আমার পোশাক আমিই ঝলসাই

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৩:০৮:৩৭ দুপুর

প্রিয় পাঠক আমার অভিপ্রায় ছিল, আজ একটি চিঠি যা অনেক আগে লিখেছিলাম আমার গৃহিনীর উদ্দেশে যখন তিনি হাঁপিয়ে উঠছিলেন চেলেমেয়ের তান্ডবে।এটা প্রতি মা'ই বরন করে নেন।যাই হোক বিষয়টি ছিল " মায়ের আঁচলে সন্তানের ভালবাসা" পরে আপনাদের লিখবো।

চিরাচরিত নিয়মে বিদেশী একটি পেপার খুলতেই সে ঘটনার সাথে হাজারো ঘটনা মনে পড়ে গেল।বাংলা লিখা যদিও আমার জন্য বরাবরই ঝুঁকির ব্যাপার তবুও ভাবছি আপনাদের এ ব্যাপারে আর একটু গভীর ধারনা থাকা দরকার।সূরা বাকারার ১৮৭ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, " তোমরা তাদের পোশাক , তারা তোমাদের পোশাক"।

সোবহানাল্লাহ! আমারা যারা মুসলমান তারা কি ভেবে দেখেছি এ আয়াতটির তাপছির কি? কেন আপন আদরের ঘরনীকে ঝলসানো? এ কোন বিকারগ্রস্ত মানুষীকতা? আমি পর্যালোচনা করে দেখলাম আমাদের পারিবারিক বন্ধনে নিশ্চয়ই কোন ব্যবধান আছে। আসুন মনের গভীর থেকে কিছু কথা জেনে নেই:

একবার পৌর বিজ্ঞান পড়তে গিয়ে দেখলাম পরিবার হলো রাষ্টে্ৃর একক।আর সূরা নিসায় বলেছে পুরুষকে নারির এক ধাপ উপরে মর্যাদা দেয়া হয়েছে।এই এক ধাপের কারনে এত বাহাদুরি? এই যে ধর্ষন দেখছেন পৃথিবী ব্যাপী এর জন্য কারা দায়ী? গত ডিসেম্বরে দিল্লীতে দামিনি নামে যে মেয়েটির উপর পাশবিক অত্যাচার হয়েছিল তার নেপথে্য্য কারন কি? আমার লিখা " A beautiful muslim society infected by disease" নামক টপিকটি পড়লেই বুঝতে পারবেন।আল্লাহ পাক এ দু'জন পুরুষ ও মহিলার সম্পর্ক এত গভীর করে দিলেন তা আমরা কি কখনো খুঁজে দেখেছি? আজকের পৃথিবী আসলে আমরা মানুষগুলি নিজেরাই জটিল করে ফেলেছি।নিজের মনকে প্রশ্ন করুন দৈনন্দিন কতটুকু ভালবাসার আদান প্রদান আমরা করছি।দু'জন দুজনার কত গভীরে যেতে পেরেছি।ইসলাম আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে।একদিন রাসূল সা: ছাঁদনী রাতে দৌড় প্রতিযোগিতা করলেন আয়শা (রা) এর সাথে।হেরে গেলেন রাসূল সা:।

আবার একদিন প্রতিযোগিতায় রাসূল সা: প্রতিশোধ নিলেন।আ্য়শা (রা) বললেন আগের দিনের তুলনায় এ দিন আমি সামন্য ভারি হয়ে গিয়েছিলাম।আমাদের ব্যাস্ততা অনেক কিন্তু আমাদের সময় বের করে নিতে হবে। একে অন্যকে সময় দেয়ার মত সময় খুঁজে নিতে হবে।ধরুন আপনি একজন চাকুরিজীবি।যেটা আমি করে থাকি। যেহেতু আমি ফাইনানসিয়েলের সাথে জড়িত সেজন্য এটা আমার জন্য সহজ।বেতন পেলে পুরো মাসের বাজেট করে পেলি।এতে করে দেখা যায় প্রতি মাসেই সারপ্লাস থেকে যায়।মনে রাখবেন আপনি আপনার ঘরনীকে যদি সম্মান করেন তিনিও করবেন।আমরা ইছ্ছে করলে প্রতিদিনই একে অন্যকে সারপ্রাইজ দিতে পারি। এটা হলো মনের ব্যাপার।আপনার যত অভাবই থাকুক না কেন মনকে প্রফুল্ল রাখুন।আমি মানে করি স্বামীকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসলে ভাল।আপনার ঘর আপনার আ্ংগিনা।এখানে বাধা দেয়ার কেউ নেই। আমরা অনেকে বাইরে রোমান্স করতে ভালবাসি যা বারন করা হয়েছে।আপনার পছন্দের কথাগুলো বলতে শিখুন।তিনি তো আপনার পোশাক।বাইরে থেকে আসলেন, বস সুলভ আচরন না করে জড়িয়ে ধরুন।আপনার ধী্র্ঘ বিরহকে জীবনের প্রাপ্তিতে ভরে দিন। বিকালে সবাইকে নিয়ে ঘুরে আসুন মুক্ত বাতাসে।না হয় খেয়ে নিন বাইরে।শোবার আগে বসুন না কিছু ক্ষণ দু'জন বারান্দায় যেখানে কোলাহল নেই,আবছা আলোতে জড়িয়ে নিন চাদরে। সকালে নাস্তাটা একসাথে করুন।দুপুরে লান্স করুন একসাথে। রান্না ঘরে রান্না করছেন চুপি চুপি গিয়ে চিমটি কেটে দিন। কখনো নিয়ে আসুন না তার পছন্দের খাবার বা অন্য কোন উপহার, এতে ভালবাসা আরো গভীর হবে।অনেকে কৃপনতা করেন তার ফল ও পেয়ে থাকেন। যেমন একজন করেছিল। গল্পটা সত্য তবে শিক্ষনীয়।এক ভাবির বায়না ফিলাপ করেননি ভাই।দু'বচর দেই দেই করে বেচারি অপেক্ষা করছিলেন।একবার ঈদ এলো আর চার দিন বাকি।এদিকে ভাই ক'দিনের জন্য বাইরে গেলেন।ভাবির এক সহচরি ব্যাপারটা জানতো।তিনি কিছু টিপস দিলেন।যেই কথা সেই কাজ।ভাবি এবার আগের মত না থেকে ঘর সাজালেন চমৎকার করে।পছন্দের খাবার রান্না করলেন।পারলার এ গিয়ে সাজলেন।বেচারা এলেন। ঘরে প্রবেশ করে পরিবর্তন দেখে বললেন কি হয়েছে তোমার? আগে তো কখনো এমন দেখিনি।ভাবি বললেন স্বামির জন্য এ তো বেশি কিছু নয়।খাওয়া শেষ।এবার ঘুমানোর পালা।হাত বাড়াতেই ভাবি বলে উঠলো ওগো কাল আমার সখের সেট টা কিনবো টাকাট দাওনা।বেচারা বললো ঠিক আছে সকালে দিব।ভাবি বললেন আমার অপেক্ষার পালা শেষ এবার তোমার।বেচারা আর কি করবে।পকেট থেকে টাকাটা বের করে বললেন, মেয়েদের চলচাতুরি বুঝা ভার।আমি বলছি না আমরা এমন হব তবে আপনার সামর্থানুসারে খুশি রাখুন একে অন্যকে।মনে রাখবেন আপনার আ্ংগিনা শুধু আপনারই জন্য।তার হেপাযত আপনাদের দু'জনকেই করতে হবে।

আমাদের ভালবাসার কমতি ও সামাজিক সমস্যাগুলোর জন্য দায়ী আমরাই।আমাদের ভালবাসা যত গভীর হবে ঝলসানো কমে যাবে।আমাদের স্কুল গুলোতে শরির চর্চার ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দেয়া জরুরি।কয়েক মাস আগে আব্দুল গাপ্পার ছৌধুরির একটা কলাম পড়ে এর গুরুত্ব অনুভব করলাম।তিনি একটি মেয়ের চমৎকার ঘটনা বর্ননা করলেন।তিনি পূর্ব লন্ডন থেকে বাসায় ফিরছিলেন।পাতাল ট্রেনে উঠে একটি টিন এজার এর সামনে বসলেন।মেয়েটি একটি বই পড়ছিল যেমন জাপানিরা ট্রাভেল এ পড়ে থাকে।পরের স্টেশন থেকে তিনটি বালক উঠে বালিকাটির সামনে বসে টিজ শুরু করলো বিভিন্ন ভাবে।হঠাৎ একটি বালক তার পাশে এসে বসলো।এবার মেয়েটি বই বন্ধ করে তাকাল যেমন চৈেএর প্রখর সূর্যকিরন প্রকম্পিত করে।মেয়েটির কারাত জানা ছিল।এক মিনিটের মাথায় ছেলেটিকে ধরাসায়ি করে ফেললো।বাকি দু'জন হতবিহবল হয়ে গেল।পরের স্টেশন আসতেই নেমে পালিয়ে গেল।আমাদের মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য এরকমই সজাগ হতে হবে।মনে রাখবেন রাসুল সা: বলেছেন ,তোমাদের ভাল সব কাজই সদাকা।আপনার সুন্দর কথাগুলো ও সদাকা।আসুন না শুরু করি।আপনার পোশাক অনে্্য্যর কাছে দেখতে যত অসুন্দর ই হোক তা আপনার কাছে প্রয়।কবি বলেছেন , কালো আর ধলো বাহিরে কেবল ভিতরে সবার সমান রা্ংগা।

বিষয়: বিবিধ

১২৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File