হাজি সাহেবদের কিছু ভুলভ্রান্তি যা হজকে নষ্ট করে অথচ হাজি সাহেবগন অনুধাবন করতে পারেন না।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৪ আগস্ট, ২০১৪, ০১:৩৭:৪৮ দুপুর
যে ব্যক্তির এই পরিমাণ ধন-সম্পদ আছে যে, সে হজের সফর (পথখরচ) বহন করতে সক্ষম এবং তার অনুপস্থিতিকালীন তার পরিবারবর্গের প্রয়োজন মেটানোর মতো খরচও রেখে যেতে সক্ষম, এমন ব্যক্তির ওপর হজ করা ফরজ। অথবা এমন ব্যক্তি যে হজের মৌসুমে অর্থাৎ শাওয়াল মাস শুরু হওয়া থেকে সৌদি আরবে অবস্থানরত ছিল বা জিলহজ মাস পর্যস্ত সৌদি আরবে অবস্থান করতে থাকে এবং তার ওপর যদি কোনো বিধিনিষেধ, ওজর ও অসুবিধা না থাকে, তাহলে তারও হজ পালন করা ফরজ।সূরা বাক্কারার ১৯৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'হজ হয় কয়েকটি সুবিখ্যাত মাসে,কাজেই যে কেউ এই সময় হজ করার সংকল্প করে তার জন্য এ সবের মধ্যে স্ত্রী গমন বা দুষ্টামি থাকবেনা বা হজের মধ্যে তর্কাতর্কি চলবেনা।আর ভাল যা কিছু তোমরা কর আল্লাহ তা জানেন।আর পাথেয় সংগ্রহ কর,নি:সন্দেহে শ্রেষ্ঠ পাথেয় হচ্ছে ধর্মপরায়নতা।অতএব আমাকে ভয়শ্রদ্ধা কর হে! জ্গানীরা।'হজের মাসেই হজের নিয়্যাত করতে হবে।শাওয়াল ,জিলক্কাদ ও জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ এই দুই মাস ১০ দিনের মধ্যেই হজের নিয়্যাত করতে হবে।এর আগে বা পরে করলে হজ কবুল হবে না।হজ প্রত্যকে মু'মিন মুসলমানের জন্য জীবনে একবার ফরয যার নেসাব পরিমান অর্থ থাকে।নবী সা: জীবনের শেষে একবারই হজ্জ করেছেন এবং হজের বিধিবিধান সাহাবাদের শিখিয়েছেন এবং উম্মতের জন্য ক্কেয়ামত পর্যন্ত জারি রেখে গেছেন।তিনি সাহাবাদের বলেছেন,আমার কাছ থেকে হজের বিধিবিধান শিখে নাও।সুতরাং প্রত্যেক মুসলিম নরনারি যারা হজে যাবেন,যাদের উপর হজ ফরয হয়েছে,হজে যাওয়ার আগে হজ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্গান হাছিল করা ফরয।হজে যা করনীয় এবং বর্জনীয় তাও জানা ফরয।আমাদের দোয়া করতে হবে যারা হজ করেছেন তাদের যেন মকবুল হাজি হিসেবে কবুল করেন আর যারা এখনো যেতে পারেন নি আল্লাহ যেন তার ঘরে যাওয়ার তাওফিক দান করেন।হজের অনেকগুলো দিক রয়েছে তার মধ্যে একটি দিক হলো হজের ভুলক্রুটি যা না জানলে একজন হাজি হজ করবেন ঠিক কিন্তু কোন ফল পাবেন না বা নেকির দিক থেকে কম হয়ে যাবে।হজে গিয়ে যেমন ভুলমুক্ত হয়ে হজ করতে হবে তেমনি ভুলক্রুটিকেও চিহ্নিত করতে হবে যাতে করে ছহি হজ করা যায়।হজের যদি রোকন ছুটে যায় হজ হবে না তেমনি যদি ওয়াজিব ছুটে যায় তাহলে হজ অসম্পুর্ন হবে এবং তার জন্য দম(পশু জবাই) দিতে হবে।হজে সূন্নত ছুটে গেলে নেকি কমতে থাকে।হজে হাজি গেলেন কিন্তু হারাম মুক্ত হলেন না তাহলে সে হজ মকবুল হবে না।হজের ভুলক্রুটি ব্যাপক তবে দুটি বিষয় যা অনেক হাজি সাহেবগন করে থাকেন তা পরিষ্কার জানা থাকতে হবে।একরকম ভুল হলো-বিদাআতি কাজ আর্থাৎ হজের মাঠে বিদাআতের অনুসরনে হজের কাজ সম্পন্ন করা।বিদাআত হলো গোম্রাহি আর পরিনাম হলো জাহান্নাম। হজের আর এক ধরনের ভুল হলো-তা বিদাআত নয় কিন্তু সেগুলো গুনাহের কাজ।হজের যে নিয়ম কানুন রয়েছে তার বিপরীত কাজ।মুসলিমদের ভুল হয় দুই কারনে।বিদাআত ঐ ধরনের ভুল যেগুলোকে মানুষ ভুল মনে করে করেনা,নেকি মনে করে করে।তারা হজে গিয়ে এ কাজগুলো জেনে শুনে করছে ও নেকি মনে করে করছে।এগুলোর অনেক উদাহরন রয়েছে, যেমন-ক্বাবা ঘরের যেখানে সেখানে চুমু দেয়া।তারা একে নেকি মনে করেই করে কিন্তু চিন্তা করে না রাসূল সা: কোথায় চুমু দিয়েছেন।এটা গুনাহের কাজ ও হজের ভুলক্রুটি ও বিদাআত।কারন হাজি সাহেব একে নেকি মনে করে করছে।জামারাতে গিয়ে কন্কর মারতে হবে,তা না করে জুতো সেন্ডেল বা লাঠি মারা।জাহেল হাজির মাথায় বিদাআতি আক্কিদা ঢুকে আছে যে শয়তানকে মারছে আর ছোট কন্কর মেরে লাভ কি? এগুলোকে তারা ধর্ম মনে করে নেকির উদ্দেশ্যে করছে কিন্তু হজের ভুলক্রুটি। আর একধরনের ভুল আছে যা নেকির কাজ মনে করে করে না কিন্তু অজ্গতার কারনে করছে বা অন্ধ অনুকরনে করছে,সামনে যারা আছে তাদের দেখে দেখে করছে।ধরুন একজন মূর্খ লোক হজে গিয়েছে সামনে দেখলো কতেক হাজি লম্বা দাঁড়ি,লেবাছ এবং মনে করলো আমি তো বেশি কিছু জানিনা।নিশ্চই হুজুর বা কোন বুজুর্গ মানুষ।তার এটা জানার প্রয়োজন নেই এই হুজুরের মধ্যে ইলম আছে বা নেই অমনি সে যা করলো তা-ই অনুসরন করলো।আজকাল মুসলিম সমাজে এই রীতি তৈরি হয়েছে যে, মাদ্রাসায় যারা পড়ে তাদেরই দাঁড়ি রাখতে হবে বা তাদের কাছেই ইলম রয়েছে, অন্য কারো দরকার নেই।অথচ দীন পালন করা ও ইলম অর্জন করা প্রত্যেকের জন ফরয।লোকজনকে দেখলো আরাফার মাঠ থেকে মাগরিবের আগেই বের হয়ে পড়লো আর মূর্খ লোকরাও তাদের পিছু ছুটলো।এটা নেকি মনে করে করলো না,অজ্গতার কারনে অন্যের অনুসরন করলো। এ রকম অনেক ভুল রয়েছে যা জানা অবশ্য প্রয়োজন।নবী সা: আমাদের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে উত্তম আদর্শ।সূরা আহযাবের ২১ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' তোমাদের জন্য নিশ্চই আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম দৃষ্টান্ত তার জন্য যে আল্লাহকে ও আখেরাতের দিনকে কামনা করে আর আল্লাহকে বেশি করে স্মরন করে।' একজন মু'মিন মুসলিম সব সময় আশা পোষন করে আখেরাতে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের।পক্ষান্তরে কাফের মুশরিক ,পির ও কবরপূজারিরা আশা করে তাদের তাদের পিরদের কবর ও অন্যান্য উপাস্যদের কাছে।যারা মু'মিন তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর জান্নাত আর কাফের মুশরিক,কবরপূজারি ও বিদাআতিদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। সুতরাং হজের বিধিবিধান নিতে হবে একমাত্র নবী সা: থেকে।রাসূল সা: যা করেছেন তা করতে হবে আর যা ছেড়েছেন তা বাদ দিতে হবে।নবী সা: বিশেষ করে ১১/১২ তারিখ রাত মিনায় যাপন করেছেন আর কোন হাজি যদি রাত মক্কায় কাটিয়ে আসে তাহলে ঘাটতি করা হলো।ঘাটতি করা যেমন গুনাহের কাজ তেমনি বাড়তি করাও গুনাহের কাজ।বাড়তি করলে বিদাআতি কাজ হয় আর ঘাটতি করলে গুনাহ ও ফাসেকি কাজ হয়। এই দুই রকমের ভুল থেকে বাঁচার জন্য হাজি সাহেবদের সতর্ক থাকতে হবে।সূরা আল-ইমরানের ৩১ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,'তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস তবে তোমরা আমার (নবী সা এর অনুসরন কর।তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন আর তোমাদের গুনাহ মাপ করবেন।' সামনে বাড়া যেমন হারাম তেমনি অনেক পিছনে থাকাও ও হারাম।নবী সা: ঈমামের অনুসরন করতে বলেছেন কিন্তু অনেক মুসলমানকে দেখা যায় রুকু সেজদা করতে অনেক বিলম্ব করে।ঈমাম দেখা গেল সেজদা থেকে উঠে গেল আর অনুসরনকারি দীর্ঘ পরে সেজদা থেকে উঠলো বা ঈমাম সালাম ফিরালো অনুসরনকারি দীর্ঘ পরে সালাম ফিরালো।এগুলো পিছনে থাকা।তাই ঈমামের যেমন সামনে বাড়া যাবে না তেমনি অতি পিছনেও থাকা যাবেনা।
হাজি সাহেবরা প্রথম যে ভুল করেন তা হলো- যখন বাড়ি থেকে বিদায় হন তখন আত্মীয়স্বজন তাক্কবির দিতে দিতে বাস ষ্টেশন এমনকি এ্যায়ারপোর্ট পর্যন্ত বিদায় জানান।আবার অনেকে পুরো এলাকা জুড়ে খবর করে আসার আগে খাওয়ার ব্যাবস্হা করেন যেন হাজি সাহেবকে সবাই চিনতে পারে।এই ত্বরিকা হলো বিদাআতি ত্বরিকা কারন উদ্দেশ্য হলো হজের উদ্দেশ্যে নেকি অর্জন করা।আবার ফিরে যাওয়ার সময়ও একই অবস্হা।বিভিন্ন দেশে আবার জিকির আজকারেরও ব্যাবস্হা রয়েছে।মহিলারা অনেকে যখন হজে বের হয় তখন মাহরাম ছাড়া বের হয়।মহিলাদের জন্য এটা অতিরিক্ত।স্বামি বা এমন ব্যাক্তি যার সাথে স্হায়ীভাবে বিবাহ হারাম।এখন যা করা হয় তা হলো একটা সাময়িক সম্পর্ক করে দেয়,ধর্ম ভাই বা বাপ বা বেটা বলে যাতে করে সফর করতে পারে,যা ইসলামে হারাম।অনেকে এরকম ধর্ম বেটি করে পরে বিয়েও করে ফেলেছে।সুতরাং এগুলো শয়তানি কাজ।অন্তরের বিদাআত,কথার বিদাআত,আমলের বিদাআত,আক্কিদার বিদাআত দেখতে পাওয়া যায়।আর একটি আছে বাচনিক বিদাআত।হজ , ওমরা ,নামাজ ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিয়াত উচ্চারন করা।এগুলো সবই বিদাআত।নিয়্যাত হচ্ছে অন্তরের কাজ।হাজি গন যখম মিকাতে আসার আগে গোছল করলো,কাপড় পরলো,সুগন্ধি লাগালো তারপর "লাব্বাইক ওমরাতান ওয়া হাজ্জান" শুধু ওমরাহ হলে লাব্বাইক ওমরাতান বললো তখন নিয়াত হয়ে গেল। এটা নিয়াত পড়া নয়।এখানে অনেক বিদাআতি মোল্লারা মানুষকে ধোকা দেয়।নবী সা: লাব্বাইক শিখিয়েছেন 'নাওয়াইতু' শিখান নি।তালবিয়া পড়ার ক্ষেত্রেও যখন দলবেধে উচ্চ স্বরে পড়ে তখন অনেকে পড়ে আর যখন একা থাকে তখন আর পড়ে না।আবার অনেক মূর্খতো আছে যাদের তালবিয়া মুখস্ত নাই অথচ হজে এসেছে।মাসনুন তালবিয়ার উচ্চারন হলো : লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক লাব্বাইকা লাশারিকালাকা লাব্বাইক ইন্নাল হামদা ওয়াননিয়ামাতা লাকা ওয়াল মূলক লাশারিকালাকা।এইজন্য সম্মিলিত দোয়া বিদাআত,সম্মিলিত জিকির বিদাআত,সম্মিলিত মোনাজাত বিদাআত।রবের কাছে গোপনে দোয়া করা ,নিজের আরজি পেশ করাটাই উত্তম। হজরে আসোয়াদ এর কাছে গিয়ে অনেকে রফে ইয়াদাইনের মত হাত তোলে,অনেকে দূর থেকে হাতে চুম্বন দেয়।এগুলো বিদাআত বরং যদি কাছে গিয়ে চুম্বন দেয়া যায় চুম্বন দিতে হবে কাউকে কষ্ট দিয়ে নয়।যদি মুখ দিয়ে চুম্বন দেয়া না যায় তাহলে হাত লাগিয়ে চুম্বন দিতে হবে।আর তাও যদি না হয় তাহলে হাত উঠিয়ে বিসমিল্লাহে আল্লাহু আকবর ও পরে আল্লাহ হু আকবর বলবে কিন্তু চুম্বন দিবে না।আমাদের দেশে যে বইগুলো লিখেছে তাতে লিখা আছে হাত উঠিয়ে চুম্বন দিবে।হাদিছে এর কোন প্রমান নেই।হজের বই হলেই কিনা যাবে না,তা দলিল সম্মত হতে হবে আর এজন্য হাজিদের হক্কানি আলেমদের স্মরনাপন্য হওয়া উচিত।সৌদি আরবে বিভিন্ন যায়গায় মন্ত্রনায়গুলো থেকে কাউন্টার দিয়ে ফ্রি যে বই দেয়া হয় সেগুলো কোরআন ও হাদিছ সম্বলিত।হজরে আসোয়াদে চুম্বন দেয়ার জন্য ভীড় করা একটি গুনাহের কাজ।এটা হলো সূন্নত আর মানুষকে কষ্ট দেয়া হারাম।এই সূন্নতের বিকল্প হলো ইশারা করে চলে যাওয়া।কাবা ঘরের সাত চক্কর দেয়ার জন্য বিদাআতি বইগুলোতে যে প্রতি চক্করের জন্য দোয়া লিখা হয়েছে তা স্পষ্ট বিদাআত এবং কোন হাদিসে এর প্রমান নেই।কাবার দরজার পাশে এসে অনেকে একটি দোয়া পড়ে তা বিদাআত।আর দল বেধে পুরুষের সাথে মহিলারা যে উচ্চ স্বরে দোয়া পড়ে তাও বিদাআত এবং হারাম কাজ।কাবা শরীফে চারটি কর্নার আছে যাকে আরবীতে রোকন বলা হয়।দুটি কর্নার সপ্ষ্ট দেখা যায় আর দুটি হাতিমের দেয়াল দিয়ে ঘেরা।এই রোকন গুলোর নাম অনেকেই জানে না।হজরে আসোয়াদে আসার আগে যে কর্নারটি রয়েছে তা হলো রোকনে ইয়ামেনি এবং তা স্পর্শ করা সূন্নত।আর এর পরের কর্নারটিতে রয়েছে হজরে আসোয়াদ।এর বিপরীত দিকে যে কর্নারগুলো রয়েছে সেই রোকন গুলোর একটির নাম হলো রোকনে 'শামি' ও রোকনে 'ইরাক'। ইরাক ও শাম দেশের নাম করনে এই দুটোর নাম করন করা হয়েছে।রোকনে ইরাকির এখানে এসে বিদাআতিরা দাঁড়িয়ে বিভিন্ন দোয়া পড়ে।কাবা ঘরের ছাদের উপর থেকে পানি পড়ে এমন একটি নালা রয়েছে যা মদিনার দিকে, এখানে আসলে বিদাআতিরা দোয়া পড়ে।এগুলো তাদের তৈরি করা দোয়া।হারাম শরিফে দোয়াতো করতে হবে যা কোরআন হাদিসের মাসনুন দোয়া কিন্তু তারা তাদের আলেমদের বানানো দোয়া পড়ে এজন্যই এগুলো বিদাআত।আর এই বইগুলো ভারতীয় উপমহাদেশে তৈরি হয়েছে। অন্যান্য দেশেও এরকম আরবী বই পাওয়া যায় এসব বিদাআতি বই।রোকনে ইয়ামেনিতে চুম্বন দেয়া আর একটি বিদাআত।অনেকে কাবার যেখানে সেখানে চুম্বন দিচ্ছে,যেখানে সেখানে মাথা ঠুকছে এগুলো বিদাআত।মাকামে ইব্রাহিমে গিয়ে সওয়াবের উদ্দেশ্যে চুম্বন দেয়া,হাত লাগিয়ে মুখে শরিরে মোছা এসবই বিদাআত।আর একটি বিদাআত করে কাবা শরিফের দরজার সামনে যাকে মুলাতাজিম বলা হয়।এখানে কাবা শরীফকে জড়িয়ে ধরে দোয়া করার হাদিস রয়েছে।কিন্তু আরো তাবারুক হাছিল করার জন্য দরজার উপরের ভাগকে ছোঁয়ার চেষ্টা করে আর মনে করে এখান থেকে আরো বেশি সওয়াব হাছিল করা যায় এগুলো বিদাআত।এ ছাড়াও আরো অনেক বিদাআত মানুষ করে থাকে।এখন তো ডিজিটাল হজ ও ওমরাহ করে অনেকে।হজরে আসোয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে দেশে টেলিফোন করে আমি এখন হজরে আসওয়াদের কাছে তোমাদের জন্য দোয়া করছি ইত্যাদি--।ওজুর শর্ত হচ্ছে নামাজ পড়তে ওজু করতে হবে।আর বায়তুল্লাহ তওয়াফ করলে ওজু থাকতে হবে।কিন্তু অনেকে মনে করে সাফা-মারোয়া সাঈর জন্য ওজু থাকতে হবে।সবসময় ওজু অবস্হায় থাকলে ভাল কিন্তু যদি সাফা-মারোয়ায় ওজু ভেংগে যায় তাহলে সাঈ রেখে ওজু করার জন্য যাওয়ার দরকার নেই।তবে যদি নামাজের সময় হয় তাহলে ওজু করতে হবে তাছাড়া সাঈ শেষ করে নিতে হবে।কেউ কেউ এই অতিরিক্ত কাজ করে সেজন্য এটা বিদাআত।মা আয়শা রা: বর্ননা করেছেন,নবী সা: বলেছেন,কেউ যদি এমন কোন আমল করে যা আমার ত্বরিকায় নয় তা প্রত্যাখ্যাত।'
আরাফায় গিয়ে অনেকে মনে করে জাবালে রহমতে যেতে হবে।রহমতের পাহাড়-এই নাম দেয়া হয়েছে বিদাআতিদের পক্ষ থেকে।রাসূল সা: ওখানে সওয়ারি রেখেছিলেন কিন্তু বলেননি এটা রহমতের পাহাড় এবং এও বলেননি তোমরা অধিক সওয়াবের জন্য এখানে আসবে।যারা সেখানে উঠার জন্য কষ্ট করে তা সওয়াবের কাজ নয়।এমনকি মহিলারা সেখানে উঠে না নামতে পেরে পায়খানা পেশাব পর্যন্ত করেছে।এগুলো তারা করছে ফযিলত মনে করে।অনেকে নিজের তাঁবুর যায়গা ছেড়ে খুঁজতে থাকে এ পাহাড়।অথচ তাদের কাজ ছিল সেখানে সুস্হভাবে বসে যিকির আযকার করা,আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরন করা,নিজের কৃত গুনাহ মাপের জন্য আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করা।আরাফার জন্য বিশেষ দোয়ার বই দেখতে পাওয়া যায় যা তারা অনুসরন করে।নবী সা: আরাফার জন্য একটি শ্রেষ্ঠ ও উত্তম দোয়া হাদিসে বর্ননা করেছেন,'লা ইলাহা ইল্লল্লাহু ওয়াহদা লাশারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আ'লা কুল্লিসাইয়িন ক্কাদির।' এই দোয়া আল্লাহ পাকের গুনবাচক দোয়া এবং এ দোয়া বেশি বেশি পড়তে হবে।তার সাথে হাজি সাহেবের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যানের জন্য মাসনুন দোয়া রয়েছে,সেগুলো আরবীতে না পারলে নিজের ভাষায় পড়ে সন্ধা হওয়ার আগ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে চোখের পানি পেলে দোয়া করতে হবে।হতে পারে হাজি সাহেব আর আসতে পারবেন না বা দেশেও ফিরে যেতে পারবেন না।কিন্তু বিশেষভাবে কোন দোয়া তৈরি করা বিদাআতি ধারনা।আরাফার দিন যদি জুমআর দিন পড়ে বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশের লোকেরা বলে 'আক্কবরি হজ্জ' আর তারা খুব খুশি হয়।তাদের জিজ্গেস করলে বলে আমাদের সৌভাগ্য আমরা হজে আক্কবরি পেয়েছি।এর ফযিলত জিজ্গেস করলে বলে এই দিনে ৭২ হজের নেকি পাবে আর এই ব্যাপারে মিথ্যা হাদিছ রয়েছে।এই বিদাআতটি হলো আক্কিদার বিদাআত।যেই আমলে বিদাআত আছে সেই আমলই বর্বাদ।যে আমলে শির্ক আছে তা অতীতের সব আমল ধবংস করে দিবে।আরাফায় আর একটি ভুল হলো সূর্য ডুবার আগে বের হওয়া।কিন্তু জাহেল হাজিদের জানা নেই যে সূর্য ডুবা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং এটি একটি ওয়াজিব।যারা আগে বেরিয়ে গেল তাদের দম(পশু জবাই) দিতে হবে তা না হলে হজ আসম্পুর্ন থাকবে।মুজদালিফায় মাশ'আরে হারামে বিদাআতি দোয়া পাঠ করা।এখানে অনেক হাজিরা এসে মাগরিব ঈশা না পড়ে পাথর কুড়াতে থাকে।রাসূল সা:মুজদালিফা থেকে পাথর কুড়িয়েছেন এর কোন প্রমান নেই।নবী সা: পাথর রাতে নেননি।তিনি নিয়েছেন সকাল বেলায় যা ইবনে মাজাহ ও নাসাঈতে রয়েছে।ইবনে আব্বাছ রা: বলেছেন কুরবানির দিন সকালবেলা নবী সা: আমাকে বললেন,আমার জন্য কয়েকটি কন্কর কুড়িয়ে নিয়ে আস।আর নবী সা: তখন চলা অবস্হায় ছিলেন।তাহলে বুঝা গেল মুজদালিফা থেকে পাথর কুড়ানো এবং রাতে কুড়ানো দু'টো-ই ভুল কাজ।বিদাআতিরা আর একটি কাজ করে তা হলো মুজদালিফায় রাত জাগে।নবী সা: এর সূন্নত হলো তিনি মুজদালিফায় এসে মাগরিব ঈশা পড়লেন জামাত করে।খাওয়া দাওয়া দরকার থাকলে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়া।ফযর পড়ে মাশয়ারিল হারামের কাছে বেশি বেশি দোয়া করা সূন্নত।আর একটি বিদাআত তারা করে তা হলো পাথর কুড়িয়ে ধৌত করে।জামারাতগুলোকে শয়তান মনে করে।এটি আক্কিদার বিদাআত।আর শয়তানকে যখন মারে তখন চোরের উপর যেভাবে চড়াও হয় সেভাবে তারা পাথর মারে। আসে পাশে কেউ আছে কিনা সে লক্ষ্য তাদের থাকে না।নবী সা: বলেছেন তোমরা বাড়াবাড়ি করো না।তোমাদের পূর্বের জাতিরা ধর্মের ক্ষেত্রে বাড়া বাড়ি করার জন্যই ধংস হয়েছে।' নবী সা: বার বার তাকিদ করেছেন তোমরা ছোট ছোট পাথর দিয়ে মার,বড় পাথর দিয়ে মেরো না যাতে অন্যের দাঁত ভেংগে যায়,কারো চোখ কানা হয়ে যায়।বুট বা চানার মত ছোট পাথর নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।অনেক হাজি কুরবানির ব্যাপারেও সন্দিহান।তারা ব্যাংকে টাকা দিয়েও দীর্ঘ দেরি করে পাথর মারতে যায়।আবার অনেকে মিনার বাইরেও জবাই করে।হাদি আনার উদ্দেশ্যই হলো মিনাতে জবাই করা।অন্য কোথাও জবাই করলে কুরবানি হবে না।কারন ইব্রাহিম আ: মিনায় কুরবানি করেছেন।মাথা মুন্ডানোর সময় ক্কিবালমুখি হতে হবে এমন বিদাআত রয়েছে আক্কিদায় আর তাদের বিশেষ দোয়া ও পড়তে দেখা যায়।হাজি ছাড়াও যারা মক্কা বা মদিনা যায় তারা বলে মক্কা মদিনায় ছুতরা'র দরকার নেই।এই বিদাআতি ফতুয়া আমাদের লোকেরা তো বলে, অনেক আরব বিদাআতিরাও বলে থাকে।এখানেও ছুতরা দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে যদি ছুতরা দেয়া সম্ভব হয়।নামাজ পড়ার সময় কোন পিলারের অবস্হানে নামাজ পড়া।আর যারা হাটাচলাফেরা করবে তারা দেখে চলবে।যেখানে কেউ নামাজ পড়বে তার সামনে দিয়ে না গিয়ে একটু ঘুরে যাবে।খুব জরুরি হলে যেতে পারে।যেমন পায়খানা পেশাবের বেগ বা অন্য কোন জরুরি হাজত থাকলে।সাধারন অবস্হায় ছুতরা লাগানো ফরয।এগুলো তারাই করে যাদের দীনের ছহি মাসলা-মাসায়েল জানে না।আমাদের দেশে অনেক জাহেল আছে যারা পায়ে পায়ে বা কাঁধে কাঁধে লাগিয়ে নামাজ পড়া পছন্দ করে না যার ফলে শয়তানকে সাথে নিয়ে নামাজ পড়ে।অথচ ছহি বোখারিতে আনাস রা: বর্ননা করেন, রাসূল সা: সাহাবাদের কদমের সাথে কদম , কাঁধের সাথে কাঁধ লাগাতে বলতেন।নবী সা: আরো বলেছেন,ছিদ্র বন্ধ কর ,শয়তাদের জন্য খালি যায়গা ছেড়ে রেখ না।' আর একটি আকিদা বিদাআত হাজি সাহেবরা করে মদিনা সফরের সময় যে, নবী সা: এর কবরের কাছে যাচ্ছি।এই নিয়াত করা বিদাআত।তাদের যা করা উচিত তা হলো আমি নবী সা: এর মসজিদে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। সেখানে এক রাকাতে সওয়াব এক হাজার রাকাতের।পন্চাশ হাজারের ব্যাপারে যে হাদিছ রয়েছে তা ছহি নয়।যারা এই হাদিসটি বর্ননা করে তারা ছহি ও জয়িফের ব্যাবধান বুঝে না।মক্কা হারামে ১ লাখ রাকাতের সওয়াব এবং বায়তুল মুক্কদেছে ৫শ রাকাতের সওয়াব যা ছহি হাদিসে বর্নিত হয়েছে।মদিনায় যারা নবী সা: এর মসজিদে পৌঁছে যাবে প্রথমে তাহিয়্যাতুল মসজিদ দু'রাকাত নামাজ পড়বে এবং পরে নবী সা:কে ও তার সাহাবিদের সালম পৌঁছিয়ে বেরিয়ে যাবে।যে কাজটি বিদাআতিরা করে তা হলো জান্নাতের টুকরো বলে নবী সা: এর পাশে সবুজ কার্পেটের যে যায়গাটি আছে তাতে দু'রাকাত নামাজ পড়া দোষনীয় নয় বরং সওয়াবের কাজ।কিন্তু তারা নামাজ পড়েই কবরের পাশে বসার জন্য চেষ্টা করে এবং অনেকে দীর্ঘ সময় বসে থাকে এই উদ্দেশ্যে যে ওখানে দোয়া করলে নবী সা: শুনবেন বা নবী সা: এর কাছ থেকে ফায়দা পাবে।আসহাবে সুফফাদের ঐ যায়গাটিতেও এই লোকদের দেখতে পাওয়া যায় মুযাবিরের মত বসে ধ্যান করে।শুনেছি বিভিন্ন দেশ থেকে এরা আসে যারা কবর পূজারি বিশেষ করে এরাই দীর্ঘ সময় কবর ঘেঁষে বসে থাকে। অনেকে যারা হজে আসে তাদের কাছে নবী সা:কে সালাম পৌঁছাবোর কথা বলে।আবার অনেকে চিঠি লিখে পাঠায় যা পত্র বাহকরা ওখানে পড়ে।এগুলো বড় শির্ক যাতে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যায়।আর একটি বিদাআত আছে যা আমাদের দেশের সাইখুল হাদিসরা করে থাকে।তাদের ছাত্ররা মদিনায় পড়াশুনা করে আর তাদের বলে আমার সালামটি রাসূল সা: এর কবরে পৌঁছে দিবে।কারো মাধ্যমে এই যে সালাম পৌঁছানো তা হলো বিদাআত।সূন্নত হলো নবী সা: এর কাছে সালাম পৌঁছানোর জন্য আল্লাহ পাক তার অসংখ্য ফেরস্তা নিযুক্ত করে রেখেছেন।নাসাঈতে হাদিছ বর্নিত হয়েছে যে,নিশ্চয় আল্লাহ পাকের অনেক ভ্রমনকারি ফেরেস্তা রয়েছে আমার উম্মতের সালামগুলো তারা পৌঁছে দেন।' তাহলে ফেরেস্তা রেখে মানুষের মাধ্যমে সালাম পৌঁছানোর কারন কি? কারন হলো অজ্গতা ও দীন সম্পর্কে না জানা।আমাদের দেশে যে হামদ ও নাত হয় তার বেশীর ভাগ বিদাআত।এক ধরনের বিদাআতি হুজুররা কোরআন ও ছহি হাদিস অনুশীলন না করার করানে এই মূর্খতা তাদের পেয়ে বসেছে এবং উম্মতকে বিদাআতি বানাচ্ছে।ছোটবেলায় আমরা অনেকে শুনেছি হুজুররা গানের সুরে বলে,'আমার সালাম পৌঁছে দিও নবী পাকের রওজায়।' এগুলো বিদাআতি হুজুরদের বানানো কথা।
নবী সা: এর সাহাবারা কত দূরে থেকেছেন কেউ কারো কাছে এরকম সালাম পৌঁছানোর কাজ করেননি।অনেকে মদিনা প্রবেশের জন্য গোসল করে থাকে যা বিদাআত।চটি বইগুলোতে মদিনা ঢুকার সময় খাছ দোয়া এগুলোও বিদাআত।নবী সা: এর মসজিদে এসে নামাজ না পড়ার আগেই যেয়ারত করা একটি বিদাআত।অনেকে দোয়ার সময় কবরকে সামনে করে দোয়া করে যা বিদাআত বরং শির্কেরও আশংকা রয়েছে।সালাম করার পরে দোয়া করতে হবে ক্কিবলামুখি হয়ে।যে কোন কবর জিয়ারতেই ক্কিবলামুখি হয়ে দোয়া করতে হয় এবং যা কিছু চাওয়ার আল্লাহর কাছে চাইতে হয়।কবরের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো- কবর বাসির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা এবং নিজের মৃত্যুকে স্মরন করা।কবরবাসির কাছে কিছু চাওয়া শির্ক কারন যে কবরে শুয়ে আছে সে নিজেও জানে না তাকে কখন কবর থেকে উঠানো হবে।সবচেয়ে ভাল মদিনায় গিয়ে মসজিদে দু'রাকাত নামাজ পড়ে রাসূল সা: ও তার সাহাবাদের সালাম দিয়ে মসজিদের অন্য যায়গায় গিয়ে নামাজ পড়া ও দোয়া করা। কোন ব্যাক্তির ওসিলা করে দোয়া করা বিদাআত।ওসিলা করতে হবে আমলের ও ঈমানের।কেউ ইচ্ছা করলে জীবিত ব্যাক্তির কাছে বলতে পারে দোয়া করার জন্য।সূরা কাহফে আল্লাহ তিনজনের কথা বর্ননা করেছেন, যখন তারা গুহায় ডুকেছিল একটি পাথর এসে পড়লো গুহা মুখে।তারা তাদের সৎ আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলো আর আল্লাহ পাক ধীরে ধীরে পাথর সরিয়ে দিলেন।তারা মাধ্যম বানিয়েছিল নিজ আমলকে।আমরা গুনাহ মাপের জন্য বা কোন হাযতের জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করতে পারি।ঈমাম বোখারি ছোট অবস্হায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।তার মাতা অনেক চেষ্টা করেও সারাতে পারলেন না।এর পর তিনি রাতে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতেন।একদিন তাকে স্বপ্নে দেখানো হলো তার ছেলের চোখ ভাল হয়ে গিয়েছে।সকালে উঠে দেখলেন সত্যিই তার ছেলে দেখতে পায়।সাথে সাথে তিনি শুকরানার দু'রাকাত নামাজ পড়লেন।আজকে আমরা আল্লাহর কাছে সেজদা না দিয়ে পিরের কাছে দৌড়ে যাই।এ জেহালত মুসলিম উম্মায় এখন কানায় কানায় পরিপূর্ন।আল্লাহ পাক সূরা আল-ইমরানের ১৬ আয়াতে বলেন,'আমাদের প্রভু! আমরা ঈমান এনেছি অতএব আমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দাও।'শির্কের চোরা রাস্তা হলো কাউকে ওসিলা বানানো।কবর ,মাজার ও পির পূজা এভাবে শুরু হয়েছে।বিদাআতি আক্কিদা হলো রাসূল সা: এর কবরের কাছে এসে দোয়া কবুল হয়।এই জন্যই রিয়াজুল জান্নাতের কাছে ভীড় করে থাকে অনেক মানুষ।দোয়া যে কোন যায়গা থেকেই কবুল হবে যদি কোন বাধা না থাকে।যদি ইবাদতে শির্ক , বিদাআত,হারাম খাওয়া না থাকে ,হারাম লেবাছ না থাকে,দোআতে যদি সীমালংঘন না থাকে তাহলে ইনশাআল্লাহ দোআ কবুল হবে।আমাদের দোআ কবুল না হওয়ার কারন আমরা খুঁজলেই পেয়ে যাব।প্রতিটি ঘরেই এখন হারাম জীবন যাপন চলছে।টেলিভিশন,মোবাইল,ইন্টারনেট,ফেসবুক,টুইটার , ভিডিও ভিসিপিতে যেভাবে ঘরে অশ্লীলতা চলছে আর আমরা নামাজ পড়ে বলছি কেন দোয়া কবুল হচ্ছে না? আমরা আমাদের উত্তর একটু খুঁজেলেই পেয়ে যাব।তবে দোআর ব্যাপারে বিরক্ত হলে চলবেনা।নিজের গুনাহগুলোকে বন্ধ করে নেক আমলের দিকে যেতে হবে আর আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।নেক আমলের মাধ্যমে গুনাহ ধংস হয়ে যায়।কবর পাকা করার বিদাআত যদি না হতো তাহলে কখনো সেখানে সেজদা হতো না।আজকে গ্রামে গন্জে প্রতিটি বাড়ির কবরস্হানে অজ্গলোকগুলোর কাছে যখনই টাকা আসে তখন তারা কবর পাকা করে।মসজিদের পাশে এ সব কবরস্হানে যারা কবর পাকা করে হক্কানি আলেমদের কাজ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।ছুপিরা কবরের কাছে বসে মুরাক্কাবা করে অর্থাৎ চোখ বন্ধ করে ধ্যান করে।এগুলো বিদাআতি ত্বরিকা।কবরের পাশে বসে কুরআন পাঠ করা,ঝিকির করা ,ফুল দেয়া এসব বিদাআতি কাজ। বিদাআতিদের আর একটি লক্ষন হলো মদিনায় গেলে যতদিনই থাকুক প্রত্যেক নামাজের পর যেয়ারত করা।মদিনায় ৮দিন থাকলে যতবার ইচ্ছা ততবার যিয়ারত করা।আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর যখন বাইরে থেকে আসতেন একবার নবী সা: এর কবরে সালাম দিতেন ,'আস্সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ ,আস্সালামুআলাইকা ইয়া খালিফাতা রাসূলিল্লাহ,আস্সালামুআলাইকা ইয়া আবাতা।' তার বাবার কবরের কাছে এসে বলতেন হে আব্বা আপনার উপর সালাম হউক।হাজি সাহেবদের মদিনার আর একটি বিদাআত ৪০ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেই হবে।এটি একটি জয়িফ হাদিস যা রাসূল সা: থেকে প্রমানিত নয়।মদিনার হেফাযতের জন্য সাহাবারা বদর করেছেন , ওহুদ করেছেন,খন্দক করেছেন কিন্তু আমি বা আপনি এগুলো ইসলামের প্রয়োজনে করতে সমর্থ কিনা? আমরা তো ৫ ওয়াক্ত নামাজই ঠিকমত আদায় করিনা।ক'জন আছি যে প্রতিনিয়ত তাহাজ্জুদ গুজার করি।আমাদের যদি বলা হয় ১/২ লাখ টাকা বেতন থেকে ৫ হাজার টাকা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করুন এইরকম ঈমান আমাদের আছে কিনা? আর মক্কা বা মদিনায় চুম্বন দিয়ে অনেক মহব্বত করতে চায়।এগুলো হলো মোনাপেকি আচরন।এই সব মিষ্টি সূন্নত পালন হলো মিষ্টি বিদাআত।
আরো কিছু নতুন কাজ থেকে হাজি সাহেবদের বিরত থাকা উচিত যা অনেকে করে থাকে।ইহরাম অবস্হায় ভ্রমনে যখন বের হলেন হাজি সাহেবগন দুনিয়ার গল্প করতে থাকেন।অনেকে কনফারেন্স কলও করেন।আপনি আল্লাহর মেহমান হয়ে বের হয়েছেন।ইহরামের কাপড় পরার অর্থ হলো আপনার দৈনন্দিন পোষাক,সমস্ত নাপাকি, পাহেশা কাজ ও চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে এক আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছার চেষ্টা করছেন।অনেকে কাফেলায় বের হয়ে পুরুষ মহিলা মিলে খোশ গল্পও করেন।মক্কা এসে ওমরার পর ওমরা করতে থাকেন।রাসূল সা: এই রাস্তা কি খুলেছিলেন উম্মতের জন? তিনি জীবনে চার বার ওমরা ও একবার হজ্জ করেছেন এবং প্রতিটি ওমরাহই করেছেন জ্বিলক্কদ মাসে এবং এক ভ্রমনে একবারই ওমরাহ করেছেন।সুতরাং হাজি সাহেগনের কাজ রাসূল সা: কে অনুসরন করা।তামাত্তু হজ্জ হলে মিকাত থেকে ওমরার নিয়াত করে হক্ক আদায়ের সাথে ওমরাহ করে হালাল হয়ে যাবেন এবং ৮ তারিকে আবার হজের নিয়াত করে মিনার উদ্দেশ্যে হজে বের হবেন।আর কিরানের হাজিরা হজ ও ওমরার নিয়াত একসাথে করে হজ পালন করবেন এবং ইফরাদের হাজিরা শুধু হজের নিয়াত করে হজ করবেন।রাসূল সা: এর আদর্শ মেনে হজ করলেই কল্যান।বাকি সময় হাজি সাহেবগন তাওয়াফ ,নামাজ ও তাছবিহ তাহলিলে ব্যাস্ত থাকবেন।স্বাস্হকে হজের দিন গুলোর জন্য ঠিক রাখবেন যেন সুন্দরভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন।ইদানিং অনেকে হজে এসে সৌদি আরব ঘুরতে থাকে আত্মীয়দের সাথে।বিভিন্ন সমুদ্রতীর গুলোতে বনভোজনের নামে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যোগ দেন যেখানে ইসলামিক কাজ কর্মের কোন বালাই নেই।হাজি সাহেব গনের ভাবতে হবে, আমরা এত কষ্ট করে আল্লাহর মেহমান হয়ে এসেছি,সম্ভবমত মক্কা মদিনায় থেকে নিজের জীবনের গুনাহ মাপের জন্য ইবাদতে মশগুল থেকে তাক্কোয়া অবলম্বন করে সময় পার করাই আমাদের জন্য শ্রেয়।মক্কা ও মদিনায় যে সব কল্যান রয়েছে তা জীবনের শেষদিন পর্যন্ত পাথেয় হিসেবে নেয়ার বাসনা তৈরি করা।হাজি সাহেবদের আর একটি বিশেষ বিষয় যা তারা নিতে ব্যার্থ হন তা হলো রাসূল সা: এর বিদায় হজের ভাষন।সর্বকালের সর্বশ্রেষঠ ভাষন যা হাজি সাহেবদের জীবন সংগী হিসেবে নিয়ে মানুষের কাছে প্রচার করার কথা।২% হাজি সাহেবগন দেশে গিয়ে এ বিষয়গুলোর প্রচার সম্প্রচার করেন কিনা সন্দেহ আছে।সারা পৃথিবীতে আজ ১৬০ কোটি মুসলমান আজ নির্যাতিত।কাফের মুশরিকরা যেভাবে তারা একত্রিত হয়ে মুসলিম অন্চলগুলোতে আজ ঝাঁপিয়ে পড়ছে ও রক্তাক্ত করছে,মুসলিমরা আজ তার বিপরীত মুখি অবস্হানে দ্বিধাবিভক্ত ও অন্তর্কলহে লিপ্ত।মুসলিম দেশগুলোতে আজ শির্ক ও বিদাআত পরিপূর্ন। এই হজের মাঠে সাদা একটি পোষাকে মুসলিমকে স্মরন করিয়ে দেয় আমরা একটি উম্মাহ কিন্তু বর্তমানমুসলমানরা ঈমানের দিক থেকে খুবই দুর্বল।মুখে তারা তালবিয়া পড়ছে কিন্তু তাদের হলকুমের নিছে তা নামছে না।তেমনি কোরাআন ও হাদিছ পড়ছে কিন্তু হলকুমের নিছে নামছে না।মুসলিম বিশ্বের নেতারা আজ যদি একত্রিত হয়ে হুন্কার দেয় যে আমরা মুসলমানরা একটিই জাতি তাহলে কোন শক্তিই তাদের দমাতে সক্ষম নয়।কিন্তু সমস্যা হলো সেখানে মুসলমান আজ সম্পদ ও আরাম আয়েশের কাছে মাথা নত করে দিয়েছে যার কারনে ইসলাম তাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে আর ইহুদি- খৃষ্ঠান ও মুনাফেকরা তাদের তাবেদার সম্প্রদায়কে মুসলমানের ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে দূর থেকে নিয়ন্ত্রন করছে।এখন তাদের মুসলমানের কাছে আসার দরকার নেই।মুসলমানদের ভিতর মুনাপেকরাই তাদের শায়েস্তা করার জন্য যথেষ্ট।আল্লাহ সমস্ত মুসলিমদের বুঝার তাওফিক দিন।যাদের হজের জন্য কবুল করবেন তাদের বাকি জীবন রাসূল সা; এর সুন্নাহ মোতাবেক চলার তাওফিক দিন। আমিন-
বিষয়: বিবিধ
২৪৮৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন