মুচকি হাসির সেই সিক্ততা আর নেই
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:০৫:৫৪ রাত
প্রিয় পাঠক আমার কাছের যারা, প্রায়ই বলে থাকেন বা্ংলায় লিখুন বা বা্ংলাকে মনের গহীনে স্হান দিন।আমাদের ই্ংরেজি পড়তে ও বুঝতে অসুবিধা ও অভিধান দেখতে হয়।আমি বলি ভাই ভাষা আল্লাহর সৃষ্টি।আর ভাষা যদি একবার শিখে নিতে পারেন তাহলে আপনার জন্যই ম্ংগল।এই যে দেখুন না আমি বা্ংলাকে ধীরে ধীরে টাইপ করার চেষ্টা করছি। ড; মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৮ টি ভাষায় পান্ডিত্ব অর্জন করেছিলেন।নিশ্চই তিনি সাধনা করেই অর্জন করেছেন।মানুষের শিখার কোন শেষ নেই।জন্ম থেকে কবরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পড়তেই হবে শিখতে হবে।
আমাদের ভাবনার শেষ নেই।যারা সমাজ নিয়ে ভাবেন ,মানুষের ম্ংগলের জন্য চিন্তা করেন তারা সব সময়ই সমাজের সেরা মানুষ।অনেক কবি ,সাহিত্য বিশারদ,ছোট খাট লেখক অভাব গ্রস্ত,তার পরও তাদের কলম থেমে থাকে না।সমকালীন শক্তিকে পরোয়া করেন না।কারন তারা চায় মানুষের কল্লান।আমি সব সময়ই বলে থাকি পরিবারই হলো সমাজের গুরুত্বপূ্র্ন একক।পরিবার ঠিক হয়ে গেলে গোটা দেশ ও সমাজ ঠিক মত চলে।পাওয়ার বা শক্তি একটাই সেটা এক ও একক।এক শক্তি যখন বিভক্ত হয়ে যায় তখনি বিপর্যয়ের কারন হয়ে দাঁড়ায়।রাসূল সা: বলেছেন আমার উম্মাত একটিই উম্মাত।এখানে কোন বিভক্তি নেই।সবাই এক আল্লাহর দাস।ইসলামই হলো একমাএ দিন।এই দিনের দাসত্ব করা ও তাগুতের কাফের হও্য়াই একজন মু'মীনের কাজ।আর এই কাজ আমাকে আপনাকে পারিবারিক জীবন যাপনের মাধ্যমেই করতে হবে।সত্য বলতে হবে , সততার সাথে জীবন যাপন করতে হবে, এমনকি ফাঁশির অবস্হান এসে গেলেও সত্যকে বরন করে নিতে হবে।মুসলিম বিশ্বে ইসলামের বিভক্তি ইসলামকে খন্ড বিখন্ডিত করেছে এব্ং ইসলামের শক্তিকে পরাভূত করেছে।সূরা আন'আম ১৫৯ আয়াত ও সূরা রুম ৩২ আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট করে নবী সা: কে বলেছেন যারা ইসলামকে বিভক্ত করেছে তাদের উপর তোমার কোন দায় দায়িত্ব নেই।তা্ই প্রতিটি মুসলিম ভাইদের উচিত হানাহানি ভুলে গিয়ে বিভক্ত না থেকে এক আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দে্শে এক হয়ে যাওয়া।একেই বলে মুসলমানের সমাজ বদ্ধ জীবন।যেখানে থাকবে সহমর্মিতা, মহৎ ভালবাসা,ছোট বড় সবাই একে অন্যকে সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ।
আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবন কর্ম পর্যালোচনা করি তাহলে আমাদের ভুলগুলো দেখতে পাব।ধরুন আপনি বা আমি পরিবার প্রধান।যদি আমরা বিচক্ষন , দায়িত্ববান,শৃ্ংখলাবোধ সম্পন্ন নাগরিক বা পরিবার প্রধান হই ও পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলি তাহলে সে পরিবারকে বলবো সভ্য পরিবার।আমাদের সমস্যা এই একটি যায়গায়।এই সমস্যা উত্তরনের জন্য আমাদেরই যার যার দু্র্বলতাগুলো আছে তা ধীরে ধীরে জীবন থেকে মুছে ফেলতে হবে।ভাই এটাই মূল মন্ত্র।
গতকাল রাতে সূরা নিসার ৯৭ আয়াতের তাপছির পড়তে গিয়ে হঠাৎ করেই মনে পড়লো একটি আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় চেনা মুখের কথা।ভাবলাম কোরানের শিক্ষা পরিবার ও নিকট আত্মিয়দেরই তো বেশি হক রাখে সাথে অন্যরা ও উপকৃত হবে। কবি কেন বলেছেন দূরের প্রেম কাছে টানে সেটা কবিরই ভাবনা।তবে আজকাল যানত্রিক সভ্যতার যুগে সে ভাবনা লোপ পেতে বসেছে।সবাই এখন আপন আপন চিন্তায় ব্যাস্ত।আমি একটু আগেই বলেছি আমাদের বিবেধ , স্বার্থপরতা,দ্বীনতা ,হীনমন্যতা পারিবারিক মমতাকে দূরে ঠেলে দিয়েছে।আর একটি কারন হলো অজ্গতা অর্থাৎ মাশোয়ারা না করে কাজ করা। কেউ বিচক্ষন হলেও মাশোয়ারা করা উচিত আর এটা সূন্নাত।রাসূল সা: ও সাহাবারা তাই করতেন।অনেক দিন হলো আমার এক নিকট আত্মিয় আমাদের ছেড়ে দূরে অবস্হান করছেন।যার যার রিজিক যেখানে আছে অবশ্যই যাবে।তবে হিজরাতের ব্যাপারে ছহি বোখারিতে রাসূল সা: মক্কা বিজয়ের পর বলেন আর কোন হিজরত নেই। তবে কিয়েমত পর্যন্ত হিজরত থাকবে যেখানে মুসলমানরা নির্যতিত হবে।আর কেউ যদি আল্লাহর আয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করতে অর্থাৎ আদ্দাঈ ইলাল্লাহ'র কাজে যায় সেটা তো মহৎ কাজ।কিন্তু বর্তমান মুসলমানদের এই পারসেন্ট কত তা ভেবে দেখা দরকার। অধিকা্ংশ সেখানে যায় পার্থিব জীবন মান উন্নত করার জন্য।তারেক ভাই ধীর্ঘ ১৬ বছর আমেরিকা থেকে আসলেন।বাবার আশা ভরশার শেষ ছিলো না।কবে আসবে এ চিন্তায় তাকে বিভোর করে রাখতো।আমাদের উপমহাদেশে ধর্মীয় কাজগুলো চলে শির্ক ও বিদা'আতের পাশাপাশি।আমাদের জিবনের একটা সময় ও ঐ সমাজে কাটাতে হয়েছে।যখন ইসলাম সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়েছে বিদা'আত ছেড়ে দিয়েছি। ঈমাম শাফিঈ (র) বলেছেন,একজন কবর পূজারির কবর পূজা ততক্ষন পর্যন্ত তার এবাদত যতক্ষন তার কাছে প্রকৃত দ্বীন না পৌঁছে।প্রশ্ন হলো আজকের যুগে মুহাম্মদ সা: এর নাম না শুনেছে এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে।রাসূল সা:বলেছেন, যদি মুসা (আ) আজ জিবিত থাকতেন, আমার আনুগত্য করা তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যেত।যাই হোক বাবা ও ঠিক ভাল মন্দ মিলিয়ে কাজ করেন।বাবার পরিবার ঘঠন ছিল আধুনিক স্টাইলে।মা ছিলেন বিপরিত মুখি।তিনি আবার জামাতে ইসলামের একজন সদস্য।দিন রাত কোরআন হাদিস ও সা্ংগঠনিক কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন।উপমহাদেশে জামাতে ইসলাম, ইসলামের একটি খন্ডিত দল।ইসলামের মডার্নিজমের ধাঁছে তাদের দ্বীনি কাজ কর্ম চলে।দেশে ইসলামের আরো অনেক দল থাকলেও পলিটিকেলি তারা অগ্রসর ও বর্তমান বিশ্বে চলমান গনতন্ত্রের অনুসারি।তারা ইসলামের স্বপক্ষ তাতে কোন সন্দেহ নেই। ইসলামের অনেক কাজই করছে।বিশেষ করে বা্ংলাদেশ , পাকিস্তান , ভারত এই তিন দেশে এই রাজনৈতিক দলটি সক্রিয়।আবুল আ'লা মওদুদি সাহেব ১৯৪১ সালে এই স্ংগঠনটি চালু করেন।
এতগুলো ইসালমের বিভক্ত দল থাকলেও এই দলটির সাথে স্ংঘর্ষের একমাএ কারন হলো ১৯৭১ সালে দলটি পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে।এটা ছিল তাদের রাজনৈতিক অদুরদর্শিতা।এটা একটা সহজ কথা যে, আমার পরিবারে যতই মতের দন্দ থাকুক না কেন বাইরের কোন শক্তি যদি আমার পরিবারকে ক্ষতি করতে আসে আমার রক্ত বিন্দু দিয়ে পরিবারকে বাঁচাবো।আর সবছেয়ে বড় কথা হলো , গোটা জাতি যেখানে এক বিন্দুতে মিলিত তখন বিভেদ কেন? ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমা করা মহত। শেখ মুজিবুর রহমান যদি এই নিয়াতে অপরাধিদের ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন তিনি মহত কাজই করেছেন।কে কি করেছে সেদিকে আমি যাছ্ছি না কারন ইতিহাস সবারই জানা।আমরা অন্যায় করলে প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।স্বাধীনতার পর জাতির কাছে ক্ষমা চাইলে সেটা কি মহত কাজ হতো না? তা হোলে তো ৪১ বছর পর্যন্ত মানুষকে এত মুল্য দিতে হতো না, আর কেউ এ নিয়ে পলিটিক্স করার সুযোগ পেত না।এ হলো তাদের দ্বিতীয় ভুল।আর ইসলাম যখন পালন করবো ইসলামের পথেই থাকতে হবে।দল পরিবর্তন তো করবে পাছেকরা।এই দল পরিবর্তন তাদের তৃতীয় ভুল যার ফলে অন্য বৃহৎ দলগুলো সুযোগ নিছ্ছে। যার পরিনতিতে দেশে মানুষের জিবন মানের অবনতি হছ্ছে। তবে যারা অপরাধ করেছে তাদের না হয় কিছু বলা যায়। নতুন প্রজন্ম যারা স্বাধীনতা দেখেনি তাদের অসম্মান করা আইনের ল্ংঘন নয় কি? এটুকু বললাম কিছু পারিবারিক আলোচনা ও নতুন প্রজন্মের খাতিরে।আমার ধর্ম হলো নিজের দোষ খোঁজা।অন্যকে পরে।
বাবা পাকিস্তানের সময়ে স্হানান্তরিত হয়েছিলেন কুষ্টি্য়ার মহিষকুন্ডিতে।ভারতের পশ্চিম ব্ংগের মুর্শিদাবাদ জেলা্য় আদি বাস্হান। ভেঁড়ামারার তালতলায় মসজিদের পাশে বাবার অপরিকল্পিত এক বিশাল বাসস্হান করেছেন অনেক আগে যখন বুদ্ধিমান লোকেরা ঢাকায় যাযগা কিনে রাখতো।গ্রামে একটা কথা প্রচলিত আছে, খাওয়ার আগ আর দরবারের শেষ।জিবনটাও এরকমই। জীবনের প্রথমে উন্নতি না হলে পরে খুব কমই উন্নতি হয়।ইনলামে যারা দিক্ষীত হয়েছে তাদের অধিকা্ংশের বয়স ৪০ এর নিছে।এক্জিকিউটিভ হিসেবে বিভিন্ন জুট মিলে চাকুরি করেছেন ধীর্ঘদিন। পরে বিদেশে চলে গেলেন ও একটি মালটিনেশনাল কম্পানিতে উচ্ছ পদে চাকুরি নিয়ে জিবনের ধীর্ঘ সময় কাটিয়ে দিলেন।এ সময়ে পরিবার ও বাইরের অনেকের উপকার করলেন। কাউকে চাকুরি দিয়ে ,কাউকে টাকা দিয়ে, কাউকে শ্রম দিয়ে।আবার চরাদি পাড়া্য় মসজিদ যেখানে নামাযের কোন সুব্যাবস্হা ছিল না। এগুলো নিতান্তই ভাল কাজ যা এ যুগের কম মানুষই করে।এদের মধে্য্য উনার বোনের ছেলে জালালউদ্দীন , ইউনুছ আলি,আমিনুল ইসলাম ও তাদের কিছু আত্মীয় স্বজন।এ ছাড়া উনার ছোট ভাই সামছুল হক সাহেবের ছেলে বিদু্ত , উনার ফুফাত ভাই চান্দ ও ফুফাত বোনের ছেলে মামুন ও রয়েছে।বাকি অস্ংখ্য আর বর্ননা দিলাম না। উনার এক শ্যালক ছিলেন মহি নামে এখন ভেঁড়া মারার বিলবোয়ালিতে তাদের নিজস্ব বিলে মাছের প্রজেক্ট করেছে যার সি্ংহভাগে সহযোগিতা করেছিলো বাবা।যা থেকে কোনো আউটফুট পাছ্ছেন না। এসবই উনার অপরিকল্পিত কাজ।বিদেশে এসে চাকুরির পাশাপাশি ব্যবসা ও করছেন।ব্যবসা করা কোন অপরাধ নয়।আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সূদকে হারাম করেছেন।কিন্তু বাবা যা করলেম তা পাছেক লোকদের সাথে করলেন এব্ং এতে পারিবারিক কোন মাশোয়ারা ছিল না।রাসূল সা: বলেছেন , উত্তম সদাকা হোলো পরিবারকে দেখাশুনা।কিন্তু বাবার কাছে অবহেলিত হয়ে থাকলো তার দু'টি ছেলে মেয়ে, যাদের টাকার চেয়ে প্রয়োজন ছিল ইসলামি শিক্ষা।অর্থাৎ পরিকল্পনাহিন জীবন।বর্ং দিন দিন বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের বিরহ যন্ত্রনা।উনি একটা জিনিস পছন্দ করেন সেটা হলো , চাটুকারিতা আর চাটুকার লোকগুলু যে তার পরিবারকে নি:শ্বেশ করে দিছে্ছে সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই যা শুধু বাইরের লোকরাই অনুভব করে।
তারেক ভাই যখন দেশে আসবে এমণ খবর শুনলাম , আমি আশ্বস্ত হয়েছিলাম একটা পরিবর্তন আসবে।একটা সুখি পরিবার হলো সব এক সাথে বাস করা।জীবনের ক'টি দিনই ত মাএ।আর এমনতো অভাবগ্রস্ততা ছিলনা যে কেউ কারো উপর নির্ভরশীল।পরিকল্পনাও দেয়া হয়েছিল।যথা সময়ে তারেক ভাই এলো।অনেক মেয়ের খোঁজ খবর এলো।মেয়ে দেখাকে কেন্দ্র করে কিছু চাটুকার আসতে লাগলো তাদের ফন্দি ফিকির নিয়ে।এসব খবর আমি পেতে থাকলাম।আত্মীয় স্বজনের চাকুরির সুবাদে ওরা এখানে সেখানে প্রপোজাল দিতে লাগলো।একজন এই দলে মনোয়ার নামে, সে বাবার কাছে আসলে চোখের পানি ফেলতো।এটা তাকে প্রমান করলো তার ফাইনাল গেইম এ।বিয়ে ঠিক হলো কুষ্টিয়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে।কুষ্টিয়ার বি আর বি কেবল কম্পানির শ্যালকের মেয়ে রজনী নাহার( এখন পরিবর্তিত নাম - তাবাছ্ছুমা নাহার (মিমি) যার অর্থ মুচকি হাসির ঝরনা) আমি সদ্য হাসপাতাল থেকে রিলিজ পেয়েছি।ভাবলাম জিবনে একবারইতো ঘুরে আসি।কুষ্টিয়ায় বাবার ছোট ভাই শামছুল হক সাহেবের বাসায় হলুদ।আমি পড়ন্ত বিকালে পৌঁছে গেলাম।সব আত্মীয় স্বজনকে দেখে ভালই লাগলো।আমার ছোট মেয়ে মাহদিয়াকে দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল।কয়েকদিনের পেটের অসুখে কাহিল আর তার মাও নি্র্ঘুমে কৃশপ্রায়।পরের দিন বিয়ে ধুম ধামে হলো বি আর বি কেবল এর বাড়িতে।অনেক ধনবান লোকদের দেখেছি কিন্তু উনাদের দেখে বেশ ভাল লেগেছে। বিশেষ করে ফুফুকে ধার্মিক দেখে বেশ আশ্বস্ত হয়েছি। ঐ যে আগে বলেছিলাম আমাদের ধার্মিকতা পরিবার জুড়ে থাকে না।হয় বাবা মা ধার্মিক , ছেলেমেয়ে বকধার্মিক আর না হয় ছেলে মেয়ে ধার্মিক বাবা মা বকধার্মিক।সন্ধা নেমে এলো আমরা ভেড়ামারার শহরে তালতলা বাবার বাড়ির দিকে রওয়ানা হলাম।আমার পরিবার , সদ্য বিবাহিত তারেক ভাই ও ভাবি পাশাপাশি সিটে বসা। পাঠক নতুন বিয়ের আমেজই আলাদা তাই না? আমি বসে না থেকে প্রকৃতিক সুন্দরের সবুজ গাছ পালা দেখতে লাকলাম ও কোরান হাদিসের কিছু নির্দেশনা দিলাম। এক ঘন্টায় আমরা চলে এলাম বাবার বাড়িতে। এদিকে চান্দ চাচা বেচারা বাড়ি পরিষ্কার , ফার্নিচার সাজানো, বাসর ঘর সাজানো নিয়ে ব্যাস্ত।আমার ছোট বোন খুকি তার স্বামী ও তার ছেলে মেয়েরাও সামিল হয়েছে। বাড়িতে কেউ না থাকলে ভূতুড়ে বাড়িই মনে হয়।যেমন বলেছিলেন রাসূল সা:, যে অন্তরে কোরান নেই সেই অন্তর হলো একটি ভূতুড়ে বাড়ি।পাশে চান্দ চাচার বাসা।চাচীর উপর খাওয়া দাওয়ার সব ঝামেলা। তার পর ও তিনি বেশ খুশি।অনেক বছর পর সবাইকে এক সাথে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা।খাওয়া দাওয়া শেষ।সবাই বসে গল্প করছি।বাসর ঘরটি ছিল দক্ষিন মুখি।সামনে নিজেদেরই মাঠ।চাঁদনী রাতে ঝলমল করছে যেন বরন করে নিবে দুলহা দুলাহানকে।বাবা দেখলেন জানালায় পর্দাটা লাগানো হয়নি যদিও বাইরে থেকে কিছুই দেখা যায় না।অমনি দুলহা সাহেব বলে উঠলেন, ও তিন দিন ঘুমাতে পারে নি এখন সময় অপচয় কারার দরকার নেই।সবাই হো হো করে হেঁসে উঠলো। খুকির জামাতা এখনো কথাটা বলে হাসতে থাকে।রাতে সব ঘুমাতে গেল।পরের দিন মেহমানদারি।বিরাট উঠোনের এক পাশে রান্নার আয়োজন।সবাই পায়চারি করছে। কেউ বা চা নাস্তা খাছ্ছে।দুপুর না গড়াতে মেহমান আসতে শুরু করেছে।যোহরের নামাজের পর খাওয়া শুরু ও আচরের আগে আগেই শেষ হয়ে দূরের আত্মিয় স্বজন চলে গেল।আমরা সন্ধায় তামান্নার বন্ধু ও অন্যান্য আত্মিয়দের বাসায় বেড়িয়ে শ্রান্ত দেহে বাবার ভূতুড়ে নীড়ে পিরলাম। পরের দিন ভাই এর শশুর বাড়ি শৈলকুপায় গেলাম।চমৎকার রান্না এর সাথে ছিল আমার পছন্দের গলদা চি্ংড়ি।গোগ্রাসে খেয়ে নিলাম। বাড়িতে ঢুকতে ডান পাশে বিরাট ঘর বাম পাশে বাগান।আমরা সবাই ঐ ঘরে ঢুকলাম, ভাবী মুচকি হাশি দিয়ে বললেন ভাইয়া বলুন তো আমি শশুর বাড়িতে কার সাথে কিভাবে আচরন করবো। আমি যা যা দরকার বললাম। ঐদিন আমরা আবার ভেঁড়ামারা চলে এলাম। এর পরের দিন মা'র বাবার বাড়ি বোয়ালিয়া যেখানে মহি মামা বিল করেছে সেদিকে যাএা করলাম।প্রথমে পান্না (তামান্নার ফুফাত ভাই) ভাইদের বাড়িতে নামলাম। খাওয়া ছাড়া বেরুতে দিলেন না তারা।তার পর আবার যাএা। আমার জিবনে এই প্রথম ওদিকে যাওয়া। প্রায় ১৫ বছর বিবাহিত জিবনে আমার একবার ও মনে হয় নি তারা ফন্দি করে রেখেছে আমাকে দুলহার বেশে আমন্ত্রন জানাবে।নানার বানানো বাড়ির মসজিদে যোহরের নামাজ পড়ে বের হলাম।সবার সাথে হাত মিলিয়ে সামনের দিকে যেতেই হতভম্ভ হয়ে গেলাম।বড় ছেলে মেয়ে, ওদের সামনে এভাবে বরন।আমাদের দেশে গ্রামে গন্জে এখনো হিন্দুয়ানী রীতি বিদ্যমান।পাটাতনের উপর পা ধোয়ানো , ঘরে প্রবেশ করতে ফুল ও সম্মানি,খাওয়া হোলে মহিলদের হাত ধোয়ানো ইত্যাদি।সন্ধার পর বিলে ট্রলারে ভ্রমন বেশ মজা লাগলো।ট্রলার চলছে আর মাছ লাপিয়ে ট্রলারে উঠছে।এদিকে চাঁদের জোৎন্নালোকিত মায়াবি আকাশ যেন আমার ঋদয় কেড়ে নিছ্ছিল।রাতে আবার বাবার ভূতুড়ে বাড়িতে চলে এলাম।পরের দিন ঢাকার দিকে রওয়ানা হলাম।তবে ভূতুড়ে বাড়িটা ছেড়ে আসতে কষ্ট হছ্ছিল।আমরা ঝিনাইদহ হয়ে আসছিলাম দু'ধারে সবুঝের সমারোহ।গাছ গাছালির পৎ পৎ শব্দ, পাখির কাকলিতে উদাস করে দিল।এত সুন্দর এলাকা অথচ ওখানে নাকি সর্বহার বাহিনীর উপদ্রব। আমার এক আত্মিয় (বাবার ছোট ভাই এর জামাই লিটন) বললো এ এলাকা গুলো বড় ডেনজার। আমি ভেবে অনেক অবাক হই , কত সুন্দর একটি দেশ।এ দেশ গড়ার মায়া আমাদের কারো নেই।মরুভুমিতে মাঝে মাঝে গিয়ে দেখি আমাদের ভাইরা কত কষ্ট করে ফসল ফলায়।অথচ আমার দেশে উর্বর জমিতে বিজ বপন করলেই ফসল ফলে।কত নদীর দেশ , সুজলা সুফলা আমার বা্ংলাদেশ।
ঢাকা এসে এক সপ্তাহ পরে চলে এলাম আবার কর্মস্হানে।কেটে গেল কয়েক বছর।ভালই তো যাছ্ছিল।যতই প্রতিবন্ধকতা থাকুক এ দেশ নবীর দেশ।আল্লাহ তো কারো জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন নি।সমাজে যা কিছু সৃষ্টি সব মানুষের আর এ দায় ও মানুষকেই বহন করতে হবে।গত অকটোবরে যখন শুনলাম তারেক ভা্ই চলে যাছ্ছে পুরোনো কাসুন্দিটা ঘাটতে ছেয়েছিলাম।পরে নিজেই থেমে গেলাম।কেউ দেখলাম প্রতিবাদ করছেনা।আর আমার বলা পাগলের প্রলাপ মাএ।দু'টো পবিএ পুষ্প নিক্ষেপিত হছ্ছে সভ্যতার নামকরনে লুত এর সপ্রদায় রুপী ভূমিতে।আর জেনারেশন টু জেনারেশন হারাবে ওদের মাতৃভূমি।আব্দুল্লাহ , ইব্রাহীম কখনো মুচবেনা আমাদের অন্তর থেকে।বিমান বন্দরে আমি স্ংবরন করেছি নিজেকে। কি হোতো এখানে থাকলে।হাজার মানুষের কি অবস্হান কি এখানে নেই? বাবা যেমন অধিকার বিহীন কাজ করলেন তেমনি তারেক ভাই বন্চিত করলেন বৃদ্ধ পিতামাতাকে।হয়ত আপনাদের অনেকের কষ্ট হবে।কিন্তু ভেবে দেখুন যারা দুনিয়ার জন্য ছেলে মেয়েকে জ্বেনা ব্যাবিচারের দেশগুলোতে পাঠাছ্ছেন কি তারা অর্জন করছে।
মানুষ সম্পদ অর্জন করে পরিবারের জন্য।আর পরিবার কোন বিছ্ছিন্ন কিছু নয়।জীবন যদি সুন্দর ও অর্থবহ না হয় সে জীবন কোন জীবন নয়।পৃথিবিতে পিতাদের ভুমিকাই প্রধান পরিবারের সমৃদ্ধির জন্য।মাতারা থাকে দুর্বল।সেই দুর্বলের সুযোগ গ্রহন যারা করে তাদের কোন স্ম্মান থাকে না' আর পরিবারে যদি সম্মান না থাকে,কোথায় সম্মা্নিত সেই পিতা? সব পিতাদের প্রশ্ন করা হবে তার সন্তান ও পরিবারের জন্য।আমি প্রথমে সূরা নিসার ৯৭ আয়াতের কথা বলেছিলাম।এই আ্য়াতটি নাজিল হয়েছিল মদিনায়।মদিনা ইসলামি রাষ্ট্র হওয়ার পরও কিছু কিছু মুসলিম ইহুদিদের সাথে অবস্হান করছিল। যখন তাদের কারো মৃতু্্য্য হতো তখন আজাবের ফেরেস্তা নাজিল হতো।আল্লাহ বলেন, " নি:সন্দেহে ফেরেস্তারা যাদের মৃতু্য্য আনয়ন করে যারা ছিলো নিজেদের প্রতি অন্যায় কারি, তারা বলবে " তোমারা কি অবস্হায় পড়ে রয়েছিলে? তারা বলবে " আমরা দুনিয়ায় দুর্বল ছিলাম" তারা বলবে "আল্লাহর পৃথিবি কি প্রশস্ত ছিল না যেখানে তোমারা হিজরত করতে পারতে? কাজেই এদের বাসস্হান জাহান্নাম আর মন্দ আশ্রয়স্হল"
দু:খের বিষয় হোল আমাদের সেই মুচকি হাসির ভাবির বাবা কছুদিন আগে এ দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন ( আল্লাহু ইয়ার হামু)।
আল্লাহ উনাকে জান্নাত নছিব করুন আর আমাদের সঠিক দ্বীনের উপর রাখুন।
বিষয়: বিবিধ
১৯৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন