সমাজের এক অসৎ স্বামি যে দ্বীনদারীর নামে সংসারকে দোযখে পরিনত করেছে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২০ জুন, ২০১৩, ০৫:১৮:১৩ বিকাল
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! সমাজে ও দেশ বিদেশে চলতে চলতে এমন কিছু মানুষের সন্ধান মিলেছে যারা আমাদের চারিপাশে বিচরন করছে অথচ আমরা জানি না তাদের আসল রুপ।আপনি হয়ত ভাববেন যার সাথে প্রতিনিয়ত মসজিদে নামাজ পড়ছি,সামাজিক কাজ করছি তার অন্তর্নিহিত রুপ এমন হয় কি করে? এই রকম একজন মানুষের চরিত্রের বর্ননা দিয়ে সমাজকে সতর্ক করতে চাই তারা যেন এমন না হয়।বিচিত্র এ পৃথিবী ও বিচিত্র এ মানুষ।জাহেলিয়াতের যুগে ও এমন ঘটনা ঘটে নি যা আজ সভ্যতার সমাজে ঘটে যাছ্ছে।আমাদের অনেক মা বোন ও সন্তানরা সামজিক সম্মানের জন্য চেপে যায় কিন্তু কোন কোন ঘটনা বেরিয়ে আসে।মনকে কতদিন চেপে রাখা যায়।কারো না কারো কাছে দু:খের কথা বলে ফেলতেই হয়।আর এ ঘটনাগুলো লেখকদেরই নাড়া দেয় প্রথম যারা সমাজকে সচেতন করার জন্য জাতির কাছে প্রকৃত মেসেজ পৌঁছে দেন।এ রকম একজন মানুষের জন্ম পশ্চিম বঙে হলেও পাকিস্তানের সময় স্হানান্তরিত হয়েছিল আমাদের রাজশাহি অন্চলের এক লোকালয়ে।মানুষটি অনেক কষ্ট করে কমার্স গ্রাজুয়েট হয়েছিল এবং পরবর্তি সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জুটমিলে উচ্চপদে চাকুরি করে বেশ কয়েক বছর কাটালেন।
ভদ্রলোক যখন গ্রাজুয়েট হলো তখন ঐ এলাকার এক প্রভাবশালীর স্কুল পড়াকালীন একজন সরল প্রান মেয়ের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়।তাদের দু'টি সন্তান ও তারা দু'জন নিয়েই পরিবার।বলা যায় একটি সুখি পরিবার।কিন্তু মানুষটি জীবনের শুরুতেই টাকার প্রতি লোভাতুর ছিল।বেশ কয়েকবছর দেশে চাকুরি করে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমালো।এলাকায় বিশাল একটি বাড়ি করলো।স্ত্রী তার সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতে থাকলো।এর মধ্যেই তার মাথায় আসলো ব্রিকফিল্ডের ব্যবসার কথা।আত্মীয় স্বজনের সাথে পরামর্শ করে কাজে হাত দিল।আর কয়েক বছরের মাথায় সে ব্যবসা ক্ষতিতে রুপান্তরিত হলো।একজন পিতা হিসেবে তার সংসারের যে মানবিয় দায় দায়িত্ব ছিল সে তা দেখেছে টাকার অংকে।পরিবারে ছিল আত্মীয় স্বজনের অবাধ আনাগোনা। ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তান লালনের যে ভূমিকা থাকার কথা, তা ছিল না সে সংসারে।যার পরিনতিতে কৈশোরে বিয়ে দিতে হয়েছিল মেয়েকে।আর কৈশোরের বিয়ে টিকে থাকে অনেক কম।মেয়ের শ্বশুর পরিবারের সাথে বিশেষ করে মেয়ের জামাতার আচার আচরনে এক পর্যায়ে তাদের সম্পর্ক গড়ালো ডিভোর্সে।এর পর আর তার এলাকায় থাকার বাসনা চিরতরে মিটে গেল।এর পর সপরিবারে বিদেশে অবস্হান তাদের কিছুটা স্বস্তি দিলেও প্রকৃত শান্তি ফিরে আসে নি। এখান থেকেও তার শিক্ষা হলো না।বিদেশে এসেও চাকুরির পাশে ব্যবসার মোহ তার থামলো না।এর প্রধান কারন ছিল তার নৈতিকতার অভাব।ভাল মানুষদের সাথে উঠা বসা থাকলেও ব্যবসা করতো অসৎ প্রবন লোকগুলোকে সাথে নিয়ে।ধার্মিকতা এতটুকু ছিল নামাজ পড়া।তবে স্ত্রী ছিল ধার্মিক ও জামাতের সাথে সম্পৃক্ত।সে হিসেবে জামাতের সাথে তার ও চলাফেরা।কথায় বলে কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না।কমিউনিটির লোকদের অনেক উপকার করলেও তার সম্পর্কে মানুষের ধারনা ভিন্নতর।নিজের স্বার্থ বজায় রেখে পরের উপকার।এমনকি তার নিজের সংসারেও।
যাই হোক মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হলো আকশ্মিকভাবে একটি ভাল ছেলের সাথে।তার ছেলেটিও ইউরোপে চলে গেল পড়ালেখার জন্য।সংসারে কোন ঝামেলা নেই তবে ঝামেলা একটাই তাকে নিয়ে।সংসার ছেলে মেয়ের প্রতি যে দায়িত্ববোধ থাকার কথা সে তার স্বার্থপরতা ও অজ্গতার কারনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে নি।দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী তাকে নিয়ে স্বস্তিতে ছিল না কারন ছিল চারিত্রিক ক্রুটি।যুবতিদের প্রতি ছিল তার লোভ আর সেটা প্রকাশ পেল ৬৫ বছর বয়সে।এর আগে যা হতো হয়তো গোপন হয়ে থাকতো।স্ত্রীকে রেখে এক ছুটিতে দেশে গেল।তার এক নিকট আত্মীয়ার ঘরে অনস্হান করলো।সেখানে ছিল এক নাতনী সম্পর্কের মেয়ে।একদিন তাকে প্রলোভন দিল কু-কাজের।নাতনী সাথে সাথে তার স্ত্রীকে জানিয়ে দিল।আর সেটা গোটা পরিবারে ছড়িয়ে পড়লো।তার স্ত্রী পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আলোচনা করলো তার সাথে সংসার করা যায় কিনা।পরে শুনেছি জামাতের অনেকে নাকি মত দিয়েছে যদি পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে সংসার করতে পারে।পশুর স্বভাব যাদের থাকে তারা খুব কমই পরিবর্তন হয়।তবে তাদের সংসার চলছে নিভৃত কান্না আল্লাহ ছাড়া কেউ শুনছে না কারন পরিবার সমাজে কলুষিত হওয়ার ভয়ে মেনে নিয়েছে এ জীবনকে।আর লোকটি এখন আরো বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে পরিবারের প্রতি।এখন তার ৭০ বছর বয়স।মৃত্যুর কোন ভয় নেই।যেখানেই টাকা দেখবে সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়বে।আর তার আশে পাশে অবস্হান করছে অনৈতিক লোকজন।তার দু'টো সন্তান এমনকি তাদের সন্তানরাও তাকে অবজ্গার চোখে দেখছে।যে বয়সে মানুষ স্ত্রী সন্তানের ভালবাসায় সিক্ত হয় সে বয়সে সে পরিত্যাক্ত আর তার সন্তানরাও তার কাছে পরিত্যাক্ত।আর এই সুবাদে সুবিধা গ্রহন করছে অসৎ লোকেরা।
পাঠকবৃন্দ! আমাদের শিখার ব্যাপার রয়েছে এ থেকে।আপনার পরিবারকে সুখি করার জন্য অনেক টাকার দরকার নেই।আপনার সৎ রোজগার আপনাকে সুখি করবে যদিও সেটা হয় অনেক অল্প।অসৎ অর্জন আপনার জীবনকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করবে তেমনি করবে বংশদরদের।আমাদের ধার্মিকতা পালন করতে হবে ইসলামের অন্তর্নিহিত জ্গান আহরনের মাধ্যমে।আর যারা জালেমের জীবন অবলম্বন করবে তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়ায় অশান্তি ও আখেরাতে প্রজ্জলিত আগুন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন