আমরা আর মৃত্যুর সাক্ষী হয়ে থাকতে চাই না প্রকৃত শিক্ষার বিস্তার করে বিশ্বশান্তির পথ প্রশস্ত করতে চাই।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:১৫:৪৩ দুপুর

বিরোধী দলের ডাকা ৭১ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হতে না হতেই আবার ৭২ ঘণ্টার অবরোধের ডাক। বাংলাদেশে মানবতা আজ বিপন্ন। বিভিন্ন পত্রিকার খবরের মাধ্যমে জানি, গত অবরোধের প্রথম পর্যায়ে মারা গেছেন ১৯ জন; আর শেষ দিনে ঢাকার শাহবাগের কাছে এক বাসে পেট্রলবোমায় পুড়ে গেছে ১৯ জন মানুষ। আগের বাসে যে আগুন দেওয়া হয়েছিল, তাতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আগুনে পুড়ে মারা গেছেন চারজন। দ্বিতীয় পর্যায়ের অবরোধে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশ এক অর্থে আন্দোলনের দেশ। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি গড়ে উঠেছিল। ১৯৬৬ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি শিক্ষা ও অর্জনের ক্ষেত্রে তাদের লড়াইয়ের 'ম্যাগনাকার্টা' তৈরি করেছিল। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার পথে ঠেলে দিয়েছিল। আমরা আন্দোলন নিয়ে কথাবার্তা বড়দের বলতে শুনেছি।বাঙালি জাতিকে নিয়ে যেসব কথাবার্তা ছিল, বিশেষ করে ব্রিটিশরা যেগুলো আমাদের বিরুদ্ধে ছড়িয়েছিল, বাঙালিরা ভীরু-কাপুরুষ; সেটা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে আন্দোলনে, রক্তদানে, যুদ্ধে বাঙালি প্রমাণ করেছিল, আমরা একেবারেই একটি উন্নত, সংগঠিত, পূর্ণ জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে গঠিত মানুষ- বাঙালি জাতি।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ২১ ফেব্রুয়ারি জীবন দিয়েছিলেন চার-পাঁচজন মানুষ। এই চার-পাঁচজন মানুষ মারা গিয়েছিলেন একই দিনে। এই মৃত্যু গোটা বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানের ঔপনেবিশকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। লড়াই করে তারা নিজেদের ভাষা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। ১৯৬০, '৬২, '৬৬ সালে যে আন্দোলন হয়েছিল, সেই সময়ও মৃতের সংখ্যা ১২-১৩ জনের বেশি হবে না। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন মারা গেছেন বেশ কয়েকজন। তা ছাড়া ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও যাঁরা মারা গেছেন, সে সংখ্যাও হাতে গোনা যায়। সেই সময়কার প্রতিটি মৃত্যুই নিজের মতো কাজ করেছিল, মানুষকে জাগিয়েছিল, উদ্বুদ্ধ করেছিল আন্দোলনে-লড়াইয়ে। এক আসাদের আত্মদান শেষ পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতার বীজ বুনেছিল।এ কথা বলা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পর্যন্ত প্রতিটি জীবনদান আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, নতুন বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। বলা যায়, প্রতিটি মৃত্যু মানুষকে আলোড়িত করেছে। জীবনদানকে মহান করেছে এবং এই ধরনের জীবন দান নিয়ে কবিতা, গান ইত্যাদি রচিত হয়েছে। তবে স্বাধীনতার পর থেকে পরিস্থিতি বদলে যেতে থাকে। যেহেতু আগে ছিল একটি জাতিগত লড়াই, সমগ্র জাতি এই আত্মদানকে সম্মান জানাত এবং তারা এই সম্মান জানাতে শিখেছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর লড়াইটা যখন নিজেদের মধ্যে শুরু হয়ে গেল, তখন মানুষের ধারণায়ও এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হতে লাগল। সেই কাহিনী এনে আমি লেখা বড় করব না, কিন্তু জীবনদানের সংখ্যা যে বেড়ে যেতে লাগল সে কথা নিঃসন্দেহে সত্য।

স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় গণ-আন্দোলনের কথা যদি আমরা বলি, তবে সেটা সম্ভবত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। ৯ বছর ধরে সে আন্দোলন চলেছিল। মিছিলের ওপর ট্রাক চালিয়ে দেওয়ার মতো বীভৎস ঘটনা ঘটেছিল। তার পরও তখন মৃতের সংখ্যা ১০০ পার হয়নি। অথচ এ বছরেরই ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪৮ জন। ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে আন্দোলন হয়েছিল, সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৯ জন। আর এ বছর সর্বশেষ মাত্র দুই পর্যায়ের অবরোধে মারা গেলেন ৩০ জন, যার মধ্যে বাসে দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন চারজন।

পত্র পত্রিকা ও টেলিভিশনে সেই বীভৎস দৃশ্য তাকিয়ে দেখা কষ্টকর। মানুষ পুড়ে গেলে, বিশেষ করে তার চেহারা যখন বিকৃত হয়ে যায়, তখন তার দিকে যে তাকিয়ে থাকা যায় না, এটা সামনে না থাকলে বোঝা যায় না। হাসপাতালজুড়ে সবার চোখেই উৎকণ্ঠা। আত্মীয়স্বজন সবাই বেদনার্ত।ওখানে মানবতার পরাজয় হয়েছে।স্বাধীনতার আগে প্রতিটি মৃত্যু আরো নতুনভাবে জীবন পাওয়ার জন্য বাকি জীবিত মানুষদের উদ্বুদ্ধ করেছিল। আরো বেশি করে লড়াইয়ে সাহসী করেছিল। কিন্তু এখন যেসব মানুষ মারা যাচ্ছে, সেই মৃত্যু মানুষকে জীবনের পথে আরো সংগ্রামী-সাহসী করে না। এখন মৃত্যু আলোচনার বিষয় হয়, দুঃখের বিষয় হয়; তার পরও সেই মৃত্যু দেখে মানুষ আর পথে নামে না। কারণ আন্দোলনের ধরনই পরিবর্তন হয়েছে।

এই যে মৃত্যু- স্বাধীনতার আগে যেমন হতো, কেবল সরকারি বাহিনীর গুলিতে মানুষ মারা যেত, সেটা মতিউর রহমান মল্লিক হোক, শহীদ আসাদুজ্জামান হোক- সবাই পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। এবার আন্দোলনের নামে এমন একটা বীভৎস নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে, যাতে সরাসরি সরকারি দলকে দোষারোপ করা যাচ্ছে না। এমন একটা সরল সমীকরণ করা যেতে পারে না। আন্দোলন যাঁরা করছেন, পিকেটিং যাঁরা করছেন, তাঁরা পুলিশের ভয়েই হোক আর যেকোনো কারণেই হোক রাজপথে নামতে পারছেন না বলেই নিরস্ত্র খেটে খাওয়া মানুষের ওপর, চলন্ত গাড়িতে হামলা করছেন এবং সেটা ককটেল থেকে শুরু করে একেবারে পেট্রলবোমা পর্যন্ত। এমন সরল সমীকরণ গ্রহণযোগ্য কি না তা ভেবে দেখা জরুরি। ২৮ নভেম্বর যে ঘটনাটা ঘটেছে, সেটা কোনোভাবেই আন্দোলনসংশ্লিষ্ট কোনো কাজ হতে পারে না। অবরোধ মানে তো হরতাল নয়। ঢাকা মহানগরীর মধ্যে যানবাহন চলতে পারবে না- এমন কোনো ঘোষণা তো নেই। দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষ অবস্থান নেয়। অবরোধ করে রাখে হয়তো রাজধানীকে অথবা একটি জেলা থেকে আরেকটি জেলাকে অথবা একটি শহর থেকে আরেকটি শহরকে। কিন্তু শহরের মধ্যে কেউ চলাফেরা করতে পারবেন না, নিজের গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না, রিকশা ব্যবহার করতে পারবেন না, টেম্পো ব্যবহার করতে পারবেন না- এমন তো কোনো কথা নেই। দেশের একটি জাতীয় দৈনিক একটি পরিসংখানে দেখিয়েছে, ১৮ দলীয় এই অবরোধে গত তিন দিনে ১৪ জন খেটে খাওয়া মানুষ মারা গেছেন।

আন্দোলন কেন? সংগ্রাম কেন? যেভাবে বিএনপি বা বিরোধী দল তাদের দাবি করছে, যদি মোটামুটিভাবেও সে পদ্ধতিতে নির্বাচন হতো তাহলে খেটে খাওয়া মানুষের কী হতো? এই যে ১৪ জন মানুষ, যাঁরা জীবন দিলেন, সেই ১৪ জন মানুষের কোনো দাবি কি ছিল বিরোধী দলের? এই অবরোধে অংশগ্রহণ করা কি তাঁদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল? কোনো নীতিগত বাধ্যবাধকতা কিংবা অন্য রকম কোনো কিছু? নিজেদের কাজের জায়গায় যাওয়ার সময় অথবা ফেরার সময় আঘাত পেয়ে অথবা পেট্রলবোমায় তাঁরা মারা গেছেন। অতীতে কোনো সময় আন্দোলনের এমন পরিস্থিতি ছিল না, যেখানে আন্দোলনকারীরা নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা করে, নিরীহ মানুষের জীবন হরণ করে। এখন আন্দোলনের নামে সে রকমটি ঘটছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। দুঃখজনক হচ্ছে, যাঁরা আন্দোলন করছেন, আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, বিশেষ করে দেশের প্রধান দুই নেত্রী, এসব মৃত্যুতে তাঁরা যে কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁদের মর্মে বেদনা হচ্ছে- সে রকম বোঝা যাচ্ছে না। যখনই এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটছে, তখনই কোনো রকম দেরি না করেই সরকারপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই মৃত্যুর জন্য দায়ী বিরোধী দলের নেত্রী, তাঁকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। আর বিরোধী দল থেকেও কালবিলম্ব না করে বলা হচ্ছে, এগুলো তারা করছে না। করছে সরকার ও তার বাহিনীগুলো।তাহলে কারা এ ঘটনাগুলো ঘটাছ্ছে।আমাদের আইন শৃংখলা বাহিনীও তার কোন সঠিক কারন দর্শাতে পারেন না।যে দেশের আইন শৃংখলা বাহিনী মানুষের হেফাযত করতে পারে না সে বাহিনী থেকেই কি লাভ? আর যদি এ সমস্ত উছৃংখল কর্মিবাহিনী রাজনৈতিক দলগুলো লালন করে তাদের দলকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাহলে এ স্বল্প সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনী-ই বা কি করবে।নেতৃ্ত্য তো একে বলে না যাতে মানুষের জীবন বিপন্ন হয় , ধন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়।এক একটি হর্তালে কি পরিমান ক্ষতি হছ্ছে , সাধারন মানুষ কি পরিমান ক্ষতির সম্মুখীন হছ্ছেন তা আমাদের নেতা নেতৃরা ভাবেন না কারন তাদের তো তেমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না।অধিকাংশ সময় কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তারা সাধারন মানুষগুলোকে দেখতে পর্যন্ত যান না।তাঁরা যদি সেখানে যেতেন, তাহলে দেখতেন মানুষের কষ্ট। দেখে বুঝতে পারতেন, এই আন্দোলনের নামে তাঁরা মানুষের সমস্যার সমাধান করছেন, নাকি সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছেন? আমি অনুরোধ করব, দুই নেত্রীই যেন এদের দেখতে যান। আমি অনুরোধ করব, যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যেন তাঁরা দেখা করেন। তাঁদের সুখ-দুঃখের কথা শোনেন। সব দেখেশুনে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিন, তাঁরা নিজেদের জেদের ওপর বহাল থাকবেন, নাকি গণতন্ত্রমুক্তির জন্য একটা সমাধানের পথ খুঁজে বের করবেন?মানুষ চায় সমাধান। আর তাঁরা যদি তা না করেন, তাহলে পরস্পরকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, এই মানুষের মৃত্যুর জন্য তাঁরা উভয়ে দায়ী। হাজার হাজার, লাখ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত করার জন্য তাঁরা দায়ী হবেন। অর্থনীতি যে প্রান্তসীমায় পৌঁছেছে তার জন্য দায়ী হবেন।

আমাদের ভাবতে হবে নতুন করে, ভাবতে হেবে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে।আমাদের প্রতিটি মানুষের মধ্যে শিল্পী স্বত্বা রয়ে গেছে। আমাদের সে কল্পনাকে বাস্তবে রুপ দিতে হবে।এ জন্য দরকার সুস্হ রাজনীতি ও রাজনৈতিক পরিবেশ।জন গনের আশা আকাংখার প্রতিক হলো সংসদ যেখান থাকে সাংসদরা কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়ে দেশকে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবেন।বিজ্গানীদের মতে যদি মানব সভ্যতাকে একটি গাড়ির সাথে তুলনা করি তাহলে আমরা দেখবো , অনেক সহস্র বছর ধরে সভ্যতা মাত্র ২০ কিলোমিটার ( প্রতি ঘন্টায়) গতিতে এগিয়ে গছে।কিন্তু বিগত কয়েক শতাব্দিতে সভ্যতার গতিবেগ বেড়ে প্রায় আলোর কাছাকাছি গতিতে পোঁছে গেছে। কি করে এটা সম্ভব হলো? আমার কাছে এর ব্যাখ্যা হতে পারে কেবল একটি জিনিস , আর তা হলো শিক্ষার সার্বজনীনতা ও ইসলামের নিগূড় তত্বের কাছে গিয়ে পৌঁছা। আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি মানব সভ্যতা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে,যদি শিক্ষাকে পৃথিবীর সব যায়গায় ছড়িয়ে দেয়া যায়,মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক অগ্রযাত্রাকে বিশ্বজনীন করে তোলা যায় ।যদি আমাদের উচ্চশিক্ষার্থিরা একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারি,যেটা হয়ে উঠবে মানবজাতির জন্য একটি মুক্তভান্ডার।এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা সমগ্র পৃথিবীতে জ্গানের বিপ্লব ঘটাতে পারি।এ কারনে আমাদের মুসলিম জাতির প্রয়োজন কুরআন ও সূন্নাহের সঠিক অনুশীলন ও তার সাথে আজকের বিজ্গানের ভাল দিকগুলোকে নিয়ে এসে ইসলামিক ইনিস্টিটিউশন গড়ে তোলা।যার অভাবে মুসলিম এলাকাগুলোতে প্রকৃত শিক্ষার বিস্তার না হয়ে মেধাগুলো ঝরে যাছ্ছে বা তারা যোগদান করছে অনৈসলামিক দেশগুলোতে আর সরে পড়ছে ইসলামি জীবন থেকে।আমাদের আর বসে থাকা উচিত হবে না,যার যতটুকু মেধা আছে এ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি, একে অন্যকে পরামর্শ দিতে পারি আর এর মাধ্যমে সম্ভব সমস্যার সমাধান করা।

গত শতাব্দির দিকে চেয়ে দেখুন ,আমরা অনেক অসাধারন অগ্রগতি সাধন করেছি।হয়ত আগামি এক দশকের মধ্যে আমরা এগিয়ে যাব আরো অনেক দূর।আমরা এখনি অনুভব করতে শুরু করেছি,বিশ্বটা আমাদের কাছে ছোট হয়ে আসছে।তরুনরা হলো পরিবর্তনের অগ্রপথিক।অথচ আমাদের তরুনদের কোন সম্ভাবনা দেখতে পাছ্ছি না সামান্য কিছু ছাড়া।স্কুল , কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে তরুনরা যেভাবে উছৃংখল হয়ে উঠছে তা আমাদের জন্য অশনিসংকেত ডেকে আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।একে রোধ করার একমাত্র উপায় শিক্ষাজীবনে নৈতিক মান গড়ে তোলা আর সেজন্য দরকার নৈতিক মানের শিক্ষক।তরুনরাই হলো আগামিদিনের ভবিষ্যৎ, তারাই নির্ধারন করবে আগামিদিনে সমাজব্যাবস্হা কি রকম হবে।কারন সমাজ ব্যবস্হা বর্তমানে যে গতিতে অগ্রসরমান, তাতে করে পৃথিবীতে সার্বজনীন শিক্ষার প্রচলন ঘটাতে আমাদের এক শতাব্দি লেগে যাবে।

পৃথিবীতে বর্তমানে যে পরিমান খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয় তাতে করে এর কয়েকগুন মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব।কিন্তু তার পরও আমাদের শিশুরা অভুক্ত থাকছে এর কারন হলো পৃথিবীর ৭০% রিসোর্সের ১৭% দেশ তা ভোগ করছে আর এই ১৭% বাস করে পশ্চিমা দেশগুলোতে।অতিভোগের কারনে নিশ্পেষিত হছ্ছে পৃথিবীর দরিদ্র এলাকাগুলো।যা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।এইডস ,লিউকেমিয়া ও কেন্সারের মত রোগে পৃথিবীতে অসংখ্য শিশুর মৃত্যু ঘটছে।আমাদের উচিত প্রযুক্তি সক্ষমতা ও প্রয়োজনীয় ঔষধ নিয়ে এ সব শিশুর পাশে দাঁড়ানো।বৈশ্বিক উষ্নায়নের মত বিষয়ে আমাদের আন্তর্জাতিক মতৈক্যে পৌঁছতে হবে।পৃথিবীতে খাদ্যের সুষম বন্টন নিশ্চিত করতে হবে যাতে করে একটি শিশুও অভুক্ত অবস্হায় ঘুমুতে না যায়।

আমার মজ্জাগত ধারনা এবং মনে প্রানে বিশ্বাস করি, প্রকৃত শিক্ষা-ই আমাদের সব স্বপ্ন পূরন করতে পারে।সে জন্য আমাদের দরকার ধৈর্য ,সাহস,নিয়মানুবর্তিতা ও সময়ের প্রতি যথা যথ মর্যাদা দান।আমাদের ধনাঢ্য পরিবার তথা সরকার এলাকায় এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে যদি ফাউন্ডেশন গড়ে তোলে,বয়স্ক পুরুষ মহিলাদের কর্মমুখি প্রশিক্ষন দিয়ে গড়ে তোলার জন্য প্রজেক্ট হাতে নেয়,তাহলে ধীরে ধীরে সমাজ পরিবর্তন হবে বলে বিশ্বাস করি।সংঘাতের প্রধান কারন হলো অশিক্ষা ও সম্পদের সুষম বন্টন না করা।দুর্বল রাষ্ট্রগুলোতে সরকারগুলো তাদের কায়েমি স্বার্থে জংগিবাদ ও নৈরাজ্য তৈরি করে রাখে।সার্বজনীন শিক্ষাই পারে এ দেশগুলোতে সামাজিক অস্হিরতার প্রশমন ঘটাতে ও গনতন্ত্রের পথ সুগম করতে।শিক্ষাবন্চিত একটি শিশুর জংগিবাদে জড়িয়ে পড়ার আশংকা একটি স্কুলগামি শিশুর তুলনায় অনেক বেশি যা আমরা বিগত দিন গুলোতে দেখেছি সিরিজ বোমা বিস্ফোরনের ক্ষেত্রে।

আমরা সবাই শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে চাই ও সে অনুযায়ি কাজ করতে চাই।আমরা যেন আফগানিস্তানে ৩০ হাজার সেনার বদলে ৩০ হাজার শিক্ষাবিদ পাঠাতে পারি।একমাত্র শিক্ষাই পারে আমাদের সমাজকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে।শিশুর যথাযথ শিক্ষা আমাদের বিনিময়ে দিবে দূরারোগ্য রোগের চিকিৎসা অথবা মানব সভ্যতাকে নিয়ে যাবে পৃথিবীর বাইরে।সবার জন্য শিক্ষা পৃথিবীতে শান্তি নিশ্চত করবে।আমাদের তরুনরা তোমরাই আমাদের ভবিষ্যৎ , তোমরাই পার সঠিক পথে চলে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে এর কোন বিকল্প নেই।যারা তোমাদের ব্যবহার করছে ও বিপথগামি করছে তাদের তোমরা বুঝতে শিখ।তোমরাই ভবিষ্যৎ চালক, সে জন্য বর্তমানের অসুস্হ চালকদের শিক্ষা দেয়ার জন্য তোমাদের হাতিয়ার হলো প্রকৃত শিক্ষাগ্রহন করা ও জাতিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, যার অপেক্ষায় জাতি অপেক্ষমান।

বিষয়: বিবিধ

১২৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File