বিভক্ত ইসলাম ও মুসলিম দেশের রাজনীতি।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:৪৭:০৪ দুপুর
বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে একটি ক্ষুদ্র মুসলিম অধ্যুষিত স্বাধীন দেশ।একটা সুখী - সমৃদ্ধিশালী , দুর্নীতি মুক্ত সমাজ ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই ছিল এ দেশ স্বাধীন করার মুল মন্ত্র।এ দেশের জনগোষ্ঠী অসংখ্য দলে বিভক্ত।ইসলামের নামে বিভিন্ন দল আবার সেকুলার ও জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের অনুকরনে বিভিন্ন দল কিন্তু তারা সবাই মুসলমান সামান্য মাইনরিটি ছাড়া।মুসলিম ও ইসলাম দু'টি শব্দ অন্গান্গিভাবে জড়িত।প্রত্যেক মুসলিম ইসলামের আনুগত্য করে।আর আনুগত্যের মুল দু'টি সনদ হলো আলকুরআন এবং ছহি সূন্নাহ।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গনতন্ত্র এসেছে অমুসলিম দেশগুলো থেকে কারন মুসলিম শাসকরা তাদের মুসলিম ঐতিহ্য থেকে দূরে সরে গিয়ে বিজাতীয় কৃষ্টি কালচার অনুসরনের ফলে।আবার ইসলামের মূল ইতিহাস তথা রাসূল সা: এর ২৩ বছরের ইসলামি জীবন ,সাহাবাদের সময়কাল,তাবেঈদের সময়কাল ও তাবে তাবেঈদের সময় কাল ছিল রাসূল সা: কে অনুসরন করে।তারা রাসূল সা: এর আদলে ইসলাম প্রচার করেছিলেন।সেখানে ইসলামের এ রকম বিভক্ত দল তৈরি হয় নি যারা সমকালীন রাষ্ট্র ব্যবস্হায় ভাগাভাগি করেছিল।গনতান্ত্রিক ব্যবস্হায় সংবিধান হলো মানুষের তৈরি।আর ইসলামি জীবন বিধান হলো আলকুরআন।সুতরাং সংগত কারনে গনতন্ত্রের আওতায় গেলে যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তারা আলকুরআনের কোন আইনই সেখানে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেনা।বরং সংঘর্ষ বাধতে বাধ্য হবে।আর আলকুরআনে সূরা মাইদার ৪৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন," আর যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা বিচার করে না , তারা অবিশ্বাসী।" একজন মুসলিমের আন্তরিক কাজ হলো আল্লাহর বিধানকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংগ্রাম করা।কিন্তু সে সংগ্রামটা হতে হবে বিচক্ষনতার সাথে।রাসূল সা: ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন কাফের ও মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করে।আর এখন আমরা যুদ্ধ করছি মুসলিম মুসলিমের সাথে।রাসূল সা: এর মক্কা জীবন পর্যালোচনা করলে তার রাজনৈতিক প্রজ্গা দেখতে পাওয়া যায়।মক্কার ১৩টি বছর তিনি মানুষ তৈরি করেছিলেন অত্যাচার ও লান্চনার সাথে।৩৬০ টি প্রতিমা সামনে রেখে নামাজ আদায় করেছিলেন।যখন অত্যাচার চরম আকার ধারন করেছিল তখন আবিসিনিয়ায় নব ঈমানদারদের একটি দলকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।তিনি কি সংখ্যা লগিষ্ঠ হয়ে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন? তিনি তো পৃথিবীতে যুদ্ধ করতে আসেন নি।তাঁর জীবদ্দশায় যতগুলো যুদ্ধ হয়েছিল তিনি প্রতিহত করেছিলেন,নিজে যুদ্ধে জড়াতে যান নি।মদিনায় এসে যখন ইসলামের সে মানুষগুলো তৈরি হলো তখন মক্কা বিজিত হয়েছিল।আজকে যারা আমরা ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চাই সে প্রজ্গাসম্পন্ন মুসলিম কোথায়? রাসূল সা: এর যে ষ্ট্রেটিজি ছিল তা কি আছে আমাদের মধ্যে? গনতন্ত্র ও ইসলাম দুটো বিপরীত মুখী।গনতন্ত্রে বিরোধী দল থাকবে কিন্তু ইসলামে বিরোধী দল থাকবেনা।কারন হলো সরকারি দল বা যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেদল যত ভালই করুক বিরোধীদলের কাজ হলো তাদের খুঁত বের করা।আর প্রত্যেক দলের মুল উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতা দখল করা।এই ক্ষমতাকে কেন্দ্র করেই সমস্ত সমস্যার উদ্ভব হয়।
ইসলাম সারা পৃথিবীতে একটি উম্মাহ।একটি দেশে যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম হয় তাহলে সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম বলে আমরা জানি।এখানে প্রশ্ন হলো - আমাদের মত দেশে মুসলিমদের মধ্যে ইসলামি দল ও অন্যান্য গনতান্ত্রিক দল রয়েছে এবং প্রত্যেকে নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করছে।যে কারনে আমরা দেখি যখন কারো মৃত্যু হয়ে যায় তাকে মুসলিম আইন অনুসারে বা রীতি নীতি মেনেই দাফন কাফন করে কবরস্হ করা হয়।তাহলে মৌলিকভাবে সেখানে কোন দ্বন্দ নেই।যারা ইসলামকে বুঝে না তাদের আমি দোষী করব কম কারন তাদের কাছে আমরা যারা ইসলাম বুঝি তাদের ইসলামকে পৌঁছাতে হবে।আমরা যারা খাঁটি মুসলিম তারা যদি আখেরাতে বিশ্বাসি হই তাহলে ইসলাম প্রচার করা আমাদের দায়িত্ব।ইসলামের মধ্যে এতগুলো দল কেন সৃষ্টি হলো? ইসলামের পথ তো একটি যা রোজ ক্কেয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে এবং অনুসারিরা তার কাজ করে যাবে রাসূল সা: এর আদর্শ মোতাবেক।ইসলামে কি জোর জবরদস্তি আছে? ইসলাম তো রাসূল সা: প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন।আমাদের কাজ মানুষের কাছে পৌঁছানো।ইসলাম প্রিয় মানুষগুলো যদি ইসলামকে ভাল বাসেন,মানুষকে ভালবাসেন তাহলেতো আমার আর আপনার কাজ মানুষের মধ্যে দ্বীনের সম্প্রসারন করা।যারা আজ ইসলামের নামে দল করছেন,গনতন্ত্রের পিছনে হাটছেন , তারা কি ভেবে দেখেছেন কি পরিমান জান ও মালের ক্ষয় ক্ষতি হচ্ছে? এই যে প্রতিনিয়ত মানুষ হত্বা হচ্ছে তার দায় কি সরকারকে বা আমাকে আপনাকে দিতে হবে না? আমরা যারা ইসলাম বুঝি বা ইসলামের দলগুলো যদি একই ইসলামের পতাকাতলে চলে আসি আর দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করি,ইসলামি শারিয়ার রীতি নীতিগুলো মানুষকে শিখাই সেটা কি বড় জিহাদ নয়? যদি আমরা আখেরাতে বিশ্বাসি হই তাহলে গনতন্ত্রের অনুসারি মুসলিম ভাইরা যারা ক্ষমতায় আসে(ধরুন- আওয়ামিলীগ , বিএনপি বা অন্য কোন দল) তাহলে আমরা সহনশীলতার সাথে তাদের বুঝিয়ে আমাদের দাবি দাওয়া আদায় করতে পারি।আমি মনে করি সেখানে কোন সংঘর্ষ থাকবেনা।জাতি বেঁচে যাবে অনাচার থেকে কিছুটা হলেও।আমরা মুসলিমরা হেরে যাচ্ছি আমাদের এক ধরনের স্বার্থপরাতার জন্য।মুসলিমরা বিভক্ত হয়ে যার যার সুবিধা গ্রহনের হাতিয়ার সমাজে তৈরি করে দেশকে রক্তাক্ত করছে।আর গনতন্ত্রের সাথে থেকে ইসলামের কোন বিজয় নেই।ইসলাম বিজয় হয়েছে সমাজের সেই খাঁটি মানুষগুলো দিয়ে যারা ছিল আল্লাহর উপর নির্ভরশীল, নি:শ্ব ও ক্ষুধার্ত,ছিল মানব হিতৈষি, দিনে রোজাদার ও রাতে দন্ডায়মান ও রাসূল সা: এর একান্ত অনুসারি।সুতরাং বিভক্ত মুসলমান তথা দলগুলোকে এক উম্মাহতে ফিরে আসতে হবে তবেই মুসলিম একটি বৃহৎ শক্তিতে রুপান্তর হবে।ইসলামের মানুষ তৈরি হলেই ইসলামি হুকুমাত কায়েম হয়।আর ছেড়ে দিতে হবে সমকালিন শক্তিকে। তাদের ভাল কাজগুলো গ্রহন করতে হবে আর খারাপ কাজ গুলোর জন্য সবাই মিলে যতটুকু সম্ভব জাতির জন্য আদায় করতে হবে।কোন রক্তাক্তের পথ বেচে নেয়া কারো জন্যই সমিচীন নয়।
আমাদের দেশের সংবিধান তৈরি হয়েছে গনতন্ত্রের ছায়ায়।যদিও এই গনতন্ত্র সত্যিকারের গনতন্ত্র নয় অর্থাৎ এখানে গনতন্ত্রের চর্চা নেই।প্রকৃত গনতন্ত্র হলো মানুষের জন্য মানুষের সরকার।যারা সরকারে যাবে তারা মনুষের সমস্ত কল্যানের প্রতিফলন ঘটাবেন।যেখানে মানুষের কল্যান নেই বুঝতে হবে সেখানে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় নি।বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট যদি আমরা অবলোকন করি দেখতে পাই যে সরকার ক্ষমতায় আসে কেউ-ই ক্ষমতা ছাড়তে ছায় না।আমরা স্বৈরতন্ত্রের কথা যারা বার বার মুখে বলি তারাও গনতন্ত্রের কথা বলে সে পথাই হাঁটেন।বর্তমানে সরকার নির্বাচন নিয়ে যা করছেন তাতেও এই অবস্হা বিরাজ করছে। দেশের মানুষের কথার কোন মুল্য দেয়া হচ্ছে না বরং সারা দেশের মানুষ এখন এক যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হচ্ছে।গত রবিবার বেলা ২টার টেলিভিশন সংবাদে দেখলাম, এ পর্যন্ত ১৫৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে। নির্বাচন কমিশন সূত্রের বরাত দিয়ে ঐ প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের খবরে বলা হয়েছে, এই সংখ্যা অর্থাৎ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যারা নির্বাচিত হচ্ছেন তাদের সংখ্যা ১৫৪ ছাড়িয়ে যেতে পারে। কারণ অবরোধ ও হরতালের কারণে মফস্বল থেকে সম্পূর্ণ তথ্য নাকি এখন ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের হাতে এসে পৌঁছায়নি। ইতোমধ্যেই নির্বাচিত হওয়ার পথে ১৫৪ জন। জাতীয় সংসদের মোট সদস্যের অর্ধেকেরও বেশি। এই সংখ্যা দিয়ে সহজেই দেশের পরবর্তী সরকার গঠন করা যায়। তাই বিদগ্ধ জনেরা বলছেন যে, সরকার গঠনের মত আসন পাওয়া গেছে। আর নির্বাচন করে লাভ কি? আবার অন্যেরা বলছেন, পৃথিবীর সমস্ত গণতান্ত্রিক, সভ্য এবং উন্নত দেশের পার্লামেন্টে অর্ধেক বা অর্ধেকের বেশি সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়নি। জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, এই তথ্য অর্থাৎ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় সংসদের অর্ধেকেরও বেশি অংশ গঠনের সংবাদ, গিনেজ বুকে স্থান পেতে পারে। পৃথিবীতে নির্বাচনের নামে এত বড় তামাশা অতীতে আর কখনো হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে মার্কিন প্রস্তাবে হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এমন একটি নির্বাচন হবে সেটি কেউই আশা করেনি। এমনি কারো ধারণাতেও সেটি ছিল না।
আমার এটা বোধগম্য নয়, একটা স্বাধীন দেশের বর্তমান নির্বাচন, নির্বাচনকালীন সরকার প্রভৃতি নিয়ে ভারত ও আমেরিকা প্রতিনিয়ত যে দেন-দরবার করে চলেছে তার কেন প্রয়োজন পড়ছে? আমাদের দেশের সরকার ও বিরোধী দল কি সত্যিই দেউলিয়া হয়ে পড়েছে? তাদের দেশে যে নির্বাচন হয় আমাদের দেশ থেকে কাকে ডাকা হয় পরামর্শের জন্য?ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং কয়েকদিন আগে যখন ঢাকা সফরে এসেছিলেন তখন তিনি ভারতের ইচ্ছা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কাছে ব্যক্ত করেন। এরশাদ সেই কথা প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে জানিয়ে দেন। মনে হচ্ছে, সেটিই হয়েছে এরশাদের কাল। এরশাদ সুজাতা সিংকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, আওয়ামী লীগের পক্ষে ক্ষমতায় আর ফিরে আসা সম্ভব নয়। কারণ, জনগণের মধ্যে আওয়ামী লীগের আর সে রকম সমর্থন নেই। এমন কি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পুলিশ প্রোটেকশন ছাড়া নির্বাচনী এলাকাতেও যেতে পারবে না। এরশাদের এই ধরনের স্পষ্ট উচ্চারণের কারণেই সম্ভবত তাকে চিকিৎসার নাম করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আটক রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশে গণবিরোধী এবং সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টিতে বাইরের কোন শক্তি যদি আওয়ামী লীগ সরকারকে উস্কানি দেয় আর আওয়ামিলীগ যদি তা-ই করে তাহলে রাজনৈতিক ভাবে নিশ্চই হেরে যেতে বাধ্য হবে।যে করেই জামাত এসে থাকুক তারা সংবিধানের একটি অংশ। যদি রাজনৈতিক পরিসরে তাদের জায়গা করে না দেয়া হয় তাহলে তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেলে দেশে আরো ভয়াভহ সমস্যা দেখা দিবে বলে ইতিমধ্যে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।আর জামাতে ইসলামের কর্মিরা যদি ঐ রাস্তায় চলে যায়, মৌলবাদী তালিবানপন্থীদের সঙ্গে লড়াইয়ে আমেরিকার-ই লাভ হবে।সরকারি দলের প্রশাসনের সাথে জামায়াতের সংঘর্ষে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমশই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। আনন্দবাজারের রিপোর্ট মোতাবেক, গত শনিবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন জানান, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে কথা হয়েছে। বিদেশ সচিব মার্কিন নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিকে দেখা হয়েছে।’আনন্দবাজারে আরো বলা হয়, কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশ। সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কায় ভারতও। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের কথায়, ‘আমরা এ কথা বিশ্বাস করি যে, একটি গণতান্ত্রিক দেশের মানুষ হিসেবে বাংলাদেশী রাজনীতিকরা তাদের মতপার্থক্য কথার মাধ্যমেই মেটাবেন।’পত্রিকাটি আরো বলে যে, যে সুবিপুল পুঁজি ইসলামিক ব্যাংকের মাধ্যমে জামায়াতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠনের হাতে গিয়েছে, তার কুপ্রভাব সীমান্ত পেরিয়ে ভারতেও পড়তে পারে বলে নয়াদিল্লির আশঙ্কা। অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠনও এ সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছে বলে তারা মনে করে। আনন্দবাজার খবর দিচ্ছে যে, সম্ভাব্য শরণার্থীর প্রবেশ রোধের জন্য পাঁচ হাজার বাড়তি বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন হয়েছে।
আনন্দবাজারের এই রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রবলভাবে জড়িয়ে পড়েছে ভারত। শুধু জড়িয়ে পড়া নয়, আওয়ামী লীগের মাধ্যমে আমাদের দেশের রাজনীতিতে মারাত্মকভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। এমন অভিযোগও উঠেছে যে, ভারতের নির্দেশেই জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছে। এই অভিযোগ করেছেন এমন এক ব্যক্তি যিনি এখন বিএনপি নেতা এবং এক সময় বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এক সময় তিনি ছাত্র লীগের সভাপতি ছিলেন এবং শেখ মুজিব সরকারের পার্লামেন্টারি দলের চিফ হুইপ ছিলেন। তিনি হলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। গত রবিবার ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় ডবল কলাম শিরোনামে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের এই বক্তব্য ছাপা হয়েছে। শিরোনামটি ছিল, ‘বাইরের নির্দেশে কাদের মোল্লাকে হত্যা করা হয়’ খবরে বলা হয়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজেদের স্বার্থে যারা (ভারত) এখানে এসে পাকসেনাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের নির্দেশেই জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আপনারা (সরকার) কাদের নির্দেশে আইনের সংশোধন করে তাকে হত্যা করেছেন তা আমরা জানি। তিনি বলেন, কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়ার আগে আইনের কোনো তোয়াক্কা করা হয়নি। তাকে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পর্যন্ত সুযোগও দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, অন্যের নির্দেশে এবং আইনের তোয়াক্কা না করে কাদের মোল্লাকে হত্যা করার অপরাধে ক্ষমতাসীনদেরও একদিন বিচারের মুখোমুখী হতে হবে। তিনি বলেন, এই সরকার যাকে ফাঁসি দিয়েছে সেই কাদের মোল্লার বাসায় আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ দিনের পর দিন মিটিং করেছেন। অথচ তারাই তাকে হত্যা করলো। ফাঁসির এই নির্দেশ কোত্থেকে এলো তা আমরা জানি। ১৪ ডিসেম্বর (শনিবার) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে’ আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, কিভাবে এবং কাদের কথায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন সেটা জনগণ ভালো করেই জানে। আর এর জন্য আপনাদের বিচারও করা হবে। দেশে দুই সরকার রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের আইন কে পরিবর্তন করলো? শাহবাগের আন্দোলনের পর সরকার আইন পরিবর্তন করে কাদের মোল্লাকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, দেশে শাহবাগের কথায় সংবিধান পরিবর্তন হয়েছে, একজন মুক্তিযুদ্ধা হয়ে এটা দেখে আমর খুব কষ্ট লাগে।
উপরোক্ত খবরের আলোকে বুঝা যাচ্ছে আমাদের দেশের আভ্যন্তরিন রাজনৈতিক অবস্হা খুবই নাজুক হয়ে পড়ছে।আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের সদিচ্ছার পরিচয় দিয়ে দেশকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসতে হবে।ক্ষমতার চেয়ে দেশ বড় এ লক্ষ্য ধারন করে, সমস্ত ব্যাক্তি স্বার্থ পরিহার করে এগিয়ে না গেলে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা ও পুনর্গঠিত অর্থনীতি অচিরেই ভেংগে পড়বে।যার পরিনতি আমরা দেশের বর্তমান অবস্হা থেকে দেখতে পাচ্ছি।আশা করি সরকার ও বিরোধীদল নমনীয়ে হয়ে জাতির আশা আকাংখ্যা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবেন।
বিষয়: বিবিধ
২১৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন