উন্নত জীবনের সন্ধানে বিদেশে না গিয়ে মনের গহীনে নিজের দেশকে স্হান দিন ও দেশকে উন্নত করার মনবাষনায় নিবদ্ধ করুন।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:৩১:০৫ দুপুর
মাছের পুরো শরীর পঁচনের আগে মাথা পঁচন শুরু হয়।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও মানুষের মাথা পঁচন শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকে আর তার ব্যাপক প্রকাশ পেয়েছে আমাদের স্বাধীনতার পর থেকে যা চলছে আজ পর্যন্ত।একটি গোষ্ঠী দেশ শাসন করার নামে দেশের সম্পদ লুন্ঠনের দিকে মনযোগী হয়েছে।আমলাতান্ত্রিক যে ধারা শুরু হয়েছে তার বিশ্লেষন করলে এগুলো-ই আমরা দেখতে পাই।এদের মধ্যে দুটো শ্রেনী আমরা ইতিমধ্যে আবিষ্কার করেছি যারা দলের ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত।যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তারা তাদের সুবিধা আদায় করে নেয়।আর সরকারগুলো এদের দিয়ে সাধারন মানুষের সান্নিধ্যে যাওয়ার চেষ্টা করে।এরা মানুষের কথা বলে অথচ সেই মানুষগুলোর সাথে এদের কোন যোগাযোগ নেই।যে কোন সরকারের এই ভাড়াটেরা সরকারের পক্ষে এ সাপাই গাইতে থাকে ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত।সাধারন জন গন যখন ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষে তাদের কথা বলতে দেখেন তখন আশ্চর্য হন এবং ছি ছি করতে থাকেন আবার অনেকে পানের পিক পেলার ভংগিতে অংগভংগি করেন।সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লোভ-লালসা ছড়িয়ে পড়ছে। দুনিয়াজুড়ে ব্যবসায়ী আর শোবিজ জগতের তারকারা ভোগবিলাসের জীবনযাপন করেন। আজকাল চড়া ব্যাংক সুদ, আমলাতন্ত্রের নানা জটিলতা, পথে পথে বাধা ব্যবসায়ীদের ঘুম হারাম করে দেয়। মধ্যস্বত্বভোগী দালাল আর সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক ক্ষমতায় আশ্রিত তদবিরবাজরা মুনাফা লুটে। শেয়ার কেলেঙ্কারি হয়ে যায়, ব্যাংকের টাকা লুট হয়ে যায়, ভিওআইপি ব্যবসার নামে দুর্নীতি তো আছেই। একসময় সমাজে নীতিবান, আদর্শবান সৎ মানুষের কদর ছিল বেশি। মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এই সময়ে নষ্টদের কদর বাড়ছে দিন দিন। এখন তথাকথিত রাজনীতিবিদদের অনেকে ভোগবিলাসের জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে পাঁচটি বছর আলাদিনের চেরাগ তাদের হাতে চলে আসে। আর তারা বিত্তবৈভব, সম্পদের পাহাড় গড়েন। বিনিয়োগহীন এমন টাকা উৎপাদনের উর্বর ভূমি পৃথিবীর আর কোথাও নেই। মধ্যরাতের টকশোতে কাঁচাপাকা চুলের বামুনেরা সরকারের দালালি করে কথা বলে যায়। মানুষ জানে না আড়ালে তাদের মতলবটা কোথায়। ২২-২৩ বছর আগে সাংবাদিকতার টানাপোড়েনের জীবনে টিকতে না পেরে কোনোক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইংলেন্ডের ভিসা লাগিয়ে ফাঁড়ি জমিয়েছে অনেকে। বাড়ি কেনাবেচা আর যার যার সরকারের দালালি করে দিন চলেছে তাদের। দল ক্ষমতায় এলেই এদের অনেকের আগমনে রাজধানি ও এলাকা সরব হয়। এবারের আওয়ামিলীগ সরকার অনেকটা উদার। এরা সাইবেরিয়ান ডাকের মতো, উড়ে আসে আওয়ামী শাসনামলে। আওয়ামী লীগ কর্মীরা যখন জেল খাটে, নির্যাতন ভোগ করে, গ্রেনেড-বোমা খায় তখন এদের পাশে দাঁড়াতে হয় না। তারা তখন বিদেশে সুখনিদ্রা যায়। ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে উঠবস করে ক্ষমতাসীনদের ছায়ায়। কোথায় কার নাম ভাঙায় কেউ জানে না। রাতারাতি টেলিভিশন, ব্যাংক-বীমার মালিক হয়ে যায়। বিবেক খোঁচায়, জানতে চায় এসব নষ্ট লুটেরার জন্য কি বঙ্গবন্ধু দেশটা স্বাধীন করেছিলেন? পরিবার-পরিজনসহ জীবন দিয়েছিলেন? এত রক্ত দিয়েছে জাতি? এদের লুটপাটের সিঁড়ি হওয়ার জন্যই কি আওয়ামী লীগের লাখো লাখো নেতা-কর্মী জেল-জুলুম-নির্যাতন সয়েছে? হাজার হাজার নেতা-কর্মী প্রাণ দিয়েছেন? অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলে না। দুর্নীতির বরপুত্ররা হাত ধরাধরি করে হেসেখেলে হাঁটে। মিডিয়া হাউসগুলো টেলিভিশন পাবে। বেসরকারি টেলিভিশন পাক ইত্তেফাক, পাক সংবাদ, খবর, পেতে পারে আরও অন্যান্য মিডিয়া হাউস। অদ্ভূত ব্যাপার! প্রিন্ট মিডিয়া থেকে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় চাকরি করে জীবিকানির্বাহ করা নষ্ট কমিউনিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাজনৈতিক নিয়োগের চাকরিও পায়, টেলিভিশনের লাইসেন্সও পায়। এখানে সরকার জানতেও চায় না টেলিভিশনের জন্য শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে কোথা থেকে! যেন জানাই হয়ে গেছে! এমন লাইসেন্স পারমিটের ব্যবসা অতীতে মানুষ শুনেছিল আর বিএনপি-আওয়ামী লীগ শাসনামলে দেখল। বাহ! কী সুন্দর আমাদের রাজনীতি! কী সুন্দর আমাদের শাসকরা! দলকানা দলদাসদের জন্য দেশটা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গণমাধ্যমের কর্মী, কালো গাউন পরা আইনজীবী, লেখক, ডাক্তার, আমলা, যেই যে পেশারই হোন না কেন জীবনে কোনো প্রাপ্তিযোগই ঘটবে না যদি দলকানা, দলদাস না হন। লাজলজ্জাহীন বেশরম দলকানাদের এখন সুসময়।
বিএনপি জমানায় অনেকেই টেলিভিশনের লাইসেন্স নিয়েছিলেন। অবারিত লুটপাট, দুর্নীতিতে গা ভাসিয়ে দিয়ে দিন এনে দিন খাওয়া লোকেরাও বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছিলেন। কবরস্থানের পাহারাদার থেকে মন্ত্রিপাড়ার দালাল, হাওয়া ভবনের কর্মচারী সবাই কামিয়েছিলেন। অনেকেই টেলিভিশন নিয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার সরকারের পতনের পর তার পাশে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া আর হাতেগোনা একটি টিভি ছাড়া কেউ পাশে থাকতে পারেনি। অনেকে বিক্রি করে কেটে পড়েছেন। আওয়ামী লীগ আমলে দলীয় বিবেচনায় যাদের টিভি দেওয়া হয়েছে সেখানে দুঃসময় এলে কতজন থাকেন সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে বিএনপি আমলে রাতারাতি বিত্তবৈভবের মালিক যারা হয়েছিলেন, তারা ক্ষমতা অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেউ যুক্তরাজ্য, কেউ যুক্তরাষ্ট্র, কেউ মালয়েশিয়া, কেউ বা মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন। আর দেশে পড়ে থাকা বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী জেল-জুলুম আর পুলিশি নির্যাতন সয়েছেন, সয়ে যাচ্ছেন। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। লাজলজ্জা খুলে যারা সরকারের আশ্রিত হয়ে নির্লজ্জ চাটুকারিতার বেহায়াপনায় মগ্ন হয়ে কামাচ্ছেন, লুটছেন, টিভি মালিক হচ্ছেন, ব্যাংকের মালিক হচ্ছেন, কোটি কোটি টাকা কামিয়ে মধ্যরাতে জাতিকে জ্ঞান দিচ্ছেন, একদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলে কেউ পাশে থাকবে না। সুড়সুড় করে চলে যাবে যার যার মতো দেশের বাইরে। হাতে টাকা, তাদের ঠেকাবে কে? হৃতদরিদ্র কর্মীরা নির্যাতন সইবে, জীবন দেবে, তাদের টানবেন মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা। এই তো পরিণতি। জীবনে একবার কিছু দিন বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা করলে, ইলেক্ট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়ায় সাংবাদিকতা করলে কিংবা একবার হজ আদায় করলে সারা জীবন তা পরকালের জন্য না রেখে দুনিয়ায়ই ভাঙিয়ে খাওয়া যায়। নামের আগে রাজনীতির ময়দানে ভোট বাগানোর মতলবে আলহাজ জুড়ে দেওয়া হয়। অধ্যাপক লাগিয়ে মাঠ ঘুরে বেড়াও। একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় কিছু দিন রিপোর্টারের কাজ করেছেন। তারপর টানা দুই দশক অ্যাডফার্মের চাকরি। সাংবাদিকতার সংগ্রামের পথ না হাঁটা এই মানুষটিও সাংবাদিকতার প্রিভিলেজটুকু সমাজ থেকে নিতে চান। মধ্যরাতের টকশোতে কী উপস্থাপনায় কী বক্তব্যে আবির্ভূত হন সিনিয়র সাংবাদিক পরিচয়ে। ওই যে লাজলজ্জা খুলে ফেললে অসুবিধা হয় না। লাজলজ্জা যারা খুলে ফেলছে সমাজ তাদের নিয়ে লাফাচ্ছে। লাজলজ্জা যারা খুলে ফেলছে তারা যতটা না লজ্জা পাচ্ছে তাদের দেখে অন্যরা বেশি লজ্জা পাচ্ছে।
এক অদ্ভূত সময় পার করছি আমরা। রাজনৈতিকভাবে দেশটা দুই ভাগে বিভক্ত করেছি। লীগ আর দল। বঙ্গবন্ধুর গরিবের দল আওয়ামী লীগের একদল নেতা-কর্মী ভোগবিলাসে মত্ত। ক্ষমতার সুবাদে বিত্তবৈভব বানাতে গিয়ে ভুলে গেছেন মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর সাদামাটা জীবনের স্মৃতিময় ধানমন্ডির রক্তাক্ত ৩২ নম্বরের বুলেটবিদ্ধ ঐতিহাসিক বাড়িটি। জাতির জীবনে যা ইতিহাসের ঠিকানা হয়ে বীরত্বের গৌরব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অদ্ভূত এক সময় অতিক্রম করছি আমরা। বিএনপি জমানায়ও দেখেছিলাম দুর্নীতির মহোৎসব, দলীয়করণ আর স্বজনপ্রীতির উল্লাস। সেবার মানুষ দেখেছে বিএনপি সরকারের আশ্রিত সুবিধাভোগীরা 'কামাও কামাও' বলে টাকা-পয়সা বানিয়ে বিপদে কীভাবে কেটে পড়েছে। এবারও দেখছি ওই আশ্রিতরা একটাই যোগ্যতা আমরা সুবিধাভোগী, আমরা দলকানা, আমরা দলদাস। আমরা কামাব, আমরা বিপদে সরে যাব। যারা দেখছ তারা সমীহ কর, না হয় এদিকে তাকিও না, ভুলে যাও, এ আমাদের ন্যায্য হিস্যা। এটা দলকানা ও দাসত্বের চুক্তিনামায় সই করে অর্জন করেছি। তোমরা যারা তৃতীয় পক্ষ, দলকানা নও, দলদাস নও, সুবিধাভোগী নও, ব্যাংকের দরজা তোমাদের জন্য বন্ধ। মুনতাসির ফ্যান্টাসি নাটকের চরিত্রের মতো যা পাব তাই খাব। তোমরা যারা তৃতীয় পক্ষ, তোমরা যারা মধ্যপন্থি নাগরিক, তোমাদের সন্তানদের জন্য ভর্তি কোটা বন্ধ, বিসিএস দিলেও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের উত্তীর্ণের তালিকায় ঠাঁই নেই। এটাই আজ দলকানা গণতন্ত্রের বিউটি।
একজন সংসদ সদস্য ট্যাক্ক্স ফ্রি গাড়ি পাচ্ছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় থাকার ফ্ল্যাট পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে বাড়ি বানানোর জন্য প্লট পাচ্ছেন। তবুও তার আরও চাই। আমাদের ঐতিহ্যের রাজনীতির উত্তরাধিকারিত্বের পথে হাঁটতে নারাজ। এমনকি দলের প্রতি আদর্শবানদের নিয়েও চলতে নারাজ। সেখানে এমপিকানাদের নিয়ে সিন্ডিকেট করে চলতে হবে। টেন্ডারবাজিতে ভাগ বসাতে হবে। অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে সর্বত্র ভাগের কারবার। এক অদ্ভূত সময় পার করছি আমরা। কেউ দেখার নেই। কেউ বলারও নেই। ফ্রি স্টাইলে চলছে সব। রাজনীতিকে কী নিষ্ঠুরভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে। রাজনীতিবিদ নীতির আদর্শে গড়ে উঠছেনা, রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ী হয়ে যাচ্ছেন। মরহুম রাজনীতিবিদ আবদুস সামাদ আজাদ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে রসিকতা করে বলতেন, 'টিআর মানে খাও।' বর্তমান রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ স্বভাবসুলভ রসিকতায় একবার বলেছিলেন, কাবিখা-কাজের বিনিময়ে খাদ্য, এ তো খাবেই! জনগণের জন্য সরকারের প্রকল্প এভাবেই লুটপাট হয়ে আসছে। এই লুটপাট তৃণমূল বিস্তৃত হচ্ছে তো হচ্ছেই। এসো ভাই মিলেমিশে খাই নীতিতে বাড়ছে, থামানোর কেউ নেই।
আমাদের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতির মর্যাদা অন্যসব ব্যক্তির ঊর্ধ্বে। রাষ্ট্রের মানক্রমেও রাষ্ট্রপতির অবস্থান শীর্ষে। রাষ্ট্রের মানক্রমে পরবর্তী অবস্থানটি প্রধানমন্ত্রীর। আমাদের দেশে বর্তমানে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা চালু আছে। সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর ওপর ন্যস্ত থাকে। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে রাষ্ট্রপতির ওপর। বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য থাকলেও রাষ্ট্রের মানক্রমে রাষ্ট্রপতির স্থান শীর্ষ হওয়ার বিষয়ে কোনো পার্থক্য নেই।যে কোনো রাষ্ট্রের নাগরিকদের জীবন যাপনের জন্য অপরিহার্য পাঁচটি মৌলিক উপকরণের নিশ্চয়তা প্রদান রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ মৌলিক উপকরণগুলোর মধ্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা অন্যতম। বিশ্বের সব রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের যে কোনো ধরনের শারীরিক অসুস্থতা নিরাময়ে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সবকিছু করা হয়। সব উন্নত এবং অধিকাংশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে দেখা যায়, রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান অসুস্থ হলে দেশের অভ্যন্তরে সুচিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময়ের ব্যবস্থা করা হয়।
একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের সুস্থতা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক। একজন সুস্থ রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান সঠিক নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে স্বল্পতম সময়ে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারেন। এমন অনেক দেশ আছে যেসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান অসুস্থ হলে তারা নিজ দেশের পরিবর্তে অন্য কোনো দেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়াকে দেশের জন্য সম্মানহানিকর মনে করেন। আমাদের নিকটবর্তী রাষ্ট্র মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ পদে বহাল থাকাকালীন হৃদরোগজনিত সমস্যার সম্মুখীন হলে সেদেশের চিকিৎসকরা তাকে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর অথবা অন্য কোনো উন্নত দেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি তখন চিকিৎসকদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, তার হৃদরোগ নিরাময়ে যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, সে চিকিৎসার ব্যবস্থা তার নিজ দেশে সম্পন্ন করতে হলে কত সময়ের প্রয়োজন এবং সে সময় অবদি তার হৃদরোগ সমস্যা নিজ শরীরের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দেবে কিনা? চিকিৎসকদের কাছ থেকে আশ্বস্ত হওয়ার পর মাহাথির মোহাম্মদ তার নিজ দেশে হৃদরোগের চিকিৎসা সম্পন্নের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা নিশ্চিতকরণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলেন। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে সেদেশের চিকিৎসকরা দেশের অভ্যন্তরে হৃদরোগের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে সক্ষম হলে মাহাথির মোহাম্মদ নির্দ্বিধায় ও অনেকটা গর্বভরে নিজ দেশেই চিকিৎসা করান। চিকিৎসার পর ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় তিনি সুস্থ ছিলেন এবং অদ্যাবদি সুস্থ আছেন।
মালয়েশিয়া উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোগত সুবিধা বিবেচনায় কোনো অংশে উন্নত দেশের চেয়ে কম নয়। বিগত শতকের সত্তরের দশকের প্রথমার্ধে মালয়েশিয়ার গড় মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের চেয়ে কম ছিল। সে সময় আমরা ছিলাম পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত। সত্তরের দশকের প্রথমার্ধে উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে অধ্যয়নে আগ্রহী দেখা যেত। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সে আগ্রহে ভাটা পড়ে এবং এর বিপরীতে দুদশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য মালয়েশিয়া যাচ্ছে। মাহাথির মোহাম্মদের শাসনামলে মালয়েশিয়া সব ক্ষেত্রে দ্রুত সমৃদ্ধি অর্জন করে। এর পেছনে ছিল তার সঠিক নেতৃত্ব ও অগাধ দেশপ্রেম।হৃদরোগের কারণে মাহাথির মোহাম্মদের জীবন সংকটাপন্ন হওয়া সত্ত্বেও তিনি কিছুকাল অপেক্ষা করে নিজ দেশে চিকিৎসা গ্রহণ করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বর্তমানে মালয়েশিয়ার জনগণ গর্বভরে বলে, তাদের দেশের শতভাগ রোগী নিজ দেশে চিকিৎসা নিতে পেরে সন্তুষ্ট। শুধু মালয়েশিয়া নয়, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেমন- যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, চীন ইত্যাদি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানরা যে কোনো ধরনের অসুস্থতায় নিজ দেশের পরিবর্তে অন্য দেশে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এমন দৃষ্টান্ত নেই।
আমাদের দেশে সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন ব্যক্তিদের চিকিৎসা বিষয়ে যে সরকারি বিধিবিধান রয়েছে তাতে বলা আছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রত্যয়ন সাপেক্ষে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। এ ধরনের চিকিৎসা গ্রহণে সরকারের উচ্চপদে আসীন ব্যক্তিদের অনেককে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল বা বিশেষ তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য গ্রহণ করতে দেখা গেছে। তবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকাকালীন বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করলে ভ্রমণ ব্যয়সহ চিকিৎসা সংক্রান্ত সমুদয় ব্যয় রাষ্ট্র বহন করে থাকে। ইতিপূর্বে যখনই রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার উদ্দেশে বিদেশ গেছেন, দেখা গেছে তাদের সফরসঙ্গীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা গ্রহণ করাকালীন যেসব সফরসঙ্গী তাদের সঙ্গে বিদেশে অবস্থান করেন, তাদের অবস্থান সংক্রান্ত সার্বিক ব্যয় রাষ্ট্র বহন করে থাকে।আমাদের দেশে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালের মান ও সুযোগ-সুবিধা কোনো অংশে উন্নত দেশের অত্যাধুনিক হাসপাতালের চেয়ে কম নয়। দেশে বেশকিছু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন, যারা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাদের দেশ-বিদেশে খ্যাতি রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রতিটি বিভাগেই দেশে বর্তমানে একাধিক বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। দেশ থেকে কিছুকাল আগেও যে হারে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের উদ্দেশে পাড়ি জমাত, তা বর্তমানে অনেকটা নিম্নমুখী। এটা দ্রুত শূন্যে নিয়ে আসা সম্ভব, যদি আমাদের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ খুব একটা জটিল নয় এমন রোগের চিকিৎসা দেশের অভ্যন্তরেই গ্রহণ করেন।ভালবাসার অভিব্যাক্তি মুখে প্রকাশ করার নয় তা দেখাতে হবে দেশপ্রেমের মাধ্যমে।আজকে উচ্চবিত্তের সিংহভাগ এমনকি একটু ভাল অবস্হা হলেই বিদেশে ফাঁড়ি জমান শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য।সরকারের অন্তর্গত লোকজন,আমলা শ্রেনী ও এলিট ব্যাবসায়িরা তাদের বাড়ি ঘর যেমন বিদেশে বানিয়েছেন তেমনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন যখন তখন।সরকার প্রধানের কি উদ্দোগ নেয়া উচিত নয় যে দেশে উন্নত মানের হাসপাতাল তৈরি করা ও দেশের চিকিৎসকদের উন্নত ট্রেনিং দিয়ে আমাদের দেশেই বহুল পরিমানে হাসপাতাল তৈরি করা? তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা।আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে শিক্ষাব্যাবস্হা তা দিয়ে তৈরি হচ্ছে না মানুষ।সৃষ্টিশীল ও কারিগরি শিক্ষার কোন ব্যাবস্হা নেই।এখানে যে সমস্ত বিষয়ে পড়ে ছাত্ররা বের হচ্ছে তা দিয়ে কোথাও ঠাঁই পাচ্ছে না আর বেকারত্বের বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।আমরা যদি দেশকে ভালবাসি তাহলে আমাদের টাকা কেন বিদেশে যাবে? সরকার যদি দৃড় হয় যে আমরা আমাদের দেশে স্বাস্হ সেবা নিব ও ধীরে ধীরে হাসপাতাল গুলোকে উন্নত করবো,আমাদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলবো আর আমাদের বিশেষজ্গ গড়ে তুলবো তাহলে অল্প সময়ে গড়ে তোলা সম্ভব।কিন্তু শর্ষের ভীতর যদি ভূত থাকে তাহলে তো সে ভূত তাড়ানো সম্ভব নয়।যারা জাতির ভাগ্য বিনির্মানের জন্য কথা বলছে তাদেরকে আমরা ডাবল স্টানর্ডার্ডে কথা বলতে দেখছি।
আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে যারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল ছিলেন, তাদের প্রায় সবাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ শারীরিক যে কোনো সমস্যায় দেশের পরিবর্তে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। এ কারণে দেখা যায় মন্ত্রী পদে আসীন অধিকাংশ ব্যক্তি রোগ নিরাময়ে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।দেশ থেকে বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমনেচ্ছুর সংখ্যা কমে এলেও এখনও যে সংখ্যক লোক চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন তার ব্যয়ভার বৈদেশিক মুদ্রায় নেহাত কম নয়। এ অর্থ দেশের অভ্যন্তরে ব্যয় করা গেলে নিঃসন্দেহে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ হতো। আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করার পেছনে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। তারা যদি তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত চিকিৎসাসেবা নিজ দেশে গ্রহণ করেন, তাহলে তা শুধু মন্ত্রিসভার সদস্য ও পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা নয়, দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।আর এর জন্য আইন প্রনয়ন করে দিলে মানুষ দেশেই চিকিৎসা করবে।আর যারা দেশে চিকিৎসার সাথে জড়িত আছেন তারাও কম হয়রানি করেন না।রোগী যখন ডাক্তারের কাছে যায় এবং রোগ বড় বা ছোট হোক একটি অনৈতিক প্রেসক্রিফসন করে থাকেন বেশীর ভাগ ডাক্তার।অনেকে রোগীকে ভাল ভাবে জানতেও চান না।আবার অনেকের কাছে ডাক্তারি রিপোর্ট থাকলেও তাকে আবার বিশাল টাকা খরচ করে ব্যাবস্হাপত্র করতে হয়।বিশেষ করে ক্লিনিক গুলো রোগীদের এভাবে নি:শ্ব করে দিচ্ছে।এভাবে অনৈতিক ব্যাবসায়ের কবলে পড়েছে দেশের মানুষ।এই চরম অবস্হা থেকে রেহাই পেতে পারে একমাত্র সরকার প্রধান যদি পদক্ষেপ নেন।আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে যারা অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন, তারা হলেন প্রবাসে কর্মরত শ্রমিক। এ শ্রমিকরা বিদেশে কষ্টদায়ক জীবন যাপন করে তাদের উপার্জিত অর্থের উল্লেখযোগ্য অংশ দেশে পাঠিয়ে থাকেন। তাদের এ অর্থ প্রেরণের কারণে আজ আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার সমৃদ্ধ এবং ধীরে ধীরে তা স্ফীত হচ্ছে। এসব প্রবাসী শ্রমিক বিদেশে অবস্থানকালীন কোনো ধরনের অসুস্থ হলে দেখা যায় ব্যয়ের বিষয়টি চিন্তা করে তারা বিদেশে চিকিৎসা না নিয়ে নিজ দেশে এসে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে দেশে কর্মরত পোশাক শ্রমিকদের ভূমিকাও কোনো অংশে কম নয়। এসব শ্রমিক দুর্ঘটনায় পড়লে অথবা শারীরিক যে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় দেশের অভ্যন্তরেই অর্থাভাবে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায় না, যদিও জীবন ধারণের জন্য উপযোগী এই মৌলিক উপকরণটির নিশ্চয়তা বিধান রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য ছিল।বিশ্বের উন্নত ও অধিকাংশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র দেশের অভ্যন্তরেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের শীর্ষ পদধারী ব্যক্তি এবং সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবার নিশ্চয়তা বিধান করে। এ নিশ্চয়তা বিধান রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে জনগণের মৌলিক অধিকার। আমাদের এখানে দেখা যায়, এ মৌলিক দায়িত্বটি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পদধারীদের ক্ষেত্রে যেভাবে পালিত হচ্ছে, সাধারণ মানুষ সে বিবেচনায় একেবারেই উপেক্ষিত। এরপরও দেশের সাধারণ মানুষের কোনো আক্ষেপ থাকবে না যদি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের পদস্থ ব্যক্তিরা বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় করে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের পরিবর্তে নিজ দেশে চিকিৎসা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেশবাসীকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করেন।বিশ্বের অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমরা কৃচ্ছতা করতে দেখেছি।তারা তাদের সরকারি আয়ের বিশেষ অংশ জনকল্যানে ব্যায় করে নিজেদের প্রশংসিত করেছেন।আমাদের সরকারের মন্ত্রী,এমপি ও আমলাদের এক শ্রেনী যেভাবে সম্পদ লুন্ঠন করছেন,ঐ সমস্ত টাকাই তারা বিদেশে ব্যায় করছেন তাদের আরাম আয়েশের জন্য।এরা সরকারের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়ানোর সাহস পাচ্ছেন এর কারন হলো-এরাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারকে চালায়।সেকারনে কোন সরকারই তাদের নৈতিক ভিত্তি দাঁড় করাতে সমর্থ হয় না।আমরা যদি নিজকে ভালবাসতে শিখি তাহলে নিজের দেশকে ভালবাসবো,দেশের মানুষকে ভালবাসবো আর দেশের অর্থ দেশে বিনিয়োগ করে দেশের আর্থিক কাঠামো দৃড় করবো আর এর কোন বিকল্প নেই।
বিষয়: বিবিধ
১৪১৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দোয়া করি আপনার কথাগুলো কাজে লাগুক
মন্তব্য করতে লগইন করুন