রজব মাসে কি আসলে রাসূল সা: মে'রাজ গমন করেছিলেন? যে জন্য বিদা'আতিরা এ মাসকে ইবাদতের মাস বানিয়েছে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১০ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:২৪:৫১ দুপুর
পরম করুনাময় আল্লাহর নামে যিনি পরম দাতা ও দয়ালু।
মে'রাজ কাকে বলে,কখন সংঘঠিত হয় এবং এ থেকে মানবজাতির জন্য শিক্ষনীয় কি? বিশেষ করে মুসলিম জাতির মধ্যে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের ইবাদত দেখতে পাওয়া যায়, যার সাথে আলকুরআন ও ছহি সূন্নাহের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।মে'রাজ এবং ইসরা এই দু'টি শব্দ আমরা দেখতে পাই।ইসরা হলো রাত্রিকালীন ভ্রমন।রাসূল সা: জিবরিল আমিনের সাথে বাইতুল্লাহ হারাম থেকে মসজিদুল আক্কসা পর্যন্ত রাত্রীকালিন যে ভ্রমন করেছিলেন এটাকেই বলা হয় ইসরা।যার নামে নামকরন হয়েছে ১১৪ টি সূরার মধ্যে একটি সূরা, সূরা ইসরা বা বনীসরাইল নামে পরিচিত।এই প্রথম আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,'সকল মহিমা তাঁর যিনি তাঁর বান্দাকে ভ্রমন করিয়েছিলেন পবিত্র মসজিদ থেকে দূরবর্তি মসজিদে-যার পরিবেশ আমরা মংগলময় করেছিলাম যেন আমরা তাকে দেখাতে পারি আমাদের কিছু নিদর্শন।নি:সন্দেহে তিনি স্বয়ং সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।'অর্থাৎ বায়তুল্লাহ আল হারাম থেকে নবী সা:কে রাত্রির একটা অংশে বায়তুল মোক্কদেছ যা ফিলিস্তিনে অবস্হিত তা পর্যন্ত ভ্রমন করিয়েছিলেন। বায়তুল মোক্কদেছের চতুর্পাশে আল্লাহ পাক দ্বীন ও দুনিয়ার বরকত দিয়ে পূর্নতা দান করিয়েছিলেন।এর মাধ্যমে তাঁর হাবিব মোহাম্মদ সা:কে কিছু নিদর্শন দেখিয়েছিলেন।মে'রাজকে বলা হয় উপরে উঠার মাধ্যম।বিভিন্ন ভাবে উপরে উঠা যায়।যেমন আমরা ছোট ছোট কাজের জন্য মই ব্যাবহার করি।আরো একটু উন্নত হলে লিফ্ট এর ব্যাবহার করি।এখন বিদ্যুতের শিঁড়িও ব্যাবহার হয়ে থাকে।বায়তুল মোক্কদেছ থেকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত যে ভ্রমনটা হয়েছিল একে বলা হয় মে'রাজ।তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম রাসূল সা: মক্কা হারাম থেকে বোরাকে চড়ে জিবরিল আমিনের সাথে বায়তুল মোক্কদেছ যাওয়াকে ইসরা বলে।আর বায়তুল মোক্কদেছ থেকে উর্ধজগতে যে ভ্রমন তা হলো মে'রাজ।এর দুটি অংশ - একটা হলো জমিনের সাথে সম্পৃক্ত আর একটি উপরের সাথে সম্পৃক্ত। প্রকৃতপক্ষে এই সফরটি কখন হয়েছিল আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন।আমাদের অনেকেই জানি আরবি রজব(অষ্টম) মাসে মে'রাজ সংঘঠিত হয়েছিল।এর ফলশ্রুতিতে আমাদের দেশে বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা সভা,মিলাদ মাহফিল,বিভিন্ন ধরনের আলোচনা পর্যালোচনা,সেমিনার,সরকারি ছুটি ইত্যাদি করা হয়ে থাকে।আসলে কি এই মে'রাজ সুনির্দিষ্ট কোন দিনে,কোন নির্দিষ্ট সময়ে,কোন মাসে,কোন বছরে হয়েছে কিনা? এই ব্যাপারে অনেকগুলো(১৫টি) মতামত রয়েছে। এতগুলো মতপার্থক্যের অর্থ হলো এর কোন ফায়সালা আলকুরআন ও হাদিসে নেই।যদি আলকোরআন ও ছহি হাদিসে থাকতো তাহলে দ্বিমতের প্রশ্ন আসতো না।যারা সীরাত রচনা করেছেন কোরআন হাদিসের আলোকে কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা তাদের জ্গানের বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।ঈমাম তাবারি (র) বলেছেন নবুওতের প্রথম বছরে মে'রাজ হয়েছে।ঈমাম নববী ও ঈমাম কুরতবী নবুওতের পন্চম বছরের কথা বলেছেন।তাঁরা বড় বড় ঈমাম ছিলেন কিন্তু কোন দলিল ছিল না কোরআন ও হাদিস থেকে।তাঁরা তাদের গবেষনালব্ধ অনুমান থেকে একটা সম্ভাব্য সিদ্ধান্তে এসেছিলেন।আল্লামা মানছুর (র) তিনি বলেছেন নবুওতের দশম বছর ২৭শে রজব মে'রাজ হয়েছিল।তিনিও কোরআন হাদিসের কোন দলিল উপস্হাপন করতে পারেননি।নবুওতের প্রথম ,পন্চম বা দশম বছরের ২৭ তারিখে মে'রাজ হয় নি।এর দলিল বর্তমান আছে।দলিলটি হলো- আমরা সবাই জানি নামাজ সাব্যস্ত হয়েছিল মে'রাজের রাত্রিতে যা সমস্ত সিরাতে বর্তমান। আর একিট ব্যাপারে সবাই একমত মা খাদিজাতুল ক্কুবরা রা: নামাজ ফরয হওয়ার আগেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন এবং তিনি ইন্তেকাল করেছেন নবুওতের দশম বছরের রমজান মাসে।তাহলে যদি নবুওতের দশম বছরে রজব মাসে মে'রাজ হয়ে থাকতো তাহলে নামাজ ফরয হয়েছে আর নামাজ ফরয পেয়েই মারা যেতেন খাদিজা রা:। কিন্তু আমরা জানলাম তিনি নামাজ ফরয হওয়ার আগেই মারা গেলেন কারন রজবের পর শা'বান ও তার পরের মাস রমযান।রজব মাসের ২৭ তারিখ নিয়ে যে বাড়াবাড়ি তার অন্য কোন কারন রয়েছে।এই মাসেই কেন টেনে হেঁচড়ে মে'রাজকে নিয়ে আসার এত তোড়জোড় যেখানে কোরআন ও হাদিসের কোন নির্দেশ নেই।আল্লাহ বলেন নি ,রাসূল সা: বলেননি,কোন সাহাবায়েকরাম বলেন নি এমনকি কোন সাহাবা রাসূল সা:কে জিজ্গাসাও করেন নি কবে,কোন মাসে,কোন তারিখে অথচ আমরা উম্মাহর লোকরা কেন এই মাস বা তারিখে মে'রাজ পালন করার জন্য ব্যাস্ত।এই প্রশ্নটা উম্মাহকে খুঁজতে হবে যদি তাদের ছহি ইবাদত করতে হয়।
আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে মোটামুটি নিশ্চিত হলাম যে নবুওতের প্রথম।পন্চম বা দশম বছরে মে'রাজ হয় নি।আবার কেউ বলেছেন হিজরতের আঠার মাস আগে,ষোল মাস আগে,চৌদ্দ মাস আগে,বার মাস আগে,এগার মাস আগে,আট মাস আগে,আবার কেউ বলছেন হিজরতের ছয় মাস আগে মে'রাজ হয়েছে।মাস নিয়েও বিভিন্ন মতামত রয়েছে।এ থেকে আমরা বুঝলাম আল্লাহ বা রাসূল সা: আমাদের কোন দিন তারিখ জানিয়ে দেন নি।আমাদের কল্যান ও মংগল আল্লাহ পাক ও রাসূল সা: এর চেয়ে বেশি অন্যে কি চাইতে পারে? আমাদের উপমহাদেশে যে সব পীরতন্ত্র ও কান্ডারি ভান্ডারিরা রয়েছে তারাতো তাদের নিজেদের পেট পূজার জন্যই খানকা বানিয়ে নিয়েছে।তারা আসল লেবেলটা নকলের উপরে ছাপিয়ে সাময়িক ফায়দা লুটছে আর বোকার দলগুলো তাদের কাছে লুটিয়ে পড়ছে।আবার অনেক চালাক চতুর মানুষও নিজেদের অজ্গতার কারনে তাদের ফাঁদে পড়ে যায়।এই মে'রাজ হিজরতের আগেই হয়েছিল তবে কতদিন আগে হয়েছে তা বলা কঠিন।রাসূল সা: এর নবুওতি জীবনের দুটো অংশ-একটি মাক্কি জীবন(১৩ বছর) ও আর একটি মাদানি জীবন(১০ বছর)।মক্কার জীবনেই এই ঘটনা ঘটেছিল।ইসলামের দুশমন হলো দুই প্রকার।একটা জাতীয়(মুসলিমদের ভিতর) আর একটি বিজাতীয়(ইহুদি,খৃষ্টান,হিন্দু,বৌদ্ধ,আস্তিক-নাস্তিক,মার্কসবাদি,পূঁজিবাদি ইত্যাদি---)।জাতীয় দুশমনদের এরা ঈমানদারদের মত নামাজ পড়ে,যাকাত দেয় , রোজা রাখে,হজ্জ করে আরো অন্যান্য কাজ করে কিন্তু সুযুগ পেলে ইসলামকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং এরা হলো বিজাতীয়দের এজেন্ট।এই জাতীয় দুশমনের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক দুশমন হলো যারা মোহাব্বতের দোহাই দিয়ে মুসলমান প্রমান করতে চায়।একটা গ্রুফ হলো আহলে বাইতের মহব্বত যারা শিয়া রাফেযি আর একটা হলো ওয়ালিদের মহব্বত যাকে বলে ছুপি।ইহুদি ও খৃষ্টান থেকে জন্ম হলো শিয়া রেফেযিদের আর শিয়া রাফেযিদের থেকে জন্ম হলো ছুপিবাদের।অর্থাৎ বিজাতীয় দুশমন থেকে প্রডাক্শন করে মুসলিমদের ঘরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।ঘরের মানুষ যদি চোর হয় তাহলে নিজের সিন্দুকে যত মজবুত তালাই লাগানো হোক তা ভেংগে চুরি করবেই।বাড়ির মানুষ যদি চোরকে সহযোগিতা করে সেই ঘর খালি হতে বাধ্য।এরাই ইসলামের নামে দিন রাত কাজ করে দেখাচ্ছে আমরা ইসলামের খাদেম।যারা আহলে বাইতের মহব্বতের দাবিদার তাদের বিভিন্ন গ্রুফ রয়েছে তবে তাদের সংখ্যা কম।শির্ক আর কুফরের যত সাপ্লাই এরাই দিয়ে থাকে।আর এদের কর্মকান্ড ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য ছুপিবাদ হলো বড় হাতিয়ার।
রজব মাসে শুধু মে'রাজ নয় আরো অনেক এবাদতের পসরা তারা সাজায়।এই রজবে রোজা রাখা,বিশেষ নামাজ পড়া,ওমরা রজবিয়া( এ মাসে ইরানিরা মক্কায় এসে ভিড় করে),মে'রাজ নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা,আনন্দ ফূর্তি করা,এ মাসকে সওয়াবের মাস মনে করে এবাদত করা।আরবি বার মাসের মধ্যে চারটি হারাম মাস আছে তার মধ্যে রজব একটি।এই মাসগুলোতে যুদ্ধবিগ্রহ করা হারাম এমনকি জাহেলিয়াতেও এই মাসগুলোকে চরম সম্মান করা হতো।রজব মাস আসলে তাদের যত বর্শা ও বল্লম ও তীরের লোহাগুলো তারা খুলে রেখে দিত।রজব মাসকে কেন্দ্র করে কোন এবাদত কোরআন ও হাদিসে কোথাও নেই।তার পরও কেন এতকিছু করা হয়? কারন হলো আহলে বাইতের ধজাধারিরা মনে করে ৫ বা ৭ জন বাদ দিয়ে সবাই কাফের।আলি,ফাতেমা,হাছান,হোছাইন,আবুজরগিফারি,মেকদাদ ইবনে আসোয়াদ,আম্মার এরা ছাড়া বাকি সবাই কাফের তাদের মতে।খোম নামক যায়গা যেখান থেকে তারা একটি জাল হাদিস রচনা করেছে এভাবে,আল্লাহর নবী সা: মাক্কামে খোমে বিদায় হজ্জ থেকে ফেরত আসার সময় সাহাবিদের একত্র করে বিশেষ করে আবু বকর ও ওমর কে ডেকে বললেন আমার পরে ঈমাম হবে আলি।আল্লাহর নবী সা: যখন মরে গলেন তখন তাঁর কথা অমান্য করে এরা সব কাফের হয়ে গেল।'(নাউজুবিল্লাহ) আবু বকর , ওমর ফারুক রা: এর খেলাফতের কথা স্বয়ং আলি রা: এর মাধ্যমে ওদের বই পুস্তকে আজো লিখা আছে।আমাদের মুসলমানদের ঘরে ঘরে কোরআন ও ছহি সূন্নাহ বাদ দিয়ে মুকছুদুল মু'মিনিন,বেহেস্তি জেওর,খোয়াব নামা আরো কত কি অনুশীলন করছে যেখানে রয়েছে শির্ক ও বিদাআত।মুসলমানদের ঘর খুঁজলে কোন ভাল তাফছির নেই এমনকি মসজিদগুলোতেও নেই আর বিদাআতি ওলামা দিয়ে চলে অধিকাংশ মসজিদ।মুল কিতাব ছেড়ে দিয়ে এখন হুজুরদের স্মরানাপন্য হচ্ছে মানুষ।ঠিক অন্য ধর্মেও ধর্মযাযক ও ঠাকুরদের কাছে মানুষ তাদের মাথা বিক্রয় করে দিয়েছে।আল্লাহ পাক এই কোরআনকে নবী সা: এর উপর নাজিল করে সূরা আল হিজরের ৯ আয়াতে বলেছেন,' নি:সন্দেহে আমরা নিজেই স্মারকগ্রন্থ অবতরন করেছি আর আমরাই এর সংরক্ষন কারি।' এই গ্রন্থের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন কারো পক্ষে করা সম্ভব নয়।আহলেবাইতের মিথ্যা দাবিদারদের বড় তাগুত তাদের মতে হলো আবুবকর রা: (নাউজুবিল্লাহ) যার মর্যাদা নবী রাসূলদের পর।আমাদের দেশে আহলে সূন্নাহ আল জামাতের বড় বড় হুজুররাও এদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিদাআতি বই লিখেছে।খোমেনি যখন ইরানে শয়তানের বিপ্লব করলো তখন আমাদের দেশের এ কাতারের বড় বড় দার্শনিক ও হুজুররা যাদের সাথে ছুপিবাদের লেজ বাঁধা আছে তারা গিয়ে এই খোমেনিকে অভিবাদন জানিয়েছে।আজো তাদের জাতীয় দিবস পালনের সময় এ সব হুজুররা সেখানে অংশগ্রহন করে।এই রজব মাসের ২২ তারিখে মারা গিয়েছিলেন মোয়াবিয়া রা: যিনি মুসলিম জাতির ২০ বছর কর্নধারের দায়িত্ব অত্যন্ত সুচারুরুপে পালন করেছিলেন বড় আকারে ইসলামের কাজ আগে বা পরে কেউ করেন নি।রজব মাসে তার মৃত্যুর কারনে তারা তাই এক উৎসবের আয়োজন করেছে।এই মাসে তারা মে'রাজ ,ওমরাহ সেট করে দিয়েছে।আল্লাহর নবী সা: সবগুলো ওমরাহ জুলক্কাদাতে করেছিলেন আর আমাদের অনেক হুজুররা বলে জুলক্কাদাতে ওমরাহ করা হারাম। এই পথভ্রষ্ট হুজুরদের বলতে চাই রাসূল সা: হলেন আমাদের আদর্শ।তিনি যদি সবগুলো ওমরাহ জুলক্কদাতে করেন তাহলে আমাদের রজবে করার কারন কি? কারন হলো এরা শয়তানের তাবেদার ও ইসলামের শক্রুদের সাথে হাত মিলিয়ে ইবাদত করছে।তারা উৎসব করে এইজন্য যে এই মাসে তাদের মতে একজন তাগুত মারা গিয়েছে আর তিনি হলে মোয়াবিয়া রা: (নাউজুবিল্লাহ)।তারা একটি বই লিখেছে মে'রাজ ইবনে আব্বাছ যেখানে রয়েছে কিস্সা কাহিনী,শির্ক কুফর ও কুসংস্কারে ভরা।আমাদের দেশের হুজুররা এগুলো পড়ে এ মাসে জ্বলছা করে থাকে।৩০ জন সাহাবির হাদিসের বর্ননা দিয়ে যেখানে এই ঘটনা সাব্যস্ত সেখানে মিথ্যা রচনা করে কারা,যাদের জীবনে ইসলামের অস্তিত্ব নাই তারাই করতে পারে।
মে'রাজের দিন তারিখ সম্পর্কে যদি কোন কল্যান থাকতো তাহলে আল্লাহ আমাদের জানাতেন বা রাসূল সা: ও জানাতেন।রাসূল সা: বলেন,প্রতিটি নবীর দায়িত্ব হলো তার উম্মতের জন্য সমস্ত কল্যান বলে দিয়ে তা করার জন্য উৎসাহিত করা আর যত অনিষ্ট ও ক্ষতিকর তা জানিয়ে তাদের সেগুলো থেকে বিরত রাখা।রাসূল সা: তাঁর দায়িত্ব নবুওতের ২৩ বছর অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন।যার উপর ঘটনা ঘটেছে তিনি জানলেন না উম্মাহ জানলো কি করে? রজবের প্রথম জুমাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়লে সব গুনাহ মাপ হয়ে যাবে,রোজা রাখলে ৬০ মাসের রোজা রাখা হয়ে যাবে আরো কত সওয়াব অর্জন এ মাসে ইত্যাদি করে উম্মাহকে গোমরাহ করার হাতিয়ার তারা বানানোর ব্যাবস্হা করেছে।সুতরাং মে'রাজ সম্পর্কে আমাদের কাছে দিন ক্ষনের কোন প্রমান নেই।যারা এই মাসকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে তাদের পরিনাম নিশ্চিত জাহান্নাম।এই জাহান্নামের পথ থেকে দূরে থাকার জন্য প্রতিটি মুসলিমের উচিত দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা।আমাদের জানা উচিত এ মে'রাজ কেন হয়েছিল? এর মাধ্যমে আল্লাহ পাক রাসূল সা:কে শান্তনা দিলেন।রাসূল সা: মায়ের পেটে থাকতেই পিতাকে হারান।শিশু অবস্হায় মা'কে হারান।দাদার কাছে গিয়ে তাকেও হারান।চাচাও নবুওতের দশম সালে মারা গেলেন।বাড়িতে যিনি শান্তনা দিতেন নিজের প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজা যিনি তার সব কিছু উজাড় করে দিয়েছিলেন দ্বীনের কাজে তিনিও দশম সালের রমজান মাসে মারা গেলেন।মক্কার জীবনে তার সবচেয়ে কষ্ট ছিল তার দাওয়াত গ্রহন না করলে আর সবেচেয়ে খুশি ছিল তার দাওয়াত গ্রহন করলে।বিশেষ করে এই দুইজনের ইন্তেকালের পর রাসূল সা: এর মক্কার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল।এই চরম অবস্হায় চলে গেলেন তাইপে কিন্তু তাঁকে বরন করতে হলো চরম অত্যাচার।পাথর মেরে তারা রক্তে জর্জরিত করলো আর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন।ফেরেস্তারা বললো , বলুন আমরা তাদের দুই পাহাড় দিয়ে পিষে দেই কিন্তু দয়ার নবী সা: তাদের ভবিষ্যত বংশধরদের কথা বললেন যারা দ্বীনে দাখেল হবে।তিনি হজ্জের মৌসুমে হাজ্জিদের,বাজারে বাজারে দাওয়াত দিতেন কিন্তু তারা বলতো মোহাম্মদের কথা কেউ শুনবে না , সে একজন যাদুকর ইত্যাদি।এদিকে হিজরত ঘনিয়ে আসছে।আল্লাহ পাক চাইলেন তার এই নবীর সমস্ত দু:খ দুর্দশা লাঘব করবেন।এই পৃথিবীর মানুষ প্রত্যাক্ষান করলেও কিন্তু তার সৃষ্টিকর্তা তাকে প্রত্যাক্ষান করেননি।তাই আল্লাহ তাঁর হাবিবকে উর্ধজগতে ভ্রমন করানোর ব্যাবস্হা করলেন।নবী রাসূলদের প্রত্যেককে আল্লাহ পাক মোজেজা দান করেছেন।সবচেয়ে বেশি মোজেজা দান করেছেন নবী মোহাম্মদ সা:কে।তাঁর মোজেজার সংখ্যা ১০০০ এর অধিক ছিল।তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মোজেজা আল কোরআন।আজ পর্যন্ত এই কোরআনের মত করে কোন আয়াত বা সূরা কেউ তৈরি করতে সমর্থ হয় নি।তিনি যে সত্য নবী এটাই তার প্রমান।মোজেজা বলা হয় এর মত করে কেউ কিছু বানাতে অসমর্থ।কারামত যেটা সেটা মু'মিন বান্দাদের জন্য।আমাদের মনে রাখতে প্রতিটি মু'মিন আল্লাহর ওয়ালি।আল্লাহর ওয়ালি হওয়ার জন্য খানকা,জটা,পীরের ত্বরিকা ধরতে হয় না।এগুলো সব ভ্রান্ত মতবাদ ও শয়তানের ওয়ালিদের কাজ।আল্লাহ পাক তার নবী মোহাম্মদ সা:কে একটা অকাট্য দলীল পেশ করার জন্য মে'রাজের মত এই মোজেজা দান করেছেন।রাসূল সা: ওহির মাধ্যমে জান্নাত , জাহান্নামের খবর জানতে পেরেছেন।দেখা আর শুনার মধ্যে অনেক ব্যাবধান রয়েছে।আল্লাহ পাক তার রাসূলের জ্গানের ভান্ডার বাড়িয়ে দেয়ার জন্য ও এক্কিনকে আরো মজবুত করার জন্য এ ব্যাবস্হা করলেন।মক্কার জীবনে অনেক কষ্ট,ঘাত প্রতিঘাত ছিল বটে কিন্তু মদিনার জীবনে এই ঘাত প্রতিঘাত আরো প্রবল হতে পারে বিধায় আরো শক্তিশালি করার জন্য এই মে'রাজের দাওয়াত দিয়েছিলেন।বিশেষ করে শারিরিক ও মানুষিকভাবে শক্তিশালি করার জন্যই মে'রাজের ব্যাবস্হা করেন যা নিজের চোখে দেখে তিনি অতীতের সব দু:খ কষ্ট ভুলে যেতে পারেন।কোন কোন বর্ননায় পাওয়া যায় শশরীরে উর্ধলোকে যাওয়ার আগে স্বপ্নে নবী সা: এর মে'রাজ হয়েছিল।আল্লাহর নবী সা: বলেন,আমি হাতিমে(ক্কাবার পাশে ঘেরা অংশ)ঘুমন্ত অবস্হায় ছিলাম।অন্য বর্ননায় উম্মেহানির ঘরে থাকার কথাও বর্নীত হয়েছে।জিবরিল আমিন সেখান থেকে যমযম কূফের কাছে নিয়ে আসলেন ও সিনাটা খুলে ধৌত করে দিলেন যমযমের পানি দিয়ে এবং ঈমান ও হিক্কমা দিয়ে পরিপূর্ন করে সেলাই করে দিলেন। অধিকাংশ উলামাদের কাছে এই হার্ট অপারেশন দুইবার হয়েছিল বলে জানা যায়।একবার মা হালিমার ঘরে যখন দুধ পান করতেন তখন হয়েছিল।মানুষের ভিতরে শয়তানের একটি কাল অংশ আছে এই অংশটাকে কেটে বের করে নেয়া হয়েছিল যাতে করে শয়তান কোনভাবে প্রভাব বিস্তার না করতে পারে।আর একবার মে'রাজে যাওয়ার প্রাক্কালে।এ ছাড়াও আর একবারের কথা পাওয়া যায় যখন প্রথম ওহি এসেছিল।একজন মু'মিন মুসলমানের জন্য ঈমান ও হিক্কমা থাকা আবশ্যক আর নবী রাসূলদের জন্য এ দুটো জিনিস আরো বেশী জরুরি।যাকে হিক্কমত দেয়া হলো তাকে কল্যানের অনেক কিছু দেয়া হয়েছে।রাসুল সা: আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছের জন্য এই বলে দোয়া করেছিলেন,'একে আল্লাহর দ্বীনের হিক্কমত দাও।এর পর বোরাক(খচ্চরের চেয়ে বড়) নিয়ে আসা হলো। ঘোড়া ও গাধার মিলনের ফলে খচ্চর হয়। বোরাক হলো উজ্জল ও দ্রুত গতি সম্পন্ন।ছহি বোখারিতে এসেছে বোরাক যতদূর দেখতে পায় সেটাই হলো তার একটি পদক্ষেপ।নবী সা: বোরাকে উঠলেন।আল্লাহর হাবিব মেহমান হিসেবে ছিলেন স্পেশাল,বোরাক সর্বশ্রষ্ঠ জানবাহন,চালক ফেরেস্তা জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ।আল্লাহ পাক তার হাবিবের জন্য সবকিছু উ্ত্তম ব্যাবস্হা করলেন।মক্কা থেকে বায়তুল মক্কদেছ যাওয়ার রাস্তা হলো এক মাস সময়ের।বায়তুল মক্কদেছের সামনে একটি পাথর ছিল ছিদ্র করা সেখানে বোরাককে বেঁধে রাখা হয়েছিল।এখানে সমস্ত নবীদের ইমামতি করে দুই রাকাত নামাজ পড়েছিলেন।এখানে প্রমান হলো সমস্ত নবী রাসূলের প্রধান হলেন নবী মোহাম্মদ সা:।সমস্ত নবী রাসূল নবী মোহাম্মদ সা: এর নিয়মে নামাজ পড়লেন।আজ উম্মত মোহাম্মদ সা: এর নামাজের নিয়ম বাদ দিয়ে মাযহাবের ধরেছে।রাসূল সা: বলেছিলেন আজ যদি মুসা আ: বেঁচে থাকতেন তাহলে তার জন্য আমার আনুগত্য করা ওয়াজিব হয়ে যেত কোন উপায় থাকতো না তার।কোন কোন বর্ননায় পাওয়া যায় এখানে আল্লাহর নবীর সামনে জিবরিল আমিন দুধ ও মদের পেয়ালা হাজির করলেন ও তিনি দুধের পেয়ালা নিলেন।জিবরিল আমিন বললেন সেই আল্লাহর প্রশংসা যিনি আপনাকে এই ফিৎরাত ও হেদায়েত গ্রহন করার তাওফিক দান করলেন।আপনি যদি মদের পেয়ালা নিতেন তাহলে আপনার উম্মত গোম্রা হয়ে যেত।এর পর জিবরিল আমিন আল্লাহর বানানো লিফ্টে নবী সা:কে নিয়ে প্রথম আসমানে গেলেন।ফেরেস্তা জিজ্গেস করলেন কে? জিবরিল আ; উত্তর দিলেন এবং জিজ্গেস করলেন সাথে কে? তার জন্য কি পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন হাঁ।দরজা খুলে দেয়ার পর আদম আ; এর সাথে দেখা হলো।জিবরুল আমিন বললেন সালাম করুন। নবী সা: সালাম দিলেন এবং আদম আ; নেক সন্তান বলে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন।নবী সা: দেখলেন ডান দিকে তাকিয়ে হাসেন ও বাম দিকে তাকিয়ে কাঁদেন।নবী সা: জিজ্গাসা করলরন কেন তিনি কাঁদছেন? জিবরিল আমিন বললেন,বামদিকে জাহান্নামের আত্মাগুলো ও ডানদিকে জান্নাতের আত্মাগুলো।যখন জাহান্নামি সন্তানদের দেখেন তখন দু:খ লাগে তখন কাঁদেন আর যখন জান্নাতি সন্তানদের দেখেন তখন হাঁসেন।এটা স্বাভাবিক যিনি সত্যি বাবা তিনি নেক সন্তান দেখে হাসবেন এবং বদ সন্তান দেখে কাঁদবেন।কিন্তু আজকের সমাজে তা হচ্ছে না।যে সন্তান যত খারাপ চরিত্রের হউক না কেন সে যদি আয় করে এনে দিতে পারে বাবা মা সেই সন্তানের প্রতি খুশি থাকে আর যদি কোন নেক সন্তান টাকা কড়ি দিতে পারে না সে তাদের কাছে খারাপ।তবে সৎ বাবা মা'র কাছে এটা প্রযোজ্য নয়।এমনও বাবা মাকে বলতে শুনেছি ছেলেকে হাফেয বানিয়ে কি আলবদর বানাবো নাকি? এসমস্ত বাবা মা মুসলমান নামের কলন্ক।আপনার ছেলে মেয়েকে কুরআন দিয়ে গড়ে তুলুন।ইসলামি আমল আখলাখ শিখান এবং সাথে সাথে দুনিয়ার শিক্ষা দিন এতে করে সে সন্তান পরিবার ও সমাজের জন্য সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে।চরিত্রবান হয়ে গড়ে উঠবে।
এর পর নবী সা:কে নিয়ে যাওয়া হলো দ্বিতীয় আসমানে।সেখানে ঈসা আ; এবং তার খালাত ভাই ইয়াহিয়া আ: এর সাথে সাক্ষাৎ হলো।জিবরিল আমিন পরিচয় করে দিলেন ও নবী সা: সালাম বিনিময় করলেন এবং তারাও স্বাগতম জানালেন।চলে গেলেন তৃতীয় আসমানে একই ভাবে। দেখা হলো ইউছুপ আ; এর সাথে,চথুর্থ আসমানে ইদ্রিছ আ; এর সাথে,পন্চম আসমানে হারুন আ; এর সাথে,ষষ্ঠ আসমানে মুসা আ; এর সাথে।সবার সাথেই আগের নিয়মে জিবরিল আমিন পরিচয় করে দিচ্ছেন ও নবী সা: সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।একটু দূরে যেতেই দেখেন মুসা আ; কাঁদছেন। জিজ্গেস করলেন তিনি কাঁদছেন কেন? কাঁদার কারন বললেন আমার পরের নবী তার উম্মতের সংখ্যা হবে অনেক বেশী আর আমার হবে তার চেয়ে কম।এটা কোন হিংসা নয় উম্মতের হেদায়েতের আশা পোষন করেছেন মুসা আ;।এর পর সপ্তম আকাশে গিয়ে বাবা ইব্রাহিম আ; এর সাথে দেখা হলো।তিনি বায়তুল মা'মুরে হেলান দিয়ে বসা ছিলেন।বর্তমান ক্কা'বার সোজাসুজি উপরে অবস্হিত এই বায়তুল মা'মুর।তিনি ও নেক সন্তান বলে শুভেচ্ছা স্বাগতম জানালেন।এর পর চলে গেলেন ছিদরাতুল মুনতাহা(বরই গাছ সমুন্নিত স্হান)।আল্লাহর আদেশ নিষেধ আল্লাহর কাছ থেকে এখানে আসে এবং ফেরেস্তারা দুনিয়ার কাজ চালায়।আল্লাহ সফরের শুরুতে বললেন তার বান্দা এবং উর্ধগমনেও বান্দা হিসেবে আখ্যায়িত করলেন।এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি মোহাম্মদ সা: এর মধ্যে আল্লাহর উলুহিয়াত ও রুবুবিয়াতের কোন অংশ নেই।তিনি পরিপূর্ন একজন আল্লাহর বান্দাহ।আলকুরআনে ওহির কথা,নামাজের কথা,দাওয়াতের কথা এবং অন্যান্য প্রসংগে আল্লাহ নবী ও রাসূল না বলে বান্দাহের কথা বলেছেন।এখান থেকে প্রমানিত হয় যারা রাসূলকে বলে যিনি গায়েব জানতেন , তিনি আল্লাহর মধ্যে লয় হয়ে যান তারা শির্ক ও কুফরি দিয়ে জাহান্নাম খরিদ করে নিয়েছে।তারা যে আল্লাহর ভালবাসা ও আশেকে রাসূলের কথা বলে এগুলো তাদের ভন্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়।একজন কামেল বান্দাহ হওয়াটাই আল্লাহর কাছে মানুষের শ্রেষ্ঠ গুন।আমরা রাসূলকে মানার আগে বান্দাকে আগে মানতে হয়।কেউ ঈমান আনতে গেলে বলতে হয় ,' আসহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মোহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু'।এখানে রাসূলের আগে আবদ বলেই সম্বোধন করা হয়েছে।একটি গ্রুফের প্রতিষ্ঠাতা যে শির্ক ও কুফর দিয়ে ভরপুর করেছিল নিজের জীবনকে ও গ্রুফকে সে গৌরব করে বলতো 'আব্দুন্নবী' বলে।আমাদের দেশে অনেকে শির্কীয় এই নাম রাখে গোলাম নবী।এর পর ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরয হলো।মুসা আ: এর কাছে আসলেন এবং বার বার নবী সা: আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে দিলেন যে আপনার উম্মত এত সংখ্যক নামাজ পালন করতে পারবেনা।কোন কোন বর্নায় এসেছে ১০ রাকাত আবার কোন কোন বর্ননায় ৫ রাকাত করে কমিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করা হলো।আল্লাহ ফরয হিসেবে ৫ ওয়াক্তই দিলেন কিন্তু নেকি দিবেন ৫০ ওয়াক্তের।মে'রাজের সবচেয়ে বড় পুরস্কার হলো এই নামাজ।যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে শির্ক করবে না আল্লাহ অন্যান্য গুনাহ মাপ করে দিবেন।শির্কের গুনাহ নিয়ে মরে গেলে ক্ষমা পাওয়ার আর কোন সুযোগ নেই।অনেকে পাপ করে বলে আল্লাহ মাপ করে দিবেন।কিন্তু পাপ করে তওবা না করলে কি করে সম্ভব মাপ হইতে পারে?আল্লাহ সর্বশক্তিমান তার বান্দাকে অবশ্যই যে কোন অবস্হায় মাপ করতে পারেন।কিন্তু মনে রাখতে হবে আল্লাহ শ্রেষ্ঠ বিচারক।একজন মানুষ ঈমান নিয়ে এসে খেয়ে না খেয়ে , জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই জমিনে দ্বীনের প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে জীবন অবসান করলেন আর একজন আরাম আয়েশের সাথে,অন্যের উপর জুলুম নির্যাতন করে এবং তার সাথে ইসলামের কিছু কাজ করে জীবন শেষ করলো।এই দুইজনের বিচার কি আল্লাহর সামনে সমান? অবশ্যই না।আল্লাহ চুলচেরা বিচার করে দিবেন ক্কেয়ামতের মাঠে।সূরা আলইমরানের ১৮৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'প্রত্যেক স্বত্যাকে মৃত্যবরন করতে হবে।আর নিশ্চয়ই ক্কেয়ামত দিবসে তাদের প্রাপ্য আদায় করা হবে।যাকে আগুন থেকে বহু দূরে রাখা হবে ও জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে নি:সন্দেহে সে হবে সফলকাম।আর এই দুনিয়ার জীবন ধোকার সম্বল ছাড়া কিছুই নয়।'মে'রাজের আর একটি পুরস্কার হলো নবী সা: কে লক্ষ্য করে বললেন তোমার উম্মতকে জান্নাতে গাছ লাগাতে বলবে আর তা হলো,'সোবহানাল্লাহ,ওয়ালহামদুলিল্লাহ,লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ,ওয়াআল্লাহুআকবর,লা হাওলা ওয়ালা ক্কুয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহ।' এছাড়া সূরা বাক্কারার শেষ আয়াতগুলো বিশেষ পুরস্কার হিসেবে আল্লাহর কাছ থেকে তিনি উম্মতের জন্য নিয়ে এসেছিলেন।এর পর তিনি নিম্ন গমন করলেন।মক্কায় যেতে পথের মধ্যে ব্যবসায়ি কাফেলার সাথে তিন যায়গায় দেখা হলো।তাদের উটগুলো বোরাক দেখে ভয় পেয়ে গেল।মক্কায় এসে উম্মে হানিকে(রাসূলের ফুফু)ঘটনা বললেন।ফুফু বললেন বাবা তুমি এ ঘটনা বলো না।এমনিতেই তো তারা মিথ্যুক বলে আর এটা তো এক মাস যাওয়া আসার রাস্তা,ওরা এগুলো বিশ্বাস করবে না।রাসূল সা: এর দৃড় বিশ্বাস এবং তিনি বললেন সত্য বলতে হবে।তিনি সকাল বেলা হাতিমে গিয়ে এগুলো বর্ননা করলেন।আবুজেহেল বললো হে মোহাম্মদ নতুন কোন খবর আছে নাকি।তখন তিনি মে'রাজের ঘটনা বললেন।আবুজেহেল মনে করলো আজ মোহাম্মদ সা:কে মিথ্যুক সাব্যস্হ করার বড় একটা সুযোগ হয়েছে।সে সবাইকে ডেকে আনলো।আবুবকর রা:কে বললো তোমার বন্ধু মে'রাজের এই এই কথা বলে।আবুবকর রা: বললেন যদি বলে থাকে সত্য। শুধু বায়তুল মোক্কদেছ নয় আসমানের কথাও আমি বিশ্বাস করি।বর্ননা শুনে তারা বললো এ সব অসম্ভব কথা বার্তা।কেউ কেউ বললো ঠিক আছে।বায়তুল মোক্কদেছ তো মোহাম্মদ কখনো সফর করেনি।আমাদের মধ্যে অনেকে ফিলিস্তিন সফর করেছে।তারা বললো বায়তুল মোক্কদেছের বর্ননা তুমি আমাদের বল।আল্লাহর নবীকে আল্লাহ পুরা বায়তুল মোক্কদেছ সামনে এনে উপস্হিত করলেন।আল্লাহর নবী সা: তারা যা যা জিজ্গেস করে তা-ই বলে দিচ্ছেন।তারা বললো যা জিজ্গেস করি তা-ইতো বলছে।তিনি এও বললেন তোমাদের ব্যবসা কাফেলার সাথে দেখা হয়েছে তারা আসলে জিজ্গেস করবে তারা আমাদের বোরাক দেখে ভয় পেয়েছিল।যখন ওরা আসলো তাদের জিজ্গেস করলো এবং তারা এ ঘটনার স্বীকার করলো।তার পরও কাফেরদের কুফরি বেড়ে গেল।মে'রাজের ঘটনায় আবু বকরের ঈমান বেড়ে গেল, কাফেরের কুফরি বাড়বে ,মোশরেকের শির্ক বাড়বে,বিদাআতির বিদাআত বাড়বে,মিথ্যাবাদিদের মিথ্যা বাড়বে,কিস্সা কাহিনি বানোয়াটদের সামর্থ বাড়বে আর যারা মু'মিন মুসলমান তাদের ঈমান ও তাক্কোয়া বাড়বে।তারা উপাধি পাবে সিদ্দিক বা চরম সত্যবাদি।
মে'রাজ থেকে আমাদের আনেক কিছু শিখার রয়েছে।অসংখ্য পুরস্কারের মধ্যে নামাজ হলো অন্যতম নেয়ামত যা পালনের মাধ্যমে উম্মতকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করনো হবে।এই নামাজের হেফাযত করতে হবে আমাদের সবার।আখেরাতে প্রথম হিসাব হবে নামাজের।যার নামাজ ঠিক থাকবে তার অন্যান্য সৎ আমল যোগ হবে এবং পুরস্কৃত হবে।আর যার নামাজ থাকবেনা তার অন্য কোন সৎ আমল কাজে আসবে না এবং সে তিরস্কৃত হবে।মু'মিন ও মোত্তাকির জন্য জান্নাত আর একজন মু'মিন কখনো বেনামাজি হতে পারে না।সূরা বাক্কারার শেষ আয়াতগুলো রাতের বেলায় যে পড়বে তা তার জন্য যথেষ্ট।জান্নাতে গাছ লাগানোর জন্য বেশি বেশি তাছবিহ 'সোবহানাল্লাহ,ওয়ালহামদুলিল্লাহ,লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ,ওয়াআল্লাহুআকবর,লা হাওলা ওয়ালা ক্কুয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহ' পাঠ করা।শির্ক ও বিদাআত থেকে বেঁচে থাকার জন্য আপ্রান চেষ্টা করা কারন ইবাদতে শির্ক থাকলে জান্নাতের আশা করা যাবে না।অনেকে বলে নবীরা গায়েব জানে কিন্তু আমরা জানলাম নবী সা: গায়েব জানেন না।রাসূল সা: যদি গায়েব জানতেন তাহলে আল্লাহর অপেক্ষায় থাকতে হতো না তিনি নিজেই সাথে সাথে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিতেন।ফেরস্তারাও গায়েব জানতেন না।আল্লাহর নবী সা: কে নিয়ে দরজায় হাজির হয়েছেন কিন্তু তাদের প্রশ্ন করতে হয়েছে সাথে কে? গায়েব জানেন একমাত্র আল্লাহ আর তিনি যাকে জানান একমাত্র সেই জানে।আল্লাহর নবী সা: নূরের তৈরি ছিলেন না।বিদাআতিরা যে বলে আল্লাহর নবী নূরের তৈরি কিন্তু আল্লাহর নবী কি আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখেছিলেন? আমাদের দেশে দিদারে এলাহির নাম দিয়ে যে লেখালেখি আর ওয়াজ নছিহত ও জলছা হয় এবং যে সমস্ত হুজুররা এগুলো লিখেন ও বলেন তাদেরকে প্রশ্ন করি,আপনারা এগুলো কোথায় পেলেন? যিনি স্বচক্ষে দেখেছেন তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আপনারা তথ্য নিয়েছেন শয়তান থেকে আর গোম্রাহ করছেন মানুষকে যুগ যুগ ধরে।মুসলিম শরিফের হাদিসে আবুজরগিফারি রা: জিজ্গেস করলেন,আপনি কি আপনার রবকে দেখেছেন?রাসূল সা: বললেন নূর কিভাবে দেখবো? আল্লাহ পাক থাকেন নূরের পর্দার মধ্যে।যদি কোন পর্দা খুলে দেয়া হয় সব জ্বলে পুড়ে ছাঁই হয়ে যাবে যে ভাবে তুর পাহাড় চুরমার হয়ে গিয়েছিল এবং মুসা আ: বলেছিলেন আল্লাহ আমি তোমাকে দেখবো।আল্লাহ বললেন তুমি দেখতে পাবে না এবং নূরের তাজাল্লিতে মুসা আ:বেহুঁশ হয়ে গিয়েছিলেন।দুনিয়ার এ চোখ আল্লাহকে দেখতে পাবে না।আল্লাহর নবী সা: যদি নূর হতেন তাহলে নূর দেখতে পেতেন কারন নূর নূরকে ভেদ করতে পারে।সবচেয়ে বড় শিক্ষা আমাদের নিতে হবে এই মে'রাজকে কেন্দ্র করে সওয়াবের উদ্দেশ্যে ঘটা করে কোন নির্দিষ্ট ইবাদত, সভা সেমিনার,ছুটি ,মিষ্টি হালুয়া বিলানো এগুলো সব বিদাআত।আল্লাহ পাক আমাদের আলকোরান ও ছহি হাদিস অনুশীলন করে দ্বীনের কাজগুলো করার তাওফিক দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
২৯৪৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১। কেন মুয়াবিার সাথে আলী যদ্ধে লিপ্ত হলেন?
২। রাসুলের জীবদ্ধশায় হযরত আলী সবকটি যদ্ধের সম্মক সমরে ছিলেন কিনতু রাসুলের ওফাতের পর আলীতে আর কোন যুদ্ধে কের দেখা যায়নি। কেনইবা তিনি ইহদির খেজুর বাগানে কাজ করতেন?
৩। জগ্গে জামাল ও শিপফিনের যুদ্ধ কেন কার সাথে হয়েছে?
৪। রাসুল (সা) এর মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ কেন তিনদিন পড়ে ছিলো? কেনইবা বা রাসুলকে মাটি দেওয়ার সময় ৭ জন মতান্তরে ১১ জন মিলে মাটি দিলেন? আর সকলে কেনইবা মাটি দিতে আসলেন না, কার ভয়ে।
এমন অনেক কথা আরও বলা যায়।
“আলোতে থাকুন
ভালোতে থাকুন“
(১) কেন মুয়াবিার সাথে আলী যদ্ধে লিপ্ত হলেন?
(২) সুলের জীবদ্ধশায় হযরত আলী সবকটি যদ্ধের সম্মক সমরে ছিলেন কিনতু রাসুলের ওফাতের পর আলীতে আর কোন যুদ্ধে কের দেখা যায়নি। কেনইবা তিনি ইহদির খেজুর বাগানে কাজ করতেন?
(৩) জগ্গে জামাল ও শিপফিনের যুদ্ধ কেন কার সাথে হয়েছে?
(৪) রাসুল (সা) এর মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ কেন তিনদিন পড়ে ছিলো? কেনইবা বা রাসুলকে মাটি দেওয়ার সময় ৭ জন মতান্তরে ১১ জন মিলে মাটি দিলেন? আর সকলে কেনইবা মাটি দিতে আসলেন না, কার ভয়ে।
এসব বিষয় আপনি আমাদের সামনে সবিস্তারে লেখা উপস্থাপন করে আমাদের মতো অন্ধকারাচ্ছন্ন জাতিকে আলোতে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
এক আল্লাহ্
এক রাসুল
এক কিবলা
অথচ আমরা আজ কেউ শিয়া কেউ সুন্নি। আরও অনেক ফেরকাহ্ আছে যে গুলো আমরা সকলে কমবেশী জানি। আজ কোন শিয়া যদি বলে সুন্নিদের কোন ভিত্তি নাই তাতেকি আপনি জরালো কোন প্রমান দিতে পারবেন? অথবা কোন সুন্নি যদি বলে শিয়াদের কোন ভিত্তি নাই তাতেকি আপনি জরালো কোন প্রমান দিতে পারবেন? সকলের কাছে সাড়ে চৌদ্দ শত বছরের ঘটনা জানার একমাত্র মাধ্যম বই। শিয়া-সুন্নি দুইজনের কাছে তাদেরপথ সঠিক এই প্রমান দেওয়ার জন্য সথেষ্ট বই-পত্র রয়েছে। আমি জানিনা কেন আপনি এমাকে শিয়ার ইমেজে পেলেন। আমি জানি পৃথিবীতে বাব-দাদার কাছে থেকে যে ধর্ম পাওয়া সেটা কখনো খারাপ হতে পারে না। অবশ্য এই ভাবনা থেকে ইব্রাহিম (আ) বের হয়ে এসে আলোর পথ পেয়ে তা মানুষকে দেখাতে চেয়েছেন।
“ব“ কলম আপনি কোন ধর্মের জানি না তবে সকল ধর্ম জন্মগত অধিকার। যদি আপনি সনাতন ধর্মের ঘরে জন্মগ্রহণ করতেন তাহলে আপনার মূখে সঠিক ধর্ম হিসাতে কেবল সনাতন ধর্মেরই ঢংকা বাজতো। ভালো থাকুন, মাবুদ সকলকে ধর্মবুঝে চলার তৌফিক দান করুন----আমেন
'আল্লাহ তাঁর রাসুল কে বললেন তোমার ওফাতের সময় খুব নিকটবর্তি তায় তুমি তোমার খেলাফতের খরিফা নির্বাচিত করো। রাসুল মাবুদকে বললেন আমি কাকে খলিফা নির্বাচিত করবো।
আল্লাহ বললেন এই খেলাফতের খলিফার দায়ীত্ত্ব তোমার পরে কেবল আলী‘ই নিতে পারে।'
এ কথাগুলো কোথায় পেলেন, কোরআনে না হাদীসে? রেফারেন্স দেন।
যে কথা আপনি বলেছেন, তা যদি প্রচলিত হাদীসগ্রন্থে নাও থাকে; তবে কোন ইতিহাসে আছে – আপনি সেসব বইয়ের নাম এবং লেখকের নাম উদ্ধৃত করে বলুন। আর যদি কোথাও এসব ব্যাপারে কেউ লিখেও না গিয়ে থাকে ইতিপূর্বে – তবে আপনারা এসব জেনেছেন কিভাবে, সে ব্যাপারটাও খুলে বলুন।
আপনাদের মত ওতো জ্ঞানি নই যে আপনার সাথে বাহাস করবো। তবে ইতিহাস আছে পড়ে দেখেন। অনেক বই আছে পড়ে দেখেন। আর খেলাফতের খলিফা সংক্রান্ত কোরআনের আয়াতটা তো দিয়েছি সেটা পড়ে দেখুন আল্লাহ্ রাসুলকে কোন রিসালাত পৌছাতে বলছিলেন? আপনাকে বিস্তারিত বলতে হলে আমার একটি বই লিখা হয়ে যাবে। পারলে বিষয়টি নিয়ে তর্ক না করে পড়ে জেনে নিন। জানার ইচ্ছা থাকলে সব কিছুই মাবুদ আপনাকে জানাবে। তবুও সংক্ষেপে ইংগিত দেয়।
ইসলামের ইতিহাস রক্তের ইতিহাস। খেলাফত মাওলাইয়াতকে ধ্বংস করার জন্য যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তাহাই ইসলামের ইতিহাসকে রক্তের ইতিহাসে পরিনত করেছে। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় রাজতন্ত্রের যুগে কোরআন তাফসীরের সকল পরিবর্তন ঘটেছে তাহার সংশোধন করে নেয়া তেমন কঠিন কাজ নয়। স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ মন নিয়া জ্ঞানী ওয়াকিবহাল ব্যক্তিগণ হতে প্রকৃত ত্ফসীর উদ্ধার করল্ইে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। কিন্তু মাওলাইয়েতকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নামে পার্থিব খেলাফত কোরআন প্রকাশের উপর যেই সকল অপকীর্তি করেছে তাহা বিশেষ ভাবে দ্রষ্টব্য। এক শ্রেণীর জালেম, আলেম বেশ ধরে নায়েবে রাসুল সেজে ইয়াজিদ এর মতবাদ তথা শুধু অনুষ্ঠান সর্বস্ব ধর্মকে মুহাম্মাদী ইসলাম বলে সমাজে চালাচ্ছে। তাদের দল সমাজে অনেক বেশী, যেমন ছিল কারবালায় ইয়াজিদ পন্থী মুসলমান এবং হুসাইন (রাঃ) পন্থী তথা মোহাম্মাদী ইসলাম পন্থী মুসলমান। কারবালায় ইয়াজিদের লোকসংখ্যা ৩০ হাজার। এরা সবাই কলেমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত পালন করতো। ইমামতি করতো, খুৎবাহ্ দিত। ঐ ৩০ হাজার ইয়াজিদদের সৈন্যদের মধ্যে আড়াইশত কোরআনের হাফেজ ছিল, তাফসিরকারকও ছিল। অপর পক্ষে হুসাই (রাঃ) এর পক্ষে ছিল মাত্র ৭২ জন। অথচ ইমাম হুসাইন (রাঃ) তাদেরকে মুসলমান বলে স্বীকার করেননাই। তিনি তাদেরকে প্রশ্ন করেছিলেনঃ ”আলাইছা ফি মুসলিমুন?” তোমাদের মধ্যে কি একজনও মুসলমান নেই? সেনাপতি হুর তার ভাই, গোলামসহ ত্রিশ জন অনুচর নিয়ে ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর পক্ষে এসেযোগদান করলেন। এখানেই আসল ও নকল মুসলমানের পরিচয় করিয়ে দিলেন ইমাম হুসাইন (রাঃ)। ইমাম হুসাইন (রাঃ) শহীদ হবার পর ইয়াজিদ এবং তার সহযোগিরা ইসলামের মূল শিক্ষা বর্জন করে তাদের মতবাদ তাদেরর স্বার্থের অনুকুল্যে ব্যবহার এবং প্রচার করেছিল, প্রয়োজনে হাদীস তৈরী করতো। ফতোয়া দিত তার স্বার্থ ও তারপ্রচারিত মতবাদের পক্ষে। ঐ শিক্ষাই অদ্যাবধি অধিকাংশ মানুষ দিচ্ছে এবং গ্রহণ করছে আজও অবধি। কারণ ইয়াজিদ ও তার সতীর্থরা মৃত্যুর করাল গ্রাসে পতিত হলেও তাদেরপ্রেতাত্মাগুলো সহস্র-লক্ষ ভাগে বিস্তার লাভ করে আছে মুসলিম সমাজে। শুধু বাহ্যিক আচার নিষ্ঠা নামাজ, রোজা, হজ্জ্ব, যাকাত ও কলেমা ইত্যাদিই ইসলাম এ কথা ইয়াজিদ ও তার অনুসারীগণ প্রচার করছে। উমাইয়া বংশের মালিক ইবনে মারওয়ান মদীনায় গিয়ে নবীজির রওজা মোবারকে থাকতো আর সর্বদা তাসবীহ্ তাহলীল ও কোরআন তেলওয়াত করতো। কিন্তু মূলে তার উদ্দেশ্য ছিল মসজিদে নব্বীতে উমাইয়া শয়তানির বিরুদ্ধে মদীনা লোকেরা কি বলে সে দিকে নজর রাখা এবং গোপনে তা দামেস্কে উমাইয়া রাজ দরবারে পাঠিয়ে দেয়া। এর মুনাফিকীর কারণে মদীনার বার হাজার চারশত সাতানব্বই জন লোক মারা যায়। তার মধ্যে ৭০০ জন ছিলো কোরআনের হাফেজ। শধু তায় নয় অবলিলায় অনেক মেয়ে ধর্ষনের শিকার হয় ফলে এক হাজার মহিলা অবৈধ সন্তান প্রসব করেছিল। এরাই প্রবর্তন করেছিল জপ-তপ, হাজার বার, লক্ষ বার অজিফা জপ করার রীতি। তাদের দ্বারা এবং তাদের অনুসাররী মোল্লা-মৌলবীদের দ্বারা মোহাম্মাদী ইসলামের যে ক্ষতি হয়েছে তা জ্ঞানীগণ মর্মে মর্মে উপলদ্ধি করছে এবং তার কারণে আজও মুসলমানগণ বিশ্বেও অন্যাণ্য জাতীর পিছনে পড়ে আছে। আধ্যাত্মিকতাই মুহাম্মাদী ইসলামের প্রাণ বা মূল ভিত্তি ছিল।
অনুরোধ রাখলেন না!
এ ব্যাপারে আমার একটা স্বতন্ত্র পোষ্ট আসছে ইনশাল্লাহ ।
“ব“ কলম কথাটা ঠিক নয়। রাসুল গাদিরের খুমেই সকলের উদ্দেশ্যে তার ওহি বলেছেন খলিফা নির্বাচনের এবং আলীকে সেখানেই খলিফা নির্বাচিত করা হয়। সেই সময় ওমর (রা) অভিনন্দন জানিয়েছে। এবং সকলে তাকে খলিফা মেনে নিয়েছে। পরের ঘটনা রাসুল ফিরে গিয়ে যখন অসুস্থ হয়ে পড়লেন তখন তাকে আবুবকর, ওমর ও ওসমান (রা) আর খলিফা মানেন নাই। রাসুল ঘটনার আচ করতে পেরে ওমর (রা)কে অনেক কথা বলেছে যা ঐতিহাসিক ভাবে প্রমানিত। তারা বনিসাকিদা নামক স্থানে বসে ভোটাভোটি করে যেখানে আলী ৩ ভোট ও আবু বকর ৩ ভোট পায়। এই ভোট রাসুলের কথাকে পাশ কাটিয়ে আবুবকর, ওমর ও ওসমান (রা)করে। এই ব্যাপারে বললে হলে অনেক বলতে হবে। এইসব বিতর্কিত বিষয় গুলো নিয়ে আর নয়। তবে জানার চেষ্টা থাকলে জানতে পারবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন