নাগরিক অধিকার রক্ষায় সরকার ও আইনশৃংখলা বাহিনীর ভূমিকা কেন শুন্যের কোঠায় নামছে? এর জন্য করনীয় কি?

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৫ জুন, ২০১৪, ০৬:০০:০০ সন্ধ্যা

একটি রাষ্ট্রে তিনটি প্রধান অংগ।Pirliament , Executive & Judiciary. বাংলেদেশেও যে কোন সরকার এই তিনটি বিষয়ের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক।তিনটি প্রতিষ্ঠানই স্বায়ত্বশাসনের দিক থেকে সবাই আইনের শাসন মেনে কাজ করবে এবং এটিই মুল দিক।রাজনীতিতে ক্ষমতা বলে একটি কথা আছে যার সাথে আমাদের কিছুটা পরিচিত হওয়া দরকার।'ক্ষমতার' ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Power. অক্সফোর্ড ডিক্শনারিতে 'ক্ষমতা' বা Power সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি হচ্ছে সর্বাধিক উচ্চারিত ১০০০ শব্দের মধ্যে অন্যতম একটি শব্দ। 'ক্ষমতা' হচ্ছে অন্যের আচরণ বা ঘটনাসমূহের গতি-প্রকৃতি নির্দিষ্ট করার বা প্রভাবিত করার যোগ্যতা বা সক্ষমতা। সামাজিক বিজ্ঞান ও রাজনীতিতে ক্ষমতা হচ্ছে জনগণের আচরণকে প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা।

অপরদিকে রাজনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ Politics, ল্যাটিন শব্দ politikos থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। politikos শব্দ দ্বারা তৎকালীন গ্রীক নগর-রাষ্ট্রের নাগরিক সম্বন্ধীয় বিষয়াদি বোঝানো হতো। নাগরিক বা ব্যক্তি পর্যায়ে একে অন্যকে প্রভাবিত করার চর্চা হচ্ছে রাজনীতি। অবশ্য এই একটিই কেবল রাজনীতির সংজ্ঞা নয়, রাজনীতির অসংখ্য সংজ্ঞা পণ্ডিতব্যক্তিবর্গ এ যাবৎ প্রদান করেছেন। 'যার আছে এবং যার নাই'— এ দু'য়ের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া বা সংঘাত হচ্ছে 'রাজনীতি'; 'কে পায়, কী পায়, কখন পায় এবং কীভাবে পায় তাই হচ্ছে রাজনীতি।' আবার রাজনীতি হচ্ছে 'সম্পদ বা মূল্যবান কোনকিছু বরাদ্দকরণ তথা বন্টন'। 'রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্যবস্থা এবং একটি প্রক্রিয়া।' এমনিতর অনেক সংজ্ঞা রাজনীতির আছে। অধিকতর সঙ্কীর্ণ অর্থে, রাজনীতি বলতে সরকারের পদ-পদবী লাভ ও "ক্ষমতা" চর্চা বা অনুশীলন, প্রয়োগ এবং অপপ্রয়োগ প্রভৃতিকে বোঝায়। "রাজনীতির" মাধ্যমে "ক্ষমতা" চর্চার (অন্যতম একটি) লক্ষ্য হচ্ছে কোন ব্যক্তিকে বা কোন গোষ্ঠীকে বা কোন দলকে অথবা একটি মানব সম্প্রদায়কে, সুনির্দিষ্টভাবে একটি রাষ্ট্রকে সংগঠিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। বলাবাহুল্য, কোন ব্যক্তি বা দেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সরকারি "ক্ষমতা" প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট মেয়াদকালব্যাপী রাজনীতির মাধ্যমে এই ক্ষমতা অর্জিত হতে পারে।কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রাজনীতি কোন কালেই প্রাথিষ্ঠানিক রুপ পায় নি যার কারনে কোন সরকারই নাগরিক অধিকারকে রক্ষা করতে পারে নি।

আমাদের সংবিধান নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করেছে।আইনশৃংখলা বাহিনী সংবিধানের একটি অংগ মাত্র।একজন নাগরিকের অনেকগুলো অধিকার রয়েছে যেমন-শিক্ষা ,স্বাস্হ,বাসস্হান ও খাদ্যের অধিকার।এগুলো মৌলিক বিষয়।তা ছাড়াও অনেক অধিকার রয়েছে যা রাষ্ট্রকে প্রদান করতে হয়।বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল এই চেতনাগুলোকে কেন্দ্র করে যেন মানুষ স্বাধীন দেশে এগুলো ভোগ ও চর্চা করতে পারে।দুর্ভাগ্যজনকভাবে নাগরিক সমাজ তাদের ন্যুনতম এই সুবিধাগুলো পেতে ব্যার্থ হয়েছে।অনেকে একে ব্যার্থ রাষ্ট্র বললেও আমি ব্যার্থ বলছিনা কারন বেঁচে থাকার জন্য আমি আশাবাদি।তবে আমাদের ব্যার্থতাকে সবাই মিলে কল্যানকর রাষ্ট্রে কিভাবে উন্নিত করা যায় তার চেষ্টা করতে হবে।ইদানিং নাগরিক রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুলোতে যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছে বা তাদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে তা বাস্তবে সরকার দেখছে না।আইনশৃংখলা বাহিনীর দ্বারা অতিসাম্প্রতিককালে এবং এর আগেও যে নারকীয় ঘটনা গুলো ঘটেছে তা জন মনে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।বিশেষ করে র‍্যাবের ব্যাপারে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে নারায়ন গন্জের ৭ খুনকে কেন্দ্র করে এবং তিনজন অফিসারকে বরখাস্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের একটি অবজারবেশন যা তদানীন্তন রয়েছে।তবে কি কারনে আইনশৃংখলা বাহিনী জন নিরাপত্তা দিতে পারছে না তা তাদেরই খুঁজে বের করতে হবে।

যে কোন অধিকার বা স্বার্থ নিশ্চিত হওয়ার জন্য আইনের শাসন(rule of law) থাকতে হবে।এই আইনের শাসন প্রশাসনের সাথে সম্পৃক্ত।প্রশাসন রাষ্ট্রের সাথে সম্পৃক্ত।সরকার যদি আইন মেনে চলে তাহলে সবগুলো অংগ আইন মানতে বাধ্য।সরকারের সাথে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জড়িত।রাষ্ট্রে যা কিছু ঘটে রাজনৈতিক কারনে ঘটে থাকে।দেশের সামগ্রিক ব্যাপারগুলো যদি এক যায়গায় সন্নিবেশিত করা না যায় ও আইনের শাসন বলবৎ করা না যায় তাহলে নাগরিক অধিকার রক্ষা করা কঠিন।রাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে না পারলে,রাজনৈতিক দুর্বিত্তায়ন অপসারিত না হলে এবং আইনের শাসনের যায়গাটিকে উন্নীত না করতে পারলে শুধুমাত্র আইনশৃংখলা বাহিনীর দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই।বর্তমান সময়ের কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক অপরাধ যদি আমরা লক্ষ্য করি যা কম বেশী অতিতেও ঘটে আসছে তাহলে আমাদের বুঝতে সহজ হবে কেন সরকার ও আইনশৃংখলা বাহীনির কর্মকান্ড শুন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে।প্রতিটি অপরাধের একটি চেইন অব কমান্ড রয়েছে যেমন রয়েছে ভাল কাজের ক্ষেত্রে প্রতিটি বিভাগে চেইন অব কমান্ড।ধরুন ঘুষ একটি সামাজিক ব্যাধি।যখন কোন অধ:স্তন ঘুষ গ্রহন করেন এবং সে ভাগ উপর থেকে নিছ পর্যন্ত ভাগ বাটোয়ারা হয়।আমি এ ব্যাপারে অনৈতিক অংশকেই দায়ি করছি।অনেকে শুধু পুলিশ বাহিনীর উপর ঢালাওভাবে দোষ চাপান।ঘুষ দুর্নীতি কোথায় হচ্ছে না? সরকারি বেসরকারি এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে ঘুষ বানিজ্য হচ্ছে না।একজন এমপির কথা ছাড়া উপজেলায় স্বাধীন ভাবে কেউ কাজ করতে পারছেনা, একজন মন্ত্রীর আদেশ ছাড়া অধিনস্তরা কাজ করতে পারছেনা, নিতীনির্ধারকরা স্বাধীনভাবে কেরতে পারছেনা,টাকা ছাড়া কোন পোষ্টিং হচ্ছে না এমনকি গুরুত্বপূর্ন জোনে বিশাল অংকের টাকা ছাড়া পোষ্টিং নেয়া যায় না।এগুলোর কারন হলো আইনের কোন শাসন নেই,কোন জবাব দীহিতা নেই।মোটকথা আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন অনৈতিকতার অবস্হান তৈরি হয়েছে।

আর একটি বড় অপরাধ এখন ভোগ্য পন্যের প্রায় প্রতিটি পন্যে ঢুকে গেছে।সেটি হলো ফর্মালিন।ফর্মালিন যদি পন্যে থাকে হয়ত সে পন্যকে আমরা পরিহার করতে পারি।কিন্তু যদি ফর্মালিন প্রতিটি মানুষের মস্তকে ঢুকে পড়ে তাহলে বাঁচার কি উপায় আছে?এ সম্পর্কে বক্তব্য এসেছিল নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদকালে "ফরমালিন" দিয়ে টিকিয়ে রাখা সম্পর্কে। এর পরদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বর্তমান সরকারকে ফরমালিনের মতই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। তারও পরে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ জাতীয় প্রাক্তন সৈনিক পার্টির প্রতিনিধি সম্মেলনে বলেন যে- তিনি যদি ক্ষমতায় আসেন তাহলে সাতদিনের মধ্যে খাদ্যে ফরমালিনের ব্যবহার বন্ধ করবেন।এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এদেশে খাদ্যদ্রব্যে বিষাক্ত ফরমালিন মেশানোর জন্য দায়ী। পরের সেবায় নিজের জীবন বিলিয়ে দেয়ার ব্রত হিসেবে যারা রাজনীতি করছেন তাদের কথা বাদ দিলে আমরা যদি বাংলাদেশের রাজনীতির দিকে লক্ষ্য করি তাহলে দেখা যায় এদেশের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের বেশিরভাগই ব্যবসায়ী। যে ব্যবসায়ীরা সংসদ সদস্য তাদের এই "ফরমালিন" মেশানোর জন্য দায়ী করা সঙ্গত নয় কি? তারা কি দেখছেন না কিভাবে পত্র পত্রিকায় ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে? তারা কি সংসদে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ঝড়তুলছেন? তাতো আমরা তেমন দেখতে পাচ্ছি না। তবে মাছ, মাংস, ফল-মূলসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে যারা "ফরমালিন" মিশিয়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছেন তারা কেউ না কেউ তো দায়ী ! এসব ব্যবসায়ীর অসাধু উপায় অবলম্বনের কারণে দেশের জনস্বাস্থ্য যখন ভয়াবহ হুমকির মুখে তখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী গণমাধ্যমের কল্যাণে খাদ্যদ্রব্যে 'ফরমালিন' মেশানোর ভয়াবহ চিত্র প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে স্থান পাচ্ছে! ফলে এই বিষাক্ত দ্রব্যটি (ফরমালিন) শুশিল সমাজের, রাজনীতিবিদেদর কথা-বার্তা, বক্তৃতা-বিবৃতি প্রভৃতিতে স্থান করে নিচ্ছে।

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একটি নীতি সমৃদ্ধ কার্যপদ্ধতি রয়েছে।আইনশৃংখলা বাহিনীর ও সে রকম দৈনিক কর্মসূচি রয়েছে যা আমরা কার্যভার গ্রহনকালে দেখতে পাই।সমস্যা হলো কার্যভার গ্রহনের পর সে কমিটমেন্ট গুলো রক্ষা করতে ব্যার্থ হয়।ইসলামের পরিভাষায় যারা কমিটমেন্ট রক্ষা করে না তাদের চরিত্রে মোনাপেকের চরিত্র আছে বলে বলা হয়।পুলিশ যেহেতু জন গনের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে তাদের যদি উদাহরন হিসেবে ধরে নেই তাহলে আমরা দেখবো একজন পুলিশকে পুলিশ একাডেমি থেকে ট্রেনিং নিতে হয়।এই ট্রেনিং হলো তার কাজের ভিত্তি।যখন প্রবেশন পিরিয়ড শেষ হয় পাসিং পেরেড শেষে পবিত্র ধর্মগ্রন্হের পাশ দিয়ে হাত তুলে এক হাতে রাইফেল ও অন্য হাত তুলে বলেন,'আমি শপথ করিতেছি যে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের বৈধ আদেশ প্রতিপালন করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করিব এবং দেশের মংগলের জন্য করিব'। আবার একজন সংসদ সদস্য ও এ রকম শপথ করে থাকেন এবং বাস্তবে আমরা দেখি ক্ষমতা হাতে এলে শপথ ভংগ করেন। এ কথাগুলো অত্যন্ত চমৎকার কথা তা হলে মানা হচ্ছে না কেন? এর প্রধান কারন হলো উর্ধ্বতনদের থেকে ছাপ প্রয়োগ।যখন যে কোন উর্ধ্বতন থেকে ছাপ প্রয়োগ করা হয় তখন অধ:স্তন যদি সাহসি না হন অথবা তার রুটি রোজগারের উপর পরিবারের নির্ভরতা থাকে তা তার জন্য দুর্বলতার কারন হয়ে দাঁড়ায়। আমরা দেখেছি বিভিন্ন সময়ে উর্ধ্বতনদের কথা না শুনলে দূরবর্তি কোথাও স্হানান্তর করা হয় অথবা ওসডি করে রাখা হয়। আর এ কারনেই নৈতিকতার বিলোপ হতে থাকে।যে সমাজে নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা সেখানে তারা বেশি ছাপে থাকে। আমাদের সবার জন্য যে সম্মানের যায়গাটি সেটা খোলা না থাকার কারনে এবং যে অবৈধ অর্ডারটি দেন তা আইনে না থাকা স্বত্বেও অধ:স্তনকে করতে বাধ্য করা হয়।প্রশাসন সহ আমরা সবাই যদি অন্যায়ের ব্যাপারে সোচ্চার হই এবং অন্যায়কে রুখে দাঁড়াই তাহলে এ প্রবনতা কমতে বাধ্য হবে।রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যদি আইন শৃংখলা বাহিনীর উপর নিপতিত হয় তখনি বিশৃংখলা দেখা দেয়।সংসদের উপর নির্ভর করে আইন শৃংখলা কিভাবে চলবে।আইন শৃংখলা বাহিনীকে রাষ্ট্র কতগুলো ক্ষমতা দিয়েছে।তারা যদি জবাবদীহিতার সাথে প্রতিটি কাজ করে তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।আর যে সমস্যাটি প্রকট তা হলো কে কত তাড়াতাড়ি সমাজে অনৈতিকভাবে বড় হবে তার জন্য অসুস্হ প্রতিযোগিতা।নারায়ন গন্জের কাহিনী থেকে আমাদের দীক্ষা নেয়ার সময় এসেছে।কত টাকা হলে একটি পরিবার বাঁচতে পারে তার কোন সীমা নেই।একটি জীবনের জন্য কত টাকার প্রয়োজন? বৈধ সম্পদ কারো যদি না থাকে তাকে অবৈধ পথ অবলম্বন করতে হবে? আমি উত্তরার একজন বাসিন্দা।গত তিন বছরে প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেড়েছে ত্রিগুন।যাদের তিন বছর পূর্বে দেখেছি রিক্সায় চলেন তাদের অনেকে এখন গাড়ি চালান।বৈধ টাকা হলে কোন অসুবিধে নেই।কিন্তু আমরা তো দেখতে পাচ্ছি কিভাবে তারা অর্জন করছেন?

এখন সবচেয়ে বড় কথা হলো সরকার কিভাবে নাগরিক অধিকার দিবে আর নাগরিকরা তা ভোগ করবে।দু'ধরনের সরকার আমরা দেখতে পাই তা হলো,গনতান্ত্রিক সরকার ও অ-গনতান্ত্রিক সরকার।গনতান্ত্রিক সরকার হলে সব প্রতিষ্ঠান মোটামুটি আইনের শাসনে চলতে বদ্ধপরিকর যদিও শতভাগ সেখানে আশা করা যায় না।আর অ-গনতান্ত্রিক সরকার হলে নাগরিক অধিকার বলতে তেমন কিছুই থাকে না।আমরা যদি ভারতের নতুন নির্বাচনের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো বিজেপি সরকার শতকরা ৩৮% ভোট পেয়ে ৬২% কে শাসন করছে।গনতন্ত্র যত উচ্চতায় পৌঁছাক না কেন সেখানে এই বৈষম্য থাকবে তবে সেখানে যদি আইনের শাসন থাকে তাহলে অপরাধ নিশ্চই কমবে।আমাদের দেশে আমরা কথায় যতই বলি আমরা ওয়েষ্ট মিনিস্টার টাইপ গনতন্ত্র চালু করেছি আসলে আমরা এর কাছেও নেই।সেখানে তারা একটি কথা বলে,'her majesties government,her majesties opposition'। তারা এ দুটো বিষয়ের মধ্যে সমন্নয় করতে পেরেছে কিছুটা।আমাদের দেশে এই সমতা কখনো আসে নি।সেজন্য দেখা যায় সরকার গঠন হলেও বিরোধী দলের সংসদে কোন ভূমিকা নেই এবং সরকারও তাদের সংসদে নেয়ার মত আন্তরিক আহ্বান জানায় না।আবার বিরোধী দলের মিছিল মিটিং করারও অনুমতি দেয়া হয় না বরং আইনশৃংখলা বাহিনী দিয়ে তাদের নাজেহাল করা হয়।এই বিরোধ থাকার কারনে কোন সমঝোতা হয় না বরং আঘাতপ্রাপ্ত হয় প্রতিষ্ঠান গুলো।এই একটি কারনে বিগত ৪২ বছরে কোন প্রতিষ্ঠান দাঁড়াতে পারেনি।আর একটি উদাহরন আমরা পাশের দেশ থেকে নিতে পারি আর তা হোল,মোদি সরকার যেদিন শপথ নিবে সেদিন ছিল রাজিব গান্ধির মৃত্যু দিবস।তিনি সেদিন শপথ স্হগিত করলেন কারন সোনিয়া ও তার পুত্র রাহুল গান্ধি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবে না।গনতন্ত্রে এ রকম কিছু সহনশীল অবস্হান তৈরি না হলে দেশ কল্যান কামিতার দিকে যেতে পারে না।আমাদের দেশে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে এ অবস্হান তৈরি হয় নি বলে আমরা এখনো উন্নতি করতে পারছিনা।

আমাদের দেশে আইনশৃংখলা বাহিনীকে কাজে লাগানো যায় নি নিতি নির্ধারকদের ভুলের কারনে।তারা তাদের ব্যাক্তি বা দলের সুবিধার কারনে সমস্ত বাহিনীকে ব্যাবহার করে থাকেন যা থেকে সরে আসতে হবে।আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে ও পূর্ন আনুগত্য করতে হবে।রাজনীতিবিদরাই দেশ চালাবেন সেজন্য তৃনমুল থেকেই রাজনীতিবিদ তৈরি হয়ে আসবে যারা হবে নৈতিক ভাবে বলিয়ান।নেতৃত্বের যে সন্কট দেখা দিচ্ছে তার মুল কারন শিক্ষার অভাব।স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যলায়ে এখন শিক্ষার কোন পরিবেশ নেই।ছাত্ররা পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে গডফাদার দের লেজুড়ে পরিনত হয়ে পড়েছে। আর এরাই একসময় যখন দেশ শাসন করতে আসবে তা হয়ে উঠবে ভয়ংকর দেশের জন্য যার নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি।সরকার ও বিরোধীদলকে কাজ করতে হবে দেশের জন্য আর সংসদের দেশের কর্মকান্ডের জন্য জন গনের কাছে জবাব দীহিতা থাকতে হবে আমাদের রাজনৈতিক কালচার এর সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।প্রধান মন্ত্রীত্ব যাতে দু'বারের বেশি একজন ভোগ না করতে পারে এবং নেত্রীর হাতে যাতে নিরন্কুশ ক্ষমতা না থাকে তার সংশোধনী নিয়ে আসতে হবে।ডেমক্রেসি না থাকলেও দেশ উন্নত হতে পারে তার নমুনা রয়েছে সাউথ কোরিয়া,মালেশিয়া ও সিংগাপুর।৪০ বছর আগেও মালেশিয়া থেকে আমাদের দেশে ছাত্ররা পড়তে আসতো, আজ আমাদের দেশের ছাত্ররা সেখানে পড়তে যায়।সুশাসন যদি প্রতিষ্ঠিত না হয় গনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে দেশকে উন্নত করা যাবে না।আমাদের সরকারকে উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট বা নেলসন মান্ডেলাকে অনুসরন করতে অসুবিধা কোথায় যারা নিছক সাধারন জীবনে অভ্যস্ত।বর্তমানে যে রাজনৈতিক ধারা, তাতে সাধারণ মানুষের এ চাওয়া দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়। রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য, তাদের সামনে কোন স্বপ্নদ্রষ্টা নেই। অনুপ্রাণিত ও অনুরণিত হওয়ার মতো রাজনীতি ও রাজনীতিবিদ নেই। শত ত্যাগ-তিতিক্ষা ও নির্যাতন সয়ে জনগণের সামনে হাজির হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন মেন্ডেলার মতো যিনি বলবেন, I stand here before you not as a prophet but as a humble servant of you, the people. Your tireless and heroic sacrifices have made it possible for me to be here today. I therefore place the remaining years of my life in your hands.’ এমন রাজনীতিক এখন আমাদের দেশে কল্পনাও করা যায় না।

বিষয়: বিবিধ

১৬১৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

235194
১৫ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৬
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File