ভ্যালেন্টাইন সংস্কৃতির বিস্তৃতি বাংলার -শহর-উপশহর, হোটেল-মোটেল,পার্ক-রেস্তোরা,নদী-সমুদ্র পাড়কে পতিতাবৃত্তিতে পরিনত করছে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:০০:৫৫ রাত
বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি স্বাধীন সার্বভৌম ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দেশ।এ দেশে ৯০% মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালগিষ্ঠ জনগন নিয়ে সাম্যের ভিত্তিতে বসবাস করে আসছে যুগের পর যুগ।এই উর্বর শষ্য-শ্যামল ও সবুঝের প্রান্তর মানুষের হৃদয় কেড়ে নেয়।প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত এই দেশে সবকিছুই ভরপুর।এ মাটিতে বিজ পড়লেই গজিয়ে উঠে গাছ গাছালি ও লতা গুল্ম।দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও দেখেছি এক অনাবিল শান্তির ছোঁয়া যদিও শহর ,গ্রাম গন্জে ছিল কিছুটা অভাব, ছিল গরিবত্ব।পাড়ায় পাড়ায় একে অন্যের সাথে হৃদ্যতা।কেউ কাউকে বিদ্রুপ করতো না।একজন বিপদে পড়লে অন্যরা ছুটে আসতো।বন্ধুত্বের মধ্যে ছিল না কোন খাদ।ধীরে ধীরে আমাদের জীবনের মধ্যে যান্ত্রিকতা ও বস্তুবাদ ছড়িয়ে পড়লো।চলাফেরায় খাওয়া দাওয়ায় একটা পরিবর্তন এসেছে আর তা এখন বানিজ্যিক ভোগে পরিনত হয়েছে।আচার আচরনে কোন পরিশিলিত রুপ নেই।বৃটিশের সময়ে একজন বৃদ্ধলোক তিন মাসের জন্য গিয়েছিলেন ইংলেন্ডে।তিন মাস পর যখন ফিরে এলেন তার এক বৃটিশ প্রতিবেশী তাকে জিজ্গেস করলো,তুমি যে আমাদের সমাজ থেকে এলে তোমাদের সমাজের সাথে কি পার্থক্য দেখে এলে?সেই বৃদ্ধ বললেন,প্রধান যে সমস্যাটা দেখলাম তাহলো,আমাদের অন্তর আছে কিন্তু ইন্চানিয়াত বা মনুষ্যত্ব নেই, তোমাদের মনুষ্যত্ব আছে কিন্তু অন্তর নেই।আসলে একজন মানুষের এ দু'টো জিনিসের সমন্বয় থাকতে হবে।জীবন যদি পরিশীলিত ও মার্জিত না হয় সে জীবনের কোন মুল্য থাকে না।একটা আলোকিত জীবনের জন্য দরকার সুসৃংখল , পরিশীলিত ও মার্জিত অবস্হান।আমাদের দেশে মধ্যবৃত্ত শ্রেনীর আবির্ভাব হয়েছে ব্যাপক কিন্তু পরিশীলিত জীবন তৈরি হয় নি আর এর কারন হলো বিকৃত শিক্ষাব্যাবস্হা।দেশ ও জাতির সমস্যা যে যায়গাটিতে- যেমন বৃটিশ আমলে একটা মুল্যবোধ তৈরি হয়েছিল যদিও তারা এ উপমহাদেশ শাসন করতে এসেছিল।একটা মানদন্ড ছিল যেখানে মানুষ আপরাধ করলে ছাড় পেত না,বিশেষ করে লর্ড ক্লাইভের আমলে। তিনি তিনবার এসেছিলেন।প্রথমবার ঘুষ বানিজ্যে জড়িয়ে পড়েছিলেন।দ্বীতিয় বার এসে তার চৈতন্য হলো যে,যদি কোন বৃটিশ এখানে আপরাধ করে তাহলে ঐ বৃটিশ এ রাজ্যে শাসন করতে পারবেনা।কারন নৈতিকভাবে দুর্বল মানুষ কোন রাষ্ট্র বা সমাজকে ধরে রাখতে পারে না।সেজন্য দ্বীতিয়বার আইনের শাসন কঠোরভাবে বলবৎ করলেন।তার বিরুদ্ধে আর্মিতে বিদ্রোহ হলো।দু'শ অফিসারকে গ্রেফতার করা হলো কিন্তু সমস্ত আপরাধকে নির্মুল করতে সমর্থ হলেন।বৃটিশ ভারতে দীর্ঘকাল থাকার কারনই ছিল তারা মুল্যবোধে সবার উপরে স্হান করে নিয়েছিল।এমনকি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত এ মুল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে নি।আমাদের দেশ যখন স্বাধীন হলো তখন এই মুল্যবোধের নৈরাজ্য শুরু হলো।আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম ঠিক কিন্তু দেশ চালানোর মত প্রাজ্গ ও যোগ্যলোক থাকলেও দেশ চালানোর অভিজ্গতা ছিল না।সেজন্য আমাদের রুচি , মুল্যবোধ,লোভলালসা,নৈরাজ্য রাষ্ট্রকে আলোকিত না করে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে আর তা অবিরাম চলছে আজকের সময় পর্যন্ত।ডেমোক্রেটিক একটা একটা চিন্তা এসেছে কিন্তু এ ব্যাবস্হা বাস্তবায়নে আরো যুগ যুগ কাজ করতে হবে।আমাদের পাশেই সিংগাপুর একটি ছোট দেশ।একসময় যাদের একটু সুপেয় খাবার পানিও ছিলনা।আজ একটি পরিশীলিত দেশে পরিনত হয়েছে।সেখানে আইনি ব্যাবস্হাটা এমন যে কেউ একটু চুইংগাম চিবিয়ে ফেললেও জরিমানা হয়।আর একটি মুসলিম সমাজ তো আরো পরিশীলিত হওয়ার কথা তাহলে আমরা পিছিয়ে কেন? তরুনদের দ্বারা দেশ এগুবে কিন্তু পথ দেখাতে হবে প্রবীনদের।তরুনরা তা-ই হবে যা আমরা তাদের প্রশিক্ষন দিব।কিন্তু আমাদের প্রবীনদের যে গুন তৈরি হয়েছে তা ব্যাধির আকার ধারন করেছে।কয়েক বছর আগে ভ্যালেন্টাইন দিবসে টিএসসিতে এ দেশের একজন মন্ত্রী বলেছিলেন,ক্লিনটন - মনিকার ভালবাসার জয় হোক।যে দেশের একজন মন্ত্রি এমন কথা বলতে পারে সে দেশের তরুনরা কি হবে তা ভেবে দেখা দরকার।আর কতগুলো বছর পর আমরা সমাজে ভ্যালেন্টাইনের যে দৃশ্য দেখছি তা এক ভয়াবহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাসে জানা যায়, ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস নারী-পুরুষের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তার ধারণা ছিল, বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে যুদ্ধের প্রতি পুরুষদের অনীহা সৃষ্টি হয়। সে সময় রোমের খ্রিস্টান গির্জার পুরোহিত ‘ভ্যালেন্টাইন’ রাজার নির্দেশ অগ্রাহ্য করে অতি গোপনে নারী-পুরুষের বিবাহ বন্ধনের কাজ সম্পন্ন করতেন। এ ঘটনা উদঘাটিত হওয়ার পর তাকে রাজার কাছে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। আইন অমান্যের কারণ জানতে চাইলে ভ্যালেন্টাইন রাজাকে জানান খ্রিস্ট ধর্মে বিশ্বাসের কারণে তিনি কাউকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে বারণ করতে পারেন না। রাজা তখন তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় রাজা তাকে (ভ্যালেন্টাইন) খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে প্রাচীন রোমান পৌত্তলিক ধর্মে ফিরে আসার প্রস্তাব দেন। রাজি হলে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে জানান। রাজা দ্বিতীয় ক্লডিয়াস প্রাচীন রোমান পৌত্তলিক ধর্মে বিশ্বাস করতেন। রোমান সাম্রাজ্যে এ ধর্মের প্রাধান্য ছিল। পুরোহিত ভ্যালেন্টাইন রাজার প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানান। তখন রাজা তাকে মৃত্যুদন্ডের নির্দেশ দেন। অতপর রাজার নির্দেশে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪-ই ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। পরে ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ ঘোষণা করেন। পশ্চিমা দেশগুলোতে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ বলা হয়। কিন্তু দিবসটি নিয়ে নেই তেমনকোন তোড়জোড়। অথচ এদেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক নেই; বছরেও একবার গ্রামে যান না তারা সংস্কৃতি চর্চার ব্যাপারি সেজে বসেছেন। বিদেশিদের এজেন্ট হিসেবে প্রগতিশীলতার নামে বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। মুসলমানের দেশ হিসেবে তারা ইসলামি কালচারকে প্রচার সম্প্রচার করার বিরোধিতায় মত্ত।কারন হলো ইসলামি সংস্কৃতি মানুষের মুল্যবোধকে জাগিয়ে তোলে।ইসলামি মুল্যবোধ যতবেশী জাগ্রত হবে ততবেশী এই বেহায়াপনা কমে যাবে।আর তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না এরকম লম্পটি কাজ করার।দেশব্যাপি এ দিনের সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত রাজধানি সহ সারাদেশে আমি খবর নিয়ে দেখেছি ব্যাভিচার ছড়িয়ে পড়েছে।ভ্যালেন্টাইন সংস্কৃতির কুপ্রভাব ও এর বিস্তৃতি-শহর-উপশহর, হোটেল-মোটেল,পার্ক-রেস্তোরা,নদী-সমুদ্র পাড়কে পতিতাবৃত্তিতে পরিনত করছে।এদিনে রাজধানির পার্কগুলোতে রুচিশীল পরিবার, যারা পরিবার নিয়ে গিয়েছেন তারা মুল ফটক থেকে ছেলে মেয়ে ও পরিবার নিয়ে ফিরে এসেছেন এমন অনেকে।ভালাবাসার নামে অশ্লিলতা ছড়িয়ে দিয়েছে যুবক যুবতিরা।নদী ও সমুদ্রের ধারগুলোতে যেখানে মানুষ একটু প্রান সন্চার করতে যাবেন সেখানেও একই অবস্হা।ঢাকা শহরের বড় ছোট হোটেলগুলোতে অবৈধ যৌনচারিতা অন্য সময় হলেও এদিনে আরো ব্যাপক হয়ে উঠে।
বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে নিয়মিত পড়াশুনার চর্চা হওয়ার কথা সেখানে এখন যৌন চর্চা হচ্ছে ও যৌন সংঘ গড়ে উঠেছে।টিভিতে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃত প্রেমিক সংঘে’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের খবর দেখে অনেকে রাগে ফেটে পড়েছেন।তারা বলেন, কীসের ভ্যালেনটাইন ডে? বিজাতীয় সংস্কৃতির ওই বেহায়াপনা দেখে ছেলেমেয়েরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক পরিবার টভি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে কিছুদিন থেকে।ভ্যালেনটাইন ডে উপলক্ষে প্রেমিক-প্রেমিকার ফুল দেয়া নেয়া, যুবতীর খোপায় যুবকের ফুল বেঁধে দেয়া এবং যুবক-যুবতির ঢলাঢলির দৃশ্যসহ টিভিতে খবর প্রচার করা হচ্ছিল।
গত কয়েকদিন থেকে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যালেনগুলোতে ১৪ জানুয়ারি ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে নাটক, অনুষ্ঠান আয়োজনের খবর, বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এসব নাটক এবং অনুষ্ঠানের খবরে কাটপিচ প্রচার করে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নামধারী কিছু মানুষ। এসব কারণে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে টিভি দেখা এবং খবর শোনার সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। শুধু ওই মধ্যবিত্ত পরিবার নয়; তথাকথিত ভ্যালেনটাইন ডে নিয়ে মিডিয়ার বাড়াবাড়ি এদেশের কোটি কোটি ইসলাম প্রিয় দর্শককে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। প্রশ্ন হলো বিদেশ থেকে আমদানি করা ‘ভ্যালেনটাইন ডে’ কি বাংলাদেশের সংস্কৃতি? বাংলাদেশের হাজার বছরের কৃষ্টি, সংস্কৃতি এবং সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে বিদেশি এ অপসংস্কৃতি র কথা ভাবা যায়? এদেশের মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ এবং নৃতাস্তিক পাহাড়ি জনগোষ্ঠি কি ১০/১২ বছর আগেও ভ্যালেনটাইন ডে’র নাম শুনেছে? হঠাৎ করে কেন এই বিজাতীয় সংস্কৃতি নিয়ে এতো আয়োজন? সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে কি মুসলিম রেঁনেসা, বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধ্বংসের নীল নকশার অংশ হিসেবে এই সংস্কৃতি নিয়ে মিডিয়ায় তোড়জোড় শুরু হয়েছে? গুণীজনেরা বলেছেন, একটি জাতিকে ধ্বংস করতে হলে আগে তার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে হবে। তাহলে কি এ জাতিকে ধ্বংস করার সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা থেকে বাংলাদেশের কৃষ্টি কালচারকে ধ্বংস করার চেষ্টা শুরু হয়ে গেছে? সে জন্যই টার্গেট করে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালানো হচ্ছে। তরুণ সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে মিডিয়ার মাধ্যমে। মানুষের চিন্তা চেতনায় মনস্তাত্তিক পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা চলছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘ভালোবাসার ধর্মঘট’ পালন করেছে বঞ্চিত প্রেমিকেরা। তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশও করে। তাদের স্লোগান ছিল ‘কেউ পাবে আর কেউ পাবে না, তা হবে না, তা হবে না’ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনের বটতলায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃত প্রেমিক সংঘে’র উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। ‘প্রেম হোক সকলের জন্য’ এই দাবিতে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী একটি মিছিল বের করে। প্রশ্ন হলো এরা কারা? দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে শিক্ষা লাভের বদলে প্রেম নিবেদন কি সুস্থ মানসিকতার পর্যায়ে পড়ে। তরুণদের মাথা বিগড়ে দিচ্ছে কারা? তাদের এজেন্ডা কি? কয়েকদিন থেকে মিডিয়াগুলোতে ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে হৈচৈ হচ্ছে। পবিত্র ঈদ উপলক্ষে টিভি চ্যানেলগুলো যেমন বিনোদনের অনুষ্ঠানমালা সাজায় অনেকটা ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সেভাবে অনুষ্ঠান সাজায় ইলেক্ট্রোনিক্স মিডিয়াগুলো। এ ক্ষেত্রে কিছু প্রিন্ট মিডিয়াও পিছিয়ে নেই।বিভিন্ন ফুলের পসরায় হেডলাইন দিয়ে ভালবাসার বর্ননা দিচ্ছে।যার ফলে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে ব্যাভিচারের কারখানা। প্রেম-ভালবাসার নামে তরুণ-তরুণীদের এভাবে উসকে দিচ্ছে। কেউ পরিকল্পিতভাবে বিজাতীয় অপসংস্কৃতি বাংলাদেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে; আবার কেউ হুজুগে অপসংস্কৃতি পালনে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আবার কেউ ভালোবাসা দিবস পালনের মাধ্যমে তথাকথিত প্রগতিশীলতার নামে জাতে উঠার চেষ্টা করছে।
ইন্টারনেটের যুগে এক জায়গায় বসে বিশ্বের তাবৎ প্রভাবশালী প্রিন্ট মিডিয়া পড়া যায়। ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার খবরও শোনা যায়, পড়া যায়। ব্রিটেন, আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীনসহ বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রভাবশালী মিডিয়াগুলো দেখে এবং খবর পড়ে বোঝা গেল ওই সব দেশের মিডিয়াগুলোর মাথাব্যথা নেই ভ্যালেনটাইন ডে নিয়ে। দু’একটি মিডিয়ায় ছোট্ট করে খবরটি যায়গা পেলেও ছাপা হয়েছে গুরুত্বহীন ভাবে। এমনকি ভারতের মিডিয়াগুলোতেও ভ্যালেনটাইন ডে নিয়ে মাতামাতি নেই। অথচ বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোতে (বিশেষ করে স্যাটেলাইট টিভি) চলছে ভ্যালেনটাইন ডে নিয়ে অনুষ্ঠান, নাটক, গান, আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতা। এটা কি নিছক দর্শকদের বিনোদন দেয়ার প্রতিযোগিতা নাকি অন্যকিছু? একটি শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক এ প্রসঙ্গে বলেছেন, একটি জাতি তার নিজস্ব সংস্কৃতির মাধ্যমে বেড়ে ওঠে। নানান ভাবে চেষ্টার পরও সে জাতিকে ধ্বংস করা সম্ভব না হলে তার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে হয়। সংস্কৃতি ধ্বংস করা গেলে সে জাতিকে অতি সহজেই বশে আনা যায়। সে লক্ষ্যেই সুকৌশলে বিদেশি অপসংস্কৃতি আমদানি করে এদেশের তরুণ সমাজকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। দেশীয় সংস্কৃতি চর্চা করে ‘খ্যাত’ হিসেবে না থেকে নিজেকে বিদেশি কালচারে জড়িয়ে প্রগতিশীলতার তালিকায় দেখতে চান। ইসলাম, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতা তাদের কাছে গুরুত্বহীন। গুরুত্ব শুধু বিদেশি অপসংস্কৃতি আমদানিতে। ভ্যালেন্টাইন ডে নামে যে অপসংস্কৃতি নিয়ে হৈচৈ হচ্ছে তা প্রতিহত করতে না পারলে সামনে বিদেশি অপসংস্কৃতি আর বেহায়াপনার দাপটে দেশীয় সংস্কৃতি হারিয়ে যাবে। তখন সপরিবারে তথা ছেলেমেয়ে নিয়ে এক সঙ্গে টিভি দেখা নয়; সংগত কারনে বাবা-মার স্কুল , কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মত যায়গায় যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে যা আজ আমাদের অনেককের কাছে বিবেকের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একজন শিক্ষক যদি শিক্ষকচিত চরিত্র গঠন না করেন, একজন অভিবাবক যদি সন্তানের কাছে উন্নত চরিত্র ও পরিশীলিত না হন,একজন সমাজপতি যদি সমাজ গঠনে অগ্রবর্তি না হন,একজন দেশনেতা যদি আইনের শাসনের বাস্তবায়ন না করেন, একজন ছাত্র যদি শিক্ষাকে শিক্ষার আদর্শে আদর্শায়িত না করেন তাহলে এ সমাজ পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা নেই।এখন সরকারের উচিত আইনের শাসন বলবৎ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়া আর তার সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে এই অরুচিকর অবস্হা থেকে প্রকৃত শিক্ষার চর্চায় রুপান্তরিত করে পরিশীলিত করা।
বিষয়: বিবিধ
১৫০৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন