আপনি ও হতে পারেন বড় ও বিখ্যাত একজন ইসলামি লেখক।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:৪৩:৪০ দুপুর

আমাদের প্রতিটি মানুষের একটি জিগ্গাসু মন রয়েছে।মনকে প্রশ্ন করুন আপনার জীবন সম্পর্কে, কোথায় ছিলেন? কোথায় এলেন?এখানে এসে আপনার কাজ কি? আপনি কোথায় চলে যাবেন? এ প্রশ্নগুলো আপনাকে রবের দিকে ধাবিত করবে।আমরা যারা দু'চার কলম লিখি সবাই সাধারন মানুষ ছিলাম।এখন ও সাধারন মানুষই বটে।তবে কিছু অভীজ্গতা সন্চয় করেছি মাএ।ছোট বেলায় যখন স্কুলে যেতাম তখন আমার বাব ও দাদু বলতেন আকরাম উদ্দিন ডেপুটির মত হবে।এ ভদ্রলোকের কথা বলার কারন ছিল, তিনি ছিলেন ঈষ্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের একজন অফিসার যাকে ঈপিসিএস পাস করার পর উপজেলায় ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরানো হয়েছিল।তিনি এতই সাদামাটা জীবন যাপন করতেন যে,যখন এলাকায় আসতেন তখন দেখতেন তার ভাইরা পা গুটিয়ে বাড়িতে বসে আছে।তিনি হালের বলদ ও জোয়াল নিয়ে মাঠে চলে যেতেন।এ দেখে এলাকায় কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হতো কৃষি কাজে।কোন জড়তা ছিলা জীবনে।আজ কি সারা দেশে এ রকম একজন অফিসার দেখা যায়? একটু বড় হয়ে জানতে পারলাম তিনি ছিলেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের একজন রিলিপ কমিশনার।যাই হোক আমাদের বন্ধুদের একটি মেধাবি দল ছিল যারা সব সময় প্রতিযোগিতা করতাম ইংলিশ শিখার জন্য।আমাদের অনেকে উনাকে অনুসরন করে এখন বড় বড় অফিসার হয়ে দেশ বিদেশে নেতৃত্ব দিচ্ছে ।আমার মনে আছে অন্তত দশটি শব্দ ভোকাবুলারি করেছিলাম প্রতিদিন।এটা উচ্চ শিক্ষায় খুব সাহায্য করেছিলো।আর সাহিত্য বিষয়েও ছিল আমাদের এক ধরনের পড়ার অনুরাগ।সে জন্য আমাদের অনেকে ভিন্ন বিষয়ে পড়ালেখা করলেও লেখার ধারাটা চালু রাখতে সমর্থ হয়েছি। আসলে এ পৃথিবীতে আমাদের কাজ একে অন্যকে সাহায্য করা যার যতটুকু সামর্থ আছে।

আজ আমি আমার কিছু অভিজ্গতা বিনিময় করবো যাতে করে আপনার মেধা কাজে লাগাতে পারেন।লেখক হতে হোলে আপনাকে পড়তে হবে।আপনার পড়ার গন্ডি পৃথিবী ছড়িয়ে যাবে।অনেকে পড়ার ব্যাপারে নিচতায় ভোগেন।ধরুন আপনি নিউজ পেপার পড়বেন,কার পেপার তা ভাবার দরকার নেই।নিউজ পেপারে সব টপিকগুলো যে ভাল তা নয়।এখানে ভাল-মন্দ,নৈতিক-অনৈতিক এ দু'ধরনের টপিক থাকে। আমি একজন মুসলমান। আমাকে আল্লহপাক দু'টো সেন্স দিয়েছেন। একটা ভাল আর একটা মন্দ।সূরা আশ্ শামস্ এর ৯ ও ১০ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' সে-ই সফলতা অর্জন করবে যে তাকে শোধিত করবে,আর সে-ই ব্যার্থ হবে যে একে পংগু করবে।' আমি পছন্দ করবো ভালটা।তাহলে সব সমস্স্যার সমাধান হয়ে গেল।বাজারে আনেক জিনিসের সমারোহ থাকবে সেটা নির্ভর করবে আপনার রুচি ও পছন্দের উপর।আপনি ইসলামের উপর লিখলে আপনাকে কোরআন ও হাদিসে গভীর জ্গান রাখতে হবে।রাসূল সা: বলেছেন , যে আমার নামে কোন কথা চালিয়ে দেয় বা প্রচার করে তার যায়গা সে জাহান্নামে স্হান করে নিল।তবে সহজ পদ্ধতি হলো আমি ছহি যতটুকু জানি তাই বলবো আর যা জানি না তা বলবো না।আপনার লিখায় যদি আল্লাহ ও তার রাসূলে সা: এর কথাই না থাকে সে তো অর্থহীন লেখা।এ লেখা আপনাকে দুনিয়ায় সমৃদ্ধ করবে।দেখুন, যে সমস্ত কবি সাহিত্যিক আমাদের সমাজে আছে তাদের অনেকে লেখার কারনে আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।কেউ বিধর্মী হলে আমার কোন কথা নেই।কিন্তু যদি কেউ নিজেকে বলে আমি মুসলিম লেখক,তাদের ব্যাপারে নিশ্চ-ই আমার কিছু কথা থাকতে পারে।মুসলিম হলে তাকে ইসলামের উপর আনুগত্য রেখেই লিখতে হবে কারন তার জন্য আখেরাতের জবাবদীহিতা আছে।যে লেখার মাধ্যমে চরিত্রের ভ্রষ্ঠতা আছে,যে লেখায় যুবক যুবতীদের আশ্লিলতার দিকে ধাবিত করে সে লেখা লেখক কে দুনিয়ায় আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি করে আর আখেরাতে তাকে ধাবিত করবে লেলিহান আগুনের দিকে।আর যারা এই বইগুলোর পাঠক তারা ক্ষতি করছে তাদের অর্থ ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।রোজ ক্কেয়ামতে অনুসারিরা নেতাদের ব্যাপারে আল্লহর কাছে ফরিয়াদ করবে যা সূরা আহযাবের ৬৭ ও ৬৮ আয়াতে বর্নিত হয়েছে এভাবে,' আমাদের প্রভু! আমরা তো আমাদের নেতাদের আজ্গাপালন করেছিলাম সুতরাং তারা আমাদের পথ থেকে বিপথে নিয়েছিল।আমাদের প্রভু! দ্বিগুন পরিমান শাস্তি তাদের দাও, আর ধিক্কার দাও বিরাট ধিক্কারে।' সে জন্য আমাদের সবার কোরআন হাদিস অধ্যয়ন করা ও মানবজাতিকে এর পথে আসার জন্য যার যার ক্ষমতা অনুসারে প্রচেষ্টা করা জরুরি।এ কাজ করতে গিয়ে আপনাকে হেকমতের সাথে করতে হবে।আল্লাহ এ কাজের ব্যাপারে নবী সা: কে জোর যবরদস্তি করতে বলেন নি। আপনার আর আমার কাজ পৌঁছে দেয়া মাত্র বাকিটা আল্লাহ দেখে নিবেন। নিম্নের বিষয়গুলো আমার শিখার নিজস্ব পদ্ধতি। আপনি আপনার পরিস্হিতির আলোকে ঠিক করে নিবেন:

১: আন্তরে বিশুদ্ধ নিয়ত স্হাপন করুন।

২: স্হির করুন কোন ভাষা আপনার জন্য সহজ সে ভাষা রপ্ত করুন।আমি আমার লিখা বাংলা ও ইংলিশে লিখি কারন আমার নিয়াত হলো পৃথিবী ব্যাপী মানুষ যেন জানতে পারে।

৩: বিশুদ্ধ কোরআন শিখে নিন।সম্ভব হলে গুরুত্ব পুর্ন আয়াতগুলো মুখস্ত করুন।

৪:কোরআন শিখা হলে পুরো কোরআন আপনার ভাষায় অন্তত ৫ বার অর্থসহ অধ্যয়ন করুন।পড়ার সময় বিষয়িকভাবে আয়াতগুলো নোট করুন।যেমন: আল্লাহর ক্ষমতা, ন্যায় বিচার,মৃত্যু, জাহান্নাম , জান্নাত, ব্যাক্তি ও পারিবারিক,সামাজিক, আমানত এ রকম আরো অনেক।এতে আপনি যখন লিখতে যাবেন আল্লাহ আপনাকে সহজ করে দিবেন।ধীরে ধীরে তাপছির পড়া শুরু করুন।

৬: হাদিস বোখারি দিয়ে শুরু করুন। ইসলামের ৫ টি ভিত্তি প্রথমে শেষ করুন।পরে বাকি ছাপটার গুলো অধ্যয়ন করুন।

৭: পৃথিবীর খ্যাতি সম্পন্ন মুসলিম লেখক এমনকি অমুসলিম ভালো লেখক যারা মানবতার জন্য লিখেছেন তাদের কাব্য সাহিত্য পড়ুন। এতে আপনার জ্গানের গভীরতা বাড়বে।কারন নৈতিকতা বৃদ্ধি পায় গভীর জ্গানে।

৮: সব সময় আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন। ফরজ ও ওয়াজিব কাজগুলোর সাথে নফল কাজ করুন।

মুসলমানদের অধপতনের কারন হোল সুশিক্ষা গ্রহন না করে কুশিক্ষা গ্রহন করছে।মুসলিম ছেলে মেয়েরা এখন পাশ্চাত্য শিক্ষার দিকে শুধু ঝুঁকছে না অনেকে তাদের ইসালামি আক্কিদাও হারিয়ে ফেলছে।আলকুরআন ও হাদিসের কাছে না গিয়ে মানব রচিত মতবাদের উপর বই পড়ছে যা থেকে তাদের ইসলামি ঐতহ্য থেকে পৃথক করে ফেলছে।যারা আমরা ইসলামের কথা বলি ও যারা সামর্থবান তাদের উচিত পাড়ায় পাড়ায় ছোট আকারে হলেও ইসলামি ফাউন্ডেশন তৈরি করা যা থেকে প্রচারিত হবে মক্কা-মদিনা তথা রাসূল সা: এর খাঁটি দ্বীনের নির্দেশনা।যা অবলম্বন করলে সমাজ থেকে শির্ক ও বিদা'আত বিদূরিত হবে যা আজ ছড়িয়ে আছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ও দৈনন্দিন ইবাদাতে।আল্লাহ পাক আমাদের মুসলমান তথা মানবজাতিকে সঠিক হেদায়েত দান করুন আর আমাদের কথা বলা ও লেখার শক্তি বৃদ্ধি করে দিন।

বিষয়: বিবিধ

১২৫২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

166316
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১২
আহমদ মুসা লিখেছেন : খুব সুন্দর পরামর্শ। যারা ইসলাম ও মানবতার পক্ষে লেখালেখি করতে চান তাদের জন্য আপনার এই পরামর্শগুলো অনুসরণযোগ্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File