শিক্ষার মান শিক্ষক , ছাত্র ও অভিভাবক সর্বোপরি সরকারের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করে।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৪ মে, ২০১৪, ০৪:৩৯:৫৯ বিকাল

মানুষের জীবন এক অদ্ভুত জীবন যা আমাদের অনেকের ভাবনায় আমরা সম্পৃক্ত করতে পারিনা বা আমাদের ভাবনার জালে আবদ্ধ হয় না।আল্লাহ মানুষকে তার পিতা-মাতার মাধ্যমে স্তরে স্তরে বড় করে তোলেন।হাঁটি হাঁটি পা পা করে একটি মানুষ বড় হয়ে উঠে।"ন" মাস মাতৃগর্ভে যে শিশুটি থাকে সে কি জানে বড় হয়ে সে একজন রাষ্ট্রনায়ক বা একজন সফল বিজ্গানি বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত একজন ধনকুবের হবে।প্রকৃতির নিয়মে মানুষটি জন্মে।বাবা-মা লালন পালন করেন, সু-শিক্ষা দিয়ে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তোলেন। এই মানুষ গড়নে বাবা-মাকে সন্তানের জীবনের ১/৩য়াংশ সময় তাদের সামর্থের বাইরেও চরম কষ্ট সহ্য করতে হয়। সবল পরিবার হলে বাবা মাকে দু:খ দুর্দশা পোহাতে হয় কম কিন্তু যে সমস্ত বাবা-মা জীবনের ঘানি টেনে কায়ক্লেসে জীবন অতিবাহিত করেন তাদের পক্ষে সন্তানদের মানুষ করা খুব-ই কঠিন। এর নজির আমরা জাতীয় পত্রিকা গুলোতে পরীক্ষার ফলাফল বের হলে দেখতে পাই,কেউ পরের ঘরে কাজ করে,কেউ রিক্ক্সা চালিয়ে,কেউ মাঠে পরের জমিতে খেটে,কেউ বা অন্যের ঘরের ছাউনির আলোতে পড়ে জিপিএ পাচ্ছে।

আমাদের জীবনের অনেক দুঃখ বা কষ্টের মাঝেও কিছু কিছু আনন্দ মনকে বড় নাড়া দেয়। ভাবনার মধ্যে পরিবর্তন আনে। স্বপ্ন দানা বাঁধে মনে। সেই স্বপ্নের পরিমণ্ডলে যদি সন্তানের সাফল্য নিহিত থাকে তাহলে পিতা-মাতার মনটা যে কি আনন্দে নেচে উঠে তা কি বলার অপেক্ষা রাখে। আজকের যে শিশু সেই ভবিষ্যতের পিতা- যা ধ্রুবসত্য। সেই শিশুদের বেড়ে উঠা, চলার পথকে মসৃণ করে দেয়া, চাপমুক্ত করা যেমন মাতা-পিতার একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য তেমনি তা শিক্ষক ও রাষ্ট্রেরও বটে। শিশুরা তাদের পাঠ্য জানতে শুরু করে অ, আ, ক, খ... বা এ, বি, সি, ডি... বা ০, ১, ২, ৩...... দিয়ে। অগ্রসর হতে থাকে তারা সামনের দিকে। পরিণত হয় তারা কিশোর-কিশোরীতে। স্বপ্নে বিভোর হয় তাদের মন। মন-মানসের রঙ্গিন সেলগুলোতে তাই তারা লালন করতে থাকে নিজেদেরকে আকাশের এক জ্বলন্ত নক্ষত্ররূপে অথবা ডানামেলা এক একটি উড়ন্ত পাখি হিসাবে। ধীরে-ধীরে জানতে শেখে তারা ভূগোলকে, বিশ্বকে, বিজ্ঞানী বা মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলেটিভিটিকে বা নিউটনের মহাকর্ষীয় বা আর্কিমিডিস প্রিন্সিপলের মতো বিজ্ঞানের জটিল জটিল সূত্রকে অথবা গ্রেগর জোহান মেন্দেলের বেসিক প্রিন্সিপলস অফ জেনেটিক্সকে। এই জানাগুলোর মধ্যবর্তী সময়ে স্তরে স্তরে তাদেরকে শিক্ষার কিছু ফিটনেস টেস্টের মধ্যদিয়ে যেতেই হয়। যে টেস্টগুলোকে আমরা বিভিন্ন নাম দিয়ে সনাক্ত করি যেমন জেএসসি বা এসএসসি বা এইচএসসি বা সমমানের স্তরগুলো। তদুপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধ তো রয়েছেই।

এগুলোর প্রতিটি স্তর শিক্ষার্থীদের জন্য এক একটি স্ট্রেস- মাতা-পিতার জন্য তো বটেই। তারপরেও এগুলোকে টপকাতেই হবে। জীবনকে এগিয়ে নিতে হবে। ভাল ফলাফল যে করতে হবে-সে আশায়। এরূপ একটি টেস্টের (এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা) রেজাল্ট প্রকাশিত হলো এ মাসের ১৭ তারিখে। দশটি শিক্ষা বোর্ডে গড়ে পাসের হার ছিল ৯১.৩৪%। শুধু জিপিএ ৫-এর সংখ্যাই ছিল লক্ষণীয় অর্থাত্ ১,৪২,২৭৬ জন (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ই মে)। জিপিএ ৪ থেকে ৫-এর মধ্যেও রয়েছে প্রায় ৫ লাখের উপরে। ফেল করেছে কম অর্থাৎ এক লাখের কিছু বেশি। সার্বিকভাবে এতো ভাল রেজাল্ট হওয়াতে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতে উঠেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন। তাদের প্রাণ-উচ্ছল ও হাসিমাখা আনন্দের অংশীদার তাদের পরমপ্রিয় শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবক বা মাতা-পিতা, বন্ধু বা পড়ার সাথীরা ও পরিবারের আপনজনরা। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম ও যথোপযুক্ত শিক্ষা ও পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে দেশ গড়ার হাতিয়ার হিসাবে যেমন তৈরি করেছেন-স্বপ্ন দেখিয়েছেন-যাদের অবদান কখনো তুলনীয় হয় না, তেমনি অনেক মাতা-পিতা কষ্টের শেষ আয়টুকু অন্তর থেকে উজাড় করে দিয়েছেন সন্তানের মঙ্গল কামনায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের আশায়। অনেক সময় ক্লাসমেট বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে বিজ্ঞান, গণিত বা তাদের পড়ালেখার অনেক জটিল সমস্যার সহজ সমাধানও খুঁজে পান। আপনজনদের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণার কি কোনো তুলনা চলে? তাদের কারো কারো উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা আজকের এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনেকেরই সাফল্যের চাবিকাঠি। তাই এই আকাশচুম্বী সাফল্যে সমন্বিতভাবে সবার অবদানই অনস্বীকার্য। বাঁধভাঙ্গা উল্লাস ও উষ্ণ অভিনন্দনে সিক্ত যেমন উত্তীর্ণরা, তেমনি সেই আনন্দের সমান অংশীদার তাদের পরিমণ্ডলের এই মানুষগুলোরও-যাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় আজকের এই অর্জিত সাফল্য। তাই প্রাণঢালা উষ্ণ অভিনন্দন জানাই তাদের সকলকে।

তবে চরম হতাশার কিছু বিষয় না বললেই নয় তা হলো,এই মেধাবি ছাত্রদের ভাল প্রতিষ্ঠান গুলোতে ভর্তি হতে না পারা সীমিত আসনের কারনে।যে শিক্ষার্থীরা ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে না তাদেরকে আমরা সিমপ্লি খারাপ ছাত্রের উপাধি দিয়ে আমাদের দায়-দায়িত্ব কি এড়াতে পারি? এটা বরং অমানবিকতার শামিল। সরকারকে শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে যাতে করে এ সমস্ত জিপিএ পাওয়া ছাত্র ছাত্রিরা যে সমান সুযোগ পেতে পারে।স্বাধীনতার ৪৩ বছর পার হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে যেভাবে সরকারের মনযোগ দেয়া দরকার ছিল তা দেয় নি। এ ক্ষেত্রে ভাল প্রতিষ্ঠান গুলোতে আসন সংখ্যা বাড়ানো বা আরো একই মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেয়া অথবা সমাজের ধনাড্য ব্যাক্তিগন যদি এ রকম প্রতিষ্ঠান করার জন্য এগিয়ে আসেন তাহলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোতে সীমিত আসন সংখ্যা বা আবাসিক অপ্রতুলতার কারণে এমনিতেই তারা ছিটকে পড়ে এবং অল্পবয়সে তাদের মনমানসিকতার উপরে তা যথেষ্ট চাপ বা প্রভাব ফেলে বৈকি! দেখা যায় পরে যা পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে অশান্তিও ডেকে আনে। তাই এই ছিটকে পড়া শিক্ষার্থীরা যে প্রতিষ্ঠানে যে বিষয়েই পড়ালেখা করুক না কেন-হউক সেটা অনার্স বা পাস কোর্স-সেই প্রতিষ্ঠাগুলোতে গুণগত বা মানসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।

আর একটি বিষয় আমাদের দৃষ্টি কাড়ে না তা হলো, শিক্ষকদের নিম্নমানের বেতন।আমাদের পাশের দেশেও শিক্ষকরা ন্যুনতম ২৫০০০ টাকা বেতন পায়।আমি একজন শিক্ষকের সন্তান।আমার বাবাকে প্রশ্ন করেছিলাম আজ থেকে ৩৫ বছর আগে, আপনি কেন শিক্ষকতাকে বেচে নিয়েছিলেন? তিনি জবাব দিয়েছিলেন ভাল ছাত্রদের শিক্ষক হওয়া উচিত কারন ভাল ছাত্র শিক্ষক হলে জাতি হবে প্রশিক্ষিত। বাবা সম্মান পেয়েছিলেন কিন্তু আর্থিক কষ্ট বাবার সংসারে লেগে ছিল যদিও আমরা মানুষের মত মানুষ হয়েছিলাম। কিন্তু অর্থকষ্টে অনেক মেধাবি শিক্ষকের ছেলে মেয়েকে ঝরে যেতেও দেখেছি।আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা যারা আজ শিক্ষক তাদের জীবনের সব রেজাল্ট গুলো ছিল প্রথম শ্রেনীতে প্রথম,দ্বীতীয় বা তৃতীয়।আজ তাদের সাথে কথা বলে আমার নিজেরই দু:খ হয় মাসের ১০ দিন যেতেই তারা ধার দেনা করেন পাশের দোকানে বা বন্ধুদের কাছে।তাদের অনেক সনদ রয়েছে, রয়েছে বিশেষ পুরস্কার।অনেকের সংসারে স্বামি-সত্রীর অন্তর্জালা তাদের বিষিয়ে তুলছে আবার অনেকেই চেপারেশনে চলে যাচ্ছে একমাত্র সংসারের টানা পোড়নে। এ জন্যই কি তারা জীবনের চৌম্বকীয় এই রেজাল্টগুলো করেছিল? সরকারের দায়িত্ব অচিরেই শিক্ষকদের পে-স্কেল সংশোধন করা যাতে তারা সমাজে ছাত্রদের সত্য কারিগর হিসেবে শিক্ষা দান করতে পারেন।

এ বিষয়টি আমাকে সাংঘাতিকভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। সমাজের সবচেয়ে মেধাবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষকরা পান সর্বসাকুল্যে পনের হাজার টাকার মত। অবিবাহিত তরুণ শিক্ষকদের যখন বিয়ের কথা আসে, তারা লজ্জার ভান করে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। কখনো কখনো বলেন, সামনের অতিরিক্ত টাকাটা পেলেই…। কাজেই এটি তাদের লজ্জা নয়, বরং ভয়। সমাজের সবচেয়ে মেধাবী তরুণের অযোগ্যতা ধরা পড়ার ভয়। এটাও কোন সাংঘাতিক বিষয় নয়। কেননা, এইসব যোগ্য মানুষদের আর্থিক অনটনের বিষয়টা অনেকটা গা সওয়া হয়ে গেছে। প্রায় প্রতি মাসে ধার-দেনা করা নিতান্ত রুটিন কাজ। বন্ধুর কাছে,রাস্তার পাশের দোকানীর কাছে। বাসার মালিকের কাছে যা আগেই আমি উল্লেখ করেছি। বিশ্ববিদ্যলায় গুলো ঘুরে দেখুন বা আপনার বন্ধুদের খবর নিয়ে দেখুন।আমরা সবাই আজ কাউকে নিয়ে ভাবি না সে জন্য সমাজ অস্হির। এমনতো নয় যে সবাই আমার বন্ধু নাজিম উদ্দৌলার মত হবে যে জীবনে দ্বীতিয় হয় নি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাব বিজ্গান বিভাগের প্রফেসর। জীবনের প্রথম থেকে ইসলামি জীবন বিধানকে মেনে চলেছে।তাবলিগের সাথে সম্পৃক্ত থেকে জীবনের চাওয়া পাওয়াকে সীমিত করেছে। সমাজে এমন সবাই হলে তো ভাল হতো। কিন্তু সেও কি প্রকৃত সুখী? হয়ত সে মেনে নিয়েছে এ জীবন কে আখেরাতের আলোকে।অথচ আমি তার চেয়ে অনেক খারাপ রেজাল্ট করেও একজন মেধাবি শিক্ষকের ১৫ গুন বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি।

অনেক দিন ধরেই শুনে আসছি, শিক্ষকবৃন্দের জন্য আলাদা বেতন স্কেল দেবেন সরকার। আমাদের মহান শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়- প্রায় ছয় বছর ধরে বলে আসছেন। আলাদা বেতন স্কেল দেব, দিচ্ছি। কিন্তু তিনি পারছেন না। শিক্ষকদের সম্মান না দেয়ার কারনে ও সুশিক্ষা না পাওয়ার কারনে আজ সমাজের যুব সম্প্রদায় যে অবস্হায় বিষক্রিয়া ছড়াচ্ছে তাতে সমাজকে অস্হির করে তুলছে।ধরুন, একজন ডাক্তার অপারেশন থিয়েটারে ঢুকেছেন,ব্রেইন অপারেশন করবেন। রোগীর খুলি খুলে ফেলা হয়েছে। থকথকে মগজ বের হয়েছে। অস্ত্রোপচার চলছে। হঠাৎ তিনি আনমনা হয়ে গেলেন। অন্য কাজের কথা মনে পড়লো। প্রিয় পাঠক, চিন্তা করুন রোগীর কী অবস্থা হবে? অশিক্ষা যদি আমাদের সামাজিক ব্যাধি হয়, এই রোগ সারাবেন একজন শিক্ষক। মা-বাবা মানব সন্তানের জন্ম দিয়ে এই সুন্দর পৃথিবীকে দেখার ব্যবস্থা করে দেন ঠিকই। কিন্তু একজন শিক্ষক (যে কোন পর্যায়ের) মানব-শিশুর মধ্যে যে প্রতিভার বিকাশ ঘটান, তার সমস্ত বোধ দিয়ে, দর্শন দিয়ে নিজের ভেতরের জ্ঞানের সকল আলো শিষ্যের মধ্যে প্রতিস্থাপন করতে উদ্যত হয়েছেন। হঠাৎ সংবাদ এলো, রাস্তার পাশের দোকানীটার দেনার টাকা খুব দরকার। কিংবা খবর এলো টাকার অভাবে তার প্রিয়জনকে হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। গুরু আনমনা হলেন। অবস্হাটা কি হবে? তা-ই হচ্ছে আমাদের সমাজে এখন।শিক্ষকরা এখন জীবনের টানাপোড়নে টিউশন বা কোচিং সেন্টারের উপর ঝুঁকে পড়েছেন।

শিক্ষকদের জীবনের সাথে আরো বেশকিছু সমস্যা উঠে এসেছে- শিক্ষকবৃন্দের আবাসন সমস্যা, ডরমিটরিতে অযৌক্তিকভাবে ভাড়া নির্ধারণ, ক্যাফেটেরিয়াতে খাবারের মান, স্বাস্থ্য বীমা সহ বেশ কিছু সমস্যা। খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থানের মত তিনটি মৌলিক বিষয়ে বাংলাদেশের শ্রেষ্ট মেধাবী সন্তানরা উদ্বিগ্ন। এগুলো এখন কিছুটা গা সওয়া হয়ে গেছে। কিন্তু সাংঘাতিকভাবে একটি সমস্যা নজর কাড়লো, শিক্ষকবৃন্দের জন্য পরিচ্ছন্ন টয়লেটের ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা। শিক্ষকবৃন্দ যখন বলছেন, তখন সমস্যাটা প্রকট। কিন্তু কতটা প্রকট? একাডেমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীনের দায়িত্ব নিঃসন্দেহে উপাচার্যের পরের পদ। একটি বিল্ডিং এ পাঁচজন ডীন বসেন, সেখানে টয়লেটে কখনো কখনো পাঁচ দিনের উপরেও পানি থাকে না। ব্যাপারটি কিন্তু গুরুতর। ধরুন, তীব্র পেট ব্যথা নিয়ে ক্লাসে গিয়ে একজন শিক্ষক কি শেখাবেন? যাদের হাতে সমাজ তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছেন, তাদের মৌলিক অধিকারের দিকে নজর না দিলে কি ঘটতে পারে? সমাজপতি, আপনাদের এই সর্বনাশা খেলা বন্ধ করুন। ভুলে যাবেন না, আপনারাও পাবলিকের টাকায় চলেন। যখন বলেন- আমি চাকরি দিয়েছি, তখন আমার ভীষণ লজ্জা হয়। কারণ, এতে আপনার দুর্নীতি প্রকটভাবে প্রকাশ পায়। কারো যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও আপনি চাকুরি দিয়েছেন। আর যোগ্যতমরা চাকুরি পেলে তো, আপনি দেন নি। বরং সে-ই তার যোগ্যতায় অর্জন করেছে। শিক্ষকের মাথা উঁচু রাখার জন্য যা যা করতে হয়, তাই তাই করুন। সমাজের সকল মানুষ যাদের কোন না কোন আত্মীয় শিক্ষা গ্রহন করছেন, তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, সমাজের কথা চিন্তা করে- শিক্ষকদের আলাদা মর্যাদা দেবার ব্যবস্থা করুন। কেননা, আজকের কর্ণধারগণের যোগ্যতা শিক্ষকজাতির জন্য, আমলাদের যোগ্যতা, ব্যাংকার, সামরিক বাহিনীসহ সকল স্তরের মানুষের যোগ্যতা কোন না কোন শিক্ষকের অবদান। শিক্ষকবৃন্দের মৌলিক অধিকার এবং আলাদা মর্যাদা দিয়ে দায়িত্ব দিন। বলুন- জাতির জন্য কোন পর্যায়ে কত মানব সম্পদ দরকার। অশিক্ষিত ও অল্প-শিক্ষিত সম্প্রদায় যেমন জাতীয়ভাবে তাদের অবদান নিশ্চিত করেছে, শিক্ষিতরাও জাতীয়ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান পরিস্কার করলে- জাতি প্রবল বেগে এগিয়ে যাবে, এতে কোন সন্দেহ নেই।

বিষয়: বিবিধ

১৩৩২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

225602
২৪ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩১
পুস্পিতা লিখেছেন : আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কি নৈতিকচরিত্রবান জাতি তৈরি করতে পারছে?
225611
২৪ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৯
গেরিলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৪ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৯
172677
পরিচিত লিখেছেন : আপু অনেকদিন পর -- কৈ ছিলেন ?
225665
২৪ মে ২০১৪ রাত ০৮:৪৫
মহিউডীন লিখেছেন : আপনাদের ভাল লাগার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File