ইসলামকে নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে ব্যাবহার সরকার প্রধানদের একটা আদতে পরিনত হয়েছে।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:১৬:৩৪ বিকাল

আমাদের দেশে নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে তখন ইসলামিক চেতনাকে ও ইসলামি আদর্শকে ব্যাবহার করার একটা প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়।এর একটা প্রধান কারন হলো ইসলামিক দলগুলো তাদের পার্থিব সুবিদার্থে বিভক্ত।আল্লাহ ও তার রাসূল সা: এর ঘোষনা ইসলাম হলো একটি উম্মাহ।দুনিয়ায় আল্লাহ দু'টো পথ রেখেছেন,একটা সহজ সোজা পথ অর্থাৎ আল্লাহ ও রাসূল সা: এর পথ।আর একটি হলো বাতেলের পথ।আর এখানে সবাই স্বাধীন যার যার ইছ্ছা মত জীবন পরিচালনা করে আখরাত মুখী হবে।আল্লাহ তখন তার দুনিয়ার জীবনের হিসেব নিবেন।এটা সবার জন্যই পরিষ্কার।বাংলাদেশ এমন একটা ভূখন্ড যেখানে অসাম্প্রদায়িক লোকজন বাস করে কিনা আমার সন্দেহ আছে।যদি অসাম্প্রদায়িক লোকজন থাকে তাহলে ৯০% মুসলমানের এলাকায় হিন্দু এম পি হয় কি করে? মুসলমানরাই তো ভোট দিছ্ছে।এখানের লোকজন যে যে যার যার ধর্ম ও ঐতিহ্য নিয়ে বেঁচে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।আর ইসলাম এটাই চায়।মদিনায় মুসলমানদের মধ্যে মোনাপেক গোষ্ঠী ছিল।যার প্রমান ওহুদের যুদ্ধে ৩০০ মোনাপেক ফিরে আসায় তারা মোনাপেক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে এবং এটা চলমান থাকবে ক্কেয়ামতের আগ পর্যন্ত।সাহাবাদের কেউ কেউ রাসূল সা: কে তাদের হত্মা করার জন্য আদেশ দেয়ার কথা বলেছিলেন।কিন্তু কেন তিনি এ আদেশ দেন নি? কারন হলো,যদি এ কাজ করতেন তাহলে ইসলাম বিরোধীরা বলতো মোহাম্মদ সা: তার মুসলমান সাহাবিদের হত্মা করছে।তাহলে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হতো না। আর কুরআনে মানূষ হত্মাকে নিষেধ করা হয়েছে।যদি ইসলামি সরকার হয় এবং কেউ যদি দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন করতে এগিয়ে আসে তখন ইসলামি সরকারের যিনি আমির থাকবেন তিনি জন গনকে আদেশ করবেন।

আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর আগে একবার নির্বাচনের আগে হিজাব লাগিয়েছিলেন।তিনি একজন সম্মানীয় ব্যাক্তিত্ব।ইসলামের কাজ হলো,যখন কেউ বুঝতে পারে তিনি অন্যায় করেছেন তখন তিনি ইস্তেগফার করে ফিরে আসবেন ও যদি অন্তর থেকে সেই ইস্তেগফার হয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ নিশ্চয়ই মাপ করবেন।আমরা দেখলাম এর পরে আর হিজাব নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অতি-সাম্প্রতিক কালের আর একটি মন্তব্যও দেশে যথেষ্ট আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেছেন, দেশ চলবে নবীজীর (সা.) আদর্শে, তার মদিনা সনদ ও বিদায় হজ্জের ভাষণের আলোকে। বাংলাদেশের জনগণের শতকরা ৯০ ভাগ জন গন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী মুসলমান শুধু এটা বললেই সবটুকু বলা হয় না। তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তারা নবীজীর (সা.) আদর্শকে শুধু যে মনেপ্রাণে ভালোবাসে তাই নয়, এই আদর্শের উপর কোন আঘাত, এই আদর্শের কোন অবমাননা রুখতে অবলীলাক্রমে প্রাণ দিয়েও ফেলতে পারে। অতি-সম্প্রতিও তারা তার প্রমাণ দিয়েছে। গত ছয় এপ্রিল শাপলা চত্বরের স্মরণকালের বৃহত্তম জনমাবেশের মাধ্যমে তারা জানিয়ে দিয়েছে তাদের নবীপ্রেম কত গভীর। যারা হেফাজতে ইসলামের আহূত এই প্রতিবাদ-সমাবেশ নিয়ে নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল, স্মরণকালের এই বৃহত্তম মহাসমাবেশে শান্তি-শৃংখলা রক্ষা করেও তারা প্রমাণ দিয়েছে তাদের এই প্রতিবাদ-মহাসমাবেশ শুধু সাময়িক উত্তেজনার কোন বিষয় ছিল না। এ ছিল তাদের আত্মার গভীর থেকে উৎসারিত ঈমানী চেতনার বহিঃপ্রকাশ।

আগেই বলেছি, দেশ চলবে নবীজীর (সা.) আদর্শে, মদিনা সনদ ও প্রিয়নবীর (সা.) বিদায় হজের ভাষণের আলোকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে দেশের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়া জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে হয়েছে বিভিন্ন রকমে। কেউ বলেছে, মদিনা সনদে অন্য সবকিছুর সঙ্গে রাষ্ট্রের মুসলিম-অমুসলিম নাগরিকদের মধ্যে যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য রক্ষার প্রয়াস ছিল, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে সেটাই ছিল মূল বিষয়। কেউ বলেছেন, সরকার ইতোপূর্বে শাহবাগের নাস্তিক ব্লগারদের প্রতি উৎসাহ দেখিয়ে এবং হেফাজতে ইসলামের স্মরণকালের বৃহত্তম মহাসমাবেশের দাবিদাওয়ার প্রতি উপেক্ষা দেখিয়ে ধর্মপ্রাণ জনগণের মনে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন, তা কিছুটা হলেও প্রশমনের চেষ্টা রয়েছে সরকার প্রধানের এ বক্তব্যে। সরকারি জোটের বামপন্থী শরীকরা এবং সেক্যুলার সমর্থকরা প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে স্বভাবতই খুশি হতে পারেননি। কেউ এমনও বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী এ বক্তব্য দিয়েছেন ধর্মপ্রাণ ভোটারদের মন জয় করতে । এর পূর্বে একবার কিসাসের কথাও বলেছেন।েটা ঠিক তিনি ইসলামের বিষয়গুলো দেখেন হয়ত তার সভাসদের কারনে বাস্তবায়িত করতে পারেন না।যদি সত্যি হয় তাহলে তিনি কুরআনের পথে এগিয়ে যাওয়ার ডেকলারেসন দেন না কেন?

যারা বলতে চেয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মপ্রাণ জনগণের ভোট আকর্ষণের রাজনৈতিক কৌশল মাত্র, তারা তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে বলতে চেয়েছেন- যে সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গিয়ে প্রথম সুযোগেই সংবিধানের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি অধ্যায় থেকে “সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালার প্রতি গভীর আস্থা ও বিশ্বাস” ধারা বাদ দিয়েছেন, তাদের মুখে নবীজীর (সা.) মদিনা সনদ ও বিদায় হজের ভাষণের আদর্শে দেশ চালানোর প্রতিশ্রুতি দান একটি ঐতিহাসিক ভাওতা মাত্র।আমি আমার শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের জন্য দোয়া করছি এ জন্য যে তিনি ইসলামের কথা যে কারনেই হোক মুখে আনছেন।অন্তর পরিবর্তনের মালিক একমাত্র আল্লাহ।তবে মদিনা সনদ বাস্তবায়নের নেপথ্যে ছিল এক দীর্ঘ পথ।১৩ বছর তিনি মক্কায় জুলুম ও নির্যাতিত হয়ে যে মানুষ তৈরি করেছিলেন আর সেই স্বল্প সংখ্যক মানুষ মদিনায় এসেছিল হিযরত করে সব কিছু ছেড়ে আর সহযোগিতা করেছিল মদিনার আনসারগন।এই মদিনা সনদের বিষয়বস্তু ছিল না মানব রচিত মতবাদ।তিনি অনুসরন করেছিলেন কুরআন নামক সংবিধানকে।আপনি যদি মদিনা সনদ বাস্তবায়ন করতে চান তাহলে রহিত করতে হবে মানবরচিত সংবিধানকে।ওজু গোসল করিয়ে পাক করতে হবে সংসদকে।সাংসদকে হতে হবে কুরআন ও সূন্নাহর অনুসারি।ইসলামের কথা মুখে বলে নয় তা বাস্তবায়িত করতে হবে।সূরা বাক্কারায় আল্লাহ বলেছেন,তোমরা কি কুরআনের কিছু অংশ মানতে চাও আবার অংশ চাও রহিত করতে।কুরআন মুসলমানদের জীবন বিধান।একে মেনে নিতে হবে জীবনের সর্বক্ষেত্রে।যারা বলে ইসলাম থাকবে ব্যাক্তিগত জীবনে , পরিবারে ও মসজিদে তারা নিশ্চিত ভুল পথের উপর প্রতিষ্ঠিত।আমি অনুরোধ করবো ইসলাম না বুঝে ও কুরআন ও ছহি হাদিস অধ্যয়ন না করে ইসলাম সম্পর্কে কথা না বলাই ভাল।ধর্মকে ব্যাবহার করে যারাই দুনিয়ার স্বার্থ হাসিল করতে চায় তারা দুনিয়াই পাবে।তাদের আখেরাতের অংশ হবে ভয়ংকর।

দেশের সাধারণ মানুষ এতকিছু বোঝে না। তারা চায় দেশের মানুষের জীবনে শান্তি আসুক।তিনবেলা খেয়ে পরে সুস্হ সামাজিক জীবন যাপন করবে এ নিশ্চয়তা চায়। যে কোন উপায়ে দেশ যেন আল্লাহ-রাসূলের (সা.) দেখানো পথে চলে, সেই অবস্থা সৃষ্টি হোক।এটা কোন কঠিন ব্যাপার নয়।সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে , জাতীয় ইস্যুগুলোখে যদি পজিটিভলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে কোন ভাওতাবাজির দিকে যেতে হবে।দেশের মানুষ প্রহসিত হয়েছে ৪১ বছর।এখন আমাদের সময় এসেছে ভাবার।আসুন সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মহত অঙিকার করি,দেশের জন্য নি:স্বার্থে কাজ করি।

বিষয়: বিবিধ

১২১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File