনফালের ৬০নং আয়াতে,'তোমরা সন্ত্রস্ত করবে আল্লাহর শক্রুকে।' আলকুরান বলছে যারা নীরিহ মানুষদের মারে তাদের মনের মধ্যে ভয় সৃষ্টি কর।আমাদের মুসলমানদের হিক্কমত ও সত্যের সাথে কথা বলা উচিত।আল্লাহ পাক সূরা নাহালের ১২৫ নং আয়াতে বলেন,'তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের প্রতি আহ্বান কর হিক্কমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে কথা বল যুক্তির সাথে যা উত্তম ও গ্রহনযোগ্য পন্থায়।' এই সন্ত্রাস মুসলমানদের নয় তথাকথিত রাজনীতিবিদদের একচেটিয়া সম্পদ।সন্ত্রাস যদি আমরা বন্ধ করতে চাই তাহলে এর কারন খুঁজে বের করতে হবে।একজন ডাক্তারের কাছে যখন কোন রোগি আসে তখন ডাক্তার লক্ষন দেখে চিকিৎসা করে না।তাকে অনেক এনালাইসিস করে রোগ নির্নয় করতে হয়।জ্গানীরা বলেন সন্ত্রাসের পিছনে কারন হলো অন্যায় ও অবিচার।যখন একজন মানুষের উপর অন্যায় ও অবিচার করা হয় তারা প্রতিশোধ নিতে চায়।এটাই হলো প্রধান কারন।সমস্ত ঘটনার পিছনে কলকাঠি নাড়েন এই রাজনীতিবিদরা।এখানে তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত রয়েছে।ইন্ডিয়ায় ৬৭ বছর আগে যখন বৃটিশরা শাসন করতো তাদের পলিসি ছিল ডিভাইড এন্ড রুল।কিন্তু স্বাধীন হওয়ার পরও এই উপমহাদেশে তাদের সেই পলিসি বহাল রয়েছে।রাজনীতিবিদরা এই পলিসিটি ব্যাবহার করছে ভোটব্যান্কের জন্য।পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী সাম্প্রদায়িক দাংগা হয় ইন্ডিয়াতে।এর কারন হিসেবে বলা যায় রাজনীতিবিদরা এর সাথে জড়িত।ক্ষমতা,ভোটব্যাংক ও কালো টাকা অর্জনের জন্য তারা এগুলো করে থাকে।তারাই এই ইস্যুগুলো তৈরি করে।অধিকাংশ ধর্মপরায়নরা একসাথে মিলে মিশে বসবাস করতে চায়।যার যার ধর্মমত যে যে চলবে।কেউ কারো ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করবে না,কেউ কাউকে কারো ধর্মে দীক্ষিত করার জন্য জোর জবরদস্তি করবে না তবে কেউ যদি কোন ধর্মের প্রতি স্বইচ্ছায় আসক্ত হয় ও গ্রহন করে সেটা তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার।

কয়েক বছর আগে ইন্ডিয়াতে একটি রাজনৈতিক গুজব ছিল বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির নিয়ে অযোদ্ধায়।দুর্ঘটনার আগে ক'জন এ বিষয়টি জানতো।যখন রাজনীতিবিদরা এই গুজবটি ছড়ালো তখন মানুষ জানলো।আমরা জানি ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর অযোদ্ধায় অনেক লোক জড় হয়েছিল।সুপ্রিম কোর্ট পরিস্কার ভাবে বলে দিয়েছিল যে বাবরি মসজিদের কাছাকাছি কেউ জড়ো হতে পারবেনা।রাজনীতিবিদদের একটি দল তারা একটি রাজনৈতিক গুজব বানালো,গুজবটা রামের জন্মভূমি ও বাবরি মসজিদ নিয়ে।সরকারি দলের রাজনীতিবিদরা ভাল করেই জানে তাদের পিছনে সুপ্রিম কোর্ট আছে।তারা সহজে লোকজন সরিয়ে দিতে পারতো কিন্তু তারা ভাবলো যদি এদের থামাই তাহলে ভোট পাব না তাই লোকজন জড়ো হতে থাকুক।লোকজন জড়ো হলো আর তাদের কথায় স্বতস্ফুর্তভাবে যে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়েছিল তারা বাবরি মসজিদ ধংস করে ফেললো কোন প্ররোচনা ছাড়া।তখন এ ঘটনা সরাসরি অনেক সেটেলাইট চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল।রীতি মত পরিকল্পনা ছিল ও তারা মসজিদে বোমা ফাটিয়েছিল।এর পর ইন্ডিয়ায় রায়ট শুরু হলো পুরো দেশ জুড়ে।এটাই দেশ বিভাগের পর ছিল বড় রায়ট।পুরো দেশ জুড়ে হাজার হাজার নীরিহ মানুষ মারা গেছে ও বেশীর ভাগই মুসলমান।কাকে আমরা দোষ দিব? ইন্ডিয়ান সাধারন মানুষকে প্ররোচিত করেছিল এই রাজনীতিবিদরাই।পরবর্তিতে ইন্ডিয়ান সরকার গঠন করলো এক সদস্যের তদন্ত কমিশন সংখ্যালঘুদের শান্ত করার জন্য।আর সেখানে বসানো হলো শ্রী কৃষ্ন নামে একজন বিচারপতিকে।এই কমিশনকে বলা হতো শ্রী কৃষ্ন কমিশন।এই বিচারপতি ছিল একজন ধর্মভীরু হিন্দু আর একই সাথে একজন সৎ ও নির্ভীক জাজ।একজন সৎ ও নীর্ভিক জাজ যে রায় দিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান সরকার সে রায় হজম করতে পারে নি ও তাদের এক বছর সময় লাগলো।তিনি রায়টের পুরো কেসটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছিলেন বলে জানা যায়।তিনি সবার সাথে কথা বলেছিলেন এমনকি পুলিশ ষ্টেশনে যেতেও কসুর করেননি সঠিক তথ্য জানার জন্য।এর পর তিনি প্রকাশ করলেন যে বইটি ' verdict' by shrikrisno commission.তিনি এই বইতে লিখেছেন কিভাবে রায়টগুলো ঠেকানো যায় তবে সেটা করতে সময় লাগবে।সরকার বললো যা হওয়ার হয়ে গেছে।তারা জানতো যদি রিপোর্ট অনুযায়ি কাজ করে তাহলে ভোটব্যান্ক হারাবে।তারা রাজনৈতিক কমিশন করলো।কোন দেশেই এই রাজনৈতিক কমিশন ভাল সুফল বয়ে আনতে পারে নি কারন তারা এত দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে যে মানুষ ইস্যুগুলো ভুলে যায়।এই দেরি করাটা একটি রাজনৈতিক কৌশল যা অনেকেই জানে না।১৯৯৩ সালের বারই মার্চ একের পর এক মোট ১৩টি বোমা ফেটেছিল বোম্বেতে।সেখানে ২৫০জনেরও বেশি নীরিহ মানুষ মারা যায় ও ৭০০জনেরও বেশী আহত হয়।সরকার বললো এটা পরিকল্পিত ঘটনা কিন্তু জাস্টিস শ্রি কৃষ্ন বললো পরিকল্পনা নয় এটা ছিল প্রতিশোধ।বোম্বেতে সেই রায়টে দেড় হাজারেরও বেশি নীরিহ মুসলমান মারা যায়।সরকার আর পুলিশ বললো মুসলমানদের গোপন দল এই বোমা ফাটিয়েছে।তার পর ১৯৯৩ সালের বারই মার্চের বোম্ব ব্লাষ্টের পর সবকিছু বদলে গেল।বেশীর ভাগ মুসলমানই জানতো নীরিহ মানুষ হত্মা করা নিষিদ্ধ কিন্তু যারা বোমা ফাটিয়েছিল তাদের উপর তারা খুশিও হয়েছিল।ইসলাম ধর্মে অন্যায়ের জবাব অন্যায় নয় এ সব ঘটনাকে নিন্দা করে।সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে সব ধরনের অবিচার বন্ধ করতে হবে।পুলিশের জন্য বোমা বিস্ফোরন বন্ধ করা কঠিন কিন্তু রায়ট বন্ধ করা সহজ।

ইন্ডিয়ায় গুযরাট হত্মাকান্ডের ঘটনা এটা শুরু হয়েছিল ২০০২ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি আর চলেছিল সেই বছরের মার্চমাস পর্যন্ত।এই ঘটনার আগে সাবার বতি এ্ক্সপ্রেস ট্রেনের একটি কোচ পোড়ানো হয়েছিল গোদাতে ২০০২ এর ২৬শে ফেব্রুয়ারি। মানুষ ভালভাবেই জানতো ঐ ট্রেনে যে বগিটি পোড়ানো হয়েছিল, ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ি বলা হয়েছে কোচটি ভীতর থেকেই পোড়ানো হয়েছিল।মুসলমানরা জড়ো হয়েছিল কিন্তু তারা হত্মা করেনি।সন্দেহ করা হয়েছিল সেখানে ৫৯জন লোক মারা গিয়েছিল।এটা হয়েছিল রাজনৈতিক ছাপে।ইন্ডিয়ার সুপ্রিম কোর্ট গুজরাটের হাইকোর্টের বিরুদ্ধে একটি রায় দিয়েছিল যে গুজরাটের রায় ভুল ছিল।হতে পারে রাজনীতিবিদরা ক্ষমতার অপব্যাবহার করেছে।এর কয়েকমাস পরেই আক্ক্সারধাম মন্দির হত্যাকান্ড এবং দুইজন লোককে ধরা হয়েছিল ও মেরে ফেলা হয়েছিল।বলা হয়েছিল তারা মুসলমান।তখন বলা হোল এই লোক দুটি মন্দিরের মধ্যে অনেক মানুষকে মেরে ফেলেছে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য।তারা যুক্তি দেখালেও ইসলাম এসব সমর্থন করে না কারন ইসলাম ন্যায় বিচারের উপর নির্ভরশীল।আইন হাতে নেয়ার বিধান ইসলামে নেই যদিও কেউ জানে তার হত্মাকারি তার সামনে ঘুরে বেড়ায়।একজন মুসলমান যদি নিশ্চিত জানে কেউ হত্মাকারি তাহলে তাকে কোর্টে মামলা করতে হবে এবং তার পক্ষে তার এভিডেন্স থাকতে হবে।অন্যায় করে কখনো ভাল কিছু আশা করা যায় না।২০০৬ সালের ১১ই জুলাই বোম্বাইয়ে ট্রেনের মধ্যে একের পর এক ৭টি বোমা বিস্ফোরন হলো মাত্র ১১মিনিটের মধ্যেই।সেখানে ২০০ জনেরও বেশি নিরীহ মানুষ মারা যায়।আহত হয় ৮০০ জনেরও বেশি।পুলিশ আর কতৃপক্ষ বললো এই ঘটানাও গুজরাটের সেই রায়টে হাজার হাজার মুসলমান হত্যার বদলা নিতে করা হয়েছে।কতৃপক্ষ বললো এর জন্য দায়ি লস্কর তৈয়্যবা।সমস্ত ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এর জন্য দায়ি রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল ও নেতারা ও তার সাথে প্রশাসনের আশ্রয়।

সবশেষে সন্ত্রাস কিভাবে বন্ধ করা যায় তার উপায় খুঁজতে হবে।রাজনীতিবিদদের সৎ হতে হবে ও ভোটব্যান্ক নিয়ে তারা আপরাধে জড়াবেনা।তারা যদি সৎ ও ন্যায়বান হয় হতে পারে তারা আসন পাবে না কিন্তু নিশ্চিত যে সন্ত্রাস বন্ধ হবে।সাধারন জন গনের কখনো উচিত নয় কোন গুজবে কান দেয়া ও উস্কানিতে মেতে উঠে অন্যদের হত্মা করা।পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে সৎ ও ন্যায় বান হতে হবে ও তারা রাজনীতিবিদদের হাতের পুতুল হবে না।আইন শৃংখলা বাহিনীর বেশীর ভাগই সৎ থাকতে চায় কিন্তু তারা রাজনীতিবিদদের দ্বারা ছাপের মুখে থাকে, না জানি কখন স্হানান্তর করে দেয়।কিন্তু পুরা পুলিশ বাহিনী যদি একসাথে সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা সৎ থাকবে তাহলে সরকার তাদের কিছুই করতে পারবে না।আর পূ্র্ববর্তি পুলিশরা যদি সৎ হয় নতুনরা আসলে অবশ্যই সৎ থাকবে।কোন মানুষ আইনকে নিজের হাতে তুলে নিবে না ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে তাহলেই অন্যায় ও সন্ত্রাস জাতীয় অপকর্ম কমে যাবে।প্রতিটি দেশেই যদি এই নিয়মকানুন গুলো মেনে চলা হয় তাহলে বিশ্বে যে অশান্তির আগুন জ্বলছে তা বন্ধ হবে একথা নিশ্চিত করে বলা যায়।

বিষয়: বিবিধ

২৭০৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

269673
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার তথ্যপুর্ন লিখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সন্ত্রাস বিরোধি আইন এর নামে আসলে রাষ্ট্রের কমকর্তারা তাদের আয় এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি করে নেয়।
269738
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৪০
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : গুরুত্বপূর্ণ লেখা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File