বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন একে অপরের পরিপূরক।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১০ জুন, ২০১৪, ০৬:২১:২৮ সন্ধ্যা
আমাদের বিচার বিভাগের হাল চাল দেখে সাধারন মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।একটি মাত্র আস্হার যায়গা যেখানে ও ঠাঁই নেই।সমাজের চরম হিতৈশি পুলিশ ও আইনজীবি যারা জন গনের অতি নিটবর্তি ও বিপদ আপদে সহায়ক তদের আচার আচরন এখন বৈরি হয়ে উঠেছে।নদী ,খালবিল ও লোকালয়ে এখন লাশের স্তুপ পুন্জিভূত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ যেন স্বাধীন দেশে আমরা পরাধীন জাতি।মানুষের মুল্যবোধ হারাচ্ছে।এক শ্রেনী ক্রমশই জংলী হয়ে তাদের হিংশ্র থাবা বসিয়ে দিচ্ছে।এর জন্য সরকার দায়ী নয় কি? রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান অঙ , Executive , Pirliament and Judiciary. ফার্লামেন্টের অনেক ক্ষমতা যা তারা প্রয়োগ করে যদিও এখন পার্লামেন্টে আইন প্রনেতা তেমন নেই,আছে ব্যাবসায়ি। একটি বাজেট প্রনয়ন করে থাকে,কোন খাতে কিভাবে ব্যায় হবে তা নির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে তা নির্দিষ্ট করে।নির্বাহি বিভাগের ক্ষমতা পুলিশ , আর্মি ,রেব ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।জুডিসিয়ারির হাতে তেমন কিছুই নেই একমাত্র মানুষের আস্হা ছাড়া।এই ব্যাপারে যদি আইনজীবি ও বিচারকরা একসাথে কাজ না করেন তাহলে কোর্টের মান মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব নয়।ইদানিং বিচারবিভাগের যে অবস্হা দাঁড়িয়েছে তাতে মনে হয় কিছু সংখ্যক আইনজীবি ও বিচারপতিরা সরকারের পুষ্ট বিড়ালে পরিনত হয়েছে।এ থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ আইনের শাসন যাতে শ্রদ্ধান্নিত হয়ে একত্রে কাজ করবেন আইনজীবি ও বিচারপতিগন।
সংবিধানের আইন লংঘন করে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়।সংবিধানে স্পষ্ট ভাবে বলা আছে একজন বিচারককে যদি বিচারপতি হতে হয় তার দশ বছর আইনজীবি হিসেবে কোর্টে কাজ করার অভিজ্গতা থাকতে হবে।আজকে হাইকোর্ট ডিভিশনে এ রকম বিচারকও যার সু্প্রিমকোর্টে দশ বছরের মামলার অভিজ্গতা নেই অথচ বিচারক হয়েছেন।শুধু দলীয় দৃষ্টিভঙি ও আনুগত্যের মাধ্যমে বিচারক নিয়োগ করা হয়।স্বাধীনতার পর থেকে এ প্রবনতা থাকলেও ৯০ এর পর এর ভয়াবহতা আমরা লক্ষ্য করছি। যে কোন সরকারের সময়ই আইনজীবিরা দুটো শিবিরে বিভক্ত থাকে।শুধু আইনজীবিদেরই বলে লাভ নেই,এখন পুরো দেশই প্রধান দুটো শিবিরে বিভক্ত।আইনজীবি,সাংবাদিক ও শুশিল সমাজ যারা জাতির পক্ষে কাজ করার কথা তারা এখন দল বাজিতে বিভক্ত।কোর্ট অংগনে এই দলবাজির কারনে বিচারবিভাগ যে বিতর্কিত হচ্ছে তাতে সরকারের যেমন কোন মাথাব্যাথা নেই তেমনি নেই আইনজীবি ও বিচারকদেরও।অগনতান্ত্রিক ও দুষ্ট সরকার হলে চাইবে প্রতিষ্ঠান গুলোকে কাজে লাগিয়ে তাদের ফায়দা লুটার জন্য।কিন্তু কোর্টে বিচারকদের আত্মসম্মান কোথায়? তারা সামান্য কিছুর জন্য নিজেদের মান সম্মান জলান্জলি দিচ্ছে আর সাথে সাথে জাতিকে পিছিয়ে দিচ্ছে। এতে বিচারের গুন গত মান প্রশ্নবিদ্ধ হছ্ছে।অনেক আইনজীবি দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন। আবার অনেকে রাষ্ট্রিয় দূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতে পারেন।গনতন্ত্রে যেহেতু বহুদলীয় সমাবেশ সেখানে এই বিভেদ থাকবে।তবে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে দলের মধ্যে যারা যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব তাদের সততা ও যোগ্যতাকে যদি সামনে নিয়ে আসা হয় তাহলে তিনি দলীয় চিন্তাভাবনাকে পিছনে ফেলে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিচারকার্য সম্পাদন করবেন।একজন বিচারক যদি আত্মসম্মানবোধে জাগ্রত থাকেন তখন নিশ্চয়ই তিনি তার মতকে সম্মান করবেন।কারন তিনি যে ঐতিহাসিক রায়টি দিছ্ছেন তা যতদিন দেশ বেঁচে থাকবে ততদিন থাকবে।যোগ্যতা থাকলে বাইরের ইনফ্লুয়েন্স থাকবে কম।বর্তমানে এ্যফিলিয়েট ডিভিশন খুবই উদ্বেগ প্রকাশ করছে।বিচারব্যাবস্হা বুরুক্রেসির ভিতরে এমনভাবে আটকে আছে যা ছড়িয়ে আনা যাছ্ছে না।নিয়োগে যে একটা স্বছ্ছ নীতিমালা থাকা দরকার তা নেই।সম্পুর্ন গোপনীয়তার ভিত্তিতে বিচারক নিয়োগ হছ্ছে।এই অস্বছ্ছ প্রকৃয়ার জন্য শুধু প্রধান বিচারপতিই দায়ি নয় মুলত দায়ি সরকার প্রধানরা।যখন যে সরকারের আমলে যিনি প্রধান বিচারপতি হয়েছেন তিনি সে সরকারের আজ্গা পালন করেছেন।সরকার যেভাবে ছেয়েছেন তিনি সেভাবে কাজ করেছেন।
বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সাহেবের আমলে বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় আসলেন তিনি আইনজীবিদের সভায় বললেন বিচারপতি যে নিয়োগ হয়েছে তা আমি জানি না।অবশ্য তখন এ রকমই একটি চলমান নিয়ম ছিল সে কারনে তাকে জানানো হয় নি।ঐ বিচারককে বেগম খালেদা জিয়া নিয়োগ দিতে পারেন নি।প্রধান বিচারপতি ,শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার ইছ্ছা যদি এক হয় তাহলে এই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা , নীরপেক্ষতা ও আইনের স্বাধীনতা কখনো থাকবে না।বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সাথে আইনের স্বাধীনতা (rule of law) অঙাঙি ভাবে জড়িত।একটি দেশে যদি আইনের শাসন না থাকে সেখানে হানাহানি বাড়তে বাধ্য সেহেতু আইনের শাসন বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি।আপনারা অনেকে জানেন ১/১১ এর আগে আদালতে দুটো মামলা দায়ের করা হয়েছিল।একটি ছিল ইয়াজুদ্দিন সাহেবের বিরুদ্ধে।প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যায় না কিন্তু ব্যাক্তি ইয়াজুদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।তিনি chief adviser নিয়োগ দিতে গিয়ে নিজেই chief adviser হয়ে গিয়েছিলেন।আর একটি মামলা হয়েছিল তৎকালীন ইলেক্শন কমিশনার এম এ আজিজের বিরুদ্ধে যিনি একজন বিচারপতি ছিলেন।সেখানে মামলাটা করা হয়েছিল যে, ভোটার তালিকা ফাইনাল হওয়ার আগে যেন ইলেক্শন সিডিউল ডেকলার না করা হয়।কারন হাল নাগাদ করতে হবে , আইনে নিয়ম রয়েছে এটা দুই সপ্তাহ জন গন ঠিক ঠাক করবে , প্রবেশনাল ও ফাইনাল হবে তার পর সিডিউল হবে।ঐ মামলা করতে গিয়ে আদালতে যখন শুনানি হলো হাইকোর্ট বেন্জ যখন রুল দিবে তৎকালীন এটর্নি জেনারেল বললেন যে উনি নজির দেখাবেন এবং তৎকালীন প্রধান বিচারপতি একটি সাদা কাগজের উপর নির্দেশ দিলেন যে, হাইকোর্ট বিভাগ যেন এ দুটি মামলার শুনানি না করেন।এটা ছিল এক্সিকিউটিভ অর্ডার , জুডিসিয়েল অর্ডার ছিল না।জুডিসিয়েল অর্ডার তখনি হবে যখন রুলটি ইস্যু হয়।রুল ইস্যু হওয়ার পর এ্যাফিলিয়েট ডিভিশন একটা চেম্বার জাজ খুলে বা ফুল জাজ খুলে অর্ডার দিতে পারে যেটা হবে কোর্ট থেকে।কিন্তু এ্যাফিলিয়েট ডিভিশন তখনি ইন্টারফেয়ার করতে পারবে when the matter is pending before the high court.এবং হাইকোর্টকে রুল জারি করতে হবে।এই বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখবেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় নি।আইন বিভাগকে নীরপেক্ষ রাখা ও বিচারবিভাগের স্বাধীনতা চর্চা করা আইনজীবি ও বিচারকদের অবশ্য কর্তব্য।
আজ বিচারকরা যেমন দলবাজিতে যুক্ত আমাদের আইনজীবিরা আরো বেশি দলবাজিতে যুক্ত।আমরা আইনজীবিদের নির্বাচন গুলো দেখলে বুঝতে পারি কিরকম সরকারের লেজুড়ে তারা পরিনত হয়েছে।বর্তমানে জাতি যেখানে র্যাবের কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ,প্রতিদিনই তাদের অনৈতিক কাজ পত্র পত্রিকায় ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে সেখানে এটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের একটি উচ্ছ স্হানে বসে র্যাবের পক্ষে সাফাই গাইছেন। এই নির্লজ্জ আচরনে কি কোর্ট অংগনে আইনজীবি ও বিচারপতিদের মর্যাদা থাকে? বিচারপতি ও আইনজীবিদেরতো এ কাজ সাজে না।তাদের সামাজিক একটা dignity রয়েছে যাকে অবহেলা করে সামান্য সুবিধা গ্রহনের নিমিত্তে সমাজে তাদের আচার আচরনকে প্রশ্নবিধ করেছেন।সর্বত্র এ দলবাজ তৈরি হওয়ার পিছনে আমাদের দলবাজ রাজনীতিবিদগনই দায়ি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমাদের কোন সরকারই গনতান্ত্রিক সরকার নয় যারা জন গনের রায় নিয়ে পার্লামেন্টে যাবে। রাজনীতিবিদদের দল থাকলেও তাদের তো এই দলবাজি করা উচিত নয়।তাদের কাজ হলো সুন্দরভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তারা তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য একটা সুবিধাবাদি গোষ্ঠিকে আয়ত্ব করতে চায়।আমরা তো অতিতেও দেখেছি এখনো দেখছি।যারাই প্রধানমন্ত্রি হয়ে আসছেন তারা তাদের চারদিকে লার্নেড না এনে অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত ও চাটুকার রাখেন।আবার কিছু লার্নেড থাকলেও তারা দেশদ্রোহী লার্নেড।সুতরাং এদের থেকে কোন সুপরামর্শ পাওয়া আদৌ সম্ভব নয়। বিশেষ করে কোর্ট অঙনে জুনিয়র কিছু আইনজীবিকে পকেটস্হ করে এদের নিজেদের স্বার্থে সুফারসিড করে দেয়।এই লোভ লালসার কারনে কোর্ট অঙন হারিয়ে ফেলে আইনের শাসন।আর এর জন্য আমি দায়ি করবো সিনিয়র আইনজীবিদের।যারা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় তারা হলো ,যারা সরাসরি কোন দলের সাথে সংযুক্ত।আমাদের দেশে বিচারবিভাগ স্বাধীন হয়েছে কাগজে কলমে কিন্তু পৃথক কোন সচিবালয় এখনো হয় নি।আর বিচার বিভাগের সব কাজ কর্ম চলছে মন্ত্রনালয়ের অধীনে।আপনি আর আমি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা,দলবাজ ও দলবাজি , আইনের শাসনের ক্ষুন্নতা নিয়ে যত মাথা ঘামাই না কেন কোন লাভ নেই কারন বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রিত হছ্ছে মন্ত্রনালয় থেকে।যখনি বিচারবিভাগ কোন বিচার ফায়সালা করে তার আগে অনুমোদন নিতে হয় সরকার প্রধান থেকে।যদিও এটা আইনে নেই কিন্তু প্রধান বিচারপতির লাগাম সরকারের হাতে এভাবেই থাকছে। সেকারনে প্রধান বিচারপতি আইনের শাসন চাইলেও লাগাম যেহেতু সরকারের হাতে তা বাস্তবায়িত করতে পারবে না।এই নিয়ন্ত্রিত অবস্হায় যিনি বিচারপতি হন তিনি তার জীবনের তাগিদে সাহস হারিয়ে ফেলেন ও সরকারের আনুগত্য করতে বাধ্য হন।কিন্তু বিচারকদের ভাবতে হবে তারা সেখানে শপথ নিয়ে গিয়েছেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য।সে কারনে তাদের দৃড় থাকতে হবে।যদি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা না করতে পারেন তাহলে ইস্তফা দিয়ে তার স্বাধীন ব্যবসায় ফিরে যাবেন।এদিক থেকে আমি মনে করি বিচারকরা তাদের হীনমন্যতার পরিচয় দিবে না।আপনারা যখন কোন মন্ত্রনালয়ে বা কোন উর্দ্ধতন ডাইরেক্টরদের আফিসে যাবেন দেখবেন অসংখ্য লোকজন লাইন ধরা থাকে।এরা শহর বা লোকাল থেকে তদবিরের জন্য আসে।এদের ৯৫% হলো দলের নেতা বা কর্মি।এমন কাজ হয়ে যায় যা হওয়ার কথা নয়।এ থেকে বুঝা যায় সেখানে অবৈধ লেনদেনের ব্যাপার রয়েছে।আর বর্তমানে বিভিন্ন যায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা গুলো দেখে প্রতিয়মান হয় কি রকম দলবাজি বা অনৈতিক কাজ হচ্ছে এবং কোটি কোটি টাকার লেন দেন হচ্ছে। সরকারের যদি সুনিশ্চিত নীতি মালা থাকে, মন্ত্রি ও সচিব এবং তার অধিনস্তরা যদি সৎ হয় তাহলে কোন তদবিরের প্রয়োজন হবে না।এ পরিস্হিতি বিরাজ করলে কোন সরকারের আমলেই উন্নয়ন হবে না।প্রধান বিচারপতি যদি শক্তিশালী ও নৈতিক ক্ষমতা সম্পন্ন না হয় তাহলে নিয়োগ বদলি এগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হবে।সরকারের সাথে তার সম্পর্ক হবে ন্যায় বিচারের উপর ভিত্তি করে।পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এই পদটি অনেক শক্তিশালী।আমাদের দেশে এই পদটিকে বলিষ্ঠ না করার পিছনে সরকার যেমন দায়ি তেমনি দায়ি আইনজীবিরা।বিচারপতিরা সৎ হতে পারবেন তখনি যখন এই পদটিকে তার আনুষঙিক facility দিয়ে ফার্নিস করা হবে।সরকার হয়তবা চায় এই পদটি লেজুড় হয়ে থাকুক কিন্তু আইনজীবিদের ব্যাক্তিত্ব কোথায়? তারা কেন নিজেদের ইউজ করছে? বিচারকদের পিছুটান থাকলে সমাজের প্রান্তিক মানুষেরা কখনো ন্যায় বিচার পাবে না।এ কারনে অনেক যোগ্যতা সম্মন্ন আ্ইনজীবিরা এ পদটি স্হলাভিসিক্ত করতে চান না।ফলে দেশ ও জাতি হারায় প্রজ্গা সম্পন্ন ব্যাক্তিত্বদের সার্ভিস থেকে।
আমাদের বিচার ব্যবাস্হার আর একটি দুর্বলতা হলো বিচার ব্যবস্হা শহরমুখি।এ কারনে আমাদের প্রান্তিক জন গন বেশি ভোগান্তির শীকার হন।তাদের ফাইলগুলো বছরের পর বছর আটকা পড়ে থাকে কোর্টের জটের কারনে।এই দীর্ঘকালীন ব্যবস্হা থেকে বের হয়ে আসার জন্য আদালত ও সরকারের কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না।বিচার বিভাগ পৃথকিকরনের কথা থাকলে ও সেটা হছ্ছে না।আমরা দেখেছি ১/১১ এর সময় যে সামরিক সরকার এসেছিল তারাই প্রথম এই পৃথকিকরন করে দিয়েছিল।মরহুম সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন সাহেব প্রথম এ ব্যাপারে ব্যাবস্হা গ্রহন করেন।২০০১ এ যখন সরকার পরিবর্তন হলো তাদের ৫ বছরের সময়ে এ ব্যাপারটি আর এগুয়নি।পরবর্তিতে ২০০৭ সালে ইয়াজুদ্দিন সাহেব যখন তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করলেন তখন একটা নীতিমালা প্রনয়ন করেছিলেন কিন্তু সেই নীতিমালা অনুসরন করা হয় নি।বিচারকদের সমস্যা হলো ফাইল অনুপাতে বিচার নিষ্পত্তি না হওয়া।১০ টা ফাইল শেষ না হতে আরো ৫০ টা ফাইল জমে যাওয়া এই জটের কারন।এ ব্যাপারে সরকারকে আরো অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে আলাদা কোর্ট করে এর সমস্যার সমাধান করতে হবে।উপমহাদেশে এক সময় আইনজীবিরা সরকারকে নিয়ন্ত্রন করতো আজ তার উল্টো হাওয়া বইছে কোর্ট অঙনে। এর কারন খুঁজে বের করার দায়িত্ন আইনজীবিদেরই।কোন দেশে যদি আইনের শাসন না থেকে সেখানে গনতন্ত্র ,শাসন ব্যবস্হা ,সামাজিক ন্যায় বিচার সবকিছুই ব্যাহত হতে বাধ্য।আমাদের ফার্লামেন্টকে লক্ষ্য করুন সেখানে ক'জন law maker আছেন ও তাদের ক'জনের law সম্পর্কে ধারনা আছে।আইন প্রনেতা হিসেবে অবদান রাখার মত ব্যাক্তিত্ব চোখে পড়ার মত নয়।সে কারনে সংসদ উর্বর না হয়ে আমরা অশ্লীল আচরন লক্ষ্য করছি। কেউ কাউকে সম্মানের সাথে কথা বলেন না।যারা বিরোধী দলে থাকেন তারা সংসদে যান অথচ রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা নিচ্ছেন। আজকাল অনেক সংসদ সদস্যের আচরনে প্রতিয়মান হয় যে তিনি যে এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তিনি সে এলাকার মালিক। জাতীয় সংসদ জন গনের আশা আকাংখার প্রতীক।সেখানে যারা যাবেন তাদের সফিস্টিকেটেড ও কোয়ালিটি থাকতে হবে।দুর্ভাগ্য আমাদের অনেক সংসদ সদস্য তাদের এলাকা সম্পর্কে নিজেদের অযোগ্যতার কারনে তুলে ধরতে ব্যা্র্থ হন। তাদের উচিৎ তার কর্তব্য সম্পর্কে কিছু হোম ওয়ার্ক করা ও জন গনকে নিয়ে ভাবা।
বিচারপতি জনাব হাবিবুর রহমান একবার বলেছিলেন আমাদের সু্প্রিমকোর্ট অঙন এখন একটা কাঁছের ঘরের মত যা একটি ঢিল পড়লে ভেঙে যাবে।আমরা তা-ই দেখছি এখন।এমনও বিচারপতি এখন আছেন যারা ভাংচুরে সংযুক্ত ছিলেন।তাহলে এ সব বিচারপতি দিয়ে জাতি কি বিচার আশা করতে পারে? সুপ্রিমকোর্ট আপামর মানুষের একটা আশা আকাংখার যায়গা যেখান থেকে ন্যায় বিচার পাবে।আথচ সেখানে দেখা যাছ্ছে প্রধান বিচারপতির অফিস ভাংচুর হছ্ছে আবার কাউকে জুতো নিক্ষেপ হছ্ছে, বিরোধীদের পিটাচ্ছে এমনকি মহিলা আইনজীবিদের তাদের বাহিনি দিয়ে পিটিয়ে উলংগ করে ফেলছে।আবার ঐ সমস্ত আইনজীবিরাই বিচারক হছ্ছেন।দলের ব্যাপারটি গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চলে আসছে।কিনতু দল থাকলেও একটা স্পষ্ট নীতিমালা যদি থাকে এবং সরকার ও আইনজীবিরা যদি শ্রদ্ধাশীল হয় তাহলে সর্বোচ্ছ যোগ্যতম ব্যাক্তিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নির্বাচিত করতে পারেন।যদি জাতিকে সার্ভ করার নিয়াত থাকে তাহলে দলাদলি কোন স্হান পাবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।বিভেদ তখনি আসে যখন যোগ্যতাকে সম্মান করা হয় না।স্বার্থপরতাকে সামনে নিয়ে আসা হয় ও কম যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যাক্তি অন্যকে সুফারসিড করে।এই sickness আমাদের মানুষিকতা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে।সিনিয়র আিইনজীবিদের থেকে জুনিয়র রা শিখবে এটাই স্বাভাবিক।যদি সিনিয়ররা দল বাজিতে ব্যাস্ত থাকেন তাহলে জুনিয়ররা কিভাবে সম্মান ও সমীহ করবে।কোর্টে সিনিউরিটির কারনে অনেক সময় সিনিয়রদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়।এটা অনেক আইনজীবিরা মেনে নিতে পারে না তবে এই ব্যাপরাটি সুন্দর ব্যাবহারের মধ্যে ব্যালেন্স হলে উভয়ের মধ্যে সহনশীলতা আরো বৃদ্ধি পাবে।আইনজীবিরা যতদিন রাজনৈতিক ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে না পারবে ততদিন সু্প্রিমকোর্ট অঙন সুন্দর ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করতে পারি না।সরকারের সাথে ব্যালেন্স করতে হবে।তাদের যতটুকু লিগাল প্রয়োজন রয়েছে ততটুকুই দিতে হবে।বিচারবিভাগকে ভাবতে হবে আমরা দেশের জন্য কাজ করছি।আমরা দেশের কাজকে তরান্বিত করার জন্য সরকারের সহায়ক শক্তি।তাদের হাতে হাতে আমাদের লাগাম নয় বরং সরকারের লাগাম থাকতে হবে কোর্টের কাছে তাহলে social crisis অনেকটা কমাতে সক্ষম হবে।আইনজীবিদের আত্মসম্মান বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে কারন তারা অর্থকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের সম্মান যেমন ক্ষুন্ন করছেন তেমনি জাতিকে পিছিয়ে দিছ্ছেন।সরকারে কোন প্রপোজাল যদি আইনের শাসনের মধ্যে না আসে তাহলে সুন্দর আচরনের মাধ্যমে সরকারকে আইনের বিষয়গুলো জানিয়ে দিতে হবে।বার কাউন্সিল আইনজীবিদের একটি প্রতিষ্ঠান হলেও সেটা এখন সরকারের পেটুয়া বাহিনীর মতই কাজ করছে।বার কাউন্সিল বিচার বিভাগের সাথে সমন্বয় সাধন করলে অনেক কল্যান বয়ে আনতে পারে।বার কোড অনুসরন না করার ফলে অনৈতিক কাজ গুলো হছ্ছে।আইনজীবিদের যদি নৈতিকতা বৃদ্ধি না হয় তাহলে পৃথক সচিবালয় হলেও কোন লাভ হবে বরং লেজুড়বৃত্তি রয়েই যাবে।
তাহলে আইনজীবিদের উচিত সরকারের সাথে বসে একটা নীতিমালা তৈরি করা যা উভয় পক্ষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে।বিচারবিভাগের জন্য একটি স্বাধীন সচিবালয় থাকবে এবং বিচারক নিয়োগের দায়িত্ব প্রধান বিচারপতির উপর ছেড়ে দিতে হবে এবং আইনজীবিদের দ্বারা তার হাতকে শক্তিশালি করতে হবে এবং তাদের সৎ হতে হবে।বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের কোন পক্ষপাতিত্ব চলবে না। প্রান্তিক মানুষের মামলাগুলোর ফি রেহাই করে মামলার নিস্পত্তি করা অত্যন্ত জরুরি।বিচারবিভাগের যোগ্যতা ও গুন গত মান যেন বৃদ্ধি পায় সে জন্য সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।বিচারক নিয়োগে যে দশ বছরের অভিজ্গতার কথা বলা হয়েছে তা মেনে চলতে হবে।আদালত দলগত বিবেচনা থেকে বেরিয়ে এসে যোগ্যতম ব্যাক্তিত্বকে প্রাধান্য দিবে।স্বাধীন বিচার করার জন্য বিচারকদের সব রকম furnish facility দিতে হবে যাতে বিচারক তার বিচার কার্য যথা যথ পালন করতে পারেন।জাতীয় লিগাল এইড নামক যে ফান্ডটি রয়েছে তা থেকে অনেক জুনিয়র নিডি আইনজীবিকে ও নারি ও শিশুদের পিছনে এ অর্থ থেকে ব্যায় করলে তারা যথার্থ সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।কোর্ট অঙনকে পরিছ্ছন্ন রাখা ও মামলা গুলোকে ডাটাবেজ করে ডিজিটালাইজড করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।প্রয়োজন হলে দেশের যারা লার্নেড আছেন তাদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করার অঙিকার নিতে হবে।বর্তমান দেশের পরিস্হিতি জাতিকে বলে দিচ্ছে দেশে কোন আইনের শাসন নেই।দেশের প্রশাসন এখন পার্লামেন্টের কাছে জিম্মি।মানুষ এখন নিরাপদ নয় এবং জন মনে আতংক্য কাজ করছে।প্রতিটি বাবা মা এখন ভীত সন্তান ঘরে ফিরবে কিনা? স্ত্রী সংকিত স্বামী ঘরে ফিরে আসবে কিনা? ব্যাবসায়িরা আতন্কিত গডফাদারদের স্বৈরাচারে।মোটকথা সমাজ এখন অস্হির।মন্ত্রি আমলারা যতই পাহারায় চলুন না কেন,সমাজ থেকে এ রোগগুলো তাড়াতে না পারলে অচিরেই দেশের আর্থ সামাজিক অবস্হার অবনতি হবে যা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কিনা তা আমাদের ভাবার সময় এসেছে।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের 'পার্লামেন্টের দুই তৃতীয়াংশ ভোটের সমর্থন ছাড়া বিচারক অপসারণ করা যাবে না' -এই বিধান বাদ দেওয়া ও বিচার বিভাগকে প্রেসিডেন্ট তথা মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার ফলে আজ বিচারকদের মেরুদণ্ড বলে কিছু নাই।
অজান্তে গড়ে উঠে বন্ধুত্ব
তা হতে পারে অপ্রত্যাসিত কোন ব্যক্তির
সাথে , সময়ের প্রয়োজনে জীবনের
বাস্তবতায় আবার তার বিচ্ছেদ ও ঘটে ,
প্রয়োজনের তাকিদে অনেক
দূরে চলে গেলেও যেনো মুছে না ফেলি সৃতির
পাতা থেকে কেউ কাউকে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন