কারবালাকে নিয়ে উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশে ইতিহাস বিকৃতি।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৭ আগস্ট, ২০১৪, ০১:৪৩:৩২ দুপুর

পরম করুনাময় আল্লাহর নামে যিনি পরম দাতা ও দয়ালু।

আল্লাহ পাক আরবি বার মাসের মধ্যে চারটা মাসকে হারাম মাস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।এ মাসগুলো হলো রজব,জুলক্কাদ,জুলহজ্জ ও মহররম।প্রতিটি মুসলমান মাত্রই বারটি মাসের প্রতিটি সময় আল্লাহর নাফরমানি থেকে বিরত থাকবে।প্রতিটি মুহূর্তকে আল্লাহর দেয়া আদেশ নিষেধের মাধ্যমে ইবাদত মুখী করে তুলবে।প্রিয় নবী সা: এর প্রতিদিনের ইবাদাত ছিল একই রকম।হাদিসে এসেছে মা আয়শা রা:কে প্রশ্ন করা হয়েছিল রাসূল সা: এর রাতের নামাজ সম্পর্কে।তিনি বলেছেন,রাসূল সা: রমজানে বা তার আগ পরে রাতে ১১ রাকাতের বেশী নামাজ পড়তেন না তবে তাঁর নামাজ ছিল গুনগত মানের নামাজ।সাহাবায়েকরামদের এক দল রাতে নামাজ আদায় করতেন।তারা বলতেন আমরা অনেক সময় মনে করতাম আজ সেহরিই খেতে পারবো না।এমনই ছিল রাসূল সা: এর নামাজ।নামাজ অদায় করতে গিয়ে পা ফুলে যেত।আজ মুসলিম সমাজ ইসলামের সঠিক ইতিহাসের উপর পড়াশুনা না করে শির্কীয় ও বিদাআতি কিতাবাদি পড়ে ইবাদত করছে।সামনে মহররম মাস।এই মাসকে কেন্দ্র করে বহু সংখ্যক জাল- জয়ীফ হাদিসের প্রচারনা তথা জাল ও মিথ্যা কাজ কর্মের মাধ্যমে মানুষকে প্রকৃত ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।আশুরার ইতিহাসের সাথে মুসলিমের সম্পর্ক হলো মুসা আ; এর সাথে।আল্লাহ পাক মুসা আ; এর মাধ্যমে বনীইসরাইলকে ফেরাউনের অত্যাচার থেকে রেহাই দিয়েছিলেন এবং ফেরাউন এবং তার সেনাবাহিনীকে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মেরেছিলেন।মুসা আ: ও বনীইসরাইল আল্লাহর কাছ থেকে নাজাত পেয়ে এই দিন রোজা রেখেছিলেন।সেই থেকে জাহিলিয়াতের জামানায় মক্কার কাফের মুশরিকরাও এ রোজা

রাখতো আশুরার দিন।রাসূল সা: ও মক্কায় এই রোজা রেখেছেন।মদিনায় যখন হিজরত করে গেলেন এবং দেখলেন ইহুদিরা এই দিনে রোজা রাখে।তাদের জিজ্গেস করা হলে তারা বললো এটি আমাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ন দিন কারন এদিন মুসা আ; ফেরাউন থেকে নাজাত পেয়েছিল।এ কথা শুনে রাসূল সা; বললেন আমরা মুসা আ; এর এই সূন্নতের বেশী হক্কদার। সেজন্য তিনি রোজা রাখলেন ও সাহাবাদের রোজা রাখতে বললেন। এই রোজা রমজানের রোজা ফরয হওয়ার আগে ফরয ও ওয়াজিব ছিল।রমজানের রোজা ফরয হওয়ার পর আশুরার রোজা সূন্নত হয়ে গেল। রাসূল সা: ঘোষনা করলেন এই দিনের একটি রোজা রাখলে আল্লাহ পাকের কাছে আমি আশাবাদি তিনি অতীতের এক বছরের গুনাহ মাপ করে দিবেন।রাসূল সা: আশুরার রোজাকে যেভাবে তালাশ করতেন রমজানের পর অন্য কোন রোজাকে এত গুরুত্ব দিতেন না। তিনি বলছেন,রমজানের পরে সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে মহররমের রোজা।এইজন্য তিনি মদিনার অলি-গলীতে লোক পাঠিয়ে দিয়েছিলেন যারা এদিনে কিছু খেয়ে ফেলেছ তার আর খাবে না বাকি দিন রোজা পূর্ন করবে এমনকি ছোট ছোট বাচ্চাদের ও তারা এ রোজা রাখাতেন।সাহবায়েকরাম বললেন ইহুদিরা একটি রোজা রাখে আমরাও একটি রোজা রাখি এতে মিল হয়ে যায় তাই আল্লাহর নবী সা: বললেন আগামি বছর যদি আমি বেঁচে থাকি তাহলে ৯-১০ এই দুটি রোজা রাখবো।আল্লাহর নবী সা: সে বছর দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন এবং সাহাবায়েকরাম ৯ এবং ১০ এই দু'দিন রোজা রাখতেন।তবে কেউ যদি শুধুমাত্র ১০ তারিখ রোজা রাখে তাও হয়ে যাবে।এই দিনে আহলে সূন্নাহ ও জামায়াতের দল যারা জেনে বুঝে রোজা রাখে এবং অন্যদের এই দিনে রোজা রাখার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।আমাদের মনে রাখতে হবে এ মাসে আশুরার রোজা ছাড়া অন্য কোন এবাদত নেই যা বিদাআতিরা করে থাকে।আশুরাকে কেন্দ্র করে দান খয়রাত, খানাপিনা,নতুন পোশাক পরা,মিলাদ মাহফিল,মিঠাই হালিয়া বিলানো,তাজিয়া মিছিল সহ অন্য যা করা হয় সবই বিদাআত।শিয়া রাফেযি যারা এ দিনটিকে শোকের দিন,মাতম করার দিন,হায় হোসেন করার দিন ,শির্ক কুফুরির দিন বানিয়ে নিয়েছে।রাসূল সা: এর মৃত্যুর ৫০ বছর পর হোসেন রা: এর মর্মান্তিক মৃত্যুর সাথে এ সবের কোন সম্পর্ক নেই।এরা আহলেবাইতের মানুষদের সেদিন যেমন হত্যা করেছে আজও এ সবের মাধ্যমে তাদের অবমাননা ও হত্যাই করছে। ইসলাম ও মুসলমানদের কিভাবে তারা ধংস ও ক্ষতি করেছে তারাই জানে যারা ইসলামের প্রকৃত ইতিহাস জেনেছে ও পড়েছে।মুসলিমদের মধ্যে যারা অজ্গ ও হতভাগা তারাই এই মিথ্যার সাগরে ডুবে হাবুডুবু খাচ্ছে।মীর মোশারফ হোসেনের বিষাদ সিন্ধুর মত মিথ্যা কাব্য যে সমস্ত মুসলমান পড়েছে তারাই কুফর শির্ক ও বিদাআতে লিপ্ত হয়েছে।এর একদল নাসেবি খারেযিরা এইদিনে খারেযিদের ঘৃনা করতে গিয়ে এই দিনে খানাপিনা ও সাজ সজ্জা কাপর চোপড় পরা ও সুরমা লাগানোর মত কাজ করে থাকে। এই দুই খারিযিরাই ইসলামে বাতেল হিসেবে পরিচিত।আমাদের সবার উচিত সামনের এ মাসে মানুষকে সতর্ক করা যাতে কোরআন ও সূন্নাহ বিবর্জিত কোন কাজ যেন মানুষ না করে তাতে বুঝিয়ে বলা ও খারাপ কাজগুলোকে ঘৃনা করা।

অধিকাংশ মানুষ আশুরা মানে কারবালাকে বুঝে।কারবালার ইতিহাস রাসূল সা: মৃত্যুর ৫০ বছর পরে।কারবালাকে বুঝতে হলে এই ৫০ বছরের ইসলামের ইতিহাসকে বুঝতে হবে।মুসলিম সমাজকে এক আল্লাহর ইবাদত করতে হলে তাদের প্রজ্গা ও বিবেক কে কাজে লাগাতে হবে।ইসলামি ইবাদত কোন বংশ পরম্পরায় ইবাদত নয়।আল্লাহ যা পাঠিয়েছেন এবং নবী সা: যা করতে আমাদের আদেশ করেছেন সে টুকুর মধ্যেই উম্মতকে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।কিছু বাড়ানো যেমন যাবে না তেমনি কমানোও যাবে না। সারা পৃথিবি যখন অন্ধকারে আচ্ছন্ন,জাহেলিয়াতের অন্ধকার,কুফরির অন্ধকার,শির্কের অন্ধকার,বিদাআতের অন্ধকার,কুসংস্কারের অন্ধকার,জুলুম অত্যাচার,যেনা ব্যাভিচার, মদপান ও জুয়া এবং এ জাতীয় অশ্লিলতা যখন প্লাবিত ঠিক এ সময়ে মানবজাতিকে আলোর পথ দেখাবার জন্য মহান আল্লাহ পাক সর্ব শ্রেষ্ঠ আদম সন্তান নবী মোহাম্মদ সা: কে প্রেরন করলেন রহমত স্বরুপ।তার সাথে পাঠালেন ঐশি বানি পবিত্র আল কুরআনুল কারিম যা সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী।অন্ধাকারাচ্ছন্ন মানুষগুলোকে কুফর থেকে টেনে আলোর পথে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা করতে থাকেন।আল্লাহ মু'মিনদের ওয়ালি তিনি তাদের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসেন।রাসূল সা: মক্কার মানুষকে আলোর দিকে ডাকা শুরু করলেন এবং বললেন তোমরা বল আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা'বুদ নেই এবং তোমরা সফল হয়ে যাবে।কিন্তু খুব অল্পসংখ্যক মানুষ আলোর দিকে আসলো।১৩টি বছরে অল্পসংখ্যক মানুষ আলোর পথ পেল আর বেশির ভাগ মানুষ অন্ধকারেই ডুবে থাকলো।আজো সমাজ দেখলে তাই কি মনে হয় না? আবার এও মনে করার কারন নেই যে ইসলামের বিশাল দল দিনের দাওয়াত দিচ্ছে বলে তারা সঠিক পথে আছে।ইসলামের এই বিভক্ত দলগুলোও যার যার মত দুনিয়ার স্বার্থে ইসলামকে ব্যাবহার করে কাজ করে যাচ্ছে।এখনো ইসলামের সেই মানুষগুলোর সংখ্যা নগন্যই বটে।সে যুগের আবুজেহেল,আবুলাহাব,ওতবা ,শাইবা বলেছিল মোহাম্মদ সা: এর আলো যদি জ্বলে যায় আমাদের নেতৃত্ব কতৃত্ব সব চলে যাবে।তাই যে করেই হোক মোহাম্মদ সা: কে বাধা দিতে হবে।সে জন্য তারা নবী সা: কে শারিরিক,মানুষিক , অর্থনৈতিক,সামাজিক ,রাজনৈতিক সর্বাত্মক অসহযোগ এমনকি হত্মার জন্য দারুন নদোয়াতে বিল পাস করে ফেললো।কিন্তু তিনি এত প্রতিকুলতা স্বত্বেও শক্ত হাতে দায়িত্ব পালন করলেন কোন শীথিলতা অবলম্বন করলেন না।মক্কার পার্লামেন্ট দারুন নদোয়াতে যখন বিল পাস হলো তারা মোহাম্মদ সা: কে হত্বা করবে, আল্লাহ পাক তার হাবিবকে জানিয়ে দিলেন মদিনায় হিযরতের কথা।তিনি আবুবকর রা:কে সাথে নিয়ে গারে সওরে তিন দিন আত্মগোপন করে পরে মদিনায় পৌঁছে গেলেন।

মদিনায় গিয়েই সব শেষ হয়ে গেল না।তবে মদিনায় ইতিমধ্যে কিছু মানুষ আলোর পথ পেয়েছিল।তারা শান্তির পথ , তৌহিদের পথ , সূন্নতের পথ পেয়ে হানাহানির পথকে ছেড়ে দিয়ে জীবনকে ধন্য করেছে।কাফের মুশরিকরা আলোর এই মানুষগুলোকে চিরতরে নিভিয়ে দিতে চায়।কিন্তু আনসার ও মুহাযিরগন তাদের ধনসম্পদ ও সমস্ত শক্তি দিয়ে একে অপরকে আপন করে ইসলামের এক পতাকাতলে সমর্পন করলো।এক আল্লাহ ও রাসূল সা: এর আনুগত্যে তাদের বিলিয়ে দেয়ার অংগিকার করে ইসলামের আলোকে উদ্ভাসিত করার ও আল্লাহর তৌহিদকে প্রতিষ্ঠিত করে সমস্ত অন্ধকার বিদূরিত করে সমাজ প্রতিষ্ঠা করার পথে এগিয়ে গেল।কিন্তু এই নবজাত ইসলামকে নস্যাত করার জন্য চতুর্দিকে দুশমনরা ফন্দি ফিকির করতে থাকে।তাদের ৫টি দল তৈরি হলো।মক্কার কাফের , মুশরিক,ইহুদি,খৃষ্টান ও মোনাপেক।এই ইহুদির দল তারা জানতো একজন নবী আসবে এবং তারা অপেক্ষমান ছিল।তারা যখন জানলো বনিইসরাইলে এই নবী আসলো না তখন তারা ইচ্ছা করের হিংসা বিদ্বেশে নেমে পড়লো।এই ইহুদি ও খৃষ্টানদের সম্পর্কে আল্লাহ সূরা ফাতেহার শেষ আয়াতে বলে দিয়েছেন এরা হলো অভিশপ্ত ও পথহারা।আর আজ মুসলমানদের মধ্যেও এই দুই অনুসারি রয়েছে। একদল জেনে বুঝে অপরাধ করে আর একদল না বুঝে করে।এই দুই দলই জাহান্নামের অংশিদার মুসলিম নামধারি হলেও।সূরা বাক্কারার প্রথমেই আল্লাহ মোত্তাকিদের কথা বলে কাফের মুশরকদের কথা বলেছেন।এর পর মোনাপেকদের সম্পর্কে ১৩টি আয়াত বর্ননা করেছেন।সূরা মা'য়েদার ৮২ আয়াতে বলেছেন মু'মিনদের বড় দুশমন হলো ইহুদি ও মুশরিক।মুসলিমদের অনেক দা-ঈ ইহুদিদের চ্যালেন্জ করেছে যে আমাদের কুরআন বলেছে মুসলিমদের দুশমন হলো ইহুদি ও মুশরেক।তোমরা মুসলমানের বন্ধু হয়ে যাও তাহলে আমরা বুঝবো তোমরা আমাদের বন্ধু।আলকুরআন মু'মিনদের আরো বলেছে তোমরা ইহুদি ও খৃষ্টানদের বন্ধু বানাবে না কারন তারা একে অপরের বন্ধু।সে যুগে মুসলমানদের চারদিকে ছিল শক্রুবেষ্টিত।মক্কায় আবুজেহেলের দল,মদিনায় মোনাপেকরা,পারস্য ও রোম সাম্রাজ্য।চারদিকে ইসলামের শক্রুবেষ্টিত থাকলেও মু'মিনরা ছিল একশক্তিতে বাঁধা।যে আউস ও খাযরায ১০০ বছর ব্যাপি যুদ্ধ করেছিল তারা একে অপরের ভাই হয়ে গেল।কিন্তু ইসলামের দুশমনরা বসে থাকলো না।রাসূল সা: দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন।আজকের মুসলিমরা যদি কারবালার ইতিহাস জানতে চায় তাদের পিছনে ফিরে যেতে হবে এবং এর কোন বিকল্প নেই।আমাদের চিন্হিত করতে হবে কে আমাদের দুশমন?

১১ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে রাসূল সা: বিদায় নিলেন।খলিফা নির্বাচন হলেন আবুবকর সিদ্দিক রা: ।তিনি ১১ থেকে ১৩ হিজরি প্রায় আড়াই বছর খুব শক্ত হাতে খেলাফত পরিচালনা করলেন।রাসূল সা: মৃত্যুর সাথে সাথে এ সমস্ত দুশমনরা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছিল কিন্তু এমন শক্ত হাতে তাদের দমন করলেন যে উসামার যুদ্ধ দল পাঠিয়েদিলেন।যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করলো তাদের সাথে তিনি যুদ্ধের অংগীকার করলেন।ওমর রা: বললেন হে আবু বকর! এরা মুসলমান কিভাবে আপনি এদের সাথে যুদ্ধ করবেন।তিনি ওমরা রা:কে উত্তর দিলেন হে ওমর! জাহেলিয়াতে তুমি ছিলে কঠিন আর এখন ইসলাম এসেছে তোমার মনে কোন হিম্মত নেই।যারা নামাজ ও যাকাতে পার্থক্য করে তারা কি মুসলিম? ঐতিহাসিকগন বলেছেন ওমরের চেয়েও আবু বকর কঠিন ছিলেন দ্বীনের ব্যাপারে।যারা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছিল দ্বীনের বিরুদ্ধে তারা থেমে গেল।আল্লাহর নবী সা: ইহুদিদের মদিনা থেকে খাইবারে পঠিয়ে দিয়েছিলেন।আবু বকর রা: আড়াই বছর পর খেলাফত থেকে বিদায় নিলেন।১৩-২৩ হিজরি পর্যন্ত খেলাফতে আসলেন ওমর ফারুক রা:। ওমর ফারক রা: এর সময় ইসলামের ব্যাপক বিজয় হলো এবং শয়তান যদি তাঁকে আসতে দেখতো তখন সে অন্যদিকে চলে যেত।জ্বীন শয়তান ও মানুষ শয়তান তাঁকে দেখলে তাদের কম্পন শুরু হয়ে যেত।তাঁর কঠোর হস্ত ও তার সৈনিক ও মুজাহিদদের ভয়ে ইসলামের তখনকার ৫ শক্তি মাথা নিচু করে ভিতরে ভিতরে তাদের কল্পনা জল্পনা ও ষড়যন্ত্র চালাতে থাকলো সুযুগের সদ্ব্যবহার করার জন্য।ওমর ফারুক রা: দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন।তাকে হত্মা করলো মুগিরা বিন সোবার একটি গোলাম যে ছিল অগ্নিপূজক।সে ভাল তীর ধনুক বানাতে পারতো আর তখন কার দিনে মিসাইল ছিল এই তীর ও ধনুক।মুগিরা বিন সোবার ওমর রা:কে চিঠি লিখলেন তাকে মদিনা নিয়ে যাওয়া হোক সে তীর ধনুক বানাবে আর যুদ্ধে এ সব কাজে লাগবে।ওমর ফারুক রা: ইহুদিদের আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত করে দূরে সরিয়ে দিলেন।এরা বাইরে গিয়ে আরো বেশি ষড়যন্ত্র করতে থাকলো।এই গোলাম ফজরের নামাজের সময় তার বিষমাখা বল্লম দিয়ে ওমরা ফারুক রা:কে আহত করলো।শেষ পর্যন্ত তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় হয়ে গেলেন।এর পর ওসমান রা: খলিফা নির্বাচিত হলেন।২৩-৩৫ হিজরি পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বছর তিনি খেলাফত চালালেন। ওসমান রা:খুবই নরম প্রকৃতির মানুষ ছিলেন।এমনই বিনয়ি ও নরম দিলের মানুষ ছিলেন যে দুশমনরা এ সময় মাথাছাড়া দিয়ে উঠলো।প্রশাসন যদি শক্ত থাকে সেখানে অপরাধ প্রবন মানুষগুলো অপরাধ করতে ভয় পায় কিন্তু প্রশাসন নড়বড়ে হলে তারা মাথাছাড়া দিয়ে উঠে এটাই স্বাভাবিক।আল্লাহর নবী সা: এক ঘটনার পর বলেছিলেন ওসমানকে ফেরেস্তারাও লজ্জা পায়।রাসূল সা: এও বলেছিলেন আমার দুই মেয়ে তার সাথে বিয়ে দিয়েছি যদি আমার আরো একটি মেয়ে থাকতো আমি তার সাথে বিয়ে দিতাম।তিনি জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহনকারীদের অন্যতম ছিলেন।তিনি ভবিষ্যৎ বানিও করেছিলেন ওসমান শহিদ হয়ে মারা যাবে।এই কথাগুলো ওসমান রা: অন্তরে ভাল করেই পোষন করতেন।তেমনি ওমর ফারুক রা: সম্পর্কে বলেছিলেন ওমরের সময় দ্বীন পূর্নতা লাভ করবে এবং ওমর হলো ফিতনার দরজা অর্থাৎ ওমর যখন দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে তখন ফিতনার দরজা খুলে যাবে।তাই ওমর ফারুক রা: এর বিদায়ের পর ইসলামের এই অপশক্তিগুলো মাথাছাড়া দিয়ে উঠতে লাগলো।ওসমান রা: এর যুগে বড় বড় সাহাবি ও ফকিহ ছিল যাদের নিয়ে তিনি ইসলামের বিজয় ও সম্প্রসারিত করলেন।এই অশুভ শক্তিগুলোর হিংসা আরো ধাউ ধাউ জ্বলতে থাকলো।ওসমান রা: এর খেলাফতে তারা একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তুললো কিভাবে মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করা যায়।আব্দুল্লাহ বিন সাবা ইয়ামেনের এক ইহুদি জারয সন্তান যার নাম ছিল ইবনুস সওদা।কারন বাপ ছিল না এবং সে মা'র নামেই পরিচিত ছিল।সে মুসলমানের মধ্যে ঢুকে মোনাপেক সেজে গেল এবং নাম ধারন করলো আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা।এবার সে ওসমান রা: এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করলো।মিশর থেকে শুরু করে বাসরা ও কুফা পর্যন্ত গ্রামে গ্রামে কুৎসা রটনা করতে লাগলো।এই যায়গাগুলোতে মুনাপেকরা ও অগ্নিপূজকরা বাস করতো।গ্রামে গ্রামে সে তাদের বলতে থাকে তোমাদের এখান থেকে কি কেউ রাজ্য পরিচালনা করে? তারা বলে না আমাদের কেউ করে না, মদিনার মানুষ করে। সে বলে এরা সব ওসমানের দলের মানুষ।সাধারনত গ্রামের মানুষতো রাজ্য চালায় না।কিন্তু এই বোকা মানুষগুলো ভাবলো ঠিকইতো আমাদের এখান থেকেতো কেউ রাজ্য চালায় না।আরো বললো ওসমান কোরআন জ্বালিয়ে দিয়েছে।

ওসমান রা: এর সময় অনারবরা যখন ইসলাম গ্রহন করলো তারা জানতো না কোরআন ৭ ভাবে পড়া যেতো।অনারবরা ইসলাম গ্রহন করলে এই কোরআন পড়া নিয়ে তাদের মত বাক বিতন্ডা হতো।ওসমান রা: মজলিসে সূরা ডাকলেন এবং বললেন কোরআনটা যদি একভাবে পড়া যায় তাহলে কেমন হয়? সিদ্ধান্ত হলো কুরাইশদের পদ্ধটি রেখে বাকি সব পদ্ধতির কোরআন পুড়ে দেয়া হবে।এটা ছিল সাহাবাদের ইজমা।আল্লাহর নবী সা: , আবুবকর রা:, ওমর রা: এর সময়ে হজ্বে কসর নামাজ পড়েছেন ৪ রাকাতের স্হলে দু'রাকাত আর ওসমান রা: চার রাকাত পড়েছিলেন কারন হলো সে বছরে গ্রাম গন্জ থেকে ছাগল চরানো সাধারন লোকরা এসেছিল যাদের দ্বীন সম্পর্কে তেমন জ্গান ছিলনা।তিনি ভাবলেন, আমি যদি কসর করে দুই রাকাত পড়ি তারা মনে করবে এখন নামাজ দুই রাকাত হয়ে গেছে ৪ রাকাতের স্হলে। যায়েজ আছে পুরা নামাজ পড়া তবে উত্তম হলো দুই রাকাত পড়া।সাধারন মানুষের কাছে এ রকম উসকানি দিয়ে বিভেদ সৃষ্টি ও চারদিকে হৈ চৈ শুরু হলো।আব্দুল্লাহ বিন সাবার নেতৃত্বে ১৪ জন মদিনায় প্রবেশ করে ওসমান রা: এর বাড়ি ঘেরাও করে ফেললো এবং তাকে হত্বার ষড়যন্ত্র এঁটে ফেললো।মোয়াবিয়া রা: তখন সিরিয়ার গভর্নর।তিনি বললেন মাত্র ১৪ জন মানুষ আপনি বলুন আমরা এদের সাথে যুদ্ধ করি।তিনি উত্তর দিলেন আমার জন্য অন্যদের রক্তপাত হউক সেটা আমি চাইনা এবং স্মরন করলেন রাসূল সা: এর ভবিষ্যৎবানী।মোয়াবিয়া রা: ওসমান রা: এর চাচাত বা ফুফাত ভাই ছিলেন।তিনি বললেন আপনাকে পাহারা দেয়ার ব্যাবস্হা করি।ওসমান রা:বললেন যারা পাহারা দিবে তাদের খরচ কোথা থেকে বহন করবে।মোয়াবিয়া রা: উত্তর দিলেন বায়তুল মাল থেকে।তিনি রাজি হলেন না।তার পর মোয়াবিয়া রা: বললেন যদি আপনি মারা যান তাহলে আপনার খুনের দাবি আমাকে দিতে হবে।ওসমান রা: বললেন ঠিক আছে তাই হবে।কারবালার ঘটনা বুঝতে এ পয়েন্টগুলো বুঝতে হবে।একটা ঘটনার সাথে আর একটা ঘটনার মিল রয়েছে।এদিকে ওসমান রা:কে পাহারা দেয়ার জন্য আলী রা: তার দুই ছেলে হাসান ও হোসাইন রা: কে পাঠালেন।তিনি এতই নরম মানুষ ছিলেন যে হিংসা বিদ্দেষ এসব পছন্দ করতেন না।যারা পাহারা দিতে এসেছিলেন তাদের সবাইকে বললেন তোমরা সবাই চলে যাও।তারা বললেন এটা কেন করে হয় আপনাকে ছেড়ে আমরা চলে যাব আর ওরা আপনাকে এসে হত্বা করবে।তিনি বললেন তোমরা কি আমাকে আমিরুল মু'মিনুন মান এবং আমার নির্দেশ মানতে হবে তা কি জান? তারা বলো হাঁ মানি ও জানি।আমি তোমাদের আমিরুল মু'মিনুন নির্দেশ করছি যার যার ঘরে চলে যাও।সবাই বাধ্য হয়ে আমিরের নির্দেশ মেনে যার যার ঘরে চলে গেল।ওসমান রা: কোরআন পড়ছিলেন, কুচক্রিরা ঘরে ঢুকে নির্মমভাবে ওসমান রা:কে হত্বা করলো।শহিদ হয়ে গেলেন ওসমান বিন আফ্ফান রা:।তাঁর স্ত্রী নায়লা বাধা দিতে গেলে তার হাতের আংগুল কেটে দিল।আলী রা: খবর পেয়ে হাছান হোছাইন রা: এর বুকে এমন জোরে আঘাত করলেন যে তারা ভূপতিত হয়ে গেল।মদিনার শান্তিকামি মানুষগুলো এ অবস্হায় এক বিভিষিকাময় অবস্হায় পড়ে গেলেন।সাহাবায়েকরাম মদিনা ছেড়ে গ্রামে চলে গেলেন এমনকি আলী রা: ও মদিনা ছেড়ে গ্রামে চলে গেলেন।আব্দুল্লাহ বিন সাবাসহ এই কুচক্রি দল হুমকি দেয়া শুরু করলো যদি তোমরা খলিফা নির্বাচন না কর আমরা খলিফা নির্বাচন করবো।আর না হলে অন্যদেরও হত্বা করবো।সাহাবায়েকরাম বিপদে পড়ে গেলেন।তারা সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন আলি রা: কে এই দায়িত্ব দিতে হবে।খোঁজ খবর নিয়ে গ্রাম থেকে তাকে নিয়ে আসা হলো।সবাই বললো এই দায়িত্ব নেয়ার মত আমাদের মধ্যে আর কেউ নেই আপনাকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং তিনি ছাপের মুখে বাধ্য হলেন।

সমস্যা হলো এই কুচক্রি দল বাইরে মুসলমান আর ভিতরে মুনাপেক ও অগ্নিপূজক।এরা বিভিন্ন যায়গায় গিয়ে মুল পদে বসে গেল এবং ছিল পরিকল্পিত।এরা আলি রা: এর সামনে এসে এক রকম এবং বাইরে গিয়ে আর এক রকম কথা বলে।তারা ভিতরে ভিতরে বলতে লাগলো লোকজনদের, তোমরা জান ওসমানকে কে হত্বা করেছে? তারা বলে কে হত্বা করেছে? তারা বলে আলি ছাড়া আর কে? খেলাফতের মোহে আলি ওসমানকে হত্বা করিয়েছে।তোমরা দেখতে পাচ্ছ না আলির আশে পাশে যারা হত্যা করেছে ওরাই ঘুরাঘুরি করছে।আবার এক দল আলি কে নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে লাগলো যে আলির ভিতর উলুহিয়াত আছে।আলি রা: এদের ধরে আগুন দিয়ে জ্বালালেন।তারা আরো বলতে লাগলো আবুবকর , ওমর ও ওসমানের চেয়ে উত্তম আলি রা:।আলি রা: এদের ধরে ধরে বেত্রাঘাত করতে শুরু করলেন।সাধারন লোকজন লক্ষ্য করলো যারা ওসমান রা:কে হত্বা করেছে তারাতো আলি রা: এর আশে পাশেই ঘুরাঘুরি করছে।তাহলে কি আলিই ওসমানকে হত্বা করেছে?আলি রা: এই কঠিন অবস্হায় বিপাকে পড়লেন।তারা এই ষড়যন্ত্র পুরো মিশর ,বসরা ও কুফা জুড়ে ভিতরে ভিতরে করতে থাকলো।আলি রা: ওসমান রা: এর হত্বার বিচার করার অংগীকার করলেন দেশের পরিস্হিতি শান্ত হওয়ার পরে। কিন্তু মোয়াবিয়া রা: ওসমান রা: থেকে অংগিকার নিয়েছিলেন যে আপনাকে যদি হত্বা করা হয় তাহলে আমিই এই হত্বার প্রতিশোধ নিব।আলি রা: দেশের পরিস্হিতি চিন্তা করে মোয়াবিয়া রা:কে বললেন যখন দেশের পরিস্হিতি কন্ট্রোলে আসবে আমিই বিচার করবো তবে তুমি আমাকে সাহায্য কর।মোয়াবিয়া রা: বললেন কি এমন পরিস্হিতি হয়েছে সামান্য এ মোনাপেকদের কেসাস করে দিলে পরিস্হিতি ঠান্ডা হয়ে যাবে।এখানে রাজনৈতিক দৃষ্টিভংগিতে দুটো মতই ঠিক হতে পারে।মোয়াবিয়া রা: কে জিজ্গেস করা হলো আপনি কি আমির হিসেবে আলিকে মানেন না? তিনি বললেন অবশ্যই মানি।আপনি কি নিজেকে আলির চেয়ে উত্তম মনে করেন? তিনি বললেন অবশ্যই না।তবে আমি একটি কথার জবাব চাই আমার ভাইকে যারা নির্মমভাবে হত্বা করলো এবং ঐ লোক গুলো আশে পাশেই ঘুরছে তাদের বিচার চাওয়ার আমার অধিকার আছে কি নাই? বিশেষ করে ওসমান রা: এর রক্ত মাখা জামা এবং তার স্ত্রী নায়লার কেটে দেয়া আংগুল মোয়াবিয়া রা:কে দেয়া হলো।তিনি জুম'আর দিনে সকলকে উদ্দেশ্য করে বললেন এই মজলুমের বিচার চাওয়ার আমার অধিকার আছে কি নাই?সবাই বললো অবশ্যই আছে।আলি রা: ও মোয়াবিয়া রা: - দুজনের যুক্তিই ঠিক।আলি রা: ভাবতেছিলেন পুরো দেশের কথা।মোয়াবিয়া রা: বললেন আপনি ভাবছেন কেন আপনি এ দায়িত্ব আমার কাছে দিয়ে দিন।আপনার যেমন দায়িত্ব দেয়ার অধিকার আছে তেমনি আমারও নেয়ার অধিকার আছে।এখানে দুটো মতবিরোধ হওয়ায় এই কুচক্রিদলের সুযোগ বেড়ে গেল।কারবালা বুঝতে হলে এ ফেক্ট বুঝতে হবে।আলি রা: ও মোয়াবিয়া রা: তাদের স্ব স্ব মতের উপর থাকলেন।এভাবে ফিতনা বেড়ে যেতে থাকলো।মা আয়শা রা: এই কঠিন মুহূর্তে ওমরাহ করার জন্য মক্কা গেলেন।মক্কায় কিছু সাহাবি তাঁকে বুঝালেন আপনি উম্মুল মু'মিনিন,আপনার স্হান অনেক উপরে,আজ মুসলিম উম্মাহ যে কঠিন অবস্হার দিকে ধাবিত হচ্ছে আপনি যদি এ সব মানুষদের বলেন হয়ত মানুষ মেনে নিবে।সাহাবাদের পিড়াপিড়িতে তিনি তখন মিশর ,কুফা ,বাসরা এ সমস্ত এলাকায় গেলেন ও লোকজনকে বুঝালেন।মা আয়শা রা: যখন বের হয়ে গেলেন এই মোনাপেকের দল প্রচার করলো আয়শা রা: বেরিয়েছেন আলি রা: এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করার জন্য।তিনি যখন বাসরায় গিয়ে পৌঁছলেন দেখলেন পরিস্হিতি অনেক কঠিন।লোকজনকে বলে বুঝানো যাচ্ছে না।এদিকে আলি রা: কিছু সৈন্যসামন্ত নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন।বাসরায় গিয়ে মা আয়শা রা: এর সাথে তার সাক্ষাৎ ও মত বিনিময় হলো এবং জানতে পারলেন মা আয়শা রা: তার পক্ষে।শিয়াদের কিতাবাদিতে আছে মা আয়শা রা: আলি রা: এর বিরুদ্ধে।মা আয়শা রা: বললেন আমি মদিনায় ফিরে যাব এবং এরকম কথা হয়ে রাতে যার যার যায়গায় ঘুমিয়ে পড়লো।ঐ কুচক্রি আব্দুল্লাহ বিন সাবা এর দল ভাবলো ফিতনা তো মিটে গেল।তারা অতর্কিতে মা আয়শার সাথে যারা ছিল তাদের উপর হামলা চালালো।আর ওরাই বলাবলি করতে লাগলো আলি খেয়ানত করেছে।দুই দলে একটা যুদ্ধ হয়ে রক্তপাত হয়ে গেল যাকে বলে উষ্ট্রির যুদ্ধ। মা আয়শা রা: যে উটের উপর ছিলেন ঐ উটের পা কেটে দিলে তিনি আহত হলেন।আলি রা:বুঝতে পারলেন এটা একটি ষড়যন্ত্র।তিনি মা আয়শাকে সম্মানের সহিত মদিনা পাঠিয়ে দিলেন।কোন একটা কু করার জন্য অনেক মানুষের প্রয়োজন হয় না যে কোন একজন করলেই হয় এবং তারা এভাবেই ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করলো।এবার আলি রা: মোয়াবিয়া রা:এর কাছে গেলেন এবং বললেন এর সাথে তুমি দ্বিমত পোষন করোনা।ওখানে সিফ্ফিন নামক যায়গায় দুই দলের কথোপকথন শুরু হলো।এটা ছিল ৩৭ হিজরির ঘটনা।দুই পক্ষের মধ্যে পক্ষে বিপক্ষে কথা হচ্ছে।মোনাপেকরা তো আলি রা;কে উস্কানি দিচ্ছে এই বলে যে , আপনি হলেন আমিরুল মু'মিনিন কেন আপনি তার কথা মেনে নিবেন ইত্যাদি---।শেষ পর্যন্ত ওখানেও একটি যুদ্ধ হয়ে গেল।দুই দলে সমঝোতায় আসলো।আলি রা: এর পক্ষ থেকে আবু মুসা আশয়ারি রা; আর মোয়াবিয়া রা: এর পক্ষ থেকে আমর বিন আস রা: কে বিচারক মানা হলো।তারা যে পায়সালা করে দিবে দুই দল মেনে নিবে।দুইজনে বসে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলেন এক বছর এই বিষয়টি স্হগিত থাকবে।যখন চুক্তি হচ্ছে দুই পক্ষের, তখন বলা হলো লিখ-আমিরুল মু'মিনিন আলি ইবনে আবুতালিব এবং মোয়াবিয়া ইবনে আবুসুফিয়ানের মধ্যে চুক্তি।তারা বললো আমরা আলিকে আমির মানি না।আমির কেটে দাও।আলি রা: বললেন ঠিক আছে আমার নামের সাথে আমিরুল মু'মিনিন কথাটি কেটে দাও।এইখানে আলি রা: এর পক্ষের লোকরা দুই দলে বিভক্ত হয়ে গেল।একটা হলো খারেজি তারা আলি ও মোয়াবিয়া এদের সবাইকে কাফের ফতুয়া দিয়ে কুফায় হারুরা নামক একটা গ্রামে চলে গেল এবং সারারাত তাহাজ্জুদ ও কোরআন পড়ে ও সারাদিন রোজা রাখে।এদের সম্পর্কে ভবিষ্যত বানী নবী সা: করে গেছেন যে, এরা দ্বীন থেকে এইভাবে বের হয়ে যাবে তাদের নামাজ ,রোজা ও এবাদতের কাছে তোমাদের নামাজ ,রোজা ও ইবাদতকে তুচ্ছ মনে করবে।কিন্তু তারা যে কোরআন পাঠ করবে তা হুলকুম থেকে ভিতরে প্রবেশ করবে না।এদের যেখানে পাও সেখানে ধরে হত্বা করবে।আমি বেঁচে থাকলে তাদের হত্বা করতাম।এরা প্রায় ২৪০০০ লোক এভাবে বের হয়ে চলে গেল।যারা আলি রা: এর পক্ষে থেকে গেল এরা হলো শিয়া।এরাই আব্দুল্লাহ বিন সাবার দলের লোক।যারা খারেজি তারা কেন কাফের বললো তাদের প্রথম যুক্তি হলো- পায়সালা হবে আল্লাহকে দিয়ে মানুষকে দিয়ে কেন পায়সালা করলো? যে আল্লাহর বিধান দিয়ে পায়সালা করবেনা সে কাফের।এইজন্য আলি ও মোয়াবিয়া কাফের।দ্বিতীয় বিষয় হলো-কেন আমিরুল মু'মিনুন কেটে দিল নামের আগে থেকে? যখন আমিরুল মু'মিনুন না, তাহলে কি শয়তানের আমির? তৃতীয় বিষয় হলো-উষ্ট্রির যুদ্ধের গনিমতের মাল কেন আমির নিল না এবং অন্যদলের লোকজনকে কেন বন্দী করলো না? এই তিনটি ইস্যুতে খারেজিরা কাফের ফতোয়া দিয়ে বেরিয়ে চলে গেল।আলি রা: এর সাথে পরামর্শ করে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ তাদের বুঝালেন, আমিরুল মু'মিনুন যে কেটে দিলেন তাতে কেমনে বুঝলা শয়তানের আমির হয়ে গেল? আল্লাহর নবী সা: যখন মক্কার কাফেরদের সাথে হুদাইবিয়ার সন্ধি করলো, আল্লাহর নবী সা: বললেন লিখ-মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে চুক্তি।তারা বললো তোমাকে আমরা রাসূল মানি না।রাসূল কেটে দাও।চুক্তি লিখতেছিলেন আলি ইবনে আবুতালিব রা:। রাসুল সা: আলি রা: কে বলেন রাসূল কেটে দাও আর লিখ-মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ আর কুরাইশের মধ্যে চুক্তি।আলি রা: বললেন আমার হাত দিয়ে রাসূলুল্লাহ কাটতে পারবো না।রাসূল সা: বললেন দেখাও কোথায় রাসূলুল্লাহ কারন তিনি লেখাপড়া জানতেন না।দেখানোর পর নিজের হাত দিয়ে কেটে দিলেন।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ বললেন হে মূর্খের দল আল্লাহর নবী যদি রাসূলুল্লাহ কেটে মুসলমান থাকে তাহলে আমিরুল মু'মেনিন কাটলে কাফের হয় কিভাবে।তারা বললো কথাতো ঠিক এটা না হয় বুঝলাম আর অন্যটা মানুষের হাতে পায়সালা উঠিয়ে দিলেন যে সেটা কিভাবে।তিনি বললেন আল্লাহইতো মানুষের হাতে বিচার উঠিয়ে দিয়েছেন। ধর স্বামি স্ত্রী যদি বিবাদ হয় আর মিমাংসা না হয় তাহলে স্বামীর পক্ষের একজন ও স্ত্রীর পক্ষের একজন ন্যায়পরায়ন পরামর্শ করে দুই জনে যে পায়সালা দিবে তা মেনে নিতে হবে। আল্লাহইতো এই পায়সালা দিয়েছে।তোমরা যে বলছো আয়শার রা: এর গ্রুফকে ধরে দাস দাসি করে সম্পদ লুটে নিতে হবে।আয়শা রা: উম্মুল মু'মিনুন কিনা? তারা বললো হাঁ ।দাসী হলে তো স্ত্রীর মত ব্যাবহার করা যায়।তাহলে তোমরা আয়শাকে দাসী বানাতে চাও? তারা বললো আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই তা কিভাবে সম্ভব? তাহলে এগুলো কিভাবে বলছো।এর পর তারা বললো আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে। এর বেশির ভাগ মানুষ ফিরে আসলো তবে কিছু সংখ্যক বাতিল আক্কিদার মধ্যেই থেকে গেল কারন ওদের ষড়যন্ত্র ছিল ভিতরে ও বাইরে থেকে ইসলামকে ধংস করতে হবে।

কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের আক্কিদা ও ঈমান কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে সে খবর আমাদের অনেকেরই নেই অথচ আমরা ইবাদত করেই চলছি।ক্কেয়ামতের মাঠে এ সব শির্ক ও বিদাআতি আমল নিয়ে যখন উঠবে আল্লাহ সব ধূলিসাৎ করে দিবেন।আমাদের দেশে কারবালার যে ইতিহাস রয়েছে তা এই কুচক্রিদের বানানো ইতিহাস।ইসলামি ঐতিহ্যের ইতিহাস নয়।আমাদের দেশে আমি নিজে দেখেছি আশুরার দিন আসার আগে অনেকে বিষাদ সিন্ধু পড়ে শেষ করেন।ইসলামের ইতিহাসকে উল্টাদিকে চালিয়ে দেয়া হয়েছে।আসল ইতিহাসকে দাপন করে মিথ্যা ইতিহাসকে ছড়িয়ে দিয়ে মুসলানদের আক্কিদা ধংস করে দিয়েছে।আলি রা:৩৫-৪০ হিজরি পর্যন্ত ওসমান রা: এর খুনের বিচার করবেন তা হয়ে উঠে নি।এই মোনাপেকের দল এখানের কথা ওখানে , এখানের কথা ওখানে করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে আলি রা; তিক্ত হয়ে মোয়াবিয়া রা; কে চিঠি লিখলেন,মোয়াবিয়া তোমার একটা মানুষ দিয়ে আমার ১০টা মানুষ বদল কর।কারন তিনি জানতেন মোয়াবিয়ার কাছে যারা আছেন তারা মোনাপেক,ইহুদি ও শিয়া রাফেযি ও অগ্নিপূজকের বাচ্চা না। শেষ পর্যন্ত এই শিয়া ও খারেযিরা যৌথ একটা পরিকল্পনা নিল তিন জনকে দুনিয়া থেকে বিদায় করতে হবে। আলি , মোয়াবিয়া ও আমর ইবনে আস রা: কে।আলি রা:কে হত্বা করতে তারা সমর্থ হলো।মোয়াবিয়া রা:অসুস্হ থাকায় সেদিন ফজরে বের হতে পারেন নি আর আমর ইবনে আস টের পেয়ে গিয়েছিলেন যার ফলে এ দু'জন বেঁচে যায়। সমস্যা যেটা হলো,আলি ও মোয়াবিয়া রা: এর মধ্যে তো একটা বিভেদ ছিল।এই কুচক্রিরা এবার আর একটা সুযোগ নিল, তারা বলতে লাগলো আলিকে হত্বা করেছে মোয়াবিয়া।কিন্তু আলি রা:কে যখন আহত করা হয় তিনি বলেছিলেন আমার নিজের দলের মানুষই আমাকে হত্বা করলো।এর পর খলিফা বানানো হলো হাছান রা: কে।তিনি নিজের জীবদ্দশায় দেখেছিলেন মোনাপেকদের কাজকর্ম।হাছান রা: ৪১ হিজরির ১৭ই রমজান থেকে ২৫শে রবিউল আউয়াল পর্যন্ত মোটামুটি প্রায় ছয় মাস খেলাফত চালালেন।তিনি দেখলেন এই সব মোনাপেকদের তার বাবাই সামলাতে পারেননি তিনি কিভাবে পারবেন।তিনি তার ছোট ভাই হোছাইন রা:কে সাথে নিয়ে চলে গেলেন মোয়াবিয়া রা: এর কাছে এবং বললেন আমার দ্বারা খেলাফত চালানো সম্ভব নয়।আপনাকে দায়িত্ব দিলাম আপনি খলিফা হয়ে যান আমি ইস্তফা দিলাম।ছোট ভাই হোছাইন সহ মোয়াবিয়া রা:এর কাছে বায়াত করে ফিরে এলেন মদিনায়।এর আগে আলি রা;কে দিয়ে এই মোনাপেকের দল রাজধানী কুফায় নিয়ে গিয়েছিল।মোয়াবিয়া রা: আহলে বাইতকে সম্মান করতেন এবং তাদের সবচেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা দিতেন যা দিয়ে বছর আরামে চলে যেত।যখন যুদ্ধের সময় আসতো হাছান হোছাইনকে ডাকতেন এবং ওনারা অংশগ্রহন করতেন।এভাবে ২০টি বছর কেটে গেল।৪১ -৬০ হিজরি পর্যন্ত মোয়াবিয়া রা: খেলাফত চালালেন যোগ্যতার সাথে।ইসলামের ইতিহাসে যোগ্যতার সাথে ও দীর্ঘ সময় আর কেউ খেলাফত চালাতে পারেন নি।তিনি ভাল করে জানতেন এই মোনাপেকের দলগুলোকে কিভাবে দাবিয়ে রাখতে হবে।৫০ হিজরিতে হাছান রা:কে তারা বিষপানে হত্বা করলো।এরাই তারা যারা হত্বা করলো ওসমানকে,আলিকে ও হাছানকে এবং বলে দিল মোয়াবিয়াই হাছানকে হত্বা করেছে। হাছান রা: এর মৃত্যু সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে কিন্তু হোছাইন রা: এর পর ১১ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি খুনের দাবির জন্য কাউকে সন্দেহ করেন নি কারন কে বা কারা করেছে তিনি জানতেন না বা পরিবারের কেউ দাবি করেনি কারন এ অজানা কে বা কারা করেছে।সাক্ষি ছাড়া কাউকে সন্দেহ করা হারাম।মোয়াবিয়া রা: যখন তার শেষ সময়ে এলেন তখন তিনি পরামর্শ সভা ডেকে বললেন কাকে খেলাফতের দায়িত্ব দেয়া যায়।তারা মতামত দিল মোয়াবিয়া বিন এজিদকে এ দায়িত্ব দেয়া যায়।এজিদকে তিনি বিভিন্ন যুদ্ধে সেনাপতি বানিয়েও পাঠিয়েছিলেন। এমনকি আল্লাহর নবী সা: এর ভবিষ্যত বানি ছিল ইস্তাম্বুলের প্রথম যুদ্ধে যারা অংশগ্রহন করবে তারা সবাই ক্ষমা প্রাপ্ত।সেই যুদ্ধের সেনাপতি ছিলেন এজিদ বিন মোয়াবিয়া।এই যুদ্ধের সবচেয়ে বীর সৈনিক মুজাহিদ ছিলেন হোছাইন রা: । এখানে বুঝার একটি ব্যাপার হলো তাদের মধ্যে যদি দ্বন্দ থাকতো তাহলে অধিনস্ত হয়ে কি যুদ্ধ করতে যেতেন? হাছান রা: তার জীবদ্দশায় যখনি মোয়াবিয়া রা: ডেকেছেন যুদ্ধে অংশগ্রহন করার জন্য তিনি গিয়েছেন।হোছাইন ও করেছেন।এখন সমস্যাটা দেখা দিল এজিদের নামে বায়াত হয়ে গেল সারা হুকুমায়।মদিনায় আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রা; আর হোছাইন রা: বায়াত করলেন না।তাদেরকে বলা হলো বায়াত করেন তারা বললো আমরা একটু চিন্তা ভাবনা করে নেই। এর মধ্যে ঐ মুনাপেকের দল কুফা থেকে হোছাইন রা: এর কাছে চিঠি লিখে।চিঠির সংখ্যা সম্পর্কে মত বিরোধ রয়েছে।কেউ বলেছেন ৫০০ ,১৪০০ বা ২২০০ চিঠি।তারা বললো আমরা এজিদকে মানিনা আপনাকে আমির হিসেবে চাই।হোছাইন রা: একটা ধোকায় পড়ে গেলেন এবং নিজেকে এজিদের চেয়ে যোগ্য মনে করলেন এবং তিনি অবশ্যই যোগ্য কারন তিনি আহলে বাইতের মানুষ।কিন্তু একটি কথা এখানে মনে রাখতে হবে, যেখানে একজন আমির নিযুক্ত হয়ে গেছে সেখানে আর একজন বায়াতের জন্য শরিয়তে যায়েয নয়।তিনি তার চাচাত ভাই মুসলিম বিন আকিলকে পাঠালেন কুফাতে পরিস্হিতি পর্যবেক্ষন করার জন্য।তিনি গিয়ে দেখলেন তারা তাকে শুভেচ্ছা জানালো এবং একদিনে ২০হাজার লোক হোছাইন রা: এর পক্ষে বায়াত করে নিল এবং এরা ছিল সব মোনাপেকের দল।এদের উদ্দেশ্য হলো আর একটা কলহ করার জন্য।মুসলিম বিন আকিল যখন কুফায় গেলেন তখন এজিদ বিন মোয়াবিয়া ক্ষমতায়।নোমান বিন বশির ছিলেন কুফার আমির।বাসরার আমির ছিল উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদ এবং সে ছিল শিয়া গ্রুফের লোক।নোমান বিন বশিরকে বরখাস্ত উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদকে কুফা ও বাসরার আমির করা হলো।মুসলিম বিন আকিল চিঠি লিখে পাঠালেন হোছাইন রা;কে যে আপনার নামে বায়াত হয়ে গিয়েছে আপনি চলে আসুন এবং এটা ছিল সকাল বেলার ঘটনা।মুসলিম বিন আকিলকে সংগে নিয়ে এবং চার হাজার সৈন্য নিয়ে তারা গভর্নর হাউজে হামলা করলো।সন্ধার পরে উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ গোত্রপতিদের বললো যে করে হোক পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রনে রাখ কারন এজিদ বিন মোয়াবিয়া তাকে চিঠি পাঠিয়েছে।উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ বিভিন্ন ভাবে আকিল বিন মুসলিমের কাছ থেকে মানুষকে সরাতে লাগলো।সন্ধার পরে মুসলিম বিন আকিলের সাথে আর কোন লোকই থাকলোনা।তিনি এমন বিপাকে পড়লেন যে রাস্তাঘাট চেনা নেই।এর পর উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ তাকে খোঁজ করে ধরে নিয়ে আসলো।এদিকে মুসলিম বিন আকিল তাকে হত্বার আগে আবার হোছাইন রা:কে চিঠি লিখলেন আপনি এদিকে আসা থেকে বিরত থাকুন।এরা চক্রান্ত করেছে ও খেয়ানত করেছে।শিয়ার দলরা পথিমধ্যে এই পত্রবাহককে জবাই করে হত্বা করে।হোছাইন রা: আগের পত্র পেলেন কিন্তু শেষের পত্রটি পেলেন না।যিলহজ্জ মাসে ৮ তারিখ সবাই হজ্জে চলে গেলেন।হোছাইন রা: তার পরিবার পরিজন নিয়ে কুফার দিকে বের হলেন।সাহবায়েকরাম বিশেষ করে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর , আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ,আব্দুল্লাহ ইবনে আমর বিন আস,আবু সাঈদ খুদরি,আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর এবং মোহাম্মদ বিন হানাফিয়া বললো আপনি সেখানে যাবেন না।আমাদের বাবা আলিকে ,আমাদের ভাই হাছানকে এই মোনাপেকরা হত্বা করেছে।তারা মুসলিম বিন আকিলকে হত্বা করলো।আব্দুল্লাহ বিন ওমর হোছাইন রা: এর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং বললেন আপনি কি জানেন না এরা মোনাপেকের দল আপনার বাবাকে ও ভাইকে হত্বা করেছে এবং ওসমানকেও হত্বা করেছে।আপনি যদি যাবেন একাই যান ছেলে মেয়ে রেখে যান।আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর হতাশ হয়ে বললেন আপনারা আহলে বাইতের মানুষ।রাসূল সা:কে আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতের যে কোন একটিকে বাচাই করার এখতিয়ার দিয়েছিলেন তিনি আখেরাতকে বেচে নিয়েছিলেন।আমরা আপনাদের বুঝাতে পারবো না এবং মৃতুর দোয়া দিয়ে বিদায় জানালেন।ইসলামের ইতিহাস আজো স্বর্নাক্ষরে লিখা আছে।অথচ আমাদের দেশে এ সব বিদাআতি হুজুররা পড়ালেখা ছাড়া সাহাবায়েকরামদের সম্পর্কে যে সব অযৌক্তিক বই পুস্তক লিখেছেন তা পড়ে এখনকার অজ্গ মুসলমানরা।কোরানে আল্লাহ পাক বলেছেন,আল্লাহ তাদের উপর খুশি তারাও আল্লাহর উপর খুশি। ঈমাম খোমেনি ছিল সবচেয়ে বড় শয়তান।যখন ইরানে বিপ্লব হলো তাকে স্বাগতম জানিয়েছিল আমাদের ভারত উপমহাদেশের তথাকথিত আলেম সমাজ।ইসলামের উপর যদি তাদের গবেষনা থাকতো তাহলে তারা এ কাজ করতে পারতো না।এ সমস্ত মুফতিরা হলো বিষাদ সিন্ধুর মুফতি।হোছাইন রা:বের হয়ে গেলেন।এদিকে উবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদ হুর ইবনে এজিদ তামিমির নেতৃত্বে ১০০০ সৈন্য দিয়ে হোছাইন রা:কে বাধা দেয়া হলো কারন এজিদ লিখেছে এ ফিতনার জন্য হোছাইনই কারন।তিনি আহলে বাইতের সাথে পরামর্শ করলেন চল আমরা ফিরে যাই।কিন্তু মুসলিম বিন আকিলের ছেলেমেয়েরা বললো আমরা আমাদের পিতার হত্বার বদলা নিব। হোছাইন রা: একটা বিপাকে পড়লেন এবং বললেন ঠিক আছে এগুতে থাক।যেতে যেতে পৌঁছলেন কারবালায়।কারবালা মানে বিপদের পরীক্ষা।উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ আরো চার হাজার সৈন্য পাঠালো।এরা গিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করলেন হোছাইন রা: কে যে আপনি ফিরে যান।তিনি তাদের কাছে তিনটি প্রস্তাব রাখলেন-১) আমাকে মদিনায় ফিরে যেতে দাও ২)এজিদের কাছে আমাকে যেতে দাও বা ৩) আমাকে যুদ্ধ করতে দাও।হুর ইবনে এজিদ বললো ঠিক আছে আমরা এ প্রস্তাব গভর্নরের কাছে পাঠাই আর আপনি এ প্রস্তাব এজিদের কাছে পাঠান।উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ বললো যেটা উনি করতে চায় সেটাই করতে পারেন।এখানে সীমার ইবনে যিল যৌশন এ ছিল শিয়ার গ্রুফের মানুষ।সে উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদকে বললো আপনি এখন গভর্নর,আপনার মতে তাকে আসতে হবে তা নাহলে তাকে যুদ্ধ করতে হবে।উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ বললো তাহলে তুমি গিয়ে বল।সীমার ইবনে যিল যৌশন গিয়ে বললো আপনাকে উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদকে মানতে হবে আর না হয় যুদ্ধ করতে হবে।হোছাইন রা: বললেন না আমার তিনটি প্রস্তাবের যে কোন একটা মানতে হবে আমি তার কাছে যাব না।বললো তাহলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।তিনি বললেন আমাকে একটি রাত দাও।সারারাত তিনি কোরআন ও নামাজ পড়লেন ও আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করলেন।সকাল বেলা তারা বললো উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ যা হুকুম দিবেন তা মেনে নিবেন অথবা আপনাকে যুদ্ধ করতে হবে।শেষ পর্যন্ত তিনি যুদ্ধকে বেচে নিলেন।যুদ্ধ শুরু হলো।একদিকে তাদের সুসজ্জিত ৫ হাজার সৈনিক।আর আহলে বাইতের সামান্য সংখ্যা।আহলে বাইতের সব শহিদ হতে থাকলেন।এর পর সীমার ইবনে যিল যৌশন বললো আর কত অপেক্ষা করবে কারন হলো রাসূল সা: এর নাতি হোছাইনের উপর অস্ত্র ধরার সাহস তাদের হচ্ছে না।সীমার ইবনে যিল যৌশন যখন মারার জন্য উস্কানি দিয়েছে খাওলা আল আসবাহি এক বল্লম দিয়ে হোছাইন রা: বুকে আঘাত করলো।হোছাইন রা: সাথে সাথে মাটিতে চিৎ হয়ে পড়ে গেলেন।এর পর সিনান বিন আনাস আন নাখায়ি এই মালাউন গিয়ে তার বুকের উপর বসে মাথা কেটে দ্বিখন্ডিত করে ফেললো।এইভাবে এই মোনাপেকের দল নবী দৌহিত্রকে হত্বা করলো।তারা হোছাইন রা: এর মাথা এবং বাকি যারা ছিল আহলে বাইতের উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদের কাছে হাযির করলো।উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদ লাঠি দিয়ে মুখে খোঁচা দিচ্ছিলো।আনাস ইবনে মালিক বললো তুমি করকি? আমি রাসূল সা;কে কতবার দেখেছি এই মুখে চুমু দিতে।এই উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদকে তারই ছেলে মোখতার বিন আবু উবাইদ হত্বা করে এবং কুফার মসজিদে যখন তার জানাযার ব্যাবস্হা করা হয় লোকজন হৈ চৈ শুরু করে দিল।একটা সাপ এসে তার মুখ দিয়ে ঢুকে নাক দিয়ে বের হয়েছিল তিনবার।আল্লাহ তাকে এই দুনিয়াতে লান্চিত ও ঘৃনিত বলে প্রমানিত করলো। ঘটনা এখানে শেষ হলো কিন্তু হোছাইন রা: এর হত্বার পিছনে ইহুদিরা ও শিয়ারা এবং তারা তা চাপিয়ে দিল এজিদের উপর।যখন এজিদের কাছে হোছাইন রা: এর মাথা ও আহলেবাইতের সদস্যদের নিয়ে যাওয়া হয় তখন তার বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গেল।যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের ধিক্কার দেয়া হলো এই বলে যে তোমরা রাসূল সা: এর নাতিকে হত্যা করেছ এবং সম্মানের সাথে আহলে বাইতের সদস্যদের বললেন আপনারা আমার এখানে থাকুন এবং মদিনা যেতে চাইলে সম্মানের সাথে মদিনা যাবেন।ইসলামের ইতিহাস বলে এজিদ বিন মোয়াবিয়া তাদের বিশেষ নিরাপত্তার সাথে মদিনা পাঠালেন এবং যতক্ষন পর্যন্ত তারা মদিনা না পৌঁছেছে তিনি ঘুমান নি খাওয়া দাওয়াও করেন নি।ইসলামের শক্রুরা সাধারন মুর্খ মানুষদের কাছে এভাবে একের বোঝা অন্যের উপর চাপিয়ে তারা ফায়দা লুটেছে।ইতিহাসে এজিদ বিন মোয়াবিয়ার উপর যে অপরাধ চাপিয়েছে তা ইসলামের প্রকৃত ইতিহাস নয়।বিষাদ সিন্ধুর মধ্যে হাজারো মিথ্যা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে এবং বাংলার সাহিত্যে মীর মোশারফ হোসেন শিয়াদের অনুসরনে কাব্য রচনা করে বাংলার মুসলমানকে মিথ্যার ঝুরি দিয়ে সাজিয়ে ইসলামের ঐতিহ্যকে ম্লান করলো যা আজ অজ্গ মুসলিমরা কোরআন ও সূন্নাহ ছেড়ে দিয়ে ইবাদতের অংশ বানিয়ে নিয়েছে।সেজন্য তারা পবিত্র আশুরার দিনে রোজা না রেখে খতম দেয় এই বিষাদ সিন্ধু।এই কারবালাকে কেন্দ্র করে চারটি গ্রুফ হয়ে গেল।আহলে সূন্নাহ আল জামাআর আক্কিদা হলো এই হত্যাকান্ড ছিল একটি নির্মম কাজ।যারা হত্যাকারি ও হত্যায় যারা সাহায্য করেছে তারা আল্লাহর কাছে জঘন্য পাপাচারি।মুসলমানদের জন্য এটি বিপদ আর বিপদ আসলে প্রতিটি মুসলমান বলে 'আমি আল্লাহর জন্য এবং আমাকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে'।কোন মৃত্যু হলে শোক করবে স্ত্রী চার মাস দশ দিন এবং সত্রী ছাড়া অন্যরা করবে তিন দিন।এর পরে আর কোন শোক নেই।রাসূল সা: এর মৃত্যু বেশি বড় মর্মান্তিক না হোছাইনের।আলি রা: এর হত্বার পর হাছান হোছাইন তো ২০ বছর বেঁচে ছিলেন তারা তো কখনো শোক পালন করেন নি কারন তারা জানতেন তিনদিনের বেশি শোক পালন করা যাবে না।যারা এসব শির্ক বিদাআতের উদ্ভব ঘটিয়েছে তারা ইসলামের শক্রু এ বোধ মুসলামানদের জাগ্রত করার জন্য হক্কানি উলামাদের কাজ করে যেতে হবে এবং প্রচার সম্প্রচার বাড়াতে হবে।শিয়া রাফেযিরা কেন তাদের রক্তাক্ত করে তা মুসলমানদের জানতে হবে।যখন হোছাইন রা;কে নির্মমভাবে হত্যার ষড়যন্ত্রে ঢুকিয়ে দিয়েছিল এটাকে যারা বুঝতে পেরেছে ওরাই এভাবে নিজেদের মেরে রক্তাক্ত করে তাদের গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত করতে চায় দুনিয়ার জীবনে।সেজন্য এ দিনটিকে তারা বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে স্মরন করে যা ইসলামে নেই।আর একটি গ্রুফ সাধারন সূন্নি মুসলমান নাম ধারন করে এই দিনে হালুয়া শিরনির ব্যাবস্হা করে।হোসনি দালানের ওখানে দেখবেন তারা ডাল চাল উঠিয়ে লোকজনের মধ্যে খাবার বিতরন করে।সারা দেশে এধরনের মুছুল্লি দেখতে পাওয়া যায়।আর একটি গ্রুফ নাসেবি খারেযি যারা আহলে বাইতের বিরোধী তারা খাওয়া দাওয়া ও পোষাক পরার মত আনন্দ উপভোগ করে থাকে।

যারা আহলে সূন্নাহ আল জামাআতকে অনুসরন করবে তারা এই দিনে রোজা ছাড়া আর অন্য কিছুই করবে না।মোয়াবিয়াকে ও এজিদকে কাফের বলা বা সাহাবাদের বিরুদ্ধে লেখা লেখি করা এক জঘন্য অপরাধ।ঐতিহাসিকগন বলেছেন এজিদের সম্পরকে যতগুলো কথা বলা হয়েছে সব মিথ্যা শুধুমাত্র একটি কথা এজিদ শিকার করা পছন্দ করতো।সেই যুগে শিকার করা ছিল বাহাদুরের কাজ।ঈমাম বোখারি (র) সন্ধার পূর্ব মুহুর্তে পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে তীর ধনুক ছুঁড়ে শিখতেন।অনুসারিরা প্রশ্ন করলে তিনি বলতেন যদি কখনো মুসলমানের উপর কোন জালেমের অত্যাচার নেমে আসে তাহলে ঈমাম বোখারি কি ঘরে বসে থাকবে? বাগদাদ ও মিশরের ধংসের ইতিহাস মুসলমান যদি পড়তো তাহলে শিয়া রাফেযিদের আসল চেহারা দেখতে পেতো।দুর্ভাগ্য আমরা মুসলমানরা আজ নিশ্ব হতে চলছি একমাত্র আমাদের জ্গানের অভাবে এবং আমরা ছুটছি সম্পদের দিকে আর অনুসরন করছি ইহুদি , খৃষ্টান ও অগ্নিপুজকদের।আজকের পৃথিবীতে চোখ খুলে দেখুন কি হচ্ছে ইরাকে,শিরিয়াতে,মিশরে,ফিলিস্তিনে,বসনিয়া-হরজেগোবিনা,আফগানিস্তান,কাশ্মিরে।কাফের মুশরেক,শিয়ারা এবং মুসলমানের নামে ইহুদি খৃষ্টনদের দোসর রা মিলে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোকে বিপর্যস্ত করছে।আল্লাহ কমিউনিস্টদের অত্যাচার থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করেছে আর এখন আর এক শক্তি ধংসের অপেক্ষায় আছে।তবে মুসলমানদের তাদের নিজ অবস্হানে ফিরে আসার জন্য আলকুরআন ও সূন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে হবে তাহলেই তারা ইহকাল ও পরকালের জন্য কামিয়াবি হবে।

বিষয়: বিবিধ

২৯৬১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

251935
০৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:০২
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : অনেক দীর্ঘ আলোচনা। আরেকটু গুছিয়ে লিখলে অসাধারন হতো। তথাপি সুন্দর ও উপকারী আলোচনা। অনেক ভাল লাগলো। জাযাকাল্লাহ খইর।
252539
০৯ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:১২
আনোয়ার আলী লিখেছেন : ঈমাম খোমেনি ছিল সবচেয়ে বড় শয়তান।----আপনার এই একটা বক্তব্য থেকেই বোঝা যায় পুরা লেখাটাই একটা শয়তানী লেখা। সৌদি আরবের ডলার পকেটে পড়লে এরকম লেখাই বের হয়। তারাই তথাকথিত সঠিক ইতিহাসের সোল এজেন্ট কিনা্!
253441
১২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:৪১
সেলিম জাহাঙ্গীর লিখেছেন : মহিউডীন আমি প্রথমে আপনার একটি লিখা পড়ে বুঝতে পারিনি। আপনার এই লিখাটা পড়ে বুঝলাম আপনি ওহাবিদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আসলে আপনি একজন ইসলামের একপ্রকার শ্রত্রু। কেন বললাম জানেন? এই লিখায় আপনি এমন কেচ্ছা কাহিনী লিখে ইসলামের ইতিহাসকেও ভুলে প্রমানিত করেছেন। আপনার কথা ইয়াজিদ খুব ভালো মানুষ, মুয়াবিয় খুব ভালো মানুষ? আরে ইসলামের তেসটাই মেরেছে এরা। ভালো করে ইসলামের ইতিহাসটা জানুনন। মুয়াবিয়া ইয়াজিদের দালালী করেন। ইতিহাস মিথ্যা আর আপনার সব কথাই সত্য?

আমি একটু ইতিহাস তুলে দিলাম পড়ে দেখেন।
ইসলামের ইতিহাস রক্তের ইতিহাস। খেলাফত মাওলাইয়াতকে ধ্বংস করার জন্য যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তাহাই ইসলামের ইতিহাসকে রক্তের ইতিহাসে পরিনত করেছে। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় রাজতন্ত্রের যুগে কোরআন তাফসীরের সকল পরিবর্তন ঘটেছে তাহার সংশোধন করে নেয়া তেমন কঠিন কাজ নয়। স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ মন নিয়া জ্ঞানী ওয়াকিবহাল ব্যক্তিগণ হতে প্রকৃত ত্ফসীর উদ্ধার করল্ইে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। কিন্তু মাওলাইয়েতকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নামে পার্থিব খেলাফত কোরআন প্রকাশের উপর যেই সকল অপকীর্তি করেছে তাহা বিশেষ ভাবে দ্রষ্টব্য। এক শ্রেণীর জালেম, আলেম বেশ ধরে নায়েবে রাসুল সেজে ইয়াজিদ এর মতবাদ তথা শুধু অনুষ্ঠান সর্বস্ব ধর্মকে মুহাম্মাদী ইসলাম বলে সমাজে চালাচ্ছে। তাদের দল সমাজে অনেক বেশী, যেমন ছিল কারবালায় ইয়াজিদ পন্থী মুসলমান এবং হুসাইন (রাঃ) পন্থী তথা মোহাম্মাদী ইসলাম পন্থী মুসলমান। কারবালায় ইয়াজিদের লোকসংখ্যা ৩০ হাজার। এরা সবাই কলেমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত পালন করতো। ইমামতি করতো, খুৎবাহ্ দিত। ঐ ৩০ হাজার ইয়াজিদদের সৈন্যদের মধ্যে আড়াইশত কোরআনের হাফেজ ছিল, তাফসিরকারকও ছিল। অপর পক্ষে হুসাই (রাঃ) এর পক্ষে ছিল মাত্র ৭২ জন। অথচ ইমাম হুসাইন (রাঃ) তাদেরকে মুসলমান বলে স্বীকার করেননাই। তিনি তাদেরকে প্রশ্ন করেছিলেনঃ ”আলাইছা ফি মুসলিমুন?” তোমাদের মধ্যে কি একজনও মুসলমান নেই? সেনাপতি হুর তার ভাই, গোলামসহ ত্রিশ জন অনুচর নিয়ে ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর পক্ষে এসেযোগদান করলেন। এখানেই আসল ও নকল মুসলমানের পরিচয় করিয়ে দিলেন ইমাম হুসাইন (রাঃ)। ইমাম হুসাইন (রাঃ) শহীদ হবার পর ইয়াজিদ এবং তার সহযোগিরা ইসলামের মূল শিক্ষা বর্জন করে তাদের মতবাদ তাদেরর স্বার্থের অনুকুল্যে ব্যবহার এবং প্রচার করেছিল, প্রয়োজনে হাদীস তৈরী করতো। ফতোয়া দিত তার স্বার্থ ও তারপ্রচারিত মতবাদের পক্ষে। ঐ শিক্ষাই অদ্যাবধি অধিকাংশ মানুষ দিচ্ছে এবং গ্রহণ করছে আজও অবধি। কারণ ইয়াজিদ ও তার সতীর্থরা মৃত্যুর করাল গ্রাসে পতিত হলেও তাদেরপ্রেতাত্মাগুলো সহস্র-লক্ষ ভাগে বিস্তার লাভ করে আছে মুসলিম সমাজে। শুধু বাহ্যিক আচার নিষ্ঠা নামাজ, রোজা, হজ্জ্ব, যাকাত ও কলেমা ইত্যাদিই ইসলাম এ কথা ইয়াজিদ ও তার অনুসারীগণ প্রচার করছে। উমাইয়া বংশের মালিক ইবনে মারওয়ান মদীনায় গিয়ে নবীজির রওজা মোবারকে থাকতো আর সর্বদা তাসবীহ্ তাহলীল ও কোরআন তেলওয়াত করতো। কিন্তু মূলে তার উদ্দেশ্য ছিল মসজিদে নব্বীতে উমাইয়া শয়তানির বিরুদ্ধে মদীনা লোকেরা কি বলে সে দিকে নজর রাখা এবং গোপনে তা দামেস্কে উমাইয়া রাজ দরবারে পাঠিয়ে দেয়া। এর মুনাফিকীর কারণে মদীনার বার হাজার চারশত সাতানব্বই জন লোক মারা যায়। তার মধ্যে ৭০০ জন ছিলো কোরআনের হাফেজ। শধু তায় নয় অবলিলায় অনেক মেয়ে ধর্ষনের শিকার হয় ফলে এক হাজার মহিলা অবৈধ সন্তান প্রসব করেছিল। এরাই প্রবর্তন করেছিল জপ-তপ, হাজার বার, লক্ষ বার অজিফা জপ করার রীতি। তাদের দ্বারা এবং তাদের অনুসাররী মোল্লা-মৌলবীদের দ্বারা মোহাম্মাদী ইসলামের যে ক্ষতি হয়েছে তা জ্ঞানীগণ মর্মে মর্মে উপলদ্ধি করছে এবং তার কারণে আজও মুসলমানগণ বিশ্বেও অন্যাণ্য জাতীর পিছনে পড়ে আছে। আধ্যাত্মিকতাই মুহাম্মাদী ইসলামের প্রাণ বা মূল ভিত্তি ছিল।
253556
১২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৩১
মহিউডীন লিখেছেন : ধন্যবাদ।ওহাবি আন্দোলন কখন কিভাবে শুরু হয়েছিল এ যদি আপনি জানতেন তাহলে এ মন্তব্য আপনি করতে পারতেন না।যখন এ জাজিরাতুল আরব শির্কে পরিপূর্ন ছিল আর মানুষ এর মধ্যে তাদের ইবাদত করতো তখন আব্দুল ওহাব বাগদাদ থেকে তার পড়াশুনা শেরে আসেন।তখনকার যুগে বাগদাদ বাগদাদ ছিল জ্গানের আঁধার।তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও তখন কার সৌদ পরিবারের প্রশাসনিক সহযোগিতায় অল্পদিনের মধ্যেই এ সব শির্ক ও বিদাআত দূর হয়।সৌদি আরব থেকে যারা ইসলামের আলো নিতে ব্যার্থ হয় তারা নি:সন্দেহে ব্যার্থ।মক্কা মদিনায় এসে দেখুন ইসলামের কাজ কিভাবে হয়।এখানে রাজতন্ত্র থাকলেও ইসলামের কাজগুলো সূন্নাহ মোতাবেক হয়ে থাকে।কোন শির্ক বিদাআত চোখে পড়ে না।যারা শির্ক বিদাআত করে তারা বিভিন্ন দেশের বাসিন্দা অন্দরেই করে থাকে।রাস্তায় বেরিয়ে তাদের এ গুলো করার সাহস নেই।আমরা কেউ রাজতন্ত্রকে পছন্দ করিনা ঠিক কিন্তু খেলাফতের পর চলে এসেছে।তাদের কাজের জন্য তারা দায়ি থাকবে কিন্তু ইসলামের কাজগুলোর আনুগত্য তারা সরকারিভাবে সূন্নাহ মোতাবেক করে থাকে।উপমহাদেশে দেখুন কি পরিমান শির্ক বিদাআত নিয়ে মানুষ তাদের দৈন্দিন ইবাদত করছে অথচ এগুলো উপড়ানোর জন্য কারো মাথা ব্যাথা নেই।ইব্রাহিম আ:একাই একটি উম্মত ছিলেন যিনি শির্কের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন।এখন ১৬০ কোটি মানুষ আমরা শুধু কথা বলছি ঈমান ছাড়া।ঈমান লালন নেই , নামাজ নেই , যাকাত নেই,হজ্জ নেই আর ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি মানুষদের।এরাই কট্টর মোনাপেক।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File