মিডিয়া ও সামাজিক অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যম গুলোর প্রচার মানবজাতি তথা ইসলামের কল্যানে কোন বিশেষ ভূমিকা রাখছে, না ধ্বংস করছে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:২৮:২৭ রাত
বর্তমান অত্যাধুনিক যুগে তথ্যসংগ্রহ , সমাজিক যোগাযোগ ও ভাবের আদান প্রদান অতি সহজে , কম সময়ে ও কম মুল্যে ইন্টারনেট ,ফেসবুক ,টুইটার,ইমেইল ,মোবাইল, আডিও , ভিডিও ,টিভি চ্যানেল মাধ্যমগুলোর সাহায্যে করা যায়।দিন দিন এগুলোর ব্যাপকতা এতই বৃদ্ধি পাছ্ছে যে, এখন এগুলো বলা যায় হাতের মুঠোয়।আমরা যখন সম্ভবত ১৯৯৩ সালের দিকে ইন্টারনেট পেলাম মনে হলো একটি চমৎকার জিনিস পেয়েছি।চিঠি লিখা,টেলিফোনে টাকা খরচ,সময়ের আপচয় এগুলোর সাশ্রয় হয়েছে।তাছাড়া পড়ালেখার ব্যাপারে ঘরে বসেই ডাউনলোড করে অনেক তথ্য বের করে পড়ালেখা করতে সক্ষম হয়েছিলাম।এগুলো থেকে যে আমরা উপকৃত হছ্ছি না তা নয়।প্রশ্ন হলো কত ভাগ লোক বা আমাদের জেনারেশনের কত ভাগ ছেলে ময়ে এগুলোর সৎ ব্যাবহার করে থাকে।এর পিছনে যে একটা ব্যবসায়িক মিশন রয়েছে তা অনেকের জানা নেই।আপনি যে কোন তথ্য অতি অল্প সময়ে সংগ্রহ করার ইছ্ছা করলে গোগল ,ইয়াহু ,এমএসএন এর মাধ্যমে আপনার মনিটরের সামনে নিয়ে আসতে পারেন। ইসলাম,আলকুরআন,আলহাদিস,মুসলিম বিশ্বের তথা সমগ্র বিশ্বের ইতিহাস ঐতিহ্য,অর্থনীতি,রাজনীতি ইত্যাদি যাবতীয় ইতিবাচক সব দিক পাবেন।যদি ইতিবাচক দিক থাকতো তাহোলে কোন সমস্যা ছিল না।কিন্তু ইতিবাচক দিক পেতে হলে নেতিবাচক দিকগুলোকে আলিঙন করে যেতে হয়।আর আপনি না চাইলেও তা আপনার সামনে নিক্ষেপিত হবে যা আপনার দেহ মনকে কলুষিত করবে।যারা বৃদ্ধের কোঠায় তারা না হয় নিজেকে সংযত করে কাজ করবেন। কিন্তু যারা অলপ বয়স্ক বা যাদের হিতাহিত জ্গান নেই তারা তো ডুবে যাছ্ছে পংকিলে।আমরা অনেকে এ যুগকে বিজ্গানের উৎকর্ষতার যুগ বলে থাকি তাতে সন্দেহ নেই কিন্তু আমাদের জীবন কতটুকু উৎকর্ষতার শিখরে উঠছে তা আমাদের ভাবা অবশ্যই জরুরি।
আমাদের মিডিয়া সম্পর্কে কিছু ধারনা থাকা দরকার মনে করছি।মিডিয়া হলো জনগনের সাথে যোগাযোগের একটি মাধ্যম।আমরা যেহেতু মুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহন করেছি তাহলে আমাদের ইসলামের উপরই বেঁচে থাকতে হবে।ইসলাম হলো শান্তি আর এ শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ সিলম থেকে যার অর্থ নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সমর্পন করা।একথা আমাদের মেনে নিতে হবে মিডিয়া আজকের জগতে একটি শক্তিশালী মাধ্যম বা অস্ত্র।এই মিডিয়া সাদা জিনিসকে কালো,কালো জিনিসকে সাদা, দিনকে রাত ও রাতকে দিন বানাতে পারে।এই মিডিয়া একজন বীরকে বানাতে পারে খল নায়েক আবার খল নায়েককে বানাতে পারে বীর।তার হাতে রয়েছে অনেক ক্ষমতা।আমাদের বিজ্গান প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে মিডিয়াও সেইসাথে ততই উন্নত হচ্ছে।বর্তমানে জন গনের কাছে প্রচারের মাধ্যমকে আমরা চারভাগে ভাগ করতে পারি।প্রাথমিক মিডিয়া-প্রিন্ট মিডিয়া।একেও আমরা দু'ভাগে ভাগ করতে পারি- ননপিরিয়ডিকাল ও পিরিয়ডিকাল মিডিয়া। ননপিরিয়ডিকাল প্রিন্ট মিডিয়ার মধ্যে আছে সাহিত্য-যেমন প্রবন্ধ ,বুকলেট ইত্যাদি।পিরিয়ডিকাল প্রিন্ট মিডিয়ার মধ্যে আছে,নিউজ পেপার,মেগাজিন যেগুলো ছাপানো হয় প্রতিদিন,প্রতিসপ্তাহে , প্রতিপক্ষে, প্রতিমাসে,তিনমাসে,ছ'মাসে বা বছরে।দ্বীতিয় টাইপের মিডিয়া হলো- অডিও মিডিয়া।এই অডিও মিডিয়া বিভিন্নভাবে পেয়ে থাকি যেমন-অডিও টেপ যা এখনকার দিনে সেকেলে।এছাড়াও আছে অডিও সিডি,ডিজিটাল অডিও টেপ ও ডেক।এই ডিজিটাল অডিও মিডিয়ার শ্রোতা হতে পারে শুধু একজন মানুষ যা নিজের বাড়িতে,নিজের অফিসে বা গাড়িতে শুনতে পারে একটি অডিও প্লেয়ার।অনেকে হাঁটতে হাঁটতে ও শুনে থাকেন ওয়াকম্যানের সাহায্যে।অডিও মিডিয়ার শ্রোতা হতে পারে বেশ কয়েকজন মানুষ,পার্টিতে,কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে ও বভিন্ন অনুষ্ঠানে অথবা শ্রোতা হতে পারে রেডিও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।তৃতীয় টাইপের মিডিয়া হলো- ভিডিও মিডিয়া।এটিও বিভিন্নভাবে পাওয়া যায়।যেমন-ভিডিও হোম সিসটেম ক্যাসেট যা আজকাল সেকেলে হয়ে গেছে।এছাড়াও আছে ভিসিডি যা এখন সেকেলে হয়ে যাচ্ছে।বর্তমান ভিডিও মিডিয়ায় সংযোজিত হয়েছে ডিজিটাল ভিডিও ডিস্ক।আর একটি নতুন প্রযুক্তি এসেছে এইচ ডি ডিভিডি(হাই ডেফিনিশন ডিজিটাল ভিডিও ডিস্ক),এছাড়াও নতুন আর একটি প্রযুক্তি হলো ব্লুরে।এগুলো হলো ভিডিও মিডিয়ার বিভিন্ন টাইপ।এগুলোতেও দর্শক হতে পারে ঘরে ,অফিসে বা অন্য কোন যায়গায়।দর্শক হতে পারে কয়েকজন বা অনেক মানুষ যেমন বিভিন্ন টিভি ষ্টেশন,স্যাটেলাইট ছ্যানেল ইত্যদি। মিডিয়ার সর্বশেষ টাইপটি কম্পিউটার মিডিয়া( ইন্টারনেট ইনফরমেশন টেকনোলোজি)।এখানেও ব্যাবহার কারি হতে পারে একজন অথবা অনেক বেশি মানুষ।ইন্টারনেট ব্যাবহারকারি এখন মিলিয়ন মিলিয়ন।এই প্রত্যেক মিডিয়াতে কিছু বিশেষ জ্গানের প্রয়োজন হয়।প্রত্যেক মিডিয়ার কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে।যেমন-প্রিন্ট মিডিয়ার কাজগুলো অতি সহজে করা যায়।অডিও ও ভিডিও মিডিয়ায় কাজ গুলো বেশী তবে প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে কাজগুলো সহজ হয়ে যাচ্ছে।বর্তমান বৈজ্গানিক গবেষনায় বলে যে,বিভিন্ন মিডিয়ায় মানুষের মনে রাখার ক্ষমতা বিভিন্ন রকম।যখন সাধারন একজন মানুষ প্রিন্ট মিডিয়ার কোন কিছু পড়ে সে তার গড়পড়তা ১০% মনে রাখতে পারে।যখন কেউ অডিও মিডিয়া শুনে একজন সাধারন মানুষ তার গড়পড়তা ২০% মনে রাখতে পারে।যখন একজন লোক নিজের চোখে কোন ছবি বা অন্য কিছু দেখেছে সে তার ৩০% মনে রাখতে পারে।তবে যখন একজন মানুষ একই সাথে দেখে ও শুনে তার আনুমানিক ৫০% মনে রাখতে পারে।তাহলে মনে রাখার দিক থেকে সবচেয়ে ভাল হলো ভিডিও মিডিয়া।আজকের দিনে আমরা প্রত্যেক বিবেকবান মুসলিম উপলব্ধি করছি আন্তর্জাতিক মিডিয়া হোক সেটা যে কোন মিডিয়া,তারা অনেকেই ইসলামের বিরুদ্ধে বানিয়ে কথা বলছে বা ছোট খাট কিছু হলে সেটাকে বড় করে দেখাচ্ছে।তারা ইসলামের বিরুদ্ধে মিডিয়ার নামে বোমা বর্ষন করছে।এছাড়া ও ইসলাম সম্পর্কে তারা অনেক ভুল ধারনা পোষন করে।
আন্তর্জাতিক মিডিয়া যে কথা বলছে তারা যুদ্ধ করছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তা পুরোপুরি সত্য নয়।আবার কিছু আন্তর্জাতিক ছ্যানেল রয়েছে তারা বলছে শান্তির জন্য যুদ্ধ করছে।তারা এখানে যা করছে তা শান্তির জন্য যুদ্ধ করছে না ,তারা শান্তির সাথে যুদ্ধ করছে।একটু যদি পরিষ্কার করে বলি তা হলো তারা শান্তির ধর্মের সাথে যুদ্ধ করছে।বর্তমানে আন্তর্জাতিক মিডিয়া সামগ্রিকভাবে ইসলামকে এমনভাবে তুলে ধরেছে যেন এটি একটি সন্ত্রাসের ধর্ম।দুর্ভাগ্যজনকভাবে মুসলিমরা খুব কমই তাদের মিথ্যা প্রচারের প্রতিবাদ করে থাকে।এই আন্তর্জাতিক মিডিয়া তাদের বিভিন্ন রকম কলাকৌশলের মাধ্যমে সম্পুর্ন ভুলভাবে তুলে ধরছে।মিডিয়া যেভাবে ইসলামকে অপবাদ দেয়, প্রায়ই দেখা যায় তারা মুসলিম নামের তাদের তৈরি করা কিছু কুলান্গারকে তুলে ধরে।তারা তাদের মাধ্যমে ইসলামের কাজকর্মকে এভাবে তুলে ধরে যে,তাদের কৃতকর্মগুলো-ই ইসলামের কাজ।আমাদের মেনে নিতে কোন অসুবিধা নেই যে আজকাল ইসলামের নামে ইসলামের অনেক শক্তি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে যার সাথে ইসলামের সামান্যই সম্পর্ক রয়েছে।কিছু মুসলিম আছে যারা অন্যায় কাজ করে,মিডিয়া এই সব মুসলিমদের কাজকর্ম তুলে ধরে যা মানবতার বিরুদ্ধে এবং বলে এগুলো-ই ইসলামের কাজ।তারা এ কথাও বলে ইসলামি মাদ্রাসাগুলো নিষিদ্ধ করে দেয়া উচিত কারন তারা এ সমস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে সন্ত্রাসি তৈরি করে এবং তাদের দ্বারা এ পৃথিবীর শান্তি নষ্ট হয়।আমরা যদি পরিসংখ্যান নেই তাহলে দেখবো মাদ্রাসা থেকে যুগ যুগ ধরে যারা বেরিয়ে আসছে তারাই ইসলামের নেতৃত্ব দিচ্ছে।ইসলামের মৌলিক কাজগুলোর সমাধান তারাই দিচ্ছে।এদের মধ্যে যে %টি বিভ্রান্ত হচ্ছে তারা মুসলিম পাছেক সরকার বা দল দ্বারা বিভ্রান্ত।আমরা যদি আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্হাকে দেখি,সেখানে দেখতে পাই বিভিন্ন ধরনের কারিকুলাম।আমাদের সমাজ ব্যাবস্হা বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত।উচ্চবিত্ত,উচ্চ মধ্যবিত্ত,মধ্যবিত্ত,নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন বিত্ত।এর মধ্যে মধ্য বিত্ত থেকে নিম্ন বিত্ত পর্যন্ত তাদের বেশীর ভাগ ছেলে মেয়ে এই মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে।আর এই প্রতিষ্ঠান গুলো চলে মানুষের দানে।সরকারগুলো যুগের পর যুগ অবহেলা করে আসছে এদের নিয়ে।যে এমপি ও আমলাদের ছেলে মেয়ে পড়ে বিদেশে আর তারা যখন এমপি বা মন্ত্রী হয় তখন প্রথমে তারা ভোট ব্যাংকের জন্য স্হাপন করে একটি মাদ্রাসা ,এতিমখানা বা খানকা। সমাজের এই একটি শ্রেনীর জীবন গড়ে উঠে নেতিবাচক শিক্ষায়।আর আন্তর্জাতিক একটি শক্তি ইসলামের নামে বা এনজিওর নামে এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে গিয়ে তাদের গড়ে তোলে জংগিতে।এই বন্ছিত মানুষদের জাগিয়ে তোলার জন্য দরকার ছিল একটি মুলধারার শিক্ষা ব্যাবস্হা যাতে থাকবে ছহি কোরান হাদিসের অনুশীলন ও তার সাথে আধুনিক শিক্ষা ব্যাবস্হার ছোঁয়া।শুধুমাত্র সরকারকে দোষ দিলে হবে না। ঐ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে যুগ যুগ ধরে যারা নেতৃত্ব দিয়ে আসছে তারাও একধরনের শির্ক ও বিদাআতের খাদেমে পরিনত হয়ে আসছে যারা চায় এ প্রতিষ্ঠান গুলো সমাজের দান দক্ষিনায় চলুক।যাই হোক মোটকথা হলো ইসলামের যে জ্গান তা এই মাদ্রাসা গুলো থেকেই মুসলমানরা পেয়ে থাকে।আর বেশীর ভাগ আলেমদের আমরা ভালই দেখে থাকি আর খুব কমই অশান্তি কামনা করে।আবার তার মানে এই ও নয় যে যারা মাদ্রাসা থেকে পাস করে বেরিয়ে আসে তারা অন্যায় করে না।এমন কিছু লোক প্রতিষ্ঠানকে ফাঁকি দিয়ে সন্ত্রাসী হয়ে যেতে পারে কারন অন্তর্জাতিক ডনরা তাদের কালো টাকা ছড়িয়ে দিচ্ছে এমন কিছু মানুষ সমাজে তৈরি করার জন্য।সবমিলে এরা ২%ও হবে বলে আমার সন্দেহ রয়েছে।কিন্তু মিডিয়া প্রচার করে এই কুলাংগাররাই মুসলিমদের দৃষ্টান্ত।পৃথিবীতে যে লোকটি মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ হত্বা করেছে সে হলো হিটলার, যে ৬০ লক্ষ ইহুদিদের হত্বা করেছিল।সে কোন মাদ্রাসা থেকে পাস করেছিল? সে ছিল একজন খৃষ্টান।মুসলিনি হাজার হাজার মানুষকে হত্বা করেছিল আর সেও ছিল একজন খৃষ্টান।মাফিয়া যারা কুখ্যাত ড্রাগ ব্যাবসার সাথে জড়িত তারা কোথা দেখে পড়াশুনা করে এসেছে? দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া গুলো বড় বড় সন্ত্রাসিদের কথা বলছেনা,তাদের কোন লিষ্ট তৈরি করে মানুষকে জানাচ্ছে না যারা নাকি আসল অপরাধি।যারা হাজার হাজার মানুষকে হত্বা করছে,লাখ লাখ তরুন প্রজন্মকে ড্রাগ সেবনের মাধ্যমে তাদের অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।এ সমস্ত অনৈতিকতার লোকগুলো বেড়ে উঠেছে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর কর্মজীবনে তারা এক একজন ডন যারা সমাজকে নৃতৃত্ব দিচ্ছে।অথচ দুর্ভাগ্যের চাকায় নিষ্পেষিত হচ্ছে একটা শ্রেনী যারা মাদ্রাসায় পড়ুয়া।যদি কেউ ইসলাম ধর্মকে বিচার করতে চায় তাহলে মুসলিম সমাজ কি করে তা দিয়ে বিচার করা যাবে না।ইসলামকে বিচার করতে হবে মুল ধর্মগ্রন্থ দিয়ে আর তা হলো পবিত্র আলকুরআন ও রাসূল সা: এর ছহি হাদিস দিয়ে।এই দুটো থেকে মানবজাতির কোন ক্ষমতা নেই যে ইসলামের কোন দোষক্রটি বের করতে পারে।ধরুন একটি লেটেষ্ট মডেলের গাড়ি যে নাকি চালাচ্ছে একজন অদক্ষ চালক।পথিমধ্যে সে একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে দিল।হয়ত গাড়িতে ছিল আরো যাত্রি তারাও প্রান দিল।এখন আমরা কি গাড়ির দোষ দিব, না অদক্ষ চালকের।আমরা নিশ্চই চালককে দোষ দিব।যদি পরীক্ষা করতে হয় তাহলে গাড়ির বৈশিষ্ট খুঁজতে হবে আর গাড়ি চালানোর জন্য বসাতে হবে একজন প্রশিক্ষিত চালককে।ঠিক একই ভাবে ইসলামকে বুঝতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে আল কুরআনকে ও এর প্রথম ব্যাবহার কারি নবী মোহাম্মদ সা;কে। ইসলামকে বুঝতে যদি কেউ বেচে নেয় কোন দা-ঈকে,বা কোন দল বা সংগঠনকে যাদের কাছে নেই ইসলামের সঠিক নির্দেশনা সেখানেই বড় ভুল।তবে যারা ঈমান ও সৎ আমলের নির্দেশনা দেয় তারাই কল্যানকামি।
ইসলামের অপবাদ দিতে মিডিয়া আরো যে কৌশল অবলম্বন করে সেটা হলো তারা প্রসংগ ছাড়াই আলকুরআনের উদ্ধৃতি দেয়।আর এরা সূরা তওবার একটি প্রসিদ্ধ আয়াত যা ৫নং আয়াতের স্মরনাপন্য হয় আর তাতে বলা হয়েছে যখনই তোমরা কোন কাফেরকে দেখবে তাকে মেরে ফেলবে।এটা তাদের প্রসংগ ছাড়া উদ্ধৃতি।তেমনি হাদিসের উদ্ধৃতিও দেয় প্রসংগ ছাড়া।এই প্রসংগটা এই সূরার প্রথমদিকে আয়াতে আছে।বলা হয়েছে একটি শান্তি চুক্তি হয়েছিল সেখানকার মুসলিম ও মক্কার মুশরিকদের ভিতর।আর মক্কার মুশরিকরাই পরে এই শান্তি চুক্তির শর্তগুলো ভেংগেছে।তখনি আল্লাহ পাক পবিত্র আলকুরআনের ৫নং আয়াত নাজিল করলেন।তিনি মক্কার মুশরিকদের সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে আগামি চার মাসের মধ্যে সব ভুল শোধরে ফেল তা নাহলে তোমাদের যুদ্ধ করতে হবে।আর সেই যুদ্ধক্ষেত্রে আল্লাহ পাক বলেছেন মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তোমরা ভয় পেয় না যুদ্ধ কর।যেখানে তোমাদের শক্রুদের দেখবে মেরে ফেল।এই অর্ডারটি ছিল নিতান্ত তখনকার যুদ্ধ ক্ষেত্রের জন্য।প্রায় ৪৭ বছর আগে আমেরিকা ও ভিয়েতনামের মধ্যে যখন যুদ্ধ চলছিল তখন যদি আমেরিকার জেনারেলরা বা প্রেসিডেন্ট যুদ্ধের ময়দানে আমেরিকান সৈন্যদের বলে,আমার সৈন্যরা তোমরা ভয় পেয় না যেখানে ভিয়েতনামিদের দেখবে মেরে ফেল।একথাটি যদি বলা হয় তাহলে সেটা হবে সাহস দেয়ার জন্য।এখন যদি কেউ উদ্ধৃতি দেয় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেছে কোন ভিয়েতনামিদের দেখলে মেরে ফেল তা হাস্যস্কর নয় কি? সবকিছুর পিছনে একটি কারন থাকতে হবে।আল্লাহ যদি বিশ্বাসীদের আলকুরআনে বলেন শক্ররা যদি তোমাদের মারতে আসে তোমরা ভয় পেয়ো না তাহলে সেখানে সমস্যা কোথায়? আর এর পর ৬নং আয়াতে বলছেন অবিশ্বাসিরা যদি নিরাপত্তা চায় তাহলে তোমরা তাদের নিরাপদ স্হানে নিয়ে যাও যেন তারা আল্লাহর বানি জানতে পারে।আজকের দিনে কোন শাসক বা আর্মি জেনারেল কি বলবে তোমরা তাদের নিরাপদ স্হানে নিয়ে যাও? কুরআনের শানে নজুল না পড়লে আসল অর্থ বুঝা যাবে না।আলকুরআনে যেখানেই যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে এর পরেই শান্তির কথা বলা হয়েছে।মিডিয়া যে কোন উদ্ধৃতি দিতে চেষ্টা করে আলকুরআন ও হাদিস থেকে তারা তার ভুল ব্যাখ্যা দেয়।আর একটি অপবাদ তারা দেয় যা ইসলামে নেই।অনেক সময় তারা বলতে চেষ্টা করে ইসলাম মানবজাতির জন্য একটি সমস্যা।ইসলাম কোন সমস্যা নয় বরং তা মানবজাতির সমস্যার সমাধান করে।ইসলামের নিন্দা করার জন্য তারা কিছু কৌশল অবলম্বন করে।এখন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তারা মুসলমানদের বলছে মৌলবাদি,চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী।বেশির ভাগ মুসলিম তাদের চেতনা না থাকার কারনে ও ধর্ম সম্পর্কে না জনার কারনে প্রতিবাদ করতে পারে না।তারা অপরাধির মতই নিছতায় ভোগে।কোন অমুসলিম যদি তাকে মৌলবাদি,চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী বলে তাহলে সে পাল্টা উত্তর দিতে পারে না।কেন পারে না? কারন তাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে ইসলাম নেই।তারা নামাজ পড়ে না,রোজা রাখে না,যাকাত দেয়া না ও হজ করেনা।দা-ঈর কাজ করে না,পিতামাতার খোঁজ খবর রাখে না,আত্মীয় প্রতিবেশির খবর রাখে না,মানুষের প্রতি জুলুম ও অত্যাচার করে।এ রকম মুসলিম হলে অমুসলিম রা তো মুসলমানদের ভন্ড ও ঠক বলবে।ইসলামের বানি অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয়া প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয দায়িত্ব।সূরা আলইমরানের ১১০ আয়াতে বলা হয়েছে,তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত মানবজাতির জন্য,তোমরা ন্যায়ের নির্দেশ দাও,অন্যায় থেকে বিরত রাখ আর আল্লাহতে বিশ্বাস রাখ।' আমরা মুসলমানরা মানবজাতির শ্রেষ্ঠ উম্মত।আমরা সৎ কাজের নির্দেশ দেই ও অসৎ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখি আর আল্লাহকে আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি।তাহলে যে মুসলিম খারাপ কাজ করে সে কি মুসলিমের অন্তর্ভুক্ত কিনা? হাঁ তাকে ফাসেক মুসলিম বলতে হবে।অমুসলিমরা যেমন খারাপ কাজের সাথে জড়িত এরাও জড়িত আর এদের দেখে মুসলিমদের অপবাদ দেয়া যাবে না।মুসলিম হিসেবে আমাদের গর্ব করা উচিত।আমাদের তারা যে আখ্যাগুলো দিয়ে থাকে আমরা মুসলিমরা তাদের সাহসের সাথে উত্তর দিতে শিখতে হবে যে,আমরা মুসলিমরা মৌলবাদি,চরমপন্থি ও সন্ত্রাসি কারন আমরা ইসলামের মুল মন্ত্রগুলো মেনে কাজ করি।আমাদের দেখে মিথ্যা মৌলবাদিরা ভয় পাবে,আমাদের দেখে অসৎ চরমপন্থিরা ভয় পাবে ,আমাদের দেখে সমাজের সব অসৎ সন্ত্রাসীরা ভয় পাবে।যদি আমরা আমাদের সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে সমাজে শান্তি বিরাজ করবে ও অমুসলমানরা যে কথাগুলো ছড়াচ্ছে তার উত্তর পেয়ে যাবে।কিন্তু আমরা নিজেরা আলকুরআন ও সূন্নাহকে অনুসরন না করার কারনে তাদের কথাগুলোর উত্তর দিতে পারছিনা।এগুলো আমাদের জ্গানের কমতি ছাড়া আর কিছুই নয়।আল্লাহ এই শান্তির ধর্মকে অবশ্যই টিকিয়ে রাখবেন।তবে আমাদের উচিত এই ইসলামের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া।
মিডিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার চালিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।টাইম মেগাজিনে একটি আর্টিকেল ছাপা হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১৬ই এপ্রিল।একজন খৃষ্টান লিখেছিলেন,ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে গত ১৫০ বছরে ৬০,০০০ এর বেশী বই লিখা হয়েছে।হিসেব করলে গড়ে একটির বেশী বই লিখা হয়েছে।আর ৯/ ১১ এর পর এর প্রবনতা আরো বেড়ে গিয়েছিল ও এখনো চলছে।খৃষ্টান মিশনারিরা তাদের ধর্মকে ছড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবী ব্যাপি।আর আমরা মুসলমানরা সম্পদ অর্জন ও নিজেদের মধ্যে হানাহানি করছি।তারা বিভিন্ন সাহিত্য সাময়িকি ছাপাচ্ছে ও বিনা পয়সায় বিলি করছে। দাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে মেগাজিনটা চলে এমেরিকায় সেটি হলো "The messaage" তারা ৫০,০০০ কপি ছাপে।আর খৃষ্টান ধর্মের একটি সম্প্রদায় রয়েছে যারা মুলধারার খৃষ্টান নয় তারা "Watch tower" ছাপে দুই কোটি আট লক্ষ ত্রিশ হাজার কপি।তারা এই মেগাজিন ছাপায় মাসে দুই বার করে ১৩০টি ভাষায়।আর একটি মেগাজিন "Awake" ছাপায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ।এগুলো তারা মানুষের মধ্যে ফ্রি বন্টন করে।এভাবে তারা ধর্ম প্রচার করে। মুসলমানরা কি কল্পনা করতে পারে এ ব্যাপারে।মুসলমানদের মধ্যে এক ধরনের মোল্লা রয়েছে যারা এই আলকুরআনকে বিক্রি করে খায়।তারা কোন জলছা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকার অন্ক দাবি করে।মুসলিমরা দাওয়ার কাজে টাকা খরচ করতে চায় না।ইসলাম প্রচারের জন্য বড় বড় যে লেকচারগুলো হয় বেশী হলে ১০/২০ লাখ টাকা খরচ হয়।আর খৃষ্টানদের এক একটি লেকচারে তারা খরচ করে কোটি কোটি টাকা।খৃষ্টান মিশনারিরা প্রতিদিন গড়ে ১০ লক্ষ ডলার খরচ করে তাদের ধর্মপ্রচারে।জিমি সোয়াগার্ট একজন এমেরিকান ধর্মপ্রচারক যিনি বছরে ৪০ কোটি ডলার ধর্ম প্রচারে খরচ করতেন।আমরা এখনো ইসলামি কোন দাওয়া সেন্টারের কথা জানি না যারা এর ১০% ও খরচ করে।খৃষ্টানদের মধ্যে প্রফেশনাল রয়েছে এবং তারা দাওয়ার জন্য প্রত্যকে ট্রেনিং নেয়।বর্তমানে আধুনিক বিজ্গান আমাদের বলে যখন কেউ জনসমক্ষে লেকচার দেয় লেকচারের বিষয় বস্তুর গুরুত্ব মাত্র ৭% বাকি ৯৩% হলো প্রেজেন্টেশন স্কিল।ইসলামের বানি প্রচার করার জন্য যারা কাজ করবেন তাদের বিশেষায়িত চরিত্র অবলম্বন করতে হবে কারন যিনি প্রচার করবেন তিনি হলেন একজন মডেল যাকে দেখে মানুষ ধর্মে দীক্ষিত হবে।ধরুন আমি আমার সমাজে বা কোন প্রতিষ্ঠানে একজন ধর্ম প্রচারক।আমি যদি আলকুরআন ও সূন্নায় নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে না পারি তাহলে আমার কথায় অন্যদের উপর কোন প্রভাব পড়বে না।আমার কথা ও কাজ আলকুরআন ও হাদিসের সাথে পুরোপুরি মিলে যেতে হবে।তাহলে আমি যদি কাউকে কোন কথা বলি সেটার দ্বারা অন্যরা প্রভাবিত হবে।এভাবেই ইসলামের বিজয় হয়েছে।সেজন্য প্রতিটি মুসলমানকে রোল মডেল হতে হবে অন্যদের জন্য।দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা এখানেই নিজেদের গড়ে তুলতে পারছিনা।একজন দা-ঈর অস্ত্র হলো তার সঠিক ঈমানি শক্তি ও প্রজ্গা যা দিয়ে সে সমাজকে বিজিত করবে।তার কথা হতে হবে শানিত,তার লেখা হতে হবে শানিত,তার সমস্ত কাজ হতে হবে কল্যানকর।আমরা মুসলমানরা যখন ষ্টেজে উঠি কথার ফুলঝুরি ঝরতে থাকে কিন্তু সে মুসলমান তার পরিবারেই সে লান্চিত ও অপমানিত।আজকের মিডিয়ায় কতজন মুসলিম প্রজ্গাবান দা-ঈ রয়েছেন যারা ইসলামের প্রচার করছেন।মুসলিমদের মধ্যেও যারা লিখেন তাদের সামান্যই মাত্র ইসলাম সম্পর্কে লিখেন।আমাদের মধ্যে অনেকের প্রতিভা রয়েছে কিন্তু তার স্ফূরন ঘটছে না।করোরই।একজন লেখক তার প্রতিভার প্রভাবে মানুষের হৃদয়কে জয় করেন।একজন লেখক তার কলম রুদ্ধ দ্বারে বন্দি করে রাখতে সক্ষম নন।সমাজে লেখকের মৃত্যু হলে সমাজের মৃত্যু অনিবার্য।অনেক লেখক বা জীবনবাদিদের কর্মক্ষেত্রে হতাশ হতে দেখি।কিন্তু একজন সত্য মানবহিতৈশীকে হতাশ হতে দেখলে দু:খ হয়।বিশৃংখলিত এ সমাজে একজন লেখক যদি তার কলম বন্ধ করে রাখেন তাহলে সমাজে পংকিলতা সর্বগ্রাসি হয়ে আমাদের সমাজ জীবনকে বিপর্যস্ত করবে।জীবনের সংকীর্নতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা জরুরি।সংকীর্ন মন ও সংকীর্ন দৃষ্টিভন্গি নিছতার লক্ষন।জীবনের সমস্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের পথকে করে দিতে হবে সহজ থেকে সহজতর।একজন মানুষের সফলতা ও বিফলতা তার নিজের বিচার্য বিষয় নয়।ইতিহাস নিজেই বিচার করবে একজন প্রতিভাবান ব্যাক্তিত্বকে।সৃষ্টিশীল লেখক হওয়ার জন্য কোন ডিগ্রির প্রয়োজন পড়ে না। তবে স্পেশালাইজড ডিগ্রি থাকলে সেটা নিরপদ।কারন একজন বিশেষজ্গ লেখক সৃ্ষ্টিশীল লিখার অলিগলি জেনেই লিখেন।আসল কথা হলো প্রতিটি মানুষ তার জীবনদর্শনকে সমাজে তুলে ধরার চেষ্টা করছে কিনা সেটা একমাত্র ভাবার বিষয়।কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র হাতে গুনা 'ক' জন সমাজ সংস্কারকের কাজে অনুবর্তী।বাকী কিছু নিতান্ত অনুসরনকারি।আর বিশাল অংশ তেজষ্ক্রিয়তাকে ছড়িয়ে দিচ্ছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।কি করে সম্ভব সামান্য প্রতিভা এই বিশাল তেজষ্ক্রিয়তাকে নির্বাপিত করে?
ইন্টারনেটের প্রথমদিকে ইসলামের পক্ষে যত কথা ছিল তার চেয়ে বেশী ছিল বিপক্ষে।এখন সে অবস্হা নেই।মুসলিমরা এই মাধ্যমে এখন তাদের মতামত জানাচ্ছে।ইন্টারনেটে কিছু সাইট আছে যেগুলো দেখে অনেকে মনে করে এগুলো ইসালমিক সাইট।সে সাইটগুলোতে ঢুকলেই মনে হয় যে মুসলিমদের ঘরের ভিতরে সাপ।তারা যে মেগাজিন গুলো ছাপায় তাতে সুন্দর সুন্দর ইসলামের নাম থাকে।যেমন দারুস সূন্নাহ,দারুল নিজাত এরকম নাম।আরো নাম রয়েছে আরবিতে কিন্তু এগুলো পরিচালিত হচ্ছে খৃষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যে বিদাআতিদের দ্বারা।এই মিডিয়া একই সাথে ভাল এবং খারাপ দুটো কাজই করে।কিন্তু আমাদের মুসলমানদের কি করা উচিত? এই পৃথিবীর চলার পথে ভাল ও মন্দ রয়েছে।ধরুন একটি ছুরি এটা দিয়ে ভাল কাজ যেমন করা যায় তেমনি খারাপ কাজও করা যায়।ছুরি দিয়ে শাক শব্জি , মাছ মাংশ কাটলে ভাল।আর যদি ডাকাতি ও মানুষ হত্বা করা হয় সেটা খারাপ।আমাদের এগুলোর ব্যাবহার জানতে হবে।একইভাবে মডিয়ার পজিটিভ দিকও আছে আবার নেগেটিভ দিকও আছে।মিডিয়াকে আমরা ব্যাবহার করবো ভাল কাজের জন্য।তবে ইসলামের আলোকিত ব্যাক্তিগন বলেন যেহেতু এখানে খারাপ জিনিস আছে তা থেকে দূরে থাকাই ভাল।এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আজ মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।আগে একসময় সোবার ঘরে মাথার কাছে থাকতো আলকুরআন ও হাদিসের বই বা অন্য কোন ভাল বই।এখন সেগুলো চলে গেছে অনেক দূরে আর তার যায়গা দখল করেছে টিভি ও মোবাইল।অশ্লিলতা এখন হাতের মুঠোয়। আমাদের ভাল কাজগুলোকে জীবন সাথী করতে হবে আর খারাপ গুলোকে বর্জন করে চলতে হবে।ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফী হছ্ছে এমন একটি পর্নোগ্রাফী যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় প্রধানত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।পর্নোগ্রাফী ১৯৮০ সাল থেকে ধীরে ধীরে ইন্টারনেটে স্হান পায় যখন ওয়ালর্ড ওয়াইড ওয়েব(www) ১৯৯৩ সালে প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেটে চলে আসে এবং সাধারন মানুষ জানতে পারে ওয়েবসাইটের খবরাখবর।মানুষ বাসায় বসে একান্তে অথবা আপনজনকে সাথে নিয়ে ছবি দেখে ইন্টারনেটে বা টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে যেমনটি ভিডিও টেপ এবং ডিভিডি দ্বারা সম্ভব।ওয়েভসাইটের অশ্লিল ছবি এজন্য জনপ্রিয়তা পায় যে,সামাজিক ও আইনগত কারনে প্রকাশ্যে অনেকেই তা প্রদর্শন করতে অপারগ।১৯৮০ সালের দিকে খুব সিমিত সংখ্যক ফর্নোগ্রাফী জনসাধারনের কাছে আসে।তখন কেউ কেউ ভিডিও এর মাধ্যমে খুব গোপনে অশ্লিল ছবি দেখতো।পরবর্তিতে ফর্নোগ্রাফী বিবিএস এর মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় এবং এর পর www এর মাধ্যমে অতি দ্রুত সমপ্রসারিত হয়।ইন্টারনেট ও অতিসম্প্রতি টিভি মিডিয়ায় যে অশ্লিল চ্যানেলগুলো এসেছে তা মানবজাতিকে কত নিছে নামিয়ে দিয়েছে তা ইন্টারনেট ব্রাউজ না করলে বা টিভি না দেখলে কল্পনাও করা যাবে না।রাসূল সা: বলেছেন , গরিব ধনীদের ৫০০ বছর (বা কোন হাদিসে ৪০ বছর) আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে।এটা আজকের সমাজের অবস্হান পর্যালোচনা করলে নিশ্চিত বুঝা যায়।ধনী পরিবারগুলোতে এখন ব্যাবিচার ছড়িয়ে পড়েছে ওয়েভসাইটের মাধ্যমে।সুইডিস ইন্জিনিয়ার ও কেমিষ্ট ড. আলফ্রেড নোবেল যখন ডিনামাইট আবিষ্কার করছিলেন মানবজাতির কল্যানে কিন্তু পরবর্তিতে তা কল্যানের চেয়ে অকল্যানই বয়ে এনেছে ব্যাবহারের ভিন্নতার কারনে।আজ ইন্টারনেটকে সঠিক ভাবে ব্যাবহার না করার কারনে শয়তান এক শ্রেনীর মানুষকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরেছে যে ওখান থেকে পরিত্রান পাওয়ার কোন উপায় নেই।পৃথিবী ব্যাপি এই অশ্লিলতা পরিবেশনের জন্য একামত্র দায়ি লক্ষ লক্ষ মিডিয়া গ্রুপ।ইউএসএ ,বৃটেনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারিরা আনুমানিক ৪০% ফর্নোগ্রাফী ইন্টারনেট ব্রাউজ করে।এ্যামেরিকাকে যে সভ্যতার দেশ বলা হয় একমাত্র লস এন্জেলসে বছরে প্রায় ১০,০০০ ফর্নোগ্রাফিক ফিল্ম তৈরি হয় যেখানে হলিউডে ৪০০টি চলচ্চিত্র তৈরি হয়।অনলাইনে অশ্লিল ছবির ভয়াভহ দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করলে সহজেই বুঝা যায় মানবজাতি এক ভয়ংকর জীবনের দিকে ধাবিত হছ্ছে।মুসলিমদের চরিত্র কিরুপ ভেবে দেখা দরকার।রয়টার থেকে জানা যায় প্রায় ৫ বছরে যৌন সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের আয় এক বিলিয়ন থেকে তিন বিলিয়ন ডলারে উন্নিত হয়।এভাবে ওয়েবসাইট কোম্পানিগুলো ফুলে ফেঁফে উঠেছে।কোন কোন নেট কেবলমাত্র বয়স্কদের জন্য আনন্দদায়ক অশ্লিল পর্নো ছবি নেটের মাধ্যমে প্রকাশ করে হাতিয়ে নিছ্ছে প্রচুর অর্থ।স্টিফেন কোহেনের ওয়েভসাইট এদের মধ্যে অন্যতম। তিনি জানিয়েছেন যে,বছরে তিনি পর্নোওয়েভবের মাধ্যমে প্রায় ২২৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেন।এক পরিসংখ্যানে এসেছে ৭০% নারি পর্নো অনলাইনের ব্যাপার গোপন রাখে।পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নারিরা পুরুষের চেয়ে বেশি চারিত্রিক স্খলনের স্বীকার হয়।এ কারনে তারা বহু পুরুষগামি হয়ে পড়ে।যার ফলে তাদের অনেকে সংসার থেকে বিছ্ছিন্ন হয়ে যায়।পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনলাইনের অশ্লিলতায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।এই পর্নো ব্যবসাকে ধর্মীয় দিক থেকে দানবিয় ব্যবসা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।ভিক্টর ক্লিন নামের একজন স্পেশালিস্ট ডাক্তার জানান যে,পর্নোগ্রাফির প্রভাব বয়স্ক পুরুষ ও ছেলেময়েদের উপর বেশি পড়ে। ৩০০ জনের মধ্যে ৯৬% পুরুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে যৌনসংক্রান্ত ব্যাপারে অসুস্হ হয়ে পড়ে।
বর্তমানে যে চলচ্চিত্রগুলো তৈরি হছ্ছে তার ৯৫% কোন না কোন ক্ষেত্রে পর্নোগ্রাফিতে সমৃদ্ধ।ভারতীয় চলচ্চিত্র এখন জটিল রোগের মত সমাজকে আবদ্ধ করেছে।এখন যে আইটেম গান গুলো গাওয়া হয় তা পরিবার নি্যে তো দেখা সম্ভব নয় বরং সে্ক্সুয়েল রিপ্লে্ক্সন সমৃদ্ধ এ সব গানে তরুনদের দ্বারা সামাজিক বিপর্যয় ঘটছে।তাদের অনেক প্রডিউসার যে ডার্টি পিকচার গুলো তৈরি করেছে তা সমাজের শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত জন গনকে সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত করছে। ইন্টারনেট এখন মোবাইলে চলে আসায় টিন এজারদের অবস্হান চরম আকারে পৌঁছেছে।এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক স্কুল ছাত্রী ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে যৌন শীকারে পরিনত হয়েছে।শুনেছি মাদ্রাসার ছাত্রিরাও এর কবলে পড়েছে।রাতের পর রাত ছেলে মেয়েরা এখন মোবাইল ফোনে কথা বলা ও এস এম এস এর মাধ্যমে তাদের অশ্লিল যোগাযোগ করে চলছে।সবচেয়ে বেশী এ সময়ে ক্ষতি করছে এখন এফ এম রেডিও।আমাদের বিনোদন মাধ্যমে এই অধুনা সংযোযিত এফএম রেডিওগুলো গভীর রাতে কিছু কিছু অনুষঠানের মাধ্যমে যে অনুষ্ঠান প্রচার করছে যা অনেক বাবা মা খবর রাখেন না।গভীর রাতে এই কোমলমতি ছেলেমেদের যৌন বিনোদন মূলক আনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের জীবন কেড়ে নিছ্ছে।আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন এখন উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা সারাদিন কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে ঘুরে।খুব কম বাবা মা তাদের এ ব্যাপারে জিজ্গেস করে।এতে তারা অশ্লীল বাংলা,হিন্দী, ইংরেজী হিফ হিফ ,র্যাপ ও রকি গান শুনে।আর রাত ১১ বা ১২ টার পর এফ এম রেডিও গুলো প্রচার করে শুরু করে জীবন ঘনিষ্ঠ অনুষ্ঠান।এসবে থাকে প্রেমের আবেদনময়ি প্রেমকাহিনী।যুবক যুবতীরা তাদের প্রেমের উপাখ্যান বর্ননা করে।প্রেম হয়ে গেলে তারা একে অন্যকে কিভাবে উপভোগ করে তার বিস্তারিত বর্ননা থাকে এ অনুষ্ঠান গুলোতে।ইদানিং লোকাল থেকে গরীব সুন্দরি মেয়েদের নিয়ে আসে কাজের প্রলোভন দিয়ে এবং তাদের দ্বারা অনৈতিক ব্যাবসা ও মাদকের ব্যবসা পরিচালিত হছ্ছে।ঢাকার আবাসিক এলাকাগুলোতে তাদের এই ব্যবসা চলে।এই সুন্দরি মেয়েদের দিয়ে স্কুল ,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্রদের বাগিয়ে নিয়ে প্রথমে যৌনতার স্বাধ পাইয়ে দেয়, তার পর ধীরে ধীরে গাঁজা ও এলকোহল সেবনের মাধ্যমে তাদের পড়ালেখার জীবন থেকে সরিয়ে অপরাধি জীবনের দিকে ধাবিত করে।
এই যে অনুষ্ঠানের নামে নাবালক ছেলেমেয়েদের সামনে প্রেমকাহিনী শুনিয়ে লাখ লাখ ছেলেমেয়ের বিনষ্ট যারা বিনষ্ট করে চলছে আমরা "ক" জন তার প্রতিবাদ করছি বা সরকার কি পদক্ষেপ নিছ্ছে।আজকাল টিভির এই সব লাইভ অনুষ্ঠান থেকে গান বাজনার নামে যে লাইভ অনুষ্ঠান হছ্ছে তা থেকে প্রেম বিনিময় ছাড়া আর কি শিখছে? এসব অনুষ্ঠান শুনে এই কোমলমতি ছেলেমেয়েরা যৌনতার সূড়সূড়ি পাছ্ছে বৈতো কি? এর ফলে পদস্খলন হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের।আমাদের দন্ডবিধিতে ব্যাভিচারের মত একটি গুরুতর আপরাধ রয়েছে, যার ফলে শুধুমাত্র প্রোরচনাদাতাকে শাস্তির বিধান দেয়া হয়েছে অথচ মূল আপরাধিকে শাস্তির বাইরে রাখা হয়েছে।দন্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় বিবাহের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য ব্যাভিচারকে অপরাধ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে,"কোন লোক যদি অপর কোন নারীর স্বামির বিনা অনুমতিতে বা যৌনকামনার উপস্হিতি ছাড়া যৌনসংগম করে ,যে নারি অপর কোন পুরুষের এরুপ যৌনসংগম ধর্ষনের অপরাধ না হলে ,সে লোক ব্যাভিচার করেছে বলে পরিগনিত হবে ও তাকে যে কোন বর্ননার কারাদন্ডে যার মেয়াদ ৭ বছর পর্যন্ত হতে পারে।এরুপ ক্ষেত্রে স্ত্রীলোকটি দুষ্করমের সহায়তাকারিনী হিসেবে শাস্তিযোগ্য হবে না।" যেহেতু ধর্ষন নয় বুঝা যাছ্ছে এখানে নারীর সম্মতি ছিল।এভাবেই মূল আপরাধি হয়েও নারিরা আইনসিদ্ধভাবে শাস্তির বাইরে থাকে।এই আইন প্রকৃয়ায় একজন আপরাধিকে ব্যাভিচারে উৎসাহ করা হয়েছে।একটি মুসলিম দেশে এ রকম আইন কিভাবে কার্যকর থাকে তা বিবেচনার ভার আইনজ্গদের উপর এবং তাঁরা ভেবে দেখতে পারেন।ব্যাভিচারকে রোধ করার জন্য সরকার সহ সমাজের সাবইকে এগিয়ে আসতে হব.
এ থেকে পরিত্রানের উপায় হলো ছেলেমেয়েদের সচেতন করে তোলা আর এগুলোর সঠিক ব্যাবহারের প্রতি আদেশ করা।
আমাদের করনীয় কি এ ব্যাপারে? যারা এগুলো পৃথিবিতে ছড়িয়ে দিয়েছে তারা সামজের এলিট।এখানে আছে কোটি কোটি ডলারের খেলা।তারা কখনো এগুলো বন্ধ করবে না।অমুসলিমদের কাছে এগুলো হতে পারে নগন্য কারন তাদের পরকালের কোন জবাবদিহিতা নেই।যারা মুসলমান তাদের আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে এবং তার প্রতিটি কাজের জন্য জবাব দিতে হবে।আমরা পারিবারিকভাবে এ জিনিসগুলো নিয়নত্রন করতে পারি। যারা অভিভাবক রয়েছেন তাদের উচিত সন্তানদের এ সব ব্যাপারে প্রশিক্ষিত করা।ভাল ও মন্দের দিকগুলো তাদের মস্তিস্কে পরিবেশিত করা ও রিজন গুলো তুলে ধরা।কোন কিছু ডাউনলোড করার দরকার থাকলে বাবা মা সাথে বসে সহযোগিতা করা।যারা টিভি দেখেন অশ্লিল চ্যানেলগুলো ডিলিট করে দেয়া আর অসুস্থ বিনোদন থেকে দূরে থাকা।আপনার সন্তানকে মানুষ করার দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।আমার আপনার কারনেই আজকের জেনারেশন অসুস্থ সংস্কৃতির কবলে নিপতিত হয়েছে।শুধু তারাই ধংশ হছ্ছে না।ধংশ হছ্ছে আপনার আমার পরিবার আর ভবিষ্যৎ বংশধর।ইসলামের দাওয়াত বাড়ানো ও আল্লাহর ভয় মানুষের মধ্যে জাগরিত করা প্রতিটি মুসলিমের আজকের দায়িত্ব হয়ে পড়েছে।তাই আর দেরি না করে আপনার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করুন ও জাতিকে সব রকম অশ্লিলতা থেকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা নিন।
বিষয়: বিবিধ
২২৬৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন