আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো এখন কতেক শিক্ষক নামের হায়েনার কাছে জিম্মি।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৭ জুন, ২০১৩, ০১:৫২:৫৫ দুপুর

বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশের তথা একটি জাতির জীবন মান উন্নয়নের ও আশা আকাংখার প্রতীক।যে ছাত্রিটি জীবনের অনেকগুলো বছর চড়াই উতরাই করে এখানে এসে ভর্তি হয় , জীবনের অনেক রঙিন স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে সে-ই লালসার শীকার হয় এক ধরনের পাষন্ড শিক্ষক বা ছাত্রের কাছে।যে বিভাগে ছাত্রিটি এসে ভর্তি হলো সে ফেকাল্টি যে তাদের অভিভাবক এটা তাদের অনেকেই ভুলে যায়।প্রথম থেকেই এই দুষ্টপ্রকৃতির শিক্ষকদের নজরে পড়ে যায় সুন্দরী মেয়েগুলো।ভাল রেজাল্ট করানোর নামে,বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে তাদের একান্তে নিয়ে যায়।প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে।আর চলতে থাকে অনৈতিক কর্মকান্ড।কতজন অবিভাবক এর খবর রাখেন।বিশেষ করে মফস্বলের যারা পড়তে আসে তাদের থাকতে হয় হোস্টেলে।এ ক্ষেত্রে বাবা মা নির্দিষ্ট ছুটির সময় ছাড়া তাদের পায় না।শিক্ষক ও ছাত্রের সম্পর্ক অবিভাবকের মত।বাবা মা যেমন সন্তানকে আগলে রাখেন ,তাদের ভবিষ্যত চিন্তা করেন শিক্ষকদেরও দায়িত্ব অনুরুপ।ছাত্র ছাত্রিরা কিভাবে ভাল ফলাফল করবে , জীবনে উন্নতি করবে , দেশ ও জাতির কিভাবে মঙল কামনায় দেশের কাজে ব্রতি হবে এ সবের জন্য একজন দক্ষ কারিগরের মত কাজ করবে।কিন্তু তা না করে যদি একজন শিক্ষক পালক্রমে ৩ বা ৪ জন ছাত্রীর সাথে প্রেম বিনিময় করেন তা থেকে কি প্রতিয়মান হয়?

এক শ্রেনীর শিক্ষক এই কোমলমতি ছাত্রীদের ভাল রেজাল্ট ও বেশী নাম্বার পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিজের আয়ত্বে নিয়ে আসেন।নিজের একান্ত কক্ষে নিয়ে যান।অথবা বাইরে কোন বিহারে চলে যান।সচরাচর একটা মেয়ে যখন তার দেহ কোন পুরুষকে দান করে দেয় তখন আর তার ফেরার কোন উপায় থাকেনা।শুধু যে শিক্ষকই এ কাজ করে তা নয় আজকাল পাশ্চাত্ব শিক্ষার যে অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে তা ক্যাম্পাস দেখলে বা ভ্যালেন্টাইন ডে দেখলে বুঝা যায় মুল্যবোধের অবক্ষয় সমাজে নেমে এসেছে।এখন তাদের অনৈতিক কাজ করতে বাধে না।পার্কে ,ক্যাম্পাসে এখন চুমু সংস্কৃতি সাধারন বিষয় হয়ে দাঁড়য়েছে।ছাত্ররা এই সব প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ালেখার সাথে এ বিষয় এমন ভাবে রপ্ত করেছে যে অনেক পিতামাতা এগুলোকে তেমন কিছুই মনে করছে না।আর এর পরিনতিতে সমাজ হয়ে উঠছে বিধ্বংশী রুপে।বিভাগের মিউজিয়ামে ব্যক্তিগত কাজ করার আড়ালে পছন্দের ছাত্রীদের নিয়ে অনৈতিক কাজ করেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তদন্ত প্রতিবেদনে। এই অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের লেকচারার মাহমুদুর রহমান বাহালুল। একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রার্থনা করে চিঠি দিয়েছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী স্পর্শকাতর ও জঘন্যতম অপরাধের দায়ে বাহালুলকে শাস্তিমূলক আইনী ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়। এর আগে একই অভিযোগে তাকে ৩০ এপ্রিল বিভাগ থেকে সকল কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ পর্যন্ত ৫ জন ছাত্রী বাহালুলের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কম করে হলেও প্রতি সেশনে অন্তত ১০ জন ছাত্রী বাহালুলের যৌন লালসার শিকার হন। অনেকেই পরীক্ষার নম্বর ও সম্মানের ভয়ে মুখ খুলেন না।

জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে বিভাগের বর্তমানে ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বাহালুলের। ওই ছাত্রী বিভাগের চেয়ারম্যানকে এক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তারা স্বামী-স্ত্রীরমত বাহালুলের ক্যাম্পাসের বাসায় (ইন্টারন্যাশনাল হল), বিভিন্ন বন্ধু ও ঘনিষ্ঠজনের বাসায় সময় কাটিয়েছেন। বাহালুলও বিভাগের তদন্ত কমিটির কাছে অকপটে তা স্বীকারও করেছেন। এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অনার্সে ভাল রেজাল্টধারী এক ছাত্রীর সঙ্গেও বাহালুলের সম্পর্ক গভীরে পৌঁছায়। তিনিও বাহালুলের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় একান্তে সময় কাটিয়েছেন। এ বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাহালুল অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করছেন এমন সংবাদ পেয়ে কলা ভবনে তার রুমে ছুটে আসে তিন প্রেমিকা। এ সময় বাহালুল পালিয়ে যেতে চাইলে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে অন্য শিক্ষকের হস্তক্ষেপে তাকে মুক্ত করা হয়। ওদিকে বিভাগের এক অনুষ্ঠানে বাহালুল তার এক প্রেমিকাকে বিয়ে করবে না এমন কথা বললে হাতের রগ ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলতে উদ্যত হয় সে প্রেমিকা। পরে অন্য শিক্ষকরা ওই মেয়েটিকে বাহালুলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার বিষয়ে আস্বস্ত করলে মেয়েটি শান্ত হয়। গত বছরের ২২ রমজান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তণ ছাত্র সমিতির ইফতার মাহফিলে বাহালুলের সাথে ‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক’ আছে এমন দু’জন ছাত্রী অন্যজনের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক আছে জানতে পেরে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে বাহালুল সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। এছাড়া গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য কলা বিভাগের এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন শিক্ষক বাহালুল। ছাত্রীটি ওই ঘটনা বন্ধুদের জানিয়ে বাহালুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে ডেকে নিয়ে তার গালে চড়-থাপ্পড় মারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের এক ছাত্রীকে বাহালুল প্রায় হল থেকে নিয়ে গভীর রাতে হলে পৌঁছে দিয়ে আসতেন। রাতের পর রাত তারা বাইরে থেকেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। হলের প্রভোস্টের কাছেও এমন অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাহালুল বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে শৃঙ্খলা বিষয়ক একটা তদন্ত কমিটি হয়েছে বলে শুনেছি। কলা অনুষদের ডীন ড. সদরুল আমিন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য কাজ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন এসেছে। এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

পাঠকবৃন্দ! ভেবে দেখুন। ইসলামের ইতিহাস এমন একটি বিভাগ যেখান থেকে অনেকেই আশা করেন এরা ইসলামের দর্শনে জীবন গঠন করবে।আসলে এই ইসলামের ইতিহাসে ইসলমের তেমন কোন চর্চা নেই।যে মানবের সংস্পর্শে পৃথিবি আলোকিত হয়েছিল সাড়ে চৌদ্দশ বছর পূর্বে সেই চরিত্র সম্পর্কে কোন আলোকপাত করা হয় না এই সব বিভাগগুলোতে।কোন চরিত্রের শিক্ষক এখানে নিয়োগ দেয়া হয় তা প্রতিবেদন গুলো পড়লে অনুধাবন করতে পারবেন।তবে এ থেকে মুক্তির পথ যারা দেখাবে তাদের অধিকাংশই ভ্রষ্টতার জীবনে আবদ্ধ।আমাদের অবিভাবকদের দায়িত্ব হলো কোথায় আমরা তাদের পাঠ দানের জন্য পাঠাছ্ছি তার খোঁজ নেয়া।যে প্রতিষ্ঠানে পাঠালে সন্তানের জীবন বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে সেখানে না পাঠিয়ে ভাল প্রতিষ্ঠানের খোঁজ খবর নেয়া।একটি সুন্দর জাতির জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সুচরিত্রের শিক্ষক ও ষ্টাপ থাকা বান্চনীয়।সরকারের দায়িত্ব জাতি গঠনে এই সমস্ত প্রতিষঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করা ও এ ধরনের শিক্ষকদের বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্হা করা।তা না হলে আজ যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পংকিল হছ্ছে স্কুল ও কলেজ গুলো ও এই পংকিলতার গ্লানি থেকে রক্ষা পাবে না।

বিষয়: বিবিধ

২৪২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File