হে মুসলিম! ইসলামকে জানতে বুঝতে চেষ্টা করুন,বহুত্যবাদি ও বিদাআতিদের থেকে সতর্ক থাকুন।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৭ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৩০:২৫ দুপুর
বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আকান্খিত বিষয় হলো শান্তি।অতীতেও এই শান্তির-ই জন্য কাফের-মুশরিকদের সাথে লড়াই হয়েছিল।রাসূল সা: কোন যুদ্ধ করতে যান নি।তিনি সবগুলো যুদ্ধ প্রতিহত করেছিলেন।আজকের পৃথিবীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাফের মুশরিক রুপী চরিত্রধারি মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে যারা সংগ্রাম করছেন তারা হলো বিভক্ত ইসলামের কর্নধাররা, যারা ইসলামকে পূঁজি করে তাদের নিজস্ব মতবাদ তৈরি করেছে এবং গনতন্ত্রের ছায়ায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।এই হিসেবে তাদের গানতান্ত্রিক একটি দল বলা যায়।অন্যান্য দল যেমন তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে তারাও করতে পারে।কিন্তু প্রশ্ন হলো ইসলামকে জড়িয়ে তারা এ পথে কেন? ইসলামের একটি পথ রয়েছে যা আমরা রাসূল সা: এর ২৩ বছরের নবুওতি জীবনে স্পষ্ট দেখতে পাই।খোলাফার ৩০ বছর এবং এর পর প্রায় ৯০০ বছর মুহাদ্দিছ ও ঈমামগন তাদের ইসলামি কর্মকান্ড কিভাবে পরিচালনা করেছেন।যে চার জন প্রধান ঈমাম ইসলামের খেদমত করেছেন এবং এর পরও আরো ঈমামগন সমকালীন রাজনৈতিক শক্তির সামনে সমাজকে ইসলামের আলোকে আলোকিত করেছিলেন তাদের পথ কি ছিল এবং কিভাবে ইসলামের খেদমত করেছিলেন তা আজকের প্রজন্মকে জানতে হবে।এই হিসেবে গত চৌদ্দশ বছরের ইসলামের ইতিহাসকে যদি দুইভাগে ভাগ করে বুঝার চেষ্টা করা যায় তাহলে ইসলামকে বুঝা সম্ভব বলে আমি মনে করি।রাসূল সা: থেকে ১০০০ বছর আর এর পর ৪০০ বছর।
আজকে একদিকে ইসলামকে বিভক্ত করে ইসলামের শক্তিকে বিনষ্ট করেছে অন্যদিকে ইসলামের একটি উম্মাহ গঠন করার জন্য যে চরিত্র দরকার তা গঠন করতে ব্যার্থ হয়েছে এবং যে যার যার কাজে উৎসব পালন করছে যা সূরা আ'নয়ামের ১৫৯ আয়াত ও সূরা রুমের ৩২ আয়াত থেকে প্রমানিত।।আজ শান্তির অন্বেষনে হন্য হয়ে ফিরছে বিশ্বের সব জাতিগোষ্ঠী। প্রযুক্তির বদান্যতায় জীবনযাত্রা সহজ হলেও মানুষের জীবনে শান্তি ক্রমেই অধরা হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের উন্নত ও ধনী দেশগুলোর সামপ্রতিক অগ্রাধিকারের বিষয়ও শান্তি-নিরাপত্তা। সামাজিক অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি এখন উন্নত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার বিষয়। মানুষ এখন ঘরে-বাইরে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। সর্বাধুনিক অস্ত্র ও প্রশিক্ষিত-সুশিক্ষিত বাহিনী থাকতেও মানুষের নিরাপত্তা নেই। বৈষয়িক ঐশ্বর্য এবং অঢেল প্রাচুর্য সত্ত্বেও শান্তি নেই পরিবার ও সমাজে। শান্তি নেই রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।শান্তির স্বর্গ আমেরিকায় অকারনে নির্বিচার গুলিবর্ষণে স্কুলের ফুটফুটে কতগুলো শিশুর প্রাণ ঝরে যায়।তাদেরই পৃষ্ঠপোষকতায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আজ রক্তবন্যা বইছে।আবার তাদের মত ও তাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোতে যাদের উন্নত দেশ বলে আজ মুসলিমরা হিযরত করছে সেখানে ধর্ষন আর ব্যাভিচারের রেকর্ড ভংগ করছে আর তারা বলছে আমরা সভ্য।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শাসকগন নিজেদের সম্পদ আত্মসাৎ করে সে সব দেশে আবাস গড়ে তুলছে।বাংলাদেশ ও সেখানে পিছিয়ে নেই।এমেরিকা ,কানাডা,সিংগাপুর,অষ্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়া সহ আরো অন্যান্য দেশে তাদের আবাস বানিয়ে নিয়েছে। সভ্য দুনিয়ার আরেক মোড়ল অস্ট্রেলিয়ায় পিতা কর্তৃক একটি মেয়েকে ছয় বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণের সংবাদেও বিশ্ববিবেক বিস্মিত হয়েছিল। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক অসামপ্রদায়িক রাষ্ট্র ভারতে নারী ও মেয়ে শিশুদের জীবন-সম্ভ্রমের নিরাপত্তা নেই। ভারতের দিল্লি খ্যাতি পেয়েছে ধর্ষণ তথা নারী নির্যাতনের রাজধানী হিসেবে। প্রায়ই পত্রিকায় খবর ছাপা হয়, ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জাহিলী যুগের মতো কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে।দু'বছর আগে ভারতে দামিনী নামের এক তরুণী চলন্ত যানবাহনে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় সারা বিশ্ব কেঁপে উঠেছে।আমাদের দেশেও পর পর অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে এবং পত্রিকার পাতা খুললে এ রকম দৃশ্য প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে। তার পরও শিশু থেকে নিয়ে বিদেশি পর্যটক পর্যন্ত ধর্ষণ আর গণধর্ষণের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে সেখানে।
বলতে দ্বিধা নেই, এ অধরা শান্তির সবচেয়ে নিরাপদ ও সহজ ঠিকানা ইসলাম। বিশ্বের ইতিহাস সাক্ষী, অশান্তির অনলে দগ্ধ পৃথিবীকে ইসলাম যেভাবে শান্তি ও নিরাপত্তা উপহার দিয়েছে আর কোনো ইজম-ব্যবস্থাই তা দিতে পারেনি। বর্তমানে ইসলামের শান্তিময় বাণী প্রচারের জন্য যারা কাজ করছে তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে।কেউ প্রচলিত তাবলীগ জামাত,কেউ জামাতে ইসলামি,কেউ মুসলিম লীগ,কেউ নেজামে ইসলাম,কেউ আহলে সূন্নত আল জামাআত,কেউ খানকা,কেউ পিরতন্ত্র,কেউ মাযহাবি,কেউ বেরুলি,কেউ দেওবন্দি,কেউ এখুয়ানে ইসলাম আরো অনেক তরিকার সংগঠন।এদের সবারই কার্যক্রম ইসলামকে কেন্দ্র করে।তাদের প্রত্যকের রয়েছে দলের পরিচলানা কার্যক্রম ও তার সাথে ইসলামের লেবাস।একটি ইসলামের এত বিভক্ততা , তরিকা বা পথ কেন? ইসলামের কাজ করতে কি মানব রচিত সংবিধানের কাছে যেতে হবে? এখন যারা ইসলামের কথা ও কাজ করছেন তারা কি ঈমাম আবুহানিফার চেয়ে বিজ্গ কিনা? ঈমাম আবু হানিফা (র) কে দুই বার প্রধান বিচারপতির আসন অলংকৃত করতে বলা হয়েছিল তিনি কেন প্রত্যাক্ষান করলেন? কেন তাকে চাবুক মারা হয়েছিল? কেন কারাগারে তাকে জীবন দিতে হয়েছিল? মুসা আ; যখন লোহিত সাগর পেরিয়ে আসলেন এবং ফেরাউনের দল বল সব ডুবে গেল তিনি কেন সেই রাজ্য দখল করার জন্য ফিরে গেলেন না? বিশ্ব নবী সা: সামান্য খেজুরের চাটাইয়ে শুয়ে থাকতেন এবং পিঠে চাটাইয়ের দাগ হয়ে যেত।তার সারা জীবন উৎকৃষ্ট যবও খেয়ে যেতে পারেন নি।মাসের পর মাস আহলে বাইতের চুলোয় আগুন জলতোনা।অথচ ঈমান ছিল তাদের পরিপূর্ন।আজ যারা ইসলামের জন্য কাজ করছেন তাদের ব্যাক্তিগত জীবনে ইসলামের পূর্নতা নেই,সমাজে যে ইবাদত চলছে তা শির্ক আর বিদাআতে পরিপূর্ন।
পাপ পংকিলে ভরে যাচ্ছে দেশ, দেশের গনতান্ত্রিক সরকারগুলো দেশে বিজাতীয় সভ্যতার আমদানি করছে,সাধারন মুসলমানরা ইসলামের কাজকর্ম করতে পারছে না, কোথাও কোথাও মসজিদ বন্ধ করে দিচ্ছে, সমাজে অনৈতিক কাজ চলছে, কবর পূজা ও বিদা'আত ছড়িয়ে পড়ছে,পিরতন্ত্রের আওতায় হাজারো আখড়া গড়ে তুলে অজ্গ মানুষগুলোকে শির্ক ও বিদা'আতি ইবাদাত করাচ্ছে, এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া ও তাদের বুঝানোর জন্য যে দাওয়াত পেশ করা দরকার সেই মানুসগুলো গড়ে তোলার জন্য কারো চিন্তা নেই।ইব্রাহিম আ; নিজেই একটি উম্মত ছিলেন।সূরা মারিয়ামের ৪১-৫০ পর্যন্ত আয়াতগুলোতে তার পিতা আজরের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছিল তাদের উপাস্যের ব্যপারে এর পর তিনি তাদের ত্যাগ করলেন। রাসূল সা: সমাজ থেকে সমস্ত পংকিলতা দূর করে একটা পূর্নাংগ ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ইসলামের কাজ ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকের নির্দেশনা দিবে কিন্তু আজকের ইসলামের দলগুলো যে ইসলামের কথা বলছে তাদের কাজের সাথে ইসলামের কাজের ব্যাবধান হলো আকাশ ও পাতালের মত।আসুন তাদের কিছু ফিরিস্তি জেনে নিন।তবে শুরুটা করতে চাই কবি নজরুল ইসলামের রাজবন্দীর জবানবন্দী থেকে:-
"আমি পরম আত্মবিশ্বাসী।তাই যা অন্যায় বলে বুঝেছি,তাকে অন্যায় বলেছি,অত্যাচারকে অত্যাচার বলেছি,মিথ্যাকে মিথ্যা বলেছি-কাহারো তোষামোদ করি নাই,প্রশংসা এবং প্রসাদের লোভে কাহারো পিছনে পোঁ ধরি নাই-আমি শুধু রাজার অন্যায়ের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ করি নাই,সমাজের,জাতির,দেশের বিরুদ্ধে আমার সত্য-তরবারির তীব্র আক্রমন সমান বিদ্রোহ ঘোষনা করেছে-তার জন্য ঘরে,বাইরের বিদ্রুপ,আপমান,লান্চনা,আঘাত আমার উপর অপর্যাপ্ত পরিমানে বর্ষিত হয়েছে,কিন্তু কোন কিছুর ভয়েই নিজের সত্যকে,আপন ভগবানকে হীন করি নাই,লোভের বশবর্তি হয়ে আত্ম-উপলব্ধিকে বিক্রয় করি নাই,নিজের সাধনালব্ধ বিপুল আত্মপ্রসাদকে খাটো করি নাই,কেননা আমি যে ভগবানের প্রিয়,সত্যের হাতের বীনা,আমি যে কবি,আমার আত্মা যে সত্যদ্রষ্টা হৃষির আত্মা।আমি অজানা অসীম পূর্নাতা নিয়ে জন্মগ্রহন করেছি।এ আমার অহংকার নয়,আত্মা - উপলব্ধির আত্ম-বিশ্বাসের চেতনালব্ধ সহজ সত্যের সরল স্বীকারোক্তি।আমি অন্ধ-বিশ্বাসে,লাভের লোভে,রাজভয় বা লোকভয়ে মিথ্যাকে স্বীকার করতে পারি না।অত্যাচারকে মেনে নিতে পারি না।তাহলে যে আমার দেবতা আমায় ত্যাগ করে যাবে।আমার এই দেহ মন্দিরে জাগ্রত দেবতার আসন বলেই তো লোকে এ মন্দিরকে পূজা করে,শ্রদ্ধা দেখায়,কিন্তু দেবতা বিদায় নিলে এ শুন্য মন্দিরে আর থাকবে কী?একে শুধাবে কে?তাই আমার কন্ঠে কাল-ভৈরবের প্রলয়-তুর্য বেজে উঠেছিল;আমার হাতের ধূমকেতুর অগ্নি-নিশান দুলে উঠেছিল,সে সর্বনাশা নিশান-পুচ্ছে মন্দিরের দেবতা নট-নারায়ন রুপ ধরে ধ্বংস-নাচন নেচেছিল।এ ধ্বংস-নৃত্য সব সৃষ্টির পূর্ব সূচনা।তাই আমি নির্মম নীর্ভীক উন্নত শিরে সে নিশান ধরেছিলাম,তার তূর্য বাজিয়েছিলাম।অনাগত অবশ্যম্ভাবী মহারুদ্রের তীব্র আহ্বান আমি শুনেছিলাম,তাঁর রক্ত-আঁখির হুকুম আমি ইংগিতে বুঝেছিলাম।আমি তখনি বুঝেছিলাম,আমি সত্য রক্ষার,ন্যায় উদ্ধারের বিশ্ব-প্রলয় বাহিনীর লাল সৈনিক।বাংলার শ্যাম শ্মশানের মায়া নিদ্রিত ভূমে আমায় তিনি পাঠিয়েছিলেন অগ্রদূত তূর্যবাদক করে।আমি সামান্য সৈনিক,যততুকু ক্ষমতা ছিল তা দিয়ে তাঁর আদেশ পালন করেছি।"
কবি নজরুল ইসলামের এই আত্মবিশ্বাসের যায়গা থেকে বলতে চাই, সামাজিক অশান্তির যত উৎস আছে, সমাজের যত দুষ্টক্ষত রয়েছে, তা নির্মূলে সর্বপ্রথম দরকার মানুষের ভেতর পরকালে জবাবদিহিতার ভয় এবং আল্লাহর সামনে দাঁড়াবার চেতনা জাগ্রত করা। মানুষের ভেতর ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আল্লাহভীতি তথা তাকওয়া সৃষ্টি করা। সোজা কথায়, পবিত্র কোরআনের নির্দেশনা আর রাসুলের আদর্শে আলোকিত জীবন গড়া। ভেতরের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির উন্মেষ ঘটানো। নিখিল বিশ্বের স্রষ্টা ও একক নিয়ন্তা আল্লাহর কোরআনি নির্দেশনামাফিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আত্মশুদ্ধির শুভ্র পাঠ নিয়ে ব্যক্তি ও সমাজকে শ্বেত-শূচি বানানো। তার জন্য দরকার সমাজে এমন বৈশিষ্ট্যের মানুষ তৈরি করা যারা হবে শীসা ঢালা প্রাচীরের মত। সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা আজও যতটুকু আছে, তার পেছনে শান্তির ধর্মের এবং তা প্রচারের জন্য সে তাবলিগ দরকার যা হলো রাসূল সা: এর পথে তাবলিগ।দাওয়াত সম্পর্কে সূরা মায়দার ৬৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'হে প্রিয় রাসূল! তোমার প্রভুর কাছ থেকে যা তোমার কাছে অবতীর্ন হয়েছে তা প্রচার কর।আর যদি তুমি তা না কর তবে তার বানি তুমি প্রচার করলে না।'রাসূল সা: বলেছেন,'তোমরা আমার পক্ষ থেকে যদি একটি আয়াত ও জান তা প্রচার কর।' এ তাবলিগের মাধ্যমে হাজার হাজার অধঃপতিত তরুণ, উচ্ছন্নে যাওয়া শত শত যুবক ফিরে আসতে পারে শান্তির মোহনায়। যে মাদকাসক্তি নিয়ে দেশ-সমাজ উদ্বিগ্ন, তার ছোবল থেকে হাজারো যুবক রেহাই পেতে পারে। যে যৌতুকের অভিশাপ নিয়ে বলি হচ্ছে শত শত নিরীহ মা-বোন, ঘুম হারাম হচ্ছে হাজারো অভিভাবকের, তা নির্মূলেও কাজ করতে পারে ইসলামের প্রচার। কত ভাঙা সংসার জোড়া লাগতে পারে, কত চোর-গুণ্ডা সুপথে আসতে পারে, তার ইয়ত্তা নেই। যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সারা বিশ্ব সোচ্চার হয়েও ফল হচ্ছে না, দাওয়াতের ও তাবলিগের মাধ্যমে তার সমাধান হতে পারে ।তাকওয়ার জীবনের পাঠ নিয়ে কত ব্যবসায়ীর জীবন সৎ জীবনে পদার্পন করতে পারে, কত ঘুষখোর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশের প্রতি দায়িত্বশীল হতে পারেন, নিজের বেতন হালাল করা এবং হালাল উপার্জনের দরকারি শিক্ষা নিতে পারেন, তার হিসাব একমাত্র আল্লাহ- মাবুদই জানেন। এই কাজগুলোর জন্য দরকার ইসলামের বিভাজনকে বন্ধ করে এক ইসলামের দিকে ছুটে আসা।সারা দেশে এখন বিভক্ত দল মানে বিদাআতি দল ও সংগঠন যে যার মত ইসলাম প্রচার করছে,যে যার বিরুদ্ধে কথা বলছে,পাছেকি কাজ করছে কিন্তু ইসলামের বিজয়ের কাজ কেউ প্রকৃত অর্থে করছে না।
সূরা আল ইমরানের ১০৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'তোমাদের মধ্যে একটি দল হওয়া চাই যারা আহ্বান করবে কল্যানের প্রতি আর নির্দেশ দিবে ন্যায় পথের আর নিষেধ করবে অন্যায় থেকে।এরা নিজেরাই হছ্ছে সফলকাম।' অধিকাংশ ইসলামের দলগুলো কুরআনের এ ধরনের আয়াতগুলোকে বিকৃত করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে।অথচ ইসলামে ক্কেয়ামত পর্যন্ত একটি দল ও একটি উম্মাতের কথাই কুরআন ও হাদিসে বিবৃত হয়েছে।কোন দাওয়াত পৌঁছাতে হলে দেখতে হবে তা কুরআন ও হাদিসে আছে কিনা? তাবলিগ বা ইসলাম প্রচার সম্পর্কে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে আমরা কোন তাবলিগ পৌঁছাবো।তাবলিগ করার জন্য কুরআন ও হাদিসের ইলম থাকতে হবে। অধিকাংশ মাণুষ তাদের জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গাফেল।উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, আপনি যদি কোন কোম্পানির এজেন্ট হয়ে থাকেন এবং যে প্রডাক্ট টির সেবা জন গনকে দিবেন সে প্রডাক্ট ও কোম্পানি সম্পর্কে আপনার গভীর জ্গান থাকতে হবে।যদি আপনি ভোক্তাদের সন্তুষ্ট করতে চান তাহলে এর ব্যাবহারিক দিক সহজভাবে বর্ননা করতে হবে যেন তারা বুঝতে পারে।তাহলে বুঝা গেল এটা নির্ভর করছে আপনার কোম্পানির প্রডাক্ট টির গুনাগুন এবং আপনার দক্ষতার উপর।আল্লাহপাক এই কুরআন নাজিল করেছেন আর দ্বার্থভাষায় বলে দিয়েছেন এতে কোন সন্দেহ নেই।শুধু তাই নয় তার সাথে একজন প্রশিক্ষিত রাসূল পাঠিয়েছেন যিনি এ বিষয়টি মানুষকে সুচারুরুপে বুঝিয়ে দিয়েছেন আর সুধীর্ঘ ২৩ বছর ব্যাপী তিনি প্রচার করে পৃথিবিতে একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।মুসলিম সমপ্রদায়ের কাছে আমার আকুল আবেদন আপনারা ইসলামকে বুঝার জন্য আলকুরন ও ছহি হাদিছের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করুন।হজের মাস শুরু হয়েছে দু:খ ভারাক্রান্ত মনে বলতেই হচ্ছে,আজ মুসলমানরা তাদের ইতিহাস ঐতিহ্য থেকে অনেক দূরে রয়েছে।তারা পড়াশুনা থেকে গাফেল হয়ে আছে।রাসূল সা: বিদায় হজে বলেছেন,আমি তোমাদের জন্য দু'টি জিনিস রেখে যাচ্ছি।তা হলো আল্লাহর কিতাব ও আমার সূন্নত।যারা এ দু'টিকে আঁকড়ে থাকবে তারা পথভ্রষ্ঠ হবে না। আজকে মুসলিম বিশ্বে ছহি সূন্নাহকে বাদ দিয়ে , রাসূল সা: এর পথকে উপেক্ষা করে,তাদের দলীয় কিতাব যা শির্ক ও বিদাআতে পরিপূর্ন তা দিয়ে দীন পালন করছে।
সূরা হাশরের ৭ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,'রাসূল তোমাদের যা দেন তা গ্রহন কর আর যা নিষেধ করেন তা বর্জন কর।'ক্কেয়ামত পর্যন্ত এমন কিছু আল্লাহ পাক বাকি রাখেন নি যা উম্মতকে নতুন করে তৈরি করতে হবে।কিন্তু তারা তৈরি করছে সংগঠনের নামে,দিনের নামে বিভিন্ন তরিকা ও পথ যা অজ্গ লোকগুলোকে গলাধকরন করাচ্ছে এবং নিজেরাও ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে অন্যদেরও ধ্বংস করছে।উপমহাদেশে যে বড় দলগুলো আছে তাদের সম্পর্কে যেমন মানুষের জানা উচিত এবং তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে মানুষকে জনানো ঈমানের দাবি। ইসলামের এই নতুন নতুন আবিষ্কার যা দেখে অনেক সময় আতকে উঠতে হয় যার সাথে আলকুরআন ও হাদিসের কোন মিল নেই।পাকিস্তান,ভারত ও বাংলাদেশে এই বিদাআতিরা লাখ লাখ মানুষকে ইবাদতের নামে বিভ্রান্ত করছে।পাঠকদের অবগতির জন্য বলছি,বেরুলি ,দেওবন্দি,ইলিয়াসি তাবলীগ,জামাতে ইসলাম,পিরতন্ত্র,খানকা ও দরগাহ ও ইসলামের আরো অন্যান্য দল যা আছে এগুলোতে শির্ক আর বিদাত ভরপুর যদিও এর সাথে তারা ইসলামের কিছু কাজ করে।আপনারা তাদের কিতাব পড়ুন,তাদের সাথে বসার চেষ্টা করুন,আল্লাহ তাওফিক দিলে জানতে পারবেন তারা কি করে।এদের অধিকাংশ ইহুদি খৃষ্টানদের আলেমদের অনুসারি।তারা যেভাবে নজর নিয়াত নিয়ে মানুষকে শোষন করতো এরাও ধর্মের নামে,সংগঠনের নামে,পিরতন্ত্রের নামে,খানকা ও দরগাহের নামে সাধারন মানুষকে শোষন করছে।এদের মধ্যে যারা রাজনৈতিক ইসলাম কায়েম করার জন্য গনতান্ত্রিক ও মানবরচিত পাছেক সরকারের মোকাবিলা করছে সংসদে যাওয়ার জন্য এ ইসলামের পথ নয়।এভাবে সংসদে যাওয়ার অর্থ হলো নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালি করা ও নিজেদের বুর্জুয়া তৈরি করা।এদের চরিত্রে রাসূল সা: এর কোন প্রতিবিম্ব নেই যা দেখে মানুষ দীনের দিকে ধাবিত হবে।আজকে এই সংগঠন করতে গিয়ে যে যুবকরা তাদের পড়াশুনা ও চরিত্র উন্নত করে দেশ গড়ার জন্য নিজেদের তৈরি করার কথা তারা স্বীকার হচ্ছে বিভিন্ন নেতা নেতৃদীদের হাতের পুতুল হিসেবে। গনতান্ত্রিক দলগুলো এবং ইসলামের এই দলগুলোর নিষ্পেষনে জাতি আজ ক্ষতবিক্ষত।রাসূল সা: ইসলামের কাজ করেছিলেন বিরোধীদের উত্যক্ত করে নয়,কোন লোভের বশবর্তী হয়ে নয়।মক্কার মোশরেক ও কাফেররা বলেছিল হে মোহাম্মদ তুমি যদি সুন্দরি যাও তা দিব,যদি সম্পদের প্রাচুর্য চাও তাও দিব।রাসূল সা: বলেছিলেন তোমরা যদি আমার এক হাতে সূর্য আর এক হাতে চন্দ্র দাও তাও আমি আমার নীতি থেকে পিছ পা হব না।আজকে সব নেতা নেত্রীদের খবর নিয়ে দেখুন কি পরিমান অর্থ বৈভবের মালিক।যারা ইসলামের কথা বলছেন,কি অবস্হায় বলছেন আমাদের স্মরন রাখা উচিত।অন্য দলের নেতাদের কথা আমি বলছিনা যাদের সাথে ধর্মের তেমন সম্পর্ক নেই কিন্তু যারা ইসলামের কথা বলছেন তাদের অনেককে আমি ছাত্র জীবন থেকে দেখে আসছি তারা কিভাবে বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন।তারা দেশে রাজনীতি করে আর তাদের ছেলে মেয়ে খৃষ্টানদের দেশে পালিত হচ্ছে।দেশে যারা রাজনীতি করছে কোটি কোটি টাকার বিত্তবৈভব তৈরি করছেন।সে সমস্ত ভন্ডদের বলছি ইসলামের কথা বলে,দীনের কথা বলে দীনকে ক্ষতবিক্ষত করবেন না।আপনি পাছেক ও বিদাআতি হবেন ঠিক আছে কিন্তু অন্যদের পাছেক ও বিদাতি বানানোর অধিকার আপনার নেই।একইভাবে পির,খানকা ও দরগার মালিক যারা তারা যেভাবে সাধারন মানুষদের দীনের নামে বোকা বানাচ্ছেন,এগুলো ইসলামে আছে কিনা আলকুরআন ও ছহি হাদিসের আলোকে এর প্রমান দিন আর তা নাহলে এ সব ব্যাবসা ছেড়ে সাধারন মানুষগুলোকে জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই দিন।সূরা আহযাবের ৬৭/৬৮ আয়াতে আপনাদের জন্য দ্বীগুন আজাবের ব্যাবস্হা আছে বলে প্রমান আছে।
রাসূল সা: বলেছেন,ইসলামের বুনিয়াদ হলো ৫টি।আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা: এর উপর ঈমান আনা,দিনে রাতে ৫ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করা,যাকাত আদায় করা(নেসাব পরিমান অর্থ থাকলে),রমজানের রোজা রাখা,জীবনে একবার বায়তুল্লাহর হজ্জ করা(ক্ষমতা হলে)।যে দেশে ইসলামি সরকার নেই সে দেশে একজন নাগরিকের কাজ হলো ইসলামের এই ৫টি বিষয় নিজে অনুশীলন করবে ও সাথে সাথে অন্যদের কাছে এর বারতা পৌঁছাবে তার ক্ষমতানুসারে।মানুষকে ভাল কাজের আদেশ দিবে ও অন্যায় কাজে বাধা দিবে তার ক্ষমতানুসারে।আর এ কাজগুলো সমাজের এ ধরনের ভাল মানুষগুলোকে নিয়েই করতে হবে।কিন্তু ইসলামের নামে,দীনের নামে কোন দল তৈরি হবে না যা আমাদের দেশে ও বিভিন্ন দেশে বিদাআতি কায়দায় ইসলাম প্রচার হচ্ছে।খালেস আল্লাহর ইবাদত কারিদের তাদের বুঝাতে সক্ষম হলে বুঝাবে এগুলো ভ্রান্ত পথ।আর এজন্য দরকার নবী সা: এর জীবন আদর্শের উপর পড়াশুনা।রাসূল সা: এর ইসলাম মসজিদ থেকে উদ্ভুত ও পরিচালিত এবং জীবনের মধ্যে ছিল সরলতা ও মানব কল্যান।আজকে এই সমস্ত সংগঠন গুলো চোরের মত বিভিন্ন যায়গায় বৈঠক করছে,মনে হচ্ছে তারা চোরাগুপ্তার শিক্ষা দিচ্ছে।আবার কেউ ইসলামের নামে জিহাদ করছে।এই সব পাছেক পুরুষ ও মহিলারা কুরআন পড়তে পারে না কিন্তু তাফছির করছে।বৈঠক করছে পিকনিকের মত আর সেখানে গীবত ও চোগলখুরি হচ্ছে।তাদের একটি বিদাআতি সদস্যপদ রয়েছে এদের অনেকে হালাল হারাম মানছে না কিন্তু নেতৃ্ত্ব দিচ্ছে।মোটকথা তাদের মন গড়া সাজানো এসব বৈঠক রাসূল সা: এর ইসলামি জীবনের সাথে বৈপরিত্য সংঘাতপূর্ন।উপমহাদেশে এই সব দলগুলোর মধ্যে কিছু লোক তো ভাল আছে যারা ইসলামের শক্তি বলে সেখানে যান কিন্তু তাদের ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা করে তাদের কাছে যেতে হবে যেন তাদের এই সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করতে পারেন।আমাদের মনে রাখতে হবে ইসলামে যারা দীক্ষিত হয়েছেন তাদের সংখ্যা ছিল কম কিন্তু শক্তি ছিল প্রকান্ড।সুতরাং বড় দল বলেই সেটা আল্লাহর দল ও ইসলাম কায়েমের দল সেটা ভাবার কোন কারন নেই।আমি অনুরোধ করবো সম্মানিত পাঠকগন,ইসলামকে আলকুরআন ও সূন্নাহের আলোকে বুঝতে চেষ্টা করুন,ব্যাক্তি ও পারিবারিক জীবনকে ইসলামের আলো দিয়া আলোকিত করুন,আপনার আত্মীয় ও প্রতিবেশীর প্রতি ইসলামের আলো পৌঁছানোর চেষ্টা করুন এতেই কল্যান।ইসলাম কোন ধ্বংসাত্মক কাজের অনুমোদন করে না।ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং শান্তির সাথে একে অন্যকে সহমর্মিতার সাথে আলিংগন করে নিলেই সমাজে শান্তি আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
বিষয়: বিবিধ
১৩৬০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন