বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটকে অনুশোচনা ও নব উদ্যমের মাধ্যমে জাতির কাছাকাছি যেতে হবে এবং এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১০ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৬:৩৫:০৪ সন্ধ্যা
প্রতিটি মুসলিম ঈমানের লালন করেই মুসলিম হয়।ঈমানের ছয়টি অংগ রয়েছে তার মধ্যে শেষটি হলো তাকদিরের (কপালের ভাল মন্দ) উপর বিশ্বাস।আর তার সাথে যে কোন বিপদে ধৈর্য ধারন।মানুষের ভুল হতে পারে এবং ভুল হওয়া স্বাভাবিক।কিন্তু বড় ভুলগুলো মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।ক্ষমতা যখন মানুষের কাছে আসে তখন এর ভারসাম্য বজায় রাখা খুব কঠিন এবং কম মানুষই এর প্রমান দিয়েছে।আমাদের স্বাধীনতার পর আমরা বড় দু'দলকে সেভাবেই দেখেছি।তারা যে জনগনের কাছে যেতে পেরেছে সেটা নয়।জনগন কখনো তাদের বিকল্প খুঁজে পায় নি তাই ভোট দিতে হয়েছে।দু'দলের এমপি মন্ত্রীরাই দুর্নীতি করেছে কম বা বেশী, তবে কেউ পরবর্তিতে শিক্ষা নেয় নি।এবার বিএনপির নিশ্চই একটা সুযোগ হয়েছে, যদি ১৮ দলকে নিয়ে তাদের অতীতের পর্যালোচনা করতে পারে তাহলে অল্প সময়ে তারা এগুতে পারবে।৫ই জানুয়ারির নির্বাচন দেশের ও বিদেশের কেউ মেনে নিতে পারেনি যা ছিল একতরফা নির্বাচন।সরকার নির্বাচন করেছে ও সরকার গঠন করবে এটাই স্বাভাবিক।এটা নিয়ে বিরোধীদলকে মাথা ঘামানো ঠিক নয়।আর বিএনপি যেহেতু এখন বিরোধীদলে নেই সেজন্য তাদের এখন বিচক্ষনতার পরিচয় দিতে হবে।রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের যায়গায় থাকবে।শুধু পরিবর্তন হবে দল আর মানুষগুলো।ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই তার অন্তিম শয়নে বলেছিলেন,'আমি চলে যাচ্ছি কিন্তু রাষ্ট্র সর্বদাই টিকে থাকবে।' শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল কিন্তু তিনি তো বেঁচে থাকেন নি , দেশ চলছে বা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান চলে গেলেন দেশতো চলছে।এভাবে সব শাসক চলে যাবে দেশ থাকবে তার অবস্হানে।তাহলে শাসকদের করনীয় কি? দেশকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়াই হলো তাদের কাজ।এ কাজ করতে গিয়ে যারা জনগনকে ফাঁকি দিবে তারা যে কোন সময় আস্তাকুঁড়ে নিমজ্জিত হবে নি:সন্দেহে।আর পরকালে বিশ্বাসী হলে তো আগুনের অবস্হান যা এই অবৈধ পথ অবলম্বনকারিরা বুঝছে না। আমি একজন খাঁটি মুসলিম ধর্মের অনুসারি হিসেবে ধর্মকে যেমন বিশ্বাস করি তেমনি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করি এবং চেষ্টা করি মানুষকে সেভাবে বুঝানোর।সূরা আলইমরানের ২৬ আয়াতে আল্লাহ বলেন, 'বলো হে আল্লাহ! সাম্রাজ্যের মালিক! তুমি যাকে ইচ্ছা কর তাকে সাম্রাজ্য প্রদান কর, আবার যার কাছ থেকে ইচ্ছা কর রাজত্ব চিনিয়ে নাও,যাকে খুশি সম্মানিত কর আবার যাকে খুশি অপমানিত কর, তোমার হাতেই রয়েছে কল্যান।নি:সন্দেহে তুমি সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।' অতীতে আমাদের রাজনীতিবিদদের ব্যাক্তিগত চরিত্র ও নীতি নৈতিকতা নিয়ে সংবাদপত্র মাধ্যমগুলোতে ফলাও ভাবে প্রচারিত হয়েছে, এবারও প্রচারিত হলো।কোন সরকার প্রধানই এই কপোটদের খতিয়ান নিয়ে সংসদে আলোচনা করে নি।এর কারন হিসেবে বলা যায় ঐ সমস্ত এমপি মন্ত্রীরাই দলকে বাঁচিয়ে রেখেছে,দলের প্রয়োজনে টাকা দিয়ে শক্তি দিয়ে।যদি এ নীতিই অবলম্বন করে তাহলে কোন সরকারের পক্ষে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।
দেশের রাজনৈতিক জীবনে যে হানাহানি হচ্ছে এর মুল কারন আমরা আমাদের স্বাধীনতার অর্থ এখনো বুঝতে পারিনি।আমাদের যে রাজনৈতিক ও মানবিক প্রজ্গা থাকা দরকার ছিল তার প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে পারিনি।সরকার ও বিরোধীদলের দেশ গড়ার কাজে যে প্রজ্গা থাকার দরকার তা থাকছে না তার কারন হলো তারা দেশের চেয়ে ব্যাক্তিগত ও দলগত সুযোগ সুবিধাকে প্রাধান্য দেয়ার কারনে।যদি তারা সত্য-ই দেশকে ভালবাসতো তাহলে সমঝোতা হতে পারতো,একে অন্যকে শ্রদ্ধার সাথে আমন্ত্রন জানাতে পারতো।প্রত্যেক ফরেন পলিসিতে লিখা আছে,' প্রত্যেকের সাথে বন্ধুত্ব , কারো সাথে বৈরিতা নয়।' এই একটি লাইনের অর্থ রাজনীতিবিদরা বুঝেন কিনা আমার সন্দেহ আছে।শুধু বক্তৃতা দিলেই তো হবে না কাঁছের ঘরে বসে।মানুষ যে এই কপোটদের ঘৃনা করে তা প্রতিদিন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে তা কি তারা দেখেন? আসলে এরা এক ধরনের প্রতিবন্ধি যারা দেখেনা ও শুনে না।যদি সরকার ও সরকারের লোকজন সৎ হয় তাহলে তাদের ভয় কেন? তারা তো সিকিউরিটি ছাড়াই মানুষের কাছে যেতে পারে।আসলে কথা হলো মানুষ যখন অন্যায় করে তখন চিত্তে শক্তি থাকে না।আর সে জন্যই তার দলবল প্রয়োজন যে কোন যায়গায় বের হওয়ার জন্য।আমারতো মনে হয় তারাও একরকম জেলের মধ্যে অবস্হান করে যারা প্রকৃতির বাতাসটুকি নিতে পারে না।এদিক থেকে একজন গ্রাম্য কৃষক অনেক সুখী যে ঘরের দরজা খুলে ঘুমায়।
সরকারি দল শাসকের ভূমিকায় আছে সেটা নিয়ে সাধারন মানুষ, দেশের বিজ্গ ব্যাক্তিবর্গ ও আন্তর্জাতিক অংগন আলোচনা করছে।বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোট, বিরোধীদল হিসেবে কি ভূমিকা রেখেছে তা তাদের ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।বিরোধিদলকে জনগন ভোট দিয়ে সংসদে প্রেরন করেছে তাদের কল্যানের জন্য।সরকারি দল যতই তাদের কোনঠাসা করুক না তাদের উচিত ছিল না সংসদ বর্জন করা।আমাদের দেশে যারাই বিরোধী দলে যায় তারাই এই কাজটি করেন অথচ তাদের কাজ হলো দেশ নিয়ে ভাবা ও সব সমস্যার সমাধান সেখানে করা।তা না করে তারা রাজপথে চলে আসে।শুধু রাজপথে আসা নয় তার সাথে মানুষের জান মাল রক্ষা পায় না।ধ্বংসাত্তক কাজ যে শুধু বিরোধীদল করে তা নয়।এর সাথে যোগ হয় সরকারি দলের কিছু কপোট,তাদের কাজ হলো সহিংস ঘটনার জন্ম দিয়ে বিরোধীদলের উপর কালিমা লেপন করা।এই সুযোগ করে দেয় বিরোধীদল। তানাহলে কোন অগঠন ঘঠলে জনগন সরকারকে পুরপুরি দায়ি করতে পারতো।আর সরকারও এ সুযোগে বিরোধীদলকে অভিযোগ করার সুযোগ পায়।আর সরকারি দল বিরোধীদলের নেতাকর্মিদের উপর যে জেল জুলুম করে তা কোন গনতান্ত্রিক নিয়ম নয়।এ কারনে দেখা যায় সরকার পরিবর্তন হলে সেই একই রেওয়াজ চলতে থাকে।যেখানে ক্ষমতার লড়াই থাকে সেখানে গনতন্ত্রের মৃত্যু হওয়াই স্বাভাবিক।দেশের কল্যান এই অবস্হায় সম্ভব নয়।
যারা রাজনীতি করতে আসেন তারা যদি দেশের কাজের জন্যই আসেন তাহলে হানা হানি ও হিংসা বিদ্বেষ হবে কেন? আমরা স্বাধীনতার কথা বললেও দেশের কোন প্রতিষ্ঠান ও সরাকরি কর্মকমিশন এখনো স্বাধীন হয় নি।প্রত্যেকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্নধাররা সরকারের লেজুড় হয়ে কাজ করেন ও অনৈতিকতার মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেন যার কোন জবাবদীহিতা নেই।কি করে একজন অফিসার ২০ বছরের মাথায় 'শ''শ' কোটি টাকার মালিক হয়ে যান যার বাপ দাদার তেমন কোন সম্পদ ইতিপূর্বে ছিল না।এ অনৈতিক কাজ সমাজের উপর থেকে নিচে এখন ক্রনিক ডিজিজের মত পৌঁছে গেছে যা উপড়ানো কঠিন।এর জন্য দায়ি আমাদের অপরাজনীতি।সেজন্য বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের সামনে এখন সুন্দর একটা সময় এসেছে ঢেলে সাজানোর।সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে লো লেভেল থেকে উপর পর্যন্ত কর্মি ও নেতাদের তৈরি করা।আমাদের দেশে যারা রাজনীতিতে আসে তাদের সিংহভাগ ভাল শিক্ষিত নয় যারা সংসদকে দিক নির্দেশনা দিতে পারে।যদি স্তরে স্তরে রাজনৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের গড়ে তোলা যেত তাহলে তারা দেশকে এগিয়ে নেয়ার মত কাজ করতে পারতো।আমাদের দেশে যাদের নোমিনেশন দেয়া হয় তারা হলো টাকার মালিক অথবা পারিবারিক পরিচয়ে পরিচিত।সেজন্য বিএনপির উচিত দলকে কুঁড়ি থেকে সংগঠিত করা।আমরা গত ৫ বছর যা দেখেছি সেখানে নেতৃত্বের কোন সঠিক কাঠামো ছিল না।আন্দোলনে সামনে থাকবে মুল নেতৃত্ব।তা আমরা কোন দলেই দেখি না।আন্দোলনের ডাক দিয়ে মুল নেতৃত্ব যখন আড়ালে চলে যায় সেটা হলো ফ্রড নেতৃত্ব।আর গনতন্ত্রে বিরোধীদলের মিছিল মিটিং হবে এবং তার জন্য প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে।বিরোধীদলের কর্মিরা যেমন ধ্বংসাত্বক কোন কাজ করবে না তেমনি সরকারি দলও তাদের কোন রকম ক্ষতি করার জন্য এগিয়ে আসবে না।এর জন্য দলগতভাবে লোয়ার লেভেল থেকে প্রশিক্ষনের ব্যবস্হা থাকতে হবে।নেতা যদি প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তৈরি হয় তাহলে তারা সঠিক নেতৃত্ব দিতে সমর্থ হবে।দুর্ভাগ্য আমাদের, এ দেশের রাজনৈতিক কর্মিরা পড়াশুনা করে না এমনকি যারা বিশ্ববিদ্যালয় লেভেল এ আছে তারা নিজেদের পাঠ্যাভাস থেকে বন্চিত রেখে কোন ভাবে শিক্ষকদের সহায়তায় পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে বেরিয়ে আসে।এই ছাত্র নেতাদের দেখেছি ছাত্র অবস্হায় অনৈতিকতায় জড়িয়ে পড়তে।আর এরাই একসময় সেন্ট্রাল লিডিংএ চলে আসে।তাহলে বুঝতেই পারছেন, যাদের জীবন তৈরি হয়েছে অনৈতিকতায় তারা বড় একটা দায়িত্বে আসলে সৎ উপায় অবলম্ভন করে তা কি করে সম্ভব? নৈতিকতা যদি গড়ে তোলা না যায় দলের রুট লেভেল থেকে তাহলে জাতি যতই চিৎকার করুক অথবা দলের মুল নেতৃত্বের দু'চারজন যতই ডাক দেক কোন কাজে আসবে না।আমাদের রাজনীতিবিদদের দেশের কল্যানে একটা কাট ওফ ডেট দিয়ে দলকে ঢেলে না সাজনো পর্যন্ত দেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না।সমস্ত দলকে একই নীতি মেনে চলে এ কাজ করতে হবে।একটি দলের সাথে অন্য দলের ভ্রাতৃত্ববোধের ও দেশপ্রেমের বন্ধন যদি তৈরি না হয় হানাহানি কখনো বন্ধ হবে না।
আমাদের সংবিধান এখন এক বিতর্কিত সংবিধানে পরিনত হয়েছে।সংবিধানের কোন পরিবর্তন ও পরিবর্ধনে জাতির মালিক যে জনগন তার তোয়াক্কা করা হচ্ছেনা।যখন যে ক্ষমতায় আসে তার সুবিদার্থে সে এর পরিবর্তন করে।এর ফলে তৈরি হয় সমস্যা ও সন্কট।আমাদের রাজনীতির সন্কটের জন্য সংবিধানের এই কাঁটাছিঁড়া বহুলাংশে দায়ী।রাজনীতির এই বিপাকে পড়া শেখ হাসিনা বা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য হয়নি। এ হয়েছে মূলত সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারনে। এ ধারার ফলে দলে স্বৈরাচারী নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই অনুচ্ছেদের জন্য দুই দশক ধরে আমাদের দেশে চলছে “গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার।" সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছে এক জায়গায়। এই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে না। এর পরিবর্তন করার জন্য কেউ এগিয়ে আসছে না।যখন এর পরিবর্তন করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে তখনি প্রশ্ন আসে অনেক রক্তের।তাই এখান থেকে আমাদের বেরোতে হবে। যে কোন ঝড় একটা সাময়িক ব্যাপার। যখন ঝড় ওঠে, মনে হয় কোনো দিন এ বুঝি থামবে না। কিন্তু দেখা যায়, একসময় থেমে গেছে। তার পরে আসে এক দীর্ঘ সুন্দর দিন।সূরা আল ইনশিরাহের ৫/৬ আয়াতে বলা হয়েছে,"অতএব কষ্টের সংগেই তো আরাম রয়েছে, নিশ্চই কষ্টের সংগে আরাম রয়েছে।" আমাদের এখানেও তা আসবে। এসব দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ভেতর দিয়েই সমাধানে আসতে হবে, যেমন এসেছে অগ্রসর জাতিগুলোতে। আমাদের বিশ্বাস থাকতে হবে, সারা জাতির উৎকণ্ঠা ও শুভবুদ্ধি এ থেকে বেরোনোর পথ বের করে নেবেই, তবে জাতির ভাল মানুষগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
আমরা যদি সাধারন দৃষ্টি দেই পৃথিবীর অধিকাংশ উন্নত দেশেই গনতন্ত্র আছে এবং তারা দেশের স্বার্থে গনতন্ত্রের চর্চা করছে।সব দেশেই গণতন্ত্র দুই ভাগে বিভক্ত—প্রগতিশীল ও তুলনামূলকভাবে কম প্রগতিশীল। এই দ্বন্দ্ব আদর্শিক ও সর্বকালীন। সব কালের সব দেশের মধ্যে এ ছিল, আছে। প্রাচীন গ্রিসে গণতন্ত্রী-অভিজাততন্ত্রী, রোমে প্লেবিয়ান-প্যাট্রিসিয়ান, এ যুগের আমেরিকায় ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান, যুক্তরাষ্ট্রে কনজারভেটিভ-রিপাবলিকান এবং ভারতে কংগ্রেস-বিজেপি তো এই দ্বন্দ্বেরই রাজনৈতিক রূপ। সহিংসতা সব দেশেই আছে। কিন্তু আমাদের মতো সহিংসতা ও সংঘাত আশাপাশের গণতন্ত্রগুলোতে এভাবে নেই। কারণ, ওসব দেশের গণতন্ত্রে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের ক্ষমতা গণতন্ত্রের পরিধির মধ্যে সীমিত। অন্যদিকে, আমাদের নেতৃত্বের ক্ষমতা গণতন্ত্রের ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে আছে। আমাদের দলপ্রধানেরা অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী। এভাবে গণতন্ত্র একনায়কতন্ত্রী হয়ে ওঠার ফলেই আমাদের রাজনীতি এমন সংঘাতপূর্ণ ও সহিংস হয়ে উঠেছে। সামরিক অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে আসতে হয় বলে স্বৈরতন্ত্রী দেশগুলোতে স্বৈরতন্ত্র থাকে একটি। কিন্তু আমাদের “গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রীদের” ক্ষমতায় আসতে হয় জনগণের ভোটে। এই জনগণ আবার এক দলকে দুবার ক্ষমতায় আনে না। তাই স্বৈরতন্ত্র এ দেশে হয়ে পড়েছে দুটি। চিরকাল স্বৈরতন্ত্রের মূল প্রবণতা দেশে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এরাও তা-ই করছে—দুই বৈরী পতাকার নিচে দেশের জনসাধারণকে সংঘবদ্ধ করে পরস্পরকে ধ্বংসের মাধ্যমে একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। এ কারণে গণতন্ত্র হয়ে উঠছে আরও সংঘাতময়।’
আমাদের দেশে এখনো খুঁজে পাবেন লক্ষ লক্ষ মানুষ যারা নিজেদের ব্যাস্ত রাখছে তাদের কাজে।তারা এ সমস্ত দিকে জাড়াচ্ছেন না।ঘৃনা করছেন তাদের অনৈতিক কাজকে।আবার কথা ও লিখার মাধ্যমে তুলে ধরছেন জাতির জন্য।বাইরে কি হলো সেগুলো নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজের কর্তব্য করে যাচ্ছেন।এরাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক। আমরা যদি ক্রমাগত আশান্বিত বা বিমর্ষ হতে থাকি, তবে তো কাজ করতে পারব না। তাই বাইরের পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে গেলেও আমাদের কাজ করে উচিত। যা-ই ঘটুক আমাদের কাজের মধ্যে যদি আমরা পরিপূর্ণভাবে নিমগ্ন থাকি আর ওদের অবজ্গা করি তাহলে একসময় একটা ভাল ফল আসবে নিশ্চ-ই। প্লেটোর রিপাবলিক-এর একটি কথা আমাদের স্মরন রাখা দরকার। সক্রেটিসকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, দেশপ্রেম কী? জবাবে সক্রেটিস বলেছিলেন, নিজের কাজ সর্বোত্তমভাবে করে যাওয়াই সর্বোচ্চ দেশপ্রেম।আমাদের সবাইকে আগে নিজের কাজটা সুন্দরভাবে করতে হবে।' আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আশা করবো সমস্ত রাজনৈতিক দল দেশের স্বার্থে সমস্ত বৈরিতা ত্যাগ করে, অন্যায় অবিচার বন্ধ করে দেশ শাসনে এগিয়ে আসুন।শুধু শাসকদের উপর নির্ভর করে নয় , আমাদের উচিত স্ব স্ব অবস্হান থেকে সৎ ও নিষ্ঠাবান হয়ে দেশকে সহযোগিতা করা।আসুন আমরা নিজেদের প্রশ্ন করি কতটুকু দেশপ্রেমিক আমরা হতে পেরেছি নিজ নিজ অবস্হানে।শুধু সমালোচনা করলে কল্যান বয়ে আনবেনা,গঠনমুলক সমালোচনা ও নিজের আপাদমস্তক নীরিক্ষন করে সমালোচনা করলে অন্যের প্রতি সুবিচার করতে সহায়ক হবে বলে আমার ধারনা।আর বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের প্রতি আহব্বান রইলো ধীরে ধীরে নিজেদের সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতৃত্ব তৈরি করে , ধ্বংসাত্বক কাজ পরিহার করে,জনগনকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।আল্লাহর পরে দেশের মালিক জনগন এবং তারাই ভোট দিয়ে সাংসদদের সংসদে নিয়ে যায়।এ কারনে সাংসদদের সংযত করে চলা ও দেশের কল্যানের জন্য করা উচিত।আর যদি সাংসদরা তা করতে সমর্থ না হন তাহলে দেশের মালিকদের উচিত একতাবদ্ধ হয়ে তাদের বিচারের দোর গোড়ায় নিয়ে যাওয়া।এ কারনে আমি মনে করি বিএনপি একটি বৃহৎ গনতান্ত্রিক দল হিসেবে তার হোম ওয়ার্ক করে এগোবে এবং এটাই তাদের জন্য শ্রেষ্ঠ সময়।দেশ থাকবে , দল থাকবে, আমরা কেউ থাকবো না - এ নীতি যদি ধারন করে, রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাহলে অপরাজনীতি অচিরেই বিদায় হওয়া সম্ভব।
বিষয়: বিবিধ
১২১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন