গভীর অনিশ্চতায় সামনে এগুছ্ছে দেশ তার সাথে শিক্ষাজীবন হয়ে পড়ছে বিপন্ন।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০১:৪৪:৪৭ দুপুর

গণতন্ত্র মানে শুধু ভোটাধিকার নয়। গণতন্ত্র মানে সব নাগরিকের সমান অধিকার। সব নাগরিকের ব্যক্তিগত জানমাল রক্ষার নিশ্চয়তা। সব নাগরিকের মতপ্রকাশ ও বিশ্বাস চর্চা করার স্বাধীনতা। এই দুই অধিকারই আজ আক্রান্ত মাত্র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অদূরদর্শিতা ও স্বার্থপরতার কারনে।বিশেষ করে গত ৪১ বছর যে দুই দল শাসন ক্ষমতায় ছিল।সংসদ এখন এমন একটি লোভনীয় যায়গায় পরিনত হয়েছে যেখানে আসতে পারলে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া যায়।আমাদের দেশে যে রাজনৈতিক দলগুলো গঠিত হয়েছে তাদের অন্তর্নীহিত রহস্য ও উদ্দেশ্য কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়, বৃহৎ কোন দলের সাথে মিলে নিজেদের ভাগ বাটোয়ারাটা পুষিয়ে নেয়া যায় তার হিসেব নিকেশটাই তাদের কাছে মুখ্য।এদিক থেকে এরশাদ বড় উদাহরন হয়ে আছে।আমাদের বৃহৎ দুই দলকে কেন অনেকে বুঝতে পারছে জানি না।জাতীয় পার্টি ও জামাআতে ইসলামি দু'টো দল নিয়েই বিতর্ক আছে।শুধুমাত্র ভোটব্যংকের জন্য এ বৃহৎ দল দু'টো তাদের পলাক্রমে ব্যাবহার করছে আর তারাও ব্যাবহৃত হছ্ছে।তাদের স্বার্থের কারনে নীতি নৈতিকতা হারিয়ে ফেলছে। জনসমক্ষে যে কথাগুলো তারা জন গনের জন্য বলেন সেগুলো নিতান্তই ভোট বাক্ক্স পূরনের জন্য। তবে এর মধ্যে কিছু তো আছে অবশ্যই ভাল তবে তাদের পক্ষে শাসন ক্ষমতার কাছা কাছি যাওয়া নিতান্তই ক্ষীন কারন তাদের ব্যাক্তি ইমেজ থাকলেও এম পি নির্বাচিত হয়ে আসা দূরাশা মাত্র। সুতরাং তাদের কথাগুলো উপদেশ হিসেবেই থেকে যাবে। অনিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশে এখন সংখ্যাগুরু সংখ্যালঘু উভয়ই হুমকিতে। বেশির ভাগ মানুষ যখন ত্রাসিত জীবন পার করছে, তখন লুটেরা-দুর্বৃত্তরা দেশে বা বিদেশে সম্পদ আর পরিবার নিয়ে নিরাপদেই আছেন। দেশ তাঁদের জমিদারি, বিদেশ তাঁদের ‘হোম, সুইট হোম’!

যে দেশে ইনসাফ বা ন্যায় বিচার নেই সে দেশ কিভাবে এগোবে সেটা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।সূরা আরাফের ৩৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন,' আর প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছে একটি নির্দিষ্ট কাল, কাজেই যখন তাদের নির্দিষ্ট কাল এসে পড়ে তখন তারা দেরি করতে পারে না ঘন্টা খানেকের জন্য আবার এগিয়েও নিতে পারে না।" আজ বাংলাদেশে জীবিত ও মৃতের মধ্যে পার্থক্য এতটুকুই যে মৃতের যন্ত্রণা ও ভয়ের সমাপ্তি হয়েছে।জীবিতরা এখনো ভুগছে। সৃষ্টিতত্ত্বে আমরা সবাই খুনির বংশধর। আদমের দুই সন্তানের একজন আরেকজনকে খুন করেছিল। নিঃসন্তান হাবিলকে খুন করার পর কাবিলের বংশধরেরাই পৃথিবী ভরিয়ে ফেলে। ধর্মীয় মিথে ভাইয়ের হাতে ভাই হত্যা মানবজাতির আদি পাপ। আর বাংলাদেশে বাস্তবিকই সেই আদি পাপের অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে।

শাহবাগে যারা বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে ঘরফেরত মানুষগুলোকে জ্বালিয়ে দিয়েছিল, তারা জানত মানুষগুলো নিরপরাধ। সারা দেশে যারা জানমালের ক্ষতি করছে, তারাও জানে, যারা ভুগছে তারা নিরীহ। একগুঁয়েমি করে ক্ষমতা ধরে রাখার খেসারত দিচ্ছে বনি আদম তা যেমন সরকার জানে তেমনি জানে জন গন। শত শত মানুষকে যারা হত্বা করছে তাদের বেশীর ভাগ- ই নিরীহ খেটে খাওয়া মানুষ।কারও শাস্তি হয় না। গতবার আওয়ামী লীগের হরতালে গান পাউডার দিয়ে বাসের যাত্রীদের পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। এবার শাহবাগে বাসে পেট্রলবোমার আগুনে দগ্ধানো ১৯ জনের দুজন মারা গেছে। অন্যরা মৃত্যুপথের দীর্ঘ অসহ্য যাত্রায় রওনা দিয়েছেন। গত নয় মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন শ মানুষ। এসব মানুষের জীবন ছিল, সেই জীবনে প্রেম-ভালোবাসা-স্নেহ-মমতায় জড়ানো আরও অনেকে মিলে একেকটা পৃথিবী ছিল। একেকটি অপমৃত্যু তাই একেকটি ব্যক্তিগত পৃথিবীর ধ্বংস। একাত্তরের পর গণহত্যার শহীদদের স্বজনদের বিরাট এক জনগোষ্ঠী ছিল। তারা কখনোই ভুলত না যে কী করা হয়েছিল তাদের স্বজনদের ওপর।

স্বাধীনতার ৪২ বছরে রাজনৈতিক নাশকতা এবং মুনাফার নিষ্ঠুরতার শিকার হওয়া মানুষের মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। তারা ভুলবে না সহজে স্বজনদের মর্মান্তিক মৃত্যুযন্ত্রণার স্মৃতি। তাদের আর বাদবাকিদের মধ্যে ঝুলে থাকবেই গুমোট বেদনার কালো পর্দা। তাদের কাটা ঘায়ে তারপর বিচার না হওয়ার লবণ পড়েছে বারবার। রানা প্লাজার আসামিদের দুর্বল মামলা দিয়ে বাঁচিয়ে দেওয়া হচ্ছে, জামিন দেওয়া হচ্ছে। তাজরীনের দেলোয়ার হোসেনসহ অন্য অভিযুক্তদের বিচার এখনো শুরুই হয়নি। এরই মধ্যে মেধাবী কিশোর ত্বকী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর দল আওয়ামী লীগও তাঁকে মনোনয়ন দিয়ে ধন্য হয়েছে। শামীম ওসমান যদি মনোনয়ন পান, তাহলে ত্বকীর মায়ের মতো এ দেশের প্রত্যেক মায়ের বুক কেঁপে উঠবে না? পুত্র হত্যার বিচারের দাবিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন করে যাওয়া রফিউর রাব্বির পুরোনো ক্ষত থেকে নতুন করে রক্ত ঝরবে না?

নিহত-নির্যাতিতদের সংখ্যা যত বাড়ছে, খুনি-নির্যাতকদের দায়মুক্তির সংখ্যাও তেমনই বাড়ছে। খুনিদের দম্ভ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে আতঙ্ক। আমরা যারা বাসযাত্রী, আমরা যারা হরতাল-অবরোধে জীবিকার জন্য বাইরে বেরোনোর মতো সাহসী, আমরা তাহলে কী করব? শিশু-কিশোরদের দিয়ে ককটেল ফোটানো হচ্ছে। স্তরে স্তরে পুলিশ-বিজিবির পাহারায় সরকার নিজেকে লুকাতে ব্যস্ত। সন্ধ্যার পর বাড়ছে ছিনতাই-রাহাজানি। সরকার আত্মরক্ষায় ব্যস্ত থাকায়, সব রকম অপরাধীরা ঝোপ বুঝে কোপ মারছে।আবার দাগী অপরাধিরা হাযত থেকে বেরিয়ে পড়ছে।এখনই তো সুযোগ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-মন্দির দখলের ফন্দিফিকির সাজানো। তাই তাদের মন্দির ও বাড়িতে চলছে হামলা। কেউ থামাতে পারছে না। উন্মুক্ত বাংলাদেশে প্রকাশ্যে মানবতার মৃত্যু ঘটছে। সব প্রবাদ, সত্য বচন মিথ্যা হয়ে গেছে। অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা যেন তৃণসম দোহে। এখানে খুনিদের রক্ষা করে ‘ক্ষমা’ করে সরকার আমি এ সরকারের কথাই বলছিনা সব সরকারই এ কাজই করে, আর তৃণসম দহে সাধারণ মানুষ।

এক অদ্ভুত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। যাঁরা রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন, তাঁদের ডাকা কর্মসূচির নামেই আবার জনগণ নিপীড়িত হচ্ছে। কেউ সংবিধান পোড়াচ্ছেন, কেউ জীবন পোড়াচ্ছেন। দুই পক্ষেরই বলবার কথা আছে, যুক্তি আছে। দুই পক্ষের বুদ্ধিজীবী ও প্রচারকেরা তর্কযুদ্ধে পরস্পরকে কতল করছেন। এত যুক্তি, এত বুদ্ধি, এত সুশীলতা, কিন্তু কোথায় সত্য, কোথায় ন্যায়, কোথায় মানবতা? যে যুক্তিতে মুক্তির কথা নেই, যে মুক্তির বিজ্ঞাপনে সত্যের সাহস নেই, যে সাহসী ভাষণে ভরসাজাগানো দিশা নেই তা অর্থহীন। দুই দল যেন সেই দুই পাহাড়ি ছাগল, পরস্পরকে গুঁতাতে এতই ব্যস্ত যে দুজনই যে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে খাদের দিকে গড়াচ্ছে, তার হুঁশ নেই। আপনারা বেহুঁশ হতে পারেন, আপনাদের ভারত-আমেরিকা থাকতে পারে, আপনাদের রাজকীয় উত্তরাধিকার নিয়ে স্বপ্ন থাকতে পারে; কিন্তু আমাদের তো একটাই জীবন, আমাদের তো একটাই দেশ, আমাদের তো একটাই চাওয়া স্বাধীন-সার্বভৌম-সচ্ছল শান্তির বাংলাদেশ।

আওয়ামী লীগ-সমর্থকদের কণ্ঠে শোনা যায়, এটা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা সবকিছুর সামনে ছিল; আজ দেখছি মঞ্চ ও টিভির পর্দা যাঁরা কাঁপাচ্ছেন, তাঁদের অনেককেই শ্রদ্ধা-ভক্তি করা কঠিন। আর দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কীভাবে মুক্তিযুদ্ধ? বিএনপির সমর্থকদের কণ্ঠে শোনা যায়, এটা গণতন্ত্রের নূর হোসেনীয় মুহূর্ত: যখন বুকে-পিঠে লিখে রাখতে হবে, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। আজ নূর হোসেন আর ডা. মিলনের জননীরা পত্রিকায়-টিভি চ্যানেলে হাহাকার করছেন, ফরিয়াদ করছেন: গণতন্ত্র তো মুক্তি পেল না! চিহ্নিত স্বৈরাচার আজ গণতান্ত্রিক সরকারের কোলে বসে দোল খাচ্ছে। গণতন্ত্রের জন্য কোনো নূর হোসেনীয় প্রেরণা জাগাতে পারেনি বিএনপি। দুই জোটের লড়াইয়ে যে জিতুক, এটা নিশ্চিত, কোনোভাবেই গণতন্ত্র জিতবে না, বাংলাদেশ জিতবে না।

বাংলাদেশে এখন জনগণ নেই, নাগরিক নেই, মানুষ নেই। তাদের ‘নেই’ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের শ্রমিকেরা শ্রমদাস, দেশের পোশাক কারখানায় বা বিদেশে দাসশ্রমের দামে তাদের বেচে ডলার অর্জন করে এই রাষ্ট্র। দাসশ্রমনির্ভর রাষ্ট্র কখনো গণতান্ত্রিক হয় না। সংবিধান এখানে ক্ষমতাবানের মর্জিমাফিক বদলায়। নাগরিকের অধিকার দর্জির কাঁচির হাতে ইচ্ছামতো কাটছাঁট হয়। তাদের মনে করা হয় প্রজা বা হোমো সাসের। রোমান সাম্রাজ্যের আইনে একধরনের মানুষের আইনি মর্যাদা ছিল ‘হোমো সাসের।' তারা দাস ছিল না, আবার পূর্ণ মর্যাদার নাগরিকও ছিল না। এদের হত্যায় অপরাধ হতো না, কারণ, এরা প্রাণীসুলভ। এদের নিয়ে যা খুশি তা-ই করা চলত। আমাদের নিয়েও কি তাই করা হচ্ছে না?

যেমন জনগণ তেমন শাসকই তারা পায়। ফরাসি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আলেক্সেই ডি তকুইভিল বলেছিলেন, দীর্ঘদিন যন্ত্রণায় ভুগতে থাকা মানুষ বিকল্প পাওয়ামাত্রই সমস্যাগুলোকে অসহনীয় মনে করতে থাকে এবং ভাগ্য বদলানোর জন্য কোমর কষে নামে। আমাদের হয়েছে উল্টোটা। দীর্ঘদিন অনাচার সহ্য করতে করতে পরিবর্তনের আশার ধূলিসাৎ দশা দেখতে দেখতে আমরা এখন সব সওয়া মহাশয়ে পরিণত হয়েছি। আমরা না বদলালে আমাদের নেতারা বদলাবে না।

রাজনৈতিক সহিংসতায় মানুষের প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি জাতীয়ভাবে আরও একটি ক্ষেত্র ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। বিরোধী জোটের হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় যে প্রায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে, তার ক্ষতি সম্ভবত কখনোই পূরণীয় নয়। আরও কত ক্ষেত্রে, কী মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতি হলে আমাদের নেতৃবৃন্দের টনক নড়বে? জনস্বার্থের বিষয়টি তাঁদের বিবেচনায় স্থান পাবে? ইতিমধ্যে অবরোধে হাসপাতালের বার্নইউনিটগুলো ভরে গেছে, কাতরাছ্ছে অগনিত মানুষ আর ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের আয়েশ করে চলছেন।টেলিভিশন ও সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করছে এসব যন্ত্রনাক্লিষ্ট মানুষের আর পরিবারের হাহাকারের কথা।সাধারন মানুষ আতন্কে জীবন যাপন করছে।ঘর থেকে বের হওয়ার আগে স্ত্রী তার স্বামীকে আয়াতুল কুরছি পড়ে ফুকে দিছ্ছে।কারন বিকেলে ফিরবে কি ফিরবে না এর কোন নিশ্চয়তা নেই।

এখন পরীক্ষার মৌসুম। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের তিন কোটি ৭০ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা চলছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোরও বার্ষিক পরীক্ষার সময় এটি। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থীরও বিভিন্ন পরীক্ষা চলছে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি পরীক্ষায়ও অংশ নিচ্ছেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। এই বিপুল জনগোষ্ঠী, যাদের সঠিকভাবে গড়ে ওঠার ওপর নির্ভর করছে জাতির ভবিষ্যৎ, তাদের সুবিধা-অসুবিধার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দিনের পর দিন হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে তাদের সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থবোধ, জনস্বার্থের প্রতি চরম অবহেলা।রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে হয়তো তাদের স্বার্থটাই প্রধান। কিন্তু এভাবে পুরো জাতির শিক্ষাজীবনকে অচল করে দেওয়ার অধিকার যে তাদের নেই, সেটা বোঝা উচিত। কর্মসূচির দিনক্ষণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। সাধারণত দেখা যায়, কর্মসপ্তাহ শুরুর দিন থেকেই হরতাল কিংবা অবরোধ কর্মসূচি শুরু করা হয়, চলে তিন-চার দিন। এ কারণে পরীক্ষার্থীরা বিপদে পড়ে যায়। শিক্ষাঙ্গনকে রাজনৈতিক কর্মসূচির বাইরে বলে ঘোষণা করা হলেও কার্যত সেটা অর্থহীন হয়ে পড়ে। কারণ, যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ও রাস্তাঘাটের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়া ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারও এসব বিবেচনা করে পরীক্ষা স্থগিত করে। শিক্ষার্থীদের কচি মনে এসব অস্থিরতা-অনিশ্চয়তার ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়।

এটা বোধগম্য যে, রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসন না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসা কঠিন।অনেক শিশু বাবা মাকে প্রশ্ন করছে আমাদের দেশ কবে শান্ত হবে? যে শিশুর মনে এ আতন্ক কাজ করছে সে শিশুর ভবিষ্যৎ কি? আমরা সবিনয়ে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সহযোগী আমলাদের প্রতি আবেদন করছি দেশের মানুষের এই সন্কট নিয়ে ভাবুন ও সমাজকে যত দ্রুত স্হিরতার দিকে নিয়ে আসা যায় তার জন্য কাজ করুন।দেশের মানুষের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে যদি এর ভয়াবহতা দীর্ঘতর হতে থাকে তাহলে মানুষ রাস্তায় নেমে যাবে আর আপনাদের বন্যার পানির মত টেনে নিয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নেই।যে কোন কর্মসূচির সহনীয়তা থাকা উচিত কিন্তু শিক্ষার্থীদের ক্ষতি যেন ন্যূনতম মাত্রায় থাকে, সে দিকে লক্ষ রেখেই কর্মসূচি দেওয়া উচিত। সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন সমঝোতার মাধ্যমে চলমান সংকটের অবসান ঘটিয়ে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা আর জাতি তার অপেক্ষায় অপেক্ষমান।

বিষয়: বিবিধ

১০৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File