ধার্মিকতার আবডালে বিদা'আতিদের বিদা'আত।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৬ জুলাই, ২০১৪, ০৬:২৪:৫৫ সন্ধ্যা
রাসূল তোমাদের যা কিছু দেন তা গ্রহন কর,আর যা কিছু তোমাদের নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক-(সূরা হাশর ৭)। রাসূল সা: একমাত্র রাসূল যিনি আল্লাহপাকের বিধান ইতিবাচক ও নেতিবাচক যা কিছু প্রচার করেছেন তার কোন শরীক নেই এবং রিসালতেও কোন শরীক নেই।দ্বীন জানার একমাত্র বাহন হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আলকুরআন ও রাসূল সা: এর পক্ষ থেকে হাদিস।এই দু'টো-ই ওয়াহি।মুসলিম বিশ্ব তথা সারা বিশ্বের মানুষের জন্য তিনি রহমত স্বরুপ এসেছেন।রাসূল সা: বলেছেন, কোন মানব শিশু যখন জন্ম নেয় সে প্রকৃতির উপর জন্মলাভ করে অর্থাৎ ইসলামের উপর জন্মায়,তার বাবা মা তাকে ইহুদি খৃষ্টানে পরিনত করে।একটি মানব শিশু মাসুম হয়ে জন্মায়।আমরা ভাষাগত দিক দিয়ে দেখলেও দেখতে পাই যে বাবা মা যে ভাষায় কথা বলেন শিশুটির বোল ফুটতে সেই ভাষায়-ই সে কথা বলে।সেই সামাজিক সংস্কৃতিতে সে বেড়ে উঠে।চিন্তা চেতনার পরিপক্কতা সে তার পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে জীবনের একটা বিশেষ অংশ।বাবা মা যে ধর্মীয় আদলে তাদের জীবনকে গড়ে তোলেন সন্তান সে রুপেই রুপ নেয় তবে যাদের উপরে আল্লাহর খাছ রহমত থাকে তারা কখনো ভাল পরিবেশে মিশার কারনে পরিবর্তিত হয় যার সংখ্যা ন্যুনতম।একজন কবর পূজারির ঘরে বা একজন বিদা'আতির ঘরে ভাল ছেলে মেয়ে আশা করা যায় না।আমি পূর্বেই বলেছি ইল্লা মাশাআল্লাহ।যদি আল্লাহর রহমত থাকে।ইসলামিক পরিবার কাকে বলে? এক কথায় বলা যায় যারা জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামকে ধারন করে জীবন পরিচালনা করে।এ ধরনের পরিবার সমাজে নগন্য।আমরা সবাই ভাল মন্দ মিলিয়েই কাজ করি।আর মানুষ হিসেবে দোষ থাকবেই কিন্তু তার পরিমাপ কতটুকু।ইসালামি ইবাদাত করতে গেলে আলকুরআন ও ছহি হাদিসের স্বরনাপন্য হতে হয় কারন এ দুটো-ই আমাদের মানদন্ড।এই আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে তার জন্য এমন কিছু বাকি নেই যা আলকুরআন ও হাদিসে বর্নীত হয় নি।এখানে সংযোজন ও বিয়োজনের কোন স্হান নেই।আর যদি থাকতো তাহলে তা আলকুরআন বা ছহি হাদিসে স্পষ্ট আভাস থাকতো।সুতরাং সে রাস্তা রোজ ক্কেয়ামত পর্যন্ত বন্ধ।কারন সূরা আল মা'ইদার ৩ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মব্যাবস্হা পূর্নান্গ করলাম,আর তোমাদের উপর আমার নিয়ামত সম্পুর্ন করলাম আর তোমাদের জন্য ধর্মরুপে মনোনীত করলাম ইসলাম।"
বিদা'আত বা কুসংস্কার এই বিষয়টি নিয়ে মুসলিম সমাজে বহু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।কেউ ধর্মের নামে,কেউ ইহুদি খৃষ্টানদের অনুকরন করে বিদা'আত করে থাকে। সেজন্য বিদা'আতের ভয়াবহতা সম্পর্কে আল কুরআন ও সূন্নায় কি বলা আছে তা জানা প্রত্যেক ইবাদাত কারির জন্য আবশ্যকীয় কর্তব্য।প্রতিটি মুসলমানের জন্য কর্তব্য হলো ইসলামের অতীত ইতিহাস জানা ও পড়া।এখন প্রতিটি ভাষা ভাষিদের জন্য আলকুরআন ও ছহি হাদিস ( বুখারি ও মুসলিম) ভাষান্তরিত হয়েছে।মুসলিম উম্মাহর বড় সমস্যা হলো তারা আজ এ দু'টো জিনিস ছেড়ে আবর্জনার অনুসরন করছে।বিদা'আতের প্রথম ধাপ হলো ইসলামকে বিভক্ত করন।মানব রচিত জাতীয়তাবাদের (গনতন্ত্রে) আদলে দল,ইসলামের ভিত্তিতে দল,গোত্রের ভিত্তিতে দল তৈরি করে মানব জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে।এই বিভক্তির কারন হলো সমাজে পেশি শক্তির আবির্ভাব।একদিকে গনতন্ত্রের মানসপুত্ররা এবং অন্যদিকে ধর্মীয় মানসপুত্ররা ধর্মকে পুঁজি করে তাদের নিজস্ব সাংগঠনিক আদর্শ তৈরি করে যে যার মত ইসলাম প্রচার করছে।ইসলাম যদি একটি উম্মাহ হয়ে থাকে তাহলে বিভক্তি কেন? পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলামের বিভক্তিকারি দলের পিছনে রয়েছে উন্নত গনতান্ত্রিক দেশগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা।তাদের বিরাট খরছের অংশ আসে ঔ সমস্ত দেশ থেকে বাকিটা আদায় হয় ইসলামের কর্মি বাহিনীর কাছে থেকে ইসলামের নামে।যাই হোক,একজন মুসলিমের কাজই হলো মানুষকে দিনের দিকে ডাকা।এদিক থেকে আমাদের উপমহাদেশে ইলিয়াছি তাবলিগের ভাইরা অন্য জামাতের ভাইদের থেকে অগ্রগন্য যদিও তাদের ফাযায়েলের কিতাবগুলোতে বহু শির্ক বিদাআত রয়েছে।তাবলিগের উপর একটি টপিক" প্রচলিত তাবলিগ জামাত ও কিছু প্রাসঙিক কথা" এতে আমি বর্ননা করেছি।আমার আর আপনার সামনে যদি দ্বীনের কোন ক্ষতি আসে আর উম্মাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে তা জানানো আমাদের সবার জন্য ফরয।তবে মনে রাখতে হবে আপনি যা করছেন সবই আল্লাহর জন্যই করছেন।যদি কারো অকল্যানের জন্য কে্উ কুৎসা রটনা করে তা হলে সে আল্লাহর কাছে দা্য়ি থাকবে।আল্লাহ পাক আমাদের জ্গান দান করেছেন এবং তার হিসাব নিবেন।সুতরাং যে কোন বিষয়ে নিজের জ্গান ও বিবেককে কাজে লাগাতে হবে।কোন দিকে ঝুঁকে গেলে সত্যকে পাওয়া যাবে না।মুসলিম উম্মায় পথভ্রষ্ট হয় দু'ভাবে। এক হলো যারা প্রকৃত দ্বীনের অনুসারি।এক শ্রেনী দ্বীনের অনুসরন করে না।আর এক শ্রেনীর মানুষ আছে যারা দ্বীন মোতাবেক চলে যেটাকে দ্বীন মনে করে।ভুল বিশ্বাস ও ভুল আমলের উপর রয়েছে।সেজন্য তারা ভুল ধর্মের উপর চলে।এদের বলা হয় বিদা'আতি।যারা ইসলামের বিষয়গুলো একেবারে মানে না তাদের যেমন বিষয়গুলো জানাতে হবে তেমনি যাদের আক্কিদা ও বিশ্বাসে ভুল রয়েছে তাদেরও সঠিক পথে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে বা ভুল ধরিয়ে দিতে হবে সুন্দর আচরনের মাধ্যমে।ফাসেক যদি ফাসেকি অবস্হায় মারা যায় জাহান্নামে যাবে আর শির্ক বিদা'আতি যদি মারা যায় তাও জাহান্নামে যাবে।এই দুই রাস্তাকে বর্জন করতে হবে আর চলতে হবে সঠিক ও সোজা রাস্তায়।এই দ্বীন যেমন নিজে পালন করতে হবে তেমনি অন্যদের কাছে পৌঁছাতে হবে।এটি হলো এই উম্মাতের ফরয দায়িত্ত।এই দ্বীন পৌঁছানোকে বলা হয় তাবলিগ ও আহ্বান করাকে বলা হয় দাওয়া ইলাল্লাহ।
দাওয়াত সম্পর্কে সূরা মায়দার ৬৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'হে প্রিয় রাসূল! তোমার প্রভুর কাছ থেকে যা তোমার কাছে অবতীর্ন হয়েছে তা প্রচার কর।আর যদি তুমি তা না কর তবে তার বানি তুমি প্রচার করলে না।'রাসূল সা: বলেছেন,'তোমরা আমার পক্ষ থেকে যদি একটি আয়াত ও জান তা প্রচার কর।'সাধারনক্ষেত্রে তাবলিগ করা ফরযে ক্কেফায়া।যেখানে বিজ্গ আলেম থাকে যার কথায় মানুষ প্রভাবিত হয় তার জন্য ফরয।তবে আমভাবে শরিয়তের বিধান যার যতটুকু ছহি জানা আছে প্রত্যেকেই দায়ির কাজ করবে।সূরা আল ইমরানের ১০৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'তোমাদের মধ্যে একটি দল হওয়া চাই যারা আহ্বান করবে কল্যানের প্রতি আর নির্দেশ দিবে ন্যায় পথের আর নিষেধ করবে অন্যায় থেকে।এরা নিজেরাই হছ্ছে সফলকাম।' অধিকাংশ ইসলামের দলগুলো কুরআনের এ ধরনের আয়াতগুলোকে বিকৃত করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে।অথচ ইসলামে ক্কেয়ামত পর্যন্ত একটি দল ও একটি উম্মাতের কথাই কুরআন ও হাদিসে বিবৃত হয়েছে।কোন দাওয়াত পৌঁছাতে হলে দেখতে হবে তা কুরআন ও হাদিসে আছে কিনা? তাবলিগ সম্পর্কে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে আমরা কোন তাবলিগ পৌঁছাবো।তাবলিগ করার জন্য কুরআন ও হাদিসের ইলম থাকতে হবে। অধিকাংশ মাণুষ তাদের জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গাফেল।উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, আপনি যদি কোন কোম্পানির এজেন্ট হয়ে থাকেন এবং যে প্রডাক্ট টির সেবা জন গনকে দিবেন সে প্রডাক্ট ও কোম্পানি সম্পর্কে আপনার গভীর জ্গান থাকতে হবে।যদি আপনি ভোক্তাদের সন্তুষ্ট করতে চান তাহলে এর ব্যাবহারিক দিক সহজভাবে বর্ননা করতে হবে যেন তারা বুঝতে পারে।তাহলে বুঝা গেল এটা নির্ভর করছে আপনার কোম্পানির প্রডাক্ট টির গুনাগুন এবং আপনার দক্ষতার উপর।আল্লাহপাক এই কুরআন নাজিল করেছেন আর দ্বার্থভাষায় বলে দিয়েছেন এতে কোন সন্দেহ নেই।শুধু তাই নয় তার সাথে একজন প্রশিক্ষিত রাসূল পাঠিয়েছেন যিনি এ বিষয়টি উম্মাহকে সুচারুরুপে বুঝিয়ে দিয়েছেন আর সুধীর্ঘ ২৩ বছর ব্যাপী তিনি প্রচার করে পৃথিবিতে একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
রাসূল সা: এর পর ৩০ বছর চারজন খলিফা নিখুতভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।উমাইয়া খেলাফতের ৯০ বছর, আব্বাসীয় খেলাফতের প্রায় ৪০০ বছর মুলুক্কিয়াত থাকলেও মুহাদ্দেছিন গন ইসলামের প্রচার সম্প্রচার করেছিলেন আলকুরআন ও ছহি হাদিসের অনুসরনে।চারজন প্রধান ঈমামের পরেও তাদের সৃষ্ট বহু ঈমাম তাদেরই অনুসরন করেছিলেন একমাত্র ছহি হাদিসের অনুসরনে। ঈমাম আবু হানিফা (র) এর এক নাম্বার ছাত্র ঈমাম আবু ইউছুফ ঈমাম আবু হানিফার দুই তৃতীয়াংশ ফিখ্-হ এর বিরোধীতা করেছিলেন।তারা যেমন উম্মতকে সংযত করেছিলেন তেমনি আজও কুরআন ও সূন্নাহের উলামারা ছহি হাদিসের অনুসরন করার জন্য উম্মতকে সংযত করছেন।খালেছ ইবাদাত করার জন্য শির্ক ও বিদা'আত সম্পর্কে গভীর অনুশীলন প্রয়োজন।অনেকে এই শব্দগুলো শুনেন ও বক্তৃতায় বলেন কিন্তু নিজেরাই এ গুলোর মধ্যে ডুবে থাকেন।অনেকের দ্বীন শিখার আগ্রহ আছে কিন্তু পারিপার্শিক অবস্হায় বিদা'আতিদের কারনে রাস্তা হারিয়ে ফেলেন কারন মুল জিনিসের উপর তাদের পড়াশুনা নেই।সদাকায়ে ঝারিয়া যেমন একজন মানুষের আমলের ভান্ডারকে রোজ ক্কেয়ামতের আগ পর্যন্ত পূর্নতা দিবে তেমনি যারা শির্ক ও বিদাআতের খাদেম তারাও তাদের আমলে লোকদের কৃত আমলের গুনাহের বোঝা পেতে থাকবে।অনেক বিদাআতি তাদের বক্তব্যে বলে থাকে রাসূল সা: এর সময়ে অনেক বৈজ্গানিক আবিস্কার ছিল না যা আজ বর্তমান তাহলে এগুলো ব্যাবহার করা বিদাআত।তারা এ কথাগুলো বলে ধর্মের আদর্শিক দিক থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আর তাদের কৃত বিদা'আতকে হালাল করার চেষ্টা করে।মানুষের কল্যানের জন্য যা আবিস্কৃত তা দুনিয়ার সামগ্রী।মুসলমানদের ধর্মীয় বুনিয়াদ হলো ৫টি। ঈমান ,নামাজ ,যাকাত,রমজানের রোজা ও বায়তুল্লাহের হজ্জ।তার সাথে ইসলামি শারিয়া অনুমোদিত ইতিবাচক বিষয়গুলোর অনুসরন ও নেতিবাচক জিনিসগুলোর বর্জন।এখানে পরখ করার বিষয় হলো,একজন মুসলিম যখন আল্লাহর ইবাদাতের ক্ষেত্রে উপরোক্ত বিষয়গুলো আমল করবে তখন দেখবে আলকুরআনে বা ছহি হাদিছে তা আছে কিনা? যদি ততটুকু জ্গান না থাকে তাহলে হক্কানি উলামার স্মরনাপন্য হতে হবে।এখানে এসেই আম জনতা সমস্যায় পড়ে।হক্কানি উলামা খুঁজে পাওয়া আজকাল অনেক কঠিন।প্রতিটি এলাকায় দেখা যায় যুগ যুগ ধরে যে সমস্ত আলেম তৈরি তার সিংহভাগ বিদাআতি যাদের মুল চোর্চ হলো ভারত।আর ইসলামের যত দল তৈরি হয়েছে তা ভারত থেকেই উদ্ভুত।কোন তথ্যের উপর ভিত্তি করে উম্মাহ বিভক্ত হলো তার কোন প্রমান আলকুরআন বা ছহি হাদিসে নেই।সূরা আর রোমের ৩২ আয়াতে বলা হয়েছে,'যারা তাদের ধর্মকে বিভক্ত করেছে আর তারা হয়ে গেছে নানা দলীয়।প্রত্যেক দলই যা তাদের কাছে রয়েছে তাতেই উল্লসিত।"
রাসূল সা: কে যদি আদর্শ মেনে চলা হয় তাহলে তাঁকে যথাযথ অনুসরন করা , সাহাবাদের ও সোনালী যুগকে অনুসরনই হবে উম্মাহর জন্য কল্যানকর কারন তারা কোন কিছু বাড়ান নি বা কমান নি।সেজন্য আল্লাহ সূরা আত্তওবার ১০০ আয়াতে ঈমানদের উপর সন্ত্ষ্টির ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন,"আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যের অগ্রবর্তিরা - প্রাথমিকরা,আর যারা তাদের অনুসরন করেছিল কল্যানকর কর্মের সাথে আল্লাহ তাদের উপর সন্তুষ্ট আর তারা তাঁর উপর সন্তুষ্ট,তাদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন স্বর্গুদ্যান সমূহ যাদের নিচ দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি,সেখানে তারা থাকবে চিরকাল-এ হচ্ছে মহাসাফল্য।"সুতরাং অনুসরনের স্পষ্ট পথ আল্লাহ করে দেওয়ার পরও যারা বিভ্রান্ত হবে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আজাব।আল্লাহ মুসলমানের জন্য ঈদ দিয়েছেন দু'টি তারা বাড়িয়ে আর একটি করেছে ঈদে মিলাদুন্নবি বা সিরাতুন্নবি।রাসূল সা:কে অনুসরন করতে হবে প্রতিদিন,তার সম্পর্কে আলোচনা হতে পারে প্রতি ক্ষন তা না করে বছরে একদিন যারা করছে তারা কি ভেবে দেখেছে রাসূল সা: এর সময় বা পরে সাহাবারা তা করেছেন কিনা? এইভাবে জন্মদিন , মৃত্যুদিন,নববর্ষ,ওরস,সবান মাসের বিদা'আত, মহররমে তাজিয়া মিছিল, ফরয নামাজের পর সম্মিলিত মুনাজাত, সূন্নতে খাতনার মাহফিল,মিলাদ,চিল্লা দেওয়া,দল কতৃক ইসলামের নামে বিভিন্ন অনুস্ঠান পালন যা হাদিছে নাই তা করা ইত্যাদি--।আল্লাহর আইন পরিবর্তন করার অধিকার এ জমিনে কারো নেই কিন্তু শরিয়ার কোন ব্যাপার যদি ইসলামি উম্মাহর উলামারা একমত পোষন করেন তা পরিবর্তন সাপেক্ষ তবে আলকুরআন ও হাদিসে আছে এমন বিষয় নয়।যা অস্পষ্ট আলকুরআন ও হাদিসে তেমন আভাষ নেই উম্মার প্রয়োজনে ইসলামি শাসক তা করার অধিকার রাখেন।কিন্তু কোন গনতান্ত্রিক দল,ইসলামের বিভক্ত দল বা গোষ্ঠি যদি এ রকম কাজ করে তা প্রত্যাখ্যাত।যারা বিদাআতকে ভাল বিদা'আত ও খারাপ বিদাআতে ভাগ করেছে তাদের বলতে চাই-পায়খানা তো পায়খানাই,এর এ পিঠ বা ওপিঠ বলে কি কোন কথা আছে? জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হক্ক ও বাতেলকে বিভক্ত করে ইবাদাত করতে হবে।মুসলমানের জন্য একটিই ত্বরিকা বা পথ আর তা হলো রাসূল সা: এর প্রদর্শিত পথ।
বিদা'আতের শাব্দিক অর্থই হলো নতুন কাজ।আল্লাহপাক আসমান ও জমিন নতুনভাবে সৃষ্টি করেছেন যার পূর্বে কোন নমুনা ছিল না তার পর আরশে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।বিদা'আত কোন নমুনা ছাড়াই সৃষ্টি হয়।শরিয়তের ভাষায় বিদাআত হলো নতুন আবিষ্কৃত পদ্ধতি যা শরিয়তের মতই পালন করা হয়।যেমন আমরা যখন নামাজ শুরু করি তখন তাকবিরে তাহরিমা দিয়ে নামাজ শুরু করি।অনেকে নামাজ শুরুতে যে নিয়্যাত করে তা বিদাআত।রাসূল সা: ছানা ও দোয়া পড়েছেন তাকবিরে তাহরিমা করার পরে কিন্তু যারা এর আগেই যায়নামাজে পড়ে তারা বিদাআত করে।অর্থাৎ রাসূল সা: যা করেন নি তারা তা করে কিন্তু সাধারন লোক দেখে মনে করবে এতো ইবাদাতই।আমাদের উপমহাদেশে "নাওয়াইতু" মুখস্ত করার কারনে বহু মানুষ আলকোরআন কয়েক বছরেও শেষ করতে পারে না।বিদাআতিরা বিদাআতকে বাধ্যতামুলকভাবে পালন করে।বিদাতের বিপরীত হলো সূন্নত।যখন সমাজে বিদাতের প্রচলন হয় তখন সূন্নত আপনিই উঠে যায়।রাসূল সা: এর জীবন পদ্ধতির অনুসরন ছাড়া অন্য কোন পদ্ধতি অনুসরন করলে কখনো কামিয়াবি হতে পারবেনা।রাসূল সা: প্রতিদিন,প্রতিমাসে,প্রতি রাতে যেভাবে ইবাদাত করেছেন তা-ই করতে হবে উম্মতকে।রাসূল সা: এর আদর্ষের বিরোধিতা যারা করে তাদের উপর দুটো আজাব আসবে।তাদের উপর হয় পার্থিব জীবনের বিপর্যয়(ফিতনাহ) না হয় আখেরাতের যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।মুসলিম দেশগুলোর আজ যে বিপর্যয় তা একমাত্র সূন্নতের খেলাপ ছাড়া আর কি হতে পারে।সূরা কাহফের ১০৩/১০৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'বলো-আমরা কি তোমাদের জানিয়ে দিব কারা কর্মক্ষেত্রে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত? এরাইতো এই দুনিয়ার জীবনে তাদের প্রচেষ্টা পন্ড করছে অথচ তারা মনে করে যে তারা বেশ উৎপাদন করছে।" ছহি মুসলিমে মা আয়শা রা: বর্ননা করেছেন,'যে ব্যাক্তি আমাদের এই ধর্মের কাজে নতুন কোন কাজ করে যা ধর্মের অন্তর্ভুক্ত নয় তাহলে সেটা প্রত্যাখ্যাত।" ছহি বোখারিতে রাসূল সা: বলেন,"আমার উম্মতের প্রত্যেকে জান্নাতে যাবে তবে যে অস্বীকার করলো।সাহাবারা জিজ্গেস করলো কে অস্বীকার করে? রাসূল সা: বলেন,যে ব্যাক্তি আমাকে মানবে সে জান্নাতে যাবে আর যে আমার বিরুদ্ধাচারন করবে সে অস্বীকার করলো।" আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা: বলেন,প্রত্যেকটি বিদাআত হলো গোমরাহি যদিও মূর্খ মানুষরা ভাল মনে করে।" ঈমান শাফেয়ি (র) বলেন,যে ব্যাক্তি কোন কিছুকে ভাল মনে করা শুরু করলো সে শরিয়ত রচনা করলো।খতমে খাজেগান,খতমে ইউনুছ - এগুলো শুনতে তো খুব ভাল এবাদত মনে হয় কিন্তু যারা করে তারা কি আলকুরআন বা হাদিছে এ রকম দলিল পেয়েছে যা তারা করছে।হাদিছে রয়েছে ফরয নামাজের পরে নফল যত ইছ্ছা নামাজ পড়তে পারে,ফরয যাকাতের পর নফল সদাকা করতে পারে,ফরয রোজার পর নফল রোজা করতে পারে,জীবনে একবার হজ্জ করার পর নফল হজ্জ ও যত ইচ্ছা ওমরাহ করতে পারে।অর্থাৎ শরিয়ত অনেক কিছু দেওয়ার পরও নতুন ইবাদাত তৈরি করা হলো কেন? কারন শয়তান তাদের গোম্রাহ করার অংগীকার করেছে এবং তা-ই হচ্ছে।ঈমাম হাছান বছরি (র) বলেন,তোমাদের পূর্বের জাতি ইহুদি ও খৃষ্টানরা পথভ্রষ্ঠ হয়েছে কারন তারা দলে দলে বিভক্ত হয়েছে।তারা নবীদের ত্বরিকাকে ছেড়ে মন গড়া পথ তৈরি করে পথভ্রষ্ঠ হয়েছে।আল্লাহ বিদাআতিদের নামাজ ,রোজা, ওমরাহ ও হজ্জ কবুল করেন না যতক্ষন বিদাআত না ছাড়ে।"
সুতরাং আমাদের কর্তব্য হলো ছহি সূন্নাহের প্রচার করা।এ পবিত্র মাসে এ সম্পর্কে পড়াশুনা করা ও আমাদের ইবাদাতকে ছহি করার চেষ্টা করা।মা বোনদের মৌলিক কাজ হলো পর্দার ভিতর থেকে আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলা। স্বামীর সংসার ও সন্তানদের দ্বীনের আলোকে আলোকিত করার চেষ্টা করা।রাসূল সা: এর স্ত্রী কন্যা ও সাহাবাদের স্ত্রী কন্যাদের আদর্ষ কি ছিল তা জানা পড়া ও সে অনুযায়ি আমল করা।যারা আজ মানবতার দোহাই দিয়ে নারি স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করছে বা অনেক বিভক্ত ইসলামি মহিলা সংগঠন ফাসেক ইসলামি সরকারের বিরুদ্ধাচরন করতে গিয়ে সমাজ কে ক্ষতবিক্ষত করছে ও নিজেরা লান্চিত হচ্ছে তাদের ইসলাম থেকে সঠিক দীক্ষা নেয়া উচিত।ইসলাম একটি উম্মাহ।সে উম্মাহকে একত্রিত করার জন্য সবাইকে সহনশীলতার কাজ করতে হবে।মানুষ তৈরি করার যে মহান দায়িত্ব এটা সবাইকে নিতে হবে।সত্যিকারের মানুষ তৈরি না হলে জাতীয়তাবাদের আশ্রয়ে থেকে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়।এতে যেমন সংঘর্ষ বাড়বে তেমনি মানুষের জান মালের বিঘ্ন ঘটবে।এর পরিনতি আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পরের বছরগুলো থেকে আজ পর্যন্ত।ধার্মিকতা হবে নিছক আলকুরআন ও সূন্নাহ মেনে,শির্ক ও বিদাআতকে প্রশ্রয় দিয়ে নয়।নিজের আস্তিনে সাপ রেখে নিজেকে পরাজিত করা ছাড়া মুসলিম বিশ্বের আজ কিছুই করার নেই।মুসলিম জাতির নিশ্চই ভাবার সময় এসেছে।
বিষয়: বিবিধ
১৫১৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দ্বীনকে জানার জন্য যে অনুষ্টান হয়ে থাকে তাকে কি বিদাত বলা যাবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন