তারুন্যের অবক্ষয়,অমেরুদন্ডি,দুর্নিতির দুষ্টচক্রের আবেষ্টনে আমাদের শিক্ষাব্যাবস্হা।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৮ জুন, ২০১৪, ০৪:১৬:৩২ বিকাল
'শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড বা শিক্ষা সভ্যতার বিকাশ ঘটায়' এ কথাগুলো কে না জানে? সেই স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে ,সভা সেমিনারে এ কথার অবতারনা হয়েই চলছে কিন্তু এর আসল স্বরুপ আমাদের জানা হয়ে উঠছে না। আজ দীর্ঘ সময় পেরিয়ে এসে এর ভাবার্থ নতুন করে বুঝতে শুরু করলাম।নি:সন্দেহে শিক্ষা সভ্যতার বিকাশ ঘটায়।শিক্ষাই মানুষকে মুল্যবোধ শিখায় ও অবচেতন মনকে চেতনা যোগায়।একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।শিক্ষা মানুষকে বন্য জীবন থেকে সভ্যতায় পৌঁছে দিয়েছে।শৃংঙ্খলাবধ্য জীবনে আবদ্ধ করেছে।আমাদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করি না,শিক্ষাকে কেন মেরুদন্ডের সাথে তুলনা করা হলো? একটি মেরুদন্ডি ও অমেরুদন্ডি প্রানীর যেমন পার্থক্য আছে তেমনি পার্থক্য আছে শিক্ষা ও মেরুদন্ডের সাথে।একটি মেরুদন্ডি প্রানীর সাথে অমেরুদন্ডি প্রানী কখনো প্রতিযোগিতা করতে পারেনা।যদিও করে তাহলে নির্ঘাত হারতে বাধ্য হবে।মানুষের মধ্যে যারা সচেতন তারা মেরুদন্ড সোজা করেই বাঁচতে চায়।কেউই মেরুদন্ডহীনভাবে বাঁচতে চায় না।আমরা অনেকে শিক্ষিত বলে গৌরব করি।একশত ভাগ শিক্ষার হার নিয়ে স্কুল কলেজ , অভিভাবকবৃন্দ ও ছাত্র ছাত্রীদের উল্লাস করতে দেখি।কিন্তু শিক্ষার আসল রুপ কি হওয়া উচিত তা অনেকেই জানি না।শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে যুগের পর যুগ পর্যালোচনা,পরিবর্তন , পরিবর্ধন কোন কিছুই নৈতিক অবক্ষয় রোধ করতে পারেনি।এই মেরুদন্ডকে সোজা ও সুদৃড় করার জন্য জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনে ব্যায় করি।এই অর্জিত শিক্ষা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ব্যার্থতায় পর্যবেশিত করে।সভ্যতার এ যুগ, যাকে আমরা বিজ্গানের উৎকর্ষতার যুগ বলি তাতে শিক্ষার উৎকর্ষতা না বেড়ে বরং মুল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রবল ধারা বর্ষিত হতে দেখা যায়।
আমাদের ছেলেবেলার প্রতিটা স্কুলের স্মৃতির সাথেই গেঁথে আছে সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত একটি খেলার মাঠ। গ্রামে স্কুল শুরুর আগে বা পরে, টিফিনের ফাঁকে ক্লাসের বন্ধুদের সাথে গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্ধা,হা-ডু-ডু,ফুটবল বা ভলিবল খেলায় মেতে থাকতাম। বিকেলে ছুটির পর খেলাধুলা করে ঘাম ঝরিয়ে বাড়ি ফেরার আগে খালের স্বচ্ছ শীতল পানিতে ডুব-সাঁতার কেটে গোসল করে ঘরে ফিরতে হয়েছে আমাদের অনেক বন্ধুকে। ক্লাসের পড়া খুব কম-ই আমাদের বাসায় এসে পড়তে হয়েছে। স্কুল ছুটির পর বা ক্লাসের ফাঁকে আমরা গ্রুফ ষ্টাডি করে পড়া অনেকটাই শেষ করে আসতাম।বাড়িতে এসে অল্প সময়ে হোম ওয়ার্কগুলো করে ফেলতাম।আজকের মত সৃজনশীল পদ্ধতি ছিল না,প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হতো ৩/৪ পৃষ্ঠা।আমাদের কেউ কেউ এমনভাবে মুখস্ত করতো যেন দাঁড়ি বা কমাও বাদ পড়তো না।বিশেষ করে সাহিত্যে ৮০% মার্ক পাওয়া ছিল দুষ্কর তার পরও অনেকে অতিক্রম করে যেত।আজকের মত কোচিং এর তেমন ব্যাবস্হা ছিল না।শিক্ষকরা ছিলেন নৈতিকভাবে উদার।ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক ছিল ভয় ও আদরের মাঝামাঝি অবস্হানে।
আমাদের ছোটবেলায় দেখেছি পাঠ্যপুস্তকের সাথে নৈতিক শিক্ষার একটা প্রভাব ছিল।ইসলামিয়াত বলে যে বিষয়টি ছিল তাতে দ্বীনের মৌলিক বিষয়গুলো সন্নিবেশিত ছিল অন্তত: এতটুকু আমরা শিখেছিলাম কিভাবে ভাল ও মন্দের পার্থক্য করা যায়।তাছাড়া যে ছড়ার বইগুলো ছিল তাতেও নৈতিক শিক্ষা সম্বলিত ছড়া ছিল যা সমাজের অনেক বিষয় শিশুদের কচি মনকে নৈতিকতা গঠনে সহায়তা করতো।অধিকাংশ শিক্ষক ছিলেন উদার ও ধর্মানুরাগী।আমার মনে পড়ে একজন কঠোর ব্যাক্তিত্বের শিক্ষক ছিলেন যিনি ইসলামিয়াত পড়াতেন।শরিয়তের ছোট ছোট বিষয়গুলো পড়ে না আসলে বেত্রাঘাত করতেন ও সকল ছাত্র ছাত্রীর সামনে টেবিলে দাঁড় করে রাখতেন।আমার মনে হয় , এই কঠোর শাসনে ইসলাম ধর্মের উপর যে হাতে খড়ি হয়েছে আজ এত পরেও সে অবদান ভুলতে পারছিনে।সেই মূলধারাটি কুরআন ও হাদিসের দিকে প্রবলভাবে ধাবিত করেছে এবং আমাদের অনেককে নৈতিকতা গঠনে সহায়তা করেছে।আজকের বৈজ্গানিক সভ্যতার যুগে শিক্ষার যতটা প্রসার ঘটেছে তার ছেয়ে বেশি পদস্খলন হছ্ছে ছাত্র ছাত্রীদের পাশ্চাত্য সভ্যতা সংস্কৃতি অনুকরনের ফলে।এর প্রভাব আমাদের হাজার বছরের লালিত ইসলামি সংস্কৃতিকে পর্যুদস্ত করেছে।বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্হায় নৈতিক মান বজায় রাখার জন্য ইসলামের তেমন অনুশীলন নেই।বরং পাঠ্য বিষয়ে অনেইসলামিক সংস্কৃতি ,শরিয়তের ভুল তথ্য সন্নিবেশিত করা হছ্ছে যা ধরা পড়ছে দীর্ঘ পরে।কি করে সম্ভব হয় একটি পাঠ্য পুস্তকে ভুল তথ্য উপস্হাপন?এ কোন সহজ ভুল নয়।এর পিছনে রয়েছে বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রভাব।কোন বই ছাপা হলে বিশেষজ্গ দিয়ে ফ্রুপ রিডিং হয়ে থাকে।আর জাতীয় কোন ব্যাপার হলে সেখানে মিনিষ্ট্রি জড়িত থাকে।বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের প্রফেসর যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেন।সেখানে ভুল থাকার কারন থাকতে পারে কি? আমরা এখানে দু'টো বিষয়কে জড়িত করতে পারি।এক-বিষয় সম্পর্কে অজ্গতা দুই-বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রভাব।এছাড়া আর কোন কারন দেখিনা।সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্হায় নৈতিক মান বজায় রাখার জন্য ইসলামের তেমন অনুশীলন নেই বললেই চলে।অথচ আমরা মুসলমান নাম ধারন করে বেঁচে আছি।স্কুল কলেজ ও ইউনিভার্সিটিগুলোতে যে শিক্ষা দেয়া হছ্ছে তা দুনিয়া নির্ভর।সত্তর ও আশির দশকেও এ রকম ভয়াভহ অবস্হা ছিল না আজ যেমন পরিলক্ষিত হয়।স্কুল কলেজ ও ইউনিভার্সিটিগুলোতে যে অরাজকতা চলছে তাতে পড়াশুনার মান নিছের দিকেই যাছ্ছে।আমরা এক সময় দেখেছি ছাত্র নেতাদের দেখে সাধারন ছাত্ররা সম্মান ও সমীহ করতো।নেতারাও কনিষ্ঠদের স্নেহ করতেন যদিও সেখানে ইসলামের বালাই ছিলনা।সামাজিকভাবে বসবাসের যে সাধারন নীতি তা পরিলক্ষিত হতো।যারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন তারা পড়াশুনা করতেন।নেতা হওয়ার মত যোগ্যতা অর্জন করে সেন্ট্রাল লিডিং এ যেতেন।আজ তার উল্টো।এখন কোন ছাত্র নেতারা পড়াশুনা করে না।বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন রকম ডিগ্রি নিয়ে নেন আর শিক্ষকরা কোনভাবে তাদের বের করে দিতে পারলেই বাঁচেন। এখন যা হচ্ছে ছাত্র নেতারা সন্ট্রাল লিডারদের লেজুড়ে পরিনত হয়েছে।এর কারন হলো নৈতিক অবক্ষয়।সেন্ট্রাল লিডারগন তাদের পেশি শক্তি হিসেবে এদের ব্যবহার করে থাকেন।ফলশ্রুতিতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন ছাত্রনেতা বের হওয়ার আগেই বাড়ি গাড়ির মালিক হয়ে যান আবার অনেককে জীবনও দিয়ে দিতে হয় বিরোধীদের কাছে। এখন শিক্ষকরা ছাত্রদের সমীহ করে চলেন।এক শ্রেনীর শিক্ষকরা এখন আন্দোলন নির্ভর অর্থাৎ ছাত্ররা যেমন রাজনৈতিক সংগঠনের লেজুড় শিক্ষকরাও তেমন। সেজন্য দেখা যায় সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে সাদা ,নীল ও সবুজ দলের সমারোহ। এ যখন জাতির অবস্হা তখন মেরুদন্ড তৈরি হছ্ছে কোথায়?
গত তিরিশ বছরে ঢাকা শহরের পুরনো নামী-দামি স্কুলগুলোর পাশে আরো নতুন নতুন নামী-দামি স্কুল হয়েছে। মূলত বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এসব স্কুলের বেশিরভাগেরই প্রয়োজনীয় খেলার মাঠ নেই। শুধুমাত্র পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের নিরীখে শহরের তথাকথিত নামী-দামি স্কুল-কলেজগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ভর্তি-বাণিজ্য, কোচিং-বাণিজ্য, ডোনেশন বাণিজ্যসহ ও দুর্নীতির সিন্ডিকেট। ষোলকোটি মানুষের রাজধানী শহরে দেড় কোটি মানুষের বসবাস। এই দেড় কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু-কিশোর, তরুণ। মূলত দেশের প্রতিটি শিশুর সুশিক্ষা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। তবে নামী-দামি স্কুল-কলেজের সংখ্যা বেশি থাকলেও লেখাপড়ার সার্বিক ও সমন্বিত পরিবেশের ক্ষেত্রে রাজধানী শহরের অবস্থা অনেক বেশি নাজুক। এখানে শিক্ষাকে এক ধরনের মুনাফাবাজির পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাপকরা শুধুমাত্র স্কুলভবন ও কিছু শিক্ষক নিয়োগ দিয়েই খালাস। শিক্ষক ও শিক্ষার মান নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। শিক্ষাব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা এবং শিক্ষায় নৈতিক মানহীনতার খেসারত দিতে হচ্ছে পুরো জাতিকে। শিশুদের পিঠে বইয়ের ভার ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বইয়ের ভার শিশুরা বইতে পারছে না, হোমওয়ার্ক ও কুইজ পরীক্ষার চাপে পড়ার টেবিল থেকে তারা সরতেই পারছে না। খেলবে কখন? প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পেরোনোর আগেই চোখে মোটা গ্লাসের চশমা নিতে বাধ্য হচ্ছে অনেক শিশু। এমনিতেই বাজারের প্রতিটি খাদ্যদ্রব্যে নানা রকম ভেজাল ও রাসায়নিকের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত দেশের প্রতিটি মানুষ। এসব ভেজাল ও বিষমিশ্রিত খাদ্যের সবচেয়ে প্রবল ও দীর্ঘমেয়াদী শিকার হচ্ছে শিশুরা। সেই সাথে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা স্রেফ পুঁথিনির্ভর, পাবলিক পরীক্ষার জিপিএ নির্ভর হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে দেশের শিশু-কিশোর-তরুণরা ভগ্নস্বাস্থ্য, মনন ও মেধাহীনতার বৃত্তে বন্দি হয়ে পড়ছে। এক সময় স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্তঃস্কুল খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সরগরম হয়ে উঠতো শিক্ষাঙ্গন। এই কার্যক্রমের সে সময়টুকু এখন গ্রাস করেছে কোচিং-প্রাইভেট টিউশনির বাণিজ্যিক ধান্দা এবং শিশুদের পুরো সময়টাই গ্রাস করেছে হোমওয়ার্ক, কুইজ পরীক্ষায় জিপিএ গ্রেড বাড়ানোর কসরত। গত কয়েক দশকে আমাদের শিক্ষায়তনগুলোতে পাসের হার বেড়েছে, পাবলিক পরীক্ষায় তারকা শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। সাম্প্রতিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেড়লক্ষাধিক। শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার ও জিপিএর হার যতই বাড়ছে শিক্ষার মান ততই যেন কমছে। ভিন্নভাবে বললে বলা যায়, বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় মানুষ যত বেশি হারে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে, তথ্যপ্রযুক্তির নতুন নতুন ধারায় মানুষ যতই তথ্যসমৃদ্ধ হয়ে উঠছে ততই যেন কমে আসছে প্রজ্ঞাবান মানুষের সংখ্যা। এই বাস্তবতা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। এর প্রধান কারণ হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক ও সহশিক্ষাকার্যক্রম বাদ দিয়ে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র পাসের হার এবং যেনতেন প্রকারে জিপিএ বাড়ানোর তীব্র প্রতিযোগিতা ও চাপে ঠেলে দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের।এই সমস্ত জিপিএ ধারি হাইব্রিড ছাত্র ছাত্রিরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্তরে আসে তখন আর একটি বড় বিড়ম্বনার শীকার হয়।
দীর্ঘকাল পর এক প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র যিনি এখন সন্তানের জনক,নিজের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিপদে পড়েছিলেন।ছাত্র ছাত্রিরা এখন ক্যাম্পাসে অশ্লিল কাজ করতে কা্উকে তোয়াক্কা করে না।ভদ্রলোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে তার দ্বাদশী কন্যাকে নিয়ে যাছ্ছিলেন।এমএস করার সময় কয়েকমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ষ্টাপ কোয়ার্টারে থেকেছিলেন কয়েকমাস।ভাবলেন ওখানে ষ্টাফ ও অন্যান্যদের সাথে দেখা করে কন্যাকে পুরনো স্মৃতি দেখিয়ে গন্তব্যে চলে যাবেন।মসজিদের পাশ দিয়ে ঢুকতেই কয়েকজোড়া ছাত্র ছাত্রীকে দেখলেন অশ্লিল কাজে লিপ্ত।মেয়েটি জিজ্গেস করলো বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরা অশ্লিল কাজ করছে কেন? কি জবাব দেবে বাবা? তিনি আর কালক্ষেপন না করে বেরিয়ে গেলেন।যে মেয়েটির এখনো ১২ বা ১৩ পার হয়নি সে বুঝতে পারলো অশ্লিলতা আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারা বুঝছেনা।এ পরিস্হিতি বিরাজ করছে এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।আমার এক কাজিন জাহান্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।আমি একবার ক্যাম্পাসে গিয়ে আর যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলাম না কারন নিজের ছেলেমেয়েদের বিষাক্ত বাতাস যেন গায়ে না লাগে।কিন্তু আমরা যাবই বা কোথায়? কোন একটি বিনোদনের যায়গায় আজ পরিবার নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে কি? যেখানে রয়েছে অশ্লিলতা,ছোট বড়র মধ্যে সমীহের কোন ভাব নেই,শ্রদ্ধা ও সম্মান নেই। শুধু কি তাই,একবার ঔই একই( জাহান্ঙির নগর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে পত্রিকায় পড়েছি এক ছাত্রনেতা ধর্ষনের সেন্চুরির উৎসব পালন করেছে।ক্যাম্পাসগুলোতে বা কোন পার্কে এখন পরিবার নিয়ে যাওয়ার কোন উপক্রম নেই।অশ্লিলতা এখন এমন চরম আকার ধারন করেছে যা সমাজকে বিষিয়ে তুলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তৈরি হওয়ার পিছনে একটা ইতিহাস রয়েছে।ইংরেজরা এদেশে উচ্চশিক্ষার নামে অপসংস্কৃতি চালু করার জন্যই স্হাপন করেছিল।এটা বলবোনা ওখান থেকে ভাল মানুষ বের হছ্ছে না।তবে ভাল মানুষগুলোর সংখ্যা খুবই কম।যার পরিনতি তো আমরা দেখতে পাছ্ছি।একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কি ঘুষ বানিজ্য করতে পারে? কাউকে ঠকাতে পারে? সরাকরি অর্থ আত্মসাৎকারিরা এ সমস্ত বিদ্যাপিঠ থেকেই বেরুছ্ছে।নৈতিক মান না থাকার কারনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যেখানেই দায়িত্ব পেয়েছে তারা খেয়ানত করে টাকার পাহাড় বানিয়েছে।গত রোববারে একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জনৈক আমলার গত কয়েক বছরের দুর্নীতির খানিকটা প্রকাশ করা হয়েছে, ডক্টরেট ডিগ্রীধারী এই আমলা গত এক দশকে দুর্নীতি, ঘুষ ও কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে ১৮০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তিনি একজন প্রভাবশালী আমলা, ক্ষমতাসীনদের সাথে তাল মিলিয়ে, প্রশাসন ক্যাডারকে রাজনৈতিক প্লাটফর্ম বানিয়ে নিজের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকটা প্রকাশ্যেই। আমাদের সিভিল প্রশাসনে, রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের রাঘব বোয়ালের সংখ্যা অনেক। জাতীয় সম্পদ তথা দেশের ষোলকোটি মানুষের সম্পদ লুণ্ঠন করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত কোটি মানুষ যখন স্রেফ নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনে দিনান্ত পরিশ্রম করে অথবা পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্য ছেড়ে বছরের পর বছর ধরে বিদেশ-বিভূঁইয়ে অমানুষিক পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে, তখন তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত শ্রেণীর একটি অংশ দেশের দরিদ্র মানুষের সম্পদ লুণ্ঠন করে ক্ষমতাবান ও অভিজাত শ্রেণীতে পরিণত হচ্ছে। আমাদের রাজনীতিতে এখন যতবড় ডক্টরেট ততবড় চোর , তা-ই প্রতীয়মান হচ্ছে।তবে আসল ডক্টরেটদের এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
উপরের একটি উদাহরন আমাদের চিন্তার খোরাক যোগাবে।এভাবে সমাজে তৈরি হয়ে আছে লাখ লাখ কালো টাকার মালিক যারা আমাদের সামনে প্রতিনিয়ত সুন্দর কথা বলছেন। কি করে ২৫/৩০ বছরের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়।ছাত্র জীবনে যাদের দেখেছি পরিবার থেকে মাসে ১ বা ২ হাজার টাকা খরচ করতে পারেনি।মাত্র একটি চাকুরির কারনে বা ছাত্র নেতা হওয়ার কারনে ১৫/২০ বছরে ১/২ টি বাড়ি , ফ্লাট ,মার্কেট কমপ্লেক্সে দোকান আাবার তারই বন্ধু একসাথে পড়াশুনা করে কোনভাবে ছোট একটা অফিসার্স কোয়ার্টারে থেকে দিনাতিপাত করছে।এ আলাদিনের ছেরাগ কোথা থেকে এলো, পাঠক ভেবে দেখবেন কি?এ রকম হাজারো উদাহরন ছড়িয়ে আছে আমাদের সমাজে।জাতীয় ইলেক্শনের নামে যে অরাজকতা তৈরি হয়ে আসছে তাতে খবর কাগজে দেখেছি কোটি কোটি টাকা লেনদেন করে নোমিনেশন নিয়েছে। লেটেষ্ট মডেলের গাড়ি হাঁকিয়ে চলে যাছ্ছে আমার আর আপনার সামনে।কুরআন বলেছে সূরা বাক্কারার প্রথম দিকে মানুসের যখন অন্তর রোগগ্রস্ত হয়ে যায় তখন সে অন্তরে ঢাকা পড়ে যায় আর সে কিছুই দেখতে পায় না।এই যে মেরুদন্ড হীন শিক্ষা লাভ করলো তা দ্বারা জাতিকে পিছিয়ে দেয়া হলো।একজন পশ্চিমা শিক্ষাবিদ বলেছেন, আনুষ্ঠানিক শিক্ষা হচ্ছে- চিড়িয়াখানার ভেতর দিয়ে হেঁটে যাওয়া, আর অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা হচ্ছে বিশাল অরণ্যের ভেতর দিয়ে চলা। উভয় ক্ষেত্রেই হয়তো বণ্য প্রাণীর সাথে সাক্ষাৎ মিলবে, একটি খাঁচায় অথবা চার দেয়ালে বন্দি, অন্যটি অবারিত নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে বিচরণশীল। আনন্দহীন এবং বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কহীন শিক্ষা ব্যক্তির সামগ্রিক উন্নয়ন ও জাতির অগ্রগতিতে কোন কাজে আসে না। আমাদের জাতীয় জীবনে আজকে যে বিশৃঙ্খলা ও অনিশ্চয়তা ভর করেছে তার মূলে রয়েছে অবাস্তব ও অপরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা। আর শিক্ষাজীবনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের যে মিথ্যা ও অসুস্থ প্রতিযোগিতায় ঠেলে দেয়া হচ্ছে, অভিভাবকদের ঠেলে দেয়া হচ্ছে অর্থ ব্যায়ের প্রতিযোগিতায়, তাতে শিক্ষাজীবন শেষে বেশিরভাগ উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেটধারী মানুষ হিসেবে নিজের প্রতি, পরিবারের প্রতি ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার নৈতিক অঙ্গিকার ভুলে গিয়ে যেনতেন প্রকারে অর্থবিত্ত কামাইয়ের অসুস্থ-অমানবিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। রাসূল সা: হাদিসে বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক নর-নারীর জন্য ফরজ। আর এখন শিক্ষাজীবনের শুরুতেই শিশুর মন-মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে- ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে’। অর্থাৎ লেখাপড়া করার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে বড় হয়ে বিত্তবান হওয়া। আমাদের সমাজে ও রাষ্ট্রে আজকে যে সন্ত্রাস, দুর্বৃত্তায়ন, লুটপাট, দখলবাজি চলছে তার পেছনে শিক্ষাব্যবস্থার এই গোড়ার গলদই দায়ী। প্রত্যাশার কাছাকাছি পৌঁছতে না পারলেও স্বাধীনতা পরবর্তী গত প্রায় সাড়ে চার দশকে দেশের অর্থনীতি যতটুকু ভিত্তি লাভ করেছে তার পেছনে দেশের তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত শ্রেণীর অবদান খুবই গৌণ। বরং বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োজিত দেশের লাখ লাখ শ্রমিকের পাঠানো রেমিটেন্স, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কর্মরত লাখ লাখ অশিক্ষিত নারী-পুরুষের শ্রমেই অর্জিত হয়েছে অর্থনীতির আজকের অর্জিত প্রবৃদ্ধি। অন্যদিকে কৃষকদের প্রজ্ঞা ও শ্রমে হাজার বছর ধরে এ দেশের কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বুনিয়াদ নিশ্চিত রয়েছে। আজকে যখন শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, মেধা ও প্রযুক্তির দ্বারা বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব নির্ধারিত হচ্ছে, তখন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সেখানে পুরোপুরি ব্যর্থতার প্রমাণ দিচ্ছে। দেশে যে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, প্রশাসনিক দুর্নীতি, লুটপাট, দখলবাজি ও সন্ত্রাসের বল্গাহীন রাজত্ব চলছে তার পেছনে রয়েছে তথাকথিত উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেটধারী সরকারি আমলা, সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ছাত্র-শিক্ষক, শাসনক্ষমতার আসনে বসা মন্ত্রী-এমপিরা।
আমরা এখন সময়ের জটিল এক আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছি, যখন শিক্ষাব্যবস্থা হয়ে পড়েছে স্রেফ সার্টিফিকেট ও গ্রেডপয়েন্ট নির্ভর। এ ধরনের শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ হয় ভীতু, অকর্মন্য হয়ে সমাজে পরগাছার মতো টিকে থাকছে, অথবা ফ্রাঙ্কেনস্টাইন দানবের মতো সমাজের ঘাড়ের উপর চেপে বসে দরিদ্র মানুষের সম্পদ লুণ্ঠন করছে।
বর্তমান সময়ে নৈতিকতা বিপর্যয়ের আর একটি কারন হলো ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক ও কোচিং নির্ভরতা।খুব বেশি দিনের কথা নয়,আমরা যখন স্কুলে পড়েছি তখনো প্রাইভেট পড়ার প্রচলন ছিল তবে বর্তমান সময়ের মত নয়।আমরা তখন জটিল বিষয় গুলো টিফিন পিরিয়ডে গিয়ে শ্রেনি শিক্ষকের কাছ থেকে সমাধান করে নিতাম।আবার কেউ কেউ ঐ সময়ে প্রাইভেট ও পড়তো।তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জটিল বিষয় যেমন: ইংলিশ , ম্যাথমেটিক্স,বিজ্গান বিষয়গুলো পড়তো অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছাত্ররা।খুব বেশি দুর্বল হলে স্যারদের বাড়িতে যেতে বলতেন।তখন শিক্ষকগন টিউশন নির্ভর ছিলেন না।খুবই আন্তরিক ছিলেন এবং দায়িত্ববোধের কারনে নিজের সন্তানের মত ছাত্র ছা্ত্রিদের পরিচর্যা করতেন।যেমন শাসন করতেন তেমনি আদরও করতেন।সে জন্য তাদের সুনাম ছিল আকাশচুম্বী।শত কষ্ট হলেও আমরা দেখা করতে যেতাম। আজকাল তা দেখা যায় না কারন হলো মান সম্মান ঢাকা পড়েছে টাকার কারনে।সেজন্য একজন লোকাল শিক্ষক তার ছোট বেলার এক বন্ধু শিক্ষক, যিনি এখন ধনমানে উঁচু তাকে বলতে বাধ্য হয়েছেন ছাত্র জীবনের একটি হৃদয় নিংড়ানো কথা বলতে " সেই ডাল আর রুটি এখন মুরগির রোষ্টের নিছে ঢাকা পড়েছে।" আজকাল সন্তানের পড়ালেখা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে যতটা উদ্বেগ দেখা যায়,আমাদের সময় এ রকম ছিল না।এখন দেখা যায় শহরের এমন কোন গলি নেই যেখানে কোচিং সেন্টার নেই।এমনকি গ্রামে গন্জে ও পৌঁছে গেছে।আকর্ষনীয় বিজ্গাপনে এখন কোচিং সেন্টারগুলো নামি দামি শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত।শিক্ষার্থিরা কোচিং না করলে অনেক ক্ষেত্রেই ভাল করতে পারে না।এর একমাত্র কারন হলো স্কুল চলাকালীন পাঠদানে নিষ্কৃয়তা।সে কারনে অভিভাবকগন অনোন্যপায় হয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ কামনায় ব্যায় করেন বিশাল অংক।যদি একটি সন্তান থাকে তা না হয় চালানো যায়।কিন্তু যার ৪বা ৫জন স্কুলগামি সন্তান আছে তার পক্ষে এ ব্যায়ভার বহন করা সম্ভব কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।তাছাড়া আমাদের দেশে একজন নাগরিক মাসিক কত টাকা আয় করেন যিনি তার পারিবারিক অন্যান্য খরচ মোকাবিলা করে শিক্ষকদের এই ব্যায়ভার বহন করেতে পারেন। অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন এখন সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু হয়েছে,নোট মুখস্ত করার সময় কোথায়? সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু হলেও বাস্তবে থেমে নেই মুখস্ত করার প্রবনতা।এই পদ্ধতি অনুসরন করে বাজারে বের হয়েছে বহু নোট,গাইড।এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ি রয়েছে তারা অপেক্ষায় থাকে তাদের রমরমা ব্যাবসা করার জন্য।অনেক শিক্ষক ছাত্র ছাত্রিদের পরামর্শ দেন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার জন্য।শিক্ষকের আচরনে এই যে পরিবর্তন,এর ফলে মেধাবি ছাত্র ছাত্রি গড়ে তোলা সম্ভব কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।আর একটি কারন হলো , মেধাবি কিছু ছাত্র ছাত্রি শিক্ষকদের এই শিক্ষার কারনে ছাত্র অবস্হায় গড়ে তুলেছে অনেক কোচিং সেন্টার।যার ফলে স্কুল কলেজে শিক্ষকগন পাঠদানে শিথিলতা করেন।এভাবে পড়াশুনা চলতে থাকলে শিক্ষার মান যেমন কমবে তেমনি ব্যার্থ হবে উন্নয়নের পথ।অথচ কত চমৎকার ছিল তখনকার সময়ে, যে ছাত্রটি ক্লাসে মেধাবি সে কঠিন বিষয়গুলো শিক্ষকের উপস্হিতিতে বোর্ডে বুঝিয়ে দিত।আথবা শিক্ষক ছাত্রকে বোর্ডে ডেকে নিয়ে আসতেন।এতে করে ছাত্রদের পাঠে দৃড়তা বৃদ্ধি পেত।ছাত্রদের মধ্যে গ্রুপ ষ্টাডি করার প্রবনতা ছিল।প্রতিদিন বিকালে বা সপ্তাহের শেষে জটিল সমস্যাগুলো গ্রুপ ষ্টাডির মাধ্যমে সমাধান হয়ে যেত।আমাদের সে সমস্ত সহপাঠি নিম্নতম রেজাল্ট করেও আজ দক্ষতার সাথে বড় বড় দায়িত্ব পালন করছে।আজকের গোল্ডেন জিপিএ পাওয়া এ সব ছাত্র ছাত্রিকে অলরাউন্ড বলা যায় না।এখনকার একজন ছাত্র পড়ালেখা ছাড়া আর তেমন কোন কাজই জানে না।তার ঘর গুছানো,পোষাক পরিষ্কার,কেনাকাটা ,খাবার পরিবেশন এসব এখন মা বা কাজের লোকেকেই করতে হয়।আমাদের সময়ে এ কজাগুলো আমরাই করতাম এবং জীবনের বাস্তব ট্রেনিং আমরা তখনই অর্জন করেছিলাম।এমনকি আমাদের কেউ কেউ খাবার তৈরিতে নারিদেরও হারাতে পারতো।তাহলে আজকের যে ছাত্রটি জীবনের প্ররারম্ভেই হয়ে উঠেছে পরনির্ভর হয়ে , কর্মক্ষেত্রে গিয়েই নির্ভরতা জন্ম নেয় অনৈতিকতায়। তবে আশার কথা যে প্রতিটি অভিভাবক এখন সচেষ্ট সন্তানকে কিভাবে পড়ালেখা শিখাবে।অধিকাংশ মায়েরা এখন ব্যাস্ত থাকে ছেলে মেয়ের পড়াশুনার পিছনে।সরকার যদি নেগেটিভ বিষয় গুলোর দিকে দৃষ্টি দেয় তাহলে পাঠদান স্কুলেই সমাপ্ত হবে এবং পিতামাতাকে অতিরিক্ত বোঝা বহন করতে হবে না।একজন শিক্ষক ছাত্র ছাত্রিকে অসময়ে ঘুরাঘুরি করতে দেখলে পূর্বের মতই শাসন করলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে।
পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার বৃদ্ধিকে এখন রাজনৈতিক সাফল্য হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো যারা যখনই ক্ষমতায় বা বিরোধীদলে থাকেন তারা আমাদের আশার বানি শুনান।সে আশার বানিটা অনেকটা আমাদের কাছে এরকম "এক তালাকের মামলায় স্ত্রীর পক্ষের উকিল বললো স্বামিটার সব দোষ।জাজ সাহেব যার নাকি নীরপেক্ষ হওয়ার কথা তিনি বলেছিলেন, আপনি ঠিক-ই বলেছেন। এটা শুনে স্বামীর পক্ষের উকিল লাফ দিয়ে উঠে বলে,হুজুর স্ত্রীটাই তো দোষী।তখন জাজ সাহেব বললেন আপনি ঠিকই বলেছেন। এটা শুনে পিছন থেকে একজন মামলা বিহীন উকিল বললেন,হুজুর দু'জনই তো একসাথে ঠিক কথা বলতে পারে না।জাজ সাহেব বললেন আপনি ঠিক কথা বলেছেন।" আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্হা অনেকটা এরকমই আমাদের কাছে।আমরা কার কথা বিশ্বাস করবো অনেকেই বুঝে উঠে পারছিনা। যেহেতু সার্টিফিকেট বিতরণই শিক্ষাব্যবস্থার মুখ্য উদ্দেশ্য, অতএব শহর-গ্রামের যে কোন স্থানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কিন্ডারগার্টেন, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা এখন অতি সহজ বাণিজ্যিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে। একই বহুতল ভবনে একাধিক স্কুল, কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহাবস্থান দেখা যায়। যেখানে পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার বৃদ্ধির জন্য পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করাকে প্রকারান্তরে মেনে নেয়া হয়, সকলকে পাস করিয়ে দেয়ার জন্য অঘোষিতভাবে শিক্ষকদের প্রতি নির্দেশনা জারি করা হয়, সেখানে একই ভবনে পাঁচ-দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার বিষয়ে সরকারিভাবে কোন দ্বিমত থাকার কারণ নেই। প্রথমত, এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক টাকা খরচ করে সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত ব্যক্তি বেরিয়ে যাচ্ছে। একেকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়, আধুনিক ও ডিজিটাল শিক্ষাপদ্ধতির চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মধ্যবিত্ত এবং আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া ধনীদের এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আকৃষ্ট করা হয়। এদের পরিবারের সন্তানরা এখান থেকে তথাকথিত আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বের হচ্ছে। অন্যদিকে শত শত বিঘা জমিতে বিশাল প্রাঙ্গণ, খেলার মাঠসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে ওঠা পাবলিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও কি সত্যিকার শিক্ষিত নাগরিক সৃষ্টি করতে পারছে? যেখানে শিক্ষার মূল-মোটোই হচ্ছে কোন রকমে ভালো নম্বর নিয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করা, অতঃপর বাড়ি-গাড়ি বিত্তবৈভবের মালিক হওয়া, সেখানে শিক্ষার অন্যসব বিষয়গুলো উপেক্ষিত থাকবেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষক ক্ষমতার রাজনীতির লেজুড়বৃত্তিতে নিয়োজিত হয়ে পড়েছেন। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি অংশ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করে ছাত্রাবস্থায়ই গাড়ি ও ফ্লাটের মালিক হয়ে (গাড়ি-ঘোড়া চড়া) সাফল্যের রোল মডেলে পরিণত হচ্ছে। আর যারা ভালো ছাত্র হয়ে দীর্ঘ সেশন জট পেরিয়ে ভালো ফলাফল করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই উপযুক্ত চাকরি বা কর্মসংস্থান না পেয়ে এক সময় হতাশ হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে এবং বিদেশে গিয়ে কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে বেশিরভাগ উচ্চশিক্ষিত বাংলাদেশীই অডজব করছে। অন্যদিকে যেসব উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি বিসিএস পরীক্ষার আগে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে প্রশ্নপত্র যোগাড় করে পাস করেছে, অথবা নানা রকম কোটার ফাঁক-ফোকড় গলিয়ে চাকরির সোনার হরিণটি ধরতে পারছে তাদেরই অনেকে প্রশাসনের বিভিন্ন ক্যাডারে ঢুকে সুযোগ বুঝে রাজনৈতিক পরিচয় ধারণ করে সরকারের আস্থাভাজন আমলা বনে গিয়ে টাকা বানানোর প্রতিযোগিতা করছে। পত্র-পত্রিকায় এদের দুর্নীতি ও লুটপাটের ফিরিস্তি প্রকাশিত হলেও এরা তার পরোয়া করে না। দেশের যে শিক্ষিত তরুণ শ্রেণী, যাদের দেশের জন্য কাজ করার কথা, তাদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার চিন্তা দূরে থাক, কোন রকমে দেশ ত্যাগ করতে পারলেই যেন বাঁচে। গত ৭ জুন একটি দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ‘দেশ ছাড়ছেন উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী তরুণরা। গত পাঁচ বছরে ১৫৮৩ জন বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে ২০১২-১৩ অর্থ বছরেই ত্যাগ করেছেন ২৯৯ জন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদে বলা হয়, মেধাবী, উচ্চশিক্ষিত বিশেষ করে চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও আইটি দক্ষতাসম্পন্ন বাংলাদেশীরা দেশ ত্যাগ করছেন। নাগরিকত্ব ত্যাগের হার দিন দিন বাড়ছে।’ মেধাবী ও উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মধ্যে দেশত্যাগ ও রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়ার এমন প্রবণতা দেশের জন্য কল্যাণকর না হলেও, যারা রাজনীতি করেন তাদের মধ্যে এ নিয়ে কোন ভাবান্তর আছে বলে মনে হয় না। দেশ, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে শিক্ষিত তরুণ সমাজের বর্তমান চিন্তা-ভাবনা কি, এ নিয়ে দৈনিক ইনকিলাব সম্প্রতি তিনটি জরিপ প্রকাশ করে। ‘অনিশ্চয়তায় দেশবিমুখ এক-তৃতীয়াংশ তরুণ’ এ শিরোনামে গত ২১ মে, এর দুই দিন পর ২৩ মে ‘রাজনীতি বিমুখ তরুণ সমাজ’ এবং ১ জুন ‘দেশ ও অর্থনীতি নিয়ে হাতাশা’ শিরোনামে জরিপ প্রতিবেদনগুলো প্রকাশিত হয়। এই জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষিত তরুণরা যেভাবে তাদের মতামত তুলে ধরেছেন, তা দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা ৫ কোটি তরুণেরই যেন চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন। ইনকিলাবের এই জরিপ কার্যক্রম এমন এক সময়ে প্রকাশিত হয়, যখন দেশের রাজনীতি অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে মানুষের উদ্বিগ্নতা সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
দেশের স্কুল-কলেজগুলো ক্রমেই খেলার মাঠশূন্য হয়ে পড়ছে। প্রথমত ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান করতে খেলার মাঠগুলো স্কুল-কলেজের বহুতল ইমারতের দখলে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা, অনৈতিক আবাসিক প্রতিষ্ঠান গুলো, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার কর্তারাও খেলার মাঠ, পতিত জমি, বনাঞ্চল ও ডোবা-নিম্নাঞ্চলগুলোকে আবাসিক এলাকা অথবা মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স ভবন বা মার্কেট নির্মাণ করে জাতিকে উন্নয়নের মডেল উপহার দিচ্ছেন। ব্রাজিলে বিশ্বকাপ ফুটবলের মহা আয়োজন উপলক্ষে আমাদের দেশের প্রতিটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি বাড়িতে বিদেশি পতাকা উড়ানোর মচ্ছব দেখলে অনেকের মনে হতে পারে, এ দেশের কিশোর-তরুণদের ফুটবল প্রেম ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার তারুণ্যকেও হয়তো ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যেমন সুশিক্ষিত নাগরিক সৃষ্টি হচ্ছে না, আগামী দিনের সুযোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না, ঠিক একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্বমানের খেলোয়াড়, ফুটবলার বা ক্রিড়াব্যক্তিত্বও তৈরি হচ্ছে না। আমাদের ক্রিড়াঙ্গনে ক্রিকেটসহ যেসব ইভেন্টে বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে তারা কেউ কেউ হয়তো কোন না কোন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলো, তবে খোঁজ নিলে দেখা যাবে তাদের সাফল্যের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় ব্যক্তিগত বা পারিবারিক প্রয়াসই কাজ করেছে। দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন খেলাধুলার টিম গঠন ও টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হলেও স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খেলাধুলার সুযোগ সঙ্কুচিত ও অবহেলিত হওয়ায় খেলাধুলায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। ফিফার সর্বশেষ (জুন মাসে) র্যাং কিংয়ে দুই শতাধিক দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৭তম। উপমহাদেশের সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভুটানকে বাদ দিলে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্নে। ভারত, আফগানিস্তান, পাকিস্তান তো বটেই, ফুটবলে নেপাল, মালদ্বীপের অবস্থানও বাংলাদেশের উপরে। ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিক্স চর্চার বদলে আমাদের শিক্ষার্থীরা এখন ভিডিও গেম, ফেসবুকিংয়ে সময় পার করছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে শহরের কিশোর-তরুণরা এখন সাঁতার শেখারও প্রয়োজন বোধ করছে না। পানিতে ডুবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মর্মন্তুদ ঘটনা প্রায়শই সংবাদ শিরোনাম হতে দেখা যায়। নিজেরা কখনো ফুটবল নিয়ে মাঠে না নামলেও বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশের সমর্থন করতে গিয়ে হাজার টাকা খরচ করে বিদেশি পতাকা উড়াচ্ছে, নিজেরা বিভক্ত হয়ে বাড়াবাড়ি থেকে মারামারিতেও লিপ্ত হচ্ছে। প্রতিটা বিশ্বকাপ খেলাকে ঘিরে আমাদের দেশে বিদেশি পতাকা ওড়ানোর প্রতিযোগিতা লজ্জাজনক পর্যায়ে উপনীত হতে দেখা যায়। গত ২০ বছরে ফিফার ফুটবল র্যাংরকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কখনো প্রথম একশ’ দেশের মধ্যে আসেনি । ষোলকোটি মানুষের এই বাংলাদেশে তরুণরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, অথচ তৃতীয় বিশ্বের দেড়কোটি জনসংখ্যার দেশ চিলি, অথবা চারকোটি মানুষের দেশ আর্জেন্টিনার পতাকা নিয়ে আমাদের তরুণরা মেতে উঠে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো সম্ভব হলে, সার্টিফিকেট ও জিপিএ’র বদলে শিক্ষার্থীর সুশিক্ষা, সুস্বাস্থ্য ও মননশীলতার প্রতি প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দেয়া হলে দু’এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের ফুটবল বিশ্বকাপের আসরেও জাতীয় পতাকা উড়াতে সক্ষম হবে। ক্রিকেটের মধ্য দিয়ে আমাদের তরুণ ক্রিকেটাররা তার প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকিকরণ বন্ধের মধ্য দিয়েই কেবল আমাদের সমাজ ও রাজনীতিতে বিরাজমান দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও সন্ত্রাস বন্ধ করে একটি শান্তি, সাম্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বাস্তবায়ন সম্ভব।
শিক্ষা ব্যবস্হার ভিতরে যে এক বিষাক্ত বাতাস বইছে তা দ্রুব সত্য।নিত্যদিনের নানা শিক্ষা কেলেংকারি প্রকাশিত হছ্ছে দৈনিক পত্রিকাগুলোতে।বলতে হবে কোন এক অদৃশ্য , অজ্গাত , অশুভ শক্তি থাবা বসিয়েছে শিক্ষা ব্যবাস্হার উপর।একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে শিক্ষক ,ছাত্র ও অভিভাবকের সাহায্যে।স্কুল , কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি নিয়ম শৃংখলার মধ্যে না আসে তা হলে সেখান থেকে ভাল ছাত্র ছাত্রি বেরুনো অসম্ভব।শিক্ষা ব্যাবস্হাকে সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।নৈতিক মান গড়ে তুলতে হলে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি তথা ইসলামি শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে।যে রাসূলের আগমনে পৃথিবী ধন্য হয়েছে তার কোন জীবন কর্ম স্কুল , কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেই।এমনকি ইসলামিক ষ্টাডিজ এর মত বিষয়ে কুরআন হাদিসের পর্যাপ্ত শিক্ষা সিলেবাসে নেই।জাতি গঠন করতে হলে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ইসলামের বেসিক দিকগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঈমান , নামাজ, রোজা,যাকাত ,হজ্জের মত শরিয়তের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো কোমলমতি ছাত্র ছাত্রিদের পাঠদানে সংযুক্ত করা হলে তারা ইসলামি মূল্যবোধে বেড়ে উঠবে।এতে করে ধীরে ধীরে অপসংস্কৃতি বিদূরিত হবে।মানুষ এত বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে সমাজ ও জন গনের চিন্তাই কেউ করছেনা।শিক্ষা ব্যাবস্হার যদি আমুল পরিবর্তন করা না হয় তাহলে আগামি প্রজন্ম এক ভয়াবহ পরিস্হিতির শিকার হবে যা আজকের অবস্হা দেখে প্রতিয়মান হয়।
মানসম্মত শিক্ষা পদ্ধতি জ্গানের বিকাশ ঘটায়।মানুষের চেতনার মানকে উন্নত করে।সৃষ্টিশীল চিন্তাধারাকে ত্বরান্বিত করে। মানুষকে উদ্ভাবক হিসেবে তৈরি করতে সাহায্য করে।একটি দেশ অনেকগুলো বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত।যদি মানসম্মত উদ্ভাবক সংখ্যা না বাড়ে তাহলে সমাজ বা দেশের উন্নতি হবে কেমন করে?বৈজ্গানিক ব্যাবস্হার সাথে কুরআন হাদিসের অনুশীলন হলে মান সম্মত উদ্ভাবক তৈরি হবে।যিনি বৈজ্গানিক হবেন তিনি কুরআন হাদিসের পান্ডিত্ব অর্জন করবেন।যিনি অর্থনীতিবিদ হবেন তিনি ইসলামি অর্থনীতিতেও পন্ডিত হবেন।স্পেনে মুসলমানদের ৮০০ বছরের রাজত্বে মুসলমানরা এ রকম যোগ্যতার অধিকারি ছিল।আজকে যদি আমরা দার্শনিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখি তাহলে দেখতে পাবো মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই স্রষ্টা আল্লাহকে ভুলে যাওয়া।আল কুরআনের সূরা ইনশিক্কাকের ৬ আয়াতে আল্লাহ বলেন,"হে মানুষ! কিসে তোমাকে তোমার মহিমান্নিত রব সম্পর্কে উদাসীন করলো? অধিকাংশ মানুষ এখন আস্তিক, নাস্তিক,সেকুলার আবার মুসলমানদের মধ্যে সন্দেহবাদি হিসেবে সমাজে বাস করছে।স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়ার প্রভাব পড়ছে শিক্ষা ব্যবস্হার উপর।শিক্ষা ব্যবস্হা এখন দাঁড়িয়ে আছে সেকুলারিজমের উপর।বর্তমান বিজ্গান শিক্ষায় রয়েছে সেকুলারিজমের ছাপ।এক সময়ে মুসলিম বিজ্গানীরা যখন বিজ্গানের বিস্তার ঘটালো তখন বিগ্গানের প্রত্যেক বই " বিসমিল্লাহের রাহমানের রাহিম" দিয়ে শুরু করতেন।তারা স্রষ্টায় বিশ্বাসী ছিলেন গভীরভাবে।কিন্তু আজ কেন মুসলিম বিগ্গানীরা তাদের বই শুরু করতে "বিসমিল্লাহের রাহমানের রাহিম" লিখতে লজ্জাবোধ করেন তা মুসলিমদের ভাবিয়ে তুলছে।আমরা ছোট বেলায় ও দেখেছি মুসলিম নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অলংকৃত করতো।অনেকে এখন প্রকৃতির কথা বলে চালিয়ে যান।তারা এই প্রকৃতি কথাটি বলে কি বুঝাতে চান তা স্পষ্ট নয়।তারা একবারও ভেবে দেখে না এ সব প্রকৃতির আইন আছে কিভাবে। আইন প্রনেতা ছাড়া কি কোন আইন হয়?
বিশ্বমানের সাহিত্য চর্চা থাকতে হবে।ভাল সাহিত্য না পড়লে সৃষ্টিশীল চিন্তা বা উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়ে না।মানবিক মুল্যবোধ ও নৈতিকতা বর্ধিত হয় গভীর জ্গানের কারনে।আর মানবিক মুল্যবোধ না বাড়লে কল্যানকর চিন্তাও আসবেনা।আত্মকেন্দ্রিক প্রবনতাই কেবল বাড়তে থাকবে।প্রশ্ন আসতে পারে আমাদের দেশে কি শিল্পি ,সাহিত্যিক , বৈজ্গানিক তৈরি হছ্ছে না? হাঁ হছ্ছে আর তা শুধুমাত্র পাশ্চাত্ব শিক্ষা নির্ভর যেখানে নৈতিক মান সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব খুবই কম।শিক্ষা ব্যবস্হার ত্রুটির কারনে মানুষের মুল্যবোধ কমে যায়।রাস্তায় একজন অসুস্হ মানুষকে পড়ে থাকতে দেখেও সহযোগিতার হাত প্রসারিত হয় না।নেতিবাচক শিক্ষা কখনো মেরুদন্ড তৈরি করে না।বড় বড় ডিগ্রি হলেই সেটাকে শিক্ষা বলা যাবে না।শিক্ষার সাথে থাকতে হবে সংস্কৃতি ,রুচিবোধ ও মানবতাবোধ। তবেই সে শিক্ষা হয়ে উঠবে প্রকৃত শিক্ষা।শিক্ষার আলো সমাজ ও দেশের মঙল ঘটায় ও কল্যানসাধিত করে। বিজ্গানিরা নিজের কল্যানের কথা ভেবে কোন কিছু আবিষ্কার করে না।কোন সৃষ্টিশীল মানুষ নিজের জন্য কোন কিছু সৃষ্টি করেন না।বরং তা হয়ে থাকে গোটা মানবজাতির জন্য।শিক্ষা হবে নিজের জন্য ও মানবজাতির কল্যানের জন্য।শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ শিক্ষা হলো সংকীর্ন শিক্ষা।
বিষয়: বিবিধ
১৮৮১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যে জাতির মাঝে একাত্তর সালের পর নতুন করে নজরুল রবিঠাকুর, জসিম উদ্দীন ফররুখ কিংবা লালনের উত্তর সুরী তৈরী হয়নি, কাজেই বুঝতে হবে সে জাতি তার মাটির উর্বরতা হারিয়েছে নোংরাদের হাতে পরিচালিত হয়ে।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন