জন্মসূত্রে মুসলিম হলেই তাকে খাঁটি মুসলিম বলে না।মুসলিম হওয়ার জন্য ধর্মকে চর্চা করতে হয়।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৩ জুলাই, ২০১৪, ০২:৫৫:২৯ দুপুর
বাংলাদেশে আমরা ৯০% মুসলমান যদি ধরে নেই তাহলে সবাই আমরা মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহন করেছি অর্থাৎ আমরা জন্মসূত্রে মুসলমান।মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহন করা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।কারন আমরা যখন কোন অমুসলিমদের মুসলমান হতে দেখি, তারা যে অনেক খড় কুটো জ্বালিয়ে তাদের ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্মকে গ্রহন করে নেয় তা নিতান্তই কঠিন কাজ।আপনি যদি কোন খৃষ্টান, যে মুসলিম হয়েছে তাকে জিগ্গেস করেন কিভাবে তোমার ধর্মকে পরিবর্তন করে এলে? সে তখন আপনাকে অনেক কাহিনী শুনাবে।কেউ কেউ ৫/১০ বছর অন্য ধর্মগুলোর উপর পড়াশুনা করেছে এমনই বলবে।তার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছে।তাহলে ভেবে দেখুন যার জন্মের পরেই কুরআনের শব্দ কানের কাছে ভেসে এলো,ইসলামের আলো তাকে আলোকিত করলো আর সে হয়ে গেল পরবাসি আর অন্য একজন বুঝে শুনে তার ধর্মকে পরিত্যাগ করে এ ধর্মকে গ্রহন করে ধন্য হলো।আজকাল মুসলিমদের মৃত্যুগুলো দেখে হতাশ হয়ে যাই যে যারা সারাজীবন বেঁচে ছিল আল্লাহর দয়ায়।তার দেয়া আলোবাতাস,চন্দ্র সূর্য কিরন ও আরো অসংখ্য নেয়ামত ভোগ করেছিল দুনিয়ায় আর তার সাথে প্রতি মুহূর্তে তাঁর নাফরমানি করেছিল,যখন তাকে বিদায় জানানো হলো তখন সেই আল্লাহর আইন মেনেই বিদায় দেয়া হলো।এই বিদায় দেয়াতে কি তার লাভ আছে? প্রতিটি ধর্মের একটা সুস্পষ্ট মুলনীতি রয়েছে।যে বা যারা মুলনীতি বা আদর্শ মেনে চলে তাদের বলা হয় আসল মুসলিম।একজন মুসলিমের জন্য দু'টি মুলনীতি রয়েছে এ জীবন চলার পথে।তা হলো আল্লাহর কিতাব(আলকুরআন) অন্যটি হলো রাসূল সা: এর মুখনিসৃত বানি বা সূন্নাহ।একজন মুসলিম হতে হলে এক আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূল সা: এর প্রতি ঈমান নিয়ে আসতে হবে অর্থাৎ তার জীবনে তৌহিদ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।সূরা আল ইখলাসে আল্লাহ তাঁর রাসূল সা: কে বলেন,'তুমি বল-আল্লাহ একক ও অদ্বীতিয়।' রাসূল সা: এর মত ঈমানদার দুনিয়ার কেউ যেমন হতে পারবেনা তেমনি তাঁর সাহাবাদের মতও এ উম্মতের কেউ হতে পারবেনা।তবে তাদের অনুসরন করে উম্মতকে যতদূর এগুনো যায় ততদূর আমল আখলাখের উন্নতি সাধন করতে হবে।এর অর্থ হলো অন্তত জান্নাতে প্রবেশ করার যে যোগ্যতা সেটা অর্জন করতে হবে।আর এ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে শরিয়তের(ইসলামি আইন কানুন) ইতিবাচক দিক গ্রহন করে নেতিবাচক দিক বর্জন করে।আংশিক গ্রহন ও আংশিক বর্জন নয়।
সূরা বাক্কারার ২০৮ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' ওহে যারা ঈমান এনেছ! সম্পুর্নরুপে ইসলামে দাখেল হও আর শয়তানের পদচিহ্ন অনুসরন করো না।নি:সন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শক্রু।' এই আয়াতে ঈমানদের বলা হয়েছে তারা যেন ইসলামে পুরোপুরি প্রবেশ করে যেন তারা আখেরাতে কামিয়াবি হয়ে যায়।তাহলে একজন মুসলিমের কাজ হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমান নিয়ে আসা,নামাজ কায়েম করা,যাকাত আদায় করা (আর্থিক সামর্থ থাকলে),রমজানের রোজা রাখা ও বায়তুল্লাহর হজ্জ (আর্থিক সামর্থ থাকলে) করা।এই পাঁচটি মূল নীতিকে কেন্দ্র করে বাকী আরো কাজ করতে হবে ইসলামি শারিয়া(ইসলামি আইন কানুন) অনুযায়ি।শয়তানের যে পদাংকের কথা বলা হয়েছে তা পুরোপুরি বর্জন করতে হবে।মনের ভিতরে ও বাইরে সব রকম শয়তানি প্ররোচনাকে বর্জন করে চলতে হবে।আল্লাহ সবচেয়ে বেশী দয়ালু ও কল্যানকামি মানুষের জন্য।আল্লাহ শুধু মানুষকে সৃষ্টিই করেন নি,সৃষ্টি করে তার জীবন চলার পথে নবী মোহাম্মদ সা: কে গাইড হিসেবে পাঠিয়েছেন এবং তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর প্রানান্ত পরিশ্রম করে একদল ইসলামের কর্মি বাহিনী তৈরি করে মদিনায় পূর্নাংগ ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।ভাল মুসলিম হওয়ার কারন হলো দুনিয়ার ও আখেরাতের কল্যান লাভ করা।এই কল্যান লাভ করতে হলে মানুষকে তার জীবনের হিসাব নিকাশ করে প্রতি মুহূর্তে কাজ করতে হবে।আল্লাহ সূরা কাফের ১৬-১৯ আয়াতে বলেন,'আমরা নিশ্চই মানুষ সৃষ্টি করেছি আর আমরা জানি তার অন্তর তাকে কি কুমন্ত্রনা দেয় আর আমরা কন্ঠশিরার চেয়েও অতি নিকটে।সে যা-ই উচ্চারন করে তার জন্য রেয়েছে প্রহরি তার ডানে ও বাঁয়ে।আর মৃত্যুকালীন মূর্ছা সত্যি সত্যি আসবেই , এইটিইতো যা থেকে তুমি অব্যাহতি চাও।' সেজন্য প্রতিটি মু'মিনকে আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকতে হবে।তাকে যেমন মর্যাদা ও ভয় করার তা-ই করতে হবে।আমরা তো সুযোগ পেলেই নিয়ম ভংগ করি কিন্তু যদি আমরা মনে করি আল্লাহ সব সময় আমাদের সাথে আছেন , দেখছেন ও শুনছেন তাহলে কারো পক্ষে কোন অন্যায় করা সম্ভব নয়।সূরা আল ইমরানের ১০২ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহকে ভয় শ্রদ্ধা কর যেমন তাকে ভয়ভক্তি করা উচিত আর তোমরা প্রানত্যাগ করো না আত্মসমর্পিত না হয়ে।'
একজন মু'মিন কেমন ভয় করতে পারে আল্লাহকে? আমরা যখন রোজা রাখি তখন ইচ্ছা করলে কাউকে না দেখিয়ে কিছু খেয়ে নিতে পারি কিন্তু করি না কেন? একমাত্র আল্লাহর ভয়ে কারন আমরা জানি আমাদের সব কাজ আল্লাহ দেখছেন ও শুনছেন।সেজন্য আল্লাহ বলছেন রোজা আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দিব।আমাদের ইসলাম সম্পর্কে গভীর ধারনা না থাকার কারনে আমাদের কাজে কর্মে পার্থক্য দেখা যায়। ইসলামে প্রবেশ করলে ইসলামের ভিতরেই থাকতে হবে।নিজের প্রবৃত্তির অনুসরন করা চলবে না।জীবনের প্রয়োজনে এর পরিবর্তন করা চলবেনা।ইসলামের আইন কানুন চিরন্তন।এটা রাজনৈতিক অবস্হান নয় যে আজ আমি এক দলের সাথে থাকলাম ও কাল অন্য দলে চলে গেলাম। এটা নীতি ও আদর্শের ধর্ম।কোন কারনে যদি মৃত্যুও এসে যায় তাহলে এর উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে।একজন ভাল মুসলিম হতে হলে প্রচুর ধৈর্যশীল হতে হবে ও তার সাথে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে।রাসূল সা: বলেছেন কোন মানুষের যখন মৃত্যু হয় তখন তিনটি জিনিস তার কাজে আসে।১-নেক সন্তান ২-সদাকায়ে যারিয়া ৩- তার কৃত নেক আমল। আমাদের জীবনের সাথে এই তিনিটি বিষয় ওতোপ্রোতভাবে জড়িত কোন না কোনভাবে।আমাদের সন্তান সন্ততি আছে,আমরা প্রতিমুহূর্তে ভাল মন্দ কাজ করি আবার সদাকাও করে থাকি।আজকের মুসলমানদের খুব কমই দেখা যায় সন্তানদের কোরানিক শিক্ষা দিতে।যারা আমরা ইসলামের কথা বলি তাদেরও এর উপর কোন আমল নেই।পার্থিব শিক্ষা দেওয়াটাই এখন অনেকের কাছে মুখ্য।অথচ রাসূল সা: এর সময়ে এমন কেউ ছিল না যে কোরান শিখে নি।প্রথম শিক্ষাই ছিল আলকোরানের শিক্ষা।আর দান খয়রাত তো এখন রীতিমত দেখানোর আদলে করে থাকে অনেকে।আমলের অর্থ হলো কাজ।আমরা তো প্রতি মুহূর্তে কাজ করি কিন্তু সৎকাজ কত ভাগ করি তা ভেবে দেখার ব্যাপার রয়েছে।সৎ কাজটি হতে হবে আলকুরআন ও সূন্নাহ ভিত্তিক।নিজের মনগড়া একটা কাজ তৈরি করলেই সেটা সৎ কাজ হবে না।বিদাআতিরা এ কাজে খুবই পারদর্শী।বিশেষ করে ইসলামের বিভক্ত দল বা শ্রেনীগুলোর মধ্যে এ প্রবনতা দেখা যায়।দলগুলো তাদের একটি আদর্শ বা মুলনীতি তৈরি করে এবং তাদের মুরুব্বিরা এতে নেতৃত্ব দেয়।প্রশ্ন হলো ইসলামে এই বিভাজনের জন্য আলকুরআনে কোন আয়াত আছে কি? বা রাসূল সা: এর সূন্নায় কোন ছহি হাদিস আছে কি? বরং আলকুরআনে সূরা আনয়ামের ১৫৯ আয়াতে ও সূরা রুমের ৩২ আয়াতে আল্লাহ এদের সম্পর্কে কটাক্ষ করেছেন। যে যার যার মত ইসলাম প্রচার করছে।কেউ কারো ছায়া পর্যন্ত দেখতে রাজি নয়।নতুন নতুন নিয়মে তারা ইসলামের কাজ করছে যার সাথে রাসূল সা: এর দৈনন্দিন জীবনের মিল নেই এমনকি সহাবায়েকরামদের কাছ থেকেও মুহাদ্দেছিন গন এসব দিক নির্দেশনা পান নি।এগুলো এসেছে মাযহাবকে কেন্দ্র করে।চারজন ঈমামেরও অনেক পরে এই বিভক্তিগুলো এসেছিল এক ধরনের ধর্মান্ধ ও বিবেকশূন্য মানুষ থেকে। এর মুল কারন হলো মানুষ তৌহিদ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল।আদম আ: এর সময়ে এক হাজার বছর পর মানুষ শির্কে লিপ্ত হয়েছিল জ্গান লোপ পাওয়ার কারনে।আর নূহ আ: ৯৫০ বছর এ জাতিকে দাওয়াত দিয়েও মাত্র সামান্য কিছু ছাড়া দ্বীনে আনতে পারেন নি।সুতরাং ইসলামের কাজ করতে হলে যথাযথ আলকুরআন ও সূন্নাহকে আঁকড়ে ধরে এক উম্মতের দিকে মানুষকে ডাকতে হবে।কোন কিছু বাড়ানো বা কমানো যাবেনা বা নিজের প্রবৃত্তির অনুসরনও করা যাবে না আল্লাহর আইনের ক্ষেত্রে।মুরুব্বিদের কাজ যদি আল্লাহ ও তার রাসূলের অনুসরনে না হয় তাহলে তাদের সঠিক দাওয়াত পৌঁছানোর দায়িত্ব নিতে হবে উম্মতকে।
মুসলিম হয়ে বেঁচে থাকা একটা প্রচেষ্টার ব্যাপার।আর এর জন্য কুরআন ও হাদিসের অনুশীলন একটি প্রাত্যহিক করনীয় কাজ।রাসূল সা: এর যখন ৪০ বছর পূর্ন হলো তখন মক্কার হেরা গুহায় ফেরেস্তা জিবরিল আমিন আবির্ভূত হলেন।তিনি কুরআনের সূরা আলাক্কের প্রথম চার আয়াত,('তুমি পড় তোমার প্রভূর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন,সৃষ্টি করেছেন মানুষকে এক রক্তপিন্ড থেকে,পড়ো-তোমার প্রভূ মহাসম্মানিত,যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে।') পড়ার জন্য বললেন।রাসূল সা: বললেন আমি পড়তে জানি না।অতপর , পর পর তিনবার জিবরিল আমিন তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন ও শেষোক্ত বারে তিনি পড়লেন।যে পড়া ও কলম দিয়ে আল্লাহ মানবজাতিকে শিখানোর ব্যবস্হা করলেন,আজ মুসলিম জাতি সেই কোরআন ও হাদিস থেকে পুরো দেউলিয়া হতে চলছে।নামাজ ,রোজা , যাকাত ,হজ্জ এসেছে অনেক পরে।এমনকি ঈমানের মত জিনিসটিও রাসূল সা: ধীরে ধীরে প্রচার করেছিলেন।তিরমিজি শরিফে রাসূল সা: বলেন,'প্রত্যেক মুসলিম নরনারির জন্য ইলম হাসেল করা ফরয।' তাহলে আল্লাহ সম্পর্কে জানা প্রথম শর্ত একজন মু'মিন ও মুসলমানের জন্য।আজকের মুসলিম জাতির অনেককে আল্লাহ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সঠিক উত্তরটিও দিতে পারবে না।ভারত উপমহাদেশে যদি কাউকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় তাহলে বলে আল্লাহ সব যায়গায় বিদ্যমান।ইবাদতের প্রথম শর্ত অর্থাৎ যার ইবাদত করা হয় তার সম্পর্কে যদি আক্কিদা ঠিক না থাকে তাহলে কিভাবে সেটা ইবাদত হওয়া সম্ভব।সূরা মুলকের ১৬/১৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' কি? যিনি উর্দ্ধলোকে রয়েছেন তার কাছে থেকে কি তোমরা নিরাপত্বা গ্রহন করেছ?' তাহলে বুঝা গেল আল্লাহ আরশের উপর অবস্হিত আছেন।তিনি যেমন আরশের উপর আছেন তেমনি আমাদের অতি নিকটেও এই জ্গান থাকতে হবে তাঁর সম্পর্কে।চাঁদ ও সূর্য আল্লাহর একটি অন্যতম নিদর্শন ও সৃষ্টি।এই দুটো জিনিস আমাদের থেকে অনেক দূরে থাকলেও আমাদের অনেক কাছে।আমরা যেদিকে যাই বা যে দেশে যাই আমাদের কাছাকাছি দেখতে পাই।তাহলে মহান আল্লাহ সম্পর্কে আমাদের এই ভ্রান্ত আক্কিদা কেন? আল্লাহতো বলেই দিয়েছেন কোন সৃষ্টি আমাকে দেখবে না।আমরা তাহলে ভেবে নিব আল্লাহ আরশে আছেন।আল্লাহর মুখমন্ডল আছে,সবকিছুই রয়েছে তবে আল্লাহ আল্লাহরই মত এবং সব কিছুর ছেয়ে বড় ও মহাশক্তিশালী। বাতিল আক্কিদার বিশ্বাসিরা মনে করে উসিলা ছাড়া কোন দোয়া কবুল হয় না।অথচ আল্লাহ সূরা বাক্কারার ১৮৬ আয়াতে বলেন,'আর যখন আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে তোমাকে জিগ্গাসা করে, তখন বলো , আমি নি:সন্দেহে নিকটে।আমি প্রার্থনাকারির প্রার্থনার জবাব দেই যখনই সে আমাকে আহ্বান করে আর তারা আমার প্রতি সাড়া দিক আর আমাতে ঈমান আনুক যাতে তারা সুপথে চলতে পারে।' প্রতিটি বিদা'আতির জন্য এই আয়াতটি জ্গানের আধার নয় কি? ভারত উপমহাদেশে যে পিরতান্ত্রিক ইবাদত হয় এগুলো ইসলাম থেকে খারিজ ও বিদাআতি ইবাদত।রাসুল সা: তো নয়-ই তাঁর সাহাবা বা স্বর্ন যুগে এরকম ইবাদত ছিল কিনা তার একটি ছহি হাদিস প্রমানের জন্য তাদের প্রতি আবেদন করছি।ইনশাআল্লাহ ক্কেয়ামত এসে যাবে কিন্তু কোন প্রমান তারা উপস্হাপন করতে পারবে না।তা হলে যে ইবাদত জান্নাতের ফায়সালা করবেনা সে ইবাদত কোন ইবাদত নয়,বরং রোজ ক্কেয়ামতে তাদের দ্বীগুন আযাবের জন্য আল্লাহর কাছে অনুসারিরা দোয়া করবে।সূরা আহযাবের ৬৭/৬৮ আয়াতে আল্লাহ বলেন,'তারা আরো বলবে,আমাদের প্রভু! আমরা তো আমাদের নেতাদের ও আমাদের বড় লোকদের আজ্গাপালন করেছিলাম সুতরাং তারা আমাদের বিপথে নিয়েছিল।আমাদের প্রভু! দ্বিগুন পরিমান তাদের শাস্তি প্রদান কর আর তাদের ধিক্কার দাও বিরাট ধিক্কারে।'
মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টির সেরা করে সৃষ্টি করেছেন।যারা বলে রাসূল সা: নুরের তৈরি তারা কি রাসূল সা: এর মানহানি করেনি? আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করে ফেরেস্তাদের দিয়ে সেজদা করিয়ে প্রমান করলেন যে মানুষই শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। তাহলে বিদা'আতিরা এ কথার অবতারনা কোথা থেকে করে? এগুলো তাদের ভ্রষ্টতা ও মনগড়া স্বপ্নের ধর্ম যা শয়তান তাদের প্রোরোচিত করেছে।যদি আব্দুল কাদের জ্বিলানী ওলি হতে পারেন তাহলে আপনি আর আমিও তো চেষ্টা করলে সরাসরি আল্লাহর সান্নিধ্যে গিয়ে ধন্য হতে পারি।এর জন্য কোন মাধ্যমের প্রয়োজন আছে কি? আজকে ভারত উপমহাদেশের যে কবর পূজা ও পীর পূজা হচ্ছে তার জন্য হক্কানি উলামাদের আরো বেশি কাজ করতে হবে এগুলো উপড়ানোর জন্য। গ্রামেগন্জে এমন কোন বাড়ি বা কবরস্হান নেই যেখানে কবর পাকা হচ্ছে না। যারা ঔসব এলাকায় ইসলামের কাজ করেন তাদের এর বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায় না।প্রতিটি ধর্ম তার মূলনিতিতে চললে কোন সমস্যা থাকার কথা নয়।আজকাল ইসলামের নামে যে উগ্রতা দেখা যায় তা রোধ করার দায়িত্ব সরকারের। ধর্মিয় উগ্রবাদে ইসলাম বিশ্বাসি নয়।ইসলাম শান্তির ধর্ম কিন্তু ইসলামের উপর যদি কেউ আঘাত আনতে চায় তার প্রতিবাদ করতে হবে প্রতিটি মুসলিমকে সহনশীলতার সাথে।মানুষের জান মাল ক্ষতির মাধ্যমে নয়।সূরা কাহফের ১১০ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' বলো-আমি তোমাদের মত নি:সন্দেহে একজন মানুষ, আমার নিকট প্রত্যাদিষ্ট হয়েছে যে তোমাদের উপাস্য এক ও একক সুতরাং যে কেউ তার প্রভুর সাথে মোলাকাতের কামনা করুক তবে সে সৎকর্ম করুক এবং তার উপাসনায় কাউকে শরিক না করুক।' তাহলে আমরা যারা শহরে ও লোকালয়ে মুসলিম হিসাবে বাস করছি তাদের ভাবার প্রয়োজন রয়েছে আমরা কোন ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত আছি? যদি ইসলামের উপর আমাদের পুরোপুরি প্রবেশাধিকার না থাকে তাহলে মৃত্যুর পর যত ইসলামি কায়দায় আমাদের কবরে রাখা হোক না কেন বা দুনিয়ায় আমাদের যত সম্মান দেখানো হোক না কেন তা কোন কল্যান বয়ে আনবে না।আর এই কবর হলো আখেরাতের প্রথম দ্বার যা থেকে উত্তীর্ন না হতে পারলে আশংকা রয়েছে কঠিন আযাবের যা বলা হয়েছে সূরা ফযরের ২৫/২৬ আয়াতে,' সেইদিন কেউ তাঁর শাস্তির মত শাস্তি দিতে পারবে না, আর না পারবে কেউ বাঁধতে তাঁর বাঁধনের মত।'
প্রতিটি মুসলিম ভাই ও বোনকে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য একটি উম্মতে দাখিল হয়ে ধৈর্য ,নামাজ তথা কুরআন ও হাদিস চর্চার মাধ্যমে এগুতে হবে। জন্মসূত্রে মুসলিম হলেই তাকে খাঁটি মুসলিম বলে না।মুসলিম হওয়ার জন্য ধর্মকে চর্চা করতে হয়।ধার্মিক হওয়ার জন্য নিরসলস পরিশ্রম করতে হয়।মানুষকে কল্যানের দিকে ডাকতে হয় রাসূল সা: এর অনুসরনে।আর এটাই জান্নাতের একমাত্র পথ এর কোন বিকল্প নেই।
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১। খতনা করার সুবাদে মুসলমান
২। বাপ দাদা মুসলমান সেই সুবাদে মুসলমান।
৩। কালেমা পড়ে বুঝে মুসলমান ।
এই ৩নং আবার অনেক ভাগে বিভক্ত।
তাহলে দেখুন কয়জন পক্রত মুসলমান।
যারা মাঠে ময়দানে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় রত তাদের সংখ্যা যতই কম হোক এরাই সঠিক যাদেরকে বাতিল শক্তি উৎখাত করার চেষ্টা করছে।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন