আত্মহননে পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা কতটুকু?

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৫:৫৩:৪৯ বিকাল

আজকের সমাজে যে কি বিচিত্র রুপ দেখতে পাওয়া যায় তা ভেবে দেখার কারোরই কোন ফুরসৎ নেই।একটা দম্পতি থেকে পারিবারিক জীবন শুরু হয় আবার সে থেকে ছড়িয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ।সূরা নিসার ১ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' ওহে মানবগোষ্ঠী! তোমাদের প্রভুকে ভয়ভক্তি কর যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একই নফস্ থেকে আর তার জোড়া ও সৃষ্টি করেছেন তার থেকে আর উভয় থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু নর নারী।' শহরে ও গ্রামে পরিবারগুলো পর্যবেক্ষন করলে এমন অনেক স্পর্শকাতর দৃশ্য চোখে পড়ে যা ভাবিয়ে তোলে ভাবুকদের।সূরা আল ইমরানের ১৯০ আয়াতে এই জ্গানীদের কথা আল্লাহ এভাবে বলেন,' নি:সন্দেহে আকাশমন্ডলি ও পৃথিবির সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে বিশেষ নিদর্শন রয়েছে জ্গানবান লোকদের জন্য।'গ্রামীন পরিবারগুলোর মধ্যে অধিকাংশই কৃষক,ব্যবসায়ি ও সাধারন চাকুরিজীবি। আবার শহরে শিক্ষিত চাকুরিজীবি,ক্ষুধে ও বড় ব্যাবসায়িরা তাদের স্ব স্ব কাজ কর্ম করেন।কৃষকদের স্হায়ি আবাস গ্রামে।আবার যারা শিক্ষা বা ব্যাবসায় ভাল করেন তারা স্হায়ী হয়ে যান শহরে। শহরে বা গ্রামে দম্পতিরা তাদের দাম্পত্য জীবনে আবদ্ধ। কিন্তু দম্পতিদের জীবনের ক্ষেত্রে কার কতটুকু ভূমিকা তা পরখ করে দেখে নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সামজে আত্মহননের যে রোগটি তৈরি হয়েছে তা শুধু আজকাল নয় বহু আগেই সমাজে পরিস্কার হয়ে গেছে।আমরা দীর্ঘকাল থেকে পত্র পত্রিকায় দেখে এসেছি,টিন এজার,দম্পতি,ব্যাবসায়ি,রাজনীতিবিদ,সাংবাদিক,চিত্রশিল্পি,সিনেমা শিল্পি, ও সমাজের সুন্দরি মহিলাগন আত্মহত্মা করেছেন ও অনেকে চেষ্টা করে বেঁচে গেছেন। প্রতিটি মানুষ এ জীবনকে ভালবাসে।এ ধরনি ছেড়ে যেতে চায় না। কবি বলেছেন 'মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে। তাহলে এমন একটি সিদ্ধান্ত কেন এবং কখন নেয়া হয়? গত কয়েকমাস ধরে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যার কোন প্রতিকার প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে কিনা আমাদের জানা নেই। স্কুল ছাত্রীর স্কুল যাত্রা ব্যাহত, নারি কর্মিদের যার যার কর্মক্ষেত্রে যেতে বাধা দেয়া বা ধর্ষন করা দুর্বিত্তদের দৈনিক একটি কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা যারা স্বাধীনতার চেতনার কথা বলি তাদের এগুলো দেখে লজ্বা হয় কিনা জানিনা তবে আমি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে লজ্বাবোধ করি এই সমাজে বাস করতে। যে কোন দুর্ঘটনা ঘটে গেলে প্রশাসন এলেও বিচারের মুখ দেখতে পায় না জনগন।আইনের শাসন না থাকার কারনে ঘটনা ঘটেই চলেছে। আবারো দুটি ঘটনা আমাদের সজাগ করে দিল আমাদের সমাজে কোন নিরাপত্তা নেই। এর জন্য শুধু যে সরকার ও প্রশাসনকে দায়ি করবো তা নয়।আমরা দেখছি পরিবার থেকে সমাজের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কোন দায়বদ্ধতা নেই। আমাদের স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন প্রেমের কারখানা গড়ে উঠেছে। বাধাহীন ভাবে লোক চক্ষুর সামনে প্রতিটি ক্যাম্পাসে যা ঘটছে তার জন্য স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন দায়বদ্ধ বটে।আবার অফিস আদালত গুলোতেও অফিসের নিয়মনীতি না মানার কারনে এ ঘটনাগুলো ঘটছে। তাহলে আমরা দেখছি, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান গুলো এবং মানবিক দিকগুলো দায়বদ্ধ এই ঘটনাগুলোর জন্য।

গতকাল ২১ ও আজ ২২ শে ফেব্রুয়ারি দু'টো ঘটনা ঘটেছে। একটি রাজশাহিতে ও আর একটি ঢাকার উত্তরায়। রাজশাহিতে যে ঘটনাটি সে ২৬ বছরের একজন বিবাহিতা মহিলা।তখন সন্ধ্যা সাতটা। ভটভটির চেইন মাস্টার আরিফ বললেন, এই গাড়িটা এখন যাবে। মহিলাটি ভটভটিতে উঠে বসেন। সঙ্গে সঙ্গে আরও ছয়জন যাত্রী উঠে বসেন। ভটভটির স্টিয়ারিং ধরেন আরিফুল। এর পরই রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি ব্রিজের ওপর থেকে ভটভটিটি পুঠিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। উত্তর দিকে এক কিলোমিটার গিয়েই চারঘাটের রামচন্দ্রপুর গ্রাম। চারদিকে অন্ধকার। পুঠিয়ার রাস্তা ছেড়ে ভটভটি এবার আমবাগানের ভেতরে ঢুকে যায়। মেয়েটির জীবনে নেমে আসে এক বিভীষিকাময় রাত। অবস্থা বুঝতে পেরে মেয়েটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাঁর স্বামীকে ফোন করে বিপদের কথা জানান। ইতিমধ্যে তাঁর স্বামী পুঠিয়া থেকে রওনা দিয়েছিলেন তাঁকে নিতে। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি ওই আমবাগানে এসে আর স্ত্রীকে খুঁজে পাননি। তৎক্ষণাৎ তিনি চারঘাট থানায় ফোন করেন। রাত ১২টার দিকে পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। সারা রাত ধরে খুঁজে অবশেষে ভোররাতে গ্রামের আলতাব উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তদের হাতে ধর্ষণচেষ্টার শিকার হওয়া এ তরুণীর এই ঘটনা পুলিশ গতকাল শুক্রবার এভাবে সাংবাদিকদের জানায়। পুলিশ জানায়, মেয়েটির কর্মস্থল ঈশ্বরদী ইপিজেডে। সেখান থেকে তাঁর স্বামীর বাড়ি পুঠিয়ায় ফিরছিলেন। উদ্ধারের পর তিনি শুধুই কাঁদছিলেন। তিনি পুলিশকে জানান, দুর্বৃত্তরা প্রথমে তাঁর বোরকা ছিঁড়ে ফেলে। ব্যাগ ও মুঠোফোন কেড়ে নেয়। এরপর ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তদের মধ্যে তিনজন ছাড়া বাকিরা চলে যায়। এই তিনজন তাঁকে একটি ভ্যানে তুলে আরও নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিল। একটি বাড়ির পাশ দিয়ে ভ্যানটি যাওয়ার সময় তিনি ভ্যান থেকে লাফিয়ে পড়েন। দৌড়ে ওই বাড়ির ভেতর ঢুকে চিৎকার করতে থাকেন। তখন দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এটাই আলতাব উদ্দিনের বাড়ি। চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার গোলাম মর্ত্তুজা জানান, ওই দুর্বৃত্তরা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। যাত্রীবেশে তারা মেয়েদের হয়রানি ও নির্যাতন করে থাকে। চেইন মাস্টার আরিফুলের বিরুদ্ধে এর আগে এ ধরনের অপকর্মের অভিযোগ আছে। ওসি বলেন, মেয়েটি উচ্চশিক্ষিত। মানসম্মানের ভয়ে হয়তো সব কথা বলছেন না। তবে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। এ অভিযোগে গতকাল সকালে চারঘাট থানায় মামলা করেন তরুণীর এক ভাই।গোলাম মর্ত্তুজা বলেন, পুলিশ চেইন মাস্টার আরিফুলসহ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। আরিফুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাগাতিপাড়া উপজেলার জনী (২২) ও মোহাম্মদ আলী (৩০) এবং বাঘার আড়ানী গ্রামের জরিফ (২৬) নামে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এঁদের সবাইকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করি তাদের যথাযথ বিচার হবে।

দ্বিতীয় ঘটনাটি হলো,অনেক প্রেমের ফাঁদে আটকা পড়েছিল সুন্দরী বিমানবালা আফরোজা ইসলাম সূচী। কেউ তাকে জোর করে কাছে পেতে চেয়েছিল কেউবা গভীর প্রেমে মগ্ন হয়ে পড়েছিল তার। অন্যদিকে সূচী নিজেই যার প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েছিল ভালবাসার সেই মানুষটি বিয়ে করে ফেলে অপর এক নারী চিকিৎসককে। এ নিয়ে চলে দীর্ঘ টানাপড়েন। শেষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথই বেছে নেন তিনি। পরিবার, পুলিশ ও সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত সূচীর পরিবারের এক সদস্য জানান, নানামুখী প্রেম ও প্রতারণার চাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন সূচী। আকর্ষণীয় চেহারা হওয়ার কারণে প্রথম দেখাতেই সবাই তার প্রেমে পড়ে যেত। এমনকি বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া স্বামী মোবারকও তাকে পুনরায় ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। এসব কারণেই সূচী শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার মতো কঠিন পথটি বেছে নেয়। গত বুধবার দুপুরে উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টের তৃতীয় তলায় সবার অগোচরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। গতকাল পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পুলিশ ওই বাসায় তল্লাশি চালিয়ে সূচীর আত্মহত্যার আলামত উদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে কিছু উদ্ধার করা যায়নি। ঘটনার তদারককারী উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় ইউডি মামলা হয়েছে। পুলিশ সূচীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লন্ডন প্রবাসী মোবারকের সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পরও মোবারক তার পিছু ছাড়ছিলেন না। নানা সময়ে সূচীকে ত্যক্ত-বিরক্ত করতেন তিনি। মোবাইলে আবার সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য চাপ দিতেন। এমনকি একদিন এয়ারপোর্ট এলাকায় গাড়ি থেকে নামার পর সূচীর ব্যাগ নিয়ে পর্যন্ত টানাটানি করেন মোবারক। বিচ্ছেদের পরও মোবারক সূচীকে নিজের স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন। এদিকে মোবারকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ইউনাইটেড এয়ার লাইন্সে থাকা অবস্থায় মোর্শেদের সঙ্গে পরিচয় হয় সূচীর। একপর্যায়ে দু’জনে গভীর প্রেমে মত্ত হয়ে ওঠেন। কিন্তু প্রতারক প্রেমিক মোর্শেদ সূচীর পাশাপাশি এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গেও প্রেম চালিয়ে যেতে থাকেন। মোর্শেদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে তাদের প্রেমে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ওই নারী চিকিৎসক। নিজের পেটে মোর্শেদের সন্তান জানিয়ে মোর্শেদকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন তিনি। মোর্শেদও বাধ্য হয়ে ওই নারী চিকিৎসকে বিয়ে করেন। এসব কিছুই জানতেন না বিমানবালা সূচী। মোর্শেদের প্রেমে অন্ধ হয়ে প্রেমিকের সম্মান রক্ষায় বিয়েতে সম্মতি দেন তিনি। কিন্তু মনের ভেতরে প্রতারিত হওয়ার তীব্র যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায়। মায়ের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করলেও আর কেউ তার এই কষ্ট বুঝতে পারেনি। সূত্র জানায়, মোর্শেদের প্রেমে প্রতারিত হয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সূচী।

এদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, গত বছরের জুন মাসে সূচীর সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যোগদান করা কেবিন ক্রু মির্জা আদনানও তার সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর চেষ্টা করেন। এ নিয়েও বিরক্ত ছিলেন সূচী। কিন্তু আদনান ছিলেন নাছোড়বান্দা। সূচীর সহকর্মীদের একজন জানান, এক সময় আদনানের প্রতিও কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েন সূচী। ত্রিমুখী প্রেম আর সাবেক স্বামীর পেছনে লেগে থাকা, সব মিলিয়ে নিজের জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে যায় সূচীর। চারদিকের মানুষের

উত্তরা পশ্চিম থানা সূত্রে জানা গেছে, বিমানবালা সূচীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর গতকাল দুপুরে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে এবং মামলা নম্বর ৫। সূচীর মা সুলতানা ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। থানা সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কাজ চলছে। এ জন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তদন্তের অংশ হিসেবে সূচীর কথিত প্রেমিক মাহবুব মোর্শেদ, মির্জা আদনান, বান্ধবী লিকমাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে নজরদারির কারণে এক প্রকার ‘গৃহবন্দী’ অবস্থায় দিন কাটছে সূচীর কথিত প্রেমিক মোর্শেদের। স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়া ছাড়া ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না তিনি। গতকাল মোর্শেদের বাসস্থান উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর রোডের ২২ নম্বর ভবনের বাসায় গিয়ে কথা বললে প্রথমে বাসার নিরাপত্তাকর্মী হাবিব জানায়, স্যার (মোর্শেদ) কদিন ধরে অসুস্থ। কারও সঙ্গে যোগাযোগ বা কথা বলছেন না। পরে আসতে হবে। পরে যোগাযোগ করা হলে মাহবুব মোর্শেদের ছোট ভাই পরিচয় দেয়া সোনাল নামে একজন জানান, বিমানবালা সূচীর সঙ্গে মোর্শেদের কোন প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। তিনি বলেন, সূচীর সঙ্গে তার কোন প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক ছিল না। তার ভালবাসার সম্পর্ক ছিল ‘অন্য কারো’ সঙ্গে। এ বিষয়ে পুলিশকে যা বলার, বলা হয়েছে। এর বেশি কিছু আর বলতে চাই না। সূচীর মৃত্যুর জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে তাকেই (মোর্শেদ) দায়ী করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তারা (সূচীর পরিবার) কেন এমন বলছে, সেটা তারাই ভাল বলতে পারবে’।ঘটনার তদারককারী উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, সূচীর মা একটি ইউডি মামলা করেছেন। তদন্ত কাজও চলছে সমানতালে। তদন্তের গতি ও পোস্টমর্টেম রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে ভিকটিমের পরিবারের ওপর। তারা যদি অভিযোগ না করে তাহলে আইনানুযায়ী পুলিশ তার ভূমিকা পালন করবে। এদিকে গতকাল দুপুরে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থল সূচীর বাসস্থান উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় সূচীর মা সুলতানা ইসলাম, বোন ও আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে হাজির হয়। এসময় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মাহমুদ ফ্ল্যাটে থাকা সূচীর ব্যবহৃত সকল জিনিসপত্র তার মাকে বুঝিয়ে দেন।

এ রকম ঘটনা ঘটেই চলছে সমাজে একের পর এক। প্রথমত: আমরা প্রত্যেকে যদি আপন পরিবারের দিকে লক্ষ করি সেখানে জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম দেখতে পাব।আমাদের দেশের ৯০% মুসলমান ইসলাম নির্ভর।কিন্তু ইসলামের দৈনন্দিন যে আচরন ও নিয়মকানুনের মাধ্যমে একজন মানুষ পরিশীলিত হয়ে উঠে তা অধিকাংশ পরিবারে অবর্তমান। পরিবারে বাবা মা হলো সন্তানের জন্য দিক নির্দেশক।বাবা মা যেখানে অশ্লিলতায় আবদ্ধ সেখানে সন্তানকে যদি ভাল কোন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো-ও হয় তা কোন কাজে আসে না।কারন কোমলমতি ছেলে মেয়ে তার পরিবেশ থেকেই জেনে বুঝে বেড়ে উঠে।এর পর যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়, সেখানে যদি উছৃংখল আচরন দেখে সেটা তাদের প্রভাবিত করে।যার পরিনতি ঘটেছে সূচির জীবনে।আর একটি দিক হলো নৈতিকতা।যেহেতু নৈতিকতা নিয়ে জীবন গড়ে উঠে নি সেখানে পুরুষ বা মহিলাই হোক, এ ধরনের ঘটনা ঘটা স্বাভাবিক।মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে সর্বোৎকৃষ্ট সৃষ্টি হিসেবে। সে মানুষকে আবার আল্লাহ আধম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সূরা আত্তিনের ৪/৫ আয়াতে এভাবে,' নিশ্চই আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি সুন্দর আকৃতিতে,তার পর আমরা তাকে পরিনত করি হীনতম থেকে হীনতমে।' পশু আর মানুষের মধ্যে ব্যাবধান রয়েছে। পশুর কোন আত্মার পরিচর্যা করতে হয় না,ভাল মন্দ বুঝার কোন জ্গান তাদের দেয়া হয়নি,তারা আপন পর বুঝে না।সুতরাং যা সামনে পায় তা-ই ভক্ষন করে।মানুষের মাঝে একটি শ্রেনী আছে এমন যারা সুন্দর পোষাক পরে,সুন্দর কথা বলে কিন্তু তাদের অন্তর হলো নিকৃষ্ট এমন কি পায়খানার কিট থেকেও নিকৃষ্ট। ইসলামের প্রকৃত অনুসারি একজন বান্দাহ সব সময় আল্লাহর ভয় রাখে তার প্রতিটি কাজে ও আচরনে।রাসূল সা: আলী রা: কে বলেছিলেন,' হে আলী! যদি তুমি কোন মহিলাকে দেখতে পাও,প্রথম দৃষ্টি তোমার এবং পরের দৃষ্টি শয়তানের।আমরা যদি সমাজে কোন টিন এজারকে দেখি তাহলে যদি ভেবে নেই সে আমার মেয়ে বা বোন,যদি কোন বয়োজেষ্ঠকে দেখি তাহলে যদি ভেবে নেই আমার বড় বোন বা ভাবি,যদি কোন বৃদ্ধাকে দেখি তাহলে যদি ভেবে নেই, আমার মা ও দাদি নানি।এ ভাবা আমাদের সবাইকে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করবে বৈ কি? আমরা যতদিন মানবিক ও নৈতিক ব্যাপার গুলো নিজেদের জীবনে আত্মস্হ করতে না শিখবো ততদিন রক্ত ঝরবে, আত্মহনন হবে নি:সন্দেহে। আসুন আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন ইসলাম অনুশিলনের আলোকে আমাদের পরিশীলিত করি, সমাজ ও জাতিকে রক্ষা করি। আর সরকারের কাছে আমাদের আবেদন আইনের শাসন বলবৎ করে অন্যায়কারিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেয়ার ব্যবস্হা করুন যাতে তারা আইনের ফাঁকফোঁকর খুঁজতে ব্যার্থ হয়।

বিষয়: বিবিধ

১২৪৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

180812
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৭
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : ইসলাম অনুশিলনের আলোকে আমাদের পরিশীলিত করি, সমাজ ও জাতিকে রক্ষা করি।

পড়ে ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
180817
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১২
হতভাগা লিখেছেন : বেড রুমও এখন নিরাপদ হয় । কিভাবে রাষ্ট্র মানুষকে নিরাপত্তা দেবে ?

যে আত্মহত্যা করতে চায় তাকে ঠেকানো কঠিন । সুযোগ পেলেই সে তা করবে ।

আত্মহত্যা মহা পাপ হলেও অনেকের কাছে তা ফ্যাশন ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File